আযদাহা পর্ব ৪১

আযদাহা পর্ব ৪১
সাবিলা সাবি

নিশি রাতে মাউন্টেন গ্লাস হাউজ-এ চাঁদের আলো ধীরে ধীরে কাঁচের দেয়াল ভেদ করে প্রবাহিত হচ্ছিল।সেখানে জ্যাসপার, এক ভেনাসীয় ড্রাগন,ফিওনার দিকে গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল।তাঁর চোখে ছিল এক ধরনের আগ্রহ,যেন সে জানতো যে আজ রাতের ঘটনা এক নতুন মাত্রা যোগ করবে।
সে এক হাতে ফিওনার কোমল হাত দুটি ধরে বিছানার উপরে আর ফিওনাকে শুয়ে থাকতে বাধ্য করে।।ফিওনার চোখে ছিল কিছুটা ভয়,কিন্তু তাঁর মধ্যে এক অদ্ভুত আকর্ষণও ছিল। জ্যাসপার ধীরে ধীরে তাঁর দুই হাত মাথার উপরে তুলে নিলো আর বিছানার মজবুত কাঠের ফ্রেমের সঙ্গে রেখে দিলো।

এখন সে একটা বিশেষ জিপটাই বের করলো—এটি কালো এবং চকচকে,দেখতে সাধারণ হলেও এর গুণাগুণ ছিল অসাধারণ।এটি প্লাস্টিকের তৈরি,কিন্তু স্টিলের মতোই শক্তিশালী।বেধ প্রায় আধা ইঞ্চি এবং স্বয়ংক্রিয় লকিং মেকানিজমের কারণে,একবার আটকালে সেটি খুলতে বিশেষ কৌশল বা প্রচণ্ড শক্তি প্রয়োজন হবে।
জ্যাসপার জিপটাইয়ের একটি প্রান্ত ফ্রেমের চারপাশে পেঁচিয়ে ধরে ফিওনার হাতগুলোকে শক্ত করে বেঁধে ফেললো সে ফিওনার দিকে তাকিয়ে বললেন, “সরি হামিংবার্ড।আমি তোমার এই নতুন অভিজ্ঞতাকে বিশেষ করে তুলতে চাই।”
ফিওনার হৃদপিণ্ড দ্রুত ধুকপুক করতে লাগল,যেন তাঁর ভিতরে এক অজানা ভীতি আর উত্তেজনা উন্মাদনা সৃষ্টি করছিল।জ্যাসপার ধীরে ধীরে জিপটাইটি টেনে টেনে শক্ত করে ফেললো,যতক্ষণ না এটি একদম ফিট হলো।ফিওনার হাত দুটো মাথার উপরে উঁচু অবস্থায় আটকে থাকল,আর সেই মুহূর্তে জিপটাই লক হয়ে গেল।
“এটা তোমার জন্য পুরোপুরি নতুন,” জ্যাসপার বললো, “অবশ্যই,এই অনুভূতি তোমার জন্য অস্বস্তিকর,কিন্তু আমি নিশ্চিত যে তুমি কিছুক্ষণের মধ্যেই অভ্যস্ত হয়ে যাবে।”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

ফিওনার চোখে আতঙ্ক,কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে তাঁর দেহে এক ধরনের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ছিল।সে জানতো,তাঁর পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে জ্যাসপারের হাতে।
ফিওনা বললো “আপনি কি আমাকে ফিল্মের মতো করে বেঁধে দিলেন?কেনো?”
জ্যাসপার ঠাণ্ডা গলায় উত্তর দিল,”কারণ এটা তোমার প্রথমবার।তুমি আমাকে বাধা দিতে চাইবে,পালাতে চাইবে। আর আমি চাই না তুমি সেটা করো।”
তার চোখে ছিল এক অদ্ভুত দৃঢ়তা,যেন সে জানত ফিওনা যতই চেষ্টা করুক,তার বাঁধন থেকে মুক্তি পাওয়া অসম্ভব।
ফিওনা তার অসহায় অবস্থায় কাঁপা কাঁপা গলায় বলল, “বলছিলাম যে…আজকে না,আমাকে ছেড়ে দিন প্লিজ। অন্যদিন যা খুশি করবেন।”
জ্যাসপার ঠোঁটের কোণে এক চিলতে শয়তানি হাসি নিয়ে ফিসফিস করে বলল,”হুঁশ!একদম চুপ।আজ আবার মুড হয়েছে,আর তুমি বলছো অন্যদিন?আমি তো আজকের জন্য আরও অনেক ট্রিক্স ভেবে রেখেছি।সেগুলো তোমার ওপরই এপ্লাই করব।”

ফিওনা বিস্ময়ে তার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করল
“কিসের ট্রিক্স?!”
জ্যাসপার মুচকি হেসে তার দিকে ঝুঁকে এসে গম্ভীর সুরে বলল,”ওয়েট,মাই ডার্লিং হামিংবার্ড।নিজেই দেখতে পাবে।”
তার চোখে ঝলসে উঠল রহস্যময় উদ্দীপনা,যা ফিওনাকে আরও বিচলিত করে তুলল।
জ্যাসপার ফিওনার কোনো কথা শুনল না।সে উঠে গেলো কক্ষ থেকে,ফিওনা একা বিছানায় পড়ে রইল,হাত বাঁধা অবস্থায়।কিছুক্ষণ পর জ্যাসপার ফিরে আসে,তার হাতে একটি বক্স।
সে ধীরে ধীরে বক্সটি নিয়ে এসে টেবিলের ওপর রেখে দেয়। ফিওনার চোখ বক্সের দিকে আটকে যায়,কিন্তু কী আছে তাতে,তা বুঝতে পারে না।জ্যাসপার কোনো কথা বলে না, শুধু তার ঠোঁটের কোণে এক শীতল হাসি।
কাঁচের দেয়ালের ওপাশ থেকে ঘরের ভেতর দিয়ে চাঁদের আলো ছড়িয়ে পড়েছে।সেই আবছা আলোতেই ফিওনার ফর্সা ত্বক ও মুখের ভীত-উৎকণ্ঠা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।তার শরীরের আবছা আভা যেন রহস্যময় পরিবেশকে আরও গভীর করে তুলেছে।

