আষাঢ় রাতের সন্ধ্যা পর্ব ১১
Raiha Zubair Ripti
টানা দু’দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। এই বৃষ্টিতে জনজীবনে বিরক্তিকর ভাব ফুটে উঠেছে। সন্ধ্যা গত দু’দিন ধরে নিজেকে গৃহবন্দী করে রেখেছে। রুম থেকে বেরই হয় না বললেই চলে। নয়না বেগম প্রতিবেলায় খাবার টা রুমেই এসে দিয়ে যায়। দু’দিন হলো মায়ের কাছেও যাচ্ছে না সন্ধ্যা। সন্ধ্যার মা শেফালী বেগম নিজেই নয়না বেগমের সাহায্যে সন্ধ্যার রুমে আসলো। সন্ধ্যা তখন বেলকনিতে বসে নির্নিমেষ চোখে বৃষ্টি দেখছে। পাশে এসে যে তার মা দাঁড়িয়ে আছে সেটা ঘুনাক্ষরেও টের পায় নি। নয়না বেগম চলে যেতেই শেফালী বেগম মৃদুস্বরে মেয়েকে ডেকে উঠলো –
-“ সন্ধ্যা।
সন্ধ্যা চমকে উঠলো। পাশ ফিরে মা’কে দেখে অপ্রস্তুত হয়ে বসা থেকে উঠে মায়ের কাছে এগিয়ে এসে বলল-
-“ মা তুমি! কখন এসেছো?
শেফালী বেগম হাত বাড়িয়ে মেয়ের গালে হাত দিয়ে বলল-
-“ এসেছি কেবলই।
সন্ধ্যা মা’কে নিয়ে চেয়ারে বসালো। তারপর সে নিজেও বসতেই শেফালী বেগম বললেন –
-“ কিছু হয়েছে সন্ধ্যা তোর?
সন্ধ্যা বৃষ্টি গুলোর দিকে তাকিয়ে বলল-
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
-“ ক..কি হবে মা?
-“ দু’দিন হলো আমার কাছে যাস নি। শ্রেয়া বা নিখিল কেউ কিছু বলেছে?
-“ না না ওরা কি বলবে আমায়।
-“ তাহলে?
-“ এ..এমনি পড়াশোনা নিয়ে একটু ব্যস্ত এই আর কি।
-“ খেয়েছিস রাতে?
-“ হু।
-“ তোর খালা তোকে কিছু বলেছে?
-“ কি বলবে খালা?
-“ কিছু বলে নি তাহলে?
-“ না।
-“ আচ্ছা তোর গলা এমন বার বার কেঁপে উঠছে কেনো?
-“ ঠান্ডা লেগেছে একটু।
-“ এখানেই বসে থাকবি এভাবে? ঘুমাবি না?
-“ হু। আজ আমার সাথে ঘুমাবে একটু প্লিজ?
-“ আচ্ছা আয়।
শেফালী বেগম উঠতেই সন্ধ্যা উঠে দাঁড়ালো। হাত ধরে রুমে এসে শেফালী বেগম বিছানায় শুয়ে সন্ধ্যা কে শুতে বললো। সন্ধ্যা বাতি নিভিয়ে বিছানায় এসে মা’কে জাপ্টে জড়িয়ে ধরলো। শেফালী বেগম মেয়ের মাথায় হাত বুলালো। সন্ধ্যার দৃষ্টি তখনও জানালা ভেদ করে বাহিরে। কেমন যেনো লাগছে৷ অনুভূতি টা ভীষণ বাজে। মনে হচ্ছে বিরাট বড় কোনো ভুল সে করে বসে আছে। আচ্ছা লোকটা ঠিকমতো আমেরিকা পৌঁছেছে তো? রাত কে কি একবার জিজ্ঞেস করে দেখবে? নাকি ফোন করবে? না না ফোন করলেই লোকটা যদি অন্য কিছু ভেবে বসে তখন? রাতকেই একবার জিজ্ঞেস করে নিবে সময় সুযোগ বুঝে।
পরের দিন সকালে খাবার খেয়ে রুম থেকে বের হয়ে উপরতলার রাত দের ফ্ল্যাটে এসেছে। আমেনা বেগম সন্ধ্যাকে দেখে ভীষণ খুশি। সন্ধ্যা কে ভেতরে আসতে বলল। সন্ধ্যা ভেতরে আসলো। আমেনা বেগম সন্ধ্যা কে সোফায় বসতে বলে চা বানাতে গেলেন। দু কাপ চা এনে সন্ধ্যার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল-
-“ নাও চা খাও।
সন্ধ্যা চায়ের দিকে তাকিয়ে বলল-
-“ আরে আন্টি কষ্ট করে চা কেনো বানাতে গেলেন।
-“ আরে নাও। কষ্টের কি আছে।
সন্ধ্যা চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বলল-
-“ আর কেউ নেই বাসায়?
