আপনাতেই আমি পর্ব ৭২
ইশিকা ইসলাম ইশা
আজ প্রায় দুদিন হয়েছে আমেনা এসেছে।আসা থেকে তিনি নিজের ঘর থেকে বের হয় নি।আমির,দাদী,তীর,কেউ ই এই বিষয় নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রয়োজন মনে করে নি। বিশেষ করে আমির তো না ই।রুপ যদিও আমেনার রুমে গেছে কয়েকবার তবে আমেনা তেমন কোন কথা বলেনি।
রোজ কে কোলে নিয়ে বসে আছে সোফায় রিদি।বারবার আড়চোখে ওপরের ঘরের দিকে তাকাচ্ছে।যে ঘরে আছে আমেনা বেগম।হাজার কিছুর পরেও তো মা।রিদি যেতে চেয়েও যাচ্ছে না।আমেনার কারনে তার প্রথম সন্তান হারিয়েছে।এখন কোন মতেই রোজ কে হারাতে পারবে না।এমনিতেই রোজের জীবন আজানা কারনে আতঙ্কিত।মা হিসেবে রোজ কে নিয়ে রিদি কোন রিস্ক নিতে চাই না। তাছাড়া তীব্রর ব্যাপার ও কিছু বুঝছে না রিদি।
রিদির ভাবনার মাঝেই খাবার হাতে রুম থেকে বেরিয়ে আসে একজন স্টাফ।রিদি ডাক দিয়ে বলে,
শুনুন!!!
জি ম্যাম!!!
কতোবার বলেছি আমাকে ম্যাম বলবেন না!আমার নাম ধরে ডাকবেন।আমি আপনার ছোট!
সরি।মাঝে মাঝে ভুলে যায়!!
আচ্ছা!!ওনি কি খাবার খায় নি!!!
খেয়েছে!!তবে অল্প কিছু খেয়েছে!!
ওহহহ!! আচ্ছা শুনুন!আমি খাবার রেঁধে দিচ্ছি আপনি ওনাকে দিয়ে আসবেন!!
ঠিক আছে ম্য… মানে রিদিতা!!
আপনি একটু আমাকে সাহায্য করুন!রোজ এখনি ঘুম থেকে উঠেছে ও এখন কারো কোলে যাবে না!!আপু বাসায় নেই। তৃপ্তি কে নিয়ে গেছে স্কুলে।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
রিদির হাতের বিরিয়ানির গন্ধে মৌ মৌ করছে পুরো বাড়ি!!রিদি রোজ কে কোলে নিয়ে রান্না করে হাঁপিয়ে উঠেছে।মেয়েটা আজকাল একদম কোল ছাড়া হয় না।রিদি এখানে আসার পর রান্না করে নি।করে নি বলতে করতে দেয় নি কেউ!!
‘এই খাবারটা ওনাকে দিয়ে আসুন!!!
কিন্তু!!ওনি তো খাবার ঠিক মতো খাচ্ছে না!!
এটা দিয়ে আসুন!হয়তো খাবে!!
মেয়েটা রিদির কথামতো বিরিয়ানি নিয়ে আমেনার রুমে যাই।রিদি রোজ কে নিয়ে ঘরে চলে আসে।ঘেমে একাকার হয়ে গেছে দুইজন।রিদি রোজ কে বিছনায় শুইয়ে দিল।
মামনি!!তুমি দিন দিন ভীষণ দুষ্টু হচ্ছ!!খুব জালাচ্ছো আম্মু কে!!!
রোজ হাতের খেলনা নিয়ে তার ভাষায় অ উ করতেই রিদি মুচকি হাসল!!
সময় তখন দুপুর গড়িয়ে কিছু সময় পার হয়েছে!রিদি বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে।স্টাফ মেয়েটি বলেছে আমেনা তার দেওয়া খাবার চেটেপুটে খেয়েছে।এরপর ওষুধ খেয়ে চুপচাপ শুয়ে পড়েছে।
আচ্ছা ওনার কি হয়েছে?? একবার কি দেখে আসব!!বলতে গেলে অনেক বছর ই মা কে দেখে নি রিদি।সেই বাচ্চা মারা যাবার পর থেকে মায়ের সাথে ইচ্ছা করে যোগাযোগ বন্ধ করেছে রিদি।এরপর আর কোন খোঁজ রাখে নি।শুনেছে আমেনা গ্রামেই থাকছে।ভাবনার মাঝেই রিদি চমকে উঠল,
‘পেটে কারো হাতের স্পর্শে!!! নাসারন্ধ্রে এসে বারি খেল পরিচিত সুবাস! একহাতে পেট চেপে নিজের সাথে মিশিয়ে ধরল তীব্র।ঘাড়ে ঠোঁট দিয়ে স্লাইড করতেই কেঁপে উঠলো রিদি।নিজেকে ছাড়াতে চাইলে আরো শক্ত করে চেপে ধরে তীব্র।ঘন ঘন শ্বাস ফেলে নিজেকে সামলাতে চেয়ে হুট করেই চোখ খিচে বন্ধ করে নেয় রিদি!!রিদি কিছু বলার বলার আগেই তীব্র রিদিকে ঘুরিয়ে নিজের দিকে ফিরিয়ে গলায় মুখ গুঁজে জোরে নিঃশ্বাস টেনে নেয় নিজের মাঝে!!
রিদি অস্পষ্ট সুরে বলে,
ছা ড়ু ন!!!
তীব্র আবারো জোরে নিঃশ্বাস টেনে নেশাক্ত কন্ঠে বলে,
আপনি এতো নেশাক্ত কেন জান!!আপনার ঘ্রাণ এতো টেষ্টি কেন?
রিদি জোর করে নিজেকে ছাড়িয়ে বলে,
জায়গা,সময় দেখে রোমান্টিক হওয়া ভালো বর মশাই!!!
তীব্র দুহাতে রিদির কোমর জড়িয়ে বলে,
বর মশাই!!!নট ব্যাড!!
রিদি মুচকি হেসে প্রশ্ন করে,
এই সময়ে হঠাৎ!!
তীব্র রিদির গালে ঠোট ছুঁইয়ে বলে,
মিস করছিলাম!!!
রিদি হেসে বলে,
আপনি ফ্রেশ হয়ে আসুন!আজ বিরিয়ানি রান্না করেছি!! এখুনি নিয়ে আসছি!!
তীব্র ভু কুঁচকে বলে,
হঠাৎ!!!!
রিদি হচকচিয়ে বলল,
এমনি!! আসুন!!
আপনাতেই আমি পর্ব ৭১
কথাটা বলে চলে যেতে চাইলে তীব্র রিদির হাত ধরে ফেলে! খানিকটা মুচকি হেসে বলে,
মায়ের জন্য রান্না করেছো এটা বলতে সমস্যা নেই।আমি বুঝি!
রিদির চোখ ছলছল করে উঠলো!! হাত ছাড়িয়ে সোজা নিচে নেমে গেল।”মা”কতো না মায়ার ডাক!! কিন্তু সে অভাগী!!কথাটা ভেবে তাচ্ছিল্য হাসল রিদি।