আত্মার আগলে পর্ব ৪২

আত্মার আগলে পর্ব ৪২
সানজিদা আক্তার মুন্নী

নূরি বসে আছে বউ সাজানো অবস্থায়, মেহরুবের ঘরে, তাদের বিছানায়। আজ তার স্বপ্ন পূর্ণ হলো! অবশেষে সে তার মেহরুব ভাইয়ের স্ত্রী হয়েছে! খুশিতে মরে যেতে ইচ্ছে করছে!তার! আজ থেকে সে শুধু তার মেহরুব ভাইয়ের! তার মেহরুব ভাই শুধু তার! আজ থেকে সে হাঁটবে তার হাত ধরে জান্নাতের পথে!
নূরির ঘুমিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে,! কিন্তু বিবেকে দিচ্ছে না, মেহরুব এসে যদি রাগ করে, ভাবে যদি বউ আমার অপেক্ষা না করেই ঘুমিয়ে গেল
কিন্তু সারাদিনের ধকল কম যায়নি, ক্লান্তিও পেয়ে বসেছে।
সকাল থেকে একরকম তটস্থ অবস্থায় কেটেছে তার দিনটা, এখন রাত ন’টা বাজতে চলল!
সে ধীরে ধীরে গা এলিয়ে দেয় বিছানায়। চারদিকে ফুল ছড়ানো, মৌ মৌ করছে ফুলের ঘ্রাণে সারা ঘর। নূরি চোখ বন্ধ করে গভীর শ্বাস নেয়। এই সুগন্ধ, এই প্রশান্তি— ভাষায় বোঝানো সম্ভব নয়!
কিছু মুহূর্ত পার হয়…

দরজা খুলে প্রবেশ করে মেহরুব।
দরজা খুলেই চোখ সামনে পড়তেই মুগ্ধ হয়ে যায় সে!
সাদা বিছানায় শত লাল গোলাপের পাপড়ির মধ্যে শুয়ে আছে তার নূরি ফুল! এলোমেলো অবস্থায়, কিন্তু কী অপার্থিব লাগছে তাকে!
মনে হচ্ছে যেন ফুলের রানী ফুলের সমাহারের মধ্যে বিরাজ করছেন!
মেহরুব বুকে দুই হাত গুঁজে মন ভরা দূষ্টিতে তার নূরি ফুল কে দেখতে থাকে!
মেহরুব বুঝতে পারে, ক্লান্তিতে তার নূরি ফুল এভাবে শুয়ে পড়েছে। মুচকি হেসে ধীর পায়ে এগিয়ে যায় তার দিকে।
নিঃশব্দে বিছানায় উঠে যায় আলতো এগিয়ে নূরির মাথায় হাত রাখে।
ঠোঁট উল্টে বাচ্চাদের মতো ঘুমিয়ে আছে তার নূরি ফুল। এত স্নিগ্ধ, এত কোমল লাগছে! ফর্সা গালে মেকআপে আরও মোহময়ী লাগছে!
মেহরুব আপন বেগমের এমন সৌন্দর্য দেখে চোখ বুঁজে কিছু মুহুর্ত রয় তারপর চোখ খুলে অতি যত্নে নূরির মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।
কিছুক্ষণ পর…

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

নূরির চোখ ধীরে ধীরে খুলে যায়!
সে বুঝতে পারে, পাশে কেউ আছে।
ঘুম চোখে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাতেই চোখে পড়ে মেহরুব কে , যে কি না তার খুব কাছে!
হঠাৎ এতটা নিকটে মেহরুবকে দেখে নূরি বেশ ঘাবড়ে যায়!
ভরকে গিয়ে দ্রুত উঠে বসতে চায়!
তার এমন চমকে ওঠা দেখে মেহরুব একটু সরে আসে, যেন আর ভয় না পায় সে।
কিন্তু ততক্ষণে নূরি হুড়মুড়িয়ে উঠে বসে পড়েছে!
আর বসতেই দেখে—
ওহ আল্লাহ!
লজ্জায় মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে!
শাড়ি হাঁটুর নিচ অব্দি উঠে গেছে, পেটের দিকের পিন খুলে গেছে!
নূরি তাড়াহুড়ো করে হাত দিয়ে নিজেকে ঢাকার চেষ্টা করে!
মেহরুব তার এই অগোছালো, লজ্জিত অবস্থা দেখে মিটিমিটি হাসে। মাথা নাড়িয়ে আপন মনে বলে,
— “থাক, আর গুছানোর দরকার নেই। তোর মাহরাম আমি। এর চেয়ে ভয়ংকর অবস্থাতেও তোকে দেখার অধিকার রাখি আমি!”