-“ না রাত তো ভার্সিটি গেছে।
-“ ওহ্ আঙ্কলকে তো দেখি না। তিনি কোথায়?
-“ উনি তো বেঁচে নেই মা।
সন্ধ্যার মুখ ছোট হয়ে আসলো।
-“ স. সরি আন্টি। আমি আসলে বু..
-“ আরে সরি বলিও না। তুমি জানতে না বিধায় জিজ্ঞেস করলে। তা তোমার মায়ের কি উন্নতি হচ্ছে আগের থেকে?
-“ হ্যাঁ একটু হয়েছে।
-“ উন্নতি হলেই ভালো।
-“ হুম। আচ্ছা আন্টি একটা কথা জিজ্ঞেস করতে পারি?
-“ হুমম করো না।
-“ বলছি আন্টি…
-“ সন্ধ্যা তোর মায়ের শ্বাস কষ্ট শুরু হয়েছে তাড়াতাড়ি আয়।
নয়না বেগমের কথাটা কর্ণকুহর হতেই সন্ধ্যা তড়িঘড়ি করে উঠে দাঁড়িয়ে ছোট লাগালো। পেছন পেছন আমেনা বেগমও আসলো।
সন্ধ্যা রুমে আসতেই দেখলো তার মায়ের মুখে ইনহেলার দেওয়া হচ্ছে। সন্ধ্যা মায়ের মাথার কাছে এসে বসে। মাথায় হাত বুলিয়ে অস্থির কন্ঠে বলে-
-“ মা ও মা এখনও কষ্ট হচ্ছে?
শেফালী বেগম ইনহেলার টা সরিয়ে জোরে জোরে শ্বাস নিলো। সন্ধ্যার মুখের দিকে তাকিয়ে ঝাপ্সা চোখে বলল-
-“ ঠ…ঠিক আছি।
সন্ধ্যা যেনো দেহে প্রাণ ফিরে পেলো। আমেনা বেগম কিছুক্ষণ শেফালী বেগমের পাশে বসে চলে আসলেন।
রাতে একটু বৃষ্টি কমলে সন্ধ্যা ছাঁদে আসে। কি হচ্ছে তার সাথে এটা? কেমন অসহ্য লাগছে সব৷ বুকে কেমন ব্যথা। হাতে থাকা ফোনটাতেও মেসেজ আসছে না তিন দিন ধরে। কেমন অচল মনে হচ্ছে এই ডিভাইস টা।
রাত ও ছাঁদে এসেছিল একটা ফোন করার জন্য। কিন্তু সন্ধ্যা কে দেখে দাঁড়িয়ে গেলো। পিছু ফিরে চলে আসার জন্য উদ্যত হলে সন্ধ্যা দেখে ফেলে। রাতের নাম ধরে ডাক দিলে রাত দাঁড়িয়ে যায়। সন্ধ্যা এগিয়ে আসতে আসতে বলে-
-“ একটু দাঁড়ান। আপনার সাথে কথা ছিলো।
রাত পেছন না ফিরেই বলল-
-“ কথা তাও আবার আমার সাথে?
-“ হু। আপনার ভাই ঠিক মতো পৌঁছেছে?
-“ সেটা জেনে আপনি কি করবেন?
-“ না..মা..মানে এমনি।
-“ ওয়েট করুন আমি আসছি।
রাত নেমে গেলো ছাঁদ থেকে। মিনিট দশেক পর আসলো হাতে একটা চিরকুট নিয়ে। সন্ধ্যার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল-
-“ নিন গিফট জাস্ট ফর ইউ।
সন্ধ্যা ভ্রু কুঁচকালো।
-“ কি এটা?
