এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ২৭

এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ২৭
Chadny islam

আশরাফ সিকদার ড্রয়িং রুমে বসে বসে খবরের কাগজ পরছেন। পাশেই বসে আছে আদিব এবং আদিস সিকদার! অহনা সিকদার লেবু পানি খাচ্ছেন।সাথে সোনালি তালুকদার বসে আছেন। বেশ কিছু দিন কিছু সমস্যার জন্য তাদের মাঝে বেশ দূরত্ব থাকলে সেইটা কাটিয়ে একে অপরের সাথে বন্ধত্ব ঠিক রেখেছেন৷ কলি সকাল সকাল রেডি হয়ে এসেছে কলেজে যাবে বলে। সকালের খাবার টাও শেষ করে নি। মাইমুনা সিকদার পিলেটে ভাত মেখে মেয়ের পেছন পেছন ছুটছেন। প্রতিদিন আদিস সিকদার সাথে করে কলেজে নিয়ে যান। কিন্তু আজকে তিনি রেডি না হয়ে বসে আছেন কিছুটা অসুস্থতা ফিল করছেন তাই। তাহলে কলি আজকে কার সাথে যাবে কলেজে। পাশ থেকে আদিব বলে!!

___চাচ্চু তুমি রেস্ট করো আমি কলি কে কলেজে নামিয়ে দিয়ে আসি!!
আদিস সিকদার সম্মতি জানিয়ে বললেন!!
___আচ্ছা!!
আদিব রুমে গিয়ে কালো টি-শার্ট আর পান্ট পরে মাথায় সানগ্লাস জুলিয়ে বেরিয়ে এলো! ইতিমধ্যে কলি গিয়ে বসে পরেছে গাড়িতে! আদিব ও গাড়িতে ওঠে স্টার দিলো।
______
ইরা মন খারাপ করে বসে আছে সোফায় তার পাশে জুথী ও বসে আছে মনে খারাপ করে । আদিল আর ঈশান রুম থেকে নিচে ড্রয়িংরুমে এসে দুইজন কে মন খারাপ করে বসে থাকতে দেখে আদিল ইরার কাছে গিয়ে ইরা কে জিজ্ঞেস করলো!!

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

____কি হয়েছে আমার বউ টার!সুন্দর মুখটা কে বাংলা পেচার মতোন করে রেখে দিয়েছো?? সকাল সকাল কিনা পেচার মুখ দেখে উঠলাম। হাই আল্লাহ আজকের দিন টা কেমন কাটবে আমার!
ইরা রাগে ফুসফাস করতে লাগলো উঠে দাঁড়িয়ে আদিল এর শার্ট এর কলার্র দরে বেশ কিছু টা রেগে আদিল কে নিজের দিকে গুরিয়ে বললো!!
____কি করেছেন পারুল এর সাথে! পারুল কোথাই ??
আদিল মেজাজ গরম করে বললো!!
___পাগল হয়ে গেছো! পারুল কোথাই আমি কিভাবে জানবো??
ইরা কাঁদতে কাঁদতে বলে!!
___কেনো করলেন এমন টা করলেন পারুল এর সাথে! পারুল কোথাই??
ঈশান বার বার আদিল কে দেখছে! আদিল এর নিষ্পাপ মুখ টাকে! সে সত্যি কিছুই জানে না ইরা কে কি ভাবে বুঝাবে। ঈশান কিছু টা রাগী গলাই বললো!!

