আত্মার আগলে পর্ব ৬ (২)
সানজিদা আক্তার মুন্নী
এহসান মেহনূরকে কাপড় রাখার কক্ষে নিয়ে আসে। একটা চেয়ারে বসায়। তারপর অস্থির কণ্ঠে বলে—
— ব্যথা পেয়েছিস? হাঁটুতে, পায়ে— কোথাও? বল আমায়।
মেহনূর চোখ বুঁজে শ্বাস নিতে নিতে বলে—
— ন… না… আপ-আপনি চলে যান… এখন এখান থেকে চলে যান… আমার… আমার…
এহসান বলে—
— আচ্ছা, আচ্ছা, আমি বুঝেছি। তুই শাড়ি ছেড়ে থ্রি-পিস পরে নিস। রাখা আছে নীল ওয়ারড্রবে, বুঝেছিস?
কিন্তু এহসান যায় না। নীল ওয়ারড্রব থেকে একটা সাদা থ্রি-পিস বের করে মেহনূরকে দিয়ে তারপর কক্ষ থেকে বেরিয়ে যায়।
মেহনূর অবাক চোখে চারপাশে তাকায়। এত এত ক্যাবিনেটের শেলফ, এত এত কাপড়, জুতো— আল্লাহ মাবুদ! পুরো একখানা কাপড়ের শোরুম মনে হচ্ছে! মানুষ বড়লোক হলে যা হয়… আর কতটা শৌখিন হয়, তা এখানেই বোঝা যাচ্ছে!
কিন্তু এসব বাদ দিয়ে মেহনূর শাড়ি খুলে উক্ত থ্রি-পিসটি পরে কক্ষ থেকে ধীর পায়ে বেরিয়ে আসে। দেখে, এহসান তাহাজ্জুদে দাঁড়িয়ে গেছে। তাই সেও ওজু করে এসে ওড়নাখানা পেঁচিয়ে নেয় মাথায়। কী করবে? নামাজের হিজাব তো নেই!
এহসান সালাম ফিরিয়ে মেহনূরের দিকে তাকিয়ে বলে—
— আয়, নামাজ পড়ে নে।
মেহনূর কিছু বলে না, চুপচাপ এসে নামাজে দাঁড়িয়ে যায়। সময়ও নেই। চার রাকাআত পড়তে পারবে কি না, তাতেও সন্দেহ। ফজরের আজান যে হয়ে যাবে!
এহসান নিজের মোবাইল আর মসজিদের চাবি নিয়ে কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসে, উদ্দেশ্য— মসজিদে যাওয়া। তাড়াতাড়ি যাচ্ছে, কারণ মসজিদের মুয়াজ্জিন বাড়ি গেছেন, তাই এখন তার দায়িত্ব আজান দেওয়া।
মেহনূর তাহাজ্জুদ আদায় করে মহান রবের কাছে হাত তুলে ডুকরে কেঁদে ওঠে—
— ইয়া রব! আপনি জানেন, আমি এই পরিস্থিতিতে টিকতে পারব না… কিন্তু তাও কেন আমায় এমন পরিস্থিতিতে ফেললেন? ইয়া রব, আমায় মাফ করে দিন… আমায় একটু দয়া করুন, মাবুদ!
