আপনাতেই আমি সিজন ২ পর্ব ৯

আপনাতেই আমি সিজন ২ পর্ব ৯
ইশিকা ইসলাম ইশা

সময় এমন একটা জিনিস যা হাজার চাইলেও ফিরিয়ে আনা যায় না। আবার সময় কে ইচ্ছে মতো আগেও করা যায় না।সময় তার মতো চলে।কারো কথায় আগাইও না পিছায়ও না।তবে জীবনে সঠিক সময় না আসলে কিছু কাজ অসম্পূর্ণ থেকে যায়। আবার সেই কাজ সম্পন্ন হয় সঠিক সময়ে।
নাজমা চৌধুরী এবারো ব্যর্থ ।প্রায় প্রতিদিনই সে এই নাম্বারে কল করে। কিন্তু প্রতিবারই ভেসে আসে মেয়েলী কন্ঠস্বর “সরি দা নাম্বার ইজ অনরিচএবল”।১৮ বারের মতো কল করে ফোনটা রেখে দিল নাজমা চৌধুরী। তীব্র যাওয়ার ৪মাস পর একটা ম্যাসেজ এসেছিল! যেখানে লেখা ছিল “সময় হলে ফিরবো”।নাজমা চৌধুরীও পারছেন না সময়টা আগিয়ে নিয়ে যেতে। সময় হলে ফিরবে !এই সময় টা কবে হবে!!

আজ প্রায় ৬মাস হয়েছে।তীব্র কে গত ৬ মাস ধরে ফোন করছে নাজমা চৌধুরী। কিন্তু তীব্রর ফোন বন্ধ।লাবিব কেও কল করেছিল কিন্তু লাবিব এর ফোন ও বন্ধ।৬ টা মাস হয়ে গেল তীব্রর নিখোঁজ হওয়ার।যদিও এটা নতুন না কিন্তু নাজমা চৌধুরী প্রতিবারই তীব্রর এমন হুট করে আসা যাওয়ায় চিন্তিত হয়।হবে না কেন? তীব্র যে তার কলিজার টুকরা।বাবা-মা হীন পৃথিবীতে একা সে। হাজার টাকা, পাওয়ার, ক্ষমতা থাকলেও পৃথিবীতে একা বসবাস করা কঠিন।আর ভালোবাসা ছাড়া বসবাস করা তো আরো কঠিন। যেখানে তীব্র পরিবারের কারো সাথেই তেমন সম্পর্ক রাখে নি।একা, ভবঘুরে ,ঝুকিপূর্ন জীবন তার।এমন জীবন নিয়ে মানুষ বাঁচতে পারে!

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

নাজমা চৌধুরীর ভেতর থেকে বেরিয়ে এলো দীর্ঘশ্বাস।আর কতো?আর কতো জ্বালাবে তাকে এই ছেলে। সবাই নিজের জীবন নিয়ে ব্যস্ত কারো সময় নেই অন্যর জীবনে উঁকি দেওয়ার!!থাকলেও কি? তীব্র কখনো তার জীবনে কারো হস্তক্ষেপ পছন্দ করে না।কাউকে তার জীবন সম্পর্কে কোন কিছুই বলে না।আর না কারো কথা শোনে। তবে এবার আসলে এর একটা বিহিত করেই ছাড়বে নাজমা চৌধুরী।
রিদিকে যেহেতু তীব্র বৌ হিসেবে মানবে না তাই ডিভোর্স এর ব্যবস্থা করে রুপের সাথে বিয়ে দিবেন তিনি।রুপের মধ্যে কি কমতি আছে!অপরুপ সুন্দরী সে! সবচেয়ে বড় কথা রুপ সে ছোট থেকেই তীব্র কে পছন্দ করে।ওর সব কিছু দেখেই তো ওকে পছন্দ করেছে রুপ। তাছাড়া রুপের মতো সুন্দরী, শান্ত, বুদ্ধিমান, ম্যাচিউর মেয়েই পারবে তীব্র কে সামলাতে।
সব ভেবে আবারো দীর্ঘশ্বাস ফেলল নাজমা চৌধুরী। কয়েকদিন পরেই রুপের ২০তম জন্মদিন। বিশাল বড় আয়োজন করা হবে। চৌধুরী বাড়ির একমাত্র মেয়ে বলে কথা।এখন থেকেই প্রস্তুতি চলছে।তবে তীব্র আসবে কি না তা আজানা।

