আযদাহা পর্ব ২৮

আযদাহা পর্ব ২৮
সাবিলা সাবি

অ্যাকুয়ারা কিছুক্ষণের জন্য চুপ করে থেকে তার ভাবনা মনে স্থির করতে চেষ্টা করছিলো। গতকাল যে জ্যাসপারকে সে দেখলো,আজকের আচরণ তার কাছে একেবারেই অচেনা।ফিওনার প্রতি তার অত্যন্ত কোমলতা আর ভালোবাসা,যা সে গতকাল রাতের ঘটনার মধ্যে দেখেছিল, আজকের ধমকের মধ্যে কোথাও হারিয়ে গেছে। অ্যকুয়ারা বুঝতে পারছিল না কী ঘটলো, কেন এমন দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হলো।
সে কখনোই জ্যাসপারের মধ্যে এতটা কঠোরতা আশা করেনি। সে জানতো যে,জ্যাসপার তার নিজের নিয়ম আর পদ্ধতিতে কাজ করে,কিন্তু আজকের এই আচরণ তার কাছে অবাক করার মতো ছিল।বিশেষত,ফিওনার প্রতি তার ব্যবহারে যে নির্মমতা,সেটা সঙ্গতিপূর্ণ নয় তার আগের আবেগের সাথে।অ্যকুয়ারা এই দৃশ্য দেখে হালকা ভ্রূ কুঁচকে ভাবছিল “এটা কি শুধু একটা ভুল? বা কিছু একটা চাপাচাপির ফলস্বরূপ? না কি…ফিওনার প্রতি তার মনোভাব বদলে গেছে?”

তার মানে ছিল স্পষ্ট—অ্যাকুয়ারা জ্যাসপারের মানসিক অবস্থাকে খুব ভালোভাবে জানতো,আর সে বুঝতে পারছিলো যে জ্যাসপার কিছু একটা লুকাচ্ছে।তার কঠোর আচরণ হয়তো কোনো গভীর দ্বন্দ্বের পরিচায়ক। “কী হলো প্রিন্সের?”সে নিজের মনে এই প্রশ্নটি বারবার করছিল,কিন্তু সঠিক উত্তর তার কাছে ছিল না।
ফিওনা নিজের কক্ষে দাঁড়িয়ে,গ্লাসের দেয়ালের দিকে তাকিয়ে বাইরের দৃশ্য দেখছিল।একে একে সবকিছু তার মাথায় ঘুরছিল—জ্যাসপারের আচরণ,তার রুক্ষতা,আর সে কীভাবে আগের দিন তার সাথে এত স্নেহময় ছিল।তার মন বিভ্রান্ত হয়ে উঠেছিল,এক মুহূর্তে সে অনুভব করছিল এক ধরনের আকর্ষণ,আর অন্য মুহূর্তে মনে হচ্ছিল তাকে বন্দি করে রাখা হয়েছে।কিন্তু একটাই বিষয় স্পষ্ট ছিল—ফিওনা আর এখানে থাকতে পারবে না।
তার চোখে পানি জমে এল, তবে সে নিজেকে যতটা সম্ভব শক্ত রেখে, তার আস্থাকে দৃঢ় করতে চেষ্টা করলো। নিজের মাঝে এক গুমোট কষ্ট অনুভব করছিল, কিন্তু এই মুহূর্তে তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।সে মনে মনে বলল,”কেনো ফিওনা, তুই কি আসলেই ওই ফায়ার মনস্টারটারের কাছে অন্য কিছু আশা করেছিলি?ওই ফায়ার মনস্টারটার তো সবসময়ই এমনটাই ছিলো!”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

তার মনের মধ্যে এক অস্থিরতা উঠল,একটা নতুন পরিকল্পনা।সে জানতো,যেভাবে জ্যাসপার তার প্রতি আচরণ করেছিল,এবার তাকে নিজের পথ অনুসরণ করতে হবে।ফিওনা নিজের মনকে দৃঢ় করে বলল, “না,এবার আমাকেই ওই মনস্টারটার সাথে কথা বলতে হবে।ওর ভাই ফিরে এসেছে,এবার আমায় মুক্তি পেতে হবে।আমি এখানে আর থাকতে পারব না।”
ফিওনার সিদ্ধান্ত সুনির্দিষ্ট ছিল—এখন আর কোন বাধা নয়, সে যতটা সম্ভব শিগগিরই মুক্তি পাবে।সে জানতো,জ্যাসপার আর তার আচরণ তাকে যতই আঘাত দিক না কেন,তার নিজের স্বাধীনতা,তার নিজের জীবনকে ফিরিয়ে পাওয়ার সময় চলে এসেছে।

