উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ১১

উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ১১
আফিয়া আফরোজ আহি

“কবুল”
দীর্ঘশ্বাস নিয়ে কাঙ্খিত শব্দ বলেই দিলাম। অপর পাশের মানুষটাকে বলতে বললে উনি গড়গড় করে বলে দিলেন যেন কতো জনম ধরে এই মুহুর্তটার অপেক্ষা করছিলেন। দুজন বিয়ে নামক এক পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গেলাম। না তাকিয়েও বুঝতে পারছি অপর পাশের মানুষটা এক দৃষ্টিতে আমায় দেখছে। কিন্তু আমার পক্ষে সেটা সম্ভব হচ্ছে না। লজ্জা, অস্বস্থি জেঁকে ধরেছে আমায়। আমার রুমে অবস্থিত সবাই সমস্বরে “আলহামদুলিল্লাহ” বলে উঠলো। সবার মাঝে খুশির আমেজ। খুশির বন্যা বইছে মনে হচ্ছে। সবাইকে খুশি দেখে মনে কিছুটা প্রশান্তি বয়ে গেল। একে অপরকে মিষ্টি মুখ করাচ্ছে। সবার মাঝেই আনন্দ, উল্লাস। কিন্তু অপর পাশের মানুষটার সাথে সারাজীবন একসাথে কাটানো কি সম্ভব? যেখানে আমাদের মাঝে তেমন কোনো সম্পর্ক নেই আর না আছে ভালোবাসা। তবে স্বস্তির বিষয় হচ্ছে নিশ্চিন্তে অপর পাশের মানুষটা ভরসাযোগ্য। যার ওপর চোখ বুঝে ভরসা করা যায়। মানুষটা আমায় আগলে রাখবে।

নিজের রুমে বসে আছি। ভাবছি সকালের কথা। কিছুক্ষণ আগেও আমি সিঙ্গেল ছিলাম আর এখন বিবাহিত। কারো ব্যক্তিগত মানুষ, তার বিয়ে করা বউ। “বউ” শব্দটা উচ্চারণ করতেই মনে আলাদা এক প্রশান্তি বয়ে গেল। অদ্ভুত ভালো লাগা কাজ করছে। লজ্জারা ঘিরে ধরছে। ইসস এর পর আদ্র ভাইয়ের দিকে তাকালেও যে লজ্জা লাগবে। উনার সাথে কথা বলবো কিভাবে? মাথায় এলো সকালের ঘটনা,
আদ্র ভাই কিছু বলতে চাইছেন কিন্তু পারছেন না।
সেটা ওনার মুখ ভঙ্গি দেখেই বোঝা যাচ্ছে। হাত মোচড়া মুচড়ি করছেন, অস্বস্তিতে হাঁস ফাঁস করছে। মনে মনে এক প্রকার নিজের সাথে নিজেই যুদ্ধ করছে। অবশেষে মুখ খুলল,
“তোকে কিছু বলার ছিলো?”

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

“সেটা বলতে এতক্ষন লাগলো? এতো ভাবনা চিন্তা করার কি আছে? নিশ্চিন্তে বলে ফেলো”
অধীর আগ্রহ নিয়ে বসে আছি কথাটা শোনার জন্য। আদ্র ভাই বলতে নিয়েও তোতলাচ্ছেন। ঘাবড়ে গিয়ে ওনার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে। এই শীতেও বেচারা ঘামছে। বার বার শুকনো ঢোক গিলছে। এতো কিসের টেনশন তার? সামান্য একটা কথা বলতে এতো দ্বিধা বোধ? কই এর আগে তো কখনো এমন হয়নি। এসে টুপ্ করে বলে চলেও গিয়েছে। কিন্তু আজ এতো অস্বাভাবিক আচরণ কেন?
“কি হলো আদ্র ভাই বলো কি বলবে?”
এর মাঝে রুমে প্রবেশ করলো ফুপ্পি। দরজা দিয়ে ঢুকতে গিয়ে বলল,
“ওর দ্বারা হবে না, আমি বলছি তোকে”
ফুপ্পি এসে আমার পাশে বসলো। মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল,
“কেমন আছিস রোদ সোনা”
“আলহামদুলিল্লাহ ভালো। কি কথা বলবে বলো?”
ফুপ্পি আমার সারা মুখে হাত বুলিয়ে দিলো। গালে আলতো করে হাত রেখে আদুরে কণ্ঠে সুধালো,
“আমার ছেলের বউ হবি রোদ সোনা?”

