উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন পর্ব ৪৮

উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন পর্ব ৪৮
আফিয়া আফরোজ আহি

সময়টা শীতকাল। কনকনে শীত যাকে বলে। ডিসেম্বরের শেষ দিকে শীতে অবস্থা বেগতিক। কম্বল মুড়ি দিয়েও যেন শীত নিবারণ করা যাচ্ছে না। কুয়াশায় ছেয়ে আছে চারপাশ। সকাল সকাল এই বাড়ি থেকে ওবাড়ি দেখা যাচ্ছে না এতটা কুয়াশা। তার মধ্যে শুরু হয়েছে ঝিরঝিরি বৃষ্টি।

ইদানিং ঋতুগুলোও কেমন নিজেদের ধরণ বদলে ফেলছে। ছোটো বেলায় কখনো দেখিনি শীতের দিনে বৃষ্টি হতে। অক্টোবরে দিকে শেষ বৃষ্টি হতো তারপর শীত চলে আসতো। এখন বড় বেলায় এসে কতো কিছুই না দেখতে হচ্ছে। অদিনের বৃষ্টি এসে ঠান্ডা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। কম্বল মুড়ি দিয়ে আদ্রর বুকের মাঝে গুটি সুটি মেরে ঘুমের দেশে তলিয়ে আছি। এদিকে যে সেই কখন থেকে এর্লাম বাজছে আমার সেদিকে খেয়াল থাকলে তো! আদ্র মাথায় হাত বুলিয়ে মৃদু কণ্ঠে ডাকছে,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“বউ, এই বউ। উঠ, তোর এর্লাম বাজছে। মেডিকেলে যেতে হবে না! উঠে রেডি হো”
আমি শুনলে তো! কম্বলটা আরো গাঁয়ের সাথে জড়িয়ে আদ্রর গাঁয়ে ঘেঁষে ঘুম। আদ্র ডেকেই চলেছে। এক সময় ঘুম ঘুম কণ্ঠে জবাব দিলাম,
“কি হয়েছে? ডাকছো কেন? একটু ঘুমাতে দেও না! এই ঠান্ডায় কার উঠতে ভালো লাগে বলো?”
“ভালো না লাগলেও উঠতে তো হবে?”
“আমি উঠব না”
“মেডিকেলে যাবি না?”
“না। আমার প্রচন্ড শীত করছে। আজকে যাবো না”
আদ্র হতাশ কণ্ঠে বলল,

“ভবিষ্যত ডক্টর যদি এমন হয় পেশেন্টদের যে কি অবস্থা হবে আল্লাহ মালুম! আমি তাঁদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি”
ঘুম উধাও হয়ে গেল। বাই এনি চান্স আদ্র কি আমায় বাজে ডক্টর বোঝালো? আমি পেশেন্টদের ঠিকঠাক ভাবে দেখি না এটাই বোঝালো? চোখ ছোটো ছোটো করে আদ্রর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
“তুমি কি বোঝাতে চাইছো? আমি কেয়ারলেস ডক্টর?”
“মোটেও না আমি এটা কখন বললাম?”
রনচন্ডী রূপ ধারণ করে বললাম,
“তাহলে কি বোঝাতে চেয়েছো শুনি?”

আদ্র হটাৎ আমার রণচন্ডি রূপ দেখে ঘাবড়ে গেছে। আমার মাথাটা নিয়ে নিজের বুকে চেপে ধরে বলল,
“আমি কিছুই বুঝাইনি। তুই ঘুমাবি বলছিলি না! ঘুমা”
ঘুম উধাও হয়ে গেছে। এখন চোখ বুজে থাকলেও ঘুম আসবে না এটা শিওর। চুপটি করে আদ্রর বুকে মাথা রেখে ওনার হৃদস্পন্দন এর শব্দ শুনছি। কোনো মানুষ যে এতটা আগ্রহ নিয়ে কারো হৃদস্পন্দন এর শব্দ শুনতে পারে এটা বোধ হয় আমি ছাড়া কেউ না। আদ্র আমায় জড়িয়ে রেখে চোখ বুজে রয়েছে। আদ্রর বুকে মাথা রেখেই জিজ্ঞেস করলাম,

“তুমি অফিস যাবে না?”
“না”
“কেন?”
“বউ যাবে না তাই আমিও যাবো না”
“তুমি বাড়ি থেকে কি করবো?”
“কেন! বউয়ের সাথে রোমান্স”
আদ্রর কথা শুনে শুকনো ঢোক গিললাম। উনাকে ঠেলে উঠতে উঠতে বললাম,
“তুমি থাকো বাসায় আমি মেডিকেলে যাচ্ছি”
আদ্র খপ করে আমার হাত টেনে নিজের বাহুডোরে আমায় আবদ্ধ করতে করতে বলল,
“এটা হবে না জান। এখন রোমান্স মানে রোমান্সই হবে। নো ছাড়াছাড়ি”

সময় কারো জন্য অপেক্ষা করে না। বয়ে চলে নিজ গতিতে। তেমনই সময়ের বিবর্তনে কেটে গেছে দুটো মাস। সেদিন বাড়ি গিয়ে আর ইভান ভাইকে পাইনি। বড় আম্মুকে জিজ্ঞেস করলে জানায় ইভান ভাই নাকি সেদিন রাতেই চলে গেছে। তার যাওয়ার কথা শুনে দীর্ঘশ্বাস ফেললাম। ইভান ভাইয়ের জীবনে একটা মানুষ আসুক যে তাকে ভালোবাসবে, ভালোবেসে তাকে আগলে রাখবে।

আমার দিন গুলো মেডিকেল, আম্মু আর আরুর সাথে গল্প, আদ্রর সাথে খুনসুটি, মান-অভিমান, ভালোবাসা সব মিলিয়ে যেন খুব দ্রুত চলে গেছে। মাঝে মাঝে ভাবি এই তো দুই মাস আগেও বাবার বাড়ি ছিলাম। বাড়ি কাছাকাছি হলেও দূরত্ব ছিলো দুজনের মাঝে। এখন মানুষটা সব সময় আমায় দুচোখের সামনে। ইচ্ছে হলে তাকে ছুঁয়ে দেওয়া যায়, হুটহাট জড়িয়ে ধরা যায়। অভিমানে গাল ফুলিয়ে এক গাদা অভিযোগ নিয়ে বসা যায়। মানুষটা কতো মনোযোগ দিয়েই না শোনে আমার সেই অভিমান মিশানো অভিযোগ গুলো। এই মানুষটা কে না পেলে জীবনে বড্ড আক্ষেপ রয়ে যেত। সব কিছুর পরিবর্তন হলেও একটা জিনিস আগের মতোই রয়ে গেছে সেটা হলো আমার প্রতি আদ্রর ভালোবাসা। উল্টো এখন আগের চেয়ে বেড়ে গেছে। মানুষটা আমায় অভিযোগ করার কোনো সুযোগই যেন দেয় না। কিছু বলার আগেই বুঝে যায়। আমার মন খারাপে তার উদ্বেগ এর শেষ নেই। কোনো একদিন আক্ষেপ নিয়ে বলেছিলাম,

“আমার ভাগ্যে এতো খারাপ কেন? কেন ইভান ভাই আমায় ভালোবাসেনি?”
আর আজকে কয়েক বছরের বিবর্তনে মুখে হাসি ফুটিয়ে বলতে পারি,
“নিঃসন্দেহে আমি ভাগ্যবতী নারী। যাকে এক পুরুষ তার সকল সত্ত্বা উজার্ করে ভালোবাসে”

বিকেলে আমি আর আরু বসে বসে কার্টুন দেখছি। টিভিতে টম এন্ড জেরি চলছে। টম আর জেরির কান্ড দেখে হাসতে হাসতে দুজনের অবস্থা কাহিল। আশেপাশে কি হচ্ছে সেদিকে আমাদের খেয়াল থাকলে তো! আদ্র একটু বেরিয়েছে। ফুপ্পি রুমে রেস্ট নিচ্ছে। আরু আর আমি হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছি। এর মাঝে কেউ এসে পাশে বসলো। সেদিকে খেয়াল নেই আমার। পাশের মানুষটা আমায় ডাকছে। আমি বিভোর টিভির স্ক্রিনে। হুট্ করে টিভি অফ হয়ে গেল। আমি আরুর দিকে, আরু আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমাদের দুজনের মাঝে কেউ টিভি অফ করিনি। তাহলে টিভি টা অফ করলো কে? পাশে তাকিয়ে দেখলাম আদ্র মহাশয় রক্তিম চোখে চেয়ে আছে। উনার হাতে রিমোট। আরু বলল,

“ভাইয়া টিভি অফ করলে কেন?”
আদ্র গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
“টিভি না দেখে পড়তে যা”
আরু কথা বাড়ালো না। উঠে চলে গেল। আদ্রর হটাৎ এমন গম্ভীর রূপ! কারণ কি? মিনিমিনে কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলাম,
“রেগে আছো কেন? কিছু কি হয়েছে? কোনো সমস্যা?”
“রেগে থাকবো না তো কি করব? সেই কখন থেকে ডাকছি তোর খেয়াল আছে? আমার তো মাঝে মাঝে মনে হয় তোর যে একটা জামাই আছে তুই সেটা ভুলে বসেছিস”
“সরি! আসলে টিভি দেখতে যেয়ে খেয়াল করিনি”
“এক কাপ কফি নিয়ে রুমে আয় কথা আছে”

আদ্র ধুপ ধাপ পা ফেলে চলে গেল। আমি উনার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রান্না ঘরে চলে গেলাম। কফি বানিয়ে রুমে ঢুকতেই কানে এলো আদ্র কারো সাথে কথা বলছে। কফিটা টি-টেবিলে রেখে আদ্রর পাশে বসে পড়লাম। উনি কথা শেষ করে কফি হাতে নিলেন।
“তোমার কি কোনো কারণে মন খারাপ? রেগে আছো আমার ওপর?”
“রেগে থাকার কাজ করলে রাগ করবো নাতো কি করবো?”
“সরি বললাম তো”

আদ্র কিছু বলবে এমন সময় ওনার ফোন বেজে উঠলো। আদ্র ফোন রিসিভ করতেই ওপর পাশ থেকে ইভা হুড়মুড় করে বলে উঠলো,
“আদ্র ভাই তাড়াতাড়ি বনুকে নিয়ে বাড়ি চলে এসো”
আদ্র কিছু বলবে তার আগেই কল কেটে দিলো।
“কে কল দিয়েছে?”
“ইভা”
“কি বলল?”

“বলল তোকে নিয়ে তাড়াতাড়ি ও বাড়িতে যেতে”
“হটাৎ এমন জরুরি তলব? কারো কোনো কিছু হয়েছে কি?”
“আমি কিভাবে বলবো বল! ও আমাকে কিছু বলতে না দিয়েই কল কেটে দিলো। চল গিয়ে দেখি”
তৎক্ষণাৎ বেরিয়ে পড়লাম দুজন। রাস্তায় আমাদের মাঝে তেমন কথা হলো না। বাড়িতে ঢুকতেই চোখ পড়লো সোফায়। সবাই সেখানে বসে আছে। তাঁদের মাঝে ভাবি লজ্জা রাঙা মুখ নিয়ে বসে আছে। আমাকে দেখেই ইভা লাফ দিয়ে উঠে এলো। আমায় জড়িয়ে ধরে বলল,

”বনু তুই ফুপ্পি হতে চলেছিস। আমাদের বাড়িতে পুচকু আসবে”
“মানে?”
“ভাবি প্রেগনেন্ট”
ইভাকে ছেড়ে ভাবির কাছে চলে এলাম। আম্মুরা সবাই ভাবিকে এটা সেটা বলছে।
“ভাবি ঘটনা কি সত্যিই?”
ভাবি মাথা নেড়ে সায় জানালো। লাফ মেরে উঠে বললা,
“ইয়াহু, আমাদের বাড়ি পুচকু আসবে। তার ছোটো ছোটো হাত, পা, আধো আধো বুলিতে ফুপ্পি ফুপ্পি ডাকবে। ইসস ভাবতেই আমার খুশিতে নাচতে ইচ্ছে করছে”

আমার খুশির শেষ নেই। আমাকে দেখে মনে হবে বাচ্চা মেয়ে কোনো কিছু পাওয়ার খুশিতে লাফিয়ে বেড়াচ্ছে। আমার সাথে যোগ হলো ইভাও। আম্মু বলে উঠলো,
“তোরা কি জীবনেও বড় হবি না? একজনের বিয়ে হয়ে গেছে আরেকটার বিয়ে দিবো এখনো সেই বাচ্চাদের মতোই করে যাবি?”
বড় আম্মু বলল,
“ওদের কিছু বলে লাভ নেই। এগুলো এই জীবনেও সুধরাবে না”
বড় আম্মুর কথা শুনে দুজন একে ওপরের দিকে তাকিয়ে একসাথে বলে উঠলাম,
“হাম নেহি শুধরেঙ্গে কাভিবি”

বলে দুজন একসাথে হেসে দিলাম। আদ্র ভাবিকে বললো,
“খালি মুখে সুখবর তো শুনবো না, মিষ্টি কোথায়?”
ভাবি লাজুক মুখে উত্তর দিলো,
“আপনার ভাই মিষ্টি আনতে গিয়েছে। এখুনি এসে পড়বে”
আমি আর ইভা বসে পড়লাম প্ল্যান করতে। আমরা এমনই। কোনো একটা টপিক পেলেই আমরা শুরু হয়ে যাই। পুঁচকুর নাম কি রাখা হবে সেটা নিয়ে আমি আর ইভা তর্ক বিতর্ক করছি। আমাদের ঝগড়া দেখে হাসছে সবাই। এর মাঝেই অভ্র ভাইয়ের আগমন হলো। মিষ্টি মুখ করায় ব্যস্ত সবাই।

রাতের আকাশে কালো মেঘের ছড়াছড়ি। আকাশে এক ফালি চাঁদ মেঘেদের মাঝে উঁকি দিচ্ছে। চারপাশে নিস্তব্ধতা। আজকে আমাদের বাড়িতেই থেকে গিয়েছি। যেতে চাইলেও বড় আম্মু আমাদের যেতে দেয়নি। ইভা, রোশনি, ঈশিতা আপু, ভাবি তাঁদের সাথে আড্ডা দিতে দিতে রাত বারোটার কাছাকাছি বেজে গেছে। ঈশিতা আপু বিকেলে এসেছে। ওদের বিদায় দিয়ে রুমে ঢুকলাম। রুমের লাইট নিভানো। ড্রিম লাইট জ্বলছে মিটিমিটি করে। পুরো রুমে কোথাও আদ্র নেই। তাহলে উনি কোথায়? ওয়াশরুমে উঁকি দিয়ে দেখলাম সেখানেও নেই। ব্যালকনির দিকে তাকাতেই নজরে এলো পুরুষালি অবয়ব। এগিয়ে গেলাম সামনের দিকে। আদ্র উদাস মনে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। নিঃশব্দে এগিয়ে গেলাম উনার কাছে। পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে পিঠে মাথা রেখে মৃদু কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলাম,

“এইযে বর মশাই কি হয়েছে তোমার? এতো উদাসীন কেন? মন খারাপ? এখনো রেগে আছো আমার ওপর?”
আদ্র পিছনে ঘুরলো। আমায় শক্ত করে তার বাহুডোরে আবদ্ধ করে নাক টেনে দিয়ে বলল,
“আদ্র কখনো তার রৌদ্রময়ীর ওপর রেগে থাকতে পারে? রৌদ্রময়ীর হাস্যজ্জল মুখ দেখলেই তো তার সকল রাগ নিমিষেই গলে জল হয়ে যায়”
“তাহলে ওভাবে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিলে কেন?”
আদ্র ভাবুক ভঙ্গিতে বলল,
“ভাবছিলাম”
“কি?”
“আমাদের মাঝে ছোটো রৌদ্রময়ীর আগমন ঘটলে কেমন হবে?”

প্রথমে আদ্রর কথা শুনে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে থাকলেও কথার মানে বুঝতে পেরে কপোল জুড়ে লালিমা ছড়িয়ে গেল। লজ্জায় রাঙা কপোলে অধরে ছুঁইয়ে দিলো উনি।
“শোন তোর ফাইনাল ইয়ারের এক্সাম এর পড়েই তার আগমনের ব্যবস্থা করব। ছোটো একটা প্রাণ পুরো বাড়িময় ঘুরে বেড়াবে। আধো আধো কণ্ঠে তোকে আমাকে ডাকবে। একদম তোর মতো চঞ্চল, দুস্টু, পুরো বাড়ি যে মাতিয়ে রাখবে। তুই যেমন পুচকু থাকতে টুকুস টুকুস করে কথা বলতি তেমন”
“উহু, সে হবে তোমার মতো। আমার পুচকু আদ্র চাই”
“উহু, রৌদ্রময়ী”
“না, পুঁচকু আদ্র”

এই নিয়ে দুজনের মাঝে বেজে গেল লঙ্কা কান্ড। আদ্র বলছে তার পুচকু রৌদ্রময়ী লাগবে, আর আমি বলছি পুচকু আদ্র। ঝগড়ার এক পর্যায়ে আদ্র হুট্ করে কোলে তুলে নিলো। ভারসাম্য বজায় রাখতে আদ্রর গলা জড়িয়ে ধরলাম। উনি রুমে প্রবেশ করে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে ফিসফিস কণ্ঠে বলল,
“রৌদময়ী আসবে নাকি আদ্র আসবে সেটা পড়ে দেখা যাবে আগে তো তাঁদের আগমনের ব্যবস্থা করতে হবে নাকি?”
“তুমি দেখে নিও আদ্রই…”

উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন পর্ব ৪৭

পুরো কথাটা বলার আগে আদ্র অধরে অধর মিলিয়ে দিলো। ধীরে ধীরে দুজনে হারিয়ে যাচ্ছি ভালোবাসার অতল গহীনে। ভালোবাসার শহরে, যেই শহর জুড়ে শুধুই আমাদের বিচরণ।

উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন পর্ব ৪৯