উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ১৬

উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ১৬
আফিয়া আফরোজ আহি

পিন পতন নীরবতায় ছেয়ে আছে পরিবেশ। কেমন গুমোট ভাব। সবার মাঝে নিস্তব্ধতা। একটু আগে ইভান ভাই সবার সকল প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। সব শুনে তাজ্জব হয়ে বসে আছি। আমরা এখনো ভাবতেই পারছি না ইভান ভাই মানুষটা এতটা কঠিন পরিস্থিতির মাঝ দিয়ে গেছেন। তাকে এতো প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। একে তো এই বাজে পরিস্থিতি তার সাথে আমরা সবাই মিলে তার সাথে যেই আচরণ করেছি এতে মানুষটার অবস্থা আরো খারাপ হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু ইভান ভাই অনেক স্ট্রং মানসিকতার মানুষ হওয়ায় ভেঙ্গে পড়েনি। শক্ত হয়ে পরিস্থিতির সাথে লড়ে গেছে। শেষ পর্যন্ত সকল বাধা বিপত্তি পেরিয়ে উনি নিজেকে প্রমাণ করেছেন।
কিছুক্ষন আগের ঘটনা,

সবার এতো এতো প্রশ্ন। প্রশ্নের ঝুলি খুলে বসেছে সবাই। একসাথে সবাই বলা শুরু করলে ইভান ভাই তাঁদের বলল,
“একে একে সবাই প্রশ্ন করো। একসাথে করলে করটা রেখে কার জবাব দিবো”
ইভান ভাইয়ের কথা অনুযায়ী সবাই চুপ করে গেল। একে একে নিজেদের মনে থাকা সকল প্রশ্ন করতে শুরু করলো। সবার প্রশ্ন শেষে ইভান ভাই বুক ভরে শ্বাস নিলেন। অতঃপর বলা শুরু করলেন,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

“ঘটনার বর্ণনা শুরু করি প্রথম থেকে। তোমরা সবাই জানো ছোট বেলা থেকেই আমার রহস্য, ক্রাইম, ইনভেস্টিগেশন এসব বিষয়ে অনেক আগ্রহ ছিলো। এক প্রকার নেশার মতো কাজ করতো। তো সেই মোতাবেক আমি আমার নিজ লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম একটু একটু করে। তোমরা যখন দেশে আসার জন্য তারা দিচ্ছিলে তার অনেক আগে কয়েক জায়গায় সিভি জমা দিয়েছিলাম। দেশে আসার পর তোমরা সবাই জোর করলে থেকে যাওয়ার জন্য। যদিও আমারও ইচ্ছে ছিলো দেশে সেটেল হওয়ার। তোমাদের কথার দুদিন বাদের এক জায়গা থেকে আমায় ডাকা হলো, ইন্টারভিউ দিলাম কিন্তু ইন্টারভিউ তেমন মন মতো হলো না। অবাক করা কাণ্ড হলো মন মতো ইন্টারভিউ না হওয়ার পড়ও সিলেক্ট হওয়ায় খানিকটা অবাকই হয়েছিলাম বটে। অতঃপর জয়েন করলাম নিজের শখের পেশায়। মনে হচ্ছিলো আমি পেরেছি, আমার স্বপ্ন পূরণ করতে।

প্রথমেই আগ্রহের সহিত হাতে নিলাম বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী ইলিয়াস পাঠান এর কেস। উনি ব্যাবসার আড়ালে অস্ত্র পাচার করতেন। এই বিষয়ে সবাই জানলেও কেউ আগালো না কারণ ইলিয়াস সাহেব অনেক প্রভাবশালী লোক। এর আগে দুজন অফিসার তার বিরুদ্ধে প্রমান জোগাড় করতে গেলে তাঁদের আর ফিরে পাওয়া যায়নি। তাঁদের খোঁজও কেউ যানে না। কোথায় আছে, বেঁচে আছে কিনা কিছুই জানা যায়নি। সিনিয়র অফিসার চায়নি আমার হাতে কেসটা দিতে। একে তো আমি এই পেশায় নতুন। তার ওপর তেমন অভিজ্ঞতাও নেই। তাই সবাই ভয় পাচ্ছিলো। বারবার সাবধান করেছে আমায়। আমি প্রথমে একটু ঘাবড়ে গেলেও পিছ পা হইনি। গোপনে তার বিষয়ে সকল প্রমাণ একত্রিত করা শুরু করলাম। দুই আড়াই মাস অক্লান্ত পরিশ্রমের শেষে আমি সফল হলাম তার বিরুদ্ধে সকল প্রমাণ জোগাড় করতে। সকল প্রমাণের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হলো এবং তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দন্ডিত করা হলো। অফিসের সবাই তখন খুব খুশি হলো।