নূরি লজ্জায় মাথা নিচু করে নেয়।
এই লজ্জা পেতেই না সে মরে যাবে!
তার গাল মুহূর্তেই টকটকে লাল হয়ে ওঠে!
মেহরুব হাত বাড়িয়ে তার গালে আলতো টোকা দিয়ে বলে,
— “ও আমার বেগম হুমায়রা… আর লজ্জা পেয়ো না!”
নূরি আরও লাল হয়ে যায়।
কিছু বলতে পারছে না!
অগোছালোভাবে মেহরুবের হাত সরাতে সরাতে ফিসফিস করে বলে,
— “ছা… ছা… ছাড়ুন মেহরুব ভাই!”
নূরির কম্পিত কণ্ঠে হাসি চেপে রাখতে পারে না মেহরুব।
সে নূরির দিকে গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে হেসে উঠে তবে তা তাবাসসুম হাসি…আর ভাবে
এই রাত, এই ফুলের রানি, এই লজ্জা— সবই তো তার জন্য!
মেহরুব হাতে ভর দিয়ে শুয়ে যায় বিছানায় । এক হাতে মুখ চেপে হাসি আটকানোর চেষ্টা করলেও চোখে-মুখে দুষ্টুমি খেলা করছে।

— “আমার নামে কবুল পড়লি, আমার জন্য বউ সাজলি আর এখন আমাকেই ভাই ডাকছিস! বাহ, নূরি ফুল, বাহ!”
নূরি ঘাড় ঘুরিয়ে মেহরুবের দিকে তাকিয়ে নিচু গলায় বলে,
— “তো কি ডাকব আপনাকে?”
মেহরুব তার দিকে এক ঝলক চেয়ে নিয়ে শাড়ির আঁচলে আঙুল পেঁচাতে পেঁচাতে বলে,
— “তুমি আমায় কত কি বলে ডাকতে পারো, তুমি না হয় আমায় ‘টুনির বাপি’ ডেকো! কিন্তু ভাই ডেকো না!”
নূরি মেহরুবের মুখ থেকে ‘তুমি’ শুনে এক মুহূর্ত হতভম্ব হয়ে যায়। বিস্ময় কাটিয়ে কিছুক্ষণ পর নরম স্বরে বলে,
— “আপনার কাছে একটা অনুরোধ করতে পারি?”
মেহরুব ভ্রু কুঁচকে তাকায়,
— “কি?”
নূরি সংকোচ কাটিয়ে বলে,
— “আমাকে তুমি বলবেন না, তুই বলবেন। তুমি বললে পর পর মনে হয়।”
মেহরুব মুচকি হেসে উঠে বসে।
— “আচ্ছা।”
তারপর কপট গম্ভীর কণ্ঠে বলে,

— “যা, তাহলে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয়। অনেক দখল গেছে তোর উপর!”
নূরি মাথা নাড়িয়ে আলগোছে বিছানা থেকে নেমে যায়। তার সব কাপড়-চোপড় মেহরুবের আলমারিতে রাখা হয়েছে। সে ধীর পায়ে সেখানে এগিয়ে যায়।
মেহরুব আয়াজ দিয়ে বলে,
— “তুই বাথরুম যা, আমি বাইরে থেকে কাপড় দিয়ে দেব।”
নূরি মাথা নাড়িয়ে বাথরুমে ঢুকে যায়।
কিছু মুহূর্ত পার হয়।
মেহরুব উঠে গিয়ে আলমারি থেকে একটা কালো কুর্তি আর সাদা পায়জামা বের করে। ওড়না নেয় না, ইচ্ছে করেই ওড়না বিছানায় ফেলে রাখে।
এগিয়ে গিয়ে বাথরুম এর দরজায় কড়া নাড়তেই ভেতর থেকে নূরি দরজা খুলে কাপড় নেয়। কিন্তু মেহরুব থমকে যায়!
নূরি এখনো গোসল করেনি! তার গায়ে এখনো শাড়ি জড়ানো!

— “কি রে? এখনো গোসল করলি না?”
নূরি আমতা আমতা করে বলে,
— “ঐ… ঐ… আপ্পি আর এশা আপু শাড়ির পিন অনেকগুলো আর এমনভাবে লাগিয়ে দিয়েছে, খুলতে পারছি না!”
মেহরুব ভ্রু উঁচু করে বলে,
— “আমি খুলে দেই?”
নূরি বড় বড় চোখে তাকিয়ে থাকে। কি বলছে! এসব সে কেন করবে! পরক্ষণেই মনে পড়ে— মেহরুব তো তার স্বামী!সেই তো এসবি করবে
তার চাহনি দেখে মেহরুব মুচকি হেসে বলে,
— “এভাবে তাকিয়ে যতক্ষণ থাকবি ততক্ষণে কাজ হয়ে যাবে!”
নূরি তড়িঘড়ি মাথা নাড়িয়ে বলে,
— “আচ্ছা।”
সে পিছন করে বাথরুমে কাপড় রাখার জায়গায় কাপড় রাখে। তারপর সংকোচ নিয়ে মেহরুবের দিকে ফিরে আসে।
মেহরুব সংকোচ কাটিয়ে প্রবেশ করে বাথরুমে
নূরি মেহরুব কে বলে
— “আ… আপনি শুধু পিঠের দিকের পিনটা খুলে দিন।”
মেহরুব কপট স্বাভাবিক কণ্ঠে বলে,
— “আচ্ছা।”