ফিওনা ফিসফিস করে বলে,”বক্সে কী আছে?”
জ্যাসপার ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি নিয়ে ধীরে ধীরে বলল,”শান্ত হও,আমার ছোট্ট হামিংবার্ড।এই বক্সের ভেতরেই আছে তোমার জন্য কিছু বিশেষ ট্রিক্স।নিজেই দেখবে,আর উপভোগ করবে।”
তার গভীর কণ্ঠস্বর ও চোখের রহস্যময় দৃষ্টি ফিওনাকে আরও অস্থির করে তোলে,কিন্তু বাঁধা অবস্থায় সে কিছুই করতে পারে না।
জ্যাসপার লক্ষ্য করল,ফিওনা এখন অনেকটাই শান্ত হয়ে গেছে।তাঁর মুখের অভিব্যক্তি আগের মতো আর জেদি বা আতঙ্কিত নয়; বরং,একটি অদ্ভুত নৈকট্যের আভা ছড়াচ্ছে। তবে জ্যাসপার জানত,পরিস্থিতি আরও উত্তেজনাপূর্ণ করতে হবে।

সে ধীরে ধীরে নিজের গা থেকে শার্ট খুলতে শুরু করল,যেন প্রতিটি মুহূর্তকে দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা করছে।ফিওনার চোখ তখনও জ্যাসপারের দিকে,কিন্তু তাঁর দৃষ্টি ধীরে ধীরে আটকে গেল জ্যাসপারের মসৃণ,শক্তিশালী বডির দিকে।
জ্যাসপারের প্রশস্ত কাঁধ,তীক্ষ্ণ বক্ষপেশি,আর পেটের নিখুঁত ছয়টি পেশি চাঁদের আবছা আলোয় ঝলমল করছিল।তার শরীরের উপরিতলের সোনালী আভা যেন তাঁকে আরও অবাস্তব,প্রায় ভিনগ্রহের রাজপুত্রের মতো করে তুলছিল।
ফিওনা মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইল,যেন কোনো শিল্পকর্ম দেখছে। তাঁর ঠোঁটের কোণে একটি অতি ক্ষুদ্র হাঁসির রেখা দেখা দিল। অনিচ্ছাসত্ত্বেও সে বলল, “আপনি কি সবসময়ই এতো নিখুঁত?”
জ্যাসপার মৃদু হেসে বলল,“তোমার জন্যই তো আজ আমি এমনভাবে নিজেকে উপস্থাপন করছি,হামিংবার্ড।কিন্তু এটাই তো কেবল শুরু।”

তার চোখে সেই পরিচিত রহস্যময় দৃষ্টি জ্বলজ্বল করছিল,যা ফিওনাকে আরও অস্থির আর উত্তেজিত করে তুলল। জ্যাসপার এগিয়ে এল,যেন তাঁর উপস্থিতি প্রতিটি শ্বাসরোধী মুহূর্তকে আরও অর্থপূর্ণ করে তুলছে।
“তুমি কি জানো,” সে বলল,“এ রাতের প্রতিটি পালা আমি তোমার জন্য সাজিয়েছি?আমার প্রতিটি স্পর্শ,প্রতিটি দৃষ্টি—সবই শুধু তোমার জন্য।”
ফিওনার হৃদপিণ্ড দ্রুত গতি পাচ্ছিল।সে অনুভব করছিল, এই মুহূর্তে তাদের মধ্যে তৈরি হওয়া আবেগ যেন একটি নতুন সমুদ্রের ঢেউ,যা তাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে গভীরতার দিকে। তাঁর মধ্যে থাকা ভয় আর আগ্রহের মিশ্রণ তাঁকে নতুন এক স্বপ্নের বুকে নিয়ে যাচ্ছিল।
“ প্রিন্স,” ফিওনা কাঁপা কাঁপা গলায় বলল, “এটা…এটা কি ঠিক হচ্ছে?”
“ঠিক হচ্ছে,” জ্যাসপার বলল, তাঁর কণ্ঠে একটি গভীর, ন্যায়সঙ্গত সুর ছিল। “কারণ আমি জানি,তুমি নিজেই চাইছো।তুমি চাও আমাকে,তাই না?”
ফিওনার মুখে কথাগুলো আটকে গেল।কিন্তু তাঁর চোখ তাঁর দৃষ্টিতে ছিল এক ধরনের অপ্রতিরোধ্য আকর্ষণ—যা বলছিল, সে সত্যিই চাইছে।

