আমার হায়াতি পর্ব ৩৫

আমার হায়াতি পর্ব ৩৫
Nahar Adrita

সারা রুম জুড়ে পায়চারি করছে হায়াত। তার পেছন পেছন আদিবও সমান তালে হাটছে, দরজার বাইরে পর্দার আড়ালে দাড়িয়ে আছে সকলে। হায়াত রাগী কন্ঠে বললো,
– এভাবে পেছন পেছন হাটছেন কেনো !
আদিব কেবলা মার্কা একটা হাসি দিয়ে বললো,
– তুমি যদি ব্যথা পাও এর জন্য।
– সরুন তো সামনে থেকে, আমার প্রচুর রাগ হচ্ছে।
হায়াত এবার আয়নার সামনে গিয়ে দাড়ালো, পেটে হাত রেখে আয়না দিকে তাকালো, সরু চোখে তাকিয়ে আদিবকে বললো ,

– আপনার কি মনে হয় আমার পেটে সত্যিই দুটো বেবি আছে ?
– হ্যা বউ, তোমার যদি বিশ্বাস না হয় তাহলে রিপোর্ট গুলো দেখো।
হায়াত এবার চেয়ারে বসে ভ্যা ভ্যা করে কান্না করে দিলো। হায়াতের কান্না দেখে নুপুর, মিনহাজা,আরাবি, মিসেস অরোরা, সুফিয়া সকলে রুমে ঢুকে পরলো। হায়াত সকলকে দেখে আরও জুড়ে জুড়ে কান্না করতে লাগলো। আদিব ডিভানের পাশে রাখা জগ থেকে এক গ্লাস পানি এনে হায়াতকে খাইয়ে দিলো। মিসেস অরোরা হায়াতের মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

– কি হয়েছে আম্মু আমাকে বলো,, তুমি কি বাচ্চা হওয়াতে খুশি না ?
আদিবও মিসেস অরোরার কথায় সম্মতি জানালো,
– হ্যা জান তুমি কি চাচ্ছো সেটা বলো,এভাবে কান্নাকাটি করলে তো আরো অসুস্থ হয়ে পরবে।
হায়াত এবার চোখের পানি মুছে আরাবির দিকে তাকিয়ে বললো,
– আমার কত্তো শখ ছিলো, আরুর আগে বেবি হবে তারপর আমার, ওর ছেলের সাথে আমার মেয়ের বিয়ে দিবো। কিন্তু এটা কি হলো ওর আগে আমার-ই বেবি হবে, তাও নাকি আমি তিনমাস ধরে কনসিভ করেছি।
হায়াতের মুখে এমন বাচ্চাদের মতো কথা শুনে আদিব সহ সকলে হেসে দিলো, আরাবি ঠোঁট চেপে হেসে বললো,
– জানু এর জন্য কান্না করতে হয় ? চিন্তা করছিস কেন, আমরা আবার একসাথে বেবি নিব কেমন..!!
মিসেস সুফিয়াও বললেন,

– হায়াত মা ! আরাবি তো ঠিক কথায় বলেছে এর জন্য কেউ কান্না করে।
হায়াত একটু নড়েচড়ে বসে বললো,
–চাচী আম্মু আমার সমস্যা শুধু এইটা না….
আরাবী একটু চোখ ছোট ছোট করে বলল,
– তাহলে কী সমস্যা সেটা বল আমাদের কে।
– আসলে ২ টা বাচ্চা হলে আমাকে কেমন পান্ডার মতো লাগবে, গোল একটা ফুটবল লাগবে দেখতে, আমি তো ঠিক মতো হাটতেও পারবো না, আর তার চেয়ে বড় কথা আমি ওদের সামলাবো কী করে।
এই বলে হায়াত আবার কান্না করে দিলো,হায়াতের কথা শুনে সকলে হো হো করে হেসে দিলো। নুপুর হাসতে হাসতে বললো,