কিন্তু এখন তারই হাত-পা কাঁপছে! ঘাম পর্যন্ত ছুটে গেছে! এখনও নূরির কাছেও যায়নি তাও কাঁপছে সে, মন হচ্ছে তুফান চলে এসেছে এতটা ভয় পাচ্ছে সে
নিজেকে সামলে মেহরুব ভাবে— এই ফুল তো তোর আপন ফুল, তাকে ছোঁয়ার অধিকার তোর আছে!
শক্ত করে নিজেকে বুঝিয়ে সে কাঁপা কাঁপা হাতে শাড়ির পিন খুলতে শুরু করে।আর কাঁপা গলায় বলে
— “ধরে রাখিস শক্ত করে, না হলে পড়ে যাবে শাড়ি !”
নূরি এমনিতেই থরথর করে কাঁপছিল, এই কথা শুনে আরও শক্ত করে শাড়ি আঁকড়ে ধরে।
মেহরুব গভীর স্বরে বলে,
— “নূরি ফুল, এভাবে কাঁপিস না। তোর সাথে খারাপ কিছু করছি না আমি। শুধু সাহায্য করছি তোর।”
নূরি একটু শান্ত হয়, কিন্তু কেন জানি মেহরুবের স্পর্শে দাঁত পর্যন্ত কাঁপছে তার!
পিন খুলে দিয়েই মেহরুব মুহূর্তও দাঁড়ায় না, দ্রুত বেরিয়ে আসে!
নিজের হাঁটু পর্যন্ত কাঁপছিল। ঘরে এসে এক গ্লাস পানি ঢগঢগ করে গিলে নেয়।
এসির পাওয়ার বাড়িয়ে দিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ে। চোখ বন্ধ করে নেয়, নারীর সৌন্দর্য এত ভয়ংকর হয়, এত ভয়ংকর হয় তা সে জানত না! মাথা নষ্ট হয়ে স্টক করে নিচ্ছিল সে

নূরি গোসল করে বের হয়। ওড়না নেই, তাই চুলের টাওয়াল খুলে চুল আর শরীর ঢেকে নেয়।
বেরিয়ে আসতেই চোখ পড়ে বেসামাল অবস্থায় শুয়ে থাকা মেহরুবের দিকে।
তার পাশে ওড়না পড়ে আছে। সে দ্রুত এগিয়ে গিয়ে ওড়না কাঁধে জড়িয়ে নেয়। তারপর ধীর পায়ে মেহরুবের পাশে বসে তার কপালে হাত বুলিয়ে দেয়।
— “কি হয়েছে ? শরীর খারাপ?”
মেহরুব চোখ খুলে তাকায়।
সামনে সদ্য গোসল করে আসা তার নূরি ফুল। মুখে এখনো পানির ফোঁটা লেগে আছে, অসম্ভব সুন্দর লাগছে তাকে!মেহরুব স্থির চোখে তাকিয়ে থাকে নিজের নূরি ফুলের পানে! তার হুমায়ারর পানে এখনও তার নূরি ফুলের গাল লাল হ’য়ে আছে! নাকের ডগায় পানির ফোঁটা লেগে আছে!! এ কেমন সৌন্দর্যে সাক্ষী সে হলো
মেহরুব ব্যাকুল গলায় বলে,

— “রোগে ধরেছে আমায়।”
নূরি অস্থির হয়ে বলে,
— “কিসের রোগে?”
মেহরুব মুচকি হেসে বলে,
— “তোর রোগে!”
নূরি মেহরুবের মাথায় চাটি মেরে বলে,
— “আপনিও না! ভয় পাইয়ে দিচ্ছিলেন! আচ্ছা যান, ওযু করে আসুন। নামাজ পড়বেন না নফলের?”
মেহরুব উঠে বসতে বসতে বলে,
— “হুম।”
অতঃপর উঠে দাঁড়িয়ে বাথরুমের দিকে এগিয়ে যায়।
উদ্দেশ্য?
নিজের আপন নারীকে পাওয়ার আনন্দে রবের দরবারে শুকরিয়া আদায় করা!

