আমায় রেখো প্রিয় শহরে পর্ব ৩২

আমায় রেখো প্রিয় শহরে পর্ব ৩২
নূরজাহান আক্তার আলো

-‘ওদেরটা এবার ওদেরকেই বুঝে নিতে দে। ওদের মধ্যে তোর আমার না যাওয়াটাই ভালো।’
রুপকের কথা শুনে রিদওয়ানের বাবারও সহমত পোষন করলেন। তিনি
এটাও বললেন মেয়েলি সব ব্যাপারে ঢুকতে নেই। কিছু কিছু জিনিস না দেখার ভাণ করতে চলতে হয়। এতে সংসারে শান্তি বজায় থাকে। বাবার কথায় রিদওয়ান একমত হতে পারল না। তবুও কথা বাড়াল না। শুধু সে
জানাল খেতে দিতে অফিসে জরুরি মিটিং আছে। তাকে বের হতে হবে।

ছেলের কথা শুনে নিলুফা ইয়াসমিন এসে খেতে দিলো। কুহুও পিছু পিছু এসে গ্লাসে পানি ঢেলে দিলো। তা দেখে নিলুফা ইয়াসমিন একপল দেখে রুমে চলে গেলেন। উনাকেও বের হতে হবে। শপে যাবেন। আজকে ভীড় হবে বেশি। উনাকে যেতে দেখে আতিকুর রহমান বিষণ্ণ মুখে দাঁড়িয়ে থাকা কুহুকে বললেন,
-‘মায়েরা বকলে মন খারাপ করতে নেই। তুমিও বসো খেয়ে নাও।’
-‘পরে খাব।’
-‘কেন?’
-‘এমনিই।’
-‘ঠিক আছে।’
-‘স্যার, একটা কথা বলি?’
-‘স্যার না বাবা বলো।’
-‘বলছিলাম যে, বাবা আমার একটা হেল্প লাগবে।’
-‘হেল্প? কেমন হেল্প?’
-‘আপনাদের সঙ্গে আমিও দেেশে ফিরে যেতে চাই।’

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

কুহুর কথা শুনে রুপক রিদওয়ান খাওয়া থামিয়ে দু’ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইল। এ আবার কেমন কথা? আজ থেকে তার ফুল ট্রিটমেন্ট শুরু আর বলে কি না দেশে যাবে। তাদেরকে এভাবে তাকাতে দেখেও কুহু পাত্তা না দিয়ে চেয়ার টেনে বসল। তারপর আমতা আমতা করে বলল,
-‘ আপনি বলেছেন এই সপ্তাহে চলে যাবে। এদিকে আম্মু আমার উপরে খুব রেগে আছে। রাগ না ভাঙালে এই রাগ দূরত্ব সৃষ্টি করবে। আমি এমন কিছু চাই না। এজন্য বলছি আমিও আপনাদের সঙ্গে দেশে ফিরতে চাই।
চিকিৎসা না পরে করাব।’

-‘কথাটা কিন্তু মন্দ বলো নি। ওর পিছু ঘুরলে দেখলে কয়েকবার বকবে ঠিকই কিন্তু বকার আড়ালে ভালোবাসবে। কিন্তু মা তোমার ট্রিটমেন্ট যে পরে করানো যাবে না। জ্বর থাকতেই সবাই জ্বরের মেডিসিন খাই তাই না?’
-‘দেশে গিয়ে চিকিৎসা করব নাহয়৷’
-‘আরেকটা কাজ করানো যায়। ‘
-‘কি কাজ?’

-‘তোমার আম্মুর পাসপোর্ট রিনিউ করার বাহানা দেখিয়ে আরো কিছুদিন থাকুক। সেই ব্যবস্থা নাহয় আমিই করে দেবো কিন্তু কথা হচ্ছে আমি যে আর থাকতে পারব না মা। আমার ছুটি শেষ।’
-‘ঠিক আছে বাবা, তাহলে তাই করুন।’
-‘হুম।’
-‘টিকিট কনফার্ম করা হয়ে গেছে?’
-‘ না আজ করব।’
-‘আচ্ছা।’