ফিওনা তখন একটি ক্রপ শার্ট ধরনের টপস এবং হাঁটু পর্যন্ত জিন্সের স্কার্ট পরে ছিল। তার অসহায় অবস্থায় সে কিছুই করতে পারছিল না, আর জ্যাসপার ধীরে ধীরে তার দিকে এগিয়ে এল। তার চোখে সেই রহস্যময়, গভীর দৃষ্টি—যেন কোনো নিঃশব্দ ঝড়ের বার্তা বহন করছে। ফিওনার ভেতরে মিশ্র অনুভূতি খেলা করছিল—অস্বস্তি, কৌতূহল, এবং এক ধরনের অদ্ভুত, অথচ অপ্রতিরোধ্য আকর্ষণ।
জ্যাসপার থেমে গেল ফিওনার সামনে। তার লম্বা, দৃঢ় আঙুলগুলো ধীরে ধীরে ফিওনার ক্রপ টপের বোতাম বা ফাঁস খুলতে শুরু করল। প্রতিটি বোতাম খুলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফিওনার শ্বাস ভারী হয়ে উঠছিল। কাপড়টি আলগাভাবে খুলে গিয়ে তার গায়ের ওপর ঝুলে থাকল।
তারপর,জ্যাসপার তার দু’আঙুল দিয়ে ফিওনার কোমরের কাছের কাপড়টি ধীরে ধীরে টানতে শুরু করল।তার ফিতার স্লিভের ভেতরের পাতলা গেঞ্জিটা আলতোভাবে উপরের দিকে তুলল। ফিওনার মসৃণ ত্বকের ওপর থেকে কাপড় সরে গেলে তার সুন্দর নাভীটি চাঁদের নরম আলোয় স্পষ্ট হয়ে উঠল। সেই আলো যেন তার ত্বকের ওপর খেলা করে তার সৌন্দর্যকে আরও মায়াবী করে তুলছিল।

ফিওনা শ্বাস আটকে গেল। তার মনে হচ্ছিল যেন সে কিছু বলতে চায়, কিন্তু তার ঠোঁট সিল হয়ে গেছে। তার মন আর শরীর যেন একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে—একদিকে জ্যাসপারকে ঠেলে সরিয়ে দিতে চাইছে, আর অন্যদিকে তার প্রতিটি স্পর্শে সাড়া দিচ্ছে।
জ্যাসপার ধীরে ধীরে ফিওনার দিকে ঝুঁকল। তার গভীর কণ্ঠ ফিসফিস করে উঠল,”তোমার এই সৌন্দর্য এতদিন লুকিয়ে রেখেছিলে, হামিংবার্ড?তবে আজ থেকে আর নয়।”
তার কণ্ঠে ছিল এক ধরনের অদ্ভুত অধিকারবোধ, যা ফিওনাকে বাকরুদ্ধ করে ফেলল।
তার হাতগুলো ধীরে ধীরে ফিওনার কোমর ছুঁল, যেন মসৃণ পাথরের ওপর দিয়ে জলধারা প্রবাহিত হচ্ছে। ফিওনার শরীর থরথর করে কেঁপে উঠল। তার চোখ বন্ধ হয়ে গেল, কিন্তু তার মনে হলো যেন জ্যাসপারের স্পর্শ তার প্রতিটি অনুভূতি তীব্র করে তুলছে।

“তুমি কি জানো,” জ্যাসপার ফিওনার কানের কাছে নিচু স্বরে বলল, “তোমার এই মুহূর্তের প্রতিটি শ্বাস আমার জন্য সবচেয়ে মুল্যবান।”ফিওনার হৃদস্পন্দন যেন জোরে জোরে ধাক্কা দিতে লাগল, তার ভেতরের অনুভূতিগুলো যেন বিস্ফোরিত হতে চাইছে।
ফিওনা তখন বিছানায় শুয়ে,তার দেহ টানটান,চোখে আতঙ্কের ছায়া।তার শ্বাস ভারী,যেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না।জ্যাসপার ধীরে ধীরে বিছানার নিচে ঝুঁকে পড়ল, তার ঠোঁটে সেই পরিচিত শয়তানি হাসি।তারপর,তার লম্বা আঙুল দিয়ে এক অদ্ভুত সংকেতযুক্ত সুইচ চাপল।
মুহূর্তের মধ্যে ফিওনার শরীরের চারপাশে এক অদৃশ্য শক্তি সক্রিয় হয়ে উঠল।তার পেটের কাছে হালকা চাপ অনুভূত হলো,আর সেই সঙ্গে একটা অজানা অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ল তার দেহের প্রতিটি শিরায়।
ফিওনা আতঙ্কে সোজা হয়ে শুয়ে থাকল,কিন্তু তার শরীর যেন নিজের নিয়ন্ত্রণে নেই।সে একবার নড়তে চেষ্টা করল, আর তখনই তার ভেতর দিয়ে হালকা বৈদ্যুতিক শক ছড়িয়ে পড়ল। শকের অনুভূতি তার রক্তের প্রতিটি কণায় পৌঁছে গিয়ে যেন একধরনের উত্তেজনা ছড়িয়ে দিল।

“ওহ!” ফিওনা হঠাৎ চিৎকার করে উঠল,”এটা কী!আপনি এটা কেন করছেন?”
জ্যাসপার তার চিরচেনা শয়তানি হাসি দিয়ে বলল,”শান্ত হও, হামিংবার্ড।এটা তোমার জন্যই দরকার।তুমি জানো না, নড়াচড়া করলে কী বিপদ হতে পারে।”
ফিওনার চোখে আতঙ্ক স্পষ্ট, আর তার দেহ পুরোপুরি সজাগ।”আপনার এই সব পাগলামির ‌খেলা আমাকে দিয়ে করাচ্ছেন কেন?” সে রাগ আর ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে বলে উঠল।
জ্যাসপার ধীরে ধীরে তার দিকে এগিয়ে গেল। তার চোখে সেই গভীর, রহস্যময় দৃষ্টি।”কারণ তুমি আমার রোমান্সের সময় বাধা দিবে আমাকে হামিংবার্ড।আর আমি চাই,তুমি বুঝে নাও—এখানে সবকিছু আমার নিয়ন্ত্রণে।”
তার গভীর কণ্ঠের আবেশ ফিওনার মনে একধরনের অদ্ভুত অনুভূতি তৈরি করল।তার ভেতরে আতঙ্ক থাকলেও সেই মন্ত্রমুগ্ধকর আকর্ষণ তাকে স্থির থাকতে বাধ্য করল।