এদিকে এশার শাড়ির কুচি ঠিক করে দিচ্ছে মেহরাজ।
এশা এক চোখ বন্ধ করে মুচকি হেসে বলে,
— “হুমম, বুঝো বুঝো… বউকে শাড়ি পরানোর মজা!”
মেহরাজ মুখ তুলে এশার দিকে তাকিয়ে গভীর স্বরে বলল,
— “হুমম, বুঝতেছি! তবে… যেভাবে পরাচ্ছি, ওভাবে কিন্তু!”
আর কিছু না বলে মুচকি হেসে উঠে মেহরাজ! তার কণ্ঠে একরকম দুষ্টু অভিপ্রায় লুকিয়ে থাকে।
এশা চোখ টিপে তাকিয়ে একটা ধমক দিতে গিয়েও চুপ করে যায়।
মেহরাজের হাত এত যত্নে, এত আবেগ নিয়ে তার শাড়ি ঠিক করে দিচ্ছে—এটা মনে হতেই ভেতরটা কেমন যেন মুগ্ধতায় ভরে উঠে তার।
মেহরাজ শেষবারের মতো শাড়িটা ঠিক করে উঠে দাঁড়াল।
তার শ্যামবতীকে আজ ঠিক যেন এক অপ্সরার মতো লাগছে!
সাদা-লাল পারের শাড়িটায় এত সুন্দর লাগবে, সে কল্পনাও করেনি!
চোখে হালকা কাজল, নরম ঠোঁটে গোলাপি লিপস্টিক, খুলা চুলে সাদা ফুলের গাজরা…
মেহরাজ স্তব্ধ হয়ে যায় ।
তার চোখের সামনে যেন নতুন এক এশা দাঁড়িয়ে!
ধীরে ধীরে এশার দুই হাত ধরে নিজের বুকে চেপে ঘায়েল গলায় বলে,

— “এ কেমন সৌন্দর্যে ঘেরা গো তুমি, শ্যামবতী? তোমার এই উপচে পড়া রূপে আমি যে মাতোয়ারা!”
এশা লজ্জায় মাথা নিচু করে ঠোঁট টিপে হেসে ফেলল।
তার বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে উঠছে এক নতুন অনুভূতি…
মেহরাজ এশার থুতনি ধরে মুখ আলতো করে তুলে ধরে।
এশার গালে সেই ছোট্ট টুলের মতো কাটা দাগ…
যেটা তাকে সবসময় মুচকি হাসির মতো দেখায়।
মেহরাজ ধীরে ধীরে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিল সেখানে।
এশার শরীর কেঁপে উঠে,
চোখ দুটো আপনাআপনি বন্ধ হয়ে আসে।
তার ভেতরটা হঠাৎ করেই নরম মোমের মতো গলে যেতে লাগল…
একটা শিহরণ পুরো শরীর বেয়ে নেমে গেল!
এশা মেহরাজের বুকের পাঞ্জাবি শক্ত করে চেপে ধরে,
যেন এই মুহূর্তটা আর শেষ না হয়!
মেহরাজ এশার কোমরে দুই হাত দিয়ে আরও শক্ত করে আঁকড়ে ধরল এশাকে।
তার বুকের ধুকপুকানি স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছে এশা।
কিছু মুহূর্ত পর, এশাকে কোলে তুলে নিল মেহরাজ।
তারপর এগিয়ে গেল ব্যালকনির দিকে।
নরম বাতাসে এশার খোলা চুল উড়ছে,
চাঁদের আলোয় তার মুখানা স্বর্ণালি ছটায় দীপ্তি ছড়াচ্ছে।
এশাকে নামিয়ে দিয়ে পেছন দিক থেকে আঁকড়ে ধরে মেহরাজ।
এশার মুক্ত ঘাড়ে মুখ গুঁজে বলল,

— “তুমি আমার শখের সুখপাখি, বুঝলে প্রিয় নারী, তোমাকে আমি ভীষণ ভালোবাসি!”
এশা লজ্জায় পড়ে যায় বেশ।
সে জানে, মেহরাজের ভালোবাসা নিছক কথার ফুলঝুরি নয়…
এটা সত্যি!
এশা এক হাত তুলে মেহরাজের চুলে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল,
— “তুমি আমার প্রিয় পুরুষ… যতই রাগারাগি করি না কেনো, যতই গালাগালি করি না কেনো, মনে রেখো—আমি তোমাকে ভালোবাসি! প্রথমে হয়তো তোমাকে মানতে পারিনি… কিন্তু এখন আমি মন থেকে তোমাকে গ্রহণ করলাম… মন থেকে ভালোবেসে!”
মেহরাজ এশার কানে কানে বলল,