হাজারো কান্না আর মোনাজাত শেষে মেহনূর সিজদায় মুখ গুঁজে থাকে…
ফজরের আযান কানে আসতেই মেহনূর বুঝে যায়— এহসানই দিচ্ছে এই আযান। মুহূর্তেই মনে পড়ে, এই কারণেই সে এত তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে গিয়েছিল। চোখ বন্ধ করে ধীরে ধীরে আযানের উত্তর দিতে থাকে সে।
আযান শেষ হতেই নামাজে দাঁড়িয়ে যায় মেহনূর। নামাজ শেষে বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়ায়। আবছা আলো আর কুয়াশায় মোড়ানো এই স্বপ্নময় সকাল মুগ্ধ নয়নে দেখতে থাকে সে। এই সময়টা রহমতের— রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“সকালের (ফজরের) সময়ে তোমাদের জন্য বরকত রাখা হয়েছে।”
(আবু দাউদ: ২৬০৬, তিরমিজি: ১২১২)
বড় তালুকদার বাড়ি যেন এক বিশাল সাম্রাজ্য, কোনো অংশেই কম নয়। বিশাল এক জমির ঠিক মধ্যখানে দাঁড়িয়ে আছে “তালুকদার মঞ্জিল”— এর চারপাশ ঘিরে উঁচু দেয়াল। বাড়ির পেছনে বিশাল এক পুকুর, সামনের দিকে সুবিশাল বাগান। একপাশেও বাগান, আরেক পাশেও। দুই বাগানের মাঝে প্রশস্ত রাস্তা, যা সদর গেট থেকে শুরু হয়ে মূল দরজার সিঁড়িতে এসে থেমেছে।
তালুকদার বাড়ি তিনতলায় বিভক্ত—
প্রথম তলা:
বিশাল বসার কক্ষ,
সাত-আটটি ছোট কক্ষ,
একটি বড় কক্ষ, যা দুই ভাগে বিভক্ত— এক অংশ খাওয়ার জন্য, অন্য অংশ রান্নাঘর।
দ্বিতীয় তলা:
বড় করিডর, যার এক পাশে চারটি কক্ষ।
করিডর পেরোলেই রাজকীয় বসার কক্ষ— রাজকীয় সোফা, বইয়ের শেলফ, সাজানো অজস্র আসবাব।
বসার কক্ষের চারপাশে অসংখ্য ব্যক্তিগত কক্ষ।
একটি বড় কক্ষ, যা বাড়ির মহিলাদের নামাজের জন্য নির্ধারিত।
করিডর পেরোলেই বিশাল কক্ষ— এটাই এহসানের ঘর।
তৃতীয় তলা:
চারপাশে প্রশস্ত বারান্দা।
একটি বসার কক্ষ “!পুরুষদের নামাজের জন্য মসজিদের মতো বিশাল কক্ষ।
আরও কয়েকটি কক্ষ।
এসব ভাবতে ভাবতেই মেহনূরের চিন্তার জাল ছিঁড়ে যায়—পিছন থেকে এশা ডাক দেয় তাকে।
মেহনূর পিছনে তাকিয়ে দেখে, এশা একজন কাজের মহিলাকেও নিয়ে এসেছে। হয়তো রুম পরিষ্কার করার জন্য। এশা তাকে উদ্দেশ্য করে বলে—
— তুমি পরিষ্কার করে নাও, আপা।
— আচ্ছা।
কাজের মহিলা দ্রুত ঘর পরিষ্কার করতে লেগে যায়।
এশা এবার মেহনূরের দিকে ফিরে বলে—
— নিচে চল, আম্মা ডাকছে। চা-নাশতা খেতে হবে তো।
মেহনূর জোরপূর্বক হাসে।
— হুম।
কী আর করার আছে?
এশা গভীর দৃষ্টিতে মেহনূরের দিকে তাকিয়ে মৃদু স্বরে বলল,
— তুই রেগে আছিস, তাই না? তীব্র রাগ… আমার প্রতি?
মেহনূর মুচকি হেসে ঠোঁট চেপে ধরল, যেন নিজের কষ্ট গোপন করার চেষ্টা করছে। তারপর ধীর স্বরে বলল—
— নিজের আপনজনই যখন আমায় বিক্রি করে দিল, তখন তোকে আর কী বলব? কিই বা করার আছে আমার? আর রাগ… মেহনূর কিছুক্ষণ থেমে গলা পরিষ্কার করল, রাগ তো অন্তত এই মুহূর্তে আমার সঙ্গে ঠিক যায় না, কারণ আমি শুধুই একটা কাঠের পুতুল মাত্র…
এশার বুকটা মোচড় দিয়ে উঠল। ভাঙা গলায় অসহায়ের মতো বলল—
— ইসস! যদি পারতাম, তবে তোকে নিয়ে কোথাও চলে যেতাম… অজানা কোনো দেশে, যেখানে থাকবে না কোনো রক্তারক্তি, থাকবে না কোনো হিংসা-বিবাদ, থাকবে না কোনো বিশ্রী লড়াই… থাকবে শুধু ভালোবাসা, কোমলতা আর স্নিগ্ধতা।
মেহনূরের চোখ টলমল করে উঠল, কিন্তু সে দ্রুত চোখের কোণে জমে থাকা জল মুছে ফেলল। তারপর মৃদু হেসে বলল—
— এসব ভাবনা কোনো দিনও সত্যি হবে না, জান! আমাদের এই তালুকদার বংশের রক্তারক্তির মধ্যেই জীবন পার করতে হবে।
এশা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে মাথা নাড়িয়ে বলল—
— আল্লাহ একটা জীবন দিলেন, তাও জন্ম নিতে হলো এই নিকৃষ্ট মানবদের পরিবারে!