– ভাবি এতো চিন্তা করছো কেন। আমরা আছি তো আমরা সবাই মিলে কুটু পাখিদের সামলাবো।
আদিব হায়াতকে হালকা আদরের রেশে জড়িয়ে ধরে বললো,
– আফরা তুমি গলুমলু হলে আরো সুন্দর লাগবে তোমাকে দেখতে, আর এই টাইমে এতো কান্নাকাটি করতে নেই সোনা। আমি আছি তো আমি কি বলেছি তুমি মোটা হয়ে গেলে আমি তোমাকে আর ভালোবাসবো না ?
হায়াত চোখ মুছে আদিবের শার্টে নাক মুছে বললো,
– আমার চেহারা নষ্ট হয়ে গেলেও আমাকে ভালোবাসবেন, আগের মতো ?
– সৌন্দর্যের লোভে পরে আমি কি তোমাকে ভালোবেসেছি, তুমি জানো না ভালোবাসা আর সৌন্দর্যের মোহে ডুবে যাওয়া দুটো দুই জিনিস ৷
এই বলে আদিব হায়াতের কপালে পরশ একে দিলো। হায়াতের কান্না ততক্ষণে কমে গিয়েছে। নুপুর মিনহাজা হায়াতের কলেজ ড্রেসটা ওয়াশরুমে রেখে আসলো। মিসেস অরোরা হায়াতের গালে হাত রেখে বললো,

– আম্মু খুব সাবধানে থাকতে হবে তোকে, সারাদিন ফল ফ্রুটস খাবে, আর প্রয়োজন ছাড়া একদম রুম থেকে বের হবে না কেমন।
হায়াত চুপচাপ মাথা নাড়ালো। এরপর আস্তে আস্তে সকলে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
দুই ঘন্টা আগে…………….
হায়াত পুনরায় জ্ঞান হারালো, আদিব আর আরাবি বুঝতে না পেরে হা হয়ে গেলো, যখন বুঝতে পারলো হায়াত জ্ঞান হারিয়েছে তখন ডাক্তারকে ডাকতে শুরু করলো, একজন নার্স ছুটে আসলো। নার্স হা হয়ে আদিবের দিকে তাকাতেই আদিব দাঁত বের করে হেসে বললো,

– আমি জানি, আমি যে অনেক হ্যান্ডসাম। তাই এভাবে তাকিয়ে না থেকে আমার স্ত্রীকে দেখুন।
– না মানে হি হি…. পেসেন্ট আবার জ্ঞান হারালো কেন। আপনারা কি উনাকে হাইপার করে ফেলেছেন ?
আরাবি হায়াতের কাছে এসে চিন্তিত গলায় বললো,
– আমি তো একটু আনন্দে চিৎকার করে ফেলেছিলাম, কিন্তু ভাইয়া যখন বললো জানুকে টুইন বেবির হবে, তখনই সেন্সলেস হয়ে গেলো।
নার্স কিছু একটা চেক করে মিনিট দশেক পর বললো,
– পেসেন্টের জ্ঞান ফিরবে একটু পরই, আর সাথে সাথে ড. লিয়ার কেবিনে নিয়ে যাবেন। ওহ হ্যা সাথে করে একজন মহিলাও পাঠাবেন।

এই বলেই নার্সটি চলে গেলো। আদিব হায়াতের পাশে বসে হাতের মুঠোতে হাত জোড়া নিয়ে বসে বসে ফেসবুক স্ক্রোল করতে লাগলো। আর আরাবি বাড়ির সকলকে খুশির সংবাদ দিয়ে দিলো।
প্রায় চল্লিশ মিনিট পর হায়াত চোখ খুললো। আদিব আর দেরি না করে হায়াতকে একটু পানি খাইয়ে দিয়ে কোলে তুলে নিলো। আর আরাবি হায়াতের ব্যাগ হাতে নিলো। কেবিনের সামনে এসে হায়াতকে নামিয়ে দিলো। আরাবি হায়াতের বাহু ধরে আস্তে ধীরে ভেতরে নিয়ে গেলো। আর আদিব বাইরে ওয়েটিং চেয়ারে বসে রইলো।
ড. লিয়া আরাবি আর হায়াতকে বসতে বললো,কিছু ফাইল বের করে বেশ কিছুক্ষণ দেখার পর বললো,

– আপনিই মিসেস চৌধুরী ।
– জ্বি ডক্টর……..
– আপনার মাসিক বন্ধ হয়েছে কয় মাস ধরে…………. এরপর হায়াতকে একে একে নানান প্রশ্ন করতে থাকলো, আর হায়াত তার জবাব দিতে লাগলো। আর আারাবি খুব মনোযোগ দিয়ে শুনতে লাগলো।
ড. লিয়া এক গাল হেসে বললো,
– এতো অল্প বয়সে মা হচ্ছেন নিজের প্রচুর যত্ন করতে হবে কিন্তু। আপনার তাহলে তিন মাস পনেরো দিন চলছে প্রেগ্ন্যাসি জার্নির। আপনার বাচ্চার যাতে পুষ্টির ঘাটতি না পরে সে দিক লক্ষ রাখবেন।

