আপনাতেই আমি সিজন ২ পর্ব ৭১ (২)

আপনাতেই আমি সিজন ২ পর্ব ৭১ (২)
ইশিকা ইসলাম ইশা

“””Tu Hi Arman, Tu Hi Sach Hai
Dhadkanon Mein Tera Rang Hai
Maine Dil Pe Likh Diya Hai
Tu Mera Hai… Tu Mera Hai
Tere Dil Pe Hak Mera Hai
Tu Sanam Beshak Mera Hai
Phir Lakeerein Ho Ya Na Ho
Tu Mera Hai… Tu Mera Hai
(গানটা নিজ দায়িত্বে শুনে নিবেন)

এদিকে রিদি তীব্রর এমন কান্ডে হতবাক হয়ে মুখ তুলতে চাইলে তীব্র রিদির মাথা বুকে চেপে ধরে মুখটা কানের কাছে নিয়ে ফিসফিস করে বলল,
বৌ আসলে ইলেকট্রনিক সমস্যা হয়েছে!লাইট অফ করা হয়েছে।ভয় পাওয়ার কিছু নেই আমি আছি আপনি এভাবেই থাকুন।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

রিদি অবাক হলেও তীব্রর কথা মেনে নিল। তাছাড়া বসে বসে মাজাও ব্যাথা করছে। তীব্রর বুকে রিদি আর একটু গুটিয়ে গেল নিজ থেকে। মুখ তীব্রর বুকে চেপে ধরাই এমনিতেই অন্ধকারে কিছু দেখা যাচ্ছে না।তবে চারদিকে এখনো জোরে জোরে মিউজিক বাজছে দেখে রিদি বলল,
কিন্তু হুট করে এতো জোরে মিউজিক বাজছে!!!
ওটা আলাদা সিস্টেমে চলছে তাই! নতুন সং!একশেন সিকুয়েন্স আছে এই গানে!!!আপনি শুধু আমার সাথে একটু কোঅপারেট করুন। অনেকক্ষণ তো…..
তো আপনি আমার থেকে দূরে ছিলেন।নাউ প্লিজ হোল্ড মি টাইটলি।আই নিড এ টাইট হাগ!
পাগল আপনি!! আশেপাশে এতো মানুষ!!
আই ডোন্ট কেয়ার!!

রিদি আর কিছু না বলে ক্লান্ত ভঙ্গিতে তীব্রকে শক্ত জড়িয়ে ধরল। সে জানে তীব্র কে এখন কিছু বলে লাভ নেই।তীব্র রিদিকে এক হাতে বুকে জড়িয়ে নিতেই রিদি আলাদা কিছু অনুভব করে একটু মুখ তুলতেই তীব্র রিদির মাথা আবারো বুকে চেপে বলল,
বৌ!!ফিল দা মিউজিক!!!
রিদি গানের লাইন গুলো অনুভব করল,
প্রতিটি কথা যেন তীব্রর মারাত্মক ভালবাসার গান শোনাচ্ছে।
এদিকে তীব্র শক্ত করে একহাতে রিদিকে চেপে ধরে অন্যহাতে সাইলেন্সার পিস্তলের ট্রিগারে পরপর চাপ দিতেই রক্ত ছিটে এসে তীব্রর মুখে পড়ল।তীব্রর হিংস্র চাহনিতে কেঁপে কেঁপে উঠছে সবার যেন অন্তরাত্মা। তীব্র আর রিদিকে ঘিরে আছে লাবিব আর কিছু গাড।যারা প্রানপনে গুলি ছুড়তে ব্যস্ত।
এদিকে এসব থেকে আজানা রিদি তীব্রর বুকের তার নিজস্ব আশ্রয়ে মেতে আছে। কিন্তু হুট করেই রিদির কেমন ঘুম ঘুম পাচ্ছে।না চাইতেও ধীরে ধীরে রিদির চোখজোড়া বন্ধ হয়ে এলো। তীব্র রিদির মাথায় পরপর চুমু দিয়ে ঘুমন্ত রিদিকে জড়িয়ে রইল।চারদিকে তখন গান বন্ধ হয়েছে।তীব্রর ভয়ংকর হিংস্র বাঘের মতো গর্জনে মূহুর্তে সব স্থির হয়ে গেল,

