উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ১৭

উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ১৭
আফিয়া আফরোজ আহি

আলো আঁধারের খেলা চলছে আকাশ জুড়ে। রাত হলেও আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ। পুরো আকাশ জুড়ে ঝলমল করছে চন্দ্র। তাহার রূপ ঝলকানি আলোয় বাহারে সেজে উঠেছে চতুর্দিক। রাতের বেলা হওয়া সত্ত্বেও চাঁদের আলোয় পুরো পুরি স্পষ্ট না হলেও অনেকটাই দেখা যাচ্ছে। ছাদে দোলানায় বসে দোল খাচ্ছি। খোলা চুল হাওয়ার তালে তালে দুলছে। আম্মুরা বলে রাতের বেলা চুল ছেড়ে ছাদে আসতে নেই। এতে নাকি সমস্যা হয়। ভুত প্রেত আছর করে। কিন্তু আমি সেসব শুনলে তো! আমি আবার এসবে ভয় পাইনা।দোলনায় দুলছি আর এর এক মনে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি। জীবনের সমীকরণ মিলানোর চেষ্টায় আছি। আমরা জীবন টাকে একভাবে সাজাতে চাই আর আল্লাহ তায়ালা আমাদের জীবনটাকে অন্য ভাবে সাজিয়ে দেয়। আমাদের ভাবনা, পরিকল্পনার বাহিরেও কতো কিছু ঘটে যায়। আমরা অবাক চোখে দেখি কিন্তু বুঝতে পারি না। সব কেমন এক লহমায় থমকে যায়, বদলে যায় জীবনের ছন্দ। যেই মানুষটা সব সময় আমাদের পাশে থাকে এক সময় সেই মানুষটা আমাদের ছেড়ে যায়। আবার যাকে আমরা কখনো কল্পনাও করিনা সেই মানুষটা আমাদের সর্ব সত্ত্বা জুড়ে রয়ে যায়। জীবন মাঝে মাঝে সিনেমাকেও হারিয়ে দেয়।

ধীর পায়ে ছাদের দরজা ঠেলে কেউ প্রবেশ করলো। পায়ের চলন তার শব্দহীন। একটু একটু করে এগিয়ে আসছে কাছে। একটা সময় একদম বরাবরই এসে দাঁড়ালো। নিজের খেয়ালে মত্ত থাকায় সামনের মানুষটাকে খেয়াল করলাম না।
“এতো রাতে এখানে কি করছিস?”
আনমনে জবাব দিলাম,
“ভাবছি”
“কি?”
দ্বিতীয় বার অপর পাশ থেকে প্রশ্ন পেয়ে ধ্যান ভেঙ্গে গেল। এখানে আমি ছাড়া অন্য কেউ তো ছিলো না। তাহলে কে জিজ্ঞেস করছে কথা গুলো? আকাশের থেকে দৃষ্টি সরিয়ে সামনে তাকালাম। আদ্র ভাই দাঁড়িয়ে আছে রেলিংয়ে হেলান দিয়ে। দোলনা থেকে রেলিংয়ের দুরুত্ব সর্বোচ্চ দু হাত হবে। উনি কখন এলো?

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

“বললি না তো কি ভাবছিলি”
“তেমন কিছুই না। জীবনের সমীকরণ গুলো নিয়ে ভাবছিলাম”
কথাটা শুনে আদ্র ভাই চুপ রইলো। উল্টো প্রশ্ন করলো না। হয়তো বুঝতে পেরেছে আমার কথার মানে। নীরবতায় ফের চাঁদ দেখায় মনোযোগী হলাম। না তাকিয়েও বুঝতে পারছি আদ্র ভাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তার চাহনি কেমন অন্য রকম। হঠাৎ কেমন অদ্ভুত কণ্ঠে প্রশ্ন করে বসলো,
“আফসোস হচ্ছে?”
ভ্রু কুঁচকে এলো। উনি কিসের কথা জিজ্ঞেস করছে?
“কেন?”
আদ্র ভাই কাঁপা কাঁপা স্বরে বলল,
“ইভানকে পেলি না বলে”