– আমার পেট অনুযায়ী তো আমার কনসিভ হওয়ার কথা মিলছে না।
– রুলস ফলো করে চলুন, বাচ্চাদের পুষ্টির ঘাটতি হলেই সমস্যা এটা মনে রাখবেন ওকে।
আর কিছু না বলে আরাবিকে সাথে নিয়ে বেরিয়ে গেলো হায়াত। আদিব হায়াতকে কোলে তুলে নিতেই হায়াত রাগে আদিবকে কিল ঘুষি মারতে থাকলো। নিজের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে আদিবের বুকে কিল ঘুষি মারতে থাকলো হায়াত। আদিব হায়াতকে গাড়িতে বসিয়ে আরাবিকে বললো,

– দেখেছো তোমার বেস্টুর পাগলামি, দুই ফুটের পিচ্চি মেয়ের ঝাঁজ কতো। অকারণে স্বামীর ওপর অত্যাচার করে।
আরাবির খুব মনোযোগ দিয়ে দু’জনের ঝগড়ার কারণ খুজে বের করতে চেয়েছিলো। কিন্তু আদিবের এমন হাস্যকর কথা শুনে আরাবি ফিক করে হেসে দিলো।
আরাবি অনেক খুঁচানোর পরও হায়াতের মুখ থেকে একটা কথা বের করতে পারে নি। আদিবও কথা না বাড়িয়ে গাড়ি স্টার্ট দিলো। আদিব মনে মনে ভাবলো হায়াত হয়তোবা সেইদিনের ঔষধ খেতে না দেওয়ার কারণে রাগ করেছে।
রাত আটটা বেজে পঁচিশ মিনিট। গেটের সামনে এসে গাড়িটি থামলো। আরাবি হায়াতকে নিয়ে আস্তে আস্তে নামলো। চারদিকে নিস্তব্ধতা,রাস্তায় কিছু কুকুর ছাড়া আর কিছুই চোখে পরছে না। আদিব রফিক কাকাকে গাড়িটা পার্ক করতে বললো।
হায়াত মেইন গেটের সামনে এসে থেমে গেলো। আরাবি কপাল কুচকে বললো,

– কি হয়েছে থামলি কেন, ভেতরে চল।
– আমি যাব্বো নাআআআআ।
আদিব এগিয়ে এসে আরাবিকে ভেতরে যেতে বললো,আরাবিও চুপচাপ ভেতরে চলে গেলো। মনে মনে ভাবলো – হয়তো প্রেগন্যান্সির ব্যাপারেই দম্পতি আলোচনা করবে।
আরাবি দরজা খুলে ভেতরে যেতেই, হায়াত আদিবের দিকে তাকিয়ে চোখে চোখ রেখে বললো,
– আপনি এতো খারাপ কেন ?
– আমি কি করলাম বউ, আমার তো কোনো দোষ নেই।
হায়াত আদিবের পায়ের ওপর দাড়িয়ে রাগী কন্ঠে বললো,

– নিজে আকাম করে আবার বলে আমি করলাম, আমার তো কোনো দোষ নেই। খারাপ কোথাকার নির্লজ্জ।
এই বলেই হায়াত হনহনিয়ে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করলো। সকলে হায়াতকে অভিনন্দন জানালেও হায়াত সকলের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে কান্না করতে করতে ওপরে চলে গেলো। এরপর সকলেই পেছন পেছন যেতে লাগলো, আদিবকে সবাই ভেতরে যেতে বললো।
বর্তমান *****
আদিব হায়াতকে আলতো করে কোলে তুলে নিয়ে শুইয়ে দিলো। হায়াতও চুপচাপ আদিবের দিকে তাকিয়ে রইলো। আদিব আস্তে করে হায়াতের পেটে মাথা রেখে ফিসফিস করে বললো,

