আমৃত্যু ভালোবাসি তোকে পর্ব ৭১ (৩)

আমৃত্যু ভালোবাসি তোকে পর্ব ৭১ (৩)
লেখনীতে সালমা চৌধুরী

খান বাড়িতে খনিকের নিস্তব্ধতা বিরাজমান। সবাই এতক্ষণ আশ্চর্য নয়নে তাকিয়ে মোজাম্মেল খানের কথাগুলো শুনছিল৷ মেঘ আবিরের মুখের পানে স্থির দৃষ্টিতে চেয়ে আছে, কিন্তু আবিরের অভিব্যক্তি ঠিক বুঝা যাচ্ছে না। ইকবাল খান আর মোজাম্মেল খান টুকটাক কথা বলছেন বাকিরা চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। ডেকোরেশনের জন্য আসা ৩-৪ জন ছেলে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে ছাদে যাচ্ছে, সিঁড়ির কাছাকাছি যেতেই আলী আহমদ খান হুঙ্কার দিলেন,
” তোমাদের আর কতক্ষণ লাগবে? বাসায় মেহমান আসার সময় হয়ে গেছে অথচ তোমাদের কাজ ই শেষ হচ্ছে না।”
“বেশিক্ষণ লাগবে না আংকেল।”

” এই কথা সকাল থেকে শুনে আসছি। এমন তাড়াহুড়োতে কাজ করেছো যে বিয়ে বাড়িকে পুরো স্বাধীনতা দিবসের সাজে সাজিয়ে ফেলছো। শুধু লাল সবুজ দিয়ে কেউ বিয়ে বাড়ি সাজায়?”
“সরি, আংকেল। সত্যি বলতে, তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে আগে চেক করতে মনে ছিল না। এখন আর ভুল হবে না।”
” শুনো, আমার একমাত্র ছেলের বিয়ে বলে কথা৷ এমনভাবে সাজাবে যেন বাড়ির সাজ দেখেই এলাকার মানুষ তাক লেগে যায়। টাকা নিয়ে একদম ভেবো না।’
” জ্বি আংকেল। ”
ছেলেগুলো ছাদে চলে যাচ্ছে। মোজাম্মেল খান আচমকা ধীর কন্ঠে বললেন,
“ভাইজান, একটা কথা বলি?”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“হ্যাঁ”
মোজাম্মেল খান শীতল কন্ঠে বললেন,
“আমি একবছর যাবৎ ওদের বিয়ের কথা বলতেছি তবুও তুমি রাজি হলে না। হঠাৎ কি এমন হলো যে হুট করে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিলে তাও আবার আগামীকালই বিয়ে।”
আলী আহমদ খান মলিন হেসে বললেন,
“তোর ছেলের জন্য।”
“মানে?”

“তানভির বলছে, মেঘকে আবিরের কাছে বিয়ে না দিলে আবির নাকি ম* রে যাবে।”
সবাই অতর্কিতে আবিরের দিকে তাকালো। অথচ আবির রুষ্ট চোখে তানভিরের দিকে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে রাগান্বিত কন্ঠে বলল,
“শালা, ম*রে যাওয়ার কথা বলতে বলছি তোকে?”
তানভির ঠোঁট চেপে ডানহাতের দু আঙুলে কান ধরে বিড়বিড় করে বলল,
“সরি, মুখ ফস্কে বেরিয়ে গেছিলো।”
“দূর, শালা।”

তানভির কপট রাগী স্বরে বলল,
“শালা না সম্বন্ধী।”
আবির ঠোঁট বেঁকিয়ে রাগী স্বরে বলল,
“তোকে আমি দেখে নিব।”
মাহমুদা খান বললেন,
“আবির, রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে খাওয়াদাওয়া করে নে। রেডি হতে হবে তো। ”
আবির ঘড়ির দিকে তাকিয়ে উদ্বিগ্ন কন্ঠে বলল,
“এই ভরদুপুরে রেডি হয়ে কি করবো?”
আলী আহমদ খান মেঘকে ইশারা করে গম্ভীর কন্ঠে বললেন,

