আষাঢ় রাতের সন্ধ্যা পর্ব ১৯
Raiha Zubair Ripti
-“ এই যে মিস্টার আসুন আপনার মা ডাকছে আপনাকে।
আকস্মিক নীরব জায়গায় মেয়েলি কন্ঠ শুনতে পেরে চমকে উঠলো রাত। কিছু শুনে ফেলেনি তো আবার এটা বারবার উঁকিঝুঁকি করছে। লম্বা করে দুটো শ্বাস নিয়ে পেছন ফিরে দেখলো কনা ছাঁদের দরজার সাথে হেলান দিয়ে দু হাত বুকে গুঁজে আছে। মুখে লেগে আছে হাসি। আকস্মিক কনার হাসি দেখে ভ্রু কুঁচকালো রাত। এগিয়ে এসে বলল-
-“ তুমি ছাঁদে! এসেছো কখন?
-“ এই তো কেবল।
-“ আমি যে বলেছি কিছু শুনেছো?
-“ হ্যাঁ শুনেছি।
রাত ঘাবড়ে গেলো।
-“ কি শুনেছো?
-“ আপনি বললেন আমি কখন এসেছি। তারই তো সঠিক জবাব দিলাম। তারপর ও বলছেন আমি যে বলেছি কিছু শুনেছো।
-“ আর কিছু শুনো নি?
-„ না।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
রাত হাফ ছেড়ে বাঁচলো। তারপর সাইড কেটে নিচে নেমে চলে আসলো। কনা রাতের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে পেছেন পেছন চলে আসলো।
রাত সন্ধ্যা দের ফ্ল্যাটে আসতেই দেখলো আষাঢ় আর সন্ধ্যা সোফায় বসে কথাবার্তা বলছে। আমেনা বেগম রাত কে দেখেই বলল-
-“ কই ছিলি? খেতে বস। আমরা খেয়ে নিয়েছি।
শ্রেয়া খাবার বাড়লো। কনাকে পেছনে দেখে কনার আর রাতের উদ্দেশ্যে বলল-
-“ রাতকানা কথাটা বলেই রাত আর কনার দিকে তাকালো। -“ সরি রাত আর কনা। তোমরা দুজনই খাও নি। এসো বসো খেয়ে নাও।
রাত বসে পড়লো খেতে। কনা রাতের সামনা-সামনি এসে বসে খেতে আরম্ভ করলো। রাত ভীষণ মনোযোগ সহকারে খাবার খাচ্ছে। কনা খাওয়ার মাঝে একটু একটু করে রাত কে দেখছে। রাত খাওয়া শেষ করে দাঁড়াতেই আমেনা বেগম সবার থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলো। আষাঢ় সন্ধ্যার দিকে তাকিয়ে বলল-
-“ আসছি।
সন্ধ্যা হুম বললো। আষাঢ় আর রাত চলে গেলো। সন্ধ্যা রুমে এসে শাড়ি চেঞ্জ করে আসে।
কনা বিছানায় শুয়ে শুয়ে ফেসবুক স্ক্রোল করছিলো। পাশেই ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসলো সন্ধ্যা চুল বাঁধার জন্য । আকস্মিক একটা ভিডিও সামনে আসলো। এক মহিলা হাতে তসবিহ নিয়ে পাঠ করছে। প্রায়ই আসে এই মহিলার ভিডিও। কখনও কুরআন শরীফ পড়া নিয়ে ভিডিও করে তো কখনও নামাজ নিয়ে। আশ্চর্য নামাজ কালাম এসব ভিডিও কি আদোও ঠিক? কনার রাগ হলো। সন্ধ্যাকে শুনিয়ে বলল-
-“ জানিস সন্ধ্যা আজকাল না মনে হচ্ছে জাহান্নাম থেকে বেশ কিছু ইবলিশ ছাড়া পেয়েছে। আর তারা সোজা পৃথিবীতে অবতারণ হয়েছে এক প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলার রূপে।
সন্ধ্যা কিছু বুঝলো না। পেছন ফিরে বলল-
-“ মানে?
