আমার হায়াতি শেষ পর্ব 

আমার হায়াতি শেষ পর্ব 
Nahar Adrita

দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে আরও তিনটে বছর। মাহাব আর হুমাইরা এখন আদো আদো কথা বলতে শিখেছে, সারা বাড়ি টই টই করে ঘুরে দু’জন । তাদেরকে সামলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে হায়াত।
হুমাইরা একটু শান্ত স্বভাবের হলেও মাহাব হয়েছে আরাবির মতো চঞ্চল।সারাদিনই মারামারি করে বেড়ায় সে।
শনিবার বিকেল,, আরাবি বিছানায় বসে গুনগুন করছে, এমন সময় রুমে প্রবেশ করলো মাহাব আর হুমাইরা।
পা টিপে টিপে তাদের মনি মার কাছে আসলো, আরাবি দুজনকেই বিছানায় বসিয়ে দিলো। হুমাইরার হাতে মোবাইল ছিলো। আরু একটু কপাল কুচকে বললো,

– হিমু তোমার হাতে ফোন কেন ?
হুমাইরা ইনোসেন্ট মুখ করে বললো,
— মনি মা, আমি এত্তো দেকি, কাতুন দেকেই লেতে দিব্বো !
ওর কথা শুনে মাহাব লাফিয়ে ওঠে হাত থেকে ফোনটা নিয়ে নিলো,
— তোকে মাম্মা এছে মাব্বে, তুই দিন দিন পঁচা হয়ে দাচ্ছিস।
দু’জনের কথা শুনে হাসতে হাসতে পেট ব্যথা হয়ে গেলো আরুর। এমন সময় রুমে প্রবেশ করলো আসিফ। হাতে থাকা ফাইলটা রেখে হিমুকে কোলে তুলে নিল।
— মাম্মা এই বয়সে ফোন চালাতে হয় না, তুমি জানো না ? এর পর থেকে আর ফোন চালাবে না, আমি আছি তো আভি বুড়ির সাথে খেলা করার জন্য…….
আসিফ আরো কিছু বলবে তার আগেই মাহাব বললো,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

— তোমার সাথে খেলা যাবে না ছোট পাপা, আমাদের তো আরও ভাই বোন লাগবে..!!
মাহাবের কথায় হালকা লজ্জা পেল আরু, এখন পর্যন্ত ওইভাবে তার কাছে আসেনি আসিফ।আসিফ একটু চুলে হাত বুলিয়ে বললো,
— বাজান তোমাদের যেহেতু আরও ভাইবোন লাগবে, তাহলে আমরা সেই প্রসেস শুরু করি ?
ছোট পাপার কথা যেন মাহাব হিমুর মাথায় ঢুকলো না, তাই দু’জন চকলেট খেতে খেতে আনমনে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।
বাচ্চারা বের হওয়ার সাথে সাথেই আসিফ আস্তে করে রুমের দরজা লাগিয়ে দিল।আরু সামান্য পিছিয়ে গেলো। শুকনো ঢুক গিলে বললো,

— দরজা লাগালেন কেন..!
আসিফ আরাবির আরেকটু কাছে এসে কানের কাছে ফিসফিস করে বললো,
— বাচ্চাদের শখটা পূরণ করা যাক! কি বলো বউজান।
তার কথায় আরাবি যেন মৃদু কেপে ওঠলো, কাঁপা কাঁপা হাতে টেবিলে থেকে গ্লাস হাতে নিয়ে ঢকঢক করে পুরো গ্লাসের পানি টাই সাবার করে দিল। আসিফ আঙ্গুল দিয়ে আরুর থুতনিতে লেগে থাকা পানিটা নিয়ে নিজের ঠোঁটে আলতো করে ঘষে নিলো। আরু ভয়ে বিছানায় উল্টো দিক করে বসে পরলো।
আসিফ তার পেছনে বসে পিঠের চুল গুলো সরিয়ে দিয়ে নাক দিয়ে ঘষতে শুরু করলো, আরাবির যেন শরীর জুড়ে কম্পন শুরু হলো। এ যেন এক অন্যরকম ঢেউ খেলে গেলো, শরীরের ছোট ছোট লোম গুলো দাঁড়িয়ে ওঠলো। আসিফ আলতো করে তার ঘাড়ে কামড় দিলো।