চৌধুরী বাড়ির চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে আয়োজনের ধুম।রাইফা সবেই এসেছে শপিং করে।মেয়ের জন্মদিনের জন্য সে অনেক শপিং করেছে।সেটাই দেখানোর জন্য সবাইকে ডেকে এনেছে।ডেকে এনেছে বলতে এক প্রকার টেনে এনেছে।অভিক কিছুটা বিরক্ত হয়েই বসে আছে। স্টুডেন্ট এর পরিক্ষার খাতা দেখতে বসেছিল সে। কিন্তু রাইফা তাকে জোর করেই টেনে এনে বসিয়েছে।রাইফা খুশিমনে রুপের জন্য নিয়ে আসা রেড গাউন বের করে সবাইকে দেখালো। অসম্ভব সুন্দর একটা গাউন।বিশাল ঘের দেওয়া বলিউড তারকাদের মতো!!রুপেরও অনেক পছন্দ হয়েছে।
রাইফা খুশি হয়ে বলল।এই রিদু দেখো তো এটা তোমার জন্য।রিদি অবাক হয়ে বলল,

আমার জন্য!!
হ্যাঁ তোমার জন্য পছন্দ হয়েছে!
রিদি তখনো অবাক হয়ে তাকালো রাইফার দিকে।রাইফা সে তো খুশিতে গদগদ হয়ে বলল,
খুব মানাবে তোমাকে!
আপনাকে ধন্যবাদ!!
শোনো আমি পালার থেকে মেয়েকে আসতে বলেছি ওরা আসলে তোমাকে সাজিয়ে দিবে।
না না আন্টি!!আমি সাজি না ওসব!!
তো কি হয়েছে!সাজবে!!আর কোন কথা না।কালকে তুমি এই ড্রেস পরে সাজবে।
রিদি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সম্মতি দিল।

চারদিকে রঙিন আলোর ছড়াছড়ি। চৌধুরী বাড়ি সেজেছে অনেক সুন্দর করে।চারদিকে লোকসমাগম এ ভর্তি।রিদি ভীষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।আগে কখনো এমন পার্টি দেখে নি।মেয়েরা প্রায় ই ওরনা ছাড়া গাউন পড়ে এসেছে।যদিও ওদের অসম্ভব সুন্দর লাগছে তবুও রিদিরই যেন অস্বস্তি বোধ হচ্ছে। আবার অনেকে তো হাটু অব্দি ফ্রগ ও পড়ে এসেছে।

তবে রিদির পড়নে তার লাল খয়েরির মাঝে কাজ করা সুন্দর একটা শাড়ি।রাইফার দেওয়া গাউন রিদি ওরনা ছাড়া কখনো পড়বে না তাই সেটা পড়ে নি। যদিও এটা নিয়ে রাইফা রাগ করেছিল তবে রিদির ব্যাপারটা বুঝে তাকে আর জোর করে নি।পরে রিদি নাজমা চৌধুরীর দেওয়া শাড়িটা পড়েছে।শাড়িটা রিদির ও খুব পছন্দ হয়েছে তাই আর মানা করে নি।তেমন কোন সাজ না থাকলেও হালকা সাজে নিজেকে সাজিয়ে তুলেছে। যদিও তার সাজ বাকি সবার কাছে তুচ্ছ। মার্জিত শাড়ির সাথে খোপা করে সেখানে গুজেছে বেলি ফুল।যার সুগন্ধ মোহিত করছে।টানা টানা হরিনি চোখে কাজল টানা।মুখে পার্লারের মেয়েদের দিয়ে দেওয়া হালকা প্রলেপ।হাত ভর্তি রেশমি চুড়ি।চুড়ি রিদির খুব পছন্দের জিনিস।তাই হাত ভর্তি চুরি পড়েছে।তবে সাজুগুজু করে বাইরে এসে এমন পার্টি দেখে সে তবদা খেয়ে গেছে।প্রায় ছেলেদের হাতে ড্রিংস এর গ্লাস। তাছাড়া কয়েকটা লোকের তার প্রতি চাহনি রিদির কাছে ভালো লাগে নি।কেমন করে যেন তাকে দেখছে।তাই কিছুটা অস্বস্তি নিয়ে কাচুমাচু হয়ে দাদির পিছু পিছু ঘুরঘুর করছে।

