এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ২৮
Chadny islam
সিকদার মহলের প্রতি টা কোণায় কোণায় আজ আলোক সজ্জায় সজ্জিত! সিকদার মহলের সবার নয়নের মণি #আদনান_সিকদার_আদিল তার বিয়ের ছোট খাটো একটা প্রোগ্রাম করা হবে। যেখানে ছোট বড় সবাই উপস্থিত!অনুষ্ঠান যেহেতু রাতে বেলা হবে! তাই সব আত্মীয় স্বজনরা আসতে শুরু করে দিয়েছে৷ ঈশান সিকদার মহলে আসার আগে আজাদ চৌধুরী এবং ওনার ওয়াইফ সালমা চৌধুরী কে সাথে করে নিয়ে আসে সিকদার মহলে। যেহেতু আজাদ চৌধুরী একজন রাজনীতি বিধ। তাকে কম বেশি সবাই চিনে। ঈশান জুথী আজাদ চৌধুরী এবং ওনার ওয়াইফ ভেতরে প্রবেশ করতেই চোখ পরে আশরাফ সিকদার এর ৷ঠিক তখন আশরাফ সিকদার তার বন্ধুদের সাথে কথা বলছিলেন! আজাদ চৌধুরী কে দেখে এগিয়ে আসলেন আশরাফ সিকদার !! ঈশান বলে!!
___আংকেল আমার মামা আজাদ চৌধুরী! ইরা বাবা মা!
আশরাফ সিকদার যথেষ্ট নম্রতার সাথে বুকে বুক মিলিয়ে আন্তরিকতার সাথে কথা বলেন আজাদ চৌধুরী এর সাথে। একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পরেও তার মাঝে হিংসা অহংকার এর ছিটে ফোটা নেই পযর্ন্ত! দেখে বেশ মুগ্ধ হলেন আজাদ চৌধুরী! জুথী সালমা চৌধুরী কে নিয়ে অহনা এর সাথে পরিচয় করাতে নিয়ে গেলো। অহনা সিকদার সামনে দাড়াতেই সালমা চৌধুরী সালাম দিয়ে জানতে চাইলেন কেমন আছেন!! অহনা সিকদার ভালো আছে জানিয়ে আশেপাশের মানুষের মাঝে ব্যস্ত হয়ে পরেন যার কারনে সালমা চৌধুরীর সাথে তেমন কথা বলতে পারেন না। তাই পাশ থেকে কলি কে ডেকে বলেন!!
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
____তোমার ভাবীর কাছে ওনাদের কে নিয়ে যাও আমি কিছু সময় পর আসছি।
“”আচ্ছা বড় আম্মু বলে কলি জুথী আর সালমা চৌধুরী কে নিয়ে গেলো ইরার রুমে!!
আদিল সুন্দর পরিপাটি হয়ে আছে। তার শরীরের ফর্সা মুখটা ছাড়া পরিহিত সব জামাকাপড় কালো রংঙের।
আদিল এর কিছু চেনা পরিচিত বন্ধু এসেছে! আদিল তাদের সাথে বেশ কিছু খন দরে কথা বলতে ব্যাস্ত! ঈশান বিষয় টা বেশ কয়েক বার খেয়াল করলো! মনে হলো আদিল তাকে ইগনোর করছে। ঈশান এর এত ভাবনার মাঝে খেয়াল করেনি রিফাত এসেছে। রিফাত এসে ঈশান এর কাঁধের উপর হাত রেখে ঈশান কে উদ্দেশ্য করে বললো!!!
___ভাই পোড়া পোড়া গন্ধ পাচ্ছি! মনে হচ্ছে কারো হৃদয় পুড়ে ছার খাড় হয়ে যাচ্ছে!আচ্ছা ভাই আপনি কি জেলাস!!
ইশান হতভম্ব হয়ে পরলো রিফাত এর কথাই!!
