আমার প্রেমিক ধ্রুব পর্ব ২৬

আমার প্রেমিক ধ্রুব পর্ব ২৬
অবন্তিকা তৃপ্তি

প্রেমিক ধ্রুবর মারাত্মক স্পর্শ; তার গাঁয়ের মৃদু-মন্দ সুঘ্রাণ; সবকিছু অদিতিকে মোহিত করে ভীষণ! এমন নয় যে; এটা তাদের প্রথম জড়িয়ে ধরা; প্রথম কাছে আসা! এর আগেও ধ্রুব ছুঁয়েছিলো ওকে; এভাবেই যত্নে-আদুরে ভঙ্গিতে টেনে নিয়েছিল নিজের বুকে। তবে তখন অদিতি দেখেছিল এই ধ্রুবর-ই মারাত্মক উন্মাদনা; ওর পাগলামি; ওর রাগের পারদ! তবে আজ; আজ ধ্রুব শুধুই একজন প্রেমিক! ব্যাস; অদিতির প্রেমিক বৈ সে আর কিচ্ছুটি নয়।
কেটে যায় অনেকটাসময়! ধ্রুব তখনও চোখ বুজে জরিয়ে ধরে আছে নিজের শখের নারীকে। হঠাৎ করে কেবিনে সৌরভ ঢুকে পরলেন; তার হাতে মেডিসিনের প্যাকেট; অপরহাতে বাটি। ছেলেকে অদিতির সঙ্গে জড়িয়ে ধরে বসে থাকতে দেখে তিনি যারপরনাই লজ্জা পেয়ে গেলেন। মুখ নামিয়ে চলে যাবেন; তার আগেই দেখে ফেলে উনাকে অদিতি।লজ্জা-ভয়ে ও দ্রুত ধাক্কা দিয়ে উঠে ধ্রুবকে। ধ্রুব এই ধাক্কায় ব্যথা পেয়ে ‘আহ’ করে শব্দ করে উঠে! ভ্রু কুচকে অদিতির দিকে তাকালে ধ্রুব; অদিতি অস্বস্থিতে জমে যায়! চুল কানের পেছনে গুঁজে নিতে নিতে নিভু গলায় বলল —-‘আপনার বাবা এসেছেন।’

ধ্রুব চোখ উল্টে ফেলল; চুড়ান্ত হতাশ চোখে পেছনের দিকে চেয়ে নিজের বাবাকে দেখল। সৌরভ ইয়ামিন চলে যেতে নিচ্ছিলেন; পেছন থেকে ধ্রুব ডাকলো না উনাকে একবারের জন্যে; ও অদিতিকে ছেড়ে দিয়ে আঙ্গুলের নখ-গুলো খুটিয়ে দেখা শুরু করেছে!সৌরভকে ধ্রুবর পুরোদমে ইগনোর করা দেখে অদিতি নিজেই তটস্থ হয়ে বেড থেকে উঠে দাঁড়ালো; ওড়না সামলে ডেকে বসলো——‘আংকেল; ভেতরে আসুন না?’
সৌরভ অদিতির সরল-নরম কণ্ঠে পেছন ফিরে তাকালেন। ধ্রুব অদিতির দিকে কড়া চোখে তাকালো তাৎক্ষণিক! অদিতি অবাক চোখে চেয়ে দেখে ধ্রুবর ইশারা-গুলো; অথচ ও কিছুই বুঝেনি। সৌরভ অদিতির থেকে চোখ সরিয়ে ছেলের দিকে শান্ত-ঠান্ডা দৃষ্টিতে তাকালেন! তিনি দেখেন; তার গুণধর ছেলে মেয়েটাকে রাগী-রাগী চোখে কিছু একটা ইশারা করছে; অদিতিও পাল্টা ইশারা করলো চোখ দিয়ে —-‘কি হয়েছে?’

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

সৌরভ ওদের ইশারায় কথা বলার মধ্যে দুজনকে থামানোর জন্যে হালকা কাশলেন; অদিতি কাশির আওয়াজে দ্রুত ধ্রুবর থেকে চোখ সরিয়ে নিল! ধ্রুব অদিতির অবুঝ ভাব-খানার দিকে দিকে চেয়ে রাগ চেপে মুখ খিঁচিয়ে রেখে স্রেফ বললো —-‘নাথিং; ই‍্যয়ু ক্যারি অন।’
অদিতি পাত্তা দিল না ধ্রুবকে। ও আবারও নম্র গলায় ভেতরে ঢুকতে বললো সৌরভকে। বারবার এভাবে বলায় সৌরভ রুমে ঢুকলেন। পেছন পেছন ইমন সহ বাকিরাও একে একে রুমে ঢুকে গেল। ওদের হুড়মুড়িয়ে রুমে ঢুকতে দেখে অদিতি অবাক হয়ে তাকাল; ধ্রুব এবার মহা বিরক্ত হলো! কত সুন্দর হাগ করে ছিল ও অদিতিকে,এরমধ্যে বাগরা না দিতে পারলে হচ্ছিল না তাদের! ধ্রুবর মুখে নারাজি লেপ্টে আছে।