মেহনূর ধীরে ধীরে এশার কাছে এগিয়ে এসে তার মাথায় স্নেহভরে হাত বুলিয়ে দিল। কণ্ঠটা নরম হয়ে গেল, যেন কোনো বড় বোন ছোট বোনকে সান্ত্বনা দিচ্ছে।
— বোকা মেয়ে, আল্লাহকে কখনো এভাবে বলতে নেই। তিনি-ই জানেন, কিসে আমরা ভালো থাকব, আর কিসে না। মেহনূর একটু থামল, তারপর গভীর স্বরে যোগ করল, এই দুনিয়ার কষ্ট তো কিছুই না, সবচেয়ে ভয়ংকর হলো কবর, হাশরের দিন! আমাদের আসল চিন্তা হওয়া উচিত সেটার জন্য প্রস্তুত হওয়া।
এশা চুপ করে তাকিয়ে রইল মেহনূরের দিকে। মেহনূর তার হাত ধরে বলল—
— আচ্ছা, চল নিচে যাই। দাদু ডাকছে।
এশা কিছু বলল না, শুধু মাথা ঝুঁকিয়ে হাঁটা দিল।
ফজরের নামাজ শেষ করে এহসান যখন বাড়ি আসে মেহনূরকে নিচে কোথাও দেখতে না পেয়ে বিরক্ত হয়ে উঠল। রাগে গলা চড়িয়ে ডাকল—
— “মেহনূর! মেহনূর! নিচে এসো!”
তার এমন আকস্মিক ডাক শুনে এনিসা বেগম তড়িঘড়ি রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে এলেন, মাথার কাপড় ঠিক করতে করতে জিজ্ঞাসা করলেন—
— “কী হয়েছে আব্বা? এমন চিল্লাচ্ছিস কেন?”
এহসান বিরক্ত দৃষ্টিতে মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল—
— “আম্মা, ও কি জানে না তালুকদারের বাড়ির নিয়ম? ফজরের নামাজ পড়ে তেলাওয়াত করেই বাড়ির বউদের রান্নাঘরে কাজে লেগে পড়তে হয়!”
এতটুকু বলতেই সিঁড়ির ওপর থেকে এশার কণ্ঠ শোনা গেল—
— “ভাইজান, এই তো চলে এসেছে!”
এহসান ও এনিসা বেগম ঘুরে তাকাতেই দেখল, ধীরে ধীরে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামছে মেহনূর ও এশা।
মেহনূর ফিসফিস করে এশাকে বলল—
— “তোর ভাই এই সাত সকালে কুত্তার মতো ঘেউ ঘেউ করছে কেন রে?”
এশা কিছুটা শান্ত স্বরে বলল—
— “আরে বেয়াদব! নিজের স্বামীকে কেউ এভাবে বলে?”
মেহনূর তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে উত্তর দিল—
— “কিসের স্বামী? আমি উনার ভাতিজি!”
এশা বিরক্ত হয়ে বলল—
— “হয়েছে, মেরি মা! এবার মুখ বন্ধ কর!”
নিচে এসে মেহনূর এনিসা বেগমের দিকে তাকিয়ে বলল—
— “দাদু…”
মেহনূরের গলা থেকে কথা কেড়ে নিয়ে একপ্রকার এহসান মুহূর্তেই গলা চড়িয়ে বলল—
— “— “আর একবার দাদু মুখ থেকে বের করেছিস তো, তোর গাল ফাটিয়ে দিব! আম্মা ডাকবি, আম্মা, এখন উনি তোর শাশুড়ি, দাদু নয়!”
মেহনূর ঘাড়ত্যাড়া উত্তর দেয়—
— “দাদু ডাকব, তাতে আপনার কী?”