— “বিশ্বাস করো, তোমার গালাগালিও আমি ভালোবাসি! তোমার সব কিছুই আমি ভালোবাসি… তাই তো তুমি আমার প্রিয় নারী!”
এশা হেসে ফেলল।
তার হাসির শব্দ এক পবিত্র সঙ্গীতের মতো শোনাল মেহরাজের কানে…
মেহরাজ একদম কানে কানে ফিসফিসিয়ে বলে
— “দু’একটা ছোট্ট বাচ্চার বাপ হওয়ার সুযোগ দেবে আমায়, প্রাণ?”
এশা সাথে সাথেই কনুই দিয়ে খোঁচা মেরে বলল,
— “এই! শুরু হয়ে গেছে ইবলিশি!”
মেহরাজ হেসে হাত বাড়িয়ে এশার কোমর চেপে ধরল,
তারপর আবারও কোলে তুলে নিল!
এশা লজ্জায় মুচকি মুচকি হাসতে শুরু করে ।
তার ভেতরটা এক অদ্ভুত অনুভূতিতে ভরে উঠছে,
যেন এক মধুর আতঙ্ক!
মেহরাজ গভীর চোখে তাকিয়ে বলে,

— “আজ বিয়ের মাসের মাথায়… বউয়ের লজ্জার মাগফিরাত করার সুযোগ পেলাম!”
তারপর আকাশের দিকে তাকিয়ে হাত তুলে বলল,
— “আল্লাহ মাবুদ! তোমার দরবারে কোটি কোটি শুকরিয়া!”
এশা লজ্জায় কুঁকড়ে গিয়ে কনুই দিয়ে ধাক্কা দিয়ে বলল,
— “বেশি কিছু করলে আমি উঠে দৌড় দেব কিন্তু!”
মেহরাজ হাসল,
— “উঠে বসতে পারলে দৌড় দিও!”
এশা হেসে বলল,
— “মিসওয়াক দিয়ে ওযু করেছো তো?”
মেহরাজ এশাকে বিছানায় রাখতে রাখতে বলে,
— “সেটা কি করে ভুলি, বউ?”
তারপর এক হাত বাড়িয়ে পাশের টেবিল থেকে বাতিটা নিভিয়ে দিল…
এশা মেহরাজের পাঞ্জাবি আঁকড়ে ধরে রাখে।
সারা শরীর ভয়ংকরভাবে কাঁপছে তার,
এক অদ্ভুত সুন্দর অনুভূতি শরীরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে!
মেহরাজ এশার শাড়ির আঁচলটা সরিয়ে নিতে নিতে বলে
— “বেগম… পড়ো!”

اللهم جنبنا الشيطان وجنب الشيطان ما رزقتنا
[“হে আল্লাহ, আমাদেরকে শয়তান থেকে রক্ষা করুন এবং যে সন্তান আপনি আমাদের দান করবেন, তাকে শয়তান থেকে দূরে রাখুন।”]
এশাও পড়ে…
সিলেটের রাত নেমে এসেছে শহরের বুকে এক মায়াবী পরশ রেখে।
মেহনূর কে নিয়ে এহসান বাড়ি যায়নি! তার বেগম সাহেবের ইচ্ছে আজ সিলেট শহর দেখা ঘুরে ঘুরে!
জ্বলজ্বলে রাস্তাগুলো নিস্তব্ধ, চারপাশের বাতাসে একটা নরম শীতলতা।
কিন্তু…
মেহনূরের হৃদয়ে এই মুহূর্তে এক উত্তাল ঝড় চলছে!
সে শহর দেখা ভুলে গিয়ে চুপচাপ তাকিয়ে আছে তার আপন পুরুষের দিকে।
এহসান এক হাতে স্টিয়ারিং ধরে রেখেছে,
আর অন্য হাতে মেহনূরকে শক্ত করে নিজের বুকে চেপে রেখেছে।
এই উষ্ণতা…
এই সুরক্ষা…
এই গভীর স্পর্শ…
কেমন একটা নিরাপদ আশ্রয়ের অনুভূতি এনে দিচ্ছে মেহনূরকে!
এহসানের চোখেমুখে এক কঠিন অথচ রহস্যময় সৌন্দর্য খেলা করছে,

তার তীক্ষ্ণ চেহারায় ছড়িয়ে থাকা চৌম্বকীয় আকর্ষণ মেহনূরের শ্বাসকেও এলোমেলো করে দিচ্ছে!
মেহনূর ধীরে ধীরে হাত বাড়িয়ে এহসানের গালে আলতো করে ছুঁয়ে দেয়।
এহসানের ত্বকের উষ্ণতা যেন ধকধক করে জ্বলছে!
এহসান একপাশে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল,
— “এমন করো না… পরে মাঝরাস্তায় গাড়িতেই বেসামাল হয়ে উঠব আমি!”
মেহনূর তড়িঘড়ি করে হাত সরিয়ে নিয়ে হেসে ফেলল।
লজ্জায় মুখটা আরও লাল হয়ে উঠে!
তারপর একটু সাহস নিয়ে আবারও এহসানের দাঁড়িতে আঙুল বুলিয়ে বলে,
— “প্রতিদিন তো আপনি আমাতে বেসামাল হয়ে ওঠেন… আজ না হয় নিজেকে সামলে নিলেন!”
এহসান গভীর চোখে তাকিয়ে মেহনূরের পিঠে হাত বুলিয়ে দিল,
তার কণ্ঠে অদ্ভুত মায়া…