আদ্র ভাইয়ের কথা শুনে সময় নিলাম। কথা গুলো গুছিয়ে নিচ্ছি। কিছুক্ষন চুপ থেকে বললাম,
“ইভান ভাইকে পাইনি বলে কোনো আক্ষেপ নেই আমার। ভাগ্যে যে থাকবে আমি অবশেষে গিয়েও তাকে পাবো। ইভান ভাই আমার ভাগ্যে থাকলে আমি তাকে পেতাম। সে আমার ভাগ্যে নেই বলেই পাইনি। এতে আফসোসের কিছুই নেই। সবচেয়ে বড় কথা আল্লাহ তাঁয়ালা সর্ব শ্রেষ্ঠ পরিকল্পনা কারী। তিনি যা করেন আমাদের ভালোর জন্যই করেন। কোনটা আমাদের জন্য উপকারী কোনটা অপকারী এটা তিনি ভালো করেই জানেন। আল্লাহ তায়ালার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে দিয়ে আক্ষেপ কিংবা আফসোস কোনোটাই আমার নেই”
একটু থেমে বললাম,

“সত্যি কথা বলতে ইভান ভাই বিয়ে করেছে শুনে আমার মাঝে কোনো অনুভূতিই হয়নি। আমি ছিলাম সম্পর্ণ অনুভূতিহীন। একবারের জন্যও মনে হয়নি কেন তাকে পেলাম না। তাকে পেলে হয়তো জীবন অন্য রকম হতে পারতো। এগুলো একবারের জন্যও আমার মস্তিষ্কে আসেনি। কিন্তু আজকে তার কথা গুলো শুনে তার জন্য খারাপ লাগা কাজ করছিলো। তিনি যেই পরিস্থিতির শিকার হয়েছে সেটা তিনি ডিজার্ভ করে না। যেই সময়ে বাড়ির সবার তার পাশে থাকার কথা ছিলো সেই সময়টা তিনি একা একা লড়ে গেছেন। কতো প্রতিকূলতার সাথে তাকে লড়তে হয়েছে। এগুলো ভেবে তার জন্য খারাপ লাগছিলো। এর চাইতে বেশি কিছু না”

আমার কথা শেষ হতেই আচমকা আদ্র ভাই আমায় জড়িয়ে ধরলেন। হুট্ করে জড়িয়ে ধরায় ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। আদ্র ভাই আমায় আলিঙ্গনে আবদ্ধ রেখেই ধীর কণ্ঠে বলল,
“সব সময় একটা কথা মনে রাখবি আমরা আমাদের জন্য বেটার টা চয়েস করলে আল্লাহ তাঁয়ালা আমাদের জন্য বেস্ট টা রাখেন। তাই কখনো আক্ষেপ করবি না”
মাথা নেড়ে সায় জানালাম। আকদ এর পর এই প্রথম আদ্র ভাই আমায় জড়িয়ে ধরেছে। মনের মাঝে অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে। হৃদস্পন্দন অস্বাভাবিক গতিতে স্পন্দিত হচ্ছে। মনে হচ্ছে এই বুঝি আদ্র ভাই আমার হার্ট বিটের শব্দ বুঝতে পেরে যাবে। শিরদাড়া বেয়ে আলাদা এক শিহরণ বয়ে চলেছে। লজ্জায় গাল লাল হয়ে আসছে। এমন না যে আদ্র ভাই এর আগে কখনো আমায় জড়িয়ে ধরেনি তবে এবাবের ঘটনা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এর আগে দুজন ভাই-বোন অর্থাৎ কাজিন ছিলাম। আর এখন স্বামী- স্ত্রী। সম্পর্কের সমীকরণ ভিন্ন, অনুভূতিও ভিন্ন। খানিক ক্ষণ পর আদ্র ভাই ছাড়িয়ে নিয়ে বলল,