ফুপ্পির মুখে কথাটা শুনে টাস্কি খেয়ে বসে রইলাম। ফুপ্পি এসব কি বলছে? মাথা ঠিক আছে তো? আমি আর আদ্র ভাই ক্যামনে কি? আদ্র ভাইকে কাজিন বা ফ্রেন্ড ছাড়া কখনোই অন্য নজরে দেখিনি। সেখানে তাকে বিয়ে? কিভাবে সম্ভব?
“জানিস আমার অনেক আগে থেকেই ইচ্ছে ছিলো তোকে আমার ছেলের বউ করবো। তোর মতো মিষ্টি একটা মেয়েকে বউমা হিসেবে আমার ঘরে তুলবো। তু্ই আমার বউমা কম মেয়ে হয়ে থাকবি। আমার বাড়ি জুড়ে তু্ই ছুটোছুটি করে বেড়াবি। তু্ই সব সময় আমার কাছে থাকবি। সেই মতে অনেক আগে থেকেই ভেবে রেখেছিলাম তু্ই বড় হলে ভাইজানকে বলবো। কিন্তু তার আগেই তো কতো কিছু ঘটে গেল। যখন ইভানের সাথে তোর বিয়ের কথা হলো আমার মন পুরোপুরি ভেঙ্গে গিয়েছিল। আমি তোকে আমার মেয়ে হিসেবে পাওয়ার আশাই ছেড়ে দিয়েছিলাম। ইভান বিয়ে করে আনায় মনে মনে এক প্রকার খুশিই হয়েছিলাম আমি। তবে তোকে এই রূপে দেখে সহ্য করতে পারছি না। তোর কষ্ট সহ্য হচ্ছিলো না আমার। আমি তোকে আমার বাড়ি নিয়ে যেতে চাই। তোকে আদ্র যত্নে রাখবে, আগলে রাখবে। তোর এই হাল আমার, পরিবারের কারো সহ্য হচ্ছে না। আমরা চাই তু্ই আগের মতো হয়ে যা হাসি, খুশি থাক। পুরো বাড়ি মাতিয়ে রাখ। আমার ছেলেটা তোর চিন্তায় চিন্তায় নাওয়া, খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। তু্ই করবি আমার ছেলেকে বিয়ে? হবি আমার বউমা?”

ফুপ্পি থামলো। আমি নিশ্চুপ হয়ে বসে আছি। আদ্র ভাই মাথা নিচু করে বসে বসে নখ কামড়ে যাচ্ছে। বজ্জাত লোক এই ছিলো উনার মনে? এখন কি করবো কিছুই বুজতে পারছি না। ফুপ্পিকে মুখের ওপর নাও করতে পারছি না আবার হ্যাঁ ও না। একবার ধোঁকা খেয়ে এখন আর এসবে জড়াতে চাইছি না। পুরোপুরি ভাবে পড়াশোনায় মনোযোগী হতে চাইছি। পড়াশোনা শেষ করে নিজের পায়ে দাঁড়াবো তারপর বিয়ে। ফুপ্পির দিকে তাকিয়ে দেখলাম অনেক আশা নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
“কি হলো কিছু বল? বিশ্বাস কর আদ্র তোকে সব সময় আগলে রাখবে, কখনো ছেড়ে যাবে না তোকে। কিছু তো বল সোনা”
মিহি কণ্ঠে শুধালাম,
“আম্মু-আব্বু যা বলবে তাই”