ওর বন্ধুরা বাকিরা সেটা পাত্তা দিল না। রুমে ঢুকেই ধ্রুবর আশপাশে যে-যার মতো ধ্রুবর বেডের চারপাশে জায়গা নিয়ে বসে গেল। অদিতি একবার ধ্রুবর বিরক্তিমাখা মুখ দেখছে; তো আরেকবার ওদের কাজ দেখছে! সৌরভ স‍্যুপ এনেছেন; স‍্যুপ থেকে ধোয়া উঠছে। উনি স‍্যুপ চামচ দিয়ে নারিয়ে দিতে দিতে ধ্রুবর দিকে চেয়ে বললেন———-‘ডাক্তার বলেছে তরল খবর খেতে। স‍্যুপ ভালো লাগবে তোমার! খেয়ে নাও। নাকি আমি খাইয়ে——‘
‘দরকার নেই, আমি পারব!’———- ধ্রুব কথাটা বলে সৌরভকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে স‍্যুপের বাটি নিজের হাতে নিয়ে নিলো। সৌরভ কিছু বললেন না; নাইবা ভ্রু কুঁচকালেন। উনি অত্যন্ত স্বাভাবিক চোখে ইমনদের দিকে তাকিয়ে বললেন ——-‘আমার এখানে থাকার দরকার সম্ভবত আর নেই। আমি অফিসে যাব; খেয়াল রেখো ওর। আর সিগারেট খেতে মানা করেছে ডক্টর। ওটা যেনো কদিন না খাওয়া হয়; খেয়াল রেখো তোমরা।’

ইমনরা মাথা নাড়ালো! ধ্রুব স‍্যুপ খেতে খেতে ব্যঙ্গ করে ফিক করে হাসার ভান করলো সৌরভের চিন্তিত কথার বিপরীতে। সৌরভ ভ্রু কুঁচকে তখন ছেলের দিকে তাকালেন। ইমন বাপ-ছেলের ইশারায় এমন খোচাখোচি দেখে অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে পাশ থেকে আলগোছে ধ্রুবর পেটে গুতো দিতেই ধ্রুব আবার গম্ভীর হয়ে ভদ্রটির মতো স‍্যুপ খেতে লাগলো। সৌরভ এবার চোখ সরিয়ে অদিতির দিকে তাকালেন। উনার তাকানোতে অদিতি জোরোসরো ভঙ্গিতে তাকালো উনার দিকে।এমনিতেই ধ্রুবর উনার প্রতি একেকটা অসভ্য আচরণ দেখে অদিতি এমনিই গুটিয়ে যাচ্ছিল। সৌরভ মমতা নিয়ে ডাকতেই; ও স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করলো; উনি বললেন———‘তুমি থাকছো তো এখানে? মানে হাসপাতালে?’

অদিতি ঘড়ির দিকে তাকাল; ওর যাওয়া লাগবে হোস্টেলে। বাড়ি থেকে হোস্টেলে কল যাবে। অদিতি অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে বলল ———‘আমি ঘণ্টা খানেকের মধ্যে চলে যাবো আংকেল।’
সৌরভের এবার চিন্তা বাড়লেও, তেমন মানা না করে বললেন ——-‘ওহ! তুমি থাকলে ভালো হতো। কারো কথা তো এই ছেলে শুনেনা। যার নমুনায় আজকে আমরা সবাই এই হাসপাতালে বসে আছি। তোমার কথা হয়তবা কানে নিলেও নিবে। কিন্তু ঠিকাছে তোমার যেহেতু যাওয়া লাগবে ; জোর করবো না। তবে ওর প্রতি খেয়াল রেখো মা। আমি তোমাকে নিয়ে অনেক আশাবাদী।’

