উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ২৯

উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ২৯
আফিয়া আফরোজ আহি

গোধূলি বিকেলে আকাশে পেঁজো মেঘেদের ভেলা। লাল আভায় রাঙিয়ে আছে পুরো আকাশটা। ব্যালকনিতে বসে পড়ছি আর প্রকৃতি বিলাস করছি। রুমে বসে পড়তে বিরক্ত লাগছিলো। বদ্ধ রুমে কতক্ষনই বা ভালো লাগে! তাই পড়ার সাথে একটু প্রকৃতি বিলাস করতেও চলে এলাম। রসায়ন বই পড়ছি। পড়ছি কম মুখে কলম গুঁজে পা নাড়াচ্ছি বেশি। প্রতি বার পা নাড়ানোর ফলে রিন ঝিন শব্দ হচ্ছে। রিন ঝিন শব্দ বেশ ভালো লাগছে। মনটা ফুরফুরে হয়ে উঠছে। আমার অনেক পছন্দের নুপুর এটা। আদ্র ভাই গিফ্ট করেছে। যেমন সুন্দর মানুষটা তেমনই সুন্দর তার পছন্দ। এক দেখায় নুপুরটার প্রেমে পড়তে বাধ্য হয়েছি। কি ভ*য়া*ন*ক অস্থিরতার মাঝে মানুষটা আমায় এটা গিফ্ট করেছিল। মনে পড়ে গেল সেই দিনের ঘটনা….

দিনটা ছিলো এইচ এস সি পরীক্ষার রেজাল্ট দেওয়ার দিন। টেনশনে পুরো ড্রয়িং রুম জুড়ে পায়চারি করছি। দাঁত দিয়ে নখ কেটে চলেছি অবিরাম। টেনশনে খাওয়া দাওয়া সব লাটে উঠেছে আমার। আমার আর ইভার টেনশন দেখে বাড়ি শুদ্ধ মানুষও টেনশন করছে। সকাল থেকে এমন কেউ বাদ যায়নি যে আমাদের খাওয়ার জন্য বলেনি। কিন্তু আমাদের এক কথা, রেজাল্ট না দেওয়া অবধি আমরা কিছুই খাবো না। ইভা আর আমি দুজন দুজনার মুখ চাওয়া চাওয়ি করছি। রেজাল্ট যদি খারাপ হয় তাহলে আমাদের স্বপ্ন শেষ। ভেঙ্গে চুরে গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে যাবে। কি হবে কিছু বুঝতে পারছি না। পরীক্ষা তো আলহামদুলিল্লাহ ভালোই দিয়েছি। শুনেছি এবার নাকি কড়াকড়ি ভাবে খাতা দেখা হবে। পাস করবো এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু যদি প্লাস ছুটে যায় তাহলে আমার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নের এখানেই সমাপ্তি। এতদিনের পরিশ্রম সব বৃথা যাবে।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

রেজাল্ট দিবে বলে আদ্র ভাইও আজকে অফিসে যায়নি। ফুফাকে অফিসে বসিয়ে নিজে আমাদের বাড়ি চলে এসেছে। ঈশিতা আপু, প্রিয়ম ভাবি আমাদের বুঝাচ্ছেন। এতো টেনশন নিতে মানা করছেন। কিন্তু আমি শুনলে তো! যতোই বলি টেনশন করবো না, তবুও টেনশন নিজে নিজেই চলে আসে। টেনশনে বসে বসে দাঁত দিয়ে নখ কাটছি।
ল্যাপটপ নিয়ে বসে পড়েছে রুদ্র ভাইয়া আর শুভ ভাই। ভাইয়ার ও আজকে মেডিক্যালে ক্লাস নেই। ডিউটি আছে তবে সেটা বিকেলের দিকে। ঘড়িতে এগারোটা বেজে তেত্রিশ মিনিট। আর কয়েক মিনিট, তারপরই কাঙ্খিত সময় চলে আসবে। সময় যেন কাটছেই না। দুশ্চিন্তার সময় গুলো এতো দীর্ঘ হয় কেন? সময় কেন যাচ্ছে না? অপর দিক দিয়ে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চিন্তা। কি হবে? হটাৎ খেয়াল করলাম ইভা ফুরফুরে মেজাজে বসে আছে। কপালে ভাজ পড়লো! কি হলো ঘটনা? একটু আগেই না ও টেনশন করছিলো? এখন এতো চিল মুডে আছে কিভাবে? কাছে যেয়ে পাশে বসে জিজ্ঞেস করলাম,

“হুট্ করে এমন স্বাভাবিক মুডে এলি কি করে? কাহিনী কি?”
ইভা ফিসফিস করে বলল,
“আমি আগে থেকেই চিল মুডে ছিলাম এতক্ষন শুধু নাটক করেছি। মনে মনে দোয়া করছি প্লাস যেন না আসে তাহলে এই মেডিকেল নামক প্যারা থেকে জান ছুটবে আমার। ভাইয়ার ভয়ে কিছু বলতেও পারছি না”
একটু থেমে বলল,
“দোয়া কর আমি যেন ফেল করি আর আব্বু তাড়াতাড়ি বিয়ে টা বিয়ে দেয়। শা*লা*র জীবন ধ্বংস করা পড়াশোনা আর ভালো লাগছে না। এর চেয়ে বিয়ে করে সংসার করবো, জামাইয়ের সাথে ঘুরবো ফিরবে এটাই ভালো আমার জন্য”

এই মেয়ের কথা শুনে আমার মাথা ঘুরাচ্ছে। ও কি বলল সব যেন মাথার ওপর দিয়েই গেল।
“তোর যদি টেনশন নাই হয় তাহলে না খেয়ে বসে আছিস কেন?”
“আরে একটু ঢং করতে হবে না? বাবা-মাকে তো বোজাতে হবে তাদের মেয়ে কতো পড়ুয়া। আমি শেষ পর্যন্ত ট্রাই করেছি কিন্তু হয়নি”
ইভার কথা শুনে মাথা চক্কর দিচ্ছে। তাহলে এই ছিলো হতচ্ছাড়ির মনে? এই জন্যই তো বলি ইভা রানী এতো কুল মুডে আছে কি করে? এই কাহিনী তাহলে? কিন্তু আমার তো টেনশন হচ্ছে। রেজাল্ট খারাপ হলে আদ্র ভাইকে মুখ দেখাবো কি করে? উনি কতো কষ্ট করেছেন! কতো খেটেছেন আমার পিছনে? মনে মনে প্রার্থনা করলাম,

“আল্লাহ মান সম্মান বাঁচিও। সবাই যেন সন্তুষ্ট হয় আমার রেজাল্টে”
অবশেষে চলে এলো সেই মাহেন্দ্র ক্ষণ। ঘড়িতে কাটায় কাটায় বারো টা বেজে গেছে। এবার রেজাল্ট চেক করার পালা। রুদ্র ভাইয়া আমার রেজাল্ট বের করবে আর শুভ ভাই ইভার। আদ্র ভাইয়ের হাত শক্ত করে ধরে বসে আছি। উনি আমায় ভরসা দিচ্ছেন যা হবে ভালোই হবে। হৃদস্পন্দন অস্বাভাবিক গতিতে বেড়ে চলেছে। আচমকা রুদ্র ভাইয়ার মুখ কালো হয়ে গেল। আদ্র ভাই জিজ্ঞেস করলো,
“কি হয়েছে রুদ্র? রেজাল্ট কি এসেছে? ভালো হয়নি?”

রুদ্র ভাইয়া মাথা নেড়ে নাকোচ করলো। এক আকাশ সমান আশা নিয়ে বসে থাকা আমিটার মনটা এক নিমিষেই ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। আদ্র ভাইয়ের হাত থেকে নিজের হাত ছুটিয়ে দৌড়ে চলে এলাম। রুমের দরজার আটকে বসে পড়লাম ফ্লোরে। কান্নারা দলা পাকিয়ে বেরিয়ে আসতে চাইছে। আমার এতো কষ্ট,এতো পরিশ্রম কি তবে বৃথা গেল? আমার ডক্টর হওয়ার স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে যাবে? এই জীবনে আমার আর শখের এপ্রোন পড়া হবে না! কান্না আটকে রাখতে না পেরে কেঁদে ফেললাম। এর মাঝেই দরজায় ঠক ঠক শব্দ। আমার সেদিকে খেয়াল নেই। আমি আমার মতো কান্না কড়ায় ব্যাস্ত। ওপাশ থেকে ব্যাস্ত গলার স্বর,
“রোদ দরজা খোল? দরজা আটকে কি করছিস?উল্টোপাল্টা কিছু করবি না। আমি বলছি দরজার খোল”

কথা গুলো যেন আমার কানে পৌঁছাচ্ছেই না। আমি এক ঘোরের মাঝে আটকে আছি। আমার স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে। এখন আমি কি করবো? আদ্র ভাইকে মুখ দেখাবো কি করে? রাত জেগে এতো খেটেছে মানুষটা। অঝোরে কেঁদে চলেছি। অপর পাশের মানুষটা দরজা ধাক্কাতে ধাক্কাতে কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে কোথায় যেন চলে গেল। একটু পর ব্যালকনিতে শব্দ হলো। আমার সেদিকে বিন্দু মাত্র খেয়াল নেই। মুহূর্তের ব্যাবধনের আমার সামনে এসে দাঁড়ালো কেউ। আমার দু বাহু তুলে আমায় উঠিয়ে দাঁড় করলো। সামনের মানুষটাকে দেখে কান্না আটকাতে পারলাম না। হুট্ করে তাকে জড়িয়ে ধরলাম।। কান্না করতে করতে হেঁচকি উঠে গেছে। আদ্র ভাই ব্যাস্ত গলায় বলল,

“বোকা মেয়ে কান্না করছিস কেন? কি হয়েছে?”
“আমি ব্যার্থ আদ্র ভাই। আমি পারিনি আমার স্বপ্ন পূরণ করতে। আমি হেরে গেছি, আমি হেরে গেছি বড্ড বাজে ভাবে”
“কে বলল আমার রৌদ্রময়ী হেরে গেছে? কান্না বন্ধ করে আমার কথাটা একবার শোন”
আদ্র ভাইয়ের কথা শুনে কান্না অটোমেটিকলি থেমে গেছে। কপালে ভাজ ফেল জিজ্ঞেস করলাম,
“মানে কি বলছো?”
“তুই গোল্ডেন পেয়েছিস। সব সাবজেক্টে প্লাস এসেছে”
অবাক নয়নে শুধালাম,
“কি বলছো? রুদ্র ভাই যে বলল রেজাল্ট ভালো হয়নি? সেটা?”
“ও মজা করে বলেছে”
একটু থেমে ফের বলল,
“এতো টুকু বিষয়ে এভাবে কান্না করতে হয়? আমার রৌদ্রময়ী কি এতোই বোকা মেয়ে নাকি? তুই স্ট্রং না? এতো অল্পতে ভেঙ্গে পড়লে হবে? তোকে একবার বলেছি না কান্না করলে তোকে দেখতে বিশ্রী লাগে? কান্না করবি না কখনো”

নাক টানাতে টানতে বললাম,
“তো কি করবো? আমার ডাক্তার হওয়ার সপ্ন আমার চোখের সামনে ভেঙ্গে যাচ্ছে আর আমি বসে বসে দেখবো! আমার খারাপ লাগবে না বুঝি! তার ওপর তোমার এতো পরিশ্রম সবই তো বৃথা যেত”
আদ্র ভাই কিছু বলবে তার আগে রুদ্র ভাইয়া দরজা দিয়ে উঁকি দিয়ে বলল,
“সরি বনু”
ওকে দেখে রাগটা মাথা চারা দিয়ে উঠলো। রাগে ফোঁস করে চিল্লিয়ে বলে উঠলাম,
“রুদ্র ভাইয়ার বাচ্চা। শ*য়*তা*ন, ই*ত*র প্রজাতির প্রাণী, বদমাইশ টা। আজকে যদি আমি তোমায় মা*ইর না খাইয়েছি তাহলে আমার নাম রোদ না”
আদ্র ভাই জড়িয়ে ধরা অবস্থায় বলল,

“শান্ত হ”
“আমি শান্ত হতে পারছি না। তুমি আমায় ছাড়ো। আজকে ওই ব*জ্জা*ত টার একদিন নাহয় আমার একদিন। ওকে আজ আমি খু*ন করবো। শ*য়*তা*ন ছেলে”
আদ্র ভাইয়ের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ছুটলাম রুদ্র ভাইয়ার পিছু। বজ্জাত টা আমায় কাঁদিয়ে ছেড়েছে। ওর আজকে খবর আছে। ভাইয়া আগে আগে আমি ওর পিছনে। ছুটতে ছুটতে ড্রয়িং রুমে এসে পড়েছি। পুরো ড্রয়িং রুম জুড়ে দুজন ছুটোছুটি করছি। কেউ থামাতে পারছে না আমাদের। ভাইয়া যেয়ে লুকিয়েছে বড় আম্মুর পিছনে। বড় আম্মুকে বললাম,
“বড় আম্মু ভাইয়াকে ধরো, বদমাইশটা কাঁদিয়েছে আমায়”
বড় আম্মু ভাইয়ার কান মুলে ধরলো,
“রুদ্র তোর সাহস তো কম না তুই আমাদের রোদ সোনাকে কাঁদিয়েছিস? তোকে আজকে শুলে চড়ানো হবে। দাঁড়া আজকে তোর বড় চাচ্চু আসুক। এরপর তোর একটা ব্যাবস্থা করছি”
আমাকে উদ্দেশ্য করে বলল,

“আর রাগ করে না সোনা। তোর বড় আব্বু এসে রুদ্রর বিচার করবে। এভাবে দৌড়াদৌড়ি করিস না পড়ে ব্যাথা পাবি”
বড় আম্মুর কথায় শান্ত হয়ে বসলাম। বেচারি ইভা গাল ফুলিয়ে মুখ ভার করে বসে আছে এক কোণে।
“কিরে তোর আবার কি হলো? গাল ফুলিয়ে বসে আছিস কেন?”
“আমার হতে হতে যাওয়া বিয়েটা আর হবে না রে বনু! জামাইটা মনে হয় আরো কয়েক বছর সিঙ্গেলই কাটাবে। বেচারার দুঃখে কান্না পাচ্ছে”
“কেন কি হয়েছে? তোর রেজাল্ট কি এসেছে?”
ইভা মুখটা কাঁদো কাঁদো করে বলল,
“প্লাস এসেছে। এবার আমায় আর কেউ পড়াশোনা নামক অ*ত্যা*চারের হাত থেকে রক্ষা করতে পারবে না। আমার আর এ জনমে জামাইয়ের মুখ দেখা হলো নারে বনু”
ইভার কথা শুনে হাসতে হাসতে ঢোলে পড়ছি ওর গাঁয়ে। আহারে বেচারির কি কষ্ট! দূরে দাঁড়িয়ে বুকে হাত গুঁজে আমার পানে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে এক জোড়া মুগ্ধ আঁখি। আঁখির মালিক বিড়বিড় করে বলে উঠোলো,
“এই কাঁদছে, এই হাসছে পা*গলী একটা”

কিছুক্ষনের মাঝে বাড়িতে আগমন হয় বড় আব্বু, আর আমার আব্বুর। দুজনে সাথে করে পারে না গোটা মিষ্টির দোকানটাই নিয়ে আসে। এর পাঁচ মিনিটের মাঝে ফুপ্পিরাও এসে হাজির হয়েছে। এ যেন এক মিলন মেলা। হটাৎ খেয়াল করলাম আশেপাশে কোথাও আদ্র ভাই নেই। উনি আবার কোথায় গেলেন? সবাই যার যার মতো কথা বলছে আর আমি আমার উনিকে খুঁজে বেড়াচ্ছি। আমায় উঁকি ঝুঁকি দিতে দেখে প্রিয়ম ভাবি জিজ্ঞেস করলো,
“কাউকে খুঁজছো রোদ?”
“আদ্র ভাইকে দেখেছো? একটু আগেই তো এখানে ছিলেন। হঠাৎ উনি কোথায় গেলেন?”
ভাবি হেসে বলল,

“তোমার উনি কে দেখলাম বাহিরের দিকে যেতে”
মিনিট দশের মাথায় হাত ভর্তি মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে ঢুকলেন উনি। বড় আম্মু দেখে বলল,
“তোর মিষ্টি আনার কি দরকার ছিলো বাবা? তোর মামুরা তো অনেক এনেছে”
“আমার দশটা না, পাঁচটা না একটা মাত্র বউ পরীক্ষায় এতো ভালো রেজাল্ট করেছে পুরো এলাকায় মিষ্টি না বিলালে হবে?”

বাড়িতে উৎসব মুখর পরিবেশ। নিচে সবার হই হুল্লোড়ে কিছুটা বিরক্ত হয়ে ছাদে এসেছি। দক্ষিনা বাতাস বইছে। হাওয়ার তালে তালে ফুল গাছে গুলো দুলছে। তার সাথে পাল্লা দিয়ে উড়ছে আমার উন্মুক্ত কেশ গুচ্ছ। আজকে রোদের তেজ অনেকটা কম। বিকেলে হয়ে যাওয়ায় রোদ তির্যক ভাবে পড়ছে। দোলনায় বসে দোল খাচ্ছি। মনটা ফুরফুরে হয়ে গেছে। অবশেষে আমি আমার স্বপ্নের আরো একধাপ কাছে এগিয়ে গেলাম। ইচ্ছে করছে খুশিতে ডান্স দেই। যেই ভাবা সেই কাজ। এক ছুটে রুমে চলে এলাম। বক্সে গান ছেড়ে ইচ্ছে মতো নাচছি। হঠাৎ চোখ পড়লো দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা আদ্র ভাইয়ের দিকে। উনি দরজায় হেলান দিয়ে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে। ওনাকে নিজের দিকে তাকাতে দেখে নাচ সেখানেই থামিয়ে দিলাম। আদ্র ভাই একটু একটু করে এগিয়ে আসছে আমার দিকে। ওনাকে আসতে দেখে পিছিয়ে যাচ্ছি। পিছনে যেতে যেতে পা বেঝে গেল বিছানায় সাথে। পিছনে যাওয়ার আর জায়গা নেই। আদ্র ভাই কাছে এসে ফিসফিসিয়ে বলল,

“তুই এতো ভালো নাচিস আগে বলিস নিতে? আজকে না এলে তো সিন্ টাই মিস করে ফেলতাম। জীবনে একবার হলেও তোর সাথে নাচতে হবে কি বলিস?”
আদ্র ভাইয়ের নেশালো আঁখি। ঔ নেশা জড়ানো আঁখিতে আমি খু*ন হয়ে যাচ্ছি বারংবার। আদ্র ভাই কিছুটা ঝুঁকে এলো আমার দিকে। পিছনে হেলতে গিয়ে ধপাস করে বিছানায় পড়ে গেলাম। আদ্র ভাই টেনে উঠিয়ে বসিয়ে দিলেন। উনি কি চাইছেন সব আমার মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছে। আদ্র ভাই নিচে হাঁটু মুড়ে বসলেন। অতঃপর আমার এক পা তুলে নিলেন তার উরুর ওপর। পকেট হাতড়ে বের করলেন এক জোড়া নুপুর। নুপুর গুলো বেশ সুন্দর। নুপুর গুলো দেখে ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। দাদুমনি আমায় একজোড়া নুপুর গিফ্ট করেছিল।

নুপুর আমার অনেক ভালোবাসার ছিলো। নুপুরের রিন ঝিন শব্দ আমায় মাতোয়ারা করে তোলে। এমনই একদিন ইভা আর আমি বাগানে খেলছিলাম। খেলতে খেলতে এক পায়ের নুপুর কোথায় যে পড়েছে জানি না। যখন খেয়াল হয়েছে তখন আমার সেকি কান্না। আমার কান্না দেখে বাড়ি শুদ্ধ মানুষ নুপুর খুঁজতে নেমে পড়েছিলো কিন্তু পায়নি। এর পর থেকে আমি আর কখনো নুপুর পড়িনি। আম্মু বলেছিলো নতুন বানিয়ে দিবে আমি না করে দিয়েছি। আদ্রর হাতে নুপুর দেখে আবেগে আপ্লুত হয়ে গেলাম। আমার ভালোবাসা! আদ্র ভাই নিজ হাতে দু পায়ে পড়িয়ে দিলেন।

উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ২৮

অকস্নাৎ ওষ্ঠ ছুঁইয়ে দিলেন চরণে। ওনার স্পর্শে শিউরে উঠলাম। শিরদাড়া বেয়ে নেমে গেল এক শীতল হাওয়া।
“অমায়িক রেজাল্ট করার জন্য শুভেচ্ছা আমার রৌদ্রময়ীকে। দোয়া করি এভাবেই সকল সফলতা ছুঁয়ে দেখুক আমার রৌদ্রময়ী। সফলতার উচ্চ শিখরে পৌঁছে যাক সে। এতে আমার যা যা করতে হবে আমি সব করতে রাজি আছি”

উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ৩০