আমার নিষ্ঠুর ভালবাসা পর্ব ২১
সালমা খাতুন
মায়ার চোখ দিয়ে পানি পড়তে দেখে আরমানের ঘোর কাটলো যেন। ঝটকা দিয়ে ছেড়ে দিলো মায়াকে।
এরপর আরমান গম্ভীর গলায় বলল, “এমন কোনো কাজ করবে না যেটাতে আমার রাগ উঠে যাই। তাই চুপচাপ যা বলবো তাই…..আহহহহ, উফো… এইই মেয়ে ছাড়ো ছাড়ো।”
আরমানের কথা শেষ হওয়ার আগেই মায়া রাগে কাঁপতে কাঁপতে তার দিকে এগিয়ে এলো। চোখ দুটোতে আগুন জ্বলছে, যেন মুহূর্তেই ধ্বংস করে দেবে সবকিছু। প্রতিশোধের নেশায় অন্ধ হয়ে সে আরমানের হাত দু’হাতে শক্ত করে চেপে ধরল, আর হঠাৎই দাঁত বসিয়ে দিল আরমানের হাতের মাংসে। আরমান ব্যথায় কঁকিয়ে উঠল, কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে এল, কথার খেই হারিয়ে ফেলে হাঁ করে তাকিয়ে রইল মায়ার দিকে।
কিন্তু মায়া ততক্ষণে নিজেও কেঁপে উঠেছে নিজের আচরণে। মুখের ভেতরে নোনতা স্বাদ পেতেই বুঝতে পারল—রক্ত। গরম, লবণাক্ত রক্ত। কে জানে, তার নিজের, না আরমানের! হঠাৎ যেন কিছু একটা চুরমার হয়ে গেল ভিতরে। সে আর এক মুহূর্তও দাঁড়াল না। ছিটকে গিয়ে ছুটে গেল মিটিং রুমের সাথে লাগোয়া ওয়াশরুমের দিকে।
হাঁপাতে হাঁপাতে বেসিনের সামনে দাঁড়িয়ে কল ছেড়ে দিল সে। ঠাণ্ডা পানির ছোঁয়ায় হাত দুটো কাঁপছিল। কুলকুচি করতে গিয়ে দেখল, পানির সঙ্গে গড়িয়ে আসছে লালচে রেখা—রক্ত। ভেতরে ভেতরে গা গুলিয়ে উঠল তার। এই রক্তের স্বাদ, এই গন্ধ, এক অদ্ভুত বমি ভাব তুলে আনল গলার কাছে। মুখের ভেতরে আরমানের দেওয়া ব্যাথার জন্য দাঁতের কোপ লেগেছে, কাটা চামড়ার জায়গায় আগুনের মতো জ্বালা করছে।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
পানির পর পানি, একের পর এক কুলকুচি। কিন্তু রক্তের সেই আঠালো অনুভব যেন কিছুতেই কাটছে না। মনে হলো, সে যেন নিজেরই কোনো অচেনা রূপকে ছুঁয়ে ফেলেছে। এ আমি? আমি এমনটা করতে পারি? আয়নার দিকে তাকিয়ে নিজেকে চিনতে কষ্ট হলো মায়ার। চোখ লাল, মুখ বিবর্ণ, ঠোঁটের কোণে লেগে আছে রক্তের ক্ষীণ দাগ—সবকিছু মিলিয়ে যেন এক অস্থির, অপরিচিত মুখ।
চোখে-মুখে পানি দিয়ে নিজেকে একটু সামলানোর চেষ্টা করল সে। বুকের ভেতরটা এখনও ধুকপুক করছে তার। তারপর ধীরে ধীরে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এলো, যেন শরীর নয়, আত্মাটাই ক্লান্ত হয়ে পড়েছে ওর।
ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসতেই মায়ার চোখ পড়ল আরমানের ওপর। সে এখনো মিটিং রুমের সোফায় বসে আছে। চোখ দুটো জ্বলছে রাগে, চোয়াল শক্ত হয়ে আছে। মায়ার উপস্থিতি টের পেতেই মাথা তুলে তাকাল ওর দিকে। চোখে ক্ষোভের এক তীক্ষ্ণ ঝলক। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর গম্ভীর কণ্ঠে, রাগ চেপে রাখা কষ্টসাধ্য এক গলায় বলল,”এটা কী করলে তুমি?”