অদিতি সৌরভের শেষ কথার মানে বুঝলো না; তবুও ও মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিয়ে বলল ———‘জি আংকেল।’
সৌরভ এবার হালকা হেসে অদিতির মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে ধ্রুবর দিকে একপল চেয়েই চলে গেলেন। উনি যেতেই ধ্রুব একহাতে স‍্যুপের বাটি ধরে রেখে: অপরহাতে অদিতিকে ওর শিউরের পাশে টেনে বসিয়ে দিল। অদিতি এভাবে হাত ধরে হুট করে বসে ফেলানোতে ভ্রু কুঁচকে তাকালো ধ্রুবর দিকে।চারপাশে সবাইকে ইশারা করে নিভু নিভু গলায় বলও ———-‘এখানে যে মানুষ আছে; খেয়াল করেন একটু প্লিজ।’
ধ্রুব সেসব পাত্তা দিল না; বরং সোজা ইমনের দিকে চেয়ে বলল ——-‘তাকে নিয়ে আরো আধা-ঘণ্টা পর আসা গেল না?’

‘কাকে নিয়ে?——— ইমন জানা সত্ত্বেও অবুঝ গলায় পাল্টা প্রশ্ন করলো!
ধ্রুব খাওয়া থামিয়ে ভ্রু কুচকাতেই ইমন শুধরে গিয়ে গলা কেশে বলল ————‘আরে আংকেল স‍্যুপ কিনেছে; ঠান্ডা হয়ে যাবে সে জন্যে আমাদের বাধা না মেনেই তোর মতোই বড়বড় পা ফেলে চলে এসেছে। থামাতে থামাতেই সোজা তোর রুমে হাজির; আমরা কি করবো এখানে?’
ইমন এবার ভ্রু বাঁকিয়ে; হঠাৎ বাঁকা হেসে ঠাট্টা করে বললো——-‘কেন মুন্নি বদনাম হু গায়ি সিন চলছিল নাকি তোদের মধ্যে? আংকেল কি বাই চান্স———‘

অদিতি লজ্জায় মুখ অন্যপাশে ঘুরিয়ে ফেলল। ধ্রুব ভ্রু কুঁচকে ধমকে বললো ————‘শাটঅ্যাপ ইমন।’
ইমন থেমে গিয়েও মিটমিট করে হাসছিল। সুমন পাশ থেকে টিটকারি করে বলল ——-‘কেন ভাই? লজ্জায় পড়ে যাচ্ছেন নাকি? আপনারে লজ্জা পাইলে হেব্বি দেখায় কিন্তু; তাইনা ভাবি?’
ধ্রুব অদিতির দিকে আড়চোখে তাকাল; মেয়েটা লজ্জায় লাল মুখ নিয়ে ওপাশে চেয়ে বসে আছে; কিছু বলতেও পারছে এ কাউকে! ধ্রুব এবার সুমনের মাথায় ভয়াবহ এক গাট্টা মেরে বলল ———‘আমার লজ্জা-ফজা নেই। কিন্তু আমার পাশে যে বসে আছে; তার আছে।তাই মুখ বন্ধ: এন্ড বেড়ো সবাই রুম থেকে।’
থ্রি ইডিয়েটস এর কেউই যেন এ কথা শুনলোই না; যে যার জায়গায় আরাম করে হেলান দিয়ে বসল বিছানায়। ইমন অলস ভঙ্গিতে বলল ———‘ভাই; আজ সারাদিন তোর জন্যে অনেক ছুটোছুটি করেছি। আমাদের রেস্ট দরকার।রোমান্সের চিন্তা বাদ দিয়ে আমাদের সঙ্গে কোপারেট কর প্লিজ!’

ধ্রুব চুড়ান্ত রেগে তাকিয়ে রইল এদের ন্যাকামোর দিকে। দাঁতে দাঁত পিষে কিছু বলতে যাবে; তার আগেই ইমন কিছু একটা হুট করে আবার বসে গেল। হেঁটে টেবিলের উপর থেকে একটু আগে আনা দুটো গোলাপ নিয়ে বিছানায় বসলো। একটা অদিতির দিকে বাড়িয়ে; অপরটা ধ্রুবর দিকে বাড়িয়ে দিয়ে চোখ টিপে বলল ———‘আমার বন্ধু; এন্ড বন্ধুর সদ্য হওয়া গার্লফ্রেন্ডের জন্যে দুটো গোলাপ আমার পক্ষ থেকে!’
অদিতি হেসে ফেলল; আলগোছে হেসে গোলাপটা হাতে নিয়ে ছোট করে বলল ——-‘থ্যাংক ইউ ভাইয়া।’
কিন্তু ধ্রুব গোলাপটা নিলো না। ইমন ধ্রুবর হাতে এবার জোর করে একটি গোলাপ ধরিয়ে দিয়ে হেসে হেসে বলল ———‘কংগ্রেস মা-ম্মা; আপনার নতুন মিঙ্গেল জীবনের জন্যে।’