“কিন্তু আমি চাই না,তুমি ভয়ে সোজা হয়ে শুয়ে থাকো,” জ্যাসপার ফিসফিস করে বলল।তার শব্দগুলো যেন বাতাসে মিশে আরও ভারী হয়ে উঠল।”আমি চাই,তুমি স্বেচ্ছায় আমার নিয়ন্ত্রণে আসো।”
ফিওনার ঠোঁট কাঁপল,কিন্তু কোনো শব্দ বের হলো না। তার দেহ শকের কারণে স্থির,আর মন এক অজানা আবেগে ভেসে যাচ্ছে।জ্যাসপার ধীরে ধীরে তার উপর ঝুঁকল,তার ঠোঁট থেকে এক চিলতে হাসি মুছে দিয়ে বলল,”তোমাকে শেখাতে হবে,হামিংবার্ড।তুমি এখন শুধু আমার।”
জ্যাসপার ধীরে ধীরে বক্স খুলে বরফের টুকরো হাতে নিল। তার চোখে তখন এক গভীর রহস্যময় দৃষ্টি। ফিওনা আতঙ্কিত হলেও নিরুপায়। সে অসহায়ভাবে তাকিয়ে রইল, তার নাভি শীতল স্পর্শের জন্য প্রস্তুত নয়।
জ্যাসপার বরফের প্রথম টুকরোটি ফিওনার নাভির উপর রাখতেই শীতলতার প্রবল ধাক্কায় ফিওনার শরীর কেঁপে উঠল।তার চোখ বন্ধ হয়ে গেল, ঠোঁট শক্ত করে চেপে ধরল যেন নিজেকে কোনোভাবে সামলাতে পারে। তবুও, তার মুখ থেকে অদ্ভুত শব্দ বের হতে লাগল। সেই শব্দে ছিল ব্যথা, লজ্জা এবং কিছুটা মৃদু আকর্ষণ।
বরফ গলতে শুরু করল, ফিওনার কোমল ত্বকের উপর ঠাণ্ডা জল বয়ে যেতে লাগল। তার প্রতিটি কাঁপন যেন জ্যাসপারের মনোযোগ আরও তীব্র করে তুলল।

“তোমার প্রতিক্রিয়া বড়ই অনন্য,হামিংবার্ড,”জ্যাসপার মৃদু স্বরে বলল, তার কণ্ঠে শীতল রোমান্টিকতার ছোঁয়া।সে ধীরে ধীরে সোফায় গিয়ে বসে পড়ল,তার চোখ ফিওনার প্রতিটি প্রতিক্রিয়ায় নিবদ্ধ।
“তুমি জানো না,তোমার এই সংবেদনশীলতাই তোমাকে আমার কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।”তার গলায় ছিল একধরনের গোপন শক্তি,যা ফিওনাকে আরও অস্থির করে তুলল।
ফিওনা ঠাণ্ডায় কাঁপছিল,কিন্তু তার মনের ভেতর অন্য এক অনুভূতি তাকে আচ্ছন্ন করছিল।জ্যাসপার বরফের টুকরোটি নিজের ঠোঁটে ধরে ফিওনার দিকে ঝুঁকে এল।ফিওনার শীতল নিঃশ্বাসে একপ্রকার হতবিহ্বলতা স্পষ্ট হলেও,তার চোখে অদ্ভুত এক মুগ্ধতার ছাপ ফুটে উঠছিল।
জ্যাসপার ধীরে ধীরে তার ঠোঁট,যার ভেতরে বরফ ছিল, ফিওনার নাভির ওপরে নামিয়ে আনল।ঠাণ্ডা বরফের শীতলতা আর জ্যাসপারের গরম নিঃশ্বাস একসঙ্গে মিশে ফিওনার ত্বকে বিদ্যুৎ ঝলকের মতো ছড়িয়ে পড়ল।ফিওনার শরীর হালকা কেঁপে উঠল,কিন্তু তার হাত বাঁধা থাকায় সে নড়তে পারছিল না।

জ্যাসপার তার ঠোঁট দিয়ে বরফের টুকরোটি ধীরে ধীরে ফিওনার নাভির চারপাশে বোলাতে থাকল,যেন প্রতিটি স্পর্শে আরও গভীর কোনো অনুভূতির আমন্ত্রণ জানাচ্ছিল।তারপর,সে বরফটিকে ঠোঁট দিয়েই ফিওনার নাভি থেকে পেটের মাঝখানে নামিয়ে আনল, যেখানে ঠাণ্ডার স্পর্শ আরও প্রখরভাবে ছড়িয়ে পড়ল।
তারপর, একই ধীর স্থিরতায়,জ্যাসপার বরফের টুকরোটি তার পায়ের উঁচু দিকে,থাইয়ের ওপরে বোলাতে থাকল।তার প্রতিটি স্পর্শে ফিওনার শরীর যেন শীতলতার মাঝে গলে যাচ্ছিল।ফিওনার শ্বাস ভারী হয়ে উঠল, তার ভেতরে যেন শীতলতা আর উত্তাপের এক অদ্ভুত দ্বন্দ্ব চলছিল।
জ্যাসপার এক মুহূর্ত থেমে ফিসফিস করে বলল,”তোমার মতো নাজুক মানুষ শীতেও গলে যায়,হামিংবার্ড।কিন্তু আমি কি বরফ দিয়ে তোমাকে আরও শক্ত করে তুলব,নাকি গলিয়ে দেব?”
তার কণ্ঠে ছিল এক গভীর রহস্যময় মায়া,যা ফিওনাকে আরও গভীরে টেনে নিচ্ছিল।
ফিওনার নাভিতে জমে থাকা ঠান্ডা পানির বিন্দুগুলো ধীরে ধীরে গলে যাচ্ছিল,প্রতিটি বিন্দু তার ত্বকে এক নতুন শীতল অনুভূতি ছড়িয়ে দিচ্ছিল।ফিওনার শরীর কাঁপছিল,আর তার নিঃশ্বাস ভারী হয়ে উঠছিল,যেন সেই শীতলতা তাকে আরও গভীরভাবে আক্রান্ত করছে।