পরেরদিন সকালবেলা,যখন লন্ডনের স্নিগ্ধ বাতাস শহরের রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ছিল, তখন জ্যাসপার, থারিনিয়াস আর আলবিরা গাড়িতে চড়ে লন্ডনের দিকে রওনা দিলো।তাদের গন্তব্য ছিল ডঃ আর্থারের সাথে সাক্ষাৎ,কিন্তু যা তারা সেখানে পৌঁছানোর পর জানতে পারল,তা ছিল এক অপ্রত্যাশিত আর বিভৎস ঘটনা।
লন্ডনের পুলিশ বিভাগে কেসটি চলে এসেছে,আর তা এক বিভ্রান্তির ভেতর।ওয়াং লির মৃ*ত্যু আর পুরো ল্যাবের বি*স্ফোরণের খবর ছড়িয়ে পড়েছে।চিনের সরকারের তরফ থেকে তৎপরতা শুরু হয়েছে,কারণ এমন একটি ঘটনা ছিল না যে সহজেই পাশ কাটিয়ে যাওয়া সম্ভব।বিজ্ঞানী ওয়াং লির মৃ*ত্যু কোনো সাধারণ মৃ*ত্যুর মতো ছিল না,তার চমকপ্রদ কাজের ফলেই তা একটি তদন্তের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

লন্ডনের পুলিশ,বিশেষত একজন বড় অফিসার,তদন্তের জন্য ডঃ আর্থারকে গ্রেফতার করেছে।অফিসার রবার্টসনের নির্দেশে,ডঃ আর্থারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল,আর শীঘ্রই এই পুরো কেসটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বিস্তার লাভ করবে,কারণ ডঃ আর্থারের সাথে দীর্ঘদিনের গবেষণা আর ওয়াং লির সম্পর্ক ছিল।
থারিনিয়াস চুপ করে কিছুক্ষণ ভাবলো,তারপর মাথা নিচু করে বললো,”প্রিন্স,এখন আমাদের কী হবে?দ্বিতীয় মিশন আমাদের কীভাবে সম্পন্ন হবে?আমাদের হাতে তো আর কোনো সাইন্টিস নেই পৃথিবীর?”
জ্যাসপার এক মুহূর্ত চুপ থেকে উত্তর দিলো, তার কণ্ঠে এক গভীর আত্মবিশ্বাস ছিল, “আছে।আমাদের হাতে এখন আছেন শুধুমাত্র মিস্টার চেন শিং।”
আলবিরা কিছুটা বিরক্ত হয়ে প্রশ্ন করলো,”কিন্তু আমরা তাকে কোথায় পাবো?তাকে খুঁজে বের করার উপায় কি আছে?”

জ্যাসপার আবার কিছুটা সময় নিলো,তার চোখ গম্ভীর হয়ে উঠলো। “সেদিন মিটিংয়ে,ওয়াং লি একটা কথা বলেছিল। মিস্টার চেন শিংকে সে কোথাও আটকে রেখেছে।আমি জানি,আমার সাথে যে ডিভাইসটা আছে,সেটাই আমাদের পথ দেখাবে।এই ডিভাইসের মাধ্যমে আমরা হ্যাকিং করেছি সেদিন আর ওর সব তথ্য সংগ্রহ করেছি।এই ডিভাইসেই আমরা জানতে পারবো,মিস্টার চেন শিং কোথায় আছেন।”
আলবিরা হতাশার মিশ্রণে বললো,”তবে,প্রিন্স,একটা প্রশ্ন থেকেই যায়।মিস্টার চেন শিং কি আমাদের মিশন সফল করতে রাজি হবেন?তাকে আমরা বিশ্বাস করতে পারব?”
জ্যাসপার তার মাথা উঁচু করে বললো,তার চোখে এক ধরনের অদৃশ্য দৃষ্টি ছিল, “কেন হবেনা?মিস্টার চেন শিংয়ের জীবনের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হচ্ছে,তাঁর নাতনি ফিওনা—যে এখন আমার হাতে বন্দি।”
থারিনিয়াস একটু ঠাণ্ডা হয়ে বললো,”তাহলে,আমাদের আগামী পদক্ষেপ স্পষ্ট।আমরা তার সাথে কথা বলব,তাকে আমাদের মিশনে যুক্ত করার জন্যে।”

