এক মায়াবতীর প্রেমে পর্ব ৪০
তানিশা সুলতানা
আজকে একটু বেশিই আদুরে লাগছে আলালের ঘরের দুলালকে। তন্নির বেশ ইচ্ছে করে উচ্চস্বরে বলতে “এই যে মিস্টার অর্ণব চৌধুরী আজকে থেকে আমি আপনার নাম রাখলাম “দুলাল”
আপনাকে দুলাল বলে ডাকবো আমি।
অর্ণব তখন যদি ফের প্রশ্ন করে “পৃথিবীতে এতো নাম থাকতে তুমি আমায় দুলাল কেনো ডাকবে?
তখন তন্নি জবাব দিবে ” আপনি আলালের ঘরের দুলাল” মানে ধনী বাবার ছেলে তাই।
ভাবতে ভাবতেই তন্নি অনুভব করে তার উদরে ঠান্ডা একটা হাত প্রবেশ করেছে শাড়ি ভেদ করে। ভুমিকম্পের ন্যায় কেঁপে ওঠে তন্নি। আঁখিপল্লব বন্ধ করে হাত রাখে অর্ণবের হাতের ওপরে। ইতোমধ্যে নিঃশ্বাস ভাড়ি হয়ে এসেছে।
চান্দের আলো স্পষ্ট লেপ্টে পড়েছে তন্নির চোখে মুখে। ভীষণ মায়াবী লাগছে। অর্ণব ঠোঁট কামড়ে মৃদু হাসে। মাথা খানা নিচু করে তন্নির মুখোমুখি হয়। বন্ধ চোখের পাতায় চুমু দিয়ে ফিসফিস করে বলে
“বউ কিসস মি প্লিজজজ
তন্নি জবাব দেয় না। তাকায়ও না। মুহুর্তেই অশান্ত হয়ে ওঠে অর্ণব৷ হাতের বিচরণ গভীর হতে গভীর করতে থাকে।
তন্নি কেঁপে কেঁপে উঠতে থাকে। এবং পিটপিট করে চোখ খুলে। ইতোমধ্যেই কপাল কুঁচকে ফেলেছে।
অর্ণব ফের বলে ওঠে
” একটা
জাস্ট একটা চুমু
এক মিনিট
না থাক ত্রিশ সেকেন্ড
উহু যাও দশ সেকেন্ড।
জাস্ট একটু ঠোঁট ছুঁড়ে দিলেই হবে।
প্লিজ
আমার সোনা বউ
একটু
তন্নি শুকনো ঢোক গিলে। অর্ণব দুই হাতে কোমর জড়িয়ে তন্নিকে শূন্যে তুলে ফেলেছে ইতোমধ্যেই। দুজনের উচ্চতা এবার সমান সমান। নিজের ভারসাম্য ঠিক রাখতে অর্ণবের গলা জড়িয়ে ধরেছে তন্নি।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“এই জান
দিব
বাকিটা বলতে পারে না অর্ণব৷ তখনই তন্নি নিজ ওষ্ঠদ্বয় অর্ণবের ওষ্টদ্বয়ের ভাজে মিলিয়ে দেয়। এবং ততখানিকই সরিয়ে ফেলতে চায়। তবে অর্ণব সরতে দেয় না। শক্ত করে আঁকড়ে ধরে। চুম্বনে ভরিয়ে তুলতে শুরু করে তন্নির অধর।
তাদের ভালোবাসাময় খুনসুটি বেশিক্ষণ টিকতে দেয় না আকাশের মা আমেনা।
তিনি চটলাইট জ্বালিয়ে তন্নিকে ডাকতে ডাকতে সিঁড়ি দিয়ে উঠছে। তার ডাক কান পৌঁছাতেই অর্ণবের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার পায়তারা করতে থাকে তন্নি। অর্ণব ছেড়ে দেয় তন্নির ওষ্ঠ। নামিয়ে দেয় নিচে। এবং কর্কশ স্বরে প্রশ্ন করে
” ব্যাঙের মতো লাফাচ্ছো কেনো?
