এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ১৯
Chadny islam
সিকদার গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিতে অহনা সিকদার এর পাশাপাশি আদিলের গুরুত্ব টাও বিশেষ। আজকে বাংলাদেশ এর বাইরে থেকে অনেক লোক আসবে কোম্পানির সাথে ডিল করতে।যেকোনো দ্রব্য কে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে রপ্তানি বেশি করা হয়। তাছাড়া সিকদার ইন্ডাস্ট্রির শুনাম ছড়িয়ে আছে সারা বাংলাদেশে। মিটিং এর সব কিছুর ব্যাবস্থা করে রেখেছে রিফাত। আদিল প্রজেক্ট গুলোকে ভালো ভাবে বুঝিয়ে দিবে এবং ডিল ওকে করে চলে আসবে। মাএ ঘন্টা খানেক এর ব্যাপার।
জুথী আর দিবা সাজিদ এর বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখে। কিছু লোক জন সাজিদ দের বাড়ির ভেতরে বসে আছে। জুথী কিছুটা অভাক হয় মানুষ গুলো কে দেখে। তবে জুথী থামে না এগিয়ে যাই রুমের দিকে এগোতেই দেখে সাজিদ ফর্মাল ড্রেস আপ পরে আছে। মনে হচ্ছে কোথাও যাচ্ছে। জুথী এগিয়ে গেলো সাজিদ এর দিকে। জুথী কে দেখে সাজিদ কিছু হালকা হাসলো। সাজিদ আশা করে নি জুথী কে এই সময়ে এই বাড়িতে আসবে। জুথী সাজিদ কে জিজ্ঞেস করলো!!
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
__তুই কলেজে আসিস না কেনো! আর এই রেডি হয়ে আছিস কেনো। কোথাই যাবি।
সাজিদ মুচকি হেসে বললো!!
__চলে যাচ্ছি অনেক দূরে।
জুথী অভাক হয়ে বললো!!
__কোথাই যাবি??
“””কানাডাই!!
“‘মানে..!
হ্যা আর ঘন্টা খানেক পর ফ্লাইট! তার পর হয়তো সারাজীবন এর জন্য তোদের সাথে আর দেখা হবে না।
এত তাড়াতাড়ি ফ্লাইট মানে।
হুম অনেক আগেই অনলাইনে আবেদন করে রেখে ছিলাম হঠাৎ করেই হয়ে গেলো।
আন্টি কোথাই দেখছি না তো।
দিবা জুথী কে বার বার নিষেধ করলো এই প্রশ্ন টা করতে। জুথী বিষয় টা জানতো না তাই জিজ্ঞেস করেছে। জুথীর আন্টি বলার কথা শুনে সাজিদ এর মুখটা ফেকাসে হয়ে গেলো। মনে হলো চোখ বেয়ে ঝড়ে পরবে অশ্রুজল। তবে সেটাও পরলো না হয়তো ছেলে মানুষ তাই। সাজিদ রুমের ভেতরে থাকা সবাই কে বললো বেবিয়ে যেতে। সবাই সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে গেলো রুমে থেকে।সাজিদের রুমে রইলো শুধু দিবা আর জুথী। দিবা কে চলে যেতে বলতো। তবে গ্রামের মানুষের দৃষ্টি খারাপ জুথী কে গিরে একটা বাজে কথা বলে দিবে! সাথে কেউ থাকলে হয়তো বাজে কথা বলার সাহস পাবে না। সাজিদ হালকা হাসি হেসে বললো!!
ইরা কেমন আছে??
“”হুম ভালোই আছে।
“”আমাকে ভুলে গেছে তাই না।
তুই ভুল বুঝছিস ইরা কাউকেই ভুলে নি! ইরা তোর কথা জিজ্ঞেস করে।
থাক মিথ্যা বলিস না। কি করে আমাকে না জানিয়ে বিয়েটা করে নিলো।
ইরা ইচ্ছা কৃত বিয়ে টা করে নি। ইরা সম্পূর্ণ পরিস্থিতির স্বীকার ছিলো।
সাজিদ আলতো হেসে বললো!!