অদিতির হাতে ইমন গোলাপ দিয়েছে; ও সেটা হাতে নিয়ে লজ্জায় চুপ করে বসে রয়েছে; আবার মাঝেমধ্যে আড়চোখে ধ্রুবকে দেখছে।ফুল হাতে ধ্রুবকে দেখাচ্ছে ভীষণ বিরক্ত! ফুল-টুলে ধ্রুবর জমে নি কোনোদিনই। এবারেও হলো তাই! ধ্রুব ফুলটা কর্কশভাবে চেপে রেখেছিল হাতে; বিরক্ত ভঙ্গিতে বলল ———‘তাই বলে ফুল? নিব্বা বাচ্চা আমরা এখনো?’
ইমন অবাক হয়ে বলল ———-‘আরে? ফুল হচ্ছে প্রেমিকের আজন্ম সাথী! তোর না ভালো লাগলে অদিতিকে দিয়ে দে; ওর তো ফুল ভালো লাগে ভীষণ। রাইট অদিতি? ‘
অদিতি তাকিয়ে রইল; বলার চেষ্টা করলো ——-‘আমি——‘
ধ্রুব ফুল হাতে অদিতির দিকে ফিরলো; অদিতিও তাকাল! ধ্রুব ফুলটা দেখিয়ে ভ্রু বাকিয়ে প্রশ্ন করলো ——-‘ফুল পছন্দ তোমার? নিবে এটা?’

অদিতি বোকার মতো তাকিয়ে রইল! কি বলা উচিত ওর? ফুল তো ধ্রুবর নিজে থেকেই দেওয়া উচিত! সেখানে ধ্রুবর বন্ধুদের সামনে ও বলবে- যে আমার ফুল পছন্দ; আমাকে দাও এটা! ছিহ্; কি বিধঘুটে লাগবে দেখতে ব্যাপারটা! অদিতি মানা করতে চাইল; ধ্রুব সেসবের ধার অব্দি ধারলো না; ও সোজা অদিতির কানের পেছনে ফুলটা গুঁজে দিয়ে বলল ———‘কিছু পছন্দ হলে বলা উচিত! আনিয়ে দেব; ওকে?’
অদিতি ঘোরলাগা চোখে তাকিয়ে রইলো অপলক ধ্রুবর দিকে। ওর চোখ-গুলো আবার টলমলে হচ্ছে! এই প্রেমিক ধ্রুব এতো মারাত্মক কেন? কেন সে সবকিছু ছেড়েছুড়ে অদিতির মতো মেয়েকে এভাবে মারাত্মকভাবে ভালোবাসতে জানলো?

অদিতি সেই কখন থেকে হাতের থাকা ফুলটাই দেখে যাচ্ছে: কানের পেছনে ধ্রুবর গুঁজে দেওয়া ফুল! ভালোলাগায় শরীর-মন ছেয়ে যাচ্ছে ওর! ধ্রুব বাকিদের সঙ্গে গল্পে মশগুল। অদিতি এ-যাত্রায় ঘড়ির দিকে চেয়ে বলল ———‘আমার যাওয়া লাগবে এবার। হোস্টেলে কল আসব বাড়ি থেকে।’
ধ্রুবও গল্প থামিয়ে ঘড়ি দেখলো; ভ্রু কুঁচকে ও বললো ——-‘সবে ছটা বাজে। এত দ্রুত কেন? আরেকটু থাকো আমার কাছে। আ’ম সিক;টেইক কেয়ার করো আমার।’
ধ্রুবর এমন ছেলেমানুষি কথায় হেসে ফেলল অদিতি! হাসি থামিয়ে লাজুক গলায় বলল ——-‘বাড়ি থেকে কল আসবে আমার! আমাকে ওখানে না পেলে সমস্যা হবে।’
ধ্রুব হতাশ শ্বাস ফেলল: আবার পরিবারের অজুহাত! কিন্তু ও অদিতির দিকটা বুঝতে পেরে হার মেনে বললো——‘ঠিকাছে যাও! আমি তানিয়াকে বলে দিচ্ছি। নিয়ে যাবে ও তোমাকে।’