“আমার বৌমার শহর ঘুরে গায়ে হলুদের ফটোশুট করার ইচ্ছে। যাও শাওয়ার নিয়ে ঝটপট রেডি হও।”
আবির মেঘের দিকে একবার তাকালো পরপর সবার দিকে এক নজর তাকিয়ে আচমকা মেঘকে কোলে তুলে নিল। আলী আহমদ খান সহ উপস্থিত সবাই আঁতকে উঠল। মেঘ অস্পষ্ট গলায় আর্তনাদ করে উঠল। আলী আহমদ খান তপ্ত স্বরে বললেন,
“তোমাকে রুমে গিয়ে শাওয়ার নিতে বলছি। তুমি ও কে কোলে নিয়েছো কেনো?”
আবির রাশভারি কন্ঠে বলল,

“আমি আপনাদের কাউকে বিশ্বাস করি না। কোন ভরসায় রেখে যাব এখানে? যদি আবার লুকিয়ে ফেলেন? আমি আর কোনো রিস্ক নিতে পারব না, সরি।”
আবির মেঘকে কোলে নিয়ে নিরুদ্বেগ ভঙ্গিতে সিঁড়ি দিয়ে উঠছে। তানভির হাত দিয়ে মুখ চেপে হাসছে। আলী আহমদ খান, মোজাম্মেল খান, ইকবাল খান স্তব্ধ চোখে সেদিকে তাকিয়ে আছে। বাড়ির মহিলারাও থম মেরে দাঁড়িয়ে আছেন।

তিনদিন আগে-
সন্ধ্যার অনেক পরেও আলী আহমদ খান অফিসে নিজের কেবিনে বসে কাজ করছিলেন। মোজাম্মেল খান আজ অফিসে আসেন নি, আবির সিফাতের উপর রাগ করে দুপুরের দিকেই অফিস থেকে চলে গেছে। ইকবাল খান সন্ধ্যা পর্যন্ত ছিলেন হঠাৎ বাসা থেকে কল আসছে, বাজার নিয়ে যেতে হবে তাই ওনিও সন্ধ্যার দিকে চলে গেছেন। সিফাত কাজ শেষ করে অনেকক্ষণ এমনিতেই বসে বসে আলী আহমদ খানের সাথে গল্প করছিলো। রাত বেশি হওয়ায় সিফাত কেও ছুটি দিয়ে দিয়েছেন। সিফাত অফিস থেকে বের হবার ১০ মিনিটের মধ্যে রাকিব আর রাসেল আলী আহমদ খানের কেবিনের সামনে উপস্থিত হলো।।রাকিব সালাম দিয়ে মৃদুস্বরে বলল,

“আংকেল ভেতরে আসতে পারি?”
আলী আহমদ খান কপালে ভাজ ফেলে বললেন,
” আরে রাকিব যে, আসো ভেতরে আসো।”
রাসেলকে খানিক দেখে কিছুটা চিন্তিত স্বরে জানতে চাইলেন,
“কি ব্যাপার, তোমরা হঠাৎ আমার কাছে কি মনে করে?”
রাকিব পেছনে ঘুরে কিছুটা তপ্ত স্বরে ডাকল,
“এই তানভির, ভেতরে আয়।”
তানভির গুটি গুটি পায়ে রুমে এসে মাথা নিচু করে দাঁড়ালো। রাকিবদের সাথে তানভিরকে দেখে আলী আহমদ খান একটু বেশিই অবাক হলেন। তানভিরের দিকে তাকিয়ে গুরুগম্ভীর কন্ঠে শুধালেন,

“কি হয়েছে?”
রাকিব শ্বাস ছেড়ে বুকে সাহস নিয়ে বলল,
” আংকেল, আপনার কাছে একটা রিকুয়েষ্ট ছিল।”
“বলো।”
“প্লিজ, না করবেন না।”
“ঠিক আছে, বলো।”
রাসেল এবার সাহস করে বলল,
” আংকেল আবির একজনকে খুব বেশি পছন্দ করে। তাকে বিয়ে করতে চাই, এখন আপনার সমর্থন প্রয়োজন। প্লিজ, না করবেন না।”
আলী আহমদ খান রাগী স্বরে বললেন,