জ্যাসপার তার গভীর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিয়ে ফিওনার দিকে ঝুঁকল।তার ঠোঁটে একটি রহস্যময় হাসি ফুটে উঠল,আর সে আলতো করে ফিওনার নাভিতে জমে থাকা ঠান্ডা পানির বিন্দুগুলো একে একে নিজের ঠোঁট দিয়ে শুষে নিতে শুরু করলেন।প্রতিটি স্পর্শে ফিওনার শরীরে এক অদ্ভুত উষ্ণতার ঢেউ ছড়িয়ে পড়ছিল,যা তার স্নায়ুকে তাড়িত করছিল।
ফিওনা মনে মনে চেষ্টা করছিল তার প্রতিক্রিয়াগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে,কিন্তু তার দেহের প্রতিটি অংশ যেন তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছিল।সে কিছু বলতে চাইল,কিন্তু শব্দগুলো যেন তার কণ্ঠে আটকে যাচ্ছিল।জ্যাসপার যখন তার ঠোঁট সরিয়ে নিল,তখন তার শরীরের গভীরে এক অসাধারণ অনুভূতির ঝলক অনুভব হল।
জ্যাসপার মৃদু স্বরে বলল,”তোমার নাজুক শরীর থেকে এমন স্বাদ আমি কখনো ভুলতে পারব না,হামিংবার্ড।” তার কণ্ঠে ছিল এক অদ্ভুত আকর্ষণ,যা ফিওনাকে আরও অসহায় ও সংবেদনশীল করে তুলছিলো।
জ্যাসপার আর ধৈর্য ধরে রাখতে পারল না।তার চোখে ছিল এক ধরনের নেশা, যা তাকে সম্পূর্ণরূপে ফিওনার প্রতি আচ্ছন্ন করে রেখেছিল।এক ঝটকায়,যেন সমস্ত কিছু ভুলে গিয়ে,সে ফিওনার শরীর থেকে জামাকাপড়গুলো খুলে ফেলে দিল ফ্লোরে।

ফিওনা লজ্জা ও বিস্ময়ে তার দৃষ্টি অন্যদিকে সরানোর চেষ্টা করল,কিন্তু বাঁধা থাকায় তার কোনো উপায় ছিল না।তার শরীরের ওপর জ্যাসপারের দৃষ্টির প্রভাব যেন আগুনের মতো পোড়াচ্ছিল,এক অদ্ভুত উন্মাদনায় তাকে যেন পাগল করে দিচ্ছিল।
জ্যাসপার কিছুক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকল,তার নেশালো চোখ দিয়ে ফিওনার পুরো শরীর পর্যবেক্ষণ করল।তার দৃষ্টি ছিল গভীর এবং তীব্র,যেন প্রতিটি খুঁটিনাটি সে মনে ধারণ করতে চাইছিল।ফিওনার নিখুঁত ত্বক,কোমল বক্রতা,এবং সৌন্দর্যের প্রতিটি অংশ তাকে এক জাদুকরী অভিজ্ঞান দিচ্ছিল,যেন সে এক ভাস্কর্যের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
মৃদু স্বরে,যেন নিজেকেই বলল, “কীভাবে সম্ভব এতটা নিখুঁত হওয়া?তোমার প্রতিটি অংশ যেন আমার জন্যই তৈরি হয়েছে।”তার হাত ধীরে ধীরে ফিওনার দিকে এগোল,কিন্তু সেই মুহূর্তে নিজেকে সামলে নিল।
তার ঠোঁটে এক ঝলক হাসি ফুটে উঠল,আর মনে মনে ভাবল,”এ শরীরের স্বাদ সারাজীবন নিলেও শেষ হবে না।তোমার সৌন্দর্য কেবল আমার জন্য,আর কারো জন্য নয়।”ফিওনার শরীর তখন উত্তেজনা ও অস্বস্তিতে কাঁপছিল,কিন্তু জ্যাসপারের উপস্থিতি তাকে সম্পূর্ণরূপে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল, যেন এক স্বপ্নের ভেলায় ভেসে চলেছে।

ফিওনার নিঃশ্বাস জড়ো হচ্ছিল,তার হৃদয় বেগে ধুকপুক করছিল।জ্যাসপার তার দিকে এগিয়ে আসতে থাকল,যেন সব কিছু ছাপিয়ে তাকে নিজের কাছে নিয়ে আসবে।
জ্যাসপার কিছুক্ষণ ফিওনার দিকে গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে মিষ্টি হাসি দিয়ে বলল,”আজকে তোমার দৈহিক মধু দিয়ে টেস্ট করবো।”তার কণ্ঠে ছিল এক মৃদু ও আর্কষণীয় লাইন, যা ফিওনার মনে এক অদ্ভুত উত্তেজনা ও নৈকট্য বয়ে নিয়ে এলো।
সে মুহূর্তে, জ্যাসপার ফিওনার ঠোঁটে অল্প একটু মধু ঢেলে দিল—প্রায় দুই-তিন ফোঁটা।তারপর, ধীরে ধীরে, নিজের জিভ দিয়ে লেহন করতে লাগলো, ঠোঁটের ওপর জমে থাকা মধু খেতে শুরু করলো।
ফিওনার অনুভূতি ছিল অবর্ণনীয়।মধুর মিষ্টতা আর জ্যাসপারের ঠোঁটের কোমল স্পর্শে তার দেহে যেন এক নতুন অগ্নিকুণ্ড জ্বলে উঠছিল।সে নড়াচড়া করতে পারছিল না,কিন্তু তার হৃদয়ে এক ধরণের স্বতঃস্ফূর্ত আনন্দ জেগে উঠছিল। তার শরীরের প্রতিটি স্নায়ু যেন জ্যাসপারের স্পর্শে সাড়া দিচ্ছিল।
জ্যাসপার তার কাজ আরও ধীরে করতে লাগলো। প্রতিটি লেহনের সময় সে ফিওনার চোখের দিকে তাকিয়ে ছিল,যেন তার প্রতিক্রিয়া উপলব্ধি করতে চাইছে।
ফিওনার চোখে এক ধরনের নৈবেদ্য প্রকাশ পেয়েছিল; সে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে জ্যাসপারের কাছে সমর্পণ করতে চাইছিল।