___বুনু কি করছিস এটা! আমি বড় ভাই হয় তোর! আমার সামনে আমার বন্ধুকে এমন ভাবে অপমান করতে পারিস না। প্যারসোনাল ভাবে ঘরে গিয়ে কথা বল!
“””ভাইয়া তুমি সত্যি টা জানো!!!
ইশান নিজের হাত টা উপরের দিকে তাক করে ইরা কে থামিয়ে দেয়। আর বলে!!
__বুনু তুই ভুলে যাস না। তোর থেকে আমি বয়সে অনেক বড়! আমার অভিজ্ঞতা ও অনেক বেশি। এখন তোর আবেগ এর বয়স! তোর আবেগ কাজ করবে এটাই স্বাভাবিক। তবে আদিল আমার বন্ধু আমার ভাই! ওর প্রতিটা শিরা অপরিশা আমার চেনা জানা।ওকে আমি চিনি তুই চিনতে ভুল করিস না!!
আদিল ঈশান কে থামিয়ে বললো!!

___প্লিজ চুপ কর অনন্ত আমার সামনে! বউ হয় আমার জ্ঞান টা বরং তুই নিজেদের বাড়িতে গিয়ে দিস।
আর ইরার দিকে তাকিয়ে আদিল ইরা কে বলতে বলে!!
___কি বলছিলা বলো!! আমি কি করেছি পারুল এর সাথে???
ইরা আদিল এর কর্লার থেকে নিজের হাত টা সরিয়ে নেই সাথে সাথে ফ্লোরে বসে পরে। জুথী তাড়াতাড়ি করে ইরা কে দরতে চাইলে আদিল নিষেধ করে।আদিল ইরার পাশে বসে ইশান আর জুথী কে ইশারা করে চলে যেতে বলে।ইরা কাঁদছে ভিষণ কাঁদছে মন খারাপ করছে পারুল এর জন্য বেশ মায়া হচ্ছে পারুল এর জন্য! ইরা বুঝতে পারছে পারুল এর সাথে যে ভালো কিছু হয় নি সেটা বেশ ভালো করে বুঝতে পারছে। এই বাড়িতে চারটি পুরুষ ছাড়া তো আর কেউ ছিলো না বাইরে বৃষ্টি ছিলো কেউ ভেতরে আসেনি।একে তো রতন মিয়া আসার কোনো প্রশ্নই আসে না পারুল কে নিজের মেয়ে মনে করতো। ইরার ভাবনা মাঝেই আদিল দুই হাত দিয়ে আলতো করে ইরার চোখের পানি মুছে দেয়।ইরার মাথা টাকে নিজের কাঁদে রাখে। আদিল বেশ আশ্চর্য হলো ইরার সব কিছু চুপ চাপ মেনে নেয়া দেখে। আজ ইরা কে স্পর্শ করার পর ও কোনো প্রতিক্রিয়া দেখালো না।ইরা কাঁধে মাথা রেখে সজুড়ে চিৎকার করে কান্না করতে লাগলো।আর আদিল কে উদ্দেশ্য করে বললো!!

____আপনি সত্যিই জানেন না পারুল কোথাই??
আদিল এর সহজ সরল উক্তি!!
___আমি সত্যিই জানি না পারুল কোথাই??
তাহলে কি ভাইয়া জানে???
___না ঈশান ও কিছুই জানে না! আমরা রাতে এক সাথে ঘুমিয়েছি!!
ইরা বেশ কিছুটা রাগান্বিত হয়ে বললো!!
___তাহলে কি প্রিয়াশ ভাইয়া কিছু জানে???
আদিল অভাক হয় ইরার কথাই! সত্যিই তো রাতে তো প্রিয়াশ ও ছিলো তাহলে কি প্রিয়াশি কিছু করেছে! কিন্তু কিভাবে সম্ভব সকালে ঘুম থেকে ওঠার সময় তো প্রিয়াশ কে রুমেই দেখে আসলো!! আদিল স্বাভাবিক ভাবে বললো!!!