এহসান কাঠগলায় বলে—
— “থাপ্পড়ে গাল লাল করে দিব, বেয়াদব নারী!”
তখনি পিছন থেকে মনিরুল সাহেব বলেন—
— “এহসান, তুমি নিজের সীমা ভুলে যাচ্ছো! তুমি কি জানো না, তালুকদার বাড়িতে নারীদের অসম্মান করা হয় না? তুমি কি ভুল গেছো, মেহনূর তোমার স্ত্রী, তার সাথে কতটা সদয় হতে হবে!” আর যদি একবার শুনি তুমি ওকে থাপ্পড় মারার কথা বলছো, তো আমার যেকোনো হাত তোমার গালেও বসে যেতে পারে!”
এহসান নিরবে দাঁড়িয়ে থাকে!
মেহনূর এই সুযোগে কি হাত ছাড়া করার মতো মানুষ না, সে সাহস নিয়ে বলে—
— “বড় দাদা, তোমার ছেলে আমাকে দুদিনে চারটারও বেশি থাপ্পড় মেরেছে, এর বিচার তুমি কিন্তু করো!”
এহসান এমন আকস্মিক কথা শুনে অবাক চোখে একবার তাকায় মেহনূরের দিকে, তো একবার নিজের আব্বার দিকে, তিনি তো রেগেমেগে তাকিয়ে আছেন এহসানের দিকে!
মেহনূর পরিস্থিতি বুঝে এশাকে নিয়ে যায় রান্নাঘরে! চলে আসে এখানে থাকলে এহসান এখন কাঁচা চিবিয়ে খেয়ে নিব “!
রান্নাঘরে এসে এশা মেহনূরকে বলে—
— “তুই নিজের বিপদ নিজে ঢেকে আনছিস, মেহনূর ভাইজান, তোর গালে কয়েকটা লাগিয়েও দিতে পারে!”
মেহনূর গা ছাড়া ভাব নিয়ে বলে—
— “তোর ভাই তো কাপুরুষ, তাই আমায় মারধোর করবে! এখন এসব বাদ দিয়ে বল, কি কি বানাবো?”
এশা কিছু বলতে যাবে, তখনি এহসান পিছন থেকে বলে—
— “এশা, তুই যা, এই বেয়াদব নারী, নাহয় আমিই দেখিয়ে দিব!”
ব্যস, মেহনূরের ভয় লাগতে শুরু করে, কারণ এত বড় মানুষি করলো, এখন এহসান একা পেয়ে যদি কষিয়ে কয়েকটা চড় বসায় ওর গাল বরাবর, তখন কি এই মুখ আর মুখের মতো থাকবে? না, তাকবে না, বাংলার পাঁচ হয়ে যাবে!
এশা এহসানের কথা মতো চলে যায়, এহসান একটু এগিয়ে এসে বলে—
— “সবার জন্য রুটি পরোটা, তরকারি আগেই করা আছে, গরম করবি আর অন্য জাত নাস্তা তৈরি করবি, আর আমার জন্য গুরুর মাংস রান্না করবি!”
মেহনূর দাঁত চেপে বলে—
— “কুত্তার মাংস রেঁধে দেই, খেয়ে নিন!”
এহসান মেহনূরের এমন উক্তি শুনে চোখ রাঙ্গিয়ে বলে—
— “ভুলে গেছিস, থাপ্পড়ের কথা, বেয়াদবির জন্য যেটা খেয়েছিলি, দিব আরও একটা দিব?
মেহনূর তাচ্ছিল্যের সুরে বলে—
— “আপনি ভুলে যাবেন না, এখন যদি আমার গালে একটা থাপ্পড় পড়ে, তো আপনার গালেও পড়বে, তাই এখন আমি আপনায় ভয় পাই না!”
এহসান একটা চেয়ারে বসতে বসতে বলে—
— “চুপচাপ রান্না কর, আর যে বেয়াদবি টা করলি, তার ফল ভোগার জন্য তৈরি হও!”
মেহনূর আটার ডিব্বা নিতে নিতে বলে—
— “কুত্তা সবসময়ই ঘেউ ঘেউ করতে পারে, কামড় দিতে পারে না!”