এরপর সে রিদওয়ানের দিকে তাকিয়ে আমতা আমতা করল। কিছু যে বলতে চাচ্ছে সেটা বুঝে রিদওয়ান একপল তাকিয়ে বলল,
-‘কিছু বলবে?’
-‘আমিও যাই?’
-‘কোথায়?’
-‘শপে।’
-‘শপিং করতে?’
-‘না। আম্মুর সঙ্গে।’

-‘আম্মুর ফিরতে রাত হবে। আমি অফিস থেকে ফিরে তখন নাহয় নিয়ে যাব তোমাকে।’
-‘আপনি কখন ফিরবেন?’
-‘সন্ধ্যা নাগাদ।’
-‘রিমিও বাসায় নেই, আপনিও অফিসে যাচ্ছেন, মা যাচ্ছে শপে, বাবাও যাবে কোন ফ্রেন্ডের বাসায়, ভাইয়াও এখন ঘুমাবে, আমি একা একা কি করব? এরচেয়ে শপে গেলে সময়টাও কেটে যেতো।’
-‘আজ অনেক ভিড় হবে। গিয়ে তুমি গিয়ে নিজেও বোর হবে।’
-‘হব না, আমি বসে বসে মানুষ দেখব।’
-‘ঠিক আছে যাও।’
-‘থ্যাংক ইউ।’

কথা শেষ করে কুহু তাদের খেতে বলে চলে গেল শাশুড়ির রুমের দিকে।
যার শপ তার থেকেও তো পারমিশন নিতে হবে। সে যদি এলাও না করে তখন? সে দরজায় দাঁড়িয়ে উঁকি মেরে দেখল নিলুফা ইয়াসমিন এ্যাশ কালার শাড়ি পরেছেন। কি যে সুন্দর দেখাচ্ছে। ড্রেস সেন্সের প্রশংসা না করলেই নয়। উনি উবু হয়ে শাড়ির কুঁচি ঠিক করার চেষ্টা করছেন। একা একা কাজের কাজ হচ্ছে না দেখে সে’ই ধীর গতিতে রুমে প্রবেশ করল। তারপর নিলুফা ইয়াসমিনের পায়ের কাছে বসে হাসি মুখে শাড়ির কুঁচি ঠিক করে দিলো। এহেন কাজে নিলুফা ইয়াসমিন ভ্রু কুঁচকে তাকালেও
কিছু বললেন না চুপ করে নিজের কাজে মন দিলেন। তখন কুহু বলল,

-‘আম্মু আমিও যাব।’
-‘কোথায়? ‘
-‘শপে। আপনার সঙ্গে।’
-‘না।’
-‘বাসায় একা থাকতে ভালো লাগে না আমার। ভয় লাগে, এজন্য….. ।’
-‘তো, আমি কি করতে পারি? আমি কি বেড়াতে যাচ্ছি যে সঙ্গে নিয়ে যাব?’
-‘আমি চুপটি করে বসে থাকব, প্রমিস।’

-‘ খবরদার বলছি আমাকে বেশি বকাবে না। তোমার মতো শুয়ে বসে থেকে সময় নষ্ট করার মতো সময় আমার নেই। না যখন বলেছি তখন, না।’
একথা বলে উনি পার্স নিয়ে চলে গেলেন। কুহুর এবার চোখ ফেটে জল গড়িয়ে পড়ল। মনে পড়ল তার মায়ের কথা। তার মা তো এমন করে না।

সে কোনো কিছু নিয়ে জেদ করলেও এভাবে বলে না। অনেকের মুখে সে শুনেছে, শাশুড়ি নাকি মা হয় না। কেন জানি তখন তার বিশ্বাস হতো না। মনে হতো শাশুড়িদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা জানতে হয়।ভালোবাসা
আদায় করে নিতে হয়। এখন মনে হচ্ছে শাশুড়ির মন জয় করা এতটাও সহজ নয়। এসব ভেবে সে চোখ মুছে বের হতেই দেখে একটুদূরে রুপক দাঁড়িয়ে আছে। হয়তো তাদের কথোপকথন শুনেছে। ভাইকে মনের ব্যথা বুঝতে না দেওয়ার প্রয়াস চালালো সে। এজন্য চট করে মুখে টানল এক অনিন্দ্য হাসির রেখা। তারপর এগিয়ে গেল।জিজ্ঞাসা করল কিছু লাগবে
কি না। তখন রুপক বোনের মুখের দিকে দীর্ঘশ্বাস গোপন করে বলল,