-“ খুলেই দেখুন।
সন্ধ্যা খুলে দেখলো। প্রথমেই গোটা বড় বড় অক্ষরে লেখা
“ প্রিয় সন্ধ্যাবতী ”
জানো? তোমাকে নিজের সবটা দিয়ে ভালোবাসছিলাম। যেদিন প্রথম তোমায় দেখি সেদিনই মন কুঠুরিতে তোমাকে বসিয়েছিলাম। তোমায় প্রথম দেখেছিলাম হসপিটালের পাশে। শ্রেয়ার সাথে এসেছিলে। তোমার হাত কে’টে গিয়েছিল। তখন আমি মেডিক্যলের ফাইনাল ইয়ারের স্টুডেন্ট ছিলাম। হাতের যন্ত্রণায় ঠোঁট উল্টে কান্না করছিলে। আমি তখন কোনো একটা দরকারে ডক্টর আফাজ স্যারের কেবিনে এসেছিলাম। স্যার তোমার হাতে মেডিসিন লাগাচ্ছিল আর তুমি শ্রেয়া কে জড়িয়ে ধরে থেকে থেকে কেঁদে উঠছিলে। সামান্য হাত কাটায় একটা মেয়ে যদি এভাবে কাঁদে তাহলে এর চেয়ে আরেকটু বেশি কাটলে কিভাবে কাঁদবে সেটা ভাবতেই হেসে ফেলছিলাম। শ্রেয়া আমার ক্লাস মেট ছিলো।
তুমি যে তার বোন সেটা জানতেই বেশ চমকে উঠেছিলাম। শ্রেয়ার সাথে দেখা হলেই প্রায় তোমার কথা জিজ্ঞেস করতাম। এদিকে বাসাও চেঞ্জ করতে হতো। শ্রেয়াকে জানালাম তাদের বাসার আশেপাশে ফ্ল্যাট খালি আছে কি না। শ্রেয়া জানালো তাদের বাসায়ই খালি আছে। ব্যাস তারপর তোমাকে দেখার ইচ্ছে দমাতে না পেরে কাছাকাছি থাকার জন্য তোমাদের বাসায় শিফট হলাম। তখন সদ্য হসপিটালে জয়েন করেছি। তোমাদের বাসায় আসার আট দিনের মাথায় জানতে পারলাম শ্রেয়ার বিয়ে ঠিক হয়েছে। ইনভাইট করে গেলো আমাদের। বিয়ের দিন সারা বাড়ি আমি তোমাকে খুঁজলাম। কিন্তু পেলাম না। জানতে পারলাম বাড়ি ছেড়ে চলে গেছো তুমি।
কিন্তু কেনো চলে গেলে তা জানতে পারলাম না। ভেবেছিলাম ক’দিন পরই চলে আসবে। কিন্তু ক’দিন টা আর ক’দিনে থাকলো না। আমি অপেক্ষা করতে থাকলাম এই বুঝি তুমি চলে আসলে। অপেক্ষা টা হয়ে গেলো ৪ বছর। এর ভেতর একদিন জানতে পারি তোমার বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার কারন টা। সেদিন এতোটা খারাপ লেগেছিল যা বলার বাহিরে। প্রিয় মানুষ টা কাউকে ভালোবেসেছিল এটা শোনার মধ্যে ও কেমন যেনো একটা যন্ত্রণা হচ্ছিলো। ৫ টা বছর আমি তালাবদ্ধ করে রেখেছিলাম সেই স্নিগ্ধ অনুভূতি টাকে। কাউকে বুঝতে দেই নি। কারন আমি বিশ্বাস করি অনুভূতি কাউকে বুঝতে দেওয়ার মতো জিনিস না৷ এটা কেবল অনুভব করার বিষয়। আমি প্রতি নিয়ত শুধু অনুভব করে গেছি। ২৯ বছরের এই যুবক অন্য কোনো রমণীর দিকে আর তাকাতেই পারে নি মুগ্ধতা নিয়ে। কারন সে মানে যাকে মন থেকে চাওয়া হয় তাকে সৃষ্টি কর্তা পাইয়ে দেয়। বিশ্বাস করতাম সৃষ্টি কর্তা আমাকে তোমায় পাইয়ে দিবে। সেজন্য প্রতিটা মূহুর্ত শুধু গুনে যেতাম। তবে বুঝতে পারি নি এতোটা চাওয়ার পরও একটা মানুষ সেই মানুষটিকে পাবে না। সে জন্য হয়তো আমার কষ্টের পাল্লা টা এতো ভারী আজ। তবে
