আপনাতেই আমি সিজন ২ পর্ব ২০
ইশিকা ইসলাম ইশা
আজকে অনেক বছর পর মায়ের বিশাল সুটকেস খুলে বসেছে রিদি।ছোট বেলায় মা বলত ,
এই যে আমার আম্মাজান!আপনি যখন বড় হবেন তখন এই সুটকেসে যা আছে তার সবটাই হবে আপনার।ছোট রিদি মনে করত এর মধ্যে হয়তো অনেক খেলনা বা চকলেট আছে!তাই তো সবসময় মায়ের কাছে বায়না করত এটা খুলে দেওয়ার।কি কি আছে সে দেখবে।
কিন্তু তার মা বিনিময়ে হেসে বলত,
আমার মা আগে বড় হন আপনি।যখন সব বুঝতে ও জানতে শিখবেন তখন না হয় এর মধ্যকার সব কিছু তোমার হবে! আমার ছোট মা টা আমার জীবন সম্পর্কে জানতে পারবে। আম্মা !!আপনি তো এখন অনেক ছোট!আপনাকে ছেড়ে যেতে আমার ভীষণ কষ্ট হবে আম্মা!নাড়ি ছেঁড়া ধন আপনি আমার! আমার কতো বছরের সাধনার ফল আপনি!
রিদির ছোট্ট মুখখানা তখন ড্যাবড্যাব করে মায়ের দিকে তাকিয়ে থাকত।সে বুঝতে ব্যর্থ হতো মায়ের কথা।কিন্তু ছোট রিদু এই সুটকেস খুলা নিয়ে যখন জেদ করত দিয়া আরো কথা বলত কিন্তু ছোট রিদু কি আর এসব মানত।সে জেদ করত ভীষণ।তখন দিয়া তাকে এটা ওটা বলে ভুলিয়ে দিত!সব ভেবে চোখ ছলছল করে উঠল রিদির।রিদির জীবনে মা ই ছিল সব।বাবা নামক মানুষটার কাছে মেয়ে হিসেবে থাকা ছিল অপরিচিতদের মতোই।যেন দূরের আত্মীয়। কিন্তু রিদি তারই রক্ত বহন করছে।তার বায়োলজিক্যাল ফাদার।হাহ…..হায়রে জীবন!
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
রিদি চোখ মুছে দাদির দেওয়া চাবি দিয়ে সুটকেস খোলার চেষ্টা করে। কিন্তু পুরোনো সুটকেস টা কেমন জং ধরা।রিদি আগে অনেকবার খুলতে চেষ্টা করছে কিন্তু তার কাছে এটার কোন চাবি ছিল না।সে জানত না চাবিটা তার দাদি লতিফা বেগমের কাছে ছিল।কাল হুট করেই সুটকেসের চাবিটা দিয়ে বলল,
তোর মায়ের আমানত ছিল চাবিটা। দিয়া বলেছিল সে যদি না থাকে তবে তার রিদুর বড় হওয়ার পর চাবিটা যেন তাকে দেয়। আমার সেদিন মনে হয়েছিল তুই বড় হয়েছিস!তোর বাপের কাজের জন্য মুখের উপর যোগ্য জবাব দিয়েছিস! তাই ভাবলাম এবার এই আমানত তোকে বুঝিয়ে দেওয়া উচিত!রিদি দাদির কথায় প্রথমে অবাক হয়েছিল। পরক্ষণেই আবার খুশি হয়ে যায়।বুঝ হবার পর মায়ের সুটকেস টা খোলার চেষ্টা কম করে নি।তবে এটা সাধারণ সুটকেসের মতো না।একটু আলাদা টাইপ পাসওয়ার্ড সেট করা।
রিদি চাবি ডুকিয়ে কিছুক্ষণ টানাটানি করতেই সুটকেসের লক খুলে গেল।লক খুলে এবার বেরিয়ে এলো ছোট্ট একটা মেশিনের মতো। কিছু এখানে লেখা আছে ০-৯ টা ডিজিট।রিদি চরম অবাক হল।এটা কি তবে সাধারণ সুটকেস না।রিদি বুঝল এখানে পাসওয়ার্ড দিতে হবে! কিন্তু এখানে আবার কোন পাসওয়ার্ড দিবে?এটা ভাবতেই দেখে সেই চাবির উপর কয়েকটা ডিজিট লেখা রিদি ডিজিট ৫টি টাইপ কলতেই লক খুলে যায়।রিদি হতবাক হয়ে তাকায়।এমন ব্যাগ সে এ জন্মে দেখেনি!মা এমন ব্যাগ পেল কোথায়!
রিদি দীর্ঘশ্বাস ফেলে উপরের কাপড় সরালো। সবার প্রথমে নজরে আসল ছোট্ট ছোট্ট কয়েকটা জামা!হাতে ক্রুশের কাজ করা কয়েকটি জামা দেখে ভু কুঁচকে তাকাল রিদি। প্যাকেট করা জামা খুলে চমকে উঠলো,
কি সুন্দর!!ক্রুশ কাজের জামাটা একদম গোলাপ ফুলের মতো!রিদি ভারি অবাক হল।জামাটা হয়তো ৩-৬মাসের বাচ্চার হবে!মা তার জন্য জামা গুলো কেন রেখেছে!এগুলো কার??
রিদির ভাবনার মাঝেই জামার ভেতর থেকে একটা কাগজ পড়ল। হলুদ রঙের কাগজটা নিতেই বুঝল কাগজটা পুরানো অনেক।ভাজ খুলতেই গুটি গুটি অক্ষরে কিছু লেখা রয়েছে।হাতের এতো সুন্দর লেখা দেখে রিদি অবাক হল।মায়ের হাতের লেখার উপর গড়িয়ে পড়ল কয়েক ফোঁটা পানি।রিদি ঠোঁট ছোয়াল লেখার উপর,
ছলছলে চোখে পড়ল লিখাটুকু,
কাদিস না মা! তুই যে আমার মা!মা কখনো কাঁদে না।রিদি চমকে উঠল!মা কি করে জানত সে কাঁদবে! আচ্ছা মারা কি আগে থেকেই সব বুঝতে পারে!রিদি চোখ মুছে আবারো পড়তে লাগল,
এই ড্রেস গুলো তোর ছোট্ট বেলার!আমি খুব যত্ন করে নিজের হাতে বানিয়েছিলাম তোর জন্য।রেখে যাচ্ছি তোর মেয়ের জন্য!অবাক হচ্ছিস তাই না!!তোর মেয়ের কথা বলাতে! ইনশাআল্লাহ আল্লাহর ইচ্ছায় সব হবে!
শক্ত করে জামাগুলো বুকে জরিয়ে ধরে ডুকরে কেঁদে উঠলো রিদি।মা কেন তার পাশে নেই??কেন? আল্লাহ কেন মাকে নিয়ে গেল?রিদি কাঁদতে কাঁদতে জামাগুলো ভাজ করে রাখল।পাশেই বড় একটা এলবাম।রিদি এলবাম খুলতেই দেখল পুরো এলবাম জুড়ে তার ছবি!একটা ছবিতে সে দাদুর কোলে বসে আছে।হাতে তার বিশাল সাইজের চকলেট।সে ওটা সামলাতে ব্যস্ত। ছোট্ট হাতে চকলেট খানা যেন ধরছে না তবুও সে বুকের সাথে চেপে ধরে আছে।আর দাদু হাস্যোজ্জ্বল মুখে তাকিয়ে আছে রিদির দিকে।
আরো একটা ছবিতে সে দাদির সাথে।দাদির হাতে খাচ্ছে কিছু। সম্ভবত পিঠা হবে।লাল টুকটুকে একটা টুপি পরনে।রিদি ভীষণ অবাক হল।প্রতিটি ছবি তার খুব ইউনিক মোমেন্টে তোলা।যেমন সে দোড়াচ্ছে,খেলছে,ফুল ছিঁড়ছে, পানির সাথে খেলছে,কখনো হাসছে,কখনো কাদছে,আবার কখনো মুখ ফুলিয়ে রেখেছে।দু একটা ছবি বাদে সবই শুধু তার ছবি।যেন কেউ খুব শখ আর যত্ন করে রিদির প্রতিটি মূহূর্ত ক্যামেরা বন্দি করেছে।তবে আরো একটা ছবিতে সে বাবার কোলে বাবার চুল ধরে টানছে আর রুপেস হাসছে। রিদি ছবিটা দেখে অবাক হয়ে চেয়ে রইলো।সে কখনো বাবার স্পর্শ বা ভালোবাসা পেয়েছে বলে মনে হয় নি!আরো একটা ছবি যেখানে কাথায় মোড়ানো একটা বাচ্চা কোলে অপলকে সেই বাচ্চার দিকে তাকিয়ে আছে মিষ্টি একটা মেয়ে।মা মেয়ের প্রথম সাক্ষাৎ হয়তো।রিদি যেন দেখল প্রতিটি জীবন্ত ছবি।প্রায় ৬০-৭০ টার বেশি ছবি ছিল।
এরপর এক কোনায় দেখল একটা বড় সাইজের ডায়রি।রিদি কৌতুহল হয়ে ডাইরি হাতে নিল।ডাইরির নিচে কয়েকটা সুন্দর সুন্দর শাড়ি।রিদি বের করল শাড়ি গুলা। শাড়ির নিচে পুরানো কাগজের চিরটুক তাতে লেখা,
“মায়ের শাড়ি মেয়ে পড়লে নাকি মেয়েরা বড় হয়ে যাই”আমার রিদু কি পড়বে মায়ের শাড়ি?
রিদি আবারো ডুকরে উঠল!সে পড়বে মায়ের শাড়ি!
শাড়ির ঠিক নিচে একটা কাপড়ে আচ্ছাদিত কিছু একটা বের করে আনল রিদি।কাপড় সরাতেই একটা ফটো ফ্রেম বেরিয়ে এলো। রঙিন ফটোতে অনেক মানুষ দেখল রিদি।অবাক হয়েই দেখলো। আভিজাত্য বাড়ির মতো মহল পিছনে। সেখানে চেয়ারে বসে আছে এক মধ্যবয়স্ক পুরুষ!পুরুষটির পাশে দাঁড়িয়ে আছে একজন রমনী। রমনীর পাশে অল্প বয়সী এক কন্যা।আর পুরুষটির কাধে হাত রেখে দাঁড়িয়ে আছে দুষ্টু হাসিতে একটা কিশোরি মেয়ে। আর নিচে বসে আছে একটা গম্ভীর মুখো ছেলে।রিদি খুটিয়ে খুঁটিয়ে দেখল। দুষ্টু হাসি মেয়েটাকে চিনে নিল রিদি।”মা”হ্যা তার মা।আর !আর কাউকে তো চিনল না। আচ্ছা!!এরা মায়ের পরিবার!মানে তার নানু!!
রিদি ভাবল!!সে তো শুনেছে তার মায়ের কেউ নেই।বাবা মা কেউ নেই।তবে এই ছবি!!
রিদি সাইডের জায়গা থেকে বের করল একটা ফাইল! যেখানে রয়েছে কিছু কাগজপত্র।রিদি সেসব দেখল না।তেমন করে রেখেই আবারো তাকালো ছবির দিকে।মায়ের কিশোরী বয়সের ছবির সাথে তার মিল শতাধিক।
তপ্ত দুপুরে রিদি বিরক্ত হয়ে কলেজের মাঠে বসে আছে।সামনে বসে তখন থেকেই দাঁত কেলিয়ে হাসছে নীর।নীরের হাসিতে রিদির বিরক্তিকর ভাবটা আরো বাড়লো কটমট করে বলল,
হাসা বন্ধ কর!
নীর তবুও হেসে হেসে বলল,
বেচারার জন্য আমার ভীষণ কষ্ট লাগছে রিদু!
রিদি কটমট করে বলল,
থামবি!!
আচ্ছা রিদু! তোর বিয়ের সাথে দেশ রসাতলে যাওয়ার সম্পর্ক হাসিব ভাই ব্যাখ্যা করল না কেন?
রিদি বিরক্ত চোখে চেয়ে নীরের সামনে থেকে হাঁটা ধরল!এই মেয়ে এখন তাকে জ্বালিয়ে মারবে! অসহ্য!!