-‘আমি ঘুমাব না। রিদওয়ান চলে গেলে তুই আর আমি ঘুরতে বের হব। তারপর আমরা দুই ভাই বোন মিলে দুপুরে রান্না করব। সময় এমনিতেই কেটে যাবে। এখন রুমে যা গিয়ে দেখ রিদওয়ানের কিছু লাগবে নাকি।’
-‘সমস্যা নেই তুমি ঘুমাও।’
-‘ঘুম আসছে না। আর শোন, আম্মুর সঙ্গে কথা বলেছিস?’
-‘না। একটু পরে বলব।’
-‘মেডিসিন খেয়েছিস?’
-‘একটুপরে খাব।’
-‘মার খেতে না চাইলে নাস্তা করে মেডিসিন খা।’

ভাইয়ের কথা শুনে কুহু ঘাড় কাত করে সম্মতি দিয়ে চলে গেল। রুপক তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রুমে ঢুকে গেল। মাকে ফোন দিয়ে খোঁজ খবর নিয়ে চুপ করে বেলকনিতে বসে থাকল। সকাল থেকে মনটা ভার হয়ে আছে। বিশেষ করে সকালে নিলুফা ইয়াসমিনের কথাগুলো শোনার পর থেকে। এ কঠিন পরিস্থিতি কিভাবে সামলে উঠবে সেও ঠিক বুঝতে পারছে না। পারিবারিক সমস্যার কারণে কুহুর অসুস্থতা আবার বেড়ে না যায়! এই ব্যাপারে রিদওয়ানকেও কিছু বলা ঠিক হবে না। কারণে তার হাতেও কিছু নেই। মেয়েটা কত আনন্দ নিয়ে শপে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু সঙ্গ পেলো না। বোন পাগল ছাগল যাই হোক কেউ তাকে অবজ্ঞা করলে তার ভীষণ কষ্ট হয়।মনে হয় সেই মানুষকে খুন করে মাটিতে পুঁতে দিতে।

তার বোন ভুলে যায় কিন্তু একেবারে পাগল তো নয়। তাহলে তাকে কেন অবজ্ঞা করবে? কেন খোঁচা মারা কথা বলবে? নিলুফা ইয়াসমিন তখনো বোনকে অযথা কথা শুনাল। আবার এখনো তাই। সে আহামরি কোনো আবদার করেছে? নাকি কোনো অপরাধ করেছে? এর কোনোটাই তো না। শুধু সঙ্গ চেয়েছে। শাশুড়ির সঙ্গে এই দূরত্ব কমানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।
মেয়েটা নিজেই অসুস্থ। তাও যে সে এইটুকু করছে এটাই কি বেশি নয়?

সত্যি বলতে,সকাল থেকে বোনের নীরব কান্না তার বুক এফোঁড় ওফোঁড় করে দিচ্ছে। কষ্টে বুক ভার হয়ে আসছে। আজ শুধু নিলুফা ইয়াসমিনের জায়গায় অন্য হলে একটা অঘটন ঘটিয়ে ফেলত। তার বোনকে অযথা কথা শোনানোর দায়ে চরম শাস্তি দিতো। শুধু বন্ধুর মা বলে সে নিজেকে বার বার সামলে নিচ্ছে। সব কিছু মুখ বুঝে সহ্য করতে হচ্ছে।
এইদিকে কুহু রুমে গিয়ে দেখে রিদওয়ান রেডি হয়ে বসে আছে। আকাশ নীল রঙা শার্টে চমৎকার দেখাচ্ছে। তাকে দেখে রিদওয়ান উঠে দাঁড়াল। কয়েকপল তার মুখের দিকে একবার তাকিয়ে ওয়ালেট পকেটে ঢুকিয়ে বলল,