জ্যাসপার চোখ বন্ধ করে একটি দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিলো,তারপর কনিষ্ঠ সদস্যদের দিকে তাকিয়ে বললো, “এই মিশন হবে আমাদের সবথেকে কঠিন,কিন্তু একবার শুরু হলে আর পিছনে তাকানোর সুযোগ থাকবে না।আমাদের লক্ষ্য স্থির।”
জ্যাসপার তার চোখের দৃষ্টি আরও তীক্ষ্ণ করে বললো,”এখন চলো,দ্রুত ল্যাবে ফিরতে হবে।আমাদের আরেকটা মিশন যোগ হলো—মিস্টার চেন শিংকে উদ্ধার করতে হবে।”
আলবিরা আর থারিনিয়াস একে অপরকে দেখে বুঝতে পারলো, এটাই তাদের শেষ সুযোগ—মিস্টার চেন শিংয়ের জীবন উদ্ধার করতে না পারলে তাদের মিশন সম্পূর্ণ হবে না। তারা দ্রুত গাড়ি করে একটা নির্দিষ্ট পাহাড়ের দিকে রওনা হলো,সেখান থকেই মুলত ড্রাগন রুপে ধরে ল্যাবে ফিরে আসবে।আর অপেক্ষা না করে রওনা দিলো ল্যাবের দিকে।

দুপুর আর বিকেলের মাঝামাঝি সময়।পাহাড়ে সূর্যের নরম আলো পড়েছে,গ্লাস হাউস একটি জ্বলজ্বলে ক্রিস্টালের মতো দেখাচ্ছে। জ্যাসপার,থারিনিয়াস,আর আলবিরা তখন তাদের ল্যাবে গবেষণায় ব্যস্ত।গ্লাস হাউসের অন্য একটি অংশে এথিরিয়ন একা বসে বিরক্তি কাটানোর চেষ্টা করছিল। কিন্তু সেই বিশাল বাড়ির নিস্তব্ধতা তাকে ক্লান্ত করে তুলছিল।
কিছুক্ষণ পর এথিরিয়ন উঠে বাইরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।তার মনে পড়লো পাহাড়ের সেই দূরবিস্তৃত ফুলের বাগানের কথা। হাঁটতে হাঁটতে সে অ্যাকুয়ারার ঘরে গিয়ে বলল,“অ্যাকুয়ারা,ভাবছি,ফুলের বাগানে একটু ঘুরে আসি।আর তুমি কী বলো?”
অ্যাকুয়ারা তার দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসল। “ঠিক বলেছো এথিরিয়ন।এখন তো প্রিন্স আর বাকিরা ল্যাবে।ফিরতে সময় লাগবে।আমরাও এই সুযোগে বাগানে একটু সময় কাটিয়ে আসি।”এথিরিয়ন মাথা নাড়ল,কিন্তু তার মনের গভীরে অন্য কিছু কাজ করছিল।

একটু থেমে অ্যাকুয়ারা বলল,“ফিওনাকেও সাথে নিয়ে নেই কি বলো?”
এথিরিয়নের ভ্রু একটু কুঁচকে গেল। সে বলল,“ওই যে ওনা?মানে হিউম্যান গার্লটা?”
অ্যাকুয়ারা হেসে বলল, “হ্যাঁ,ফিওনা।ও অনেক মিশুক,তিনজন মিলে গেলে বেশি মজা হবে।
”এথিরিয়ন কাঁধ ঝাঁকালো। “ঠিক আছে।তাহলে তো আরও ভালো হয়।চল,ওকে বলো।”
অ্যাকুয়ারা দ্রুত ফিওনার কাছে গিয়ে সব কথা জানালো।ফিওনা একটু ভাবলো,কিন্তু পাহাড়ি বাগানের সৌন্দর্যের কথা ভেবে আনন্দিত হয়ে রাজি হয়ে গেল।

অবশেষে ফিওনা একটা চীনের ঐতিহ্যবাহী ডিজাইনের একটি আধুনিক শার্ট স্কার্ট পরে নিলো।তার শার্টটি হালকা গোলাপি রঙের,যার কলার আর হাতার কিনারায় সূক্ষ্ম সোনালী এমব্রয়ডারি।শার্টের মাঝখানে চীনের পুরাতন চিত্রকলার অনুপ্রেরণায় একটি সূক্ষ্ম ফুলের নকশা আঁকা।স্কার্টটি গাঢ় নীল রঙের,হাঁটু পর্যন্ত লম্বা,আর এতে ছোট ছোট পিঙ্ক পিওনি ফুলের প্রিন্ট ছড়িয়ে রয়েছে।কোমরে একটি সিল্কের বেল্ট বাঁধা,যা তার পুরো সাজকে একটি মার্জিত ছোঁয়া দিয়েছে।
এথিরিয়ন পরেছিল কালো রঙের একটি হালকা কিন্তু দীর্ঘ ওভারকোট।কোটের ওপর সাদা সুতোর সূচিকর্মে ড্রাগনের লেজের মতো জটিল ডিজাইন ছিল,যা তার ব্যক্তিত্বকে আরও রহস্যময় করে তুলেছে।তার ভেতরে ছিল সাদা শার্ট আর ডার্ক গ্রে ট্রাউজার।হাঁটার সময় কোটের প্রান্ত বাতাসে দুলছিল,যা তাকে আরও রাজকীয় লাগছিল।
অ্যাকুয়ারা একটি আকাশী নীল রঙের গাউন পরেছিল,যার নিচের অংশে নক্ষত্রের মতো ঝলমলে সিলভার এমব্রয়ডারি। গাউনের হাতাগুলো ছিল ঢিলেঢালা,যা হাঁটাচলার সময় বাতাসে সুরেলা ভাবে দুলছিল।তার কোমরে একটি সরু চেইন-আকৃতির বেল্ট আর গলার কাছে একটি ছোট নীল রত্ন বসানো ছিল,যা তার পোশাকের সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে তুলেছিল।