___প্রিয়াশ তো রুমে ঘুমচ্ছে! প্রিয়াশ ও হয়তো জানে না!
ইরা আদিল এর কাঁধ থেকে মাথা সরিয়ে উঠে দাঁড়ালো। সাথে আদিল ও ! জুথী ডাকছে আইরা উঠেছে চেচামেচি করছে! তাই আদিল আর ইরা আইরার রুমে গেলো। আইরা মাথাই হাত দিয়ে বসে আছে। রাগে ফুসফাস করছে আর রাগে চিৎকার করে বললো!!!
____আদিল আমি এই বাড়িতে কেন??
“””আই ডোন্ট নো??
আইরা মেজাজ হারিয়ে ফেললো!! বিছানা থেকে উঠে আদিল এর সামনে দাঁড়িয়ে বললো!!
___তুমি জানো না তাহলে কে জানে!! প্রিয়াশ কোথাই??
জুথী বলে ___
__পাশের রুমে ঘুমাই!!
আইরা সোজা পাশের রুমে চলে যায় তার সাথে সবাই যায় প্রিয়াশ এর রুমে।আইরা প্রিয়াশ কে উচ্চ সুরে ডেকে বলে!!!!

_____প্রিয়াশ যেই ইউ!!
প্রিয়াশ ঘুম ঘুম জড়ানো কন্ঠে বললো!!
___যা সর বাল! ঘুমাইতে দে!
প্রিয়াশ ভেবে ছিলো হয়তো কলি ডাকছে। প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে কলির ডাকে! আইরা রেগে দিয়ে টেবিলের উপর থেকে পানির জগ এনে প্রিয়াশ এর গায়ে ঢেলে দেয়। প্রিয়াশ এক ঝটকাই বিছানা থেকে উঠে পরে। প্রিয়াশ এক সাথে এত গুলা মানুষ কে দেখে অভাক হয়। রাতের বিষয় টা কি তাহলে সবাই জানতে পেরে গেলো নাকি রতন কি সব বলে দিয়েছে। প্রিয়াশ ভয়ে ভর্রকে গেলো। প্রিয়াশ এর কিছু বলার আগেই আইরা রেগে গিয়ে বললো!!
____আমি এই বাড়িতে কেনো??
প্রিয়াশ কিছুটা রিল্যাক্স হই! তার মানে কেউ কিছু জানে নি এখনো।রাতের বিষয়ের জন্য আইরা চেচামেচি করছে।কোনো সমস্যা নেই। এক তুরি মেরে সব কিছু ঠিক করে দিবো।তাই প্রিয়াশ সবাই কে বললো!!
___তোমরা সবাই যাও। আমার রাত পরীর সাথে আমি কথা বলবো প্যারসোনাল ভাবে।
“””হেই ইউ! তোমার মানে কি??
প্রিয়াশ আদিল কে উদ্দেশ্য করে বললো!!!

___আরে ভাই যাও তো। প্যারসোন্যাল কথা বলবো।
আদিল রাগে ফুসফাস করতে লাগলো।প্রিয়াশ যে বেয়াদব সেইটা আজ নতুন নয়।আদিল কিছু বললো না। সবার আগে রুম থেকে বের হয়ে চলে গেলো! সাথে সাথে ইরা ঈশান জুথী সবাই বেরিয়ে গেলো !
প্রিয়াশ আইরার দিকে তাকিয়ে নিষ্পাপ গলাই বললো!!
___রাতে তুমি কিছুটা অসুস্থতা ফিল করছিলে! সেখানেই ঘুমিয়ে পরেছিলে! তখন রাত বারো টা মেবি! এত রাতে আমরা বাড়ীতে গেলে সবাই আমাদের কে ভুল বুঝতো। তাই আর আমরা বাড়িতে ব্যাক করিনি! সোজা এই বাড়িতে চলে এসেছি।
“””ওহহহ!কি হয়ে ছিলো আমার কিছু তো মনে পরছে না!
আমি জানি না তোমার কি হয়ে গিয়ে ছিলো হঠাৎ করে! তোমাকে জেনো কেউ ভুল না বুঝে তার কারনে তোমাকে এই বাড়িতে নিয়ে এসেছি! আর তুমি কিনা আমাকে ভুল বুঝতেছো!
আইরা রাগী মেজাজ টা সহজেই ঠান্ডা হয়ে গেলো। প্রিয়াশ তো ঠিকি করেছে।বাড়িতে গেলে তো শুধু শুধু মম ভুল বুঝতো। তাই আইরা প্রিয়াশ ধন্যবাদ দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে আসলো।
সবাই ড্রয়িং রুমে বসে আছে আইরা ও নিচে গিয়ে আদিল বরাবর সোফায় পায়ের উপর পা তুলে বসলো।আইরার দুই মিনিট পর প্রিয়াশ ও নিচে আসলো। আদিল এর ফোন টা বেজে উঠলো আদিল পকেট থেকে ফোন টা বের করে দেখলো আশরাফ সিকদার কল করছেন! তাই আদিল কল টা রিসিভ করলে আশরাফ সিকদার বলেন!!

