আমায় রেখো প্রিয় শহরে পর্ব ৩৬
নূরজাহান আক্তার আলো
বাঙালি নারীর মন পূর্ণ করা শখ, আহ্লাদ ও স্বপ্নে। নারী মানেই সৃষ্টি। সৃষ্টি মানেগড়া। সৃষ্টিকর্তা নারীকে তেমনভাবেই গড়েছেন। তাদের মধ্য বরকত দান করেছেন। দিয়েছেন অসীম মায়া ও মমতা। এজন্যই সংসারে নারীর ছোঁয়া ছাড়া সংসার পরিপূর্ণ হয় না। সুখ সমৃদ্ধির স্পর্শন লাগে না। পুরুষ যত বড়ই বাড়ি বানাক নারীর মত করে সেই বাড়িতে মায়া ঢালতে পারে না। যত্নে সাজাতে পারে না৷ নারীর অনুপস্থিততে দামী দামী আসবাবপত্র
ও যেন লুকাতে পারে না শূন্যতার ভাব।
এজন্য বলে পুরুষ, বাড়ি-গাড়ি যতই করুক নারী ছাড়া তারা অসম্পূর্ণ।
আজ মাসের সতেরো তারিখ। মঙ্গলবার। রাত বাজে আড়াইটা। কয়েক বছর পর এই মুহূর্তে দেশের মাটিতে পা রাখলেন নিলুফা ইয়াসমিন। এক বুক কষ্ট, মান-অভিমান নিয়ে দেশ ছেড়েছিলেন। আজ সব অভিমানের রেশ ভুলে ফিরে এসেছেন। তিনি এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আছেন শাহজালাল এয়ারপোর্টে। লোকজন গিজগিজ করছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আরেকটা ফ্ল্যাইট ল্যান্ড করবে সেটার এনাউন্সমেন্ট হচ্ছে। উনার থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে আছে রিদওয়ান, কুহু আর রুপক। তাদের তিনজনের আবার ঝগড়া লেগেছে। ঝগড়ার কারণ অজানা তবে ঝগড়া হচ্ছে তিনি ভালোই বুঝতে পারছেন। লং জার্ণির পথে তিনজনের গুজর গুজর শেষ হয় নি।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
এত কিসের গল্প উনিও খুঁজে পান না। আগে রিদওয়ান এত কথা বলতো না। বিয়ের পর তার কাজ কুহুকে খোঁচানো। মেয়েটাকে না খোঁচালে যেন শান্তি পায় না সে। তবে এই ব্যাপারটা তিনি পজেটিভ হিসেবে নেন। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে খুনশুঁটি, দুষ্টু-মিষ্টি অভিমান, থাকা ভালো। এত সম্পর্ক সহজ
থাকে। তাদের ঝগড়া করতে দেখে উনি এগিয়ে গেলেন তারপর ধমকে তাদের ঝগড়া থামিয়ে হনহন করে সামনে হাঁটা ধরলেন। উনাকে যেতে দেখে তারাও এগিয়ে এলো। আতিকুর রহমান কিংবা রিমি কেউই জানে না আজকে উনারা আসবেন। আগামীকাল রিমির জন্মদিন। মূলত ওকে
সারপ্রাইজ দিতেই এভাবে আসতে হয়েছে। আর এই দুষ্টু বুদ্ধিটাও কুহুর।
বুদ্ধিটা সবার পছন্দ হয়েছে দেখে চলেও এসেছেন। গতমাসেই রুপকের সঙ্গে উনার আসার কথা ছিল। কিন্তু গন্ডগোল পাকিয়েছিল কুহু। বাসায় নাকি একা থাকতে পারবে না আবার রিদওয়ানকে ছাড়া সে আসবে না।
এত বলে বুঝিয়েও লাভ হয় নি। ওইদিকে রিদওয়ান প্রজেক্টের কাজ না সেরে কোথাও যেতে পারত না। কুহু এটা শুনতেও নারাজ। রুপককেও ছাড়বে না সে। আবার মায়ের অসুস্থতার কারণে মায়ের কাছেও যাবে। তার কথা পুরো পরিবারকেই তার লাগবে। এই নিয়ে দু’দিন কান্নাকাটি, ঝগড়া, জেদও করেছে।
অগত্যা বউয়ের জেদে রিদওয়ানকে প্রজেক্টের কাজ শেষ করে আসতে হয়েছে। এই সময়েই নিলুফা ইয়াসমিন উনার শপ সেল করে দিয়েছেন। বাসা ভাড়া দিয়েছেন। বাসাটা সেল করে দিতে পারতেন কিন্তু দেন নি কারণ রিদওয়ান যাওয়া আসা করবে। বছরে এক বার হলেও কুহুর চেকাব করাতে যাবে তারা। তাছাড়া রিদওয়ানের হাতে গড়া নিজস্ব অফিস রয়েছে। বর্তমানে অফিসের ভার বিশ্বস্ত ম্যানেজারই দেখবে। দেশে বসেই রিদওয়ান সবকিছু সামলাতে পারবে। এছাড়া তার
অফিসের আরেকটি ব্রাঞ্চ দেশে তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে।যেহেতু
স্ব-পরিবারে বাংলাদেশে স্থায়ী হবে তাই এই সিদ্ধান্ত।
এই অবধি সব ঠিকই ছিল কিন্তু সারপ্রাইজের ঠেলায় তারা কাউকে না জানিয়ে আসায় গাড়ি পাঠায় নি কেউ। এত রাতে গাড়ি পাবে কোথায়?