জ্যাসপার এবার ফিওনার ঠোঁটের ওপর আছড়ে পড়লো,তার ঠোঁটজোড়া একবারে নিজের মুখের ভেতরে নিয়ে চুম্বন করতে লাগলো।ফিওনার কোমল ঠোঁটের স্বাদ যেন জ্যাসপারের সমস্ত অনুভূতিকে উদ্দীপিত করে তুলেছিল,যেন তার মধ্যে একটি অবর্ণনীয় আগুন জ্বলতে শুরু করেছে।
ফিওনার ঠোঁটের স্পর্শে জ্যাসপার পাগলের মতো তাকে শুষে নিতে লাগলো,যেন তার সৌন্দর্যের গভীরতা থেকে সমস্ত আনন্দ আহরণ করতে চাইছে। এক এক করে ফিওনার শরীরের প্রতিটি রন্ধ্রে একটি নতুন অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ছিল,যা তাকে পুরোপুরি অবশ করে দিচ্ছিল।ফিওনার ঠোঁটের কোমলতা,সেই গাঢ়তা—সব কিছুই জ্যাসপারের জন্য যেন এক নেশার মতো ছিল।

জ্যাসপার উপলব্ধি করল,ফিওনাও তাকে ছুঁতে চাইছে। তার চোখে যে উন্মাদনা ছিল,এবং শরীরের অঙ্গভঙ্গি, সবকিছুই সে কথা বলছিল।তাই সে একটি কাটার দিয়ে একটানে জিপটাই খুলে দিলো।ফিওনার হাতের বাঁধন মুক্ত হতেই সে কিছুটা অবাক হয়ে গেল,কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে তার মনে একটি উষ্ণ অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ল—এখন সে স্বাধীন,এখন তার নিজের ইচ্ছার ওপর তার আধিকার।
সে দ্রুত জ্যাসপারের দিকে হাত বাড়িয়ে দিলো। ফিওনার হাত জ্যাসপারের ঘাড়ে গিয়ে থেমে গেল।
জ্যাসপার ফিওনার হাতের স্পর্শে যেন আরও বেশি উজ্জীবিত হয়ে উঠল। তার হৃদয়ে রক্তের প্রবাহ দ্রুত হয়ে উঠল।
জ্যাসপার ধীরে ধীরে ফিওনার গলা থেকে শুরু করে কোমল চুমু দিতে দিতে নিচে নামছিল।তার ঠোঁটের স্পর্শ যেন এক জাদুর মতো কাজ করছিল, যা ফিওনার শরীরে এক অদ্ভুত শিহরণ ছড়িয়ে দিচ্ছিল।
যখন জ্যাসপার তার ঠোঁটগুলো নাভির দিকে নিয়ে আসছিল,তখন ফিওনার হৃদপিণ্ডের ধড়ফড় তীব্র হয়ে উঠছিল।প্রতিটি চুম্বন তার ভিতরকার উত্তেজনাকে বাড়িয়ে দিচ্ছিল।জ্যাসপার যখন তার কোমল ত্বকের স্পর্শের সাথে সাথে কামড় দিতে শুরু করল,তখন ফিওনার শরীর যেন উষ্ণতার ঢেউয়ে ভেসে যাচ্ছিল।

জ্যাসপারের ঠোঁট এবং দন্ত ফিওনার ত্বকে আলতোভাবে কামড় দিচ্ছিল,যেন সে তার শরীরের প্রতিটি অংশে একটি স্মৃতি ফেলে রাখতে চাচ্ছে। ফিওনা অনুভব করছিল,জ্যাসপারের প্রতিটি কামড় যেন তাকে আরও গভীরভাবে প্রভাবিত করছে,এবং সে নিজের অজান্তেই তার দিকে আকৃষ্ট হচ্ছিল।
তার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল,কিন্তু এই অনুভূতি যেন এক অদ্ভুত সুখের আবেশ সৃষ্টি করছিল।ফিওনার চোখে উন্মাদনা এবং আকাঙ্ক্ষার এক গভীর প্রকাশ ছিল;সে পুরোপুরি জ্যাসপারের প্রেমে সমর্পিত হতে চাইছিল।
জ্যাসপার ফিওনাকে এক ঝটকায় ধরে ঘুরিয়ে নিজের ওপর তুলে নিল, যেন তারা এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।ফিওনা এখন তার কোমল শরীরের ওপর বসে আছে,আর এই অবস্থায় তার চোখে উন্মাদনার এক নতুন রূপ ফুটে উঠছিল।