বলতে বলতেই নিজের হাতটা মায়াকে উদ্দেশ্য করে দেখালো।
মায়া চুপচাপ দাঁড়িয়ে, ধীরে ধীরে তাকাল ওর হাতের দিকে। ওখানেই তো কামড়েছিল সে—ঠিক এই জায়গাটায়। দাঁতের ছাপ যেন ছাপে ছাপে বসে আছে, গভীরভাবে। চামড়া ফুলে উঠেছে, চারপাশ লাল হয়ে গেছে, মাঝে হালকা রক্ত লেগে আছে। মায়ার কাঁপুনি ধরে গেল। মনে হলো, আর একটু যদি চেপে ধরত, মাংসটাই হয়তো উঠে আসত।
হঠাৎ এক অদ্ভুত ভার যেন বুকের ওপর চাপতে শুরু করল। অনুশোচনায় গলা শুকিয়ে এলো। সে কখনো কাউকে আঘাত করেনি, কখনো এমন হিংস্রতা তার মধ্যে জাগ্রত হয়নি। তাহলে আজ? আজ কেন এমন করল সে? কী এমন ছায়া নেমে এসেছিল তার ওপর? প্রতিশোধের আগুনে এতটাই অন্ধ হয়ে গিয়েছিল যে মানুষটিকে নয়, মুহূর্তটাকে কামড়ে ধরেছিল। এখন সবকিছু বাস্তবের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যেন কেমন ভেঙে পড়ছে ভিতরটা।
আরমান তখনো তাকিয়ে আছে। মায়ার দিকে নয়, যেন এক অপরিচিত মানুষকে দেখছে এমনভাবে। মায়া চোখ সরিয়ে নিল, তার দৃষ্টি নিচু, মনে শুধু একটাই প্রশ্ন, “আমি কি সত্যিই এটা করলাম?”
মায়া অনুশোচনায় ভেজা কণ্ঠে শান্তভাবে বলল,
“দুঃখিত… ভাবিনি আপনি এতটা ব্যথা পাবেন। আপনি… আপনিও আমায় আঘাত করেছেন। মুখের ভেতর কেটে গেছে আমার। তাই আমি… আমিও আপনাকে ব্যথা দিয়েছি। সরি।”
শব্দগুলো যেন ভাঙা কাঁচের মতো ধীরে ধীরে গড়িয়ে পড়ল ঠোঁট থেকে। বলা শেষ হতে না হতেই আবারও মাথা নিচু করে নিল সে। চোখ দুটি মাটিতে আটকানো, মুখে যেন অপরাধের ছায়া।
আরমান এক মুহূর্তের জন্য চুপ করে রইল। ধীরে ধীরে বুঝতে পারল, হ্যাঁ—রাগের চোটে সেও মায়াকে ব্যথা দিয়েছিল। মেয়েটির ফ্যাকাশে মুখ—সেই প্রমাণ। সেই উপলব্ধি তাকে নীরব করে দিল।
চুপচাপ কয়েক কদম এগিয়ে এলো মায়ার দিকে। কোনো শব্দ ছাড়াই, ধীরে, মৃদু। এসে দাঁড়াল একদম সামনে। তারপর ডান হাত বাড়িয়ে নিজের তর্জনী আঙুল দিয়ে আলতোভাবে ছুঁয়ে দিল মায়ার থুতনি। সে ছোঁয়ায় মায়ার মুখটা ধীরে ধীরে উপরের দিকে উঠাল, কিন্তু মায়ার চোখ তখনও নীচের দিকেই।
আরমান গম্ভীর স্বরে বলল,”আমার চোখের দিকে তাকাও।”