___মাই সান কোথাই আছো!
“””কেনো কিছু হয়েছে ড্যাড??
“”হ্যা আজকে জুরুরি কাজে যেতে হবে নির্বাচনের বিষয়ে তারাতাড়ি চলে আসো!তাছাড়া তোমাকে ও বেশ মিস করছি মাই সান!!
“”আমাকে কেন ড্যাড মম কোথাই??
“”বেহায়ার ছেলে বাবা হই তোমার! তোমাকে কি মিস করতে আমি পারি না??
হুম চিন্তার বিষয় তোমার মাঝে এত অদপতন হলো কিভাবে ড্যাড! শেষ মেষ কিনা আমাকে মিস করছো।তোমার জন্য দুঃখ হচ্ছে ড্যাড।কতটা খারাপ দিন পার করছো!আমাকে কিনা মিস করছো এই বয়সে।

“””বেহারা ছেলে বাবা হই তোমার! আমাকে রাগিও না।
“””ওকে ড্যাড রিল্যাক্স! আমি চলে আসছি!
ওকে। কথা শেষ করে আশরাফ সিকদার কল টা কেটে দিলেন। প্রিয়াশ আইরা কে উদ্দেশ্য করে বললো!!
___হেই রাত পরী তুমি কি আমার সাথে বাড়িতে যাবে নাকি ওদের সাথে।
আইরা আদিল কে রাগানোর জন্য বললো!!
___আমি তোমার সাথে যখন এসেছি! তাহলে তোমার সাথেই যাবো। এদের সাথে নয়!
“”ওকে লেটস গো! আইরা উঠে দাড়িয়ে প্রিয়াশ এর সাথে বের হয়ে গেলো বাসা থেকে।
আদিল ইরা ঈশান জুথী বেশ কিছু খন নিজে দের মতোন আলাপ আলোচনা করে বেরিয়ে গেলো।আদিল আর ইরা সিকদার মহলে চলে যাবে। ঈশান আর জুথী চলে যাবে নিজেদের বাড়িতে আলাদা গাড়ি করে।

কলি গাড়িতে বসে বসে ঠান্ডা হাওয়া খাচ্ছে! তার মাথায় হঠাৎ করেই একটা প্রশ্ন আসলো। তাই আদিব কে বললো!!!
___ভাইয়া এত পড়াশোনা করে কি হবে বলো তো??
আদিব কলির প্রশ্ন শুনে বেশ অভাক হয়। এইটা কোনো প্রশ্ন হলো। আদিব কলির মাথাই টোকা মেরে বললো!!
___ফাঁকি বাজ পড়াশোনা না করার ধান্দা!
“”আরে ভাইয়া তুমি তো আগে বলো পড়াশোনা করে হবে টা কি??
আদিব দুষ্টমির ছলে কলি কে বললো!!
___পড়াশোনা না করলে তোর মতোন অশিক্ষিত মেয়ে কে কেউ বিয়ে করবে না ???
“”তাহলে কি আমাকে বিয়ে দেয়ার জন্য আম্মু আব্বু আমাকে পড়াশোনা করাচ্ছে!!
__হ্যা! তুই এই টাও জানিস না!
কলি কাঁদো কাঁদো কাঁদো গলায় বললো!!
___ভাইয়া গাড়ি ঘুড়াও! আমি বাড়িতে চলে যাবো!
“”কেনো!!
“”আমি আর পড়াশোনা করবো না! আব্বু আম্মুর এই পরিকল্পনা কোনো ভাবেই স্যাকসেছ করা যাবে না। গাড়ি ঘুড়াও না ভাইয়া।