এদিকে অভিক চরম বিরক্তি নিয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলছে রিসা নামক সুন্দরী রমনীর সাথে। যদিও কথা বলতে ইচ্ছুক না।তবে সে ভদ্র মানুষ। তাই বিরক্ত হলেও বিরক্তি ভাবটা প্রকাশ করতে পারছে না।জোর পূর্বক হাসি টেনে কথা বলতে হচ্ছে।মেয়েটা তার মায়ের লেডিস ক্লাবের রিতা আন্টির মেয়ে। যাকে তার মা ছেলের বৌ হিসেবে ঠিক করে রেখেছে।যদিও রিসার অভিকের মাঝে কোন ইন্টারেস্ট নেই।তবে চৌধুরী বাড়ির বৌ হওয়ার চান্স মিস করতে চায় না। তাই অভিক কে পটানোর চেষ্টা করছে।অভিক কথার মাঝেই নজর যায় মিলন এর দিকে।মিলন,মেঘ আর তাঁদের বাবা মা এসেছে।অভিক ভদ্রতা সহিত বলল,
রিসা ডোন্ট মাইন্ড! আমার গেস্ট এসেছে।সো এক্সকিউস মি!!

রিসা না চাইতেও যেতে দিল।অভিক ছাড় পেয়ে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলো। আশেপাশে তাকিয়ে রিদিকে কোথায় দেখল না।রুপের কাছে আছে ভেবে মিলনদের দিকে এগিয়ে গেল। তাঁদের সাথে কুশল বিনিময়ের মাঝেই এনাউন্স হল রুপের আসার।চারদিকে লাইট অফ হয়ে ফোকাস লাইট গিয়ে পড়ল রুপের উপর।লাল টুকটুকে গাউন পরিহিত রুপকে দেখে সবাই তব্দা খেয়ে তাকালো।রুপ এমনিতেই সুন্দর তবে সাজ আর গাউনে কোন রাজকন্যা থেকে কম লাগছে না। রুপের একপাশে আরফিন আর একপাশে রাইফা।রাইফাকেও বেশ সুন্দর লাগছে।রুপ মা বাবার হাত ধরে সিড়ি বেয়ে নিচে নামছে।সে যেন সত্যিই কোন বাবা মায়ের আদুরে রাজকন্যা।ঠিক যেমন রুপ কথার গল্পে থাকে তেমন।

সবার চোখ যখন সুন্দরী রাজকন্যার দিকে।রিদি চেয়ে দেখল বাবা মায়ের ভালবাসা। আরফিন মেয়ের গাউন ধরে নিচে নামাচ্ছে। যেন রুপের পা গাউনে বেঁধে না যাই আজকে মনে হচ্ছে রুপ আসলেও রাজকন্যা।কি নেই তার কাছে! রাজপ্রাসাদ,রাজ্য, ভুবন ভোলানো রুপ,এমন আদুরে বাবা মা।রিদির চোখ ছলছল করছে। বাবার ভালোবাসা তার কপালে নেই।মা তো অনেক আগেই ছেড়ে গেছে। ভাগ্য জুড়েছে এই চৌধুরী বাড়িতে তবে আশ্রিতা হিসেবে। যদিও এসবে তার আফসোস নেই।তবে ভেতর টা পুড়ছে বাবা থেকেও তার ভালবাসা না পাওয়াই। মনে পড়ছে মা মারা যাবার পর চোখের সামনে নিজের শত বোনের বাবার কাছে শত অবদার আর ইচ্ছা পূরণ। কিন্তু তার বেলায়!!
রিদি দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজেকে সামলে নিল। যা নেই তা নিয়ে আফসোস না করাই ভালো। চারদিকে আলো জ্বলতেই রিদি নিজেকে স্বাভাবিক করে এগিয়ে গেল। তবে রিদি রুপের আশেপাশে ও যেতে পারল না।রুপের ফ্রেন্ড আর কাজিন সবাই প্রায় ঘিরে রেখেছে তাকে।
হুট করেই রিদির হাত টেনে নিয়ে কিছুটা দূরে এলো মেঘ।মেঘকে দেখে রিদি অবাক হয়ে বলল তুই??