– রঙমালা,কুদ্দুস মাম্মি কষ্ট দিবে না ঠিক আছে।
– কে, মানে কি নাম ?
– কেন, কুদ্দুস আর রঙমালা।
হায়াত অসহায় মুখ করে বললো,
– এই যুগে এসে এসব নাম কেউ রাখে। ছ্যাহ্ আমার বেবিদের মান সম্মান রান্না করে খেয়ে ফেললেন আপনি।
আদিব হায়াতের পেটে আলতো করে একটা চুমু দিয়ে বললো,
– কেনো বউ নাম গুলো তো সুন্দর, আমি আমার বাচ্চাদের এই নামেই ডাকবো, তোমার অসুবিধা হলে অন্য নামে ডাকতে পারো। উফ তুমি যখন আমাকে বলবে,এই কুদ্দুসের বাপ এদিকে আসেন, ইসস্ কত্তো সুন্দর লাগবে।
– আপনার মাথা লাগবে, চুপ করুন তো।
এই বলেই দুজনে হেসে ফেললো,হায়াতের ওষ্ঠে নিজের ওষ্ঠ পুড়ে নিল আদিব। এরপর আস্তে ধীরে ওষ্ঠের সাধ নিতে লাগলো।

এদিকে আরাবির একটুও ঘুম আসছে না কিছুক্ষণ পড়াশোনার পর বিছানায় শুয়ে আছে। আসিফ ল্যাপটপে কাজ করছিলো, কপাল স্লাইড করে আরাবির দিকে ঝুঁকে গেলো। আরাবি ওপাশ হয়ে শুযে ছিলো, ডান পাশে ঘুরতেই আসিফের মাথার সাথে নিজের মাথায় টোকা খেলো।
আরাবি কপাল কুঁচকে ফেললো,
– এখানে কি করছেন,আমার ওপরে এসেছেন কেনো।
আসিফ আরাবির দিকে আরেকটু ঝুঁকে পরলো, নাকে নাক ঘসে বললো,
– কেনো তোমার কি খারাপ লাগছে ?
– না মানে ভাইয়া…..না না স্যরি স্যরি বামী আমার না ঘুম আসছে না, আমি তো ভাবছি হায়াতের বেবি হলে কি কি করবো।
আসিফ ওঠে বসে পরলো,এরপর রুমের লাইট অন করে মুচকি হেসে বললো ,

– করবো, ওদের চাচ্চুর পক্ষো থেকে বড় একটা সারপ্রাইজ পাবে। খিদে পেয়েছে তোমার ?
– না।
– লাইট অফ করে দিই।
– আচ্ছা।
আসিফ লাইট অফ করেই চোখ বন্ধ করে শুয়ে রইলো, এদিকে আরু হাতে ফোন নিয়ে ফেসবুক স্ক্রোল করতে লাগলো। আসিফ কপাল কুঁচকে আরাবির দিকে তাকিয়ে দেখলো সে এখনো ঘুমাই নি, আরাবির হাত থেকে ফোন কেড়ে নিলো আসিফ,
– ফোন চালাচ্ছো কেনো ?
– আমি তো ফোনকে একটু সময় দিচ্ছিলাম,বেচারা সারাদিন একা থাকে,ওরও তো কষ্ট হয় নাকি।
আসিফ আরাবির ওপর রাগ দেখাবে না হাসবে কিছুই বুঝতে পারলো না,হো হো করে হেসে দিয়ে আরুকে এক টানে বুকের ওপর নিয়ে নিলো। লজ্জায় আরাবি চোখ বন্ধ করে ফেললো,বৃদ্ধা আঙ্গুল দিয়ে আরুর কাঁপা কাঁপা ওষ্ঠে ছুঁইয়ে দিলো আসিফ। বাঁকা হেসে বললো,

– তোমার লিপ গুলো খুব সফট। একদিন সাধ নিয়েই প্রেমে পরে গিয়েছি।
– অস্ অসভ্য লোক কিসব বলে, ছাড়ুন আমাকে ছাড়ুন।
আরাবি এই বলে আসিফকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলো কিন্তু তা পারলো না,এক মিনিট পর বুকে মাথা রেখেই বললো,
– আপনার ভয়েসটা দারুন,আমাকে একটা শুনাবেন….. কথা দিচ্ছি ঘুমিয়ে পরবো।
আরুর কপালে চুমু খেয়ে গলায় মুখ ডুবিয়ে দিলো আসিফ। আরাবি হালকা কেপে ওঠলো। কাঁপা হাতে আসিফকে সরানোর চেষ্টা করতে চেয়েও পারলো না। এরপর ওষ্ঠে ওষ্ঠ পুড়ে নিয়ে জুড়ে জুড়ে সাধ নিতে লাগলো। আরাবিও সমান তালে রেসপন্স করতে লাগলো।
পাঁচ মিনিট পর আসিফ হাস্কি স্বরে বললো,
– তোমাকে একটু একটু করে টেস্ট করবো,যাতে আমাদের ভালোবাসাটা তাড়াতাড়ি জন্মায়।
আরাবি আসিফের কথা শুনে সামান্য হাসলো। এরপর আসিফ আরাবিকে কোলে নিয়ে বসে গান ধরলো,