পরম আবেশে চুমু খেলো সাড়া পিঠ জুড়ে। আরাবি হকচকিয়ে ওঠলো, এ কেমন ঝড় তার মনে ওঠেছে সে কিছুতেই তা বুঝতে পারছে না, ওঠে যেতে চাইলে আসিফ চোখ দিয়েই যেন বুঝিয়ে দিচ্ছে এখন ওঠলেও তার শক্তির সাথে সে কিছুতেই পেরে ওঠবে না।
আরুকে আস্তে আস্তে শুইয়ে দিল আসিফ, এরপর আস্তে আস্তে গলার ওড়নাটা সড়িয়ে গলায় মুখ ডুবিয়ে দিলো। আরাবি চুল খামচে ধরলো আসিফের, মিন মিন করে বললো,
— আপনি আসলে কি করতে চাইছেন…….
আসিফ ওভাবে মুখ ডুবিয়ে রেখেই বললো,
—তুমি যা ভাবছো তা-ই….!!

ব্যাস আর কোনো বাধা সৃষ্টি হলো না দুজনের মাঝে। আসিফ উন্মাদের মতো আরুর সারা শরীর জুড়ে চুম্বন করতে লাগলো। আরাবিও কম কিসে, সেও আসিফের সারা বুকে চুম্বন করতে লাগলো। এরপর আস্তে আস্তে ওষ্ঠে ওষ্ঠ পুড়ে নিল। প্রায় বিশ মিনিট পর দু’জনের ওষ্ঠ থেকেই হাকলা রক্ত বের হলো, তবুও থামলো না দম্পতি।
এভাবেই দুজনের মাঝের সমস্ত দূরত্ব এক নিমিষেই ঘুচিয়ে গেলো।আরাবির সারা শরীর যেন সেই ভালোবাসার চিন্হ গুলোই বহন করছে। এভাবেই দুটো আত্নার কোমল আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হলো।
প্রায় দুই ঘন্টা পর আরাবিকে কোলে নিয়ে হাত পা ছড়িয়ে শুয়ে রইলো আসিফ।আরাবির মুখ লজ্জায় লাল টুকটুকে হয়ে আছে আর আসিফের মুখে এক অন্যরকম তৃপ্তির হাসি।
সন্ধ্যা ছয়টা, হায়াত রুমের আনাচে কানাচে যতো খেলনা আছে সব উঠিয়ে একটা জায়গায় রাখছে, এমন সময় আদিব রুমে প্রবেশ করলো, বাঁকা হেসে বললো,

— বউ এভাবে কোমড় বাকিয়ে কি করছো।
হায়াত একটু কপাল স্লাইড করে বললো,
— এই বাজে লোক, দুই বাচ্চার বাপ হয়েও এখনো লুচ্চামি কমে নি।
— আহ্ বউ ! এভাবে বলো না বুকে বিদ্যুৎ চমকিয়ে ওঠে, সবে ত্রিশে পা দিলাম এখুনি কি যৌ’বনে ঠাডা পড়বে।
— বুকে আবার বিদ্যুৎ চমকায় কিভাবে ?
হায়াতকে এক হাত দিয়ে পাজা কোলে তুলে নিল আদিব। বাঁকা হাসলো,,“ চলো বউ তোমাকে আজ বুকে কিভাবে বিদ্যুৎ চমকায় তা শেখাব। ”