অবশেষে তারা গ্লাস হাউজ থেকে বের হয়ে পাহাড়ি পথ হেঁটে কিছুটা দূরে একটা বড় বাগানে পৌঁছাল,বাগনাটা এক স্বর্গীয় স্থান।পুরো এলাকা জুড়ে বিভিন্ন রঙের ফুল ফুটে ছিল।গোলাপি পিওনি,লাল-হলুদের মিশ্রণে ডাহলিয়া,সাদা আর ল্যাভেন্ডার রঙের ক্যামেলিয়া—সবাই মিলে রঙের সমুদ্র তৈরি করেছে।বাগানের মাঝখানে একটি ছোট ঝর্ণা ছিল, যার পানি সূর্যের আলোয় চিকচিক করছিল।ঝর্ণার পাশে রঙিন তিতির পাখি আর বর্ণিল প্রজাপতিগুলো উড়ে বেড়াচ্ছিল।
বাগানের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক ছিল এক বিশেষ ধরণের গোলাপি আরসোনালী রঙের ফুল,যাকে “এল্ড্রা লিলি” বলা হয়। এই ফুলগুলোর পাপড়িতে সূর্যের আলো পড়লে তা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।চারপাশে ছড়ানো ছোট সবুজ গাছপালা আর ফুলের গন্ধ পরিবেশকে মনোমুগ্ধকর করে তুলেছিল।

ফিওনা মুগ্ধ দৃষ্টিতে চারপাশের ফুলগুলোর দিকে তাকিয়ে ছিল।এল্ড্রা লিলির ঝলমলে পাপড়ি,গোলাপি পিওনির কোমলতা, আর ক্যামেলিয়ার শ্বেতশুভ্র আভা তাকে অন্য এক জগতে নিয়ে গিয়েছিল।ফুলের সুবাসে বাতাস ভারি হয়ে উঠেছিল,আর ঝর্ণার স্নিগ্ধ শব্দ সেই মুহূর্তকে আরও নিবিড় করে তুলেছিল।
ঠিক তখনই এথিরিয়ন তার পাশে এসে দাঁড়াল।তার দীর্ঘ ছায়া ফিওনার ওপর পড়তেই ফিওনা চমকে তার দিকে তাকালো।এথিরিয়নের মুখে এক রহস্যময় হাসি।
“কি দেখছো?ফুলের সৌন্দর্য?” তার কণ্ঠ ছিল গভীর,কিন্তু তাতে একধরনের বন্ধুত্বপূর্ণ উষ্ণতা লুকিয়ে ছিল। ফিওনা ধীরে মাথা নাড়ল,ফুলের দিকে ইঙ্গিত করে।
এথিরিয়ন মৃদু হেসে বলল,”তোমার থেকে বেশি সুন্দর কিছুই দেখিনি।”
ফিওনার মুখ একটু গম্ভীর হয়ে গেল।কথাটা শুনে সে কিছুটা অস্বস্তি বোধ করলেও চুপ রইল।তার গাল হালকা লালচে হয়ে উঠল,যা দেখে এথিরিয়ন হাসি চেপে রাখল।

“আচ্ছা,” এথিরিয়ন কথা ভাঙ,”তুমি মনে হয় কম কথা বলো, তাইনা?”
ফিওনা মাথা তুলে শান্তস্বরে বলল,”আমি অযথা কথা বলতে ভালোবাসি না।”
এথিরিয়নের ঠোঁটের কোণে আরও এক চিলতে হাসি ফুটে উঠল। “দ্যাটস লাইক আর মাই চয়েস,”বলল সে।
তার কণ্ঠের প্রশংসা আর মৃদু প্রশান্তি ফিওনাকে এক মুহূর্তের জন্য স্তব্ধ করে দিল।তবে সে কিছু না বলে ফিরে তাকাল সেই এল্ড্রা লিলির দিকে,সেখানেই তার সমস্ত মনোযোগ আটকে আছে।
এথিরিয়নও তার পাশে দাঁড়িয়ে রইল,প্রকৃতির শান্ত পরিবেশ উপভোগ করতে করতে।তাদের নীরব উপস্থিতি বাগানের সৌন্দর্যকে আরও গভীর করে তুলেছিল।