-‘রেডি হও।’
-‘কেন?’
-‘ বাইরে যাব তাই।’
-‘অন্যদিন যাব।’
-‘উহুম এখনই যাবে। দ্রুত রেডি হও, আমার লেট হচ্ছে। ‘
-‘আপনার লেট হচ্ছে আমি যান।’
-‘আমি তো যাবোই সঙ্গে তুমিও যাবে।’
-‘ আজ শরীর টা ঠিক ভালো লাগছে না। প্লিজ জোর করিয়েন না।’
-‘করব। পারলে আঁটকাও।’
-‘বললাম তো ভালো লাগছে না আমার।’
রিদওয়ান আর কথা বাড়াল না সে নিজেই কুহুর ড্রেস বের করে হাতে ধরিয়ে দিলে। তারপর ঠেলে ওয়াশরুমে পাঠিয়ে গেল খাবার আনতে। কুহু বের হতেই কুহুর মুখে খাবার তুলে দিলে বলল, ‘খেতে খেতে চুল টুল ঠিক করে নাও।’

-‘তা কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন শুনি?’
-‘প্রেম করতে।’
-‘এটাও বিশ্বাস করতে হবে?’
-‘না করার কারণ আছে নাকি?’
-‘অবশ্যই আছে।’
-‘বলো শুনি কি কারণ?’
-‘আপনি কাঠখোট্টা মানুষ। আর কাঠখোট্টা মানুষরা প্রেম করতে জানে না।’
-‘সময় বলে দেবে।’
-‘সময় অপেক্ষা করতে হবে না। আমিই এখন বলে দিচ্ছি। ‘
-‘ধন্য করেছেন। এবার মেডিসিন গুলো খেয়ে নিন।’
-‘আপনি তো সেদিন বললেন আপনার সবকিছু আমার। আর আমার সবকিছু আপনার। আমাদের মধ্যে ‘আমার’ বলে শব্দটা থাকবে না।’

-‘এখনো তাই বলছি।’
-‘তাহলে আমার মেডিসিন গুলো আপনিই খান। রুলস অনুযায়ী আমার জিনিস আপনার। যুক্তি অনুযায়ী আমার মেডিসিনও আপনার তাই না?’
একথা শুনে রিদওয়ান ভ্রুজোড়া কুঁচকে তাকাতেই কুহু খিলখিল করে হেসে উঠল। তার হাসির শব্দে ঝলমলিয়ে গেল পুরো রুম। সঙ্গে সামনে
দাঁড়ানো পুরুষটির মনেও ঢেউ খেললো খুশির ঝুম। তারপর তারা রেডি হয়ে একসঙ্গেই বের হতে হলো। রুপক তখনো বেলকনিতেই বসে ছিল।
হঠাৎ ভাইয়া বলে কুহুর ডাক শুনে তার নজর গেল নিচের দিকে। দেখে

রিদওয়ানের গাড়ি বের হচ্ছে। কুহু’ও জানালা দিয়ে হাত বের করে তাকে টাটা দিচ্ছে। বোনের মুখে হাসি। হাসছে তার চোখও। তাদের একসাথে দেখে সেও হাত নাড়িয়ে টাটা দিলো। সাবধানে যেতে বলল। রিদওয়ান তখন মেসেজ করে জানিয়ে দিলো ডেইজির সঙ্গে দেখা করে একেবারে সন্ধ্যায় ফিরবে। টেনশন যেন না করে৷ ততক্ষণে রিদওয়ানের গাড়ি তার দৃষ্টি সীমানার বাইরে চলে গেছে। সে বেলকনিতে থেকে রুমে এসে শুয়ে পড়ল। তার চোখের কোণা বেয়ে কয়েকফোঁটা জল। কেন কাঁদছে সেও জানে না। শুধু জানে ভীষণ খুশিও হয়েছে সে। খুশির কারণ হতে পারে
বোনের মুখে হাসি। এজন্য রিদওয়ানকে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত। কিন্তু সে জানে, ধন্যবাদ দিতে গেলেই রিদওয়ানের ঘুষি জুটবে ঠিক নাক বরাবর।