আরমানের গম্ভীর কণ্ঠে বলা কথাটা ঠিক যেন তীব্র কোনো সুরে আঘাত করল মায়ার ভেতরের অনুভূতিকে। শব্দগুলো তার কানে গিয়ে যেন জলতলে বিস্ফোরণ ঘটাল—নীরব অথচ গভীর। একটু কেঁপে উঠল সে। সেই হালকা কম্পনটা আরমানও স্পষ্ট টের পেল, যেন তার আঙুলের নিচে ছুঁয়ে গেলো সেই ভেতরের আলোড়ন।
আরমান তার হাতের আঙ্গুল সরালো না, মায়াকে চাপেও ফেলল না, শুধু অপেক্ষা করল। সময় দিল মায়াকে। ধীরে ধীরে, কাঁপা দৃষ্টিতে চোখ তুলল মায়া। তাকাল আরমানের দিকে। হালকা ভেজা, ক্লান্ত, মুখমন্ডল। আর চোখে তখনও অনুশোচনার ছায়া—
আরমান সেই দৃষ্টি পড়ে ফেলল স্পষ্টভাবে। তার চোখে কিছুটা দৃঢ়তা। গলা নরম কিন্তু স্থির, শীতল কিন্তু ভরাট। বলল,
“একদম—ড্যানিয়েলের বেশি কাছে আর ঘেঁষবে না। মনে থাকবে?”
একটু থেমে আবার বলল,”আমি যেন তোমায় ওর সঙ্গে দরকার ছাড়া কথা বলতে না দেখি। ঠিক আছে?”
শব্দগুলো ছিল না কোনো হুমকি, বরং একটা সীমানা টেনে দেওয়া নিঃশব্দ দাবি। যেনো অধিকার ফলাচ্ছে ও মায়ার উপর। এমন এক কণ্ঠ যা নির্দেশ না হয়েও উপেক্ষা করা যায় না।
মায়া বোকার মতো স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল আরমানের দিকে। ও আরমানকে বুঝতে না দিলেও, ভীষণ ভয় এই মানুষটাকে। নিজের ছোট্ট দেহে খানার সামনে আরমানকে কেমন যেনো দানবের মতো লাগে। মনে হয় চাইলেই আরমান মায়াকে পিষে ফেলবে এক নিমিষেই। এই যে এখন যেমন আরমান অনেক টা মাথা নিচু করে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। আর মায়ার মাথাটা ঠিক ওর বুকের কাছাকাছি পড়ছে। লোকটা লম্বা তেও অনেক বেশি ওর থেকে। তার উপর জিম করা শরীর— মুখে কিছু না বলে, শুধু নিঃশব্দে মাথা নেড়ে সায় দিল। উত্তরটা মৌন হলেও স্পষ্ট। এতক্ষণে আরমান নিজের আঙুলটা সরিয়ে নিল তার থুতনি থেকে। তারপর আবারও গম্ভীর অথচ সংযত স্বরে বলল,
“ঠিক আছে, চলো। সবাই হয়তো আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।”
শব্দগুলো বলেই সে ধীরে পেছন ঘুরে দরজার দিকে পা বাড়াল।
ঠিক তখনই মায়া যেন হঠাৎ ভেতর থেকে কিছু একটা টের পেল। ভেতরের কোনো অস্থিরতা তাকে ঠেলে আনল সামনে। ছুটে গিয়ে ধরল আরমানের সেই হাত—যে হাতটায় সে নিজেই কিছুক্ষণ আগে দাঁত বসিয়েছিল। তার আগেই টেবিলের ওপর থেকে ওর ছোট ব্যাগটা হাতে তুলে নিয়েছে—যেটা সবসময় তার সঙ্গে থাকে।