তারপর রুপক তার বাসার ড্রাইভারকে আসতে বলল। উনি শুনে সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে পড়েছেন। জ্যাম পেরিয়ে সময় নিয়ে ড্রাইভার এলে তারা রওনা দিলো আতিকুর রহমানের বাসার দিকে। ড্রাইভারের পাশে রুপক। আর বাকি তিনজন পেছনের সিটে। চলছে গালগল্প। কুহু জানালা দিয়ে মুখ বের করে শ্বাস নিচ্ছে। কতদিন পর সেই আপন আপন ঘ্রাণ। এটাই বুঝি দেশের ঘ্রাণ। মাটির ঘ্রাণ। মায়ার ঘ্রাণ। কত্ত শান্তি। এই শান্তি ভীন দেশে পায় নি। তার কান্ডে নিলুফা ইয়াসমিন ধমকালেও শুনল না। মনটা চনমনে হয়ে আছে তার। বকা গুলোও মধুর শোনালো। সে ভেতর ভেতর অস্থির। কখন তার মায়ের কাছে যাবে। মাকে জড়িয়ে ধরবে। মা মা ঘ্রাণ শরীরে মাখবে। মায়ের হাতের আদর মাখা খাবার। খাওয়াতে খাওয়াতে ফোন টিপা নিয়ে বকা। এতদিন দেশের বাইরে থেকে আদর পেতে মনের তৃষ্ণা যেন বেড়েই চলেছে তার। কালই যাবে মায়ের কাছে। হঠাৎ তাকে দেখে বাবা-মা নিশ্চয়ই চমকে যাবে। খুশিতে হাসতে হাসতে কেঁদে দিবে।
মনে মনে এসব ভেবে কুহু কোনোমতে নিজেকে সামলে রাখল।
আতিকুল রহমানের বাড়ির মেইনগেট খুলে তাদের গাড়ি বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করছে। রিদওয়ানকে দেখে ঘুম জড়ানো চোখে দারোয়ান বিষ্ময় নিয়ে তাকিয়ে ছিল। তারপর তাকে কিছু বলতে হয় নি তার আগেই গেট খুলে দিয়েছে। কুহু আড়চোখে নিলুফা ইয়াসমিনের দিকে তাকাল। উনার অনুভূতি বোঝার চেষ্টা করল। কিন্তু কিছুই বুঝতে পারল না সে। এই নারী
কঠিন ধাঁচের। তার মনে কখন কি চলে বোঝা মুশকিল। সে রিদওয়ানের দিকে একবার তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস নিয়ে আফসোস করে বলল,
-‘ প্রথমবার শশুরবাড়িতে এলাম। অথচ পরনে লাল বেনারসি নেই। গা ভর্তি গয়না নেই, বিয়ের সাজ নেই। এই ছিল কপালে।’
তার কথা শুনে নিলুফা ইয়াসমিন মুচকি হাসলেন। তাকালেন ছেলের দিকে। রিদওয়ানের দৃষ্টি ফোনের দিকে। কুহুর কথা শুনলেও সে মায়ের সামনে কোনো জবাব দিলো না। তবে সময় মতো এর জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রইল। ঘড়ির কাঁটা এখন তিনের ঘরে। মাঝরাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যাওয়ার কারণে রিমি শুয়ে শুয়ে তামিল মুভি দেখছিল। মুভিটা এই নিয়ে পাঁচবার দেখছে। ভীষণ পছন্দের মুভিটা। কিন্তু এতরাতে হঠাৎ গাড়ির শব্দ পেয়ে সে উঠে বসল। বাংলাদেশে চুরি হয়। কিন্তু চোর মশাই গাড়ি নিয়ে চুরি করতে আসবে না নিশ্চয়ই? তাহলে কে এলো?সে লাইট অন না করে বেলকনিতে গিয়ে দেখে গাড়ি থেকে রুপক নামছে।এরপরই নামল রিদওয়ান, কুহু, আর তার মা। তিনি আশপাশ তাকিয়ে দেখছেন। কতদিন পর! উনাদের দেখেই রিমি চট করে বেলকনির লাইট জালিয়ে
ভাইয়া! বলে চেঁচিয়ে উঠল। তার কন্ঠস্বরে যেন আনন্দরা ঝরে পড়ছে।