___মানে!!
“”ভাই সবাই বউ কে নিয়ে জেলাস হই! আর আপনি কিনা বন্ধু কে নিয়ে। ইতিহাসের পাতাই বড় করে আপনার নাম টা লিখা থাকবে ভাই! বিগ ফ্যান !!
ঈশান গাল ফুলিয়ে বললো!!
__আসছিস তাই না! আগুনে ঘি ডালার জন্য।
“”আসলে ভাই আমি এই কাজ টাই ভালো পারি তো তাই আসছি একটু ঘি ডালতে! কাজে লাগছে কি না বুঝতে পারতেছি না! যদি একটু মতামত দিতেন৷
ঈশান গাল ফুলিয়ে বললো!!
____আদিল এর বাচ্চারে এই খানে নিয়ে আই রিফাত!!
“””কেনো ভাই বাসর করবেন!!
“”সালা হিজড়া! ব্যাডা মানুষ এর সাথে বাসর কেমনে করে!তাছাড়া আমার কিউট একটা বউ আছে।
“”থাকলে কি! আপনারে তো আর বাসর করতে দেয় না তাই না ভাই!
“”ঘরের কথা পরে জানলো কেমনে??
“””ভাই আমি তো আপনাদের ঘরের মানুষ! বিশ্বাস না হলে ভাবীরে জিগান।
“”সালার ভাই দুলাল!! তুমি কিনা প্যাচ লাগানোর জন্য পিএসডি করে আসছো। তা দুলাল কোন ইউনিভার্সিটি থেকে পিএসডি করে আসছো।
“”আরে ভাই আপনি কোন খেতে মুলা। আপনি এইটা ও জানেন না।
ঈশান রিফাত এর কথাই অভাক হয়ে তাকিয়ে রইলো!! অন্য দিকে রিফাত মুচকি মুচকি হেসে বললো!!
___যেখানে সয়ং আদিল ভাই আমাদের গুরু সেখানে পিএসডি করার জন্য কেনো ইউনিভার্সিটি লাগে নাকি।
এতখন আদিল রিফাত এর পাশে দাড়িয়ে সব টাই শুনলো! আদিল রিফাত এর মাথায় গাট্টা মেরে বললো!!
___আমাকে রিল্যাক্সে ফাঁসানো হচ্ছে না তাই না!
“””আরে না ভাই আপনার প্রশংসা করছিলাম! বিশ্বাস না হলে ঈশান ভাইয়ে জিগান!
রিফাত আস্তে ধীরে ওদের কথার মাঝ থেকে দূরে চলে গেলো। আদিল কে যে গুরু বলে সম্মোধন করছে তা শুনলে উষ্ঠা মেরে ফেলে দিবে। এর মাঝে কোথা থেকে জেনো আদিব এসে হাজির দেখে মনে হচ্ছে! আজকে বিয়ে করতে চলে এসেছে! ঈশান দুষ্টমি করে আদিব কে বলে!!
___আরে ছোট ভাই আদিব মিয়া। বিয়া তোমার নাকি তোমার ভাইয়ের আমি তো বেরি বেরি কনফিউস!
“”আরে ভাই! বিয়ে টা তো করতে চাই! কেউ করাই না। আমি ছোট বলে তাই নিজেই নিজের জন্য পাএী দেখছি।আইডিয়া টা কেমন??
আশরাফ সিকদার পাশ থেকে এসে বসলো ঈশান এর পাশের সোফায়।আর ঈশান কে বললো!!
___ইয়াংম্যান আজকে কিন্তু রাতে তোমার বিদেশি প্রোডাক্ট টা নিয়েই আসবা।
“”ঈশান ভিরভির করে বলে! সালা এখনো ভুলে নাই!
আশরাফ সিকদার ইশান কে বললেন!!
___কিছু বললা ইয়াংম্যান।
“”আরে না আঙ্কেল আপনার সামনে কিছু বলার সাহস আছে নাকি আমার। আমি তো ভীতুর ডিম!!