জ্যাসপার তার পিঠে মৃদু হাতের বিচরণ শুরু করল, যেন তার স্পর্শের মাধ্যমে ফিওনার শরীরের প্রতিটি কোণে আগুন জ্বালাতে চাইছে। ফিওনার শরীরের বাঁকগুলো যেন তার স্পর্শে সাড়া দিচ্ছিল, প্রতিটি ছোঁয়া যেন এক নতুন শিহরণ সৃষ্টি করছিল।যখন জ্যাসপার তার ঠোঁট দিয়ে ফিওনার গলায় চুম্বন করতে লাগল, তখন ফিওনা এক আনন্দময় শিহরণ অনুভব করল,যা তার মন ও দেহকে অদ্ভুতভাবে জড়িয়ে ধরেছিল।
জ্যাসপারের হাত ধীরে ধীরে ফিওনার বুকে চলে গেল। সেই নরম জায়গায় তার হাতের স্পর্শ যেন বিদ্যুতের মতো কাজ করছিল।ফিওনা এক লাফে শিহরণে কেঁপে উঠলো,তার হৃদপিণ্ডের ধড়ফড় বেড়ে গেল, যেন প্রেমের এই আবেগের প্রলয় থেকে মুক্তি চাইছে।
জ্যাসপার তার শরীরের প্রতিটি কোণায় আরও গভীরভাবে প্রবেশ করতে লাগল,যেন সে ফিওনার সমস্ত অনুভূতি এবং প্রেমকে একত্রিত করতে চাইছে।

“জ্যাসপার একটানা ফিওনার সারা বুকে হাতের বিচরণ করতে লাগল।তার স্পর্শে ফিওনার মুখ থেকে এক মৃদু শীৎকার বেরিয়ে এল,যেন মুহূর্তটি তাকে অন্য জগতে নিয়ে যাচ্ছে।”
ফিওনা পেছন দিকে হেলে গেলো,আর তার পেট চলে আসে জ্যাসপারের মুখের কাছে।জ্যাসপার তখন তার জিভ দিয়ে নাভীর চারপাশে এক লহরী স্পর্শ তৈরি করে,যা ফিওনার শরীরে শিহরণ সৃষ্টি করলো।তার হৃদয়ের গতি দ্রুত হয়ে উঠলো,আর সে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে হারিয়ে ফেললো।
“জ্যাসপার নিটিংয়ের সুতো নিয়ে ফিওনার মুখ শক্ত করে বেঁধে দিলো,ফিওনা অসহায়ভাবে তাকিয়ে থাকল, তার চোখে বিস্ময় আর একরকম অস্বস্তির ছাপ ফুটে উঠলো। সুতোটা এমনভাবে বাঁধা ছিল যে তার ঠোঁটের নড়াচড়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ল, আর শ্বাস নিতে গিয়ে তার বুক ধীরে ধীরে উঠানামা করতে লাগল।

জ্যাসপার আর অপেক্ষা না করে ফিওনার ভেতরে ধীরে ধীরে আরো গভীরে নিজেকে প্রবেশ করালো। ফিওনা চিৎকার করতে পারলো না তবে মুখ দিয়ে হাল্কা গোঙানির আওয়াজ আসতে লাগলো আর চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগলো।
“ধীরে ধীরে ফিওনা শান্ত হয়ে এলো,তার ব্যথা যেন রূপান্তরিত হলো এক নতুন অনুভূতিতে। তার ঠোঁটের কোণ থেকে নিঃশব্দে বেরিয়ে আসতে লাগলো গভীর শ্বাসের মৃদু শব্দ, আর চোখে যেন এক অপার্থিব আবেশ খেলা করছিল।জ্যাসপার তার চোখের দিকে গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল, যেন প্রতিটি মুহূর্তে তাকে অচেনা এক সুখের ভুবনে ভাসিয়ে নিয়ে চলেছে।”ফিওনার মুখ থেকে বেরিয়ে এলৌ অস্পষ্ট সুখের গো*ঙানির শব্দ।
“তবে এই সুখ বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না।একঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও জ্যাসপারের থামার কোনো লক্ষণ ছিল না। ফিওনার শরীরে আবারও ক্লান্তি আর ব্যথার ঢেউ বইতে শুরু করলো।সে অস্থির হয়ে উঠল, ব্যথায় তার ঠোঁট থেকে মৃদু আর্তনাদ বেরিয়ে আসতে লাগল। তার দেহের শক্তি যেন ক্ষীণ হয়ে পড়ছিল, আর চোখে একরকম অসহায়তা ছায়া ফেলছিল।”

রাতের নিঃশব্দে চাঁদের আলো মাউন্টেন গ্লাস হাউজের দেয়াল বেয়ে গলে পড়ছিল।ভোরের প্রথম আলো এসে পৌঁছাতেই জ্যাসপারের ঘুম ভাঙল। তার হাত তখনো ফিওনার কোমল শরীর ঘিরে ছিল।কিন্তু কিছু একটা অস্বাভাবিক লাগল।ফিওনার নিঃশ্বাস ভারী,আর তার গাল জ্বলন্ত আগুনের মতো উত্তপ্ত।
“ফিওনা?”জ্যাসপার গলার স্বর নামিয়ে ডাকল,কিন্তু কোনো সাড়া নেই।তার তীক্ষ্ণ চোখ ফিওনার দিকেই আটকে গেল।মুখের রঙ ফ্যাকাসে,ঠোঁটের কোণ ফেটে গিয়েছে।এমন নিস্তেজ রূপ আগে কখনো দেখেনি সে।যেন মুহূর্তেই তার হৃদয়ের ভেতর কোথাও একটা শূন্যতা নেমে এলো।
জ্যাসপার হাত বাড়িয়ে ফিওনার কপালে স্পর্শ করল।তীব্র তাপমাত্রায় তার নিজের হাতই পুড়ে যাবার উপক্রম।“জ্বর!এমন তীব্র জ্বর?ভ্রু কুঁচকে উঠল তার।“ফিওনা!চোখ খুলো!”একের পর এক ডাক দিলেও ফিওনার নিথর দেহে কোনো সাড়া নেই।