তার চিৎকারে সবার দৃষ্টি গেল রিমির দিকে ততক্ষণে রিমি বাবা! বাবা! করে ডেকে দৌড়ে নামছে সিঁড়ি বেয়ে। এতরাতে মেয়ের ডাক শুনে চট করে উঠে পড়েছেন আতিকুর রহমানও। তিনিও দ্রুতপায়ে বেরিয়ে এসে দেখে মেয়ে দরজা খুলে দিচ্ছে। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গেই দেখল কুহু দাঁড়িয়ে আছে তার পেছনে রিদওয়ান আর রুপক। তিনি আরো ভালো করে তাকালেন নিলুফা ইয়াসমিনকে না দেখে সামনে এগিয়েও গেলেন।
ছলছল চোখ আর হাসি মুখে তাদের তিনজনকে তিনি জড়িয়ে ধরলেন। কুশল বিনিময় করলেন। এরপর ভেতরে প্রবেশ করিয়ে পেছনে তাকিয়ে কাউকে না পেয়ে ভেজা ভারী কন্ঠে জিজ্ঞাসা করলেন,
-‘নিলু আসল না?’
রিদওয়ান নিশ্চুপ। তবে কুহু মন খারাপ করে মাথাটা নিচু করে নিলো। তারপর বিষাদে ভরা সুরে বলল,
-‘মা আসবে না। আসতেই চেয়েছিল ফ্ল্যাইটের আগ মুহূর্তে অসুস্থ হওয়ার কারণে আমাদের পাঠিয়ে দিলো। বললেন, সুস্থ হলেই নাকি আসবেন।’
আতিকুল রহমানের মুখটা হঠাৎ যেন চুপসে গেল। দুঃচিন্তার ছাপ পড়ল উনার কপালে। রিদওয়ান আর রুপক কুহুর দিকে তাকিয়ে আছে। রিমি মুখ টিপে হাসছে। সে বাইরে মাকে দেখেছে আর কুহু পন্ডিতি করে তার মাকে বাইরে রেখে এসেছে তাও জানে। আতিকুর রহমান উনার কাজের লোক রাজুকে ডেকে দ্রুত নাস্তাপানির ব্যবস্থা করতে বললেন। এবংদ্রুত রুমগুলো দেখিয়ে দিতে বললেন।রিদওয়ানরা আসবে জানার পর থেকে উনি প্রতিদিন বাড়ি পরিষ্কার করান। রুমগুলো ডেকোরেটও করিয়েছেন নতুনভাবে। তবে যার আগমনের জন্য এতকিছু সেই এলো না দেখে মন ভার হয়ে গেছে। উনি পকেট থেকে ফোন বের করে নাম্বার বের করতেই দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে করতে কেউ বললেন,
-‘ভাগ্য করে ড্রামাকুইন পুত্রবধূ পেয়েছি। আমাকে বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে অভিনয় করা হচ্ছে। ‘
সুপরিচিত কন্ঠ শুনে উনি ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালেন। সঙ্গে সঙ্গেই উনার মুখ থেকে মন খারাপের রেশটুকু হারিয়ে গেল। ফুটে উঠল উৎফুল্ল পূর্ণ এক চিলতে তৃপ্তির হাসি। প্রিয় মানুষের আগমন বুঝি এমনই হয়। প্রিয় কারো আগমনে কর্পূরের ন্যায় উবে যায় মন খারাপের রেশ। আনন্দে ঝুম ঝুম করে ওঠে চারিপাশ। বয়স বাড়ে দেহের। মনের বয়স বুঝি একই রকমের থাকে।উনার মুখভঙ্গি হঠাৎ পরিবর্তনের দৃশ্যটুকু মনভরে দেখল উপস্থিত থাকা রিদওয়ান’রা। বুঝে নিলো অনেককিছুই। নিলুফা ইয়াসমিন ভেতরে প্রবেশ করে আশেপাশে দেখলেন। এটা উনার সংসার। উনি নিজে হাতে সাজিয়েছিলেন এই বাড়ি। ঘরদোর। এবং এ সংসার হারিয়েছিলেন কিছু বছর আগে। চলে যেতেও বাধ্য হয়েছিলেন। পুরনো কথাগুলো মনে করে উনার ছলছল চোখ ছলছল করে উঠল। বুকের ভেতরে জমে থাকা কষ্ট গুলো কান্না হয়ে বেরিয়ে আসতে চাইল। উনার কষ্টটুকু বুঝে আতিকুর রহমান বললেন,
-‘ তোমার জন্য এতদিন এই বাড়িটা সামলে রেখেছি। এবার তোমার এই বাড়ি, তোমার সংসার, বুঝে নাও তুমি। আমি এসবের মধ্যে থাকতে চাই না।’
-‘হাঁপিয়ে গেছো?’