আমিও ততক্ষন বিরাট খুশি। ভেবেছিলাম তখনই তোমাদের জানাবো। আমি আমার শখের পেশায় প্রথম কেসএ জয়ী হয়েছি। আমি পেরেছি অপরাধীকে ধরিয়ে দিতে। তার মাঝে তোমরা আমার আর রোদের আকদের বিষয়টা তুললে। আমি চেয়েছিলাম আরেকটু সময় নিতে। তবে দাদুমনির ইমোশনাল কথা শুনে আমি চেয়েও কিছু বলতে পারলাম না। আর না পারলাম তোমাদের জানাতে। ভাবলাম পরে বলে দিবো। তোমাদের খেয়াল আছে আমাদের আকদের ডেট যেদিন ফাইনাল হলো আমি সেদিন চলে গিয়েছিলাম? সেদিন হুট্ করে সিনিয়র অফিসারের কল এলো শহর থেকে এখনো অস্ত্র পাচার বন্ধ হয়নি। কেউ বা কারা মিলে এখনো সেটা জারি রেখেছে। তাও আবার ইলিয়াস সাহেবের কোম্পানি থেকেই। সবার মাথায় হাত। এবার জোর পূর্ব আমাকেই দায়িত্ব দেওয়া হলো। টানা পাঁচ দিন অনেক খাটাখাটনি করলাম। কেসের বিষয়ে অনেক ক্লু ও পেয়ে গিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম আকদ টা হয়ে গেলে শক্ত হাতে হ্যান্ডেল করবো। সব ঝামেলা একপাশে রেখে খুশি মনে ড্রাইভিং করে বাড়ি ফিরছি। আচমকা আমার ফোনে কল এলো। এক অপরিচিত নাম্বার থেকে। অপরিচিত নাম্বার দেখে কপাল কুঁচকে গেল আমার। ফোন রিসিভ করলে অপর পাশ থেকে কেউ বলে উঠলো,

“অস্ত্র পাচার কেসটা নিয়ে বেশি ঘাটাবেন না মিস্টার ইভান। এতে আপনারই ক্ষতি”
হঠাৎ এমন কথায় মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। রুড কণ্ঠে বলে উঠলাম,
“কে বলছেন? আপনার পরিচয় দিন”
অপর পাশের মানুষটা রসিকতার স্বরে বলে উঠলো,
“পরিচয় দিয়ে আপনার কাজ নেই। আপনাকে যেটা বলেছি আপনি সেটাই করুণ”
আমি তেজি কণ্ঠে বলে উঠলাম,
“আমি তো কেস নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি বন্ধ করবো না। আপনি যা করার করে নিন”
কল কেটে গেলে ভাবলাম ঝামেলা বুঝি শেষ হলো। কিন্তু আসলে ঘটনা সেখান থেকেই শুরু হলো। কিছুক্ষণের মাঝে আমার ফোনে একটা ছবি এলো। সাথে সাথে কল।
“ছবিটা ভালো করে দেখুন মিস্টার। এরপর বলুন কেস কি কন্টিনিউ করবেন কি না?”
ছবিটা দেখে আমার মাথা চক্কর দিয়ে উঠলো। কি করবো কিছু বুঝতে পারছিলাম না। আশেপাশে সব যেন এক লহমায় বদলে গেল। আমি ‘থ’ হয়ে স্ক্রিনে তাকিয়ে আছি।