__কেনো নাটক করছিস আমার সাথে।
তাহলে এত দিকে এই বন্ধুত্ব টার মানে বুঝলি।
থাক ছাড় বলে! সাজিদ চুপ করে আছে কিছু বলছে না। সাজিদ কে দেখে মনে হচ্ছে ওর অনেক কষ্ট হচ্ছে কিছু বলতে চাইছে কিন্তু বলতে পারছপ না। তাই জুথী কিছু টা এগিয়ে গেলো সাজিদ এর দিকে সাজিদ এর চোখে পানি। সাজিদ এর কেনো মন খারাপ জিজ্ঞেস করলে সাজিদ বলে!!
__আমি বড্ড একা হয়ে গেলাম রে।আমার আর নিজের বলতে কেউ নেই। একটা মা ছিলো সেটা ও আল্লাহ নিয়ে নিলো। একটি ভালোবাসার মানুষ ছিলো সেটাও হারিয়ে গেলো। আমি একদম এতিম হয়ে গেলাম রে। আমি আমার চারপাশে শূন্যতা ছাড়া কোনো কিছুই দেখতে পাই না। আমি বড্ড একা। এই পাওয়া না পাওয়ার খেলাই আমি হেরে গেলাম। বন্ধুত্ব বাঁচাতে গিয়ে আমি আমার ভালোবাসার মানুষ কে হারিয়ে ফেললাম।আজ আমি নিংসহ হয়ে গেলাম। আমি চলে যাচ্ছি অনেক দূরে অজানা এক গন্তব্যের দিকে ভালো থাকিস তোরা। এ জীবনে আর দেখা হবে কিনা জানি না।
সাজিদ নিজের কথা শেষ করে চোখের পানি মুছতে মুছতে বেরিয়ে গেলো রুম থেকে। জুথী ঠাই হয়ে দাড়িয়ে আছে। এই ছেলে যে কখনো ইরা কে এতটা ভালোবেসে ছিলো বুঝতে পারে নি তারা কেউ।হয়তো অপ্রত্যাশিত ভালোবাসা চিরস্থায়ী হয় না। তবে ভালোবাসাটা সুন্দর হয়৷ ভালোবাসা গোপনেই বেশি সুন্দর। জুথীর খুব করে ইচ্ছে করছিলো সাজিদ কে আটকাতে। কিন্তু সাজিদ কে আটকাতে তো ইরা কে লাগবে। ইরার তো বিয়ে হয়ে গেছে। এখন আর কোনো উপায় না পেয়ে জুথী চুপ করে বসে পরলো বিছানার এক পাশে।
সিকদার মহলে তেমন কেউ নেই। সবাই নিজে দের কাজে চলে গেছে। শুধু মাইমুনা সিকদার আছে তিনি বাড়ীর দেখাশোনা করেন। ইরা বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে। আদিল এর রুম টা উপর তলায় হওয়াই নিচের সব কিছু বেশ স্পষ্ট ভাবে দেখা যায়।আজকে তাকে নিয়ে শপিং এ যাওয়ার কথা ছিলো। আজকে তো আদিল সারাদিন ব্যাস্ত থাকবে তাহলে কি আজকেও শপিং এ যাওয়া হবে না। ইরার বেশ মন খারাপ হলো। শুধু যে শপিং এর জন্য মন খারাপ সেটা নয়! তার বাবা মাকে বেশ মিস করছে ইরা।ইরার মনে পরে বাড়িতে মাইমুনা সিকদার মানে কলির আম্মু তো আছে! ওনার থেকে ফোন টা নিয়ে বাড়িতে কথা বলবে। তাই এগিয়ে যাই নিচে ড্রয়িংরুমের দিকে সেখানে কোথাও নেই। তাই ইরা বুকে সাহস নিয়ে এগিয়ে যায় মাইমুনা সিকদার এর রুমে দিকে। রুমের সামনে নক করার জন্য দরজার হাত লাগাতেই দরজা খোলে যায়।মাইমুনা সিকদার গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। তাই ইরা বেশ সংকোচ বোধ করলো। মাইমুনা সিকদার কে না ডেকে নিজের রুমে চলে এলো।
ইয়ান রোশানের বডিগার্ড গুলো এসে খবর পৌঁছে দিয়ে যায় সিকদার বাড়ীর সম্পর্কে। আজকাল বেশ নজরে রাখেন ইয়ান রোশান এর লোক গুলা। তারা জানালো আজকে সিকদার মহল পুরো খালি। বাড়ীর সব ছেলেরা গিয়েছে রাজনীতিতে। আজকে বড় সমাবেশ এর আয়োজন করা হয়েছে। এবার প্রাইমমিনিষ্টার পদ পার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবেন আদিল সিকদার। যেখানে আদিল এর বাবা সয়ং আশরাফ সিকদার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদদলীতে আছে ” সেখানে আদিল সিকদার কে আর পেছন ফিরে তাকাতে হবে না।কয়েক জন বডিগার্ড দের মধ্যে একজন বললো!