এরে বাবা এই টা কি হলো ! বাড়িতে গিয়ে কলি যদি এই গুলা বলে তাহলে আম্মু তো আমাকে ঝাড়ু দিয়ে পিটাবে। এখন কলি কে সামলাবো কি করে।তাই আদিব কলি কে মানানোর জন্য বললো!!
____আরে পাগলি বোন আমার! তোকে এত সুন্দর একটা আইডিয়া দিলাম আর তুই কিনা আমাকে বাঁশ দিতে চাইছিস।আজকে তো কলেজের সামনে এসেই পরেছি আজকে ক্লাস টা কর কালকে থেকে আর আসবি না ওকে।
কলির নিষ্পাপ উওর!!
__ওকে ডিল ডান ___
আদিব কলেজের গেটের সামনে কলি কে নামিয়ে দিলো।কলির পাশের রিকশা থেকে কলির বেষ্ট ফেন্ড রিমঝিম নেমে আসলো।কলি কে দেখেই রিশকা থেকে ডাকলো!!

___এই বেস্ট টু!!!
কলির ডাক টা চেনা! কানে শোনা মাএ গুরে তাকাই সাথে আদিব ও।কলেজের সাদা ড্রেস হিজাব পড়া রিমঝিম এর ডাক শুনে কলি এগিয়ে এলো রিমঝিম এর দিকে। রিমঝিম রিকশা ভাড়া দিয়ে এগিয়ে আসলো কলির দিকে।আদিব তীক্ষ্র নজর বুলালো রিমঝিম এর দিকে। আদিব এগিয়ে গেলো কলির দিকে। আদিব কে হ্যা করে তাকিয়ে দেখতে দেখে কলি আদিব কে ডেকে বললো!!
___ভাইয়া!! ও রিমঝিম আমার বেষ্ট ফেন্ড!
রিমঝিম এত খন বুঝতে পারেনি এটা কলির ভাই। আগে কখনো দেখে নি।তাই প্রথম বার দেখে চিনতে পারে নি। রিমঝিম বড় করে একটা সালাম দিয়ে জিজ্ঞেস করলো!!!

___কেমন আছেন ভাইয়া!!
আদিব সাথে সাথে বুকে হাত দিলো মনে হলো ভাইয়া ডাক টা শুনার সাথে সাথে হার্ট অ্যাটাক হয়ে যাবে। রিমঝিম এর প্রশ্নের উওর না করে নিজের হাত টা
রিমঝিমএর দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললো!!
_____হাই আমি আদিব!!
রিমঝিম কিছুটা সংকোচ নিয়ে হাত টা এগিয়ে দিয়ে হাত মিলিয়ে বললো!!
___আমি রিমঝিম!!
“”নাইস নেম!
রিমঝিম কলি কে টেনে ভেতরে নিয়ে গেলো আদিব কে বাই বলে! আদিব পেছন থেকে ডেকে বললো!!
___কলি!!
কলি পেছনে ঘুরে তাকালো আদিব এর দিকে! আর জিজ্ঞেস করলো আদিব কে!!