” আবির তোমাদের পাঠিয়েছে?”
তানভির চটজলদি উত্তর দিল,
” না না। ভাইয়া কিছু জানে না। আমরা নিজে থেকে আসছি।”
রাকিব ঠান্ডা কন্ঠে বলতে শুরু করল,
” আংকেল এখানে আসার ব্যাপারে আবিরকে আমরা কিছুই জানায় নি। আবির জানলে কখনো আসতে দিতো না। কিন্তু চোখের সামনে আবিরের এত কষ্ট দেখে আমাদের সহ্য করতেও কষ্ট হয়। আবির আপনাকে খুব সম্মান করে, শুধুমাত্র আপনাদের কথা ভেবে নিজের মনের আবেগ প্রকাশ করতে পারে না। সত্যি বলতে আবির মেঘকে অনেক বেশি ভালোবাসে, মেঘকে বিয়ে করতে চায় কিন্তু আপনারা রাজি হবেন কি না সেই ভয়ে এতদিন আপনাদের কিছু করতে পারছিল না, আর না মেঘকে কিছু বলছে। এখন মেঘও আবিরকে খুব পছন্দ করে। আপনি ওদের সম্পর্কটা প্লিজ মেনে নিন।”

“এখন আমার কি করতে হবে?”
” আবির আজ বাসায় নিজের মনের কথা জানাবে মানে মেঘকে বিয়ে করার কথা বলবে। আপনি প্লিজ রাজি হয়ে যাবেন। একমাত্র আপনি বললে বাসার সবাই মেনে নিবে। ”
” যদি আমিই মেনে না নেয়। তখন?”
রাকিব আঁতকে উঠে বলল,
” আংকেল এমন কিছু করবেন না, প্লিজ।”
“কেনো করব না? আমার ছেলের জন্য বউ খোঁজার অধিকার কি আমার নেই? সে নিজে কিছু বলতে সাহস পাচ্ছে না বলে তোমাদের পাঠিয়েছে, আর তোমরাও আমাকে মানাতে চলে আসছো। শুনো তোমাদের বন্ধুকে বলে দিও আমি ওর সম্পর্ক মানবো না।”

তানভির ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করল,
” কেনো মানবেন না, বড় আব্বু?”
“আমার ইচ্ছে আমি ছেলেকে দেখেশুনে বিয়ে করাবো।তোমার কোনো আপত্তি আছে?”
“জ্বি।”
“কি ? ”
” বনু আর ভাইয়া দু’জন দু’জনকে ভালোবাসে সেখানে অন্য কাউকে দেখার প্রশ্নই আসে না। তাছাড়া আপনি ভাইয়ার জন্য অন্য কোনো মেয়ে দেখলেও বিশেষ কোনো লাভ হবে না কারণ ভাইয়া আমার বোন ছাড়া কারো দিকে তাকিয়েও দেখবে না।”

আলী আহমদ খান গম্ভীর কন্ঠে বললেন,
” তানভির তুমি কি জানো না, খান বাড়িতে প্রেম নিষিদ্ধ? ”
” প্রেম নিষিদ্ধ বলেই ভাইয়া বনুর সাথে প্রেম করার চিন্তাও করে নি । সরাসরি বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আপনি কি চান না ভাইয়া ভালো থাকুক?”
“হ্যাঁ চাই কিন্তু আমার নিয়মনীতি ভেঙে নয়।”
তানভির রাগে ফোঁস করে বলে ফেললো,
” কোন নিয়মনীতি ভাঙার কথা বলছেন? যেই নিয়মনীতি সন্তানের খুশি সহ্য করতে পারে না সেই নিয়মনীতি চিরতরে ভেঙে দেয়া উচিত। আপনাদের নিয়মনীতি কি সন্তানের জীবনের থেকেও বেশি দামী?”

” মানে?”
তানভির চুপ হয়ে গেছে।আলী আহমদ খান পুনরায় বললেন,
‘কি বলতে চাচ্ছো?’
তানভির গম্ভীর কন্ঠে বলল,
” মেঘকে না পেলে ভাইয়া সুসা*ইড করবে। ”
আলী আহমদ খান বসা থেকে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে উঠলেন,
“হোয়াট?”
রাকিব শীতল কন্ঠে বলল,
“জ্বি আংকেল। আর বিষয়টা এখন মজার জায়গাতেও নেই। আবিরের সাথে আমি পার্সোনাললি অনেকবার কথা বলেছি তার ঘুরেফিরে এই এক কথায়। ”