— “তোমার দিক দিয়ে আমি আজীবন বেসামাল… প্রিয়তমা!
মেহনূর চুপ করে যায়।
এই মানুষটা তার জন্য কতটা পাগল!
তার ভালোবাসার গভীরতা এতটা বেশি…
মেহনূরের মনে এক কোণে ভালোবাসার ঢেউ আছড়ে পড়ে!
সে ধীরে ধীরে মাথা নামিয়ে এহসানের গলা জড়িয়ে ধরে রাখে,
তারপর ফিসফিস করে বলে,
— “একটা প্রশ্ন করি, মেয়র সাহেব?”
এহসান আলতো হাসে।
তারপর এক হাত দিয়ে মেহনূরের কপালে, নাকে একের পর এক ভালোবাসার স্পর্শ এঁকে দেয়।
মেহনূরের সারা শরীরে শিহরণ খেলে যায় এতে!
হৃদস্পন্দন দ্রুত হয়ে আসে,
শরীরের সমস্ত শক্তি যেন কোথাও হারিয়ে যায়…
এহসান মুচকি হেসে বলে,

— “বলুন, মেয়র সাহেবের বেগম?”
মেহনূর এবার দুই হাত দিয়ে আরও শক্ত করে এহসানের গলা জড়িয়ে ধরে।
এহসানের মুখের ন্যায় তৃপ্তির দূষ্টিতে তাকিয়ে বলে
— এরে হুনরায় নি
এহসান মেহনূরের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে
— হুম
মেহনূর নিজের কণ্ঠে একরকম আকুতি এনে বলে…
— “আপনি কিভাবে আমায় এত ভালোবাসলেন? সেটা বলবেন?”
এহসান কিছুক্ষণ চুপ রইল।
তার দৃষ্টি গভীর হলো,
তারপর ধীরে ধীরে সে মেহনূরকে আরও শক্ত করে নিজের বুকের মাঝে চেপে ধরল।
তার কণ্ঠে গভীর আবেগ নিয়ে বল ে…
— “সে গল্প নাহয় অন্যদিন শুনবে, কেমন?”
মেহনূর একটু মলিন হাসে।
চোখে অভিমান জমে উঠে,
তবে সে কিছু বলে না…

এহসান মাথা নাড়ায়ি! হাত বাড়িয়ে মেহনূরের চুলে বিলি কাটতে লাগে এক হাত দিয়ে ।
মেহনূর তার গলা জড়িয়ে আরও কাছে এগিয়ে এল…
তারপর মুখটা লুকিয়ে ফেলল এহসানের বুকে।
মেহনূর চোখ দুটো বন্ধ করে নেয়,
আপন নিঃশ্বাস মিশে গেল তার আপন পুরুষ এর হৃদস্পন্দনের সঙ্গে…
রাতের বাতাস তাদের চারপাশে গুঞ্জন তুলছে,
সিলেটের নিঝুম রাস্তাগুলো যেন সাক্ষী হয়ে রইল—
এক গভীর, নির্ভেজাল ভালোবাসার!

গোসল সেরে এসে মেহরাজ দেখে, এশা এখনও কাত হয়ে নিস্তেজ অবস্থায় শুয়ে আছে বিছানায়।
মৃদু হেসে এগিয়ে যায় সে এশার দিকে ।
এশার মাথার পাশে বসে, হাত বাড়িয়ে এশার চুলে আলতো ছোঁয়া দিয়ে, তারপর হালকা ঝুঁকে গলায় নরম সুর এনে বলে,
— “জান, উঠো… গোসল করতে হবে।”
এশা অনেক কষ্টে চোখ মেলে ঠোঁট নাড়িয়ে বলল,
— “আমি করব না…”
মেহরাজ ঠোঁট কেটে হেসে বলে,
— “এটা ফরজ গোসল, করতে তো হবেই। উঠো তো?”
এবার এশার কণ্ঠে বিরক্তির ছোঁয়া,
— “কি করে উঠব? পারছি না তো! সরো এখন, পরে উঠব!”
মেহরাজ এশার বাহুতে আলতোভাবে হাত রাখল,
— “বউ, গোসল দিলে এগুলো সেরে যাবে। উঠো…”
এইবার এশা ঠোঁট ভেঙে বাচ্চাদের মতো কেঁদে উঠে!
মেহরাজ দ্রুত এশার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে,