অদিতি সম্মতি দিয়ে উঠে দাঁড়ালো! কাঁধে ব্যাগ নিয়ে আরেকবার ধ্রুবর দিকে তাকাল। অসুস্থ ধ্রুবকে এভাবে ছেড়ে চলে যেতে ওর অপরাধবোধ হচ্ছিল। ও ধীরে গলায় বলল ———-‘আসি; ভালো থাকবেন। কাল আবার আসব।’
ধ্রুব মাথা নেড়ে সায় দিল। অদিতি চলে যাচ্ছে; দরজা খুলে বেরিয়ে যাবার আগে আরো একবার ধ্রুবর দিকে তাকাল। ধ্রুবও তখন ওর দিকে তাকিয়ে ছিলো। অদিতি ঠোঁট হালকা টেনে মুচকি হাসল; ধ্রুবর তীক্ষ চোখ সেই হাসিতে নিমিষেই ঠান্ডা হয়ে গেলো। ধ্রুব মোহিত দৃষ্টিতে অদিতির দিকে চেয়ে হালকা হাসল! দুজনের হাসি দুজনের আজকের দিনটা পরিপূর্ণ করলো; অদিতি দরজা লাগিয়ে চলে গেল!
ও যেতেই পাশ থেজে রাজন এবার বিরক্ত হয়ে বলল ———-‘ভাইরে এমন অসুস্থ অবস্থাতে ফেলে চলে গেল ভাবি! আমার দুঃখ হইতেসে।’

ধ্রুবর মনটা খারাপ ছিলো; তবুও ও উত্তর দিল——-‘ওর ফ্যামিলি—‘
পাশ থেকে সুমন থামিয়ে দিয়ে বলল ———-‘ভাই আমার মনে হচ্ছে আপনার প্রেম সাকসেসফুল হবে না। ভাবি শেষ মুহূর্তে যদি আপনার সঙ্গে চিট করে? অ্যাই মিন উনার বাবার মতের পক্ষে যদি অন্য কাউকে বিয়ে করে ফেলে?’
ধ্রুব চিন্তিত হলো না; হালকা হাসি ঠোঁটে ঝুলিয়ে রেখে বললো—-‘ও এমন করবে না; এমন মেয়ে ও না।’
ধ্রুবর বিশ্বাস দেখে সুমন ভ্রু কুঁচকে বলল ———-‘আপনি এত শিউর কিভাবে?’
ধ্রুব উত্তর দিলো এ কথার-———‘যদি ও তেমন হতো;তাহলে আমাকে শুরুতেই আমার এত কষ্ট; এত সাফারিং দেখে ও হ্যাঁ বলে দিত। বাকি যা হবার হয়ে যেত; সেসবের ও ধার ধারতো না। কিন্তু ও সেটা করেনি; ভবিষ্যতের ভয়েই আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে বারবার। এখন যখন ও নিজে সবার সঙ্গে ফাইট করতে রেডি আমার জন্যে, ঠিক তখন ও আমাকে হ্যাঁ বলেছে। আমি চিনি ওকে; শি উইল ডিফেনিটলি ফাইট ফর মি; ফর ম্যাই লাভ!’
সুমন চেয়ে রইল ধ্রুবর দিকে। ধ্রুবকে আজ বহুদিন পর এতটা খুশি দেখা যাচ্ছে; ওদেরও এটা দেখে ভালো লাগছিল ভীষণ! তাই কেউই এটা নিয়ে আর কথা বাড়ালো না তেমন। এবার ইমন পাশ থেকে বলল ——-‘এরপর? রিলেশন তো হয়ে গেল মামা! জিতে গেলা তুমি।’

ধ্রুব উত্তর দিল না! রাজন বলল ——-‘ভাই তন্ময়রে কি করবেন? ওরে এবার আমরা সবাই দেইখা নিমু! কত বড়-বড় কথা বলসে না আপনার সামনে? ওর জিহ্বা টেনে ছি-ড়ালামু এইবার। আপনি একবার ডিসচার্জ পাইয়া যান।’
ধ্রুব এবার উত্তর দিল; বাঁকা হাসি ঠোঁটে রেখে রহস্য করে বললো ———‘কালকে দেখা হচ্ছে ওর সঙ্গে। মেসেজে ওরে রেডি থাকতে বলিস।’

আমার প্রেমিক ধ্রুব পর্ব ২৫

ইমন বলল ——-‘তোর ডিসচার্জ হবে পরশু। কাল কিভাবে——-‘
ধ্রুব পাত্তা না দিয়ে বলল ———‘তুই জাস্ট তন্ময়কে আমার নামটা আরেকবার মনে করিয়ে দে; বাকিটা আমি দেখে নিচ্ছি আগামীকাল! নাও তন্ময় ইজ গোইং টু ডিস্ট্রয় টোটালি বাই দিস ধ্রুব ইয়ামিন।’

আমার প্রেমিক ধ্রুব পর্ব ২৭