___ স্যার আপনি চাইলে আমাদের ভাবী কে আজকেই তুলে আনতে পারেন।পুরো সিকদার মহল ফাঁকা!আজ কেই সিকদার মহলে এ্যাটাক করার সঠিক সময়।
ইয়ান রোশান বসে আছে ফল কাটছে আর খাচ্ছে সবার বলা প্রত্যেকটা কথা মনোযোগ সহকারে শুনলো কোনো প্রতিক্রিয়া ,দেখালো না! বডিগার্ড এর মধ্যে এক জন তাছছিল্লের হাসি হেসে বললো তার পাশে থাকা সেই বডিগার্ট কে যে এই মুহুর্তে ইরা কে ভাবি ডাকলো!!
__তুই ভাবী বলে ডাকলি কেনো!! ভাই তো এখনো বিয়েই করে নাই ওই মেয়ে রে। তাছাড়া ওই মেয়ে তো বিবাহিত। ভাই কেন ওই মেয়ে রে বিয়ে করবো। ছেলেটার কথা বলতে দেরি কিন্তু রোশানের ছেলেটার বুকে ছুরি চালাতে দেরি হলো না। রোশান এর সামনে দাঁড়িয়ে কিনা তার ভালোবাসার মানুষের নামে বাজে কথা বলছে।
__যতসব হারামির বাচ্চা! ওরে এমন জায়গাই নিয়া ফেলবি আর এত ছোট ছোট টুকরো করবি যেনো কুওা শিয়ালের খাইয়ে অসুবিধা না হয়।
কোম্পানির সমস্ত প্রোজেক্ট ডিল ওকে করে আদিল নিজের অফিস রুমে গিয়ে একটু বসলো রেস্ট নিতে।এর মাঝেই কল করলো আশরাফ সিকদার এর আগে
ও বেশ কয়েক বার কল করে ছিলো। তখন আদিল মিটিং এ ব্যাস্ত ছিলো বলে কল কেটে দিয়ে ছিলো। কিন্তু এখন ফ্রি আছে তাই কল টা রিসিভ করলো!!
__হ্যা ড্যাড বলো!!
আশরাফ সিকদার গম্ভীর গলাই বললেন!!