____কিছু বলবা ভাইয়া!!
হুম! আদিব এগিয়ে গিয়ে রিমঝিম কে উদ্দেশ্য করে বললো!!
___ কলি তুই মিস রিমঝিম কে আমাদের বাড়ীর রাতের অনুষ্ঠানের জন্য দাওয়াত দিয়ে ছিলি।
কলি অভাক হয়ে বললো!!
___কিসের অনুষ্ঠান ভাইয়া!!
ওহহ!তুই তো বাচ্চা মানুষ তাই হয়তো জানিস না। ভাইয়া আর ভাবীর বিয়ের কিছু প্রোগ্রাম করবে! অবশ্যই মিস রিমঝিম আপনি আসবেন!!
রিমঝিম বেশ কিছুটা সংকোচ নিয়ে বললো!!!
___সরি ভাইয়া! আম্মু রাতে কোথা ও যাওয়ার পারমিশন আমাকে দিবে না।
আদিব এর সহজ সরল উক্তি!!
___তাহলে তোমার আম্মু কে সাথে করে নিয়ে আইসো।আর অবশ্যই কিন্তু আসবা আমাদের বাড়িতে।বাই!
আদিব আর দাড়ালো না সোজা গাড়িতে করে চলে আসলো বাসার দিকে। এর মাঝে কল করলো ঈশান কে!!কল রিং হওয়ার সাথে সাথে ঈশান কল টা রিসিভ করে বললো!!.

___হ্যা আদিব বলো!!
“”ভাইয়া একটা হেল্প করবা প্লিজ!!
“”কি হেল্প! কোনো সমস্যা হয়েছে!
আরে তেমন কিছু না তুমি কিছু খন পরে আমাদের বাড়িতে আসো ভাবী কে সাথে করে নিয়ে আসবা।
“”আসবো তো ঠিক আছে! কিন্তু কেনো!!
আরে ভাই তুমি এইটা ও জানো না! রাতে ভাবী আর ভাইয়ের বিয়ের প্রোগ্রাম করবে তো তাই তোমাকে আসতে বলছি। ভাই তোমাকে তোমার বেষ্ট ফেন্ড দাওয়াত দেয় নাই।
ঈশান রাগে ফুসফাস করতে করতে বললো!!
___না তো! আমরা এক সাথেই তো ছিলাম কিছু বলে নাই তো আদিল!!
আদিব দুষ্ট হাসি হেসে বললো!!
___আরে ভাই বুঝো না তোমার বন্ধু একটা কিপটা!তুমি আসলে তোমাকে খাওয়াতে হবে না! তাই তোমাকে জানাই নি।তুমি কিন্তু দাওয়াত মিস করো না ভাই। অবশ্যই আসবা।
“”হুম আসবো তো অবশ্যই! আদিল এর বাচ্চার খবর আছে!
“”আচ্ছা ভাই রাখি!

বউ ও বউ!!
“”কিসের সারাক্ষণ বউ বউ ডাকেন! শুনতে এক দম বাজে লাগে!!
“”তাহলে কি সাতচুন্নি বলে ডাকবো তোরে!!
“”বউ ডাক আপনার মুখ থেকে শোনার থেকে সাতচন্নি ডাক টাই বেশি সুন্দর শোনাই!!
“”মানুষ ঠিকি বলে!!
“”মানুষ কি ঠিক বলে!!
“”মেয়েরা বুঝে কম চিল্লায় বেশি! তার প্রমাণ আমার সাতচুন্নি বউটা!
“””যান তো এখান থেকে বকবক করে আমার মাথা খারাপ করে দিলেন!
“”ওমা আমি কি একা একা বকবক করছি নাকি সাথে তো তুমি ও আছো!!
“””ওকে তাহলে আপনি থাকেন আমি চলে যাচ্ছি!