আমাকে হারালে হয়তো তুমি বেশিকিছু হারাবে না
হারাবে কেবল একজোড়া চোখ,
যা পৃথিবীর সমস্ত মুগ্ধতা নিয়ে তোমায় দেখে।
হারাবে কেবল একজোড়া ঠোঁট,
যা তোমার কথা ভাবতেই হেসে উঠে।
আমাকে হারালে তুমি সত্যি খুব বেশিকিছু হারাবে না
হারাবে কেবল এক সমুদ্র বিশ্বাস,
যা তোমার নানান ভুলের পরেও বেড়ে চলে।
হারাবে কেবল এক আকাশ ভরসা,
যা তোমার পাশে কাউকে পাওয়ার আশ্বাস দেয়।
হারাবে কেবল এক পুরুষের বিরতিহীন অপেক্ষা,
যে জাগতিক জগতের বিরুদ্ধে থমকে দাঁড়িয়ে আছে।
আমাকে হারালে হয়তো তুমি সত্যিই বড্ড বেশিকিছু একদম ই হারাবে না,
তোমার খুব বড়সড় ক্ষতিও হবে না।
থমকে যাবে না তোমার সময় বা জীবনের গতিপথ,
কেউ আঙুল তুলে বলবেও না কিছুই তোমায়।
আমাকে হারালে কেবল তোমার একটি আক্ষেপ রইবে,
আমাকে না পাওয়ার আক্ষেপ।
একজোড়া চোখে,ঠোঁটের, হাতের না পাওয়ার আক্ষেপ,
হাতে হাত রেখে বিশ্বাস, ভরসা দেয়ার মানুষের অভাব
“আমি আছিতো” বলার জন্য আমির অভাব।
আমাকে হারালে তুমি কেবল একটি অভ্যাস ই হারাবে
যে অভ্যাস লেপ্টে আছে তোমার জীবন ঘিরে।
এর বেশি আর কিছুই তুমি হারাবে না!
চিঠিটা পড়া শেষ হতেই সন্ধ্যার চোখ থেকে গড়িয়ে কয়েক ফোটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো। পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা রাতের চোখ মুখ কঠিন ভাব। তার ভীষণ রাগ হচ্ছে এই সন্ধ্যার উপর। কেমন নারী সে? সে কি করে তার ভাইকে এতোটা কষ্ট দিতে পারলো?
-“ কাঁদছেন কেনো? ভালো লাগছে না এখন? শান্তি পাচ্ছেন না? কি এমন ক্ষতি হতো আমার ভাইয়ার ভালোবাসা স্বীকার করলে? এক বুক যন্ত্রণা নিয়ে আমার ভাই দেশ ছেড়ে চলে গেলো শুধুমাত্র আপনার জন্য। আপনাকে আমি কখনই ক্ষমা করাবো না সন্ধ্যা৷ আজ তিন দিন হয়ে গেলো ভাইয়ার কোনো খোঁজ নেই।
সন্ধ্যা ত্বরিত গতিতে তাকালো রাতের দিকে।
-“ খোঁজ নেই মানে?
-“ ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। মা কে হেনোতেনো বলে বুঝিয়ে রেখেছি। কিন্তু আমি তো জানি আমার ভাইয়া শুধু মাত্র আপনার জন্য ই ফোন টোন বন্ধ করে রেখেছে। আপনি এতো নির্দয় কেনো হুমম? আমার ভাইয়ের মতো মানুষ আপনি আর পাবেন কোথাও? আপনি জানেন সেদিন আপনি প্রত্যাখ্যান করায় সেদিন রাতেই আমার ভাই চলে গেছে। তার চোখ মুখে আমি অসহায়ত্বতা দেখেছি। যেই ভাইয়ে চোখ মুখে সারাজীবন আমি রাগ গম্ভীর ভাব দেখে এসেছি সেই ভাইয়ের মুখে প্রথমবার অসহায়ত্ব দেখেছি। শুধুমাত্র আপনার জন্য। আমার ভাই খুব শক্তমনের সেজন্য হয়তো পারে নি কান্না টা করতে। আপনারা মেয়েরা এমন কেনো বলুন?