তন্নি শাড়ির আঁচল দিয়ে নিজ ওষ্ঠ মুছে নেয়। এবং ভয়ার্তক স্বরে বলে
“আন্টি আসছে। আপনি লুকিয়ে পড়ুন।
তখন অর্ণবের কানেও সেই ডাক পৌঁছায়। বিরবির করে বেশ কয়েকটা কঠিন গালি আওড়ায়। তন্নিকে বলে
” কিছুএকটা বলে পাঠিয়ে দাও একে।
তারপর চিলেকোঠার পেছনে লুকিয়ে পড়ে। তখনই আমেনা ছাঁদে পৌঁছায়। তন্নিকে একা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বলে
” একা দাঁড়িয়ে আছো কেনো? এসে ঘুমবে।
তন্নি আমতা আমতা বলে
“আন্টি আর একটু থাকি।
” নাহহহ
এসো। তোমার জন্য আমার ঘুম আসছে না। দুদিনের জন্য অতিথি হয়ে এসেছো বলে ভেবো না কিছু বলবো না। চলো আমার সাথে।
তন্নির হাত ধরে তিনি হাঁটতে শুরু করে। তন্নি পেছন ফিরে তাকায়। অর্ণবের রাগি মুখটা দেখে শুকনো ঢোক গিলে।
তন্নি চোখের আড়াল হতেই অর্ণব দাঁতে দাঁত চেপে দেয়ালে ঘু ষি মারে
“শালার আপন বউয়ের সাথে একটু রোমাঞ্চ করবো। তাও জনে জনে লোক এসে হাজির হবে।
আমার দেখছি পাবলিক প্লেসে বউকে আদর করতে হবে। বা ল ভাল্লাগে।
আশিক বেশ কিছুক্ষণ হলো সাথীর সাথে কথা বলার চেষ্টা করছে। তবে মেয়েটার মুখ থেকে টু শব্দও বের করতে পারছে না। জরসরো হয়ে বসে আছে খাটের ঠিক মাঝ খানটায়। এতোগুলো প্রশ্ন করে ফেলেছে ইতোমধ্যেই। একটা প্রশ্নেরও জবাব দিচ্ছে না।
আশিক হতাশ হয়ে কল করে অর্ণবকে।
” হ্যালো ভাই। বা লের বউ তো কথাই বলে না।
অর্ণব আসমান পানে তাকিয়ে কঠিন গালি দেয় আশিককে।
আশিক ভরকে গিয়ে জিজ্ঞেস করে
“আমি কি করছি?
” বা ল করছিস তুই আমার শা লা। তোর বউ বাচ্চা। সে ভাবছে কথা বললেই তুই রোমাঞ্চ শুরু করে দিবি। তাই ভয় পাচ্ছে।
তুই ওকে বল “আমি তোমার সাথে শুধু কথা বলবো। একদমই টাচ করবো না”
আশিক চিন্তিত স্বরে জিজ্ঞেস করে
“করবো না?
” নাহহহ শা লা করবি না। যতদিন আমি বউকে আদর করতে না পারবো। ততদিন তুই ও করবি না। করলে খু ন করবো তোকে।
শুকনো ঢোক গিলে আশিক।
কাঁপা কাঁপা গলায় বলে
“তাহলে বিয়া কেন করাইলি?
পাশে বউ রেখে
“আর একটা কথা বললে তোর গোপন অঙ্গ পাবলিক প্লেসে মেলে ধরবো আমি।
ধপ করে কল কেটে দেয় আশিক। বার কয়েক বুকে থু থু নেয়।
” কপাল বুঝি পুড়লো?
পানজাবি খুলে টিশার্ট পড়ে নেয় আশিক। তারপর শুকনো কাশি দিয়ে এগিয়ে যায় সাথীর পানে। পাশে বসে নরম স্বরে বলে
“সাথী ভয় পাচ্ছে আমায়?
আমি তোমায় কিচ্ছু বলবো না। কথা বলো আমার সাথে।
সাথী কাঁপা-কাঁপি স্বরে বলে
” ছুঁবেন না তো আমায়?
আশিক মনে মনে বলে “নাহহহ শোকেসে সাজিয়ে রাখবো” মুখে বলে
“তুমি অনুমতি না দিলে ছুঁবো না।
বোধহয় একটু ভরসা পেলো সাথী। ঘোমটা ফেলে তাকায় আশিকের পানে। আশিক হাসে। হাত বাড়িয়ে সাথীর মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।
” আমাকে তোমার বন্ধু ভাবতে পারো। একদমই ভয় পাবে না।
ঘুম নেই তন্নির চোখে। মাথার ওপরে ঘুরতে থাকা সিলিং ফ্যানের পানে তাকিয়ে আছে। অথৈ তন্নিকে জড়িয়ে শান্তিতে ঘুমচ্ছে। আমেনা বেগমও বোধহয় ঘুমচ্ছে। আলো নেভানো বলে তন্নি আঁচ করতে পারছে না।
ফোনে শব্দ হয়। তন্নি বালিশের কোণা থেকে ফোন তুলে দেখতে পায় অর্ণব মেসেজ করেছে
“উনি ঘুমিয়ে পড়লে চলে আসবে।
তন্নিও সাথে সাথে লিখে
এক মায়াবতীর প্রেমে পর্ব ৩৯
” রিক্স হয়ে যাবে।
“বা*লের রিক্স। তুমি আসবে না কি আমি যাবো?
” আসছি আমি।
বলেই আলতো হাতে অথৈকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে নেয়। তারপর ধীরে ধীরে খাট থেকে নামতে থাকে।
তখনই আমেনা বেগম বলে ওঠে
“কোথায় যাচ্ছো?