আপনাতেই আমি সিজন ২ পর্ব ১০
ইশিকা ইসলাম ইশা
চারদিকে ডিজে গানে সবাই মেতে উঠেছে।রিদি সবার উত্তেজনা দেখে অবাক হয়ে আছে।সবাই কতো উৎসাহ হয়ে শুনছে।রিদি কিছুটা ভয়ে ভয়ে বলল,
মেঘ তোর মনে হয় না আমার এখানে গান গাওয়া উচিত নয়!
মেঘ রেগে তাকালো রিদির দিকে।রিদি মেঘের তাকানো দেখে কাচুমাচু করে বলল,
এভাবে তাকাস কেন??
তোর কি বাল!!সবাই ওর গান না ওর শরীর দেখতে ইন্টারেস্ট!
রিদি শুকনো ঢোক গিলে বলল,
ছি!! কি বলছিস!!
বাল!!বলছি না দেখ!ছেলেরা কেমন করে তাকিয়ে আছে!!
রিদি আশেপাশে তাকিয়ে বুঝল আসলেও তাই।তবে দূর থেকে অভিক আর মিলন কে দেখা গেল তাদের দিকে তাকিয়ে আছে।রিদি চোখ ফিরিয়ে বলল,
শোন গান না গাইলে হয় না!!
থাপ্পড় চিনিস!!দিবো!!
তুইই কতো খারাপ!!ঐ ভয়ংকর রাক্ষস আর তুই দুইটা এক!একজন দেয় আর একজন ভয় দেখাই!
রিদির কথায় মেঘ ফিক করে হেসে বলল,
কি রে তোর বর কোথায়??বরের কথা মনে পড়ছে বুঝি!!যা আমি দোয়া করলাম তোর আজ তোকে কোলে তুলে ঘুরবে!!
বর কথাটাই রিদি চমকে উঠল! ভীত কন্ঠে বলল,
দোয়া করেছিস নাকি বরদোয়া করছিস?
মেঘ রিদির এমন ভীত মুখটা দেখে হেসে বলল,
আহারে!তুই তীব্র চৌধুরীকে দেখিস নি এই পর্যন্ত এইটুকু মানতে আমার ভীষণ কষ্ট হয়!
চুপ কর! রাক্ষস এর নাম নিবি না।দেখ এসব ভুলে যা যে ওনি কেউ হয় আমার। কিছুটা ভীত গলায় কথাটা বলে থামল রিদি। তীব্র!এই নামটাই যথেষ্ট বুকের ধুকপুকানি বাড়ানোর জন্য!!
মেঘ তবুও বলল,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
তুই তো জানিস ই না। চারদিকে শুধু তীব্র চৌধুরীর গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। বিশেষ করে মেয়েরা। অর্ধেক মেয়েরা তো পার্টিতে কেজি খানি মেকআপ মেখেছে তীব্র চৌধুরীর আশায়। যাই বল রুপ আপুর জন্মদিন হলেও মেয়েরা প্রায় এসেছে তীব্র চৌধুরীর আশায়।
রিদি কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলল,
কি শুরু করেছিস?ঐ মানুষটার নাম ও আমার সামনে নিবি না। বিরবির করে বলল,নামটাই যথেষ্ট কাউকে ভয় দেখানোর জন্য!!
আচ্ছা বাদ দে। চল এবার তোর পালা!
বাদ দে না মেঘ!আমি গান গাইব না!!
মেঘ এবার রেগে বলে,
ঐ অর্ধনগ্ন জ্যাকুলিন মহিলা তোকে এত কথা শোনালো এরপরেও যাবি না। আল্লাহ! তোকে কি দিয়া বানাইছে!ধুর যা ইচ্ছা কর!আমি কে যে আমার কথা শুনবি।থাক আমি গেলাম।
মেঘ রেগে মেগে সোজা গিয়ে দাঁড়াল ভাইয়ের কাছে।মিলন বোনের রাগী মুখটা দেখে বলল,
কি রে কার সাথে ঝরগা করে এলি।
ভাইয়া আমি বাসায় যাব!!
এখুনি!!