আরমান থমকে দাঁড়াল। মায়া কাঁপা গলায় বলল,
“কিন্তু… আপনার হাতটা… মানে, কেউ দেখে ফেললে…”
বাক্যটা শেষ করতে পারল না সে। সংকোচে, অপরাধবোধে ভরা কণ্ঠটা নিজেই থেমে গেল মাঝপথে।
মায়ার ঠান্ডা হাতের স্পর্শে আরমানের সারা শরীরে যেন এক কোমল স্রোত বয়ে গেল। সে চোখ বন্ধ করে ফেলল নিঃশব্দে। এই স্পর্শ—এই অচেনা অথচ ভীষণ চেনা অনুভব—তার ভেতরে যেন অতীতের দরজা খুলে দিল।
হ্যাঁ, একবার আগেও এমনই লেগেছিল এই স্পর্শটা। সেই প্রথমদিন, যখন ওরা কাছাকাছি এসেছিল। সেদিনও মায়ার ছোঁয়া মনে হয়েছিল অদ্ভুতভাবে পরিচিত। কিন্তু রাগ, ভুল বোঝাবুঝি আর আত্মঅহঙ্কারের দেয়ালে দাঁড়িয়ে সে অনুভূতিগুলোকে কোনো গুরুত্ব দেয়নি।
কিন্তু আজ—আজ এই মুহূর্তে চোখ বন্ধ করতেই আরেকটি মুখ স্পষ্ট হয়ে ভেসে উঠল মনের পর্দায়—সেই পিচ্চি মেয়েটা, তার পিচ্চি মায়াবতী।
সেদিনও মেয়েটি এমন করে হাত ধরেছিল টানছিল তাকে, গাড়ি থাকে নামানোর জন্য। এমন এক টান ছিল সেই ছোঁয়ায়, যা বুকের গভীরে গিয়ে ধাক্কা দিয়েছিল। আর আজ মায়ার স্পর্শও যেন ঠিক সেইরকম। কিন্তু কেন? কেন এত মিল এই দুই স্পর্শে?
আরমানের ঘোর কাটল হালকা এক ব্যথার স্রোতে। কব্জির পাশে এক টান ধরতেই সে ধীরে চোখ মেলল। চোখের সামনেই সেই দৃশ্য—মায়া মাথা নিচু করে নিঃশব্দে তার হাতে রুমাল বাঁধছে। ঠিক সেই জায়গাটায়, যেখানে ও কামড়ে দিয়েছিল কিছুক্ষণ আগে। নিজেরই দাঁতে ক্ষতবিক্ষত করে ফেলা সেই ত্বকের উপর সযত্নে রুমালটা জড়িয়ে দিচ্ছে সে। যেন চাইছে, কেউ না দেখতে পায়।
কারণ হাতের সেই অংশটা এতটাই ফুলে গেছে, রক্ত জমে গেছে ভেতরে, দাঁতের গভীর ছাপ এখনো স্পষ্ট। কেউ একবার তাকালেই বুঝে যাবে—কিছু ঘটেছে। সেই সম্ভাবনাটুকু মায়া মুছে দিতে চাইছে নিঃশব্দ যত্নে।
আরমান স্থির চোখে তাকিয়ে রইল মায়ার মুখের দিকে। এক দৃষ্টিতে। সেই চোখ—একই সেই গভীর চোখ, যার ভাষা একদিন তার হৃদয়ের প্রতিটি কোণে ছায়ার মতো ছড়িয়ে পড়েছিল। সেই মুখের গঠন, সেই কাঁপা ভঙ্গিমা, সেই নরম শ্বাস…
নাহ!