নীর রিদির চলে যাওয়া দেখে হেসে ওর পিছু নিল। কিন্তু কিছুক্ষণ আগের ঘটনা মনে হতেই দমফাটা হাসি আসছে তার।
নীর আর রিদি ছোট বেলা থেকেই একসাথে পড়াশুনা করেছে।ছোট বেলা থেকেই দুইজনে পাক্কা সখী।রিদিদের বাড়ি ছেড়ে কিছুটা ভিতরে নীরদের বাসা।বাবা,মা,ভাই নিয়ে তার পরিবার।নীরের বাবার সবজির ব্যাবসা আছে।ফুলতলি গ্রামের বাজারে তার বড় সবজির দোকান। নীর হাস্যোজ্জ্বল একটা মেয়ে! সিরিয়াস মোমেন্টেও তার হাসা লাগে!নীরের ছোট ভাই নীরব ক্লাস ৮এ পড়ে। আর সে রিদির সাথে ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ছে।যদিও রিদির প্রথম বর্ষ শহরের কলেজে গেছে।এরপর ট্রান্সফার করে ফুলতলি গ্রামের কলেজে ভর্তি করেছে তার বড়চাচা।
সকাল সকাল কলেজে আসতেই ফুল হাতে নিয়ে কোথা থেকে ছুটে আসে একজন ছেলে।
এই যে চুল কন্যা! কেশবতী! আমার ভালোবাসা গ্রহন করুন!
রিদি বিরক্ত হয়ে তাকালো,
কি সমস্যা আপনার ভাইয়া?
ছেলেকি বিষ্ময় প্রকাশ করে বলল,
ভাইয়া!!আরে ভাইয়া না স্যাইয়া বলো!
রিদি এবার চরম বিরক্তি নিয়ে বললো,
আপনাকে কতোবার বলব আমি বিবাহিত!
আর আমি তোমাকে কতোবার বলব কেশবতী কন্যা আমি তোমার এই মিথ্যা গ্রহন করছি না!
রিদি চোখ মুখ কুঁচকে তাকাল,
সে বিবাহিত।এখন কি এর সার্টিফিকেট নিয়ে ঘুরতে হবে!নাকি পিছনে লাগাতে হবে সে বিবাহিত!
রিদি কিছু বলবে তার আগেই ছুটে এলো নীর।
আরে হাবিব ভাই!কি ব্যাপার??
হাবিব উরফে ছেলেটা কিছু বলার আগেই রিদি বলল,
এই নীর!তোর হাবিব ভাই বিশ্বাস করছে না আমি বিবাহিত!কাল থেকে আমার বাচ্চাটাকে আনতে হবে বুঝলি!ছোট বাচ্চাটা আমার!ওকে তো আর প্যাকেট করে আনতি পারি না।
নীর বিষ্ময় নিয়ে বলল,
বাচ্চা!!
রিদি কটমট দৃষ্টিতে তাকালো,
হ্যাঁ আমার বাচ্চা!
নীর রিদির তাকানো দেখে জোরপূর্বক হেসে বলল,
হ্যাঁ! হ্যাঁ! বাচ্চা!
তোমার বাচ্চা আছে কেশবতী কন্যা??
হ্যাঁ আছে! দেখুন হাসিব ভাই!আপনি বড় চাচুর একজন স্টুডেন্ট আর আমাকে আমার পড়াশোনার জন্য অনেক সাহায্য করেছেন!তার জন্য ধন্যবাদ! কিন্তু প্লিজ এসব বলে আমাকে অস্তিত্বিতে ফেলবেন না!
হাসিব রিদির কথায় তোয়াক্কা না করে আবারো বলল,
তোমার বেবি আছে রিদিতা!!
রিদিতা তাকালো হাসিবের সহজ সরল মুখের দিকে।ছেলেটা খুব সাধারণ আর সহজ সরল! সেদিন মাহির কে হসপিটালে ভর্তি করানোর সময় রিদির খোলা চুল দেখে নাকি প্রেমে পড়েছ?হাসিবের এই অদ্ভুত ভাবে প্রেমে পড়া ব্যাপার টা সত্যিই অদ্ভুত!রিদিতা হাসিবের কথায় কিছু বলার আগেই রিদিতা স্বাভাবিক ভাবেই বলল,
না নেই! কিন্তু আমি বিবাহিত! এটাই সত্যি হাসিব ভাই!
হাসিব প্রতি উত্তরে হাসল,
ভালোবাসো খুব তাইনা!!
রিদি ফোস করে একটা নিঃশ্বাস ফেলে বললো,
হয়তো!হয়তো না!!