হ্যাঁ!!চল!!না গেলে আমি একাই যাব।
বলে কিছুদূর হাঁটতেই থেমে গেল।মুখে ফুটে উঠল মুচকি হাসি।পেছনে ঘুরে দৌড়ে স্টেজ এর কাছে গিয়ে দাড়ালো।ভেসে এলো রিদির মনোমুগ্ধকর কন্ঠস্বর,
Allah, mujhe dard ke qaabil bana diya
Toofaan ko hi kashti ka saahil bana diya
Bechainiyaan samet ke saare jahaan ki
Jab kuch na ban saka toh mera dil bana diya
Oh, saathi, tere bina raahi ko raah dikhe na
Oh, saathi, tere bina saahil dhuaan-dhuaan
ম্যাজেন্টা আর কালো কম্বিনেশন এর শাড়ি পরিহিত শ্যামল মায়াবতী মেয়েটাকে দেখে মেঘের মনে হলো।এই শ্যামা রং যেন আল্লাহ বিশেষ করে রিদির জন্য ই বানিয়েছে। আর রিদির ছোট মুখের আদলে ঢেলে দিয়েছে মায়া।যেন মায়ার সমুদ্র।ডাগর ডাগর ঘন পল্লব এ ঢাকা মায়াবী চোখ। এই চোখ যে কারো মন কাড়তে সক্ষম। যেন বিশেষ কোন সৌন্দর্য নিয়ে পৃথিবীতে এসেছে মেয়েটা।তবে ঠোঁটের কোনে হাসিটা আজ রংহীন লাগছে।
Aankhein moondein toh jaane kise dhoondhein..
Ke soya jaaye na, ke soya jaaye na…
Kise dhoondhein yeh khwahishon ki boondein?
Ke soya jaaye na, ke soya jaaye na
(নাজমা চৌধুরী রিদিকে দেখে চরম অবাক হলেও তিনি রিদির গান শুনে খুশি হলেন।মনে মনে ভাবল,একদম মায়ের মতো হয়েছে সেরা সুন্দরী যা সবার দেখার উর্ধ্বে। বাকিরাও বেশ অবাক হয়েছে রিদির গান শুনে।সবাই শুনেছে রিদি ভালো গান করে কিন্তু এতো ভালো হয়তো আশা করেননি)
Maano nindiya piroya jaaye na
Maano nindiya piroya jaaye na
Allah, mujhe dard ke qaabil bana diya
Toofaan ko hi kashti ka saahil bana diya
Bechainiyaan samet ke saare jahaan ki
Jab kuch na ban saka toh mera dil bana diya
Oh, saathi, tere bina raahi ko raah dikhe na
Oh, saathi, tere bina saahil dhuaan-dhuaan
রিদির গান শেষ হতেই করতালিতে মুখরিত হল চারপাশ।রিদি অবাক হয়ে সবাইকে দেখল।রুপ ছুটে এসে বলল,
কি সুন্দর গান করিস রে রিদি!! খুব ভালো হয়েছে।
রাইফা:খুব ভালো লাগলো তোমার গান!মাঝে মধ্যে আমাদের শুনালেও তো পারে!!
রিদি মুচকি হাসল।সবাই রিদির প্রশংসায় পঞ্চমুখ।তা দেখে নিয়া নামক রমনী চোখ,মুখ শক্ত করে দাঁড়িয়ে আছে। একটু পর মনে মনে কিছু একটা ভেবে বাঁকা হাসল।
পার্টিতে যে যার মতো এখন ইনজয় করছে।ঘড়িতে সময় তখন অনেকক্ষণ সবাই রুপ কে কেক কাটার জন্য বলছে কিন্তু রুপ চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। অপেক্ষা করছে!!
আরফিন রুপের মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
কেক কাটো মামনি! তীব্র হয়তো আসবে না।
রুপ টলমল চোখে বলল,
তীব্র ভাইয়া প্রমেস করেছিল আমার এবারের জন্মদিনে আসবে।রিদি রুপের মুখের দিকে তাকালো রুপের মলিন মুখটা দেখে রিদির মায়া লাগল। যদিও সে চায় তীব্র নামক মানুষটা না আসুক তবে রুপের দিকে তাকিয়ে কেন জানি মনে হল সে আসুক। মিষ্টি মেয়েটার মুখে জোর পূর্বক হাসিটা না থেকে মন থেকে হাসিটা আসুক। জন্মদিনে মেয়েটার মুখে উজ্জ্বল হাসি ফুটুক!
আরফিন দীর্ঘশ্বাস ফেলে আরো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে ঘড়ির দিকে তাকালো।ঘড়িতে প্রায় ১২ টা বাজতে গেল। আরফিন এবার বলল,
এবার তোমার কেক কেটে নেওয়া উচিত মামনি!! তীব্র হয়তো……..