— নামান আমাকে,, নামান বলছি, বাচ্চারা এসে গেলপ মান সম্মান সব মাটিতে গড়াগড়ি খাবে।
হায়াতকে আর কথা বলার সুযোগ দিল না, ওষ্ঠে ওষ্ঠ পুড়ে দিয়ে জুড়ে জুড়ে চাপতে লাগলো। পরম আবেশে চোখ বন্ধ করে ফেললো হায়াত। প্রায় এক বছর হবে দু’জনের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে।
হায়াত আপনা আপনিই গলার ওড়নাটা সড়িয়ে ফেললো,আদিব পাগলের মতো শরীর জুড়ে পরশ একে দিতে থাকলো।
আদিব হায়াতের গলার তিন আঙ্গুল নিচে মুখ ডুবিয়ে দিতেই রুমে প্রবেশ করলো মাহাব। হো হো করে হেসে বললো,

— পাপা আমি দেখেতি, তুমি মাম্মার দুতু খাচ্ছিলে।
ছেলের কথা শুনে দুজনেই লাফিয়ে ওঠলো, হায়াত তো পারছে না আদিবকে চোখ দিয়ে গিলে ফেলতে। রাগী মুখ করে রুম থেকে বের হয়ে গেলো। আর মাহাব তার বাবার সামনে গিয়ে গালে হাত রেখে চিন্তিত গলায় বললো,
— পাপা ! বড় মানুষও দুতু কায় ?
আদিব এবার কি বলবে বুঝতে না পেরে কেবলা মার্কা হাসি দিয়ে, ছেলেকে কোলে নিয়ে বললো,
— আব্বা এতো ছোট হয়েও তুই যে পাকনা হয়েছিস কি আর বলবো।
রাত দশটা ! !

হায়াত খাওয়া দাওয়া শেষ করে মাত্র রুমে আসলো। আদিব ছেলেকে ঘুম পারাচ্ছে। দরজাটা আস্তে করে চাপিয়ে দিয়ে মুচকি হেসে বললো,
— হিমু ঘুমিয়ে পরেছে ?
আদিব একটু গর্বের সঙ্গে বললো,
— হ্যা মেয়েকে ঘুম পাড়িয়ে এখন ছেলেকেও শেষ। দেখেছো লাজুক পাখি আমি কতো সুন্দর করে ঘুম পারালাম।
আদিবের কথা শুনে হায়াত একটু অবাক হওয়ার মতো করে গালে হাত রেখে বললো,
— আল্লাহ, সত্যিই তো কি সুন্দর ঘুম পারালেন, আর আমি যে প্রতিদিন একই কাজ করি তার বেলায়।
হায়াতকে আর কথা বলার সুযোগ দিল না আদিব। কোলে তুলে নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলো। হাস্কি স্বরে বললো,
” বাগানের গেস্ট রুমে চলো, এখানে রোমাঞ্চ করলে ওরা জেগে যাবে। ”
হায়াত আর কিছু বললো না, আদিব সেই কাঙ্ক্ষিত রুমে এসে বিছানায় শুইয়ে দিল হায়াতকে।পরম আবেশে চুমু খেতে লাগলো সর্বাঙ্গে। হায়াত মিন মিন করে বললো…..ঔষধ……..
আদিব তার কথার তোয়াক্কা না করে বললো,

আমার হায়াতি পর্ব ৩৮

“ টাকা কি হুদাই কামাচ্ছি, যতো ইচ্ছা বেবি হবে। ”
আর কোনো বাধা মানলো না সে, আস্তে আস্তে করে দুটো আত্নার কোমল আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হলো। এভাবেই পুরো রাত সাক্ষী হলো তাদের ভালোবাসার আর সব শেষে একটা কথায় শুনা গেলো আদিবের মুখ থেকে…. #আমার_হায়াতি আমার সব,সারাজীবন এভাবেই তোমাকে ভালোবেসে যাব, ইনশাআল্লাহ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।

সমাপ্ত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here