__আর কত টাইম ওয়েষ্ট করবে। কুইক তারাতাড়ি চলে আসো।
ওকে!আদিল কল কেটে দূত গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলো।
আজকে সাজিদ এর বাড়িতে যাওয়ার কারনে কয়েক টা ক্লাস মিস হয়ে গেছে জুথীর।সাজিদ দের বাড়িতে থেকে আসার পর আর একদম ভালো লাগলো না বলে কলেজ থেকে চলে এসেছে। ফাঁকা শুনশান নীলিবিলী রাস্তার এক পাশ ঘেসে হেটে চলছে! জুথীর বেশ মন খারাপ করছে । কলেজে আর একা একা আসতেও ভালো লাগে না। ইরা কবে আসবে কলেজে জুথী যানে না। ইরার কাছে ফোন না থাকাই যোগাযোগ করাও যাচ্ছে না। তাছাড়া একটা মানুষের প্রতি খুব বেশি ভালো লাগা কাজ করতে শুরু করছিলো। সে ও কিনা মন টা ভেঙে দিলো। সে বিবাহিত কিন্তু আগেই জানাই নি। আমাকে ঠকালো। কালকে রাতে রাগে অভিমানে ঈশান এর নাম্বার টা ব্লক করে ফোন টা ও বন্ধ করে রেখেছে জুথী।
আশরাফ সিকদার এর পাশে আদিব প্রিয়াশ বসে আছে। সাথে ছোট খাটো মেম্বার চেয়ারম্যান মন্ত্রী ও আছে। ভাষন দিচ্ছেন সামনেই নির্বাচন যে ভাবেই হোক জনগন কে হাতে রাখতে হবে। এক এক করে সবাই ভাষন দিলেন। জনগণের উৎসাহ দেখে মনে হচ্ছে জয়লাভ করার সম্ভবনা টাই বেশি। সয়ং আশরাফ সিকদার ভাষন দিচ্ছেন তাকে সবাই করা তালিতে উৎসাহ দিচ্ছেন। আশরাফ সিকদার এর রাজনৈতিক জীবন অনেক বছর দরেই। তিনি সবার কাছে বেশ পরিচিত এবং সম্মান এর। আশরাফ সিকদার এর ভাষন শেষ হতে না হতেই আদিল মঞ্চে হাজির হলো। আদিল কে আশরাফ সিকদার নিজের ছেলে বলে পরিচয় করিয়ে দিলেন।সবাই উৎসাহ নিয়ে আদিল কে স্বাগতম জানালো। আদিল মঞ্চ উঠে সব জনগনের উদ্দেশ্য বললো!!
__আসসালামু আলাইকুম আপনাদের সবাই কে। আপনাদের দোয়া এবং ভালোবাসা নিয়ে আমি ও এই রাজনৈতিক জীবনে প্রদপন করতে যাচ্ছি। আমার ড্যাড কে সবাই অনেক ভালোবেসেন পাশে থেকে ছেন। অবশ্যই আপনারা ড্যাড এর মতোন আমার পাশে ও থাকবেন।…………
আরও বেশ কিছু সুন্দর সুন্দর কথা বলে নিজের ভাষন শেষ করলো আদিল।সবাই করা তালিতে কথা গুলো কে উপভোগ করলো।
ভাষন শেষ করে সবাই গিয়ে বসলো একসাথে। আশরাফ সিকদার আদিল কে উদ্দেশ্য করে বললো!!
__সাব্বাশ মাই সান! তুমি তো আমার থেকেও সেরা ভাষন দিলা।
থ্যাংক কিউ ড্যাড।
আদিল আশে পাশে খেয়াল করতেই দেখলো প্রিয়াশ প্রায় অনেক টাই দূরে কার সাথে যেনো কথা বলছে। আদিব বাবার সাথে বসে আছে।সে আগে কখনো রাজনীতি সমাবেশে আসেনি। তবে আজকেই প্রথম! তার খুব ভালো লাগলো এই নির্বাচনের বিষয় গুলা।
অহনা সিকদার দুপুরে বাড়িতে চলে এসেছেন। হাতে বেশ কয়েক টা প্যাকেট অহনা সিকদার ফ্রেশ না হয়ে উপরে আদিল এর রুমে গেলো প্যাকেট গুলো দিতে। রুমের গিয়ে দেখে ইরা গুমিয়ে আছে। তাই অহনা সিকদার প্যাকেট গুলো বিছানার উপর রেখে চলে আসছে তখনি পেছন থেকে ইরা ডেকে বলে!!
__আম্মু…!
অহনা সিকদার পেছন ফিরে তাকিয়ে ইরা কি জিজ্ঞেস করলো!!
__কি হয়েছে কিছু বলবা!
ইরা বেশ সংকোচ নিয়ে বললো!!
__আ..আসলে আম্মু! আমি একটু আমার আব্বুর সাথে কথা বলতে চাই।
অহনা সিকদার বুঝতে পারেন ইরার কাছে হয়তো কোনো প্যারসোনাল ফোন নেই। বাড়িতে কথা বলার জন্য।তাই অহনা সিকদার নিজের ফোন টা ইরার দিকে দিয়ে বললো!!