মান অভিমান চলছে বুঝি!!
রিদি এবার হাসল! তীব্র নামক মানবটির সাথে তার মান অভিমান এর সম্পর্ক কখনো না ছিল আর না কখনো হবে। শুধু নামমাত্র একটা সম্পর্ক!
হাসিব আবারো বলল,
তুমি খুব ভালো একটা মেয়ে রিদিতা।আমি অনেক মেয়েই দেখেছি!তবে আজকাল কার ন্যাকা মেয়েদের মতো লাগে নি।খুব সাধারণ মিষ্টি একটা মেয়ে!আমার আম্মা বরাবরই তোমার মতো মেয়েকে বৌমা করতে চাই।আর মায়ের পছন্দ ই আমার পছন্দ।তোমাকে আমার মায়ের পছন্দের তালিকায় গুলিয়ে ফেলেছি।আসলে সরি!
তবে হ্যাঁ!তোমার স্বামী সন্তান আছে এটা শুনে কিন্তু আমি হাট এট্যাক করতে করতে বেঁচেছি!!বাপরে!!দেশের কি অবস্থা!!এইটুকু পিচ্চির নাকি স্বামী সন্তান!দেশ একদিন রসাতলে যাবে বুঝলে!!
হাসিবের এমন কথায় ফিক করেই হেসে দিল নীর!রিদি সামান্য হাসল।হাসিব বেশ রসিক বটে।
আচ্ছা!!শুনো!! ভাগ্যিস তুমি আমাকে পাত্তা দেওনি।আজকাল মেয়েদের মতো একটা রেখে একটা ধরার মতো হলে আমি কিন্তু তোমার মায়ায় গভীর ভাবে জরিয়ে শোকাহত হয়ে দেবদাস হয়ে ঘুরতাম!
নীর চট করেই বলল,
আজকাল কার মেয়ে বলতে কি বুঝাচ্ছেন হাসু ভাই??
হাসিব চট করেই উওর করল,
ঐ যে তোমার বান্ধবী প্রিয়ার মতো!আমার বন্ধু টাকে কি ছ্যাঁকা টাই না খাওয়ালো।আহা!দুঃখু পেয়ে আমার বন্ধুটা ছেড়ে চলে গেল!!
নীর বিষ্ময় নিয়ে বলল,
মরল কবে?
আহা!মেয়ে মানুষ!আরে আমার বোন মরে নি দেশ ছেড়ে গেছে!!
তা আপনিও বুঝি চলে যাবেন!
হাসিব হাসলো,
হ্যাঁ চলে যাব!তবে দেশ ছেড়ে না। আপাতত গ্রাম ছেড়ে শহরে যাব!
কেন??রিদির জন্য!!
হাসিব ভূ কুঁচকে বলল,
মেয়ে তুমি দুই লাইন বেশি বুঝো!আমার চাকরি হয়েছে তাই মাকে নিয়ে শহরে যাব! মা ছাড়া আমার পৃথিবীতে আর কেউ নেই তাই আজ শেষ চেষ্টা করে রাজি করানোর পরিকল্পনা ছিল।এরপর দেখাদেখি!তারপর বিয়ে! কিন্তু সব তো জলে গেল!!
ব্যাপার না!!
এই রিদু!তুমি কি ঝারা ফু জানো নাকি?জানলে একটু দোয়া করে দাও তো আমার ভাগ্য বধূ যেন তোমার মতো হয়!
রিদি হচকচিয়ে তাকাল! পরক্ষনেই মুচকি হেসে বলল,
ইনশাআল্লাহ!!আমার চেয়ে শতাধিক ভালো মেয়ে পাবেন!
আপনাতেই আমি সিজন ২ পর্ব ১৯
আমিও দোয়া করি!তোমাদের মান অভিমান ভেঙে যাক। হাসিবের কথায় রিদি মলিন হাসল!হাসিটাও যেন আজকাল আর আসে না! শুধু কি আজকাল নাকি!!প্রান খুলে সে কবে হেসেছিল ঠিক মনে নেই!মা মারা যাওয়ার পর থেকেই চঞ্চল রিদি ধীরে ধীরে নিশ্চুপ হয়ে শুধু পরিস্থিতি মেনে আর মানিয়েই চলছে তার জীবন!