এরচেয়ে মনে মনে তাদের জন্য দোয়া করা উত্তম। তাছাড়া সে মনেপ্রাণে
বিশ্বাস করে গাছের মতো সম্পর্কের যত্ন নিতে হয়। ভালোবেসে আগলে রাখতে হয়। বন্ধন দ্বারা গোড়া মজবুত করতে হয়। তাহলে ফলও সুমিষ্ঠ হয়। আর এই ব্যাপারে রিদওয়ান সর্বেসবা।
শাঁ শাঁ করে গাড়ি চলছে ঝকঝকে এক রাস্তা দিয়ে। রাস্তার দুই পাশে বড় বড় গাছ। গাছের নাম জানে না সে। দেশে এমন ধরনের গাছ দেখেও নি।

আজকে আকাশটা স্বচ্ছ কাঁচের ন্যায় ঝকঝক করছে। রোদের তীব্রতাও সহনশীল।গাড়ির জানালা খোলা বিধায় তার চুলগুলো এলোমেলো করে দিচ্ছে বৈরী বাতাস। পাগলাটে বাতায়নে উড়ছে তার ওড়না। সে জানালা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে প্রাণ ভরে শ্বাস নিচ্ছে। চোখ, মুখে উপচে পড়ছে খুশি।
রিদওয়ান ড্রাইভের ফাঁকে ফাঁকে আড়চোখে তাকেই দেখছিল। কিছুক্ষণ
আগে কুহুর মলিন মুখ দেখে যা বোঝার বুঝে গিয়েছিল। আর তার মুখ দেখে বুকে চিনচিনে ব্যথা অনুভব করছিল। সেই ব্যথা তাকে সজাগ করে দিলো, এই মলিন মুখের মালকিনকে রেখে অফিসে গেলে কাজ করতে পারবে না একদন্তও। শান্তও হবে না বক্ষপাশ। এরচেয়ে সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়া উত্তম। যেই ভাবা সেই কাজ। তার মা সঙ্গ না দিক সে তো আছে।

তাই সে কুহুকে অফিসে নিয়ে যাচ্ছে। সেখানে মিটিং সেরে তারপর যাবে ডেইজির কাছে। এরপরের প্ল্যান নাহয় এর পরেই জানা যাবে।
আজ শপে প্রচুর ভিড়। নিলুফা ইয়াসমিন নিজেও ভীষণ ব্যস্ত। স্টার্ফরাও তাই। ঘন্টা দু’য়েক পর ভিড় কিছুটা কমতেই নিলুফা ইয়াসমিন আতিকুর রহমানকে ফোন দিলেন। টুকটাক কাজের কথা বলার পর দ্বিধান্বিত সুরে বললেন,

-‘আজ শপে আসবে না?’
-‘আজ আর যাচ্ছি না। কেন কিছু লাগবে, ফেলে গেছো কিছু?’
-‘না তেমন কিছু না। যদি আসো তাহলে তোমার পুত্রবধূকে সঙ্গে নিয়ে
এসো। এটা শুধু আমার শপ না ওর স্বামীরও শপ। আসতে যখন চাইল এসে ঘুরে যাক নাহয়।’
-‘মেয়েটা তোমার সঙ্গে যেতে চেয়েছিল নিলু। আমার সঙ্গে না।’
-‘ আমার সঙ্গেই আসতে হবে এমন কোনো কথা নেই।’

আমায় রেখো প্রিয় শহরে পর্ব ৩১

নিলুফা ইয়াসমিনের কথা শুনে আতিকুল রহমান মুচকি হাসলেন। সেই আগের মতোই রয়েছে উনার অভিমানী সহধর্মিণী। সকালে মেয়েটা কত করে যেতে চাইল নিয়ে গেল না। অথচ এখন ছলেবলে ঠিক নিয়ে আসার কথা বলল। রাগ দেখাবে ঠিকই আবার রাগের আড়ালে ভালোবাসার বীজও বুনবে। তাই উনিও জানালেন রিদওয়ান কুহুকে অফিসে নিয়ে গেছে। অফিস থেকে তারা ডাক্তারের কাছে যাবে। ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হবে। আজ আর যাওয়া হবে না অন্যদিন নাহয় যাবে। একথা শুনে খট করে কল কেটে গেল। আতিকুল রহমান এতবার কল করলেন নিলুফা ইয়াসমিন আর রিসিভই করলেন না।

আমায় রেখো প্রিয় শহরে পর্ব ৩৩