“আমি প্রথম বড় ভাইজান আর তোর আব্বুকে জানিয়েছি। তারা বলেছে তু্ই যেই সিদ্ধান্ত নিবি সেটাই হবে। তোর সিদ্ধান্তই আমরা মেনে নিবো”
মাথায় কিছুই আসছে না। কি বলা উচিত? আব্বু আর বড় আব্বু তো আমায় ফাঁসিয়ে দিলো। ভাবনায় পড়ে গেলাম। মাথায় যতো সব এলো মেলো ভাবনা। মিনিমিনে স্বরে বললাম,
“আমার সময় প্রয়োজন। ভেবে পড়ে জানাচ্ছি”
ফুপ্পি এগিয়ে এসে কপালে চুমু দিলেন। মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন,
“নিজের ওপর জোর করে কিছু চাপিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তোর যেটা ভালো মনে হবে সেটাই করিস। তোর সকল সিদ্ধান্তেই আমরা খুশি। এমন ভাবিস না যে আমরা তোর ওপর কিছু চাপিয়ে দিচ্ছি। আমি গেলাম। নিজের খেয়াল রাখিস সোনা”
ফুপ্পি চলে গেলেন। আদ্র ভাই এখনো সেই মাথা নিচু করেই বসে আছে। এই লোকের আবার আজকে কি হয়েছে? এমনি সময় বক বক করতে করতে মাথা খারাপ করে দেয় আর আজ মুখে কুলুপ এটে বসে আছে। ইচ্ছে করছে মাথা ফাটিয়ে দেই।
“তোমার কিছু বলার আছে?”

আমার কথা শুনে আদ্র ভাই মুখ তুলে তাকালেন। উনার চাহনি ভীতু, ভাব ভঙ্গি আড়ষ্ট, জবু থোবু হয়ে বসে আছে। আচমকা এগিয়ে এসে আমার দুহাত উনার হাতের মুঠোয় নিলেন। অতঃপর বলা শুরু করলো,
“আমার বিয়ে করবি রৌদ্রময়ী? সারাজীবন এই বুকে আগলে রাখবো তোকে। এক ফোঁটা কষ্ট পেটে দিবো না তোকে। আমার রাজ্যের রানী বানিয়ে রাখবো। তোর এই বদল আমায় পীড়া দিচ্ছে। তোকে এই রূপে আমি মেনে নিতে পারছি না। কষ্ট হচ্ছে, দম বন্ধ হয়ে আসছে। তোকে এই রূপে সহ্য করতে পারছি না। হৃদয় ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। তোর কষ্ট আমিও ভাগ করে নিতে চাই। ভেঙ্গে পড়া রোদকে নতুন করে আমার রৌদ্রময়ী রূপে গড়ে নিতে চাই। আমাকে দিবি সেই সুযোগ? একবার তোকে হারাতে যেয়ে ফিরে পেয়েছি এবার আর হারাতে চাইনা। তোকে আগলে রাখতে চাই সারাজীবন। আমায় দিবি সেই অনুমতি? সারাজীবনের জন্য আমার হাতে হাত রাখবি? আমার হবি রৌদ্রময়ী? বিশ্বাস কর যতদিন বেঁচে থাকবো কখনো তোকে ছেড়ে যাবো না। ছায়ার মতো তোর পাশে থেকে যাবো। হবি আমার?”

আদ্র ভাইয়ের কথা শুনতে শুনতে আমি যেন ঘোরের মাঝে চলে গিয়েছি। মানুষটার আকুল কণ্ঠে বলা কথা গুলো ফেলে দিতে পারছি না। চোখ রাখলাম উনার চোখে। আদ্র ভাইয়ের চোখে এক আকাশ সম আকাঙ্খা। পানি টলমল করছে, করুণ চোখে তাকিয়ে আছে। চোখের চাহনিই বলে দিচ্ছে উনার মনের অবস্থা। মানুষটা ভালো নেই। কিছু হারানোর ভয়ে জবু থোবু হয়ে আছে। আমার কি হলো জানি না মাথা নেড়ে সায় জানিয়ে দিলাম। আদ্র ভাই হুট্ করে জড়িয়ে ধরলো আমার। মাথায় ওষ্ঠ ছুঁইয়ে দিয়ে বলল,
“ধন্যবাদ রৌদ্রময়ী, অনেক অনেক ধন্যবাদ তোকে”
তার উন্মাদনার শেষ নেই। চোখে মুখে খুশির ঝলক উপচে পড়ছে। খুশিতে চোখ বেয়ে এক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়লো। উনি সেটা পাত্তা দিলেন না। চোখ মুছে হাসতে হাসতে চলে গেলেন। আমি বেক্কেলের মতো বসে আছি। মিনিটের ব্যবধানে এতো কিছু ঘটে গেল ভাবতেই পারছি না। মনে হচ্ছে সব কল্পনা।