প্রায় ৩০ মিনিটের মতো তানভির, রাসেল, রাকিব আর আলী আহমদ খানের আলাপচারিতা চলল। একদম শেষ পর্যায়ে আলী আহমদ খান শর্ত সাপেক্ষে আবিরদের সম্পর্কটা মোটামুটি ভাবে মেনে নিয়েছেন৷ রাকিবদের বিদায় দিয়ে তানভিরের সাথে আরও প্রায় ৪০ মিনিটের মতো কথা বলেছেন। সেখানে বসেই আবিরকে রাজশাহী পাঠানোর পরিকল্পনা করেন। আবিরকে একেবারে বাসে উঠিয়ে তারপর মাহমুদা খানের সাথে দেখা করতে যান। ওনার সাথে আলোচনা শেষ করে আলী আহমদ খান বাসায় ফিরে সরাসরি মেঘের রুমে যান। মেঘ তখন বিছানার বসে বসে আবিরের দেয়া আংটি টা দেখছিল আর আনমনে কত কি ভাবছিল। হঠাৎ আলী আহমদ খান রুমে ঢুকতেই মেঘ থতমত খেতে হাত পেছনে লুকানোর চেষ্টা করল কিন্তু আলী আহমদ খানের হুঙ্কারে সঙ্গে সঙ্গে হাত সামনে এনে আংটি দেখাতে বাধ্য হলো।
আলী আহমদ খান গুরুভার কন্ঠে জিজ্ঞেস করলেন,

” তুমি আবিরকে ভালোবাসো?”
মেঘ অবাক লোচনে তাকিয়ে আবিরের শিখিয়ে দেয়া কথাগুলো মনে করার চেষ্টা করলো কিন্তু আলী আহমদ খানের সামনে দাঁড়িয়ে মিথ্যা বলার মতো সাহস মেঘের নেই তাই বাধ্য হয়ে বলল,
“জ্বি ”
“বিয়ে করতে চাও?”
মেঘ আঁতকে উঠে শীতল চোখে তাকালো। কিছুক্ষণ নীরব থেকে ধীর কন্ঠে বলল,
“আপনারা রাজি থাকলে….”
আলী আহমদ খান গুরুভার কন্ঠে বলে উঠলেন,

” তুমি সত্যি সত্যি আবিরকে ভালোবাসলে আর বিয়ে করতে চাইলে আমি যা বলব তা মানতে হবে। যদি রাজি থাকো তাহলে তিনদিন পর ই তোমাদের বিয়ে দিয়ে দিব। বলো রাজি আছো?”
মেঘ আশ্চর্য নয়নে তাকিয়ে রইলো। আলী আহমদ পুনরায় বললেন,
” আবারও বলছি যদি আবিরকে নিজের করে পেতে চাও তাহলে আমার শর্ত মানতে হবে। আবিরকে চাও কি না?”
মেঘ কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,
“চাই।”

“ঠিক আছে৷ তোমার ফোনটা আগামী তিন-চারদিন আমার কাছে জমা থাকবে। আর তুমি কোনো ভাবে আবিরের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টাও করবে না। আমার সিদ্ধান্ত ছাড়া বাসার বাহিরে পাও রাখবে না।”
মেঘ শক্ত কন্ঠে জানতে চাইল,
” এগুলো কোনো করতে হবে, বড় আব্বু?”
আলী আহমদ খান মেঘের মাথায় হাত বুলিয়ে মৃদুস্বরে জিজ্ঞেস করলেন,
” তুমি আবিরের বউ হলে সম্পর্কে আমি তোমার কি হবো?”
আলী আহমদ খানের মুখে এমন প্রশ্ন শুনে মেঘ বিস্ময় সমেত তাকিয়ে রইলো। মনের ভেতর উত্তর থাকা সত্ত্বেও দেয়ার মতো শক্তি পাচ্ছে না।
আলী আহমদ খান ভারী কন্ঠে বললেন,