আমার কলিজায় হাত দিতে আসিস!!!আজ নিজের কলিজা নিয়ে কিভাবে বেঁচে ফিরিস সেটাই দেখব!!
তীব্র চারদিকে নজর বুলালো।শকুনের নজরে চারপাশ দেখে।রিদিকে বুকে চেপে ধরল।চারদিকে গাড আর গাড। কিছুক্ষণ আগের সব লোকজন যেন জাদুর মতো ভ্যানিস হয়ে গেছে।চারদিকে ছড়িয়ে আছে নরমাল পোশাক ধারী কিছু লোকজন।যারা ছন্মবেশে অনুষ্ঠানে প্রবেশ করেছিল।আর বর্তমানে যারা বন্দি।লাবিব একটা চেয়ার এনে তীব্রর সামনে রাখল। তীব্র রিদিকে সহ বসল সেই চেয়ারে।রিদিকে ভালোভাবে কোলে তুলে রিদির শাড়ির আঁচল দিয়ে পিঠসহ পুরা ঢেকে দিতেই নাজমা চৌধুরীর লাশের দিকে তাকালো তীব্র। এক ধ্যানে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বিরস মুখে আবারো দূর আকাশে তাকালো।এর মাঝেই তীর কাউকে এনে ফেলল ঠিক তীব্রর পায়ের কাছে।
রক্তাক্ত অবস্থায় ঠিক তার পায়ের কাছে এসে পড়ল লম্বা চওড়া কালো কুচকুচে একটা লোক।যার ছদ্মবেশ কিছুটা ভিখারির মতো। তীব্র রিদিকে দুহাতে জড়িয়ে চুলের মাঝে ঠোঁট ছুঁইয়ে বলল,

সোজা কলিজায় আঘাত করতে এসেছিস??ভেবে আসা উঠিত ছিল!আদো ফিরতে পারবি কি না?
রক্তাত লোকটা উঠে বসার চেষ্টা করে ইংরেজিতে বলল,
হা হাহা হা….. তীব্র চৌধুরী বস ইজ কামিং সুন!!উই উইল ডিসট্রয় ইউ!!এন্ড ইউর প্যালেস!দেয়ার ইজ এ হট এন্ড সেক্সি গাল!আই নিড হার……..
কথাটা বলার সাথে সাথে তীর লোকটার হাত ধরে হাতের দুটো আঙ্গুল ক্যাচ করে কেটে দিল।লোকটা যন্ত্রণায় ছটফট করে উঠল।তীর তা দেখে বলল,
কথা শেষ কর!তোকে জীবিত কাটতে আমার একটু সময় লাগবে!!
তীব্র তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তীর কে একনজর দেখে বলল,
৩০ দিনের প্ল্যান ৩০ মিনিটে শেষ করার ক্ষমতা রাখে তীব্র চৌধুরী।বলেই হো হো করে হেসে উঠলো।
লোকটা তীব্র কে এভাবে হাসতে দেখে কিছুটা ভরকে গেল।এই তীব্র যেন অচেনা তাঁদের কাছে। তীব্র হাসি থামিয়ে ইংরেজিতে বলল,

মরার জন্য রেডি হ!!
লোকটি রেগে ইংরেজিতে বলল,
তুই আমাকে বস না আসা পর্যন্ত মারতে পারবি না।এটা রুলস!!
তীব্র আবারো হো হো করে হেসে উঠলো।হুট করেই হাসি থামিয়ে হুংকার ছেড়ে বলল,
আমার কলিজা পর্যন্ত আসলে কোন রুলস ই আমার কাছে ম্যাটার করে না।নাথিং…….
লোকটা তীব্রর হাবভাব বুঝে উঠার আগেই তীব্র হাতে থাকা ছোট্ট আর ধারালো ছুরিটা 🗡️ ছুড়ে মারল লোকটার ঠিক বুক বরাবর।এরপর রিদিকে কোলে তুলে বাড়ির দিকে যেতে যেতে তীরের উদ্দেশ্য বলল,
আগে মেইন পয়েন্ট টুকরা টুকরা করবি!আর হ্যাঁ ছবিটা অবশ্যই ওর বসের কাছে পাঠাতে ভুলবি না।
তীব্রর কথায় তীর শুধু বাঁকা হাসল।

পুরো শরীর রক্তে রঞ্জিত তীরের।নরপশুর মতো জ্যাশন মানে সেই লোকটার পুরো শরীর পিচ পিচ করে কেটেছে এতোক্ষণ। মীর একপলক সেদিকে দেখে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।লাবিব তীর কে দেখে ভয়ে শুকনো ঢোক গিলে বিরবির করে বলল,
আমি বস কে নির্দয় ভাবতাম এখন দেখি তীর ভাই ও নির্দয়!বাপরে!
তীর লাস্ট জ্যাসনের পায়ের উপর কুড়াল দিয়ে পিচ পিচ করে থামল। ক্লান্ত শরীরে সোফায় বসে পড়তেই লাবিব ভয়ে ভয়ে বলল,

এখন কি করব তীর ভাই??
তীর সোফায় গা এলিয়ে বলল,
ওর বসের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা কর।
লাবিব দ্রুত সেখানে থেকে চলে যেতেই তীর তাকালো লোকটার দিকে।পুরো শরীর টুকরা টুকরা করা।হাতের চামড়া ছিলে তারপর টুকরা করেছে সে।তীর সেই হাতের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল,
এই হাত দিয়েই ছুঁয়েছিল!!
কথাটা বলেই কেটে রাখা ঠোঁটের দিকে তাকালো তীর।আবারো একই ভঙ্গিতে বলল,
এই ঠোঁট দিয়েই স্পর্শ করেছিল!!