ইভান ভাই থামলো। এক টানা কথা বলতে বলতে এর মাঝেই রোশনি উৎসাহিত হয়ে জিজ্ঞেস করে বসলো,
“ছবিতে এমন কি ছিলো ইভান ভাই? যার জন্য তুমি এতটা এলোমেলো হয়ে পড়লো? তাড়াতাড়ি বলো, আমি অধির আগ্রহে বসে আছি”
ইভান ভাই ফের বলা শুরু করলো,
“ছবিটা রোদের ছিলো। রোদকে বাগানো বসিয়ে ভাবি, ঈশিতা, রোশনি এরা হলুদ মাখাচ্ছিলো। আর রোদের বিপরীতে কোনো এক বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে ওর দিকে গান পয়েন্ট করে রাখা। ছবিটা দেখার পর আমি থমকে গেছি। এর মাঝে ওপর পাশ থেকে ভেসে এলো কণ্ঠ স্বর,
“শুনলাম বিয়ে করছেন? আপনার বউ কিন্তু দেখতে মাশাআল্লাহ অনেক সুন্দরী। এতো সুন্দর একটা মেয়েকে শেষ করতে একটা গুলিই যথেষ্ট”

আমি তাড়াহুড়ো করে বলে উঠলাম,
“আপনি কে? কি চান? কোনোই বা এমন করছেন?”
অপর পাশের মানুষটা উচ্চ শব্দে হেসে উঠলো,
“এইতো আপনি সবে লাইনে এসেছেন মিস্টার। আমি আপনাকে একটা ঠিকানা দিচ্ছি আপনি সেই ঠিকানায় চলে আসুন। আমি কে? কি চাই? কেন এমন করছি সব জানতে পেরে যাবেন”
সেই মুহূর্তে আমি দোটানায় পরে গিয়েছিলাম। আর কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে আমার আকদ। আমি এখন বাড়ি যাবো নাকি তার দেওয়া জায়গায় যাবো? সিদ্ধান্ত নিলাম তার দেওয়া জায়গায় যাবো। মানুষটা যদি রোদের কিছু করে বসে? সেই মোতাবেক সেখানেই গেলাম। গিয়ে দেখি অপর দিকে মুখ করে একজন বসে আছে। আমার পায়ের শব্দে মানুষটা আমার দিকে ফিরতে ফিরতে বলল,

“আসুন মিস্টার ইভান, ওয়েলকাম”
খেয়াল করে দেখলাম এটা একটা মেয়ে। একটা মেয়ের এতো সাহস যে এতো কিছু করেছে। মেয়েটা আমায় দেখে কেমন করে যেন তাকালো। তার তাকানোর ধরণ ছিলো ভিন্ন। মেয়েটা উঠে এসে আমার আশেপাশে ঘুরতে ঘুরতে জিজ্ঞেস করলো,
“আসতো কোনো কষ্ট হয়নি তো?”
“বাজে না বোকে যেটা বলবেন তাড়াতাড়ি বলুন”
“এতো কিসের তারা মিস্টার? ও আপনার হবু বউ যে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। কিন্তু আপনি তো তাকে বিয়ে করতে পারবেন না। তাই তারা দেখিয়ে লাভ নেই। রিলেক্সে বসুন”

“কি বলছেন এসব? আর কেন বলছেন? মাথা ঠিক আছে আপনার। আপনি এসব আজেবাজে কথা বলছেন কেন?
“আরে এতো উতলা হচ্ছেন কেন? একটু বসুন রয়ে সয়ে কথা বলি। চা নাক কফি? কোনটা নিবেন বলুন”
“কোনোটাই না। আমার তারা আছে আপনি বললে বলুন না হয় আমি যাচ্ছি”
আমি চলে আসতে নিচ্ছিলাম এমন সময় মেয়েটা বলে উঠলো,
“আপনাকে আমায় বিয়ে করতে হবে”
“আর ইউ ক্রেজি? অর ম্যাড? আপনার মাথা ঠিক আছে? ডক্টর দেখান আমি যাচ্ছি”
“মিস্টার ইভান আপনি জানেন আমি কে? আমি ইলিয়াস পাঠান এর মেয়ে। আমার ক্ষমতা সম্পর্কে আপনার ধারণা আছে? আপনি এখান থেকে এক পা বাহিরে রাখবেন তো ওদিকে আপনার প্রাণ ভোমরাকে সুট করা হবে। ভেবে নিন চয়েস ইজ ইউরস”