আদিব গাড়ি সাইট করে রেখে সোজা চলে গেলো আশরাফ সিকদার এর রুমে। যেখানে অহনা সিকদার ও ছিলেন অফিসে যাবেন বলে রেডি হচ্ছ ছিলেন! তার মাঝেই আদিব রুমে গিয়ে ডুকে পরলো!! আর আশরাফ সিকদার কে উদ্দেশ্য করে বললো!!!
____ছি ড্যাড তোমার কি কোনো আত্মসম্মান নেই!!
আশরাফ সিকদার অবাক হয়ে বললেন!!
____কি বলছো এসব! আমি একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমার আত্মাসম্মান তো ভুরি ভুরি!!
“”” ভুরি না ছাই! তোমার নাকি আত্মা সম্মান নাই! কিপটা তুমি! আর নাকি বাজে মন্ত্রী তুমি!
আশরাফ সিকদার এক লাফে বিছানা থেকে উঠে বসললেন আর রাগান্বিত হয়ে আদিব কে জিজ্ঞেস করলেন!!!

___কে বলছে এসব???
“””কে আর বলবে তোমার জনগণ!!
“””এই গুলা কেনো বললো??
আদিব এর দুষ্ট মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি চেপে আসতেই বললো!!
____সিকদার মহলের আশরাফ সিকদার এর এক মাএ বড় ছেলে স্বয়ং আদিল সিকদার কিনা টাকা বাঁচানোর জন্য লুকিয়ে বিয়ে করেছে ছি ড্যাড!!
অহনা সিকদার আদিব এর সয়তানি বুদ্ধি টা ধপাস করে দরে ফেললেন আর বললেন!!
____কোন জনগণ বলেছে এই কথা ! যাও তাকে গিয়ে এখনি নিয়ে আসো।আমি ও দেখতে চাই কার এত বড় সাহস হলো জনগনের নাকি আমার ছোট ছেলের!!
আদিব আদুরে গলাই আশরাফ সিকদার কে বললো!!
__দেখছো ড্যাড! মম আমাকে কেমন করে ফাসিয়ে দিচ্ছে। আমি তো তোমার জনগণ যা বলেছে সেটাই তোমাকে জানাচ্ছি! মম তোমার ভালো দেখতে পারে না ড্যাড।
আদিব এর কথা টা যেনো আগুনে ঘি ফেলার মতোন কাজ করলো ! আশরাফ সিকদার আদিব এর কথা টা সহজেই বিশ্বাস করে অহনা সিকদার কে উদ্দেশ্য করে বললেন!!!

“””ছি ছি অহনা তুমি কিনা শেষ মেষ আমাকে তোমার শএু বানিয়ে দিলা!ছি আজ সমাজ কোথাই আমি কোথাই আমার জনগণ কোথাই??
অহনা সিকদার কর্কশ গলায় বললেন!!
__এই ড্রামা বন্ধ করবা! নাকি বাপ ছেলে দুই টারেই রুম থেকে বের করে দিবো।
দেখলা ড্যাড! মম তোমাকে কে কেমন ভাবে অপমান করলো!আমি মেনে নিতে পারছি না তোমার এই অপমান টা! চলো ড্যাড থাকবো না আর এই রুমে আমরা নিচে চলে যায়। তাহলে আমার জন্য একটু সুবিধা হবে!
“”মানে??
“”আরে চলো ড্যাড! মানে টা পরে বলবো নি! তোমাকে আস্তে আস্তে বুঝিয়ে!!!
কথা শেষ করে আদিব আশরাফ সিকদার কে নিয়ে নিচে ড্রয়িংরুমে চলে আসলো।আশরাফ সিকদার সোফায় বসে এক কাপ কফি দিতে বললেন মাইমুনা সিকদার কে! আর আদিব কে জিজ্ঞেস করলেন!!