তীর আবারো সোফায় শরীর এলিয়ে বসল।চোখ জোড়া বন্ধ করতেই ভেসে উঠল সন্ধার সেই ঘটনা।তীর গুনগুনিয়ে গান গাইতে গাইতে সেখানে থেকে চলে এলেও রুপ তার পিছু পিছু এসে বলল,
তুমি আমাকে এভাবে বলতে পারো না!!
তীর পিছু না ঘুরে বলল,
তোমাকে আমি কিছুই বলি নি রুপ!এটা যাস্ট গানের লাইন।
রুপ রেগে বলল,
তুমি আমাকেই উদ্দেশ্য করে বলেছো!!
তীর স্বাভাবিক ভাবেই বলল,
না!!
হ্যাঁ!!!

ওকে যেমনটা তুমি মনে করো! আমার কিছু না।
রুপ ছলছল চোখে তীরের দিকে তাকালো।তীর রুপের থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে আকাশে রাখল।দূর আকাশের দিকে তাকিয়েই বলল,
শরীর দেখিয়ে তীব্র চৌধুরীকে আকর্ষন করা যাবেনা রুপ! তীব্র যদি শরীরই চাইত তবে হাজারো সুন্দরী মেয়ে ছিল ওর অপশনে। কিন্তু ওর মধ্যে একটা ব্যাপার আছে।শুরু থেকেই মেয়েদের ছোঁয়া ওর পছন্দ না।সে যতোই সুন্দরী হোক না কেন?
কতো শত মুনি ঋষি মেয়েদের রুপ দেখে পিছলে গেছে। কিন্তু তীব্র!! আশ্চর্য হলেও সত্য ওর সামনে উলঙ্গ হয়ে ঘুরলেও একবার চোখ তুলে দেখার রুচি আসে না ওর।
আমি কতোশত শুদ্ধ পুরুষ দেখেছি যারা এক না এক সময় সৌন্দর্য উপভোগ করতে আটকে যায় সৌন্দর্যের মহোমায়ায়।ভুল ও করে বসে! কিন্তু তীব্র!!সে আটকেছে শুধু মায়ায়। সৌন্দর্যে না।
তীর একটু থেমে আবারও বললো,

রিদিকে তুমি দেখছ!তোমার মনে হয় রিদি অসুন্দর??তোমার কেন কারো কাছেই রিদি অসুন্দর না।একটা মায়ার খনি বলা যায়।ওর মিষ্টি হাসি,ডাগর ডাগর চোখের চাহনিই যথেষ্ট কাউকে ঘায়েল করার জন্য।তবে তোমাদের কাছে ওদের জুটি ম্যাচ করে না কেন জানো??
তোমরা ভাবো তীব্র চৌধুরীর সাদা রঙের পরির মতো কাউকে বিয়ে করা দরকার।।খুব স্টাইলিস,হট, সেক্সি টাইপ।যার শরীরের প্রতিটি কোনা শত লোক দর্শন করে।
হতে পারে সে তীব্র চৌধুরী!!ফেমাস ডক্টর, বিজনেসম্যান, মাফিয়া কিন্তু তার মধ্যে রুপের লালসা নেই।এখন বলতে পারো রিদি ই কেন?

আপনাতেই আমি সিজন ২ পর্ব ৭১

এর কোন কারন ব্যাখ্যা করা যায় না।তুমি কখন কিভাবে কার মায়ায় আটকাবে তুমি জানবেও না। একবার কারো মায়ায় আটকে দেখো।কালো কুচকুচে লোকটাকেও তোমার কাছে রাজকুমার মনে হবে।
শেষে শুধুমাত্র একটা কথাই বলতে পারি।যেই চেষ্টা তুমি করছ তাতে তুমি সফল হতে পারবে না।রিদি বিহীন তীব্র হিংস্র পশুতে পরিনত হতে বেশি সময় নিবে না।আর জানো তো হিংস্র পশু আঘাত করলে কখনো আপন পর দেখে না।
কথাটা বলেই তীব্র সেখানে থেকে চলে যায়।

আপনাতেই আমি সিজন ২ পর্ব ৭২

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here