— “এখন আবার কাঁদছো কেনো? কি হয়েছে? আমি তো এখন কিছু করিনি! বলো জান, এমন করছো কেন?”
এশা কান্না চেপে গুমরে বলল,
— “কিছু করোনি তুমি?! তাহলে বলো, কেন আমার হাড়গুঁড়ো সব ভেঙে গেছে? কেন উঠতে পারছি না আমি?”
বলেই আবার ফুপিয়ে কেঁদে উঠে সে!
এশার কান্না শুনে মেহরাজ অসহায়ের মতো মাথা চুলকে বলল,
— “দেখো বউ, এগুলো স্বাভাবিক… কিন্তু তুমি যদি নিতে না পারো, তাতে আমি কি করব, বল তো?”
এশার বাহু ধরে তুলতে গেল সে, কিন্তু এশা রেগে গিয়ে চিৎকার করে উঠে বলে,
— “মেহরাজের বাচ্চা! সারারাত আমায় অশান্তি দিয়েছিস! এখন যদি আরেকবার অশান্তি দিস তো উষ্টা খাবি!”
মেহরাজ মনে মনে হাসল,
— “চলে এসেছে আমার বেগম তার আসল রূপে…”
তারপর গম্ভীর ভঙ্গিতে বলল,
— “বউ জান, আমার বাচ্চার মা, বিবিজান, বেগজান, দয়া করে উঠে যান। অন্তত গোসল টা তো করে নিন, ফজরের আজান হয়ে যাবে!”
কিন্তু এশা ওঠে না, আগের মতো বালিশে মুখ চেপে বলল,
— “আমি উঠতে পারছি না! পারলে তো উঠতাম! আর আমি তোমার সাথে জীবনেও এমন কিছু করব না! আমার কষ্ট হচ্ছে!” মরে যাব আমি!
মেহরাজ হতাশ গলায় বলল,

— “এত অল্পতেই এমন করলে বাকি জীবন কি হবে আমার?”
বলেই, কাথাসহ এশাকে কোলে তুলে নিল সে!
এশা চমকে উঠে বলে,
— “এই! নামাও! মেহরাজ!”
কিন্তু ততক্ষণে সে বাথরুমে পৌঁছে গেছে।
মেহরাজ এশাকে বাথটাবে নামিয়ে, কানে কানে বলে এশার,
— “এমন হাজারো ঘূর্ণিঝড়ে শিকার তোমায় হতে হবে, জান। নিজেকে শক্ত করো।”
এশা আহত চোখে তাকাল মেহরাজের দিকে,
— “আমি বাড়ি চলে যাব! এসব আমার সহ্য হয় না! তুমি যদি আর কিছু করো, আমি তোমার সাথে থাকব না!”
মেহরাজ হেসে বলল,
— “আমি কাপড় এনে দিচ্ছি। গোসল করে নাও। চাইলে আমি করিয়ে দিতে পারি…?”
এশা চোখ কুঁচকে ধমক দিল,
— “একশ হাত দূরে থাকবে! বুঝলে কি বললাম?”
মেহরাজ মুচকি হেসে উঠে যেতে যেতে বলল,
— “এখনও তো সাইক্লোন শিকার হলে, বাকি তো রইল…” হারিকেন ক্যাটরিনা ,আইরা,ক্যালেডোনিয়ান,টাইফুন আর কত কিছুর
নূরি কে বুকে আঁকড়ে ধরে শুয়ে আছে মেহরুব জায়নামাজে
শান্তিতে তলিয়ে আছে দুজনে আজ ৷ নামাজ পড়ে জায়নামাজেই ঘুমিয়ে গেছে! নূরির ক্লান্ত মুখ টা দেখে মেহরুব এর সব ইচ্ছে পানি হয়ে যায়! সে নূরির উপর কোনো কৃতিত্ব ফলায় না!
ভালোবেসে বুকে আঁকড়ে ধরে নিজের নূরি ফুল কে! তার নূরি ফুল তার উষ্ণতা পেয়ে তলিয়ে যায় এক সুন্দর নিদ্রায়!

নূরি কে বুকে আঁকড়ে ধরে শুয়ে আছে মেহরুব জায়নামাজে
শান্তিতে তলিয়ে আছে দুজনে আজ ৷ নামাজ পড়ে জায়নামাজেই ঘুমিয়ে গেছে! নূরির ক্লান্ত মুখ টা দেখে মেহরুব এর সব ইচ্ছে পানি হয়ে যায়! সে নূরির উপর কোনো কৃতিত্ব ফলায় না!
ভালোবেসে বুকে আঁকড়ে ধরে নিজের নূরি ফুল কে! তার নূরি ফুল তার উষ্ণতা পেয়ে তলিয়ে যায় এক সুন্দর নিদ্রায়!

গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ হতেই চারপাশের নিস্তব্ধতা যেন আরও গাঢ় হয়ে উঠে।
পুরনো, পরিত্যক্ত এক কলোনি। বাতাস ভারী, যেন এক অনাঘ্রাত মৃত্যুর গন্ধ লুকিয়ে আছে এতে।
মেহনূর অবাক হয়ে চারপাশ দেখছে। নির্জন জায়গা, অথচ কেমন অস্বাভাবিক ঠান্ডা! নিঃশ্বাস নিতেও বুক চেপে আসে।
তার গলা শুষ্ক হয়ে উঠল, ভয় আর অজানা আতঙ্ক নিয়ে বলে,
— “এখানে কেনো নিয়ে এলেন আমায়?”
এহসান মুখে এক অদ্ভুত হাসি টেনে বলল,
— “আমায় যখন নিজের পাপিষ্ঠ পুরুষ মানো, তাই তোমায় আমার পাপের এক ক্ষুদ্র অংশ দেখাতে নিয়ে এলাম। তবে আমার কাছে এটা পাপ নয়, সবার কাছে এটা পাপ মনে হয়।”
মেহনূরের ভেতর শিরশিরে শীতলতা ছড়িয়ে পড়ে।
কী দেখাবে এহসান?

তার ভয়ংকর দৃষ্টি বলছে, কিছু ভয়াবহ অপেক্ষা করছে।
এহসান শক্ত করে মেহনূরের কব্জি চেপে ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগল কলোনির ভেতরের দিকে।
ভেতরে ঢুকতেই একটা গা ছমছমে অনুভূতি হলো।
দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে থাকা ভাঙা ঘরগুলো, আধাভাঙা জানালা, কোথাও শেকল দিয়ে আটকানো দরজা—একটা নিঃসঙ্গ অন্ধকার সবকিছুকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে।
একটা-দুটো হলুদ আলো ঝিমিয়ে জ্বলছে, কিন্তু আশপাশের অন্ধকার সেই আলো গিলে নিচ্ছে।
তখনই…
“আআআআআআহহহহহ!!!”
একটা নারীকণ্ঠ!
তারপর আরও কয়েকটা চিৎকার!
মেয়েদের আর্তনাদ!
পুরুষের গলা!
কেউ যেন প্রাণপণে বাঁচার জন্য ছটফট করছে! কেউ যেন মৃত্যুর মুখে ধুঁকছে!
কিন্তু মেয়েদের চিৎকার বেশি!
এত তীব্র, এত ভয়ংকর যে মনে হচ্ছে, কেউ তাদের টেনে ছিঁড়ে ফেলছে, কেউ তাদের উপর পৈশাচিক নির্যাতন চালাচ্ছে!
মেহনূরের কান ঝা ঝা করে উঠে!
দম আটকে আসছে!
সে থরথর করে কাঁপতে কাঁপতে এহসানের হাত চেপে ধরে বলে

— “এ কোথায় নিয়ে এলেন আমায়? কারা এত চিৎকার করছে? কারা?”
এহসান হাসল। ঠান্ডা, নির্লিপ্ত এক ভয়ংকর হাসি।
— “চল, একটা জিনিস দেখাই।”
এহসান একটা পুরনো দরজার সামনে এসে দাঁড়ায়।
চিৎকারগুলো আরও কাছ থেকে শোনা যাচ্ছে!
দরজাটা ঠেলে খুলে দিল সে।
ঝাঁ করে একটা পচা, নোংরা, ভয়ানক গন্ধ মেহনূরের নাকে আঘাত করল!
নিকাব ভেদ করেও সেই গন্ধ তার নাকে লেগে গেল!
একসাথে গলা ভোমরা, পচা রক্ত, নষ্ট মাংস আর জ্বলে যাওয়া চামড়ার মতো এক গন্ধ!
মেহনূর চট করে মুখ ফিরিয়ে নিল, চোখ-মুখ কুঁচকে উঠে তাকাল সামনের দিকে।
সামনে তাকিয়েই তার চোখ বিস্ফোরিত হলো!
তার ভেতরটা এক ঝটকায় উলটে গেল!
ঘরের ভেতর…

আত্মার আগলে পর্ব ৪১ (২)

মেহনূর চিৎকার করতে চায়, কিন্তু গলা দিয়ে কোনো শব্দ বের হলো না!
তার পেটের ভেতর সবকিছু উল্টে যেতে লাগল!
সে আর সহ্য করতে পারল না!
ধপ করে হাঁটু গেড়ে বসে একপাশে বমি করে দিল!
শরীর কাঁপছে, হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসছে!
এত বিশ্রী, এত ভয়ংকর দৃশ্য সে কখনো দেখেনি!
এগুলোর থেকে এহসানের কারো কলিজা টেনে বের করার দৃশ্যও শতগুণে ভালো!

আত্মার আগলে পর্ব ৪৩