” শ্বশুর আব্বু হবো তো নাকি?”
শ্বশুর আব্বু কথাটা শুনেই মেঘ লজ্জায় নুইয়ে পড়েছে। কান দিয়ে অনবরত উষ্ণ ভাপ বের হচ্ছে। আলী আহমদ খান মুচকি হেসে বললেন,
” আমার তো মেয়ে নেই তাই আমার অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল, আমার ছেলের বউ মানে আবিরের বউ আমাকে আব্বাজান বলে ডাকবে। আজ আমি আমার ছেলের বউকে পেয়েছি তাই আজ থেকে তুমি আমায় আব্বাজান ডাকবে। ”
এই অনীস্পিত, শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে মেঘ কি করবে বুঝতে পারছে না। হঠাৎ কি ভেবে, ওড়না টেনে মাথায় দিয়ে তৎক্ষনাৎ পায়ে হাত দিয়ে সালাম করল। আলী আহমদ খান সালামি দিতে দিতে বললেন,
” আব্বাজান বলো শুনি একটু। ”

মেঘের বুকের ভেতর উতালপাতাল ঢেউ শুরু হয়ে গেছে। ইদানীং আবিরের সামনেও এতটা লজ্জা পায় না যতটা লজ্জা বড় আব্বুকে সামনে পাচ্ছে। মেঘ নিজের সাথে যুদ্ধ করে বুকে সাহস নিয়ে আস্তে করে বলল,
” আব্বাজান। ”
“মাশাআল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ। আমার মনের আশা আজ পূরণ হলো। এখন বলো, তুমি কি তোমার আব্বাজানের জিত দেখতে চাও না? তোমার আব্বু প্রতিনিয়ত আমার সাথে খোঁচাখুঁচি করে অথচ আমি কিছুই বলি না। তুমি যদি আমার কথা মানো তাহলে এবার আমিই জিতবো। তুমি কি চাও না আমি জিতি?”
“জ্বি চাই। ”
“ঠিক আছে, আমাদের মধ্যকার আলোচনা যেন তোমার আব্বুর কানে না যায়। এখন বলো তুমি কি আমার শর্তে রাজি আছো?”

“জ্বি। আমি সব শর্তে রাজি কিন্তু…. ”
আলী আহমদ খান জিজ্ঞেস করলেন,
“কিন্তু কি? কিছু লাগবে?”
মেঘ মাথা নিচু করে শক্ত কন্ঠে বলল,
” আমার শুধু আবির ভাইকেই লাগবে।”
“তোমার আবির ভাইকে তুমি ঠিক সময় পেয়ে যাবে, চিন্তা করো না।”
সেদিনের পর থেকে তানভির আর মেঘ দু’জনকে আলী আহমদ খান যা বলেন তারা তাই করে। মেঘকে নিয়ে শপিং এ যাওয়া, ফেসিয়াল করতে পার্লারে নিয়ে যাওয়া। এমনকি তানভির এলাকার স্পাইগুলোকে পর্যন্ত আবিরের কল ধরতে নিষেধ করে দিয়েছে।
সবই আলী আহমদ খানের কথায় করেছে। ওনার কথা না মানলে ওনি মেঘ আবিরের বিয়ে মানবে না এই আতঙ্কে তানভির সব মেনে নিয়েছে।

আমৃত্যু ভালোবাসি তোকে পর্ব ৭২ (২)

প্রথম দু’দিন বাসার কেউ ই কিছু জানতে পারে নি। কিন্তু একদিন সিফাত কাউকে না জানিয়ে বাসায় চলে আসায় কিছুটা এলোমেলো হয়ে গেছিলো। সিফাতের চালচলন খুব একটা সুবিধাজনক মনে হয় নি তাই আলী আহমদ খান পরিকল্পনা করে তানভিরকে দিয়ে মেঘকে বাহিরে পাঠিয়ে দিয়েছিল। সিফাত বাসা থেকে যাওয়ার পর থেকে বাসায় সিফাতকে নিয়ে টুকটাক আলোচনা শুরু হচ্ছিলো। মেঘের কানে এসব গেলে মেঘ কষ্ট পাবে তাই ওনি একদিনের মধ্যে সবকিছু রেডি করে বাসার সবাইকে জানিয়ে দিয়েছে। মোজাম্মেল খান আগে থেকেই রাজি ছিলেন তাছাড়া মেঘদের ব্যাপারে ওনার সিদ্ধান্ত তেমন কার্যকর নয় সেজন্য আলী আহমদ খানের কথায় শেষ কথা ছিল।
বর্তমান-

আমৃত্যু ভালোবাসি তোকে পর্ব ৭১ (৪)