আরফিনের কথা শেষ না হতেই শ শ করে পরপর দুটা গাড়ি এসে থামল চৌধুরী বাড়ির প্রাঙ্গণে। চকচকে কালো মার্সিডিজ গাড়ির দিকেই দৃষ্ট সবাই।সবার মুখে বিস্ময়ে হা হয়ে আছে।রিদি গাড়ি দেখেই ভয়ে দাদির পিছনে মাথা নুইয়ে দাঁড়াল।মনে মনে দোয়া পড়ে ফু দিল।সেদিনের পর তীব্র আর জিন,ভুত নিয়ে জোৎস্না আপার কথা। সব মিলিয়ে রিদি এখনো বেশ ভয়ে আছে।রিদির ধারনা তীব্র শরীরে তানারা বসবাস করে।তাই তো সবার থেকে দুরে আর রাগ ও কি ভয়ংকর।রিদি দাদির পেছনে লুকিয়ে মৃদু কাপছে। অদ্ভুত ভাবেই তীব্রর ঘ্রাণ এসে নাকে লাগছে।মনে হচ্ছে এখনি হয়তো পরপর থাপ্পড় পড়বে।
এদিকে কালো মার্সিডিজ গাড়ি থেকে কালো সুট পরিহিত তীব্র কে দেখে রুপের মুখে হাসি ফুটে উঠল।এগিয়ে আসতে আসতে গম্ভীর স্বরে বলল,
শুভ জন্মদিন রুপালি!
রুপ খুশিতে গদগদ হয়ে বলল,
ধন্যবাদ!!
তীব্রর এন্ট্রি তে যেন চারদিকে গুঞ্জন শুরু হয়েছে।মেয়েরা পারে না যেন চোখ দিয়ে গিলে খায়। তীব্র কালো চশমার আড়ালে আশেপাশে নজর বুলালো।তীব্র লাবিব কে ইশারা করতেই লাবিব ফিসফিস করে কিছু বলে সরে গেল।
এদিকে রুপ কেক কেটে সবাইকে খাইয়ে দিল। তীব্র কে খাওয়াতে গেলেও তীব্র না খেল না খাওয়ালো।এতে রুপের মন কিছুটা খারাপ হলেও সে খুশি যে তীব্র এসেছে।তীব্র ভীর দেখে বিরক্ত হয়ে চলে যেতে চেয়েও কয়েক পা পিছিয়ে গেল।থমকে গিয়ে দাঁড়াল স্থির হয়ে। দু হাত পকেটে গুজে তাকালো রিদির দিকে।দাদি সরে যাওয়াতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে চোখ মুখ খিচে বিরবির করে কিছু বলছে। পাতলা ঠোঁটজোড়া অনবরত কিছু জপ করছে। তীব্র ঠোঁটের কোনে কালো তিলটার দিকে তাকিয়ে এগিয়ে গেল রিদির দিকে।
এদিকে রিদি তীব্রর ভয়ে ভীত হয়ে বার বার দোয়া পড়ছে আর বলছে আল্লাহ ও ভয়ংকর রাক্ষস আমার সামনে না আসুক!
কিন্তু রিদির দোয়া কবুল হলো না। তীব্রর কড়া পারফিউম এর ঘ্রাণ খুব কাছে থেকে পেতেই চট করে তাকাল রিদি। আতঙ্কে রিদি জমে গেছে। তীব্র ঠিক তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।রিদি নত মস্তিষ্কে শুধু দেখল তীব্রর কালো ব্যান্ডের সুজ। ভয়ে মৃদু কাঁপছে রিদির শরীর এই বুঝি ঙ্গান হারালো। কিন্তু হুট করেই রিদির সামনে এসে দাড়ালো নাজমা চৌধুরী বেশ খুশি মনে বলল,
তুই আসবি!আমি ভাবতেও পারি নি!!
তীব্র দাদির দিকে তাকিয়ে বলল,
এসেছি কারন আমার ব্যাক্তিগত কিছু দরকার আছে!!
তোর ব্যাক্তিগত কথাই বলব আমি। কোথায় থাকিস কি করিস কিছু বলিস না আমাকে!আমার যে চিন্তা হয় এটা কবে বুঝবি তুই!
তীব্র গম্ভীর গলায় বলল,
চিন্তা করার জন্য যে আছে সে করবে। তোমার বয়স হয়েছে এখন বেশি চিন্তা করে প্রেসার বাড়ানোর কি দরকার।
নাজমা চৌধুরী তীব্র দিকে অসহায় মুখে তাকালেন,
তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে।যা বলাটা খুব জরুরী!!আমি চাই তোর সাথে রুপের…..
ও কোথায়?????
নাজমা চৌধুরী কিছু না বুঝে হচকচিয়ে অবাক হয়ে বলল,
কে কোথায়??
তীব্র আশেপাশে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে।স্টেজ থেকে নেমে বাসার দিকে গেল। নাজমা চৌধুরী তখনো অবাক হয়েই তাকিয়ে রইল!!
ঢকঢক করে পুরো গ্লাস পানি শেষ করে টেবিলে রাখল রিদি।ভয়ে এখনো তার শরীর মৃদু কাঁপছে।তখন দাদি তার সামনে আসতেই রিদি এক প্রকার লুকিয়ে পালিয়ে এসেছে ওখানে থেকে।রিদির ভাবতে এখনো অবাক লাগছে ভয়ংকর রাক্ষস টা তার সামনে দাঁড়িয়ে ছিল।দুইজনের মধ্যে দূরত ছিল বেশ। তবুও রিদির মনে হচ্ছিল তীব্র তাকেই দেখছে।রিদি রুমে যাওয়ার জন্য ঘুরতেই চমকে উঠল,
আপনি এখানে??
হ্যাঁ!আসলে তোমাকে সরি বলতে এসেছিলাম।তখনকার বিয়েভিয়ার এর জন্য আমি দুঃখিত রিদিতা।
রিদি খানিকটা অবাক হলেও বলল,
সমস্যা নেই আপু!আমি কিছু মনে করিনি।
সত্যি বলছো!তুমি কিছু মনে করোনি!
না আপু!!
তুমি খুব ভালো গো রিদি।খুব মিষ্টি তুমি।কথাটা বলে নিয়া কিছুটা খুরিয়ে খুরিয়ে হেটে যেতেই রিদি বলল,
একি আপু!!আপনার কি হয়েছে??
নিয়া মলিন মুখে বলল,
তোমাকে অপমান করার শাস্তি দিয়েছে আল্লাহ!দেখ না পা টা মচকে গেছে।
রিদি ব্যাথিত সুরে বলল,
প্লিজ এইভাবে বলবেন না আপু!!আমি রুপ আপুকে ডেকে নিয়ে আসি!!!
নিয়া সাথে সাথেই বলল,
না!আসলে আজ রুপের জন্মদিন!তাই আমি চাই না ওর সমস্যা হোক।তুমি শুধু আমার একটা কাজ করবে??
কি কাজ আপু!!
এদিকে আমার ফ্রেন্ডরা সবাই আছে।ওদের কি একটু ডেকে দিবে!!প্লিজ!!!খুব ব্যাথা করছে রিদি।প্লিজ একটু হেল্প করো।ওদের ডেকে দাও!!
আমি যাচ্ছি আপু আপনি বসুন!
রিদি খালি জায়গায় গিয়ে দেখল এখানে কেউ নেই।পুল সাইডের দিকে কিছুটা অন্ধকার।রিদি একটু সামনে এগিয়ে কাউকে খুঁজতে যেতেই হুট করেই কেউ রিদির মুখ চেপে ধরলো।এক হাত শাড়ি সরিয়ে পেটে রাখতেই শোনা গেল কারো কন্ঠস্বর,
নিয়ার সাথে টক্কর!!এখন বুঝবে কেমন লাগে!!
রিদি চমকে উঠে নিয়ার কথায়।নিয়া মেয়েটি রিদির সামনে এসে দাড়ালো একহাতে রিদির মুখ চেপে বলল,
খুব শখ না!! নিয়ার সাথে টক্কর নেওয়ার!আজ তোকে বোঝাব নিয়ার সাথে টক্কর নেওয়ার ফল কি হয়।এই শায়ের তোর নাকি এই কালিনির বডি ফিগার ভালো লেগেছে।তাহলে আর ওয়েট করছিস কেন।যা ইনজয় কর।
নিয়ার কথা শুনে রিদির চোখ ভিজে উঠল।মুখ চেপে ধরাই কোন কথা বলতে পারছে না।তবে ছটফট করতে লাগলো।রিদি নিজের সর্ব শক্তি দিয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে তেড়ে গিয়ে থাপ্পড় বসাল নিয়ার গালে!!
ছি!!তুমি এতো নিচে নামতে পারো!! এখুনি আমি সবাই কে বলব তোমরা কতটা নিচু!!