__কথা শেষ করে। সাওয়ার নিয়ে নিচে খেতে আসো আমি অপেক্ষা করছি।
__ঠিক আছে আম্মু!
ইরা ফোন টা হাতে পাওয়ার সাথে সাথে কল করলো নিজের বাবার নাম্বারে। ফোন টা কয়েক বার রিং হওয়ার পর কল টা রিসিভ করলো সালমা চৌধুরী। অচেনা নাম্বার দেখে সালমা চৌধুরী কথা বললেন না। বরং কল টা রিসিভ করে স্পিকার ওন করে আজাদ চৌধুরীর কাছে দিবে তখনি ভেসে আসে। তাদের পরিচিত কন্ঠের আয়োজন। ইরা ওপর পাশ থেকে বলছে।
__আম্মু আমি ইরা! শুনতে পাচ্ছো।
সালমা চৌধুরী মেয়ে শব্দ পেয়ে অঝরে কাঁদতে শুরু করেন। মাকে শান্ত করার জন্য ইরা বললো!!
__আমি ঠিক আছি আম্মু ভালো আছি। আম্মু..
সালমা চৌধুরী কিছুটা শান্ত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন!!
__কোথাই আছো তুমি। ফোন কোথাই পেলে??
ইরা ঘটে যাওয়া সব কিছু বেশ সময় নিয়ে শান্ত ভাবে বুঝিয়ে বললো সালমা চৌধুরী কে। এতখনে সালমা চৌধুরীর কান্নার শব্দ পেয়ে আজাদ চৌধুরী ও পাশে এসে দাড়িয়েছেন। বেশ সময় নিয়ে ইরার সাথে আজাদ চৌধুরী এবং সালমা চৌধুরী কথা বলেন।
বিকেলের দিকে ইরা সবার সাথে বসে আছে। বাড়িতে ছেলে মানুষ কেউ নেই। অহনা সিকদার কোম্পানির কাজ করছেন। তিনি সমসময় চুপচাপ থাকেন। তবে মাইমুনা সিকদার হাসি খুশি থাকেন সবসময়। কলি কলেজ থেকে এসে ফ্রেশ হয়ে নিচে গিয়ে ইরার পাশে বসলো।দুজন বসে বসে আলাপ করতে শুরু করছে!! আশরাফ সিকদার আদিস সিকদার সহ আদিল আদিব প্রিয়াশ সবাই বাড়িতে ফিরলো বেশ ক্লান্ত হয়ে। সবাই নিচে ড্রয়িংরুমে রুমে এসে বসলেও আদিল বসলো না। ইরার এক হাত দরে শক্ত করে আদিল এর সাথে করে উপরে নিজের রুমে নিয়ে গেলো।এর মধ্যে ইরা বেশ কয়েক হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলো আর বললো!!
__অসভ্য লোক! বাজে লোক! ছাড়ুন আমাকে সবাই দেখছে।
আদিল এর কোনো প্রতিক্রিয়া দেখালো না!বরং নিজের মতোন করে টেনে নিয়ে আসলো রুমে। আশরাফ সিকদার সহ বড়রা সবাই বেশ লজ্জা পেয়ে গেলো আদিল এর এমন কান্ডে যা সবার জন্য অপত্যাশিত ছিলো।সবাই লজ্জা পেলেই বা কি আদিল এসব কিছুর দার দারে না। আদিল রুমের ভেতরে গিয়ে ছেড়ে দিলো ইরার হাত। ইরা বেশ রেগে হকচকিয়ে গিয়ে বললো!!
___বাজে লোক। আমাকে এই ভাবে রুমে নিয়ে আসলেন কেনো সবাই কি মনে করলো।
আদিল এর শান্ত গলার উওর!!
__আমার বউ কে আমি নিয়ে এসেছি। তাতে কে কি মনে করলো আই ডোন্ট কেয়ার!
আদিল এগিয়ে গেলো ইরার দিকে। আদিল কে এগোতে দেখে ইরা পেছাতে লাগলো। পেছাতে পেছাতে ইরা একটা সময় গিয়ে ঠেকলো দেয়ালে। আদিল কে এত কাছে আসতে দেখে ইরা চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে নিলো। আদিল আলতো করে হেসে ঠোঁটে ঠোট কামড়ে বললো!!