শুরু হলো বাড়িতে আনন্দ উল্লাস। আম্মুরা লেগে পড়লো রান্নায়। আব্বুরা অফিসে চলে গিয়েছে ততক্ষনে। তাঁদের ফোন করে জানানোতে সবাই চলে এসেছে। বড় আব্বু বলেছিলো আগামী শুক্রবার আকদের কথা। কিন্তু আদ্র ভাই শুনলে তো! উনি আজকের মধ্যেই আকদ করতে চান। উনি আমায় আর এই রূপে দেখতে পারছেন না। ওনার পা*গলামোর কাছে সবাইকে হার মানতে হলো। সিদ্ধান্তে নেওয়া হলো দুপুরের খাওয়া পর আমাদের আকদ হবে। সেই মতে কাজীকে আসতে বলা হলো। সব কিছু অনেক তাড়াতাড়ি ঘটে গেল। ঈশিতা আপু, ইভা, রোশনি মিলে দুপুরের খাবার নিয়ে এলো। ওদের যতো সব খোঁচানোর কথা বার্তা। ঈশিতা আপু চোখ ছোট ছোট করে বলল,

“কিরে কাহিনী কবে থেকে চলছে? দুজন চুপিচুপি আমাদের নাকের ডগা দিয়ে প্রেম করে গেলি আর আমরা বুঝতেও পারলাম না?”
“তোমরা যেমন টা ভাবছো তেমনটা না”
ইভা বলল,
“তু্ই আমাদের সাথে এমনটা করতে পারলি? আমাদের বললে কি আমরা মানা করতাম?”
রোশনি বলল,
“আমাদের বললে আমরা তো তোমাদের হেল্প করতে পারতাম তাই না? তুমি এটা ঠিক করলে না আপু”
আমি পড়েছি জ্বালায়। এদের কিভাবে বুঝাই আমাদের মাঝে তেমন কিছুই নেই যেটা ওরা ভাবছে। নিজের হয়ে সাফাই গাইতে বললাম,
“বিশ্বাস করো আমাদের মাঝে এমন কিছুই ছিলো না যা তোমরা ভাবছো?”
ঈশিতা আপু বলল,

“কিছু না থাকলে আদ্র ভাই এতো পা*গল হয় বিয়ের জন্য? আমাদের ভদ্র ভোলা ভালা ভাই বেলাজের মতো বড় আব্বুর মুখের ওপর বলছে আকদ আজকেই হবে। কিছু তো অবশ্যই আছে! সত্যি করে বল?”
আমার মান সম্মান শেষ! এই লোক শুরু করেছে কি? উনি কি মান সম্মান ডুবেনোর প্রতিযোগিতায় নেমেছে? বড় আব্বু এখন কি ভাবব্বে? রাগে ফোঁস ফোঁস করছি। ইচ্ছে করছে আদ্র ভাইকে হাতের কাছে পেলে ইচ্ছে মতো ধোলাই দিতাম। বেশরম লোক!
“তোমাদের যদি আমার কথা বিশ্বাস না হয় তাহলে আদ্র ভাইকে গিয়ে জিজ্ঞেস করো”
“ভাই?”
“ভাই নাতো কি বলবো?”
“একটু পর ভাই থেকে জামাই হয়ে যাবে”