মেঘ বিরক্ত হয়ে বলল,
এমনে চেচাস কেন??
মানে তুই এখানে!!
তুই হয়তো ভুলে গেছিস অভিক স্যার আমার ভাইয়ের ল্যাংটা কালের বন্ধু। তাই দাওয়াত দিয়েছে!তবে তোকে আজ চেনা যাচ্ছে না। মাশাআল্লাহ!!কি সুন্দর মায়াবতী রে তুই!!
হয়ছে হয়েছে! আপনার বান্ধবীর তারিফ করার জন্য আপনাকে কোন ঘুস দেওয়া হবে না।
রিদির কথায় মেঘ ফিক করে হেসে বলল,
সত্যি তোকে আজ সুন্দর লাগছে!আজ প্রেমে পড়ে মানুষ দেওয়ানা হয়ে যাবে তো!!
রিদিও হেসে উঠলো,
হ্যাঁ!দেওয়ানা তো হবেই তবে আপুর প্রেমে!!দেখেছিস আপুকে কি মারাত্মক সুন্দর লাগছে!!
আপনিও কম লাগছেন না ম্যাডাম!! আজ শাড়িতে তোকে আর পিচ্চি লাগছে না। কিন্তু তুই যে কাল বললি তুই গাউন পড়বি!!

আসলে ওটা তো ওরনা ছাড়া!!তাই!
মেঘ আবারো হেসে বলল,
আশেপাশে তাকা!! এখানে সবাই প্রায় এসব ই পড়ে এসেছে!
রিদিও হেসে বলল,
হ্যাঁ!প্রথম বার এমন পার্টি দেখলাম! আমাদের গ্রামে এসব পড়লে কি বলত জানিস!!বলত একি ম্যাইয়া তোমার কাপড় কি দর্জি চুরি করছে নি??
রিদির কথায় আর মেঘ,রিদি দুইজনেই হেসে দিল। দুইজনের হাসির মাঝেই সেখানে আসে অভিক।
এতো হাসি কিসের??
রিদি কিছু বলার আগেই মেঘ বলল,
প্রাইভেট কথা স্যার!!এটা বলা যাবে না।
অভিক ভু কুঁচকে বলল,
কি এমন কথা??
মেঘ আবারো বলল,
বলা যাবে না।

অভিক কিছু বলার আগেই রিদি দুইজনেই কথার মাঝে বলল,
কিছু বলবেন ভাইয়া?
অভিক মেঘের দিকে নজর সরিয়ে রিদিকে দেখে বলল,
তোমাকে রুপ খুঁজছে ওখানে!
রিদি মিষ্টি হেসে বলল,
জি আমি আসছি!!
অভিক যেতেই রিদি মেঘ কে নিয়ে রুপের কাছে গেল।আপু আমাকে ডাকছিলে!!
রুপ কিছুটা রেগে বলল,
কোথায় থাকছিস তুই!তোকে খুজেই পাঁচ্ছি না।
রিদি আমতা আমতা করে,
আসলে আপু এতো মানুষ তোমার আশেপাশে তাই!!
আরে তোকে তো পরিচয় ই করানো হয় নি।ওরা সবাই আমার বন্ধু।রিতা,নিয়া,আরাবি, সাজু,সায়ের,পিয়াস।তোরা জানিস রিদিও অনেক সুন্দর গান করে!!তোদের গান শেষ হলে রিদি গান গাইবে!!
রিদি অবাক হয়ে বলল,

আমি!!!
হ্যাঁ তুই!!কি সুন্দর গান করিস!!
কি?বলছ?আপু!!আমি তাও এতো মানুষের সামনে!!
তো কি হয়েছে!!
না আপু প্লিজ!আমি পারব না।
আমার জন্মদিন রিদু প্লিজ!! একটা গান গাইবি প্লিজ প্লিজ বোন আমার প্লিজ!!রিদু রুপের এতো বলায় কিছু বলতে গেলেই রুপের ফ্রেন্ড নিয়া বলল,
নিয়া কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলল,
চাইছে না যখন জোর করছিস কেন!তাছাড়া ও তো আর মনে হয় না বর্তমানের কোন হিন্দি গান পারবে!এমন বড় পার্টিতে ওসব সংগীত টংগীত বোরিং ইয়ার!বাদা দে !!আর প্লিজ এখানে আবার সেকেলে বাংলা গান গাইতে বলিস না।নিজেই সেকেলে সাজ সেজেছে আবার গান!!