__বউ! এই বউ তাকাও আমার দিকে।
ইরা পিটপিট করে তাকাই আদিলের দিকে। আদিল ইরা কে উদ্দেশ্য করে বললো!!
__বউ এর দায়িত্ব এবং কতব্য পালন করতে শিখো।
__মানে..!
__আমার শার্ট এর বোতাম গুলো কে খোলে দাও!!
পারবো না!! বলে ইরা এক ধাক্কা দিয়ে আদিল কে বেশ দূরে সরিয়ে দিলো। আদিল ইরা কে আরেকটু রাগানোর জন্য বললো!!
__রাতের জন্য রেডি থাকো বউ! আমি কিন্তু আজকে বাসর টা করবোই।
ইরা মুখ বাঁকিয়ে চলে যেতে চাইলে আদিল আবারও বললো!!
__ছোট বলে কিন্তু ছাড় টা তুমি পাবে না বউ।
আদিল গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলো। তারপর নিজের কোম্পানির কিছু কাজ শেষ করে নিচে খাওয়ার টেবিলে গিয়ে বসলো। এত খন ইরা কলির রুমে ছিলো। কলি আর ইরা ও নিচে আসতেছপ খাওয়ার টেবিলে। ইরা কলির পাশে বসতে চাইলে। আদিল এক ধমক দিয়ে বললো!!
__হেই বেবিডল! আমার পাশে বসো।আদিল এর এমন অদ্ভুত ডাকে সবাই গুরে তাকালো আদিল এর দিকে। ইরা বেশ লজ্জা পেয়ে গেলো। আজকাল কি করছে আদিল। আজকে খবর আছে এই লোকের। ইরা আদিল এর দিকে রাগী রাগী মুখ নিয়ে তাকালো।
অহনা সিকদার ইরার রাগের কারন টা বুঝতে পেরে! ইরা কে শান্ত করার জন্য বললো!!
__তুমি ওইখানেই বসো আদিল এর পাশে।
এক এক করে সবাই খাওয়া শেষ করে। নিজেদের রুমে চলে যায়। সাথে ইরা আর আদিলও ! বিছানার এক পাশে সুয়ে আছে আদিল। সে তো আজকে কোনো ভাবেই রুমের বাইরে যাবে না। যদি কোনো ড্রেস চেন্স করার প্রয়োজন হয়! তবে রুমেই করবে তার সামনে। আজকে এই মেয়ের কোনো এক্সকিউজ শুনতে রাজি নই আমি।
ইরা বিছানার এক পাশে গুটি শুটি মেরে বসে আছে। কি হবে আজকে কোনো প্লান আসতেচে না মাথাই কি হবে তাহলে কি আজকে সত্যি সত্যি! মনে আসতেই
আসতাকফিরুল্লাহ পরে নেই বেশ করে কয়েক বার।
অতিরিক্ত টেনশনে হুট করেই ভিষণ উঠে যায় ইরার। পানি পানি করতেই আদিল বিছানা থেকে ওঠে ওয়াশরুমের দিকে এগিয়ে যায় পানি আনতে। যেখানে পানি আনার জন্য যাবে নিচে ড্রয়িংরুমে।সেখানে কিনা যাচ্ছে ওয়াশরুমে। আদিল আজকে কোনো ভাবেই রুমের বাইরে যাবে না মানে যাবেই না। বাসর করবে মানে করবেই! আদিল কে ওয়াশরুম ডুকতে দেখে! ইরা এক দৌড়ে গিয়ে ওয়াশরুমের দরজা টা আটকে দেই বাইরে থেকে।
এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ১৮
ইরা বেশ শব্দ করে হাসে আদিল কে আরও বেশি করে রাগানোর জন্য বলে!!!
__কি হলো সিকদার সাহেব। বাসর টা করবেন না।আপনি আজকে শুধু মশার কামুড় নই!বরং সাথে করে বোনাস হিসাবে খাবেন ওয়াশরুমের বাজে গন্ধ। হিহিহিহিহিহ