আরমান নিজের ভেতরে এক অস্থির কাঁপুনি অনুভব করল। সে আর ভাবতে পারছে না। ভাবতে চায় না। মায়া, এই মায়া—কোনোভাবেই মাইশা হতে পারে না। না, কিছুতেই না। এটা অসম্ভব।
কিন্তু হৃদয় আবার মাথার মতো জোর করে মানতে চায় না।
সে চোখ ফেরাল না, শুধু নিঃশব্দে ভেতরের কণ্ঠ শুনে গেল—আরও দুইদিন… শুধু আরও দুইদিন অপেক্ষা করতে হবে। কালকের দিনটা গেলেই সব স্পষ্ট হবে।
বিরাট বলেছে—আজকের দিনটা, আর কালকেরটা। এই দুটো দিনের মধ্যে সে খুঁজে পেয়ে যাবে ওর মাইশাকে। বিরাট নিজে পৌঁছে দেবে তাকে তার হারিয়ে যাওয়া পিচ্চি মায়াবতীর কাছে।
আরমান দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলল। চোখে তখনও মায়ার প্রতিচ্ছবি, আর হৃদয়ের গভীরে এক বিস্ময়কর সংশয়—যেটা কোনো যুক্তি দিয়ে মুছে ফেলা যায় না।
“হয়ে গেছে, চলুন।”
মায়ার শান্ত, সংক্ষিপ্ত বাক্যটা যেন টান দিয়ে টেনে আনল আরমানকে তার অদ্ভুত দোলাচলের জগৎ থেকে। চিন্তার গভীরতা থেকে চোখ তুলে তাকাল সে মায়ার দিকে।
কোনো কথা বলল না আর। ভেতরে ভেতরে নিজেকে বলল—আর মাত্র দুটো দিন। তারপরই সব স্পষ্ট হবে। তারপরই সে খুঁজে পাবে ওর মাইশাকে… নিজের হারিয়ে যাওয়া প্রিয়তাকে।
মায়া ইতিমধ্যেই নিজের কথা শেষ করে দরজার দিকে এগিয়ে গেছে। হাঁটার ভঙ্গিতে কোনো জোর নেই, কিন্তু তাতে একধরনের নিশ্চিন্ততা আছে—যেন কিছু একটা বুক থেকে নামিয়ে রাখা হয়েছে।
আরমান আর কিছু ভাবল না। মাথার ভেতরটা হঠাৎ অদ্ভুতভাবে নিস্তব্ধ হয়ে গেল। পা দুটো আপনাতেই মায়ার পেছনে চলতে শুরু করল—নিঃশব্দ, নির্লিপ্ত, অথচ যেন এক অজানা বাঁকের দিকে যাত্রা শুরু হয়েছে তাদের।
মায়া মিটিং রুমের ভিড়িয়ে রাখা দরজাটা খুলেতেই কেউ যেনো হুড়মুড় করে ঢুকে, পড়তে গিয়েও নিজেকে সামলে নিলো। মায়া ভয়ে চমকে উঠে দুই পা পিছিয়ে গেলো। আর সাথে সাথেই পিছনে থাকা আরমানের শক্ত বুকের সাথে ধাক্কা খেলো। তাই আবারো ছিটকে মায়া সামনের দিকে সরে এলো। তারপর মায়া পিছনে ঘুরে আরমানের উদ্দেশ্যে মাথা নাড়িয়ে বলল, “সরি হ্যাঁ।”
আরমান অদ্ভুত ভাবে তখনো মায়ার দিকে তাকিয়ে। মায়া সেদিকে পাত্তা না দিয়ে, সামনে তাকিয়ে দেখলো আবির দাঁত কেলিয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে। মায়া বিরক্ত নিয়ে বলল, “ভাইয়া, আপনি এমন কেন বলুন তো?”
আবির দাঁত কেলিয়ে বলল, “সঅঅঅরি। আসলে আমি তোমাদের ডাকতে এসেছিলাম। দুজনেই একই সময় দরজা খুলেছি তাই এই অ্যাক্সিডেন্টে।”
আমার নিষ্ঠুর ভালবাসা পর্ব ২০
আবির কিছুটা মিথ্যা বলল। ও অনেক আগেই এসেছিল ওদের ডাকতে। কিন্তু না ডেকে ভিতরে কি চলছে, তা হেট হয়ে দরজায় কান লাগিয়ে বোঝার চেষ্টা করছিল। আর মায়া দরজা খুলতেই, ও ভয়ে চমকে উঠে এমন ভাবে পড়ে যেতে নিয়েও সামলে নিয়েছে নিজেকে।