রিতাও একই সুরে বলে,
ইয়া রুপ!ইটস বার্থডে পাটি বেব!!
পিয়াস এদের কথায় কিছুটা বিরক্ত নিয়ে বলে,
তোদের এমন ওয়েস্টান মানে আধা পোশাকের থেকে শালিন পোশাক পড়া তোদের কাছে সেকেলে লাগে!!আর গান তোরা পারলে ও পারবে নাই কেন!
নিয়া ভেংচি কেটে বলে,
আজকাল এসব কে পড়ে! গ্যাইয়া!!
আরাবি:তো কেমন পোশাক মানায় নিয়া?তোর মতো?ওকে ভালোভাবে দেখলে যে কেউ ওর প্রতি মুগ্ধ হবে।এতো মিষ্টি মায়াবী! তাছাড়া শাড়িটা খুব মানিয়েছে ওর সাথে!তাই এসব নিয়ে কমেন্ট পাস করা বন্ধ কর প্লিজ!
নিয়া কিছুটা রেগে বলল,
তোরা এই মেয়ের জন্য আমার সাথে এভাবে কথা বলছিস?তাছাড়া রুপ ও তোদের বাড়ির আশ্রিতা মাএ।এতো মাথায় চরাস না।না হয় এমন কোপ বসাবে…..

রুপ শক্ত গলায় বলল,
স্টপ নিয়া!!প্লিজ স্টপ!!রিদি আমার বোন কোন আশ্রিতা নয়।
রিয়া:বললে আর সত্য মিথ্যা হয়ে যাবে না রুপ!!
এক্সজেটলি!!কারো কিছু বলা বা না বলায় সত্যি মিথ্যা হয়ে যাবে না।আশ্রিতা তো কোন পরিচয় ছাড়া থাকে।রিদুর বিশেষ পরিচয় আছে।যা শুনলে পায়ের নিচের মাটি সরে যাবে।তাই কথা আপনাদের একটু ভেবে চিন্তে বলা উচিত আপু!!আর ওর পোশাক মার্জিত পোশাক!আপানাদের মতো খোলামেলা না।জানেন তো কোথায় যেন শুনেছিলাম খোলা জিনিসে মাছি ভিনভিন করে !!হয়তো ঘাগু -মুতুও করে।সেসব আবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয়!!আর ঢাকা জিনিস!!থাক আর বললাম না। বুদ্ধিমানদের জন্য ইশারায় যথেষ্ট।মেঘ রাগে তাচ্ছিল্য করে কথা গুলো বলে থামল।এরপর রিদির উদ্দেশ্য বলল,

তুই গান গাইবি!!কারো কিছু বলা না বলায় তুই কেন থেমে থাকবি! তাছাড়া যার জন্মদিন সে তোকে এতো রিকুয়েস্ট করছে তোর গান গাওয়া উচিত!আলতু ফালতু কথায় মুড নষ্ট করিস না।রুপ আপু কিছু মনে না করলে আমার রুপের সাথে একটু দরকার আছে। এক্সিকিউস আস প্লিজ!!!
নিজের কথা শেষ করে কাউকে বলার সুযোগ না দিয়ে রিদিকে টেনে আনল স্টেজ থেকে।রাগে মেঘ হিসহিস করছে।পারলে এখুনি চুল টেনে ছিড়ে ফেলত।কতো বড় সাহস তার বান্ধবীকে বাজে কথা শোনায়।নিজেকে আবার দিপিকা পাড়ুকোন ভাবে নাকি!!লোমরির মতো চেহারা তার নাম আবার পেয়ারা!যতসব ফালতু!
রিদি মেঘের রাগ দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলল।তার খারাপ লাগলেও নিজের রুপ নিয়ে এমন কথা শুনতে শুনতে সে অভস্থ্য।তাই এদের কথা বিশেষ কোন কথা ভেবে গায়ে মাখে নি।তবে মেঘের রাগ।বাপরে এই মেয়ের এতো রাগ!!নিজে বললে কাউকে সুযোগ ই দেয় না।তবে রিদি মেঘকে আর কিছু বলল না।বললে এবার তাকে রাগ দেখাবে। এতো দিনে মেঘের সব দিক জানা হয়ে গেছে।তাই আপাতত মেঘের রাগ কমা অব্দি চুপচাপ থাকল।

আপনাতেই আমি সিজন ২ পর্ব ৮

কিছুক্ষণের মধ্যেই স্টেজ এ নিয়ার গান শুরু হল।অধ পোশাক পরিহিত নিয়া মাইক নিয়ে ডিজে গান বাজাতে লাগল।
Break up song ….
Break up song…..
Karda dil feeling strong….
(পুরোটা শুনে নিবেন)

আপনাতেই আমি সিজন ২ পর্ব ১০