কথাটা বলে রিদি কয়েক পা যেতেই চুলের মুঠি শক্ত করে চেপে ধরল নিয়া।পরপর কয়েকটা থাপ্পর মেরে বলল,
বলার অবস্থায় থাকলে তো বলবি!!খুব সাহস তাই না!!
এই শায়ের যা এর সাথে যা করার কর!
শায়ের শয়তানি হেসে বলল,
থ্যাংকস দোস্ত!একদম সেক্সি ফিগার মাইরি!!কথাটা বলে রিদিকে ছুতে যেতেই রিদি ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে পালাতে চাইলে নিয়া আবারো চুলের মুঠি ধরে থাপ্পড় মেরে দিল।তাল সামলাতে না পেরে রিদি উস্টে পড়ল মেঝেতে।মেঝেতে বসেই আর্তনাদ করে উঠলো,
আহহহ!!আম্মু!!!
পাকা মেঝেই জোরে পড়াই হাতের কুনুই ছিলে রক্ত পড়তে লাগলো।নিয়া রিদিকে ঐ অবস্থায় কাটা জায়গায় চেপে ধরে মাথাটা দেয়ালে চেপে ধরল।রিদি আর্তনাদ করার আগেই চেপে ধরল রিদির মুখ।রিদি যন্ত্রণায় ছটফট করে উঠলো। ব্যাথায় ককিয়ে উঠল পুরো শরীর।অনবরত পানি পড়তে লাগল চোখ থেকে।মাথা ঝিমঝিম করে উঠল। নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হলো।
তবুও নিজেকে ছাড়ানোর অপ্রান চেষ্টা করতেই শোনা গেল কারো পায়ের খটখট শব্দ।নিয়া,শায়ের কারো আসার আওয়াজ শুনে রিদিকে নিয়ে অন্ধকারে কিছুটা ঢুকে গেল। অন্ধকার থেকে হালকা আলোয় বাইরে দেখা গেলেও ভেতরের দিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার।
অন্ধকারে একটা অবয়ব এসে দাড়ালো সুইমিং পুলের দিকে। নিয়া,শায়ের অবয়ব টি চিনতে না পারলেও রিদি নিভু নিভু চোখে চেয়ে দেখল বিশালদেহী লম্বাটে এক পুরুষ অবয়ব।রিদির চিনতে ভুল হলো মানুষ টাকে। হাজারো যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে রিদির চোখ মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল।নিয়া আর শায়েরর দৃষ্টি তখনো সেই মানুষটি দিকে।রিদি তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করে উঠে শেষ শক্তি প্রয়োগ করে নিয়ার হাত কামড়ে সাথে সাথে চেঁচিয়ে উঠলো,
“”রাক্ষস মশাই!!!বা……
রিদির ব্যাথায় জর্জরিত কন্ঠ প্রতিধ্বনি তুলে পৌঁছাল সেই অবয়ব এর কানে।কিছু সময় স্থির থেকে হুট করেই পিছনে ফিরল।
অবয়ব টাকে পেছনে ফিরতে দেখে নিয়া,শায়ের ঘাবরে গেল।
এবার অবয়ব টি চপল পায়ে অন্ধকারের দিকে আসতেই রিদিকে ছেড়ে দিল নিয়া।শায়ের তবুও নিজের লালসা মেটাতে রিদির দিকে বুঝতেই নিয়া শায়েরকে বলল,
এদিকেই আসছে সালা ভাগ!!
শায়ের দেখল অবয়ব টি বেশ কাছেই চলে এসেছে।তাই আর অপেক্ষা না করে রিদিকে ছেড়ে পেছনের দিকের অন্ধকারে মিশে গেল।এদিকে রিদি ছাড়া পেতেই কোন মতে উঠে ছুটে এসে জরিয়ে ধরলো সেই অবয়ব টি কে।
তীব্র চমকালো,থমকালো।কয়েক পা পিছিয়ে গিয়েও নিজেকে সামলে নিল। তীব্রর অবাক হওয়ার মাঝেই ভেসে এলো কারো মৃদু কন্ঠস্বর,
আপনাতেই আমি সিজন ২ পর্ব ৯
“রাক্ষস মশাই আমাকে মারবেন না প্লিজ!ওরা আজ অনেক মেরেছে! আমার খুব কষ্ট হচ্ছে! প্লিজ আমাকে আর মারবেন না রাক্ষস মশ”
কথাটা বলেই রিদি ঢলে পড়ল তীব্রর বুকে। তীব্র বিষ্ময় হতবাক হয়ে তাকিয়ে রইল রিদির দিকে।