সন্ধ্যা আশেপাশে তাকিয়ে চোখে আসা জল টুকু মুছে নিলো। আশ্চর্য তার চোখে জল কেনো? এমন হচ্ছে কেনো? সে তো ভালোবাসে না আষাঢ় কে। আর না কোনো দূর্বলতা আছে তাকে ঘিরে তাহলে?
-“ তারজন্য আপনার ভাই ফোন বন্ধ করে দিবে? ফ্যামিলির থেকে নিশ্চয়ই আমি বড় নই।
-“ সেটা তাকেই জিজ্ঞেস করুন। আপনার জন্য কেনো আমাদের সাথে যোগাযোগ করছে না। আপনাকে আমি মোটেও এমন আশা করি নি সন্ধ্যা। আমার ভাইয়ের অশান্তির কারন যে হয় আমি তাকে সহ্য করতে পারি না। আপনাকেও পারছি না আমি সহ্য করতে।
-“ এখানে আমার কি দোষ রাত? আমি আপনার ভাইকে গ্রহণ করি নি সেজন্য? ঠকে যাওয়া নারী কে কখনও দেখছেন দ্বিতীয় বার খুব সহজে কাউকে বিশ্বাস করতে? আমার দ্বারা হয় নি। আমি পারি নি মন থেকে আপনার ভাইকে গ্রহণ করতে। কারন আমার ভালোবাসা থেকে বিশ্বাস অনেক আগেই উঠে গেছে। আমার ভয় হয়। মানুষ পরিবর্তনশীল। প্রথম বার ঠকে গিয়ে দ্বিতীয় বার আমি আর ঠকতে চাই না।
-“ আপনার কেনো মনে হলো আমার ভাই আপনাকে ঠকাবে? ৫ বছর সে আপনাকে ভালোবেসে গেছে আমরা কেউই জানি নি। ৫ বছরে তো আমার ভাইয়ের অনুভূতি চেঞ্জ হয় নি। সে দূর থেকেই ভালোবেসে গেছে। ঠকে যাওয়া নারীর জীবনেও দ্বিতীয় বসন্ত আসে। আর সে বেটারের থেকে বেস্ট কেই পায় জীবনে। আর আমি গ্যারান্টি দিতে পারি আমার ভাইয়া বেস্ট ফর ইউ।
-“ আমার দিকটা বুঝতেছেন না আপনারা। আপনারা শুধু আপনাদের দিক বুঝতেছেন।
-“ আপনি একটা হার্টলেস মেয়ে। এমন তো না যে আজীবন বিয়ে না করে কাটিয়ে দিবেন। বিয়ে তো সেই করবেন ই কোনো না কোনো পুরুষ কে। তখন তো আপনার এসব মনে আসবে না যে আপনি ঠকে যাওয়া নারী। আপনার ভয় হয় ব্লা ব্লা ব্লা..
সন্ধ্যা আর কথা বাড়ালো না। রাত তার ভাইয়ের হয়ে কথা বলবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সন্ধ্যার হৃদয় পুড়ছে কেনো? সন্ধ্যা চিঠি টা হাতে নিয়েই চলে আসলো।
আষাঢ় রাতের সন্ধ্যা পর্ব ১০
রাত সন্ধ্যার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বলল-
-“ আপনি হয়তো জানেন না দূরত্ব ভালোবাসা বাড়ায়। আমি বিশ্বাস করি আপনিও ঠিক আমার ভাইকে ভালোবাসবেন। এবং স্বীকার ও করবেন। তারজন্য যা যা করতে হয় আমি রাত সব করবো আমার ভাইয়ের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য। কারন রাতের জীবনে তার ভাই সবার আগে।