hey yeh nesha
yaa hai zaaher
iss peyar ko hum…
kiya nam dein …
kab se adhuri hain….
ak dastaan….
aaja usey aaj
anjaam dein……

ততক্ষণে আসিফ তাকিয়ে দেখলো আরাবি ঘুমিয়ে গিয়েছে। স্মিথ হেসে কপালে বড় করে একটা পরশ একে দিয়ে বালিশে মাথা দিয়ে শুয়ে দিলো আরাবিকে।এরপর নিজেও হালকা জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরলো।

রাত এগারোটা চল্লিশ হায়াতের এখনো ঘুম আসছে না,এদিকে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পরেছে আদিব। হঠাৎ করেই গলাটা কেমন ভার হয়ে আসলো হায়াতের৷ মনে হলো পানি খাওয়া খুব প্রয়োজন,হায়াত আলতো করে বিছানায় থেকে ওঠে জগ হাতে নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। সিঁড়ির দিকটা ভীষণ অন্ধকার,ফোনটাও সাথে করে আনা হয় নি, কি আর করার দেয়ালের দিকে হাতরিয়ে একটা করে সিড়ি নামতে লাগলো।
ড্রইংরুমে আসতেই হঠাৎ কারো ছায়া দেখে ভয় পেয়ে গেলো হায়াত। যে- ই না চিৎকার করতে যাবে তখনি কেউ একজন এসে হায়াতের মুখ চেপে ধরলো। হায়াত ভয়ে কেঁপে ওঠে। তখনি কেউ একজন ফোনের ফ্ল্যাস অন করে বললো,

– ভাবি আমি, এতো ভয় পাচ্ছো কেন ? আর একটু হলেই তো পুরো বাড়ি মাথায় তুলে ফেলতে।
হায়াত মিনহাজার গলা চিন্তে পেরেই স্বস্তির এক নিশ্বাস ফুঁকে বললো,
– তুমি এখানে কি করছো এতো রাতে,আর মনে হলো তুমি বাইরে গিয়েছিলে ?
হায়াতের কথায় যেন মিনহাজা একটু অস্বস্তিতে পরে গেলো। মৃদু হেসে বললো,
– আসলে আমার খুব খিদে পেয়েছিলো, তাই কিচেন রুমে যাচ্ছিলাম। তখনই মনে হলো দরজাটা লাগানো হয় নি, কিন্তু আমি গিয়ে দেখি লাগানো আর তখনি তুমি নিচে নামলে।
হায়াত যেনো কিছুটা দ্বিধায় পরে গেলো, এভাবে না যেনে কাউকে সন্দেহ করতে নেই ছোট বেলায় তার আম্মু শিখিয়েছে। যাক গে হায়াত আর কিছু না বলে মিনহাজার সাথে কিচেন রুমে প্রবেশ করলো।
মিনহাজা ফ্রিজ থেকে কিছু ফল নিলো আর হায়াত এক জগ পানিতে একটু ঠান্ডা পানি মিশিয়ে নিলো। মিনহাজা কপাল কুঁচকে বললো,

আমার হায়াতি পর্ব ৩৪

– ভাবি আমি যতো দূর জানি প্রেগ্ন্যাসির সময় ঠান্ডা পানি খেতে নেই, তুমি পানি ফেলে দাও আর আমি নরমাল পানি দিচ্ছি।
হায়াত অসহায় মুখ করে বললো,
– না না একটুই তো খাবো, প্লিজ ননদিনী ফেলে দিও না।
– খাও খাও তবে কালকেই আমি ভাইয়াকে বলে তোমার ব্যবস্থা করবো।
দু’জনেই মজা খুনসুটির পর ওপরে চলে গেলো।

আমার হায়াতি পর্ব ৩৬

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here