আদিল কর্কশ গলায় আশরাফ সিকদার এর উদ্দেশ্য বলে!!
__ড্যাড এই গুলার মাজে আমাকে কিন্তু টানবা না আজকে।
আদিব ফিক করে হেসে দিয়ে বলে!
___ড্যাড ভাইয়া কে টানার দরকার নাই! আমারে টানো বেশি বেশি!
আদিল চোখ গরম করে তাকাতেই আদিব বলে!!!
___আরে ভাই মজা করছিলাম। কেসা লাগা মেরি ম্যাজাক! সিরিয়াসলি নাও কেনো!!
আশরাফ সিকদার আদিল কে উদ্দেশ্য করে বললো!!!
___কেনো মাই সান তোমাকে টানবো না কেনো??
আদিল কিছুটা আপসোস গলাই বললো!!
___২৭ + আমার বয়স! বাসর কেনো বাসর ঘরের ফুল টাও ছিঁড়তে পারি নি। আজকে যে ভাবেই হোক ফুলটা ছিঁড়তেই হবে।
আশরাফ সিকদার হালকা কাশি গিয়ে গলা পরিস্কার করে রাগী গম্ভীর গলাই বললেন!!
___বেহায়া ছেলে বাবা হই তোমার! মুখে লাঘাম টানো!!
ঈশান বলে!!
____আংকেল আপনাকে দেখলে মনে হয় আদিল এর বন্ধু! বাবা একদম মনে হয় না । তাই বলে ফেলেছে।ওর একটা কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত!
আশরাফ সিকদার চোখ ঘুরিয়ে ঈশান এর দিকে তাকিয়ে অভাক হয়ে বললো!!
__কি শাস্তি দিলে ভালো হয় বলো তো ইয়াংম্যান!!
সালমা চৌধুরী দরজার সামনে যেতেই ইরার চোখ পরে মায়ের দিকে। ইরা এক ছুটে চলে আসে মায়ের কাছে।সালমা চৌধুরী দু’হাতে শক্ত করে বুকে টেনে নেই মেয়ে কে ।হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করে। ইরা মায়ের চোখের পানি মুছে দিয়ে বিছানায় বসতে বলে তার পাশেই ইরা মাকে জড়িয়ে দরে বসে পরে। তার পাশেই মেকাব আর্টিস্টরা দেখছে ইরা কে! এখনো কমপ্লিট হয় নি৷ ইরার সাজ। যা অল্প সাজানো হয়ে ছিলো কেঁদেই নষ্ট করে ফেলেছে। ইরার বাবা মা নতুন এসেছে এই বাড়িতে সবাই বেশ ব্যাস্ত তাই কলি ইরার রুম থেকে নিচে গেলো সালমা চৌধুরীর জন্য হালকা নাস্তা আনার জন্য। কলি উপর থেকে নিচে নামতেই চোখ পরলো আদিব এর। আদিব সবাই কে ছেড়ে কলির কাছে এগিয়ে গেলো। আদিব কলি দেখে উদ্দেশ্য করে বললো!!!
____রিমঝিম আসে নাই??
আদিব এর কথাই কলি ফিক করে হেসে দিলো। আদিব কতটা এক্সাইটেড দেখেই বুঝা যাচ্ছে!কলি মিনমিন করে বললো!!
___রিমঝিম কখনোই আসবে না ভাইয়া!!
কলির কথাটা যেনো আদিব এর একদম পছন্দ হলো না! আসবে না মানে টা কি আবার! এত কাঠ কুড় কার জন্য পোড়ালো তাহলে সে। আদিব এর মুখটা নিমিষেই ফেকাসে হয়ে গেলো। কলি আদিব কে কিছু টা রাগানোর জন্য বললো!!
___আরে ভাইয়া তুমি এত বেশি সাজছো কেনো!! দেখে মনে হচ্ছে আজকে তোমার বিয়ে।
আদিব একটু মুখ টা হাসি রাখার চেষ্টা করে বললো!!
__কেনো দেখতে সুন্দর লাগছে না আমাকে।
__না এক দম বাজে লাগছে!পুরো জুকারের এর মতোন!!
কলি এর কথায় আদিব এর রেগে যাওয়া উচিত কিন্তু কলির কথা শুনে আদিব রাগলো না। বরং সিরিয়াস হয়ে জিজ্ঞেস করলো কলি কে!!!
___কলি সত্যি করে বল!! তোর বেস্ট টু রিমঝিম আসবে কি না??
কলি এবার জেনো সত্যিই সিরিয়াস হয়ে গেলো আর বললো!!
__ভাইয়া তোমার মনে হয় আমি তোমার সাথে ফাজলামি করছি!আমি এখন ছোট নেই বড় হয়ে গেছি।আমি সত্যি বলছি রিমঝিম সত্যি আসবে না।
আদিব বুকে হাত দিয়ে মন টা কে খারাপ করে বললো!!
___দিলি তো মনটা ভেঙে!! এখন জোড়া দিবো কি দিয়ে!!
“””মানে???
“””কিছু না তুই যা।
কলি মুচকি মুচকি হেসে বললো!!
____ডাল মে কুচ কালা হোতা হেহহহহ.!! তাই না ভাইয়া!!
আমার চোখের সামনে থেকে সর লাথী খাওয়ার আগে। তোর ফ্যান ফ্যান কান্না শুনতে এখন আমার বেশ বিরক্ত লাগবে।
আইরা সুন্দর করে পরিপাটি হয়ে সেজে নিচে এসেছে।তার সাজের কারন মূলত আদিল কে জেলাস ফিল করানো। আর ইরার থেকে নিজে কে সুন্দর প্রমাণ করানোর জন্য।আজকে সে বিদেশি দের মতোন সাজে নি বরং বাঙালি মেয়ে দের মতোন করে শাড়ি পরেছে হালকা গোলাপি রঙের। দেখতে যেমন সুন্দর লাগছে তেমনি পরিপাটি লাগছে।প্রিয়াশ তো হ্যা করে তাকিয়ে দেখছে আইরা কে ঠিক প্রিয়াশ এর পাশেই ঈশান! পিয়াশ কে এমন ভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে ঈশান হাতের আঙুল প্রিয়াশ এর মুখের ভেতরে ডুকিয়ে দিয়ে বলে। এত বড় করে হ্যা করলে শুরু আঙুল না আরও অনেক বর কিছু যাওয়া চ্যান্স আছে ব্রো।
প্রিয়াশ নিজের মুখ থেকে ঈশান এর হাত টাকে সরিয়ে দিয়ে বললো!!
___বাল ডিস্টার্ব করার সময় পাস না!! সর এখান থেকে।
প্রিয়াশ নিজেই উঠে চলে গেলো আইরার পাশে। আর আইরা কে উদ্দেশ্য করে বললো!!
____ওয়াও এত প্রীটি লাগছে তোমাকে!! বাই দ্যা ওয়ে আমাকে কেমন লাগছে তোমার??
আইরা প্রিয়াশ এর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে!!
___হোয়াট??
প্রিয়াশ বেশ কিছু টা সিরিয়াস হয়ে বললো!!
__আই থিংকস! তুমি চাইলে আমার সাথে সারাজীবন কাটিয়ে দিতে পারো!
আইরা বাঁকা হাসি হেসে বললো!!
___তুমি ফ্রেন্ড হিসাবে পারফেক্ট। বাট লাইফ পার্টনার হিসাবে আমি বলবো জিরো! নট ইন্টারেস্ট!
আইরা প্রিয়াশ এর থেকে বেশ দূরে চলে গেলো। প্রিয়াশ বুঝতে পারলো আইরা তাকে ইগনোর করছে। প্রিয়াশ সয়তানি হাসি হেসে মনে মনে আওড়াতে লাগলো!!
___প্রিয়াশ যেটা যাই সেটাই পাই।হোক সেটা ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত। আমার তোমাকে চাই মানে চাই যে ভাবেই হোক।মিস রাত পরী।
ইরাকে জুথী কলি দুই পাশে দুই জন দরে নিয়ে আসছে ইরার রুম থেকে।হঠাৎ ইরার আগমনে আদিল চমকে যায়।তার সৌন্দর্যে পুরো সিকদার মহল ঝলমল করছে। আদিল এর নজর জেনো কাটছেই না ইরার থেকে। অহনা সিকদার লাল জামদানি শাড়ি এনে দিয়ে ছিলো ইরা কে এই মূহুর্তে ইরা সেটাই পরে আছে।শাড়ি টা পরে ইরাকে মারাত্মক সুন্দর লাগছে! আইরার পাশেই সোনালি তালুকদার! আইরার হাসি খুশি মুখ টা যেনো নিমিষেই ফেকাসে হয়ে গেলো। ইরার সৌন্দর্যের কাছে তার সৌন্দর্য তুচ্ছ।মেয়েরা বরাবরি নিজের থেকে বেশি সুন্দর মেয়ে কে ঘৃণা করে। আইরার ক্ষেএে ও তার ব্যাতিক্রম নয়। আইরা সোনালী তালুকদার এর দিকে বার বার তাকাচ্ছে আর ভিষণ মন খারাপ করছে! আইরা সোনালি তালুকদার কে উদ্দেশ্য করে বললো!!!
___আজ এই মেয়ের সৌন্দর্যের কাছে আমার সৌন্দর্য যেনো এক তুচ্ছ বালুর কণা মনে হচ্ছে মম!
সোনালি তালুকদার মেয়ের মাথায় আলতো করে হাত রেখে আদুরে গলাই বললেন!!
___যে যাকে যত বেশি ভালোবাসবে! তার চোখে তাকে ঠিক ততটাই বেশি সুন্দর লাগবে। ভালোবাসা সৌন্দর্য থেকে নই হৃদয় থেকে হয়।
___যদি এমন টাই হয়। তাহলে আদিল কেন আমাকে ভালোবাসলো না মম।।
সোনালী তালুকদার আদরে গলাই মেয়ে কে বুঝিয়ে বললেন!!
__ভালোবাসা মিষ্টি বাতাসের মতোন কখন কাকে আলতো করে ছুয়ে দিবে সেটা বুঝার মতোন ক্ষমতা কারোর নেই!সেই সময় টাও তুমি পাবে না।ছোট এই চার আঙুল এর কপালে সবাই থাকে না মা। কিছু জিনিস ভাগ্য করে পেতে হয়।তবে সব সময় এইটা মনে রাখবা।আল্লাহ উওম পরিকল্পনা কারী। যা কিছু আমাদের জীবনের সাথে হয়ে গেছে হয় বা হবে সব কিছু উওম৷ভরসা রাখো আল্লাহ তায়া’লা উপর!
আইরা মায়ের গলা জড়িয়ে দরে বললো!!
___মম আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে। চলো আমরা ইউএস ব্যাক করি। আমি ভেবে ছিলাম এই খানে থাকলে হয়তো আদিল কে দুই দিন আগে বা পরে ঠিক আমার করে পেয়ে যাবো কিন্তু না আদিল কখনোই আমার হবে না!আদিল ওই মেয়ে টাকেই বেশি ভালোবাসে মম! আমি আদিল কে ঠিক যতটা কষ্ট দেয়ার চেষ্টা করে ছিলাম না মম!এখন মনে হচ্ছে সেই কষ্ট টা দ্বিগুণ হয়ে আমার বুকে এসে লাগছে মম।যে আমার ভালোবাসা টাই বুঝলো না সে কি করে আমার অবহেলা টা বুঝবে মম। আমি চলে যাবো মম।টিকিট এর ব্যবস্থা করো।
মেয়ের এমন পরিবর্তন দেখে সোনালি তালুকদার বেশ অভাক হলেন! তবে মনে মনে অনেক খুশি ও হলেন। তার ছোট মেয়ে যে সব কিছু এত দূত বুঝতে পেরেছেন বলে।
আদিল এগিয়ে গেলো ইরার কাছে আশেপাশে অনেক অনেক মানুষ প্রেস মিডিয়া তো আছেই।আদিল নিজের হাত টা ইরার দিকে এগিয়ে দিলে ইরা এত গুলা মানুষের সামনে নিজের স্বামী কে অপমান করতে চাই না বলে আদিল এর হাত দরে সামনের দিকে এগোলো।ইরার এমন আচরণ দেখে আদিল বেশ কিছুটা মুগ্ধ হয়। আদিল এর পাশে যেনো একটা ডানা কাটা পরীর মতোন সুন্দর লাগছে তার পেত্নী বউ টাকে।
আইরার যেনো নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে এই গুলা দেখে।কোনো ভাবে এই গুলা মেনে নিতে পারছে না।ভালোবাসার মানুষ কে অন্যের পাশে দেখার মতোন যন্ত্রণা দায়ক অন্য আর কোনো কিছু হতে পারে না।তার থেকে মৃত্যু অনেক টাই ভালো তৃপ্তির হয়।যেই জায়গাই তার থাকার কথা ছিলো সেখানে কিনা আজ অন্য নারী!সত্যি ভালোবাসা সুন্দর যদি দুই জনের চাওয়া টা এক হয়।
প্রিয়াশ অহনা সিকদার এর পেছন পেছন ঘুরছে! বেশ অনেক খন দরে প্রিয়াশ ও কিছু বলছে না। আর অহনা সিকদার নিজেও না।একটা সময় এমন পেছন পেছন গুরতে দেখে বেশ বিরক্ত হলেন অহনা সিকদার! গম্ভীর গলাই প্রিয়াশ কে উদ্দেশ্য করে বললো!!!
____কি চাই!!
অহনা সিকদার যে বেশ ভালো করে বুঝতে পরেছেন তার পেছন পেছন ঘুরার জন্য নিশ্চয় কোনো কারন আছে। তাই বলতে বলছেন প্রিয়াশ কে। প্রিয়াশ কিছুটা ভয়ে ভয়ে বললো!!
___বড় আম্মু আমি বিয়ে করতে চাই! আর হ্যা! আম্মু প্রমিজ আমি একদম গুড বয় হয়ে যাবে। পাশাপাশি কোম্পানির দেখাশোনা ও করবো।
অহনা সিকদার বেশ ভালো করেই বুঝতে পারলেন প্রিয়াশ এর পেছন পেছন গুরার কারন টা!প্রিয়াশ যে তার গাড়ে বন্ধুক রেখে গুলি ছুরবে তা বুঝতে বাকি রইলো না অহনা সিকদার এর । প্রিয়াশ আর কাউকে ভয় পাক আর না পাক অহনা সিকদার কে জমের মতোন ভয় পাই।হয়তো সত্যি বিয়ে করতে চাই ভালো হতে চাই।বড়রা বরাবরি তাকে এই সুযোগ টা দিয়ে আসছে। সে নিজেই তো কাজে লাগাতে ব্যার্থ হচ্ছে। তাই অহনা সিকদার বেশ স্বাভাবিক ভাবেই বললেন!!!
___কই বছরের রিলেশন! আর হ্যা মেয়ে টা কে??
প্রিয়াশ শক্ত ডোক গিলে বললো!!
___কোনো রিলেশন না বড় আম্মু। আমি পরিবারের পছন্দেই বিয়ে করবো! আমার ওই মেয়ে টাকে ভালো লাগে বিয়ে করতে চাই!!
প্রিয়াশ হাত দিয়ে ইশারা করতেই অহনা সিকদার এর চোখ পরে আইরার দিকে। তুমি আইরা কে বিয়ে করবে???
প্রিয়াশ মাথা নত করে ভদ্র ছেলের মতোন বললো!!
____হ্যা আম্মু! যদি তোমাদের কোনো আপওি না থাকে!!
অহনা সিকদার বেশ স্বাভাবিক ভাবে বললেন!!!
____আইরা যথেষ্ট বুদ্ধিমতী মেয়ে কখনোই এই বিয়েতে রাজি হবে না। তুমি আগে প্যারসোনাল ভাবে কথা বলো আইরার সাথে। তারপর যদি তোমাদের মনে হয় বিয়ে করবা৷তাহলে আমি অবশ্যই তোমাদের পাশে আছি।
প্রিয়াশ ভেবে ছিলো অহনা সিকদার প্রিয়াশ এর মুখে আইরার কথা শুনে সাথে সাথে এনাওজমেন্ট করে সবাইকে বিয়ের বিষয়ে জানিয়ে দিবে। তাহলে তখন তো আইরা আর অহনা সিকদার এর মুখের উপর না বলতে পারবে না।সম্মান বাঁচানোর জন্য হলেও বিয়ে টা করবে! কিন্তু অহনা সিকদার খেলার মোড় টাই গুরিয়ে দিলো! এতে করে অহনা সিকদার যে যথেষ্ট বুদ্ধিমতী মহিলা তার প্রমাণ প্রিয়াশ আজকে আবার নতুন করে পেয়ে গেলো।
কলি আর জুথী সুন্দর পরিপাটি করে আদিল এর রুম টাকে সাজাচ্ছে।তাদের লাভ ম্যারেজ ও নয় আবার এ্যারেজ ম্যারেজ ও নয়৷ সোজা কথাই বলতে গেলে কিডনাপিং ম্যারেজ।সে ক্ষেএে চেনা শোনা ও খুবি কম ছিলো। এখন প্রায় দশ দিন এর মতোন হয়ে গেছে তারা এক সাথে আছে। একজন মানুষ কে জানার জন্য কিছু মূহুর্ত এক সাথে কাটালেই বুঝা যায় মানুষ টা কেমন।
তাই জীবনে ঘটে যাওয়া সব অতীত কে উপেক্ষা করে নতুন জীবনে নতুন ভাবে বাঁচতে শিখতে পারা টাই উওম। জুথী কে সব কাচা ফুল ঈশান আর রিফাত এনে দিয়েছে কিছু খন আগে। সে গুলো দিয়ে পরিপাটি করে রুম টাকে সাজানো হচ্চে!
প্রিয়াশ আইরার পাশে দাড়িয়ে বেশ ভীত গলাই মাথা নইয়ে খুব স্বাভাবিক ভাবে বললো!!
___একটা কথা বলবো রাত পরী!!
আইরা ও খুব স্বাভাবিক ভাবে বললো!!!
____হ্যা বলো! কি হয়েছে??
প্রিয়াশ খুব সিরিয়াস হয়ে বললো!!
___না কিছু হয় নি! আমাকে বিয়ে করবা রাত পরী? আমার অনেক ভালো লাগে তোমাকে! ট্রাস্ট মি অনেক ভালো রাখবো তোমাকে!! জীবনের সব থেকে সুন্দর মূহুর্ত কাটাবো আমরা এক সাথে! তোমাকে পৃথিবীর সব থেকে সুখী নারী করে রাখবো আমি আমার জীবনে। Will You Marry Me..!
সিকদার মহল পুরো খালি আশেপাশে চেনা অচেনা যারা ছিলো সবাই ইতিমধ্যে চলে গেছে। এমন কি ইরার মা বাবা ও আশরাফ সিকদার থাকার জন্য রিকোয়েস্ট করলে আজাদ চৌধুরী জানাই ইনশাআল্লাহ আবার পরবর্তী সময়ে এসে থাকবেন। সবাই রাতের খাবার খেয়ে নিয়েছে। একমাত্র আদিব ছাড়া! সে দেবদাস হয়ে বসে আছে। রাতের পার্টির ড্রেস চেন্স করছে সেই কখন একটা টু_কোয়াটার আর গেনজি পরে বসে আছে।তার ছোট মনটা আজ ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে।তার সাজানো সব প্লানিং এক নিমিষেই শেষ। তার অল্প একটু খানি ভালো লাগা। তাও সেটা হালকা বাতাসে উড়িয়ে নিয়ে গেলো। আজকে যে রাতে আশরাফ সিকদার ঈশান রিফাত প্রিয়াশ এক সাথে ড্রিংক করবে আদিব ভালো করেই জানে। এখন তাই এই এক টাই সুযোগ। তাকে দেখতে এত টাই অবলা লাগছে যে আশরাফ সিকদার মায়া করে সাথে করেই নিয়ে যাবে! তার আগে আদিল আর ইরা কে রুমের ভেতরে দিয়ে আসতে হবে। মমকে ঘুমতে হবে। মম যদি জানে ড্রিং এর কথা তাহলে হয়তো মদের সাথে বিশ টাও মিশিয়ে দিয়ে যাবে।
জুথী আর কলি বেশ কিছু খন আগে ইরা কে রুমে নিয়ে গেছে ঠিক বিছানার মাঝ খানে বসিয়ে দিয়ে এসেছে। জুথী আজকে কলির সাথেই থাকবে! তাই তারা দুইজন কলির রুমে চলে গেলো। আদিল সবাই কে বিশেষ করে ঈশান কে উদ্দেশ্য করে বললো!!!
___আজকে যদি বাসর টা করতে না দেয় সালা! কালকে তোর কে নিয়ে বিধায় হবি।
ঈশান সিরিয়াস হয়ে বললো!!
___সকাল হওয়ার কি আছে বোন টা যে কিউট দিয়ে দে এখনি নিয়ে যায়। মানুষ বলে না বানরের গলাই মুক্তর মালা তোর হয়ছে সেই অবস্থা। এমন বউ থাকলে বাসর না করে সাজিয়ে রাখা যায়।
“”হ তুমি ঠিক বলেছো বন্ধু। আমি তো বিয়ে করেছি বউ আলমারী কে তুলের রাখার জন্য! সালা একটা লাথীয়ে হবে নাকি ডজন খানেক লাগবে।
“”আমাকে সম্মান দিয়ে কথা বল! মেয়ের বড় ভাই হয় আমি মানে তোর সম্মুন্দি!
দুইজন বেশ কিছু সময় নিয়ে কথা শেষ করলো।আদিল আস্তে আস্তে নিজের রুমের দিকে চলে আসে। পুরো রুম টাই লাল নীল বাতি দিয়ে সজ্জিত। ফুলের সুবাসে পুরো রুম ছড়িয়ে আছে।তার থেকেও বেশি সুন্দর মনোমুগ্ধকর লাগছে তার পেত্নী বউ টাকে। আদিল রুমের দরজা লাগিয়ে এগিয়ে গেলো বিছানার দিকে। ইরা বেশ ভয় পাচ্ছে ইরার শরীর কাঁপছে। আদিল বিছানার গিয়ে বসলো ঠিক ইরার সামনে। আদিল ইরার মুখ টাকে নিজের কাছে টেনে কপালে আলতো করে একটা চুমু দিলো। ইরা কিছু বলতে চাই কিন্তু আদিল শুনতে চাই না।আদিল ভাবছে হয়তো ইরা আটকাতে চাইছে তাকে৷ আদিল ইরা কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে। ইরার নরম তুলতুলে ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়। ইরা দুহাতে খামচে দরে আদিল এর শার্ট