____কি বলছিলা জেনো মাই বয় এখন বলো ???
“””ড্যাড বলা বলি বাদ! আজকে রাতেই আমাদের বাড়িতে ছোট খাটো একটা পার্টির আয়োজন করো! সবাই কে দাওয়াত করো! এমন কি ভাবীর বাবা মা কে! তাদের ও আসা উচিত আমাদের বাড়িতে!
আশরাফ সিকদার চিন্তিত হয়ে বললেন!!
___আদিল কে ডাকো! ওর পারমিশন না নিয়ে কোনো ডিসিশন নেয়া ঠিক হবে না!
ড্যাড তুমি এত বোকা কেনো! ভাইয়া কে জানানোর দরকার নাই।আমরা ভাইয়া কে সারপ্রাইজ দিবো আজকে রাতে!
“”””কিন্তু আদিল!!
“”””কোনো কিন্তু নয় ড্যাড!
আদিব ফোন টা বের করে কল করলো রিফাত কে সোজা বাসায় চলে আসতে বললো! আজকের জন্য অফিস বন্ধ! আশরাফ সিকদার কে নির্বাচনের কাজে পযন্ত যেতে দিলো না আদিব! অহনা সিকদার প্রোপার ভাবে রেডি হয়ে চলে এসেছেন অফিসে যাবেন বলে! এর মাঝে আশরাফ সিকদার বললেন!!!

___আজকে তো অফিস বন্ধ তুমি জানো না রাগিণী!!
অহনা সিকদার অভাক হয়ে বললেন!!
___কিসের বন্ধ??
___সরকারি বন্ধ!
অহনা সিকদার রাগী গম্ভীর গলাই বললেন!!
___হেই বোকা মন্ত্রী অফিস টা আমার সরকারের না! আমি কোনো অফিস বন্ধ ঘোষণা দেয় নি!
আশরাফ সিকদার মুচকি মুচকি হেসে বললেন!!
___তোমার সেনা সদস্যরা বন্ধ দিয়ে দিয়েছে! যাও তুমি বন্ধ অফিসে গিয়ে একটু গুরে দেখে আসো৷
অহনা সিকদার রেগে গিয়ে বললেন!!!
___আমার ঝাড়ু টা কই! এত বড় বড় ছেলে এদের কে এই বয়সেও আমার পিটাতে হয়।তুমি একবার দারাও আদিব আমি আসতেছি!
এতখনে আদিব বড় দরজার সামনে গিয়ে দাড়িয়ে পরেছে! অহনা সিকদার ভিষণ রেগে আছে।তার কোম্পানি নিয়ে কোনো রকম দুষ্টমি সে একদম এল্যাউ করবে না। আদিব দরজার এক পাশে দাড়িয়ে অহনা সিকদার কে উদ্দেশ্য করে বললো!!

____মম তোমার ছোট বাদর ছেলে টাকে লাস্ট বারের জন্য মাফ করে দাও।আর এমন দুষ্টমি করবে না দেখো প্রমিজ! তুমি একটু শপিং এ গিয়ে ভাবীর জন্য কিছু কেনা করে নিয়ে আসো। ভাবী কে জেনো দেখতে পরীর মতোন লাগে ভাইয়া যেনো একবার দেখে ফিদা হয়ে যায় বুঝছো মম!তাহলে আমি এখন আসি দেখা হবে রাতে। বাই মম ড্যাড!!!
আদিব সোজা দৌড়ে গিয়ে বসলো গাড়িতে! গাড়ি স্টার দিলো।আর কপাল কুঁচকে বলতে শুরু করলো!!
____একটা মেয়ের জন্য এত কিছু! চেনা নেই জানা নেই আচ্ছা প্রেমে পরলে কি মানুষ এত বেশি মিথ্যা কথা বলে! জানা ছিলো না! লাভ এট ফ্যাস সাইড!!!!
আদিব গাড়ির ভেতরে বসে গুন গুন করে গান গাইতে শুরু করলো!!!!!!
প্রেমে পরেছে মন প্রেমে পরেছে অচেনা

এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ২৬

___এক মানুষ আমায় পাগল করেছে……
সে জেনো আমায় ডাকে!! দেখি না কোথাও
____ তাকে! ভালোবাসায় জড়িয়ে সে আমায় ধরছে

এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ২৮

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here