-‘তোমাদের অনুপস্থিতে আমি শূন্য। শূন্যতাকে পরিপূর্ণ করতে তোমার দায়িত্ব তুমি বুঝে নাও।’
নিলুফা ইয়াসমিন হাসলেন। রিদওয়ান উঠে দাঁড়াল। সে ক্লান্ত। তার রেস্ট প্রয়োজন। রিদওয়ানের দেখে কুহু, রুপক, রিমিও উঠে দাঁড়াল। তারা হই হই করতে করতেই উপরে চলে গেল। তারা বড় হয়েছে বুঝতেও শিখেছে অনেককিছুই৷ তাই এ মুহূর্তে উনাদের একা ছেড়ে দিয়ে তারা চলে গেল।
তাদের কাজ এখানেই শেষ। দো’তলায় এসে রিদওয়ানকে রুম দেখিয়ে দিলো রিমি। এই রুমটাতে আগে রিদওয়ান থাকত। বিশাল বড় রুমটা।
সাজানো হয়েছে তার পছন্দের উপর ডিপেন্ড করে। রিদওয়ানের পছন্দ হলো রুমটা। বিছানা দেখে কুহু শুতে যাবে ওমনি তাকে থামিয়ে দিলো রিদওয়ান। ট্রলি থেকে ড্রেস বের করে তাকে ঠেলে ওয়াশরুমে পাঠিয়ে দিলো। বাধ্য হয়ে কুহু গনগন করতে করতে চলেও গেল। তা দেখে রিমি তাকাল রুপকের দিকে। সে আজ এখানেই থাকবে তাই তাকে গেস্টরুম দেখাতে নিয়ে গেল। রুপক গেল রিমির পিছু পিছু। রিমি তাকে গেস্টরুম দেখিয়ে আসতে যাবে তখনই হ্যাচকা টানে তাকে রুমে ঢুকিয়ে দরজাটা আঁটকে দিলো রুপক। কটমট করে তাকিয়ে রইল রিমির আদুরে মুখের দিকে। আকষ্মিক কান্ডে রিমি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। হাতে ব্যথাও পেয়েছে। তাকে এভাবে তাকাতে দেখে রুপক দূরত্ব বজায় রেখে বলল,
-‘সমস্যা কি তোমার?’
-‘ আমার সমস্যা? আমি কখন বললাম আমার সমস্যা?’
-‘আমার মেসেজ সিন করছো না, কল ধরছো না,সবকিছু থেকে ব্লক! কি করেছি আমি? কিসের শাস্তি দিচ্ছো এভাবে, অপরাধটা কি আমার?’
-‘আপনিই তো সেদিন বললেন অভ্যাস জিনিসটা খুব খারাপ। এজন্যই তো কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছি। আপনার তো খুশি হওয়ার কথা। শুধু শুধু রেগে যাচ্ছেন কেন?’
-‘ কেন বলেছিলাম এটাও মনে আছে নিশ্চয়ই?’
আমায় রেখো প্রিয় শহরে পর্ব ৩৫
-‘মনে থাকবে না কেন? খুব মনে আছে। আসলে আপনি ভয়ে আছেন। আমার প্রতি দূর্বল হয়ে যাওয়ার ভয়। বন্ধুর কাছে খারাপ হওয়ার ভয়। বোনের সংসারে অশান্তি হওয়ার ভয়। এজন্য আমাকে এখন এড়িয়ে যেতে চাইছেন। ইনডিরেক্টিলি বোঝাতেও চেয়েছেন আমি যেন কথা না বলি। যোগাযোগ না করি। আমি এখন তাইই তো করছি। আমি আপনার চাওয়াকেই প্রাধান্য দিচ্ছি।’
একথা বলে রিমি দরজা খুলে দ্রুতপায়ে বেরিয়ে গেল আর রুপক তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইল।