এক বিন্দু ভালোবাসা দাও পর্ব ২২
আদ্রিতা জান্নাত অরিন
নোটন তার বাবাকে হাসপাতালে রেখে বাড়ি চলে যায় কারণ ডক্টর বলেছে তার মায়ের শরীর এখন রেসপন্স করছে। নোটন কথাটা শুনে মনের মধ্যে শান্তি অনুভব করে এরপর বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দেয়। হাসপাতালে বেশি সময় থাকা তার দ্বারা সম্ভব হবে না কারণ বাড়িতে জাফর সাহেব আছে। ওনার যা সয়তানি বুদ্ধি যদি নোটনের আসল পরিচয় জেনে যায় তাহলে সমস্যা হতে পারে। আহনাফ চৌধুরী আর কোম্পানিতে ফিরে যায় না বরং বাসায় ফিরে যায়।
নোটন যেহেতু গাড়ি করে যায় সেইজন্য সে তাড়াতাড়ি বাড়িতে ফিরে যায় আজকে নোটন অনেক টার্য়াড যার জন্য রুমে চলে যায়। সমুদ্র ও বাড়িতে ফিরে আসে অফিসে থাকতে আর তার ভালো লাগছে না। সমুদ্র রুমে গিয়ে দেখে নোটন বিছানায় শুয়ে আছে সমুদ্র নিজের উপস্থিত জানাতে হালকা একটু দরজায় শব্দ করে। নোটন সামনের দিকে তাকিয়ে দেখে সমুদ্র এসেছে। নোটন বলে –
“- সমুদ্র আপনি এতো তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে আসলেন কোনো? অফিসের কাজ কে করবে?
সমুদ্র এগিয়া যায় নোটনের কাছে এরপর বিছানায় বসে নোটনের দিকে তাকিয়ে বলে –
“- অফিসে এতো জুরুরি কোনো কাজ নাই তাই এসে পড়েছি। কিন্তু আপনার কি হয়েছে আপনাকে এমন টেনশনে দেখাচ্ছে কোনো?
“- না তেমন কিছু না। আচ্ছা সমুদ্র আপনি কি আমার একটু মাথা টিপে দিবেন বড্ড বেশি মাথা ব্যাথা করছে। আমি একটু ঘুমাতে চাই সমুদ্র “।
নোটনের কথাটা সমুদ্রের কথা স্বাভাবিক মনে হচ্ছে না ওর গলা শুনে এমন ফিল হচ্ছে যেনো ও অনেক কষ্টে আছে। কিন্তু প্রকাশ করতে পারছে না সমুদ্রের বেশ মায়া হয় নোটনের দিকে তাকিয়ে। সমুদ্র বলে –
“- আমি ফ্রেশ হয়ে এসে আপনার মাথা টিপে দিচ্ছি।একটু অপেক্ষা করুন “।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
সমুদ্র কথাটা বলে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে ওয়াশরুমে চলে যায় পাঁচ মিনিট পর ফ্রেশ হয়ে বাহিরে বের হয়ে আসে। এরপর ধীরে পায়ে হেঁটে এগিয়ে যায় বিছানার দিকে পাশে থাকা একটা বালিশ নিজের কোলের উপর রাখে। খুব আলতো করে নোটনের মাথা তুলে সেখানে রাখে এরপর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে৷ নোটনের মনে হয় ভালো লাগছে সে শরীরে সব ভার ছেড়ে দিয়ে শান্ত হয়ে চোখ বুঁজে ফেলে। দশ মিনিট পর নোটনের নিশ্বাস ভারী হয়ে যায় সমুদ্র বুঝতে পারে নোটন হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছে।
সমুদ্র নিজের কোল থেকে নোটনের মাথা সরিয়ে বিছানায় সুন্দর করে বালিশ সহ শুয়িয়ে দেয়। এরপর নোটনের মাথার কাছে বসে ওর ঘুমন্ত ঘুম ভালো করে দেখতে থাকে। সত্যি বলতে মেয়েটার মধ্যে অদ্ভুত সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে সারা মুখ জুড়ে হাজারো মায়া ছুয়েঁ আছে। সমুদ্র বলে –
“- সরি নোটন আপনাকে অনেক কষ্ট দিয়েছে এতোদিন কিন্তু আর না। ভুল প্রতৈকে করে তবে সেটা সঠিক সময়ে সংশোধন করে নিতে হয়। আমি জানি নোটন আপনি সবার সামনে নিজেকে অনেক শক্ত আর অহংকারী হিসাবে দেখাতে পছন্দ করেন। তবে মনের দিকে থেকে আপনি অনেক ভালো আর পবিত্র একটা মেয়ে।
সমুদ্র বেশ দীর্ঘ সময় নোটনের মুখের দিকে অদ্ভুত দৃষ্টি নিয়র তাকিয়ে থাকে মনে হচ্ছে সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে তবে দেখা শেষ হচ্ছে না। সত্যি মনে হয় সমুদ্র অল্প অল্প করে নোটনের মায়ায় পড়ে যাচ্ছে কারণ সে কোনো দিন রাইমাকে এমন করে দেখে নাই। আচ্ছা রাইমাকে সমুদ্র ভালোবাসতো কিন্তু নোটনের মে শুধু মায়ায় পড়েছে। তাহলে কি মায়াতে ভালোবাসার চেয়ে বেশি ও শক্তি থাকে।
প্রায় দুই ঘণ্টা পর আহনাফ চৌধুরী বাড়িতে ফিরে আসে। বাড়িতে ফিরে এসে দরজা থেকে সে রাগী স্বরে ডাকতে থাকে নোটনের নাম নিয়ে। আহনাফ চৌধুরী বলে –
“- নোটন নোটন কোথায় তুমি নোটন?
আহনাফ চৌধুরী অনেক জোরে জোরে নোটনের নাম নিয়ে ডাকতে থাকে হঠাৎ করে আহনাফ সাহেবের এমন ডাক শুনে সবাই অবাক হয়ে যায়। বাড়ির প্রতৈকে ছুটে আসে ড্রয়িং রুমে আহনাফ সাহেব এখন ও নোটনের নাম ধরে ডেকে যাচ্ছে। নাবিলা বেগম স্বামী এতো জোরে গলা শুনে ছুটে আস আর বলে –
“- কি হয়েছে আহনাফ এমন করে নোটনকে কোনো ডাকছো? কোনো সমস্যা হয়েছে কি? নোটন কি কিছু করেছে?
নাবিলা বেগমের কথা আহনাফ চৌধুরী শুনে না এবং কোনো উত্তর ও দেয় না। আহনাফ চৌধুরী বলে –
“- নাবিলা যাও নোটনকে ডেকে নিয়ে আসো। ওর সাথে আমার জরুরি কথা আছে এখুনি যাও ওদের রুমে “।
আহনাফ সাহেব বেশ ধমকের সুরে কথাটা বলে এতো বছরের বিবাহিত জীবনে এমন করে কথা কখনো বলেন নাই আহনাফ চৌধুরী। নাবিলা বেগম তাড়াতাড়ি করে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে নোটনের রুমে যায় সেখানে গিয়ে দরজা ধাক্কা দেয়।
নোটন আর সমুদ্র দুইজনে ঘুমিয়ে আছে সমুদ্র নিজে ও অফিস থেকে এসে অনেক টার্য়াড ফিল করে যার জন্য সে ও ঘুমিয়ে পড়ে। তবে দরজায় অনেক জোরে শব্দ করার কারণে সমুদ্রের ঘুম ভেঙে যায় সে বিরক্ত হয়ে ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলে দেয়।সমুদ্র বলে –
“- কি হয়েছে আম্মু এমন করে কোনো দরজায় টোকা দিচ্ছো? কোনো সমস্যা হয়েছে কি?
সমুদ্রের কথার কোনো জবাব না দিয়ে নাবিলা বেগম রুমে ঢুকে যায় এরপর বিছানার কাছে গিয়ে ঘুমন্ত নোটকে ডেকে তুলে। নোটন ঘুমন্ত মুখ নিয়ে উঠে দাঁড়ায় এরপর বলে –
“- কি হয়েছে শাশুড়ী আম্মু বিরক্ত করছেন কোনো? আপনার জন্য কি শান্তিতে ঘুমাতে ও পারব না আমি “।
“- আহনাফ তোমাকে নিচে যেতে বলেছে চলে নিচে।
এক বিন্দু ভালোবাসা দাও পর্ব ২১
নোটন ভালো করে শুনে আহনাফ চৌধুরী তাকে ডেকে যাচ্ছে যার কারণে নোটন বেশ বিরক্ত হয়। নোটন বাধ্য হয়ে নিচে নেমে আসে সিঁড়ি দিয়ে হেঁটে নোটন এসো যখন দাঁড়ায় তখন আহনাফ চৌধুরী রাগী দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকায়। এরপর দ্রুত পায়ে এগিয়ে যায় নোটনের দিকে আর ওর গালে একটা থাপ্পড় মারে আর বলে –
“- নোটন তোমার সাহস কি হয়ে তুমি অহির মেয়ে হয়ে আমার বাড়িতে এসেছে্ আমার ছেলের বউ হয়ে এখুন বের হয়ে যাও এই বাড়ি থেকে।