জ্যাসপার তার গবেষণাগারের হাই-টেক টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে ডিভাইসটি সক্রিয় করলো।স্ক্রিনে ভেসে উঠল একটি নীল বিন্দু,যা নির্দেশ করছিল চেন শিং-এর সুনির্দিষ্ট অবস্থান। তার চোখে ঝলসে উঠল এক ধরণের আত্মবিশ্বাস।
“ফাইনালি,” জ্যাসপার বলল,তার কণ্ঠে জয়ধ্বনি মিশ্রিত শীতলতা। “চেন শিং-এর লোকেশন পেয়ে গেছি। আর অপেক্ষা নয়।”
তার সামনে দাঁড়ানো থারিনিয়াস আর আলবিরা মনোযোগ দিয়ে শুনছিল। জ্যাসপার ধীরে ধীরে বলল
“থারিনিয়াস,আলবিরা,আশা করি এই মিশন তোমরা ঠিকভাবে কমপ্লিট করতে পারবে।আমাকে তো আর দরকার পড়বে না তাই তো?”

থারিনিয়াস সামান্য মাথা নিচু করে বলল
“নিশ্চয়ই,প্রিন্স।আমরা নিজেরাই এটি হ্যান্ডেল করব।”
জ্যাসপারের ঠোঁটে হালকা হাসি ফুটে উঠল।
“গুড তাহলে কালকের মধ্যেই কাজ শেষ চাই।
ইনশিউর নো হার্ম কামস টু হিম” তাকে সোজা ল্যাবে আনবে। আমি চাই না,মিশনে কোনো ভুল হোক।”
আলবিরা দৃঢ় কণ্ঠে বলল,“ইয়েস প্রিন্স অরিজিন আপনার নির্দেশই আমাদের কাছে চূড়ান্ত।”
এক মুহূর্ত চুপ থেকে জ্যাসপার আবার বলল, “তোমাদের সক্ষমতা পরীক্ষার সময় এটা।ফেইল করার কোনো সুযোগ নেই। গেট ইট ডান ফ্ললেসলি”
থারিনিয়াস সম্মতিসূচক ভঙ্গিতে বলল,“প্রিন্স,মিস্টার চেন শিং-কে নিরাপদে আপনার কাছে নিয়ে আসব।
আলবিরা যোগ করল,”উই’ল ইনশিউর ইট’স আ সাকসেস, প্রিন্স”
জ্যাসপার তাদের দিকে একবার তাকিয়ে বলল,“তাহলে যাও।প্রস্তুতি শুরু করো।আমি রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করব।”
দুজনেই একযোগে মাথা নুইয়ে বলল “অ্যাজ ইউ কম্যান্ড, প্রিন্স”

বিকেলের শান্ত স্নিগ্ধ আলো নেমে আসছিল,আর সূর্য তার শেষ রূপে আকাশে রক্তিম রঙ ছড়াচ্ছিল। গ্লাস হাউজের সাথের পাহাড়ের পাদদেশে দাঁড়িয়ে এথিরিয়ন আর অ্যকুয়ারা আলোচনায় ব্যস্ত ছিল,তাদের মধ্যে অদ্ভুত গম্ভীরতা ছড়িয়ে পড়েছিল। এরই মাঝে ফিওনা একটু দূরে দাঁড়িয়ে ছিল, সূর্যের মৃদু আলোর মাঝে এক অদ্ভুতভাবে শান্তি খুঁজে পাচ্ছিল। হঠাৎ তার চোখে পড়ে একটি ফুল—সাদা পাপড়ি আর সোনালি শিরা দিয়ে সজ্জিত এক অদ্ভুত ফুল, যা তার চারপাশের বাকি সব ফুলের থেকে আলাদা ছিল। এটি ছিল “লুনার ব্লুম” নামে পরিচিত, যার নাম থেকেই তার রহস্যময় চরিত্রের ইঙ্গিত মিলত।
ফিওনার মন অজান্তেই ফুলটির দিকে আকৃষ্ট হয়ে গেল।ফুলটি দেখতে এতই সুন্দর ছিল যে,তার কাছাকাছি পৌঁছানোর পর সময় থেমে গিয়েছিল। গাঢ় সাদা পাপড়ির মাঝে সূর্যর আলো এসে পড়ে,এটি এক নক্ষত্রের মতো উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল।

