উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ৬

উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ৬
আফিয়া আফরোজ আহি

সূর্য পূর্ব আকাশে উদিত হচ্ছে। রাতের সকল আঁধারের অবসান ঘটিয়ে আগমন হচ্ছে স্নিগ্ধ এক সকলের। স্নিগ্ধতায় পরিপূর্ণ নতুন দিন। সকালের প্রথম প্রহরের কিরণ আঁখিদয়ের ওপর পড়লে ঘুম ছুটে গেল। চোখ কচলে উঠে বসলাম। কাল ইভান ভাইয়ের ওপর রাগ করে রাতে না খেয়ে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। তাই সকাল সকালই ঘুম ভেঙ্গে গেল। উঠে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম। বেরিয়ে হাঁটা দিলাম ব্যালকনির দিকে।
ব্যালকনি থেকে বাগান আবছা আবছা দেখা যাচ্ছে। পুরো ব্যালকনি জুড়ে ডালিয়া, নয়নতারা, গোলাপ ফুটে আছে। আমার ভালোবাসার ফুল গাছ গুলো। বাগানে গাঁদা ফুল গাছে ফুল ফুটেছে। এক ঝাঁক হলুদ রঙা গাঁদা ফুলে ছেয়ে আছে বাগানের এক পাশটা। তারই পাশে গাঢ় গোলাপি রঙা গোলাপ ফুটে আছে। ফুলগুলোর দিকে তাকালেই মনে হচ্ছে ওরা হাত বাড়িয়ে আমায় ডাকছে। আলতো হাতে ওদের ছুঁইয়ে দেওয়ার জন্য। মনের মাঝে লোভ জাগছে। তাই দেরি না করে বেরিয়ে পড়লাম।

সময়টা ডিসেম্বরের শুরু দিকে হওয়ায় সকাল সকাল কুয়াশায় ঢেকে আছে চারপাশ। শীত অনুভূত হলেও গাঁয়ে কিছু জড়ানোর প্রয়োজন বোধ করলাম না। গাঁয়ে সুন্দর করে ওড়না পেঁচিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম। বাগানে পা রাখতেই নজর পড়লো শিশিরে ভেজা ঘাস গুলোর দিকে। শিশির বিন্দু গুলো যেন বিছিয়ে আছে ঘাসের ওপর। পায়ের জুতা খুলে খালি পায়ে হাঁটা শুরু করলাম। বিন্দু বিন্দু শিশির পায়ে লাগতেই ঠান্ডায় শিউরে উঠছে শরীর। শরীর শির শির করেছে কিন্তু অনুভূতি টা সুন্দর। গাঁয়ে শীতের পোশাক না থাকায় ঠান্ডাও অনুভূত হচ্ছে। কিন্তু সে সব অনুভূতি ফিকে করে দিয়ে এগিয়ে গেলাম গোলাপ ফুল গুলোর পানে। গোপাল ফুলের ওপরও শিশির পড়ে রয়েছে। শিশিরে আবৃত গোলাপ আরো বেশি সুন্দর লাগছে। টোকা দিতেই শিশির বিন্দু গুলো ঝর ঝর করে পড়ে গেল। বিষয়টা আমার কাছে মজাদার মনে হলো। একে একে সবগুলো ফুল থেকে শিশির ফেলতে লাগলাম। আর খিল খিল করে হাসছি। হাসির ঝলকে দুলছে তনু মন।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

পশ্চিম দিকের খোলা ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে কেউ একজন তীক্ষ্ণ চোখে আমার সকল কর্মকাণ্ড দেখছে। এক মুহূর্তের জন্যও আমার ওপর থেকে তার নজর সরছে না। যেন সে ধ্যানে বসেছে। আমার পা*গলামি দেখে মানুষটাও হেসে দিলো। মানুষটা বোধ হয় আগেই ভেবে নিয়েছিল আমি এমন কিছুই করবো। আমার বাচ্চামি স্বভাব যে তার বড্ড প্ৰিয়।মানুষটা আমার আড়ালে আবডালে লুকিয়ে আমায় দেখে। শুধু দেখে না, নিশ্চুপে আমায় আমার সত্ত্বা থেকে চুড়ি করে নিয়ে যায়। তাও আমারই অগোচরে। কি সাংঘাতিক ব্যাপার স্যাপার তাই না? একদিন মানুষটাকে খোপ করে ধরে ফেলবো অতঃপর তাকে শাস্তি দিবো। কোঠের শাস্তি। আমায় লুকিয়ে দেখা, আমার অগোচরে আমার সত্ত্বায় অস্তিত্ব বিরাজ করা, আমায় নিয়ে কল্পনা সাজানো সব কিছুর জন্য শাস্তি দেওয়া হবে। মুগ্ধ চোখে চাতক পাখির ন্যায় দৃষ্টি তার। পুরো পৃথিবীর সকল মুগ্ধতা যেন তার চোখে বিরাজ করছে। মানুষটা আমার কর্ম কাণ্ড দেখে মাথা চুলকে হাসতে হাসতে বললে উঠলো,

❝পা*গলী, আমার পা*গলী❞
ঝুঁকে ফুল থেকে শিশির ঝরাচ্ছি আর একা একাই হাসছি। আমায় এভাবে হাসতে দেখলে কেউ নিঃসন্দেহে পাগল বলবে। কিন্তু আমি এমনই। সব গুলো ফুলের শিশির ঝরানো শেষ হলে সোজা হয়ে দাঁড়াতে গেলে মাথা যেয়ে ঠেকলো কারো প্রশস্ত বুকে। জিম করা শক্ত পোক্ত বুক হওয়ায় তার বদলে মনে হলো আমিই ব্যাথা পেলাম। মাথা ডলতে ডলতে তৈরিক্ষ মেজাজে বলতে নিলাম,
“চোখে দেখেন না….?”
কথা থেমে গেল। আমার সামনে আদ্র ভাই দাঁড়িয়ে আছে। এক ভ্রু উঁচু করে তীক্ষ্ণ নজরে তাকিয়ে আছে। আমি মাথা ডলছি।

“চোখে দেখো না? খাম্বার মতো সামনে এসে দাঁড়িয়ে আছো কেন? বডি না যেন লোহা। তোমার জন্য আমি ব্যথা পেলাম”
“আমার বডি লোহার মতো না, তু্ই শুটকি তাই ব্যাথা পেয়েছিস। খেয়ে দেয়ে গুলুমুলু হ তাহলে আর ব্যথা লাগববে না”
“এই মোটেও আমায় শুটকি বলবে বা! আমি পারফেক্ট আছি”
“পারফেক্ট! হা হা… হাসালি। ফুঁ দিলেই উড়ে যাওয়ার জোগাড় সে আবার পারফেক্ট?”
“তোমার সাথে তর্ক করাই বেকার”
মুখ ভেংচি কেটে সামনে এগিয়ে যেতে নিলে চুলে টান লাগলো। চট করে পিছনে ঘুরে তাকালাম। দেখলাম বজ্জাত আদ্র সাহেবের হাতের মুঠোয় আমার সাধের চুল গুলো।
“কি হয়েছে? চুল ধরেছো কেন? ব্যাথা পাচ্ছি তো!”
“নিজেকে কি ইন্ডিয়ান নায়িকা ভাবিস?”

“না। কেন?”
“না ভাবলে শীতের পোশাক কই?”
কথাটা বলতে বলতে আদ্র ভাই নিজের পরনের জ্যাকেট আমার গাঁয়ে জড়িয়ে দিলেন।
“শীত লাগছিলো না তাই পরিনি”
“তাই?”
“হ্যাঁ”
“তাহলে কাঁপছিলি কেন?”
“কাঁপছিলাম কই। ওটা তোমার চোখের ভুল”
“এই জন্যই বলে মেয়ে মানুষ আর কিছু পারুক আর না পারুক কথা পেঁচাতে ভালোই পারে”
“তোমরা ছেলেরা কথা না বাড়ালেই তো হয়”
“আমরা তো সেটাই করি। এইযে এখন করছি”
আদ্র ভাই চুপ করে গেলেন। একপা একপা করে এগিয়ে গেলাম। আমার সাথে পা পা মিলিয়ে আদ্র ভাইও হাটছেন। স্নিগ্ধ সকালে হিলেম হাওয়া। দুজনেই প্রকৃতি বিলাস করছি। এক পর্যায়ে আদ্র ভাই বললেন,

“চা খাবি?”
“খাওয়াই যায়। বানিয়ে আনবো?”
“না। টং দোকানে যেয়ে খাবো। যাবি?”
“যাওয়া যায়”
আদ্র ভাই খপ করে হাত ধরে বললেন,
“চল যাই”

দুজন বাড়ি থেকে বের হলাম। হাঁটা ধরলাম গলির রাস্তা ধরে। আমাদের বাড়ি থেকে একটু দূরেই একটা পার্ক আছে। হাঁটার মতো সুন্দর রাস্তা, আশেপাশে গাছ গাছলি, রাস্তার পাশ ঘেঁষে লেক। জায়গা টা অনেক সুন্দর। সকাল বেলা মানুষ হাটাহাটি করতে আসে, বিকেলে এখানে বসে কপোত কপতিদের মেলা বসে। হাঁটতে হাঁটতে পার্কে চলে এলাম। শীতের সকাল হওয়ায় আশেপাশে তেমন মানুষ নেই। একটু পর পর দুই একজন হেটে যাচ্ছে। দুজন গল্প করতে করতে এগিয়ে চলেছি।

একটু সামনে যেতেই চোখ পড়লো কাঠ গোলাপ গাছের দিকে। কাঠ গোলাপ গাছে ফুল ফুটে আছে। ফুল মানেই আমার বড় একটা দুবলতা। যতক্ষণ না ছুঁইয়ে দিতে পারছি আমার শান্তি নেই। আদ্র ভাইকে রেখে দৌড়ে গেলাম গাছটার নিচে। পা উঁচু করে ও নাগাল পাচ্ছি না। অনেক ক্ষণ চেষ্টা করে না পেরে লাফ দেওয়া শুরু করলাম। তাও নাগাল পাচ্ছি না। গাছটা বড়, তার ওপর ফুল ফুলো সব চেয়ে উঁচু ডালে ফুটেছে। এখন কি করা যায়! আমার যে ফুল লাগবেই। আশেপাশে তাকিয়ে ফুল পাড়ার জন্য কিছু খুঁজছি এমন সময় খেয়াল হলো আদ্র ভাইয়ের। উনি পকেটে হাত গুঁজে গাছের সাথে হেলান আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে। এগিয়ে গিয়ে মুখ বেজার করে বললাম,

“চলো”
“কেন? ফুল নিবি না?”
মুখ ফুলিয়ে বললাম,
“না”
“কারণ?”
“ফুলগুলো বজ্জাত। নাগালেই আসছে না, তাই নিবো না”
“চল আমি তোকে নিয়ে দিচ্ছি”
আদ্র ভাই আমাকে সাথে নিয়ে গাছের কাছে গেলেন। হাত বাড়াতেই ফুলগুলো আদ্র ভাইয়ের কাছে ধরা দিলো। একটা ফুল ছিঁড়ে আমার হাতে দিলেন। আরেকটা ছিঁড়ে আমার কানে গুঁজে দিয়ে বলেন,
❝তু্ই নিজেই একটা জীবন্ত গোলাপ, যার সুবাস ছড়িয়ে আছে আমার হৃদয় জুড়ে❞

আরেকটু এগোলেই একটা চায়ের দোকান। এতো সকাল বেলায় দোকানে তেমন কেউ নেই। আদ্র ভাই যেয়ে গরম গরম দুকাপ চা নিয়ে এলেন। দুজন হাটছি, কথা বলছি, সাথে গরম ধোয়া ওঠা চায়ে চুমুক বসেচ্ছি। সব মিলিয়ে বেস্ট একটা কম্বিনেশন। শীতের এই সকালে ধোয়া ওঠা চা শরীরে উষ্ণতা ছড়িয়ে দিচ্ছে। চা হাতে গল্প করতে করতে আরো কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে দুজন বাড়ি ফিরলাম। বাড়ি ফিরতেই মুখোমুখি হলাম ইভান ভাইয়ের সাথে। তিনি সবেই রেডি হয়ে নিচে নেমেছেন। পিছন পিছন মেয়েটাও নেমে এলো। ইভান ভাই আমাদের দেখে ভ্রু কুঁচকে চাইলেন। তাকে পাত্তা না দিয়ে ঘুরে একবার আদ্র ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে বললাম,

“ধন্যবাদ আদ্র ভাই এতো সুন্দর একটা সকাল উপহার দেওয়ার জন্য”
“আমি ধন্য”
আদ্র ভাইয়ের কথা শুনে হেসে দিলাম। অতঃপর গট গট পায়ে ইভান ভাইয়ের পাশ কাটিয়ে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে চলে এলাম।
সকালে খাওয়া শেষ ইভা আর রোশনি দুই বজ্জাত কি যেন গুজুর গুজুর করছে। আমাকে দেখলে কেমন চুপ হয়ে যাচ্ছে। নিশ্চই এরা কোনো বদ মতলব করছে। একটা আরেকটা কে ছেড়ে একটুর জন্যও সরছে না। একে ওপরের সাথে আঠার মতো চিপকে আছে।
আমি টেবিলে বসে খাচ্ছি এমন সময় ইভান ভাইয়ের বউ নেমে এলো। মেয়েটা কেমন অহংকারী মনে হচ্ছে। তার চাল চলন তেমনই। বড় আম্মু আমায় খাইয়ে দিচ্ছিলেন। আমি কতো করে বললাম আমি নিজ হাতে খাই কিন্তু সেটা হতে দিলে তো। বড় আম্মুর ধারণা আমি দিন দিন না খেয়ে শুকিয়ে যাচ্ছি। তাই গালে তুলে খাইয়ে দিচ্ছেন। মেয়েটা এসে সোজা আমার সামনাসামনি বসলো। তির্যক চোখে তাকালো আমার দিকে। আমি সেদিকে পাত্তা দিলাম না। খাওয়ায় মন দিলাম।

ইভা আর রোশনি মিলে ইভান ভাইয়ের রুমের সামনে কিছু একটা করছে। রোশনি দরজার সামনে তেল ফেলছে আর ইভা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছে কেউ এদিকটায় আসছে নাকি সেটা দেখার জন্য। রোশনির কাজ শেষ হলে উঠে দাঁড়ালো। দুজনের ঠোঁটের কোণেই কুটিল হাসি। হাসি যেন ওদের মুখে ধরছে না, উতলে উতলে পড়ছে। ইভা বলল,
“মেয়েটার অনেক শখ না আমাদের বাড়ির বউ সাজার? ওর শখ আমি জনমের মতো ঘুচিয়ে দিবো। আমার বনুকে কাঁদিয়েছে ও, ওকে কাঁদিয়ে নাকের জলে চোখের জলে করবো”
রোশনি বলল,

“ওই মেয়েটার জন্য রোদ আপু মন ম’রা হয়ে আছে। আমাদের সাথে মিশছে না, তেমন কথাও বলছে না। আমাদের হাসি খুশি আপুটা একদম নীরব হয়ে গেছে শুধু মাত্র ওর জন্য। ওকে আচ্ছা করে মজা দেখাব”
দুজন একসাথে হেসে উঠলো। হাসা বন্ধ করে ইভা মিষ্টি কণ্ঠে ডাক শুরু করলো,
“ভাবি আপনি কোথায়? আপনাকে আম্মু ডাকছে”
ডাকা শেষে রোশনি আর ইভা হাসতে হাসতে যেয়ে সিঁড়ির পাশে লুকিয়ে গেল। আড়ালে দাঁড়িয়ে কি হচ্ছে সেটা দেখছে। মেয়েটা বেরিয়ে আসতে নিলো। দরজার কাছাকাছি আসলে তার ফোন বেজে উঠলো। মেয়েটা ফিরে গিয়ে কল রিসিভ করলো। ব্যাস্ত হয়ে গেল কথা বলায়।
রুমে বসে বসে বিরক্ত লাগছে। হাতের ফোনটাও এখন বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিছুই ভালোবাসা লাগছে না। তাই ভাবলাম ঈশিতা আপুর রুমে যাবো। সবাই মিলে আড্ডা দিলে নিশ্চয়ই ভালো লাগবে। যেই ভাবা সেই কাজ। বিছানা থেকে নেমে পড়লাম রুম থেকে বেরিয়ে কয়েক পা আগাতে নিলে পা পিছলে গেল। এই বুঝি ধরাম করে পড়ে মাথা ফাটল বলে। ভয়ে চোখ বুজে নিলাম।

আদ্র ভাই সবে বাসায় এসেছে। অফিসের কিছু জরুরি কাজে বেড়িয়েছিলো। সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে পাশে তাকিয়ে বেক্কেল বনে গেলেন। কোনো কিছু না ভাবে ছুটলেন সে দিকে।
খানিক ক্ষণ সময় পেরিয়ে গেল। শরীরে কোনো আঘাতের অস্তিত্ব অনুভব না করে ধীরে ধীরে চোখ মেলে চাইলাম। নিজেকে আবিষ্কার করলাম আদ্র ভাইয়ের বাহুডোরে। উনি শক্ত হাতের বাঁধনে বেঁধে রেখেছে আমায়। আর একটু হলেই পড়ে অক্কা পেতাম আমি। আদ্র ভাইয়ের চোখে মুখে ভয়। মনে হচ্ছে আর একটু হলেই ওনার প্ৰিয় কিছুর বড় ক্ষতি হয়ে যেত। আদ্র ভাই আমায় সোজা করে দার করিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
“ঠিক আছিস?”
“হ্যাঁ”

“চোখ কোথায় রেখে হাটিস? আসমানে তুলে? পড়ে গেলে কি হতো? ভেবেছিস একবার?”
“আমি ঠিক মতোই হাটছিলাম। জায়গাটা পিচ্ছিল ছিলো। নাহয় আমি পড়তাম না”
আদ্র ভাই খেয়াল করে দেখলেন। কিছু একটা নজরে এলে কপাল কুঁচকে নিলেন।
“এখানে তেল আসলো কোথা থেকে? কে ফেলেছে তেল?”
“আমি কিভাবে জানবো বলো?”
আদ্র ভাই চি’ৎকার করে বললেন,
“এখানে তেল কে ফেলেছে?”
রোশনি আর ইভা আড়াল থেকে বেরিয়ে এলো। দুজনের মুখ কাচু মাচু করে রেখেছে। ইভা মিন মিন করে বলল,
“আমরা ফেলেছি”

“কেন? এখনই তো একটা বড় অঘটন ঘটে যেত। তখন কি হতো? ভেবেছিস?”
“সরি। আমরা তো ইভান ভাইয়ের বউয়ের জন্য ফেলেছিলাম। ওই মেয়েটার জন্য রোদ আপু কষ্ট পাচ্ছে বলে ওকে কষ্ট দেওয়ার জন্য। কিন্তু আপু যে এসে পড়বে আমরা ভাবিনি…..”
দুজন আমার জন্য এতো কিছু ভেবেছে বলে ভালো লাগছে। কিন্তু নিজের পছন্দের মানুষের জন্য অন্য কাউকে কষ্ট দেওয়া এটা ঠিক না। শক্ত কণ্ঠে বললাম,
“এরপর যেন এরকম কিছু করতে না দেখি”

উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ৫

ইভা আর রোশনি মাথা নেড়ে সায় জানালো। আমরা কথা বলছি এমন সময় ধপাস করে কিছু পড়ে যাওয়ার শব্দ হলো। সবাই চমকে ঘুরে তাকালাম। তাকিয়ে দেখি ইভান ভাইয়ের বউ ফ্লোরে পড়ে আছে। বুঝতে দেরি হলো না মেয়েটা তেলে স্লিপ কেটে পড়েছে। মেয়েটা কোমরে হাত দিয়ে বসে আছে। ওকে পড়তে দেখে রোশনি আর ইভার সেকি হাসি। একেক জনের হাসি যেন থামছেই না। আমি না চাইতেও হেসে দিলাম। রোশনি তো বলেই ফেলল,
“একদম ভালো হয়েছে। শয়তানের বিচার হয়েছে”

উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ৭