“কেন এমন করছেন আপনি? কি চাই আপনার?”
মেয়েটার সহজ সাবলীল উত্তর,
“আপনাকে”
“মানে?”
মেয়েটা আমার অনেকটা কাছে এসে হিসহিসিয়ে বলল,
“আপনি আমার বাবার বিরুদ্ধে প্রমাণ জোগাড় করে তাকে গ্রেফতার করিয়েছেন। তাকে যাবজ্জীবন সাজা ভোগ করাবেন আর আমি আপনাকে এমনি এমনি ছেড়ে দিবো? ভাবলেন কিভাবে মিস্টার? ইচ্ছে তো ছিলো আপনাকে প্রাণে মেরে ফেলার তবে সেটা মারবো না। আপনাকে আমার ভালো লেগেছে তাই আপনার জন্য স্পেশাল সুযোগ। নাহয় আপনার প্রাণ ভোমরা আউট”
“আপনি আমায় মে*রে ফেলুন আমার এক ফোঁটাও আফসোস নেই। তবে আপনি আমার পরিবার কিংবা রোদের কোনো ক্ষতি করবেন না”

“আপনাকে মে*রে মজা নেই। আপনাকে মে*রে ফেললে তো সব মজাই শেষ। আপনাকে এক বারে মা*রবো না আমি। তিলে তিলে মা*রবো”
আমি চুপ করে বসে আছি। মনে হচ্ছে ঘোরের মাঝে ডুবে গিয়েছি। কি করবো কিছুই মাথায় আসছে না।
“কি ভাবলেন মিস্টার আমায় বিয়ে করবেন নাকি আপনার প্রাণ ভোমরাকে খতম করে ফেলবো”
“আপনি এমনটা করবেন না। আমি আপনাকে বিয়ে করতে পারবো না”
“তবে কি আমি…?”
“আপনি এমন কিছুই করবেন না। আমি রাজি”
অতঃপর আমাদের বিয়ে আয়োজন করা হয়। শুধু রেজিস্ট্রি হবে। কিন্তু কাগজ গুলো নকল ছিলো। আমি কাজীর সাথে কথা বলে আগেই নকল পেপার রেডি করিয়ে আনতে বলে দিয়েছিলাম। বিয়ে শেষে সবাই চলে গেল। পুরো রুমে শুধু মেয়েটা আর আমি। হঠাৎ মেয়েটা অদ্ভুত ভঙ্গিমায় উচ্চ স্বরে হাসতে শুরু করলো। মনে মনে ভাবলাম মেয়েটা বোধ হয় পা*গল হয়ে গেছে। অকস্মাৎ মেয়েটা জিজ্ঞেস করে বসলো,

“আমায় চিন্তে পেরেছো মিস্টার ইভান?”
মেয়েটার কথা শুনে কপাল কুঁচকে গেল। আমার জানা মতে আমি মেয়েটাকে এর আগে কখনো দেখিনি। তাকে চিনতে পারা তো দূরের কথা। মেয়েটা হয়তো আমার মনের কথা বুঝতে পারলো। তাই মেয়েটা নিজ থেকেই বলা শুরু করলো,
“বুঝেছি চিনতে পারো নি। আমি ইরা”
কিছুটা অবাকতার সুরে আওড়ালাম,
“ইরা”