“চল আজকে তোকে মজার কিছু ঘটনা শোনাই”
দোলনায় একপ্রান্তে আমি অপর প্রান্তে আদ্র ভাই বসেছে। আদ্র ভাই আমার মাথাটা নিজের কোলে রেখে বলল,
“তু্ই শুয়ে থাক আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি”
ওনার কথা মতো ওনার কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে পড়লাম। আদ্র ভাই উৎসাহের সহিত বলে উঠলো,
“শোন একবার কি হয়েছে। আমার এক ফ্রেন্ড একটা মেয়েকে প্রপোজ করবে। অনেক দিন ধরে মেয়েটার পিছু ঘুরছে কিন্ত কিছু বলতে পারছে না। অতঃপর সিদ্ধান্তে নিলো একটা গিফ্ট সাথে একটা চিকুট দিবে। যেই ভাবা সেই কাজ ও সারারাত জেগে ভাবলো কি দেওয়া যায়? কি দেওয়া যায়? ভাবলো ফুলের তোড়া দিবে। পরের দিন মেয়েটা আমাদের সামনে দিয়ে যাচ্ছি তো আমাদের মেয়ে ফ্রেন্ড মিহি ওকে ডাকলো। মেয়েটা দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করলো,

“কিছু বলবেন আপু?”
“আমার বন্ধু তোমাকে কিছু বলতে চায়”
নাদিম ধীর পায়ে এগিয়ে গিয়ে মেয়েটার দিকে ফুলের তোড়া আর কাগজ বাড়িয়ে দিলো। মেয়েটা কাগজ টা খুলে অদ্ভুত ভাবে তাকালো ওর দিকে। কড়া স্বরে জিজ্ঞেস করলো,
“আপনি এটা বুঝে শুনেই লিখেছেন তো?”
নাদিম লাজুক স্বরে বলল,
“হ্যাঁ”

অমনি মেয়েটা হাতের ফুলের তোরা দিয়ে ওকে মা*রা শুরু করলো। বেধড়ক মাইর যাকে বলে। মা*রতে মা*রতে বলতে থাকলো,
“হা*রা*মজাদা তোর শখ তো কম না। তু্ই আসছিস আমায় এগুলো বলতে? তোর কি আমাকে দেখে এমন মনে হয়?”
মেয়েটা একচোট মে*রে ফুল ওর মুখে ছুড়ে দিয়ে কাগজটা ফেলে চলে গেল। আমরা সবাই অবাক! এমন কি হলো যে মেয়েটা এভাবে রিয়েক্ট করলো। মিহি যেয়ে কাগজটা তুলল।
“মেয়েটা যা করছে একদম ঠিক করেছে। তোকে এটাই করা দরকার ছিলো। হাদারাম গাধা একটা”
একে একে আমরা সবাই কাগজটা পড়লাম। আমাদের হাসি দেখে কে। হাসতে হাসতে একজন আরেকজনের ওপর পড়ে যাচ্ছি।”
আমি কপাল কুঁচকে জিজ্ঞেস করলাম,
“কাগজে কি এমন লেখা ছিলো?”
“কাগজে লেখা ছিলো,

“উইল ইউ বি মাইন আয়া? মেয়েটার নাম রায়া ছিলো। এক্সাইটমেন্টে রায়ার বদলে আয়া লিখে দিয়েছে”
আদ্র ভাইয়ের কথা শুনে খিল খিল করে হেসে দিলাম। উনিও হাসছে। হাসি থামিয়ে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে রইলো আমার দিকে। নজর সরছে না উনার। হাসি থামিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
“কি দেখছো?”
“তোর হাসি। তোকে হাসলে কতোটা সুন্দর লাগে। একদম রৌদ্রময়ী লাগে, আমার রৌদ্রময়ী”
আদ্র ভাই শেষের কথা গুলো বিড়বিড় করে বলল। অস্পষ্ট হওয়ার শুনতে পাইনি। দুজন মিলে গল্প আড্ডায় সময় বয়ে গেল নিজ গতিতে।

সকালের মিষ্টি আলো চোখে পড়তেই ঘুম হাল্কা হয়ে এলো। ঘুম ভেঙ্গে গেলেও উষ্ণতা ছেড়ে উঠতে ইচ্ছে করছে না। মন চাচ্ছে কম্বল জড়িয়ে আরো কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে থাকি। পাশে থাকা ফোন বিকট শব্দে বেজে উঠলো। হাতড়িয়ে ফোন খুঁজছি। আশেপাশে কোথাও পাচ্ছি না। রিংটোনের শব্দে বিরক্ত লাগছে। অগত্যা মুখ আঁধার করে উঠে বসলাম। বজ্জাত ফোনটা পড়ে আছে টেবিলের ওপরে। মেজাজ খারাপ হলো। এই অবেলায় কে কল দিয়েছে? মনে মনে ফন্দি আটলাম যেই হোক তাকে আচ্ছা মতো ধোলাই দিবো। সেই ভাবা সেই কাজ। ফোন তুলে চোখের সামনে নিতেই মেজাজ তুঙ্গে উঠে গেল। ইচ্ছে হলো ফোনটা তুলে আছাড় দেই। না না আমার তো সাধের ফোন কোন দুঃখে আছাড় দিতে যাবো। আছাড় তো দিবো অফিসের লোক গুলোকে। এই অফিসের লোকেদের খেয়ে দেয়ে কি কোন কাজ নেই? সক্কাল সক্কাল মানুষদের ফোন দিয়ে বিরক্ত করা শুরু করে!

খারাপ মেজাজ কে শান্ত করতে ব্যালকনিতে এলাম। সকালের শীতল হাওয়া, সাথে ব্যালকনি জুড়ে বিভিন্ন ফুলেদের সুবাস। শীতল হাওয়ায় শরীরে শীত শীত অনুভূত হচ্ছে। গুটি শুটি মেরে বারান্দায় রাখা দোলনায় বসে পড়লাম। কুয়াশায় আচ্ছন্ন চারপাশ। শিশির বিন্দু ছেয়ে আছে ঘাসের ওপর। শিশিরের ওপর রোদের আলো পড়ায় একদম মুক্তর ন্যায় ঝলমল করছে। মন মুগ্ধ করার মতো পরিবেশ। এর সাথে ধোয়া ওঠা চা হলে দিনের শুরুটা একদম জমে যেত। উঠে হাঁটা দিলাম নিচে। রান্না ঘরে আম্মুরা খাবার বানাচ্ছে। আমায় দেখে বড় আম্মু জিজ্ঞেস করলো,
“এতো সকালে রান্নাঘরে কি করছিস রোদ সোনা?”
“এই শীতের সকালে কুয়াশার সাথে এক কাপ ধোয়া ওঠা চা হলে জমে যেত। তাই চা বানাতে এলাম”
“তু্ই বস আমি বানিয়ে দিচ্ছি”

বড় আম্মুর কথা মতো রান্নাঘরের কেবিনেটের ওপর বসে পড়লাম। পাশ থেকে আম্মু বলে উঠলো,
“কতো কাল আর করে দিবে আপা। বিয়ে হয়েছে, দুদিন পর শশুর বাড়ি যাবে। এখনো কি গালে তুলে খাইয়ে দেওয়ার বয়স?”
“বেশি বড় হয়েছে নাকি? বাচ্চা একটা মেয়ে। আর আমাদের মেয়েরা তো এমন না যে কিছুই পারে না। ওরা কম বেশি সবই পারে। বাবার বাড়িতেও যদি কাজ করে খেতে হয় তাহলে বাবার বাড়ি আর শশুর বাড়ির মধ্যে পার্থক্য কোথায়? আর আপা এমন না যে ওর খুঁত ধরবে। দজ্জাল শাশুরিদের মতো করবে”
“আরো লাই দিয়ে দিয়ে মাথায় তোলো মেয়েকে। পরে কুঁড়ে হোক”
“হলে হবে। তু্ই চুপ কর তো। আমার মেয়েকে আমি বানিয়ে দিচ্ছি তোর কি?”

বড় আম্মুর কথার বিপরীতে আম্মু আর কিছু বলল না। আম্মুর চুপসে যাওয়া মুখ দেখে মিটিমিটি হাসছি। বড় আম্মুর কথা গুলো ভাল্লেগেছে। আম্মু এমনই করে। কিছু হলেই ভুল ধরা শুরু করে। শাশুড়িদের মতো কথায় কথায় শাসন করে। বড় আম্মু এক মগ চা বানিয়ে আমার হাতে দিয়ে বলল,
“এই নে। এই ঠান্ডায় বাহিরে ঘুরঘুর করার দরকার নেই”
মাথা নেড়ে সায় জানিয়ে চলে এলাম। দোলনায় কম্বল জড়িয়ে বসে বসে প্রকৃতি উপভোগ করছি তার সাথে ধোয়া ওঠা চা। সব মিলিয়ে সময়টা উপভোগ্য।

খাবার টেবিলে আমাদের সকল কাজিনদের মেলা বসেছে। অভ্র ভাই, ভাবি, ঈশিতা আপু, ইভা, রোশনি, আমি, শুভ ভাই, রুদ্র ভাইয়া। ইভান ভাই বাড়ি নেই। গতকাল রাতে বেরিয়েছে এখনো ফিরেনি। অনেক দিন বাদে সবাই একসাথে বসে আড্ডা হচ্ছে। আমার পাশের চেয়ার ফাঁকা পরে আছে। অপর দিকে ঈশিতা আপু বসেছে। আচমকা কেউ পাশে বসলো। পাশ ফিরে তাকাতেই দেখলাম আদ্র ভাই বসেছে। ওনার দিক থেকে দৃষ্টি সরিয়ে ঈশিতা আপুর সাথে কথা বলায় মগ্ন হলাম। পাশ থেকে ফিস ফিস কণ্ঠে ভেসে এলো,
“দশটা না পাঁচটা না একটা মাত্র বরকে রেখে খেতে বসে গেছিস কি নিষ্ঠুর বউ তু্ই। এতটা নিষ্ঠুর না হলেও পারতি”
“তুমি পড়ে পড়ে ঘুমালে আমি কি করবো বলো?”

“কি করবি মানে? যেয়ে মধুর কণ্ঠে ডাকবি। ওগো শুনছো, সকাল হয়ে গেছে উঠে পড়ো”
“আমাকে কি তোমার সেকেলের বউ মনে হয়? ওগো কিগো বলবো?”
“বউ তো বউই। সেটা হোক একালের বা সেকেলের”
“আমি পারবো না”
ফিসফিস করে দুজন কথা বলছি। পাশে থাকা ঈশিতা আপু বলে উঠলো,
“আদ্র ভাই শুধু বউয়ের সাথে ফিসফিস করে প্রেম করলে হবে? আমাদেরও একটু পাত্তা দেও। আফটার অল আমরা তোমার শা*লিকা হই”
আদ্র ভাই বিড়বিড় করে বলল,

“বউ একটু সুন্দর করে কথাই বলছে না তার সাথে আবার প্রেম। নির্দয় বউ”
চোখ রাঙিয়ে আদ্র ভাইয়ের দিকে তাকালাম। উনি কি শুরু করেছে? সবার সামনে আমায় লজ্জায় ফেলতে চাইছে বজ্জাত লোকটা।

ড্রয়িং রুমে বসে আড্ডা দিচ্ছি আমি, রোশনি, ইভা আর ঈশিতা আপু। সরকারি ছুটি থাকায় সবাই বাসায়। আড্ডা দেওয়ার এক সময় রোশনি ফট করে বলে উঠলো,
“চলো মুভি দেখি”
আইডিয়া মন্দ না। অনেক দিন হলো সবাই একসাথে বসে মুভি দেখা হয়না। রোশনির কথায় সায় জানিয়ে টিভির চালু করলাম। নিউজ চ্যানেলে দেওয়া। চোখ আটকে পড়লো ব্রেকিং নিউজের ওপর। গোটা গোটা অক্ষরে টিভির নিচে হেড লাইনে ভেসে ওঠছে লেখা গুলো।

উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ১৬

“অস্ত্র পাচার মামলায় গ্রেফতার মিস ইরা গতকাল রাতে জেল খানা থেকে পালাতে নিলে থামতে বললে না থামায় তাকে ক্রস ফায়ার করা হয়”

উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ১৮