-“ মানে আর কি দেখ ফেসবুকে ঢুকে শান্তি নেই এই মহিলা র ভিডিও গুলো শুধু সামনে আসতেছে। কোন লেভেলের মানুষ ভাই এরা তসবিহ পাঠ করে ভিডিও করতেছে। আর সাথে আছে ভাইয়ের মেয়ে। ফুপুরে বলছিস নামাজ পড়তে যাচ্ছিস তাকেও যেতে। ভালো কথা কিন্তু মুখের উপর থেকে খিমার টা তুলে দাঁত কেলিয়ে কেনো বলতে হবে জুম্মা মোবারক?
সন্ধ্যা টিটকারি মেরে বলল-
-“ ধর তোর শাশুড়ী আর ননদ এমন টাইপের হলো তাহলে কি করবি?
-“ কখনই না। আমার ননদ নেই তুইই তো বললি। তারা তো দুই ভাই। আর তোর শাশুড়ী তো এমন টাইপের না। সো আমার এমন শাশুড়ী হবার প্রশ্নই আসে না।
সন্ধ্যা ভ্রু কুঁচকে বলল-
-“ তুই কি সিরিয়াস রাত কে নিয়ে?
-“ অবশ্যই।
-“ হোয়াই? আমি তো ফান করে বলেছি সব।
-“ বাট আমি সিরিয়াস।
-“ কিউ? তুই না ওরে দেখতে পারতি না?
-“ প্রথম প্রথম এমনটাই হয় বুঝলি? তুই তো আষাঢ় কে প্রথমে মানতে চাস নি। পরে তো চোখে চোখে হারাচ্ছিস। ধরে নে এমন কিছুই।
-“ রাত জানে?
-“ না। জানাবো নি কোনো এক সময়। তবে শোন তোর দেবরের লাইফে কাউকে ঢুকতে দিস না। আমার জন্য জায়গা ধরে রাখিস।
-“ আচ্ছা।
কথাটা বলে চুল বাঁধা শেষ হলে সন্ধ্যা বিছানায় এসে শুয়ে পড়ে।
সকালে,,, কনা বাসা থেকে বের হতেই দেখা মিলে রাতের। রাত কাধে ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কনা সেধেই বলল-
-“ এই মিষ্টার নাইট শুনুন।
রাত পেছন ফিরে বলল-
-“ হু বলুন।
-“ কোচিং ই তো যাবেন তাই না?
-“ হু।
-“ চলুন আজ এক সাথে যাওয়া যাক। দেখুন আবহাওয়া টা কি শীতল।
-“ আবহাওয়ার সাথে একসাথে যাওয়ার বিষয়টা ঠিক বুঝলাম না।
-“ হাঁটা ধরুন বলছি।
-“ হু।
-“ বাহ্ একবার বলাতেই হাঁটা ধরলেন। আজ আর না না করলেন না দেখছি। কারন টা কি?
-“ জানি না। আপনি কোন দেশে হায়ার এডুকেশন করতে যাবেন?
-“ কানাডা। আর আপনি?
-“ সেম।
-“ নাইস। ভাবুন আপনার আর আমার ফ্লাইট একই দিনে হলো। আমরা এই জায়গায় চান্স পেলাম। কেমন হবে?
-“ কেমন হবে?
-“ আটেহ্ ভালোই হবে। আসলেই অচেনা জায়গায় আপন বলতে অন্তত কেউ একজন থাকবে।
-“ আপন মানে?
-“ না মানে চেনা। আচ্ছা আপনার গার্লফ্রেন্ড আছে?
রাত ভ্রু কুঁচকালো।
-“ হোয়াই? এসব জেনে কি করবেন?
-“ না এমনি। আসলে আমি সিঙ্গেল।
-“ তো?
-“ তো মানে কি? এমনি আস্ক করছি। সিঙ্গেল নাকি ডাবল?
-“ ডাবল।
কনা হেঁসে দিলো।
-“ হাসছেন কেনো?
-“ না এমনি চলুন এসে গেছি আমরা।
রাত কনা এক সাথে ভেতরে ঢুকলো। ক্লাসে আসতেই দেখলো কোচিং-এ হওয়া এক বান্ধবী তার জন্য জায়গা ধরে রেখেছে। কনা গিয়ে তার পাশে বসলো। মনোযোগ দিয়ে ক্লাস করলো। ক্লাস শেষে বের হলে কনার ফ্রেন্ড নিশা কনা কে ডেকে বলল কিছুক্ষণ বসে যেতে। তারা আড্ডা দিবে। রাত একটু লাইব্রেরি তে গেছে। কনা বসে গেলো। ক্লাসের ই একটা ছেলে নাম তার রাহুল। সে কনার পাশে এসে বসলো। আগ বাড়িয়ে বলল-
-“ হেই কনা। কেমন আছো?
কনা পাশ ফিরে তাকালো। রাহুল কে পাশে বসা দেখে ভরকে গেলো। আসলে রাত আর নিশা ব্যতিত আর কারো সাথেই কথা হয় নি কনার। কনা সৌজন্যের খাতিরে বলল-
-“ জ্বি আলহামদুলিল্লাহ ভালো। আপনি?
–“ আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আচ্ছা তোমার বাসা কোথায়?
-“ কেনো?
-“ না এমনি।
-“ রাজশাহী।
-„ আমি গ্রামের বাড়ির কথা বলি নি। বলিছি এখানকার ঠিকানার কথা।
-“ আমাদের তো এখানে বাসা নেই।
-„ ভাড়া থাকো?
-“ তাহলে?
-“ ফ্রেন্ড এর বাসায় থাকি।
-“ সেটা কোথায়?
-“ এই তো..
-“ বাসায় যাবে না?
রাত কথাটা বলতেই কনা সহসা দাঁড়িয়ে গেলো। ব্যাগ টা কাঁধে নিয়ে বলল-
-“ হ্যাঁ যাবো চলুন।
রাহুল দাঁড়িয়ে রাতকে বলল-
-“ তুমি চিনো ওর বাসা?
-“ হুমম কেনো?
-“ না এমনি। মেসেজ চেক করিও পরে।
রাত আর জবাব না দিয়ে হাঁটা ধরলো। কনা পেছন পেছন আসলো। রাস্তার মোরে এসে দাঁড়াতেই রাত জিজ্ঞেস করলো-
-“ রাহুল কি বলেছে?
-“ বাসার ঠিকানা জিজ্ঞেস করতেছিলো।
-“ কেনো?
-“ বললো এমনি।
-“ আচ্ছা।
সন্ধ্যার দিকে খবর আসলো নিখিল বিয়ে করে নিয়েছে তারই এক কলিগ কে। নাম তার ঝুমা। দেখতে ভালোই সুন্দর। শ্রেয়া ফোনে তাদের দুজনের বিয়ের ছবি দেখছে। যা একটু আগে নিখিলের ফ্রেন্ড পাঠিয়েছে। সন্ধ্যা উঁকি দিয়ে দেখলো ছবিটা এক নজর। সন্ধ্যার মা পাশেই সোফায় বসে আছে। নিখিলের বিয়ের কথা শুনার পর থেকেই থম মে’রে বসে আছে৷ এক মাস ও তো হলো না তাদের ডিভোর্সের। এরমধ্যে নিখিল বিয়েও করে নিলো! সন্ধ্যার মা শ্রেয়ার দিকে তাকিয়ে বলল-
-“ এই ছেলেকে বিয়ে করার জন্য ই না তুই সু’ইসাইড করতে চেয়েছিলি? তোর বাবা কে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে রাজি করিয়েছিলি? এখন কি পেলি? আমার ছোট মেয়ের সুখ শান্তি কেঁড়ে নিয়ে? দিন শেষে তুই তো নিজেই অসুখী হয়ে গেলি শ্রেয়া।
সন্ধ্যা কপাল কুঁচকে মায়ের দিকে তাকালো।
-“ সুই’সাইডের চেষ্টা মানে?
-“ হ্যাঁ। শ্রেয়া সু’ইসাইডের চেষ্টা করেছিলো নিখিল কে পাবার জন্য। তখন তুই তোর খালার বাসায় ছিলি। আমরা বুঝিয়েছিলাম তুই নিখিল কে ভালোবাসিস। আমরা সবাই তোদের দুজনের বিয়ে ঠিক করে রেখেছি। কিন্তু এই মেয়ে শুনেই ই। নিখিল তোকে ভালোবাসতো। সেটা ও সহ্যই করতে পারে নি। কারন ও নিজেও নিখিল কে পছন্দ করতে। এই বলে ব্ল্যাকমেইল করিয়েছে যে নিখিলের সাথে বিয়ে না দিলে ও নিজেকে নিজে শেষ করে ফেলবে। নিখিল তো রাজিই ছিলো না। তোর বাবা হাতে পায়ে ধরে রাজি করিয়েছিলো। শেষে না পেরে নিখিল রাজি হয়েছে।
সন্ধ্যার হাসি পাচ্ছে ভীষণ। কেনো পাচ্ছে জানা নেই। হাত তালি দিয়ে বলল-
-“ আমাদের পরিবার টা কো সিনেমার থেকে কম নয় দেখছি মা। এই যে নিখিল ভাইয়ের সাথে আমার বিয়ে হয় নি তার জন্য আফসোস হয় না। কিন্তু ভাবছি। একটা বার কি আমার দিকটা ভেবেছিলে তখন? এই কাজ টা আমিও তো করতে পারতাম। এই ধরে ওদের বিয়ে টা মানতে পারছিলাম না বলে সু’ইসাইড করে বসলাম। পারতাম না বলো তখন? তোমাদের ভাবনা চিন্তায় হয়তো আমি কোনোদিন ছিলামই না। শুনেছি বাবা মায়ের প্রথম সন্তান হচ্ছে চমৎকার একটি জীবন্ত খেলনা। এই খেলনার সবই ভালো। খেলনা যখন হাসে বাবা – মা ও হাসে। খেলনা যখন কাঁদে বাবা – মায়ের মুখ অন্ধকার হয়ে যায়। তাই বলে আমার কথাটা তোমরা ভাবো নি একবার? এই যে তোমরা ভাবো নি আমার কথা সেজন্য আমি কষ্টে নেই। আমার সাথে করা অন্যায়ের শা’স্তি বলবো নাকি অন্য কিছু বলবো জানি না। তা কিন্তু পেয়ে গেছে তোমাদের আদরের বড় মেয়ে। বিশ্বাস করো আমার মোটেও খারাপ লাগছে না ওর জন্য। আর ভবিষ্যতে লাগবেও না খারাপ। আর তো আছি ক’টাদিন। তোমার মেয়েকে বলে দিও আর যেনো আমার কোনো কিছুতে নজর না দেয়। আগের বার ছেড়ে দিয়েছি এবার নজর লাগতাে আসলে আমার চেয়ে খারাপ কেউ হবে না।
কথাটা বলেই সন্ধ্যা রুমে চলে গেলো। শ্রেয়া অপমানে জর্জরিত। ফোনটা নিয়েই রুমে ছুটে গেলো। আর কতদিন শুনতে হবে এসব কথা। ভুল করেছে মানছে শাস্তি ও তো পাচ্ছে। তার উপর কেনো সন্ধ্যা কাটে গায়ে নুনের ছিটা দিচ্ছে?
কনা রুমে এসে দেখলে সন্ধ্যা পায়চারি করছে রুম জুড়ে। কনা বিছানায় বসে বলল-
-“ এভাবে বলা টা তোর উচিত হয় নি সন্ধ্যা। বেচারা তো পেয়েছে তার কর্মের শাস্তু তার উপর মুখে বলে আরো কষ্ট দিয়েছিস তাকে।
-“ আই ডোন্ট কেয়ার কনা। অন্যায় করলে তার পাল্টা জবাব শোনার ও মানসিকতা তৈরি করে রাখতে হয়। আমি ওমন বোন না যে সব ভুলে তাকে জড়িয়ে ধরে বলবো যা হয়েছে আমি ভুলে গেছি তুমিও ভুলে যাও। সারাজীবন মনে রাখবো আর ওকে ও মনে রাখাবো। ও বোন হয়ে আরেক বোনের শান্তি নষ্ট করেছিলো। পৃথিবীর লোকজন খারাপ বলবে? বলুক সমস্যা নেই। পৃথিবীর লোকজন আমাকে খাওয়ায় পড়ায় না। আমার টা আমি নিজে বহন করি। তাই কে কি ভাবলো আমাকে নিয়ে তা ভাবার সময়ই নেই।
-“ আচ্ছা সামনে বিয়ে সেটা নিয়ে ফোকাস কর। আমি কিন্তু আঙ্কেল কে বলেছি মেহেন্দির অনুষ্ঠান করতে। আঙ্কেল রাজি হয়েছে। মেহেন্দিতে কিন্তু আমি সেই সাজ দিবো। একদম তোর দেবর আমাকে দেখে ক্রাশ খাবে,, পটেই যাবে দেখে নিস।
-“ তাই হোক। পটে যাক সে।
-“ চল ঘুম দিবি।
-“ তুই ঘুমা আমি একটা ফোন করে আসি।
-“ কাকে?…ও বুঝেছি যাও যাও বাবুকে ফোন করে আসো।
সন্ধ্যা ফোন নিয়ে বেলকনি তে আসলো। আষাঢ়ের নম্বরের কল লাগাতেই ফোনটা রিসিভ হলো।
-“ হ্যালো.
-“ কোথায় আপনি?
-“ হসপিটালে। কেনো কিছু দরকার?
-“ বাসায় আসবেন কখন?
-“ ফিরতে রাত হবে। খেয়েছো?
-“ না।
-“ কেনো? রাত তো অনেকটাই বাজে।
-“ খাওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই।
-“ কেনো?
-“ নিখিল বিয়ে করেছে জানেন?
আষাঢ় চমকালো শুনে।
-“ না তো।
-“ তার বিয়ের ছবি পাঠালো তার এক ফ্রেন্ড। এক কলিগ কে বিয়ে করেছে সে। নাৃ ঝুমু না কি যেনো।
-“ ওহ্ বাসার পরিস্থিতি কেমন এখন?
-“ শান্তই।
-“ খেয়ে নাও গিয়ে।
-“ নামবে না গলা দিয়ে। ভিডিও কল দেই।
-“ হু দিচ্ছি ওয়েট।
আষাঢ় ফোনটা কেটে দিয়ে ভিডুও কল দিলো। মূহুর্তে স্কিনে ভাসলো সন্ধ্যার মুখ। সন্ধ্যা বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে।
-“ আজকাল তো ঠান্ডা পড়েছে ভীষণ। তুমি বেলকনিতে কেনো? রুমে আসো।
-“ কনা আছে রুমে।
-“ আমরা কোনো ১৮+ কথাবার্তা বলছি না সন্ধ্যা যে কনা শুনলে ক্ষতি হয়ে যাবে। রুমে আসো।
সন্ধ্যা রুমে আসলো। কনা বলল-
-“ কথা বলা শেষ? আয় ঘুমা।
-“ না ফোনে আছে ও। ভিডিও কলে।
-“ ওহ আচ্ছা। আসসালামু আলাইকুম হবু দুলাভাই।
-“ ওয়ালাইকুমুস সালাম। তোমার বান্ধবী শুনলাম খায় নি কিছু। তুমিও কি খাও নি?
-“ আসলে ভাইয়া..কেউই খাই নি।
-“ যাও খাবার নিয়ে আসো দু’জনের জন্য। খেয়ে নাও।
-“ আচ্ছা।
কনা চলে গেলো খাবার আনতে।
-“ শুধু শুধু খাবার আনতে বললেন। আমি কিন্তু খাবো না।
-“ না খেলে পিটানি দিব মেয়ে। খেয়ে নাও। আমার অপারেশন আছে রেডি হতে হবে। খেয়ে ঘুমিয়ে পড়বে কেমন?
-“ আচ্ছা।
-“ খাবে কিন্তু প্রমিস করো?
-“ আচ্ছা।
-“ আচ্ছা কি? বলো প্রমিস।
-“ প্রমিস।
-“ হু গুড গার্ল। আল্লাহ হাফেজ।
রাত স্টাডি রুমে বসে আছে। আকস্মিক ফোনে মেসেজের শব্দ পেয়ে মেসেঞ্জারে ঢুকে দেখে রাহুল মেসেজ দিয়েছে হাই। রাত টাইপ করলো।
আষাঢ় রাতের সন্ধ্যা পর্ব ১৮
-“ বলো কি বলবে।
রাহুল রাতেরই মেসেজের অপেক্ষায় ছিলো।
-“ ফ্রী আছো?
-“ না।
-“ ওহ্ আচ্ছা কনার বাসা টা কোথায়?
-“ রাজশাহী।
-“ সেটা তো জানি। এখানে কোথায় থাকে?
-“ আমাদের বাসায়।
-“ তোমাদের বাসায়! তোমার রিলেটিভ?
-“ হ্যাঁ কেনো?
-“ সামনা-সামনি বলি কথাটা? তুমিই হেল্প করতে পারবে আমাকে।
রাত ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইলো ফোনে। কিসের হেল্প করার কথা বলছে এই ছেলে?