“যখন হবে তখন দেখা যাবে। এখন তোমরা একটু চুপ করবে প্লিজ”
“ইভা দেখ আমাদের রোদ সোনা লজ্জা পাচ্ছে। লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে। তোরাও না বেচারিকে লজ্জা দিচ্ছিস। লজ্জা কম হয়ে গেছে দিবি যেহেতু তাহলে একটু একটু বেশি করে দে”
“ঈশিতা আপু!”
“বল”
“যাও তোমাদের সাথে আমার কথা নেই। তোমরা আমার লেগপুল করছো”
ঈশিতা আপু, রোশনি, ইভা একসাথে হেসে দিলো। ওদের সাথে আমিও হেসে দিলাম। ঈশিতা আপু হাসতে হাসতে বলল,

“আমরা তো মজা করছিলাম”
“জানি”
সবাই মিলে হাসি মজায় দুপুরের খাওয়া হলো। ঈশিতা আপু দুঃখী দুঃখী মুখ করে বলল,
“বড় বোনকে রেখে বিয়ে করে ফেলছিস?”
“বিয়ে কোথায় করছি শুধু আকদ হবে”
“যাই হোক করছিস তো!”
“তুমিও করে নেও। তোমায় আটকে রেখেছে কে?”
“আব্বু শুনলে ঠ্যাং ভেঙ্গে রেখে দিবে”
“আহারে দুক্কু”

আমাদের হাসি তামাশার মাঝে রুমে প্রবেশ করলো প্রিয়ম ভাবি। হাতে কিছু জিনিস। জিনিস গুলো টেবিলের ওপর রেখে বিছানার পাশে এসে দাঁড়ালো।
“এখন শরীরের কি অবস্থা রোদ?”
“এইতো আলহামদুলিল্লাহ ভালো”
“আম্মু বলেছে তোমায় ড্রেস চেঞ্জ করে নিতে। নিচে কাজী সাহেব বসে আছে। একটু পর তোমার রুমে আসবে। অসুস্থ শরীরে তুমি তো নিচে যেতে পারবে না। তাই এখানেই তোমাদের আকদ হবে।
ঈশিতা আপু বলল,
“আমরা তিনজন মিলে রোদকে রেডি করে দিচ্ছি। তুমি চিন্তা করো না”

ভাবি চলে গেল। ড্রেস চেঞ্জ করে সাফেদ রঙা গাউন পড়লাম। ঈশিতা আপু চুল গুলো খোপা করে মাথায় লাল রঙের ওড়না দিয়ে ঘোমটা টাইপ দিয়ে দিলো। মুখে সামান্য পাউডার আর লিপস্টিক। হাতে লাল চুড়ি, ব্যাস এই আমার সাজ। একটু পড়েই রুমে বড় আব্বু, আব্বু, ফুফা, শুভ ভাই, রুদ্র ভাইয়া, আম্মু, বড় আম্মু, ফুপ্পি, আরু, ভাবি, অভ্র ভাই সবাই এলো। রুম মানুষে ভরে উঠেছে। আদ্র ভাই সোফায় বসেছে। আমার একপাশে ঈশিতা আপু আরেক পাশ খালি। কাজী সাহেব চেয়ারে বসে বিয়ে পড়াচ্ছেন। আমি মাথা নিচু করে বসে আছি। ঘর, ভর্তি মানুষ। আমায় “কবুল” বলতে গুটিয়ে গেলাম। মনের মাঝে ঝড় বইছে। গলা শুকিয়ে আসছে। মাথা কেমন চক্কর দিচ্ছে। অদ্ভুত সব অনুভূতি হচ্ছে। শুভ ভাই আমার অবস্থা বুঝলো। পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো। আমার হাত নিজের হাতের মাঝে নিয়ে সাহস দিলো। ধীর কণ্ঠে বলল,

উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ১০

“বলে দে পাখি”
শুভ ভাইয়ের আশ্বাস পেয়ে অবশেষে বুক ভরে শ্বাস নিয়ে বলেই দিলাম। দুজন বাঁধা পড়ে গেলাম পবিত্র এক অটুট বন্ধনে।

উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ১২