এহসানও হেসে উত্তর দেয়—
— “সময় হোক, তখন না হয় বুঝে নিবি, এই কুত্তা কোথায় কোথায় আর কেমন কেমন কামড় দিতে পারে!”
মেহনূর এমন উত্তর শুনে চুপসে যায়, ছিঃ, কি লজ্জাজনক ভাষা, নিজে আটা মাখাতে মাখাতে বলে—
— “লজ্জা লাগে না, ভাতিজি কে এমন কথা বলতে?”
এহসান মুচকি হেসে বলে—
— “আমারই ভুল হয়েছে, কাল রাতের কাজটা যদি সুন্দর মতো সেরে নিতাম, তাহলে আজ হয়তো আর তোর মুখ থেকে অন্তত এই লজ্জা লাগার কথা শুনতে হতো না!”
মেহনূর আর একটা বাক্যও উচ্চারণ করে না! চুপচাপ কাজ করতে তাকে, তখনি রান্নাঘরে প্রবেশ করে এনামের বড় ছেলে ইনাম, যার বয়স ৮ বছর, রান্নাঘরে এসে মেহনূরকে দেখে অবাক চোখে বলে—
— “ক্বারীয়া, মেহনূর আপনি?” (মেহনূর ক্বারী, প্রতি রমজানে সে দারুল ক্বেরাতে ক্বারীয়ানা পড়ায়, তাই)
মেহনূর ইনামকে দেখে মুচকি হেসে বলে—
— “হ্যা ইনাম, আমি কিন্তু, তুমি মসজিদ পড়তে যাওনি, আজ বাড়িতে কেন?”
ইনাম বলে—
— “হ্যা গিয়েছি তো, হুজুরের জন্য চা নিতে এসেছি! জানেন ক্বারী, আমি তো কোরআন শরীফ খতম শুরু করে ফেলেছি!”
মেহনূর মুচকি হেসে বলে—
— “মাশাল্লাহ, মাশাল্লাহ! আমি বলেছিলাম তো তোমায়, যে তুমি পারবে!”
ইনামের চোখ যায় এহসানের দিকে, এহসান দেখে ইনাম বড় মানুষের মতো প্রশ্ন করে—
— “ছোট আব্বা, আপনি এখানে কি করছেন?”
এহসান মেহনূরের দিকে তাকিয়ে হেসে উত্তর দেয়—
— “তোমার ছোট আম্মা কে পাহাড় দিচ্ছি বাবা!”
ইনামের ছোট্ট মাথায় এই কথাটি পুরোপুরি ঢোকে না, তাই কিছু না বলে বেরিয়ে যায়!
ইনাম বেরিয়ে যেতে এহসান বলে মেহনূরকে—
— “চা বসা, হুজুরকে চা দিতে হবে, আর আমাকেও চা দে!”
মেহনূর কটমট করে তাকিয়ে উত্তর দেয়—
— “হুজুরকে চা দেই, আর আপনাকে বিষ দেই, বিষ খাবেন?”
এহসান ঠোঁট কেটে হেসে বলে—
— “আল্লাহ এক জবান দিছে তোরে, যে জবান দিয়ে সবার জন্য সুন্দর কথা বের হলেও, আমার জন্য তা হয় না! আস্তাগফিরুল্লাহ মাবুদ, মাফ করো, তুমি!”
মেহনূর কিছু বলতে যাবে, তখনি কারো আওয়াজ কানে আসে, মনিরুল সাহেব চিৎকার করে এহসানকে ডাকছেন! এহসান সাথে সাথে চমকে উঠে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে আসে রান্নাঘর থেকে, মেহনূরও কিছু মুহূর্ত পরে রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে আসে!
আত্মার আগলে পর্ব ৬
এসে বুক ধরধর করতে তার “! বসার কক্ষে, ওর দাদা ছোট ভাই মেহরুব আর তার আব্বা এসেছেন! মেহনূর এগিয়ে যেতেই, মেহরুব একপ্রকার দৌড়ে এসে ঝাপটে, নিজের বোনকে বুকে জড়িয়ে ধরে, যেন ছাড়লেই এহসান মেহনূরকে এক ঝটকায় নিয়ে যাবে, মেহরুব পাগলের মতো বলতে তাকে—