এক মুহূর্তের জন্য জ্যাসপারের বুকের ভেতর কেমন একটা ব্যথা অনুভূত হলো।কাল রাতের সবকিছু তার মনে পড়ে গেল।সে বুঝল—তার অপ্রতিরোধ্য উন্মাদনা হয়তো ফিওনাকে এমন অবস্থায় নিয়ে এসেছে।তার নিজের শক্তি যে কোনো সাধারণ মানুষের পক্ষে সহ্য করা সম্ভব নয়,সেটাই ভুলে গিয়েছিল সে।
“এটা আমার দোষ,”গম্ভীর কণ্ঠে নিজেকেই বলল জ্যাসপার। তার চোয়াল শক্ত হয়ে গেল,চোখের মধ্যে অপরাধবোধের অন্ধকার ছায়া নেমে এলো।

সে তৎক্ষণাৎ উঠে দাঁড়ালো।কোনো সময় নষ্ট করা যাবে না। ফিওনাকে এমন অবস্থায় ফেলে রাখা অসম্ভব।দ্রুত একটি তোয়ালে পানিতে ভিজিয়ে নিয়ে ফিওনার শরীর মুছিয়ে দিতে লাগল সে।তার সোনালি চুলগুলো ভেজা তোয়ালের আড়ালে ছড়িয়ে পড়েছে,আর কপালের চারপাশে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে।
পোশাক বদলে তাকে নরম কম্বলের নিচে শুইয়ে দিয়ে জ্যাসপার নিজেই ফিওনার উষ্ণ হাত ধরল।ভেতরটা কেঁপে উঠল তার। “আমি তোমাকে সুস্থ করব,হামিংবার্ড,”মৃদু কণ্ঠে প্রতিশ্রুতি দিল সে।

সমস্ত গ্লাস হাউজে যেন দ্রুত খবর ছড়িয়ে পড়ল—ফিওনা অসুস্থ।থারিনিয়াস প্রথমেই পরিস্থিতি বোঝার জন্য ছুটে এলো। “প্রিন্স,আমি মেডিসিন আনার ব্যবস্থা করছি,কিন্তু… তার অবস্থা খারাপ দেখাচ্ছে।”
“এখানকার কোনো ওষুধ ওকে সুস্থ করতে পারবে না,” জ্যাসপার কড়া গলায় বলল।“ডক্টর আগ্নিসকে খবর দাও। বলো,তাকে এই মুহূর্তে পৃথিবীতে আসতে হবে।”
থারিনিয়াস ভ্রু কুঁচকে বলল,“কিন্তু প্রিন্স… ডক্টর আগ্নিস তো ড্রাগনদের চিকিৎসক।মানব কন্যার জন্য তার কী-ই বা করার আছে?”

জ্যাসপার চোখ তুলে থারিনিয়াসের দিকে তাকাল।সেই দৃষ্টি যেন বিদ্যুতের মতো জ্বলজ্বল করছিল। “তোমার কি মনে হয়, আমি ডক্টর আগ্নিস সম্পর্কে জানিনা?তিনি শুধু ড্রাগন চিকিৎসক নন।মানব চিকিৎসায়ও তার জ্ঞান অসামান্য।”
থারিনিয়াস কিছু বলতে যাচ্ছিল,কিন্তু তখনই সিলভা আর অ্যালিসা এসে উপস্থিত হল।
“প্রিন্স,”অ্যালিসা হঠাৎ বলে উঠল, তার গলায় ঈর্ষার আভাস স্পষ্ট,“সামান্য একটি মানব কন্যার জন্য এত অস্থির হওয়া কি উচিত?ডক্টর আগ্নিসকে আনতে গেলে সময় আর শক্তি দুটোই নষ্ট হবে।”
জ্যাসপার তৎক্ষণাৎ অ্যালিসার দিকে তাকাল।সেই দৃষ্টিতে এমন কিছু ছিল,যা অ্যালিসার আত্মা পর্যন্ত কাঁপিয়ে দিল। তার কণ্ঠের শক্তি যেন বজ্রের মতো গম্ভীর হয়ে উঠল। “ফিওনা সামান্য নয়,অ্যালিসা।সে আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আর আমি যা বলেছি সেটা করাই হবে।”
অ্যালিসা চোখ নামিয়ে নিল।কিছুক্ষণ আগে পর্যন্ত তার আত্মবিশ্বাস ছিল দৃঢ়, কিন্তু জ্যাসপারের সেই এক দৃষ্টিতে সমস্ত ইচ্ছাশক্তি যেন ভেঙে পড়ল।”

আযদাহা পর্ব ৪০

অন্যদের নির্দেশ দিয়ে জ্যাসপার একাই ফিওনার পাশে বসে পড়ল।তার চোখে আর সেই কঠোরতা নেই,বরং এক অদ্ভুত নরম আলো ছড়িয়ে পড়ছে।সে ফিওনার হাত নিজের হাতে তুলে নিল।
“তোমাকে সুস্থ হতেই হবে,” মৃদু কণ্ঠে বলল জ্যাসপার। তার কণ্ঠে প্রতিটি শব্দে দায়িত্ব,অপরাধবোধ আর আবেগের মিশ্রণ।“তুমি আমাকে ছেড়ে যেতে পারবে না,ফিওনা।”
গ্লাস হাউজের বাইরের বাতাসে তখনো সূর্যের আলো ফুটে উঠছিল,কিন্তু ভেতরের পরিবেশ ভারী।জ্যাসপার জানত—এই যুদ্ধ তার নিজের সাথেই।ফিওনাকে সুস্থ করার জন্য সে শেষ পর্যন্ত যা প্রয়োজন,তাই করবে।

আযদাহা পর্ব ৪২