“হ্যাঁ ইরা। তুমি আর আমি সেম কলেজে পড়তাম। তুমি আমার এক ব্যাচ সিনিয়র ছিলে। কলেজের প্রথম দিনই তোমাকে আমার পছন্দ হয়ে যায়। কিন্তু তুমি কখনোই আমায় পাত্তা দেওনি। সব সময় এটিটিউড নিয়ে থাকতে। এর পর সব সময় ফলো করতাম তোমায়। একদিন প্রপোজ করলে তুমি কি করলে? পুরো কলেজের সামনে তুমি আমায় থাপ্পড় মেরে বলেছিলে আমার মতো উগ্র, বেয়াদব, উচ্ছন্নে যাওয়া মেয়ে তোমার পছন্দ না। মেয়ে হতে হবে নরম, ভদ্র, সভ্য। সেদিন তুমি আমায় যথেষ্ট অপমান করেছিলে। পুরো কলেজ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখছিলো। শুধু মাত্র তোমার জন্য রাগে, দুঃখে আমি কলেজ ছেড়েছিলাম। সেই সাথে আমার পড়াশোনাও। তুমি আমার ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দিয়েছিলে”
একটু থেমে ইরা আবার বলা শুরু করলো,

“পৃথিবী টা গোল তাইনা মিস্টার ইভান? সেই জন্যই তো তুমি এখন আমার সামনে। তোমার জন্য আমার ক্যারিয়ার শেষ হয়েছে আর আমি পুরো তোমাকে ধ্বংস করবো। একেবারে না কিন্তু! তিলে তিলে শেষ করবো তোমায়। প্রথমে তোমার কাছের মানুষ গুলোকে তোমার থেকে একে একে কেড়ে নিবো। তোমায় একা করে দিবো। তারপর তোমায় ধীরে ধীরে ধ্বংস করবো। তুমি কোনো চাপ নিও না। হ্যাভ অ্যা রিলেক্স”

ইরা ওর কাজে কিছুটা সফলও হয়। ও প্রথমেই এসে তোমাদের আমার বিরুদ্ধে নিয়ে যায়। আর তোমরা সবাই আমার বিরুদ্ধে চলে যাও। তখন সত্যি বলতে আমি অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম। আমি ভাবতেও পারিনি এক লহমায় তোমরা আমার থেকে দূরে সরে যাবে। তারপরও আমি ভেঙ্গে পড়িনি। নিজের মতো করে প্রমাণ জোগাড় করতে থাকলাম। ইরা আমার আশেপাশে থাকায় ওর সকল ইনফরমেশন পেতে আমার তেমন বেগ পেতে হলো না। ও কি করে, কাঁদের সাথে কথা বলে সব ফলো করতাম। সেইদিন ঝামেলার পর ইরা একটা বড় ভুল করে বসে। তার ভিত্তিতে ওকে ধরা আমার জন্য আরো সহজ হয়ে গিয়েছিল। তারপর আর কি? সকল প্রমানের ভিত্তিতে আজ ভোরের দিকে ওরা অস্ত্র পাচার করতে নিলে ওদের হাতে নাতে ধরা হয়। এরপরের সকল ঘটনা তো তোমরা নিউজেই দেখেছো”

ইভান ভাই ধপ করে বসে পড়লো। রোশনি উৎসুক হয়ে জিজ্ঞেস করলো,
“তারমানে তুমি ওই ইরা চিরাকে বিয়ে করোনি? তুমি এখনো সিঙ্গেল?”
ইভান ভাই কাতর কণ্ঠে বললেন,
“হ্যাঁ”
রোশনি এক লাফ দিয়ে বলে উঠলো,
“ইয়াহু! ইভান ভাই সিঙ্গেল”

উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ১৫

সবাই অবাক দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকালো। বেচারি রোশনি সবাইকে ওর দিকে তাকাতে দেখে বেক্কেল বনে গেল। ও যে ভুল জায়গায় ভুল এক্সপ্রেশন দিয়ে ফেলেছে সেটা বুঝতে পেরে মুখটা কাচু মাচু করে বসে পড়লো।
আমার বুক চিরে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো। এই মানুষটা এতো কিছু সহ্য করেছে? ভাবতেই খারাপ লাগা কাজ করছে। ইভান ভাই ভর ছেড়ে দিয়ে সোফায় হেলান দিয়ে বসে আছে মানুষটার ওপর দিয়ে কম তো ধকল যায়নি! এরপরও যে উনি নিজেকে ঠিক রেখেছেন এই অনেক।

উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ১৭