ফিওনা ফুলের সৌন্দর্য আর তার সুবাসে মুগ্ধ হয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইল। তখন সে বুঝতে পারল, অদ্ভুত এক টান অনুভব হচ্ছে তার ভেতর—এটা শুধু সৌন্দর্য নয় কিছু রহস্যময়তা ফুলটির মধ্যে লুকিয়ে আছে। ফুলটির পাপড়ি এতটাই সূক্ষ্ম আর মসৃণ ছিল,যে তার হাতে নিতেই এক অদ্ভুত অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ল।
কিছুক্ষণ পর,ফিওনা এক অজানা আকর্ষণে ফুলটির একটি পাপড়ি তুলে নিয়েছিল। সজাগ না হয়ে,সে হালকাভাবে সেটি নিজের ঠোঁটে ছোঁয়াল।ফুলটির সুগন্ধ তার শরীরের প্রতিটি কোষে পৌঁছাতে শুরু করল, আর সাথে সাথে তার মনও আরও হালকা হয়ে উঠল। সুগন্ধের মাঝে কিছু একটিই শক্তি ছিল, যা তাকে আরো গভীরভাবে আচ্ছন্ন করছিল।
এথিরিয়ন আর অ্যকুয়ারা তখনো তাদের আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিল, কিন্তু ফিওনা আর তাদের কথা শুনছিল না।ফুলের সুবাসে ডুবে গিয়ে সে নিজেকে পুরোপুরি ভিন্ন এক জগতের অংশ মনে করছিল, যেখানে কিছুই স্পষ্ট ছিল না, শুধু অনুভূতিই প্রবাহিত হচ্ছিল।

ফিওনা অজান্তেই ফুলটির পাপড়ি চিবিয়ে খেতে শুরু করলো।প্রথমটায় পাপড়ির মিষ্টি স্বাদ তার জিভে লেগেছিল,কিন্তু পরক্ষণেই সে অনুভব করল,সেই স্বাদটিই আরও গভীরভাবে তার সত্ত্বায় প্রবাহিত হচ্ছে।
ফুলের পাপড়ির নেশা ধীরে ধীরে তার মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ছিল,কিছু একটা শিথিল আর মনোরম ছিল। সে আর কিছু ভাবতে পারছিল না,শুধুমাত্র ফুলের অসীম সৌন্দর্য আর তার অদ্ভুত সুবাসের অনুভূতিতে মগ্ন হয়ে গিয়েছিল।
অ্যাকুয়ারা দ্রুত ফিওনাকে ডাকল, “ফিওনা,তুমি ঠিক আছো?” তার কণ্ঠে উদ্বেগ ছিল।ফুলের নেশার প্রভাবে ফিওনার শরীর আর মন পুরোপুরি শিথিল হয়ে গিয়েছিল,তাই সে একটু ধীর গতিতে মাথা তুলল।ধীরে ধীরে নিজের চারপাশে ফিরে আসছিল,তবে মস্তিষ্কে একটা অদ্ভুত ভোঁতা ভাব ভর করেছিল।
“হ্যাঁ,আমি ঠিক আছি,” ফিওনা বলল,কিন্তু তার কণ্ঠে একটু ঝাপসা কিছুটা বিভ্রান্ত ছিল।তার মন এখনো ফুলের প্রভাবের মধ্যে আবদ্ধ ছিল,তবে অ্যাকুয়ারা আর এথিরিয়নের অনুশীলিত চোখে পরিলক্ষিত হচ্ছিল যে, ফিওনার হুশ ফিরে এসেছে।

তিনজন একসাথে গ্লাস হাউজে ফিরে আসলো।পথে ফিওনা মনে মনে ভাবছিল,জ্যাসপার যখন ফিরে আসবে,তখন তার সাথে কথা বলবে—তার মুক্তির জন্য কথা বলবে। কিন্তু, সে জানতো না যে ফুলের প্রভাব তার শরীরে পুরোপুরি শুরুর জন্য অপেক্ষা করছে। আধা ঘণ্টার মধ্যে ফুলের নেশা আরও তীব্র হতে শুরু করবে।
ফিওনার অজান্তেই তার দেহে আর মনের প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছিল,কিন্তু সে এসময় কিছুই বুঝতে পারছিল না।তার মাথায় একমাত্র চিন্তা ছিল জ্যাসপার—তার থেকে মুক্তি পাওয়া।

দশ মিনিট পর,জ্যাসপার গ্লাস হাউজে ফিরে আসে। তার চোখে কিছুটা ক্লান্তির ছাপ ছিল, আর শরীরেও অল্প অসস্থি অনুভব করছিল। সে ব্লেজারটা খুলে সাদা শার্ট আর কালো টাই পরিধান করে ইজি চেয়ারে বসে মাথা হেলান দিয়ে রাখল,কিছুটা বিশ্রাম নিতে। মৃদু ব্যাথা অনুভব করছিল মাথায়,আর তাই সেদিকে মনোযোগ দেয়ার জন্য,সে অ্যাকুয়ারাকে কফি আনতে বলে।
অ্যাকুয়ারা কফি নিয়ে চলে যাওয়ার সময়, ফিওনার মনে অন্য কিছু চিন্তা ঘুরছিল।আজকে সে আর কিছু অপেক্ষা করতে চায় না। তার মধ্যে এক অদ্ভুত তাড়না ছিল—যে তাড়না তাকে জ্যাসপারের কাছে নিয়ে গেল। সে সিদ্ধান্ত নেয়, নিজেই কফি নিয়ে যাবে, কিন্তু কেবল কফি দেয়ার জন্য নয়। এই মুহূর্তে, ফিওনার মন ছিল অন্য কোথাও—সে তার ভেতরে জমে থাকা কথাগুলো জ্যাসপারের সাথে শেয়ার করতে চায়, বিশেষ করে তার মুক্তি পেতে হবে, এটা তাকে বলতেই হবে।

ফিওনা সামান্য সতর্কভাবে কফি নিয়ে এগিয়ে যায়, তার মুখে একটু সংকোচ,কিন্তু সে জানে যে,আজকের এই মুহূর্তটা তাকে সাহসী হতে হবে।
কফি হাতে নিয়ে দরজার ভেতরে দাঁড়িয়ে ছিল ফিওনা, তার মুখে কিছুটা সংকোচ আর মনে কিছুটা দ্বিধা ছিল। জ্যাসপার তখনো ইজি চেয়ারে বসে ছিল, মাথা হেলান দিয়ে, চোখ বন্ধ করে নীরবতা ভাঙছিল না। কিছুক্ষণ পর তার ঠাণ্ডা, গভীর কণ্ঠে ভেসে আসল কথাগুলি।
“তুমি হঠাৎ এই সময় আমার কক্ষে? আর কফি তুমি আনলে কেনো?”
ফিওনা একটু অবাক হয়ে তাকে দেখে,তার প্রশ্নের ভিতর এক ধরনের কৌতূহল ফুটে উঠেছিল। এতক্ষণে নিজের মনকে সামলে নিয়ে, ফিওনা কফির মগটি তার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল, “আপনি না দেখে কি করে বুঝলেন আমি?”

জ্যাসপার চোখ না খুলেই এক মুহূর্ত নীরব ছিল, তারপর তার ঠাণ্ডা কণ্ঠে এক শব্দে উত্তর দিল, “হরমোনাল স্মেল।”
ফিওনা দীর্ঘক্ষণ চুপ থাকার পর,এক ঝটকায় নিজের মনকে জড়ো করল আর তার কণ্ঠে শান্ত কিন্তু গভীর ভঙ্গিতে বলল, “বলছি যে,যার জন্য আমাকে আটকে রেখেছিলেন,আপনার ভাই তো ফিরে এসেছে। এখন আমাকে মুক্তি দিন।আমাকে আমার বাসায় ফিরে যেতে দিন। আর তো কোনো কাজ নেই আমার এখানে।”
তার কথা শুনে,জ্যাসপার অমনি চোখ খুলে ফেলল। সে ইজি চেয়ারে হেলান দেওয়া অবস্থান থেকে সোজা হয়ে বসে গেল।তার দৃষ্টি ছিল রাগান্বিত আর তীব্র, এই মুহূর্তে ফিওনার উক্তির জন্য কিছু একটা ভীষণ ক্ষোভ জমে গেছে তার ভেতরে।ফিওনা তার চোখের দিকে তাকিয়ে কিছুটা ভীত হয়ে পড়ে,এক অজানা শঙ্কা তার মনকে চেপে ধরলো।
জ্যাসপারের চোখে যে তীব্রতার ছাপ ছিল,তা দেখেই ফিওনার হাতের কফির মগটি কাঁপতে কাঁপতে মাটিতে পড়ে যায়। মগটি নিচে পড়ে গিয়ে টুকরো টুকরো হয়ে ছড়িয়ে পড়ে,কিন্তু ফিওনার দৃষ্টি সেই মূহুর্তে একটুও সরে না—তার সমস্ত মনোযোগ সেই রাগান্বিত চোখের দিকে।

তার চোখে আগুন ছিল,আর সেই আগুন ফিওনাকে ভয়ংকরভাবে তাড়িত করছিল।এ এক নতুন ফিওনা ছিল, যে আগে কখনও জ্যাসপারকে এমন রাগান্বিত অবস্থায় দেখেননি।
জ্যাসপার হঠাৎই দ্রুত উঠে আসে,তার চোখে আগুনের মতো ক্ষোভের তীব্রতা।ফিওনার বাহু দুটোশক্ত লোহার শেকলের মতো ধরে ফেলল, তাকে গ্লাসের দেয়ালের সঙ্গে চেপে ধরলো। ফিওনা কিছুটা অবাক হয়ে চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তার শক্তি কোথাও নেই।
জ্যাসপার তার নরম কণ্ঠে কেটে বলল,“তোমার এতো সাহস? আমার থেকে মুক্তি পেতে চাইছো?”

ফিওনার বুকের মধ্যে এক ভীতিকর অনুভূতি তৈরি হয়, কিন্তু জ্যাসপার নিজেকে একটুও নরম করতে চায়নি।জ্যাসপারের চোখের রাগ আর ক্ষোভ দেখে তার শরীর কাঁপছিল।জ্যাসপার আরও কাছ থেকে,এক ভয়ংকর ভঙ্গিতে ফিওনার মুখের কাছে এসেছিল,তার গলা থেকে বেরিয়ে আসে ঠাণ্ডা আর তীক্ষ্ণ এক উচ্চারণ
—”লিসেন, এলিসন ফিওনা।শুনে রেখো,এই ড্রাগন মনস্টারের হাত থেকে তোমার মুক্তির কোনো উপায় নেই। আজকে আবারো শেষবার বলে রাখলাম,এই পৃথিবী ত্যাগ করার আগ পর্যন্ত তোমার আমার কাছ থেকে নিস্তার নেই।”
ফিওনা এক মুহূর্ত চুপ ছিল,তার শরীরে আগুন জ্বলছিল, কিন্তু তার চোখে ছিল এক দৃঢ়তা।কীভাবে সে এই অবস্থায় টিকে থাকতে পারে, এটাই ছিল তার একমাত্র লক্ষ্য। জ্যাসপার তার চোখে ঝলসে ওঠা তীব্র রাগের পরেও তার মাঝে এক ধরনের অদৃশ্য শক্তির উপস্থিতি অনুভব করেছিল।

জ্যাসপার জানত,তার রাগ আর দখল জানানো ছাড়াও কিছু একটা লুকিয়ে ছিল। কিন্তু,তার এই কথায় এমন এক ধরনের কঠিন সতর্কতা ছিল যে,ফিওনার সামনে কোনো মুক্তির রাস্তা ছিল না,যতক্ষণ না সে নিজেই তা চেয়েছে।
জ্যাসপার পুনরায় ফিওনাকে ছেড়ে ইজি চেয়ারে হেলান দিয়ে চোখদুটো বন্ধ করে শান্ত গলায় বললো “এখন আমার সামনে থেকে যাও”
ফিওনা কেবলমাত্র কক্ষ থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায় আর তখনি তার শরীরে ফুলের বিষাক্ত প্রতিক্রিয়া শুরু হলো।তার চোখ ঝাপসা হতে শুরু করল,অন্ধকারে সব কিছু ঢেকে যাচ্ছে। সেই রোমাঞ্চকর গন্ধের প্রভাবে তার পেটে তীব্র মোচড় হচ্ছিল,আর মাথার ভেতর হালকা ঘোর অনুভূত হচ্ছিল।মনে হচ্ছিল,পৃথিবী তার চারপাশ থেকে ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে,আর তার সমস্ত অনুভূতি আলাদা আলাদা হয়ে যাচ্ছে।

ফিওনার পা কাঁপছিল,কিন্তু সে কোনো রকমে নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করছিল।সে গ্লাসের দেয়াল এক হাতে ধরে শক্ত করে চেপে ধরলো নিজেকে স্থির রাখতে পারর জন্য। তবুও,সে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছিল না।ফুলের প্রতিক্রিয়া ছিল এক ধরনের মাদকতা,এক ধরনের নেশা যা তাকে নিজের থেকে অনেক দূরে নিয়ে যাচ্ছিল।
“আমা…আমার,” ফিওনা শব্দটা বলার চেষ্টা করল,কিন্তু কণ্ঠে ঘোর চলে আসছে, সে সঠিকভাবে কিছু বলতে পারছে না। সে মাথা নিচু করে আর একটি গভীর শ্বাস নিলো,চেষ্টা করল তার শরীরকে সামলাতে পারে।

আযদাহা পর্ব ২৭

জ্যাসপার তখনও চোখদুটো বন্ধ রেখেই পুনরায় বললো “এখনো দাঁড়িয়ে আছো‌ কেনো?যাচ্ছো না কেনো?
ফিওনা আরও একবার তার পা চালাতে গেলো,কিন্তু সে প্রায় পড়ে যাচ্ছিল।তার হাতে শক্তি নেই,তার মাথা ঘুরছে,আর কিছুই পরিষ্কার মনে হচ্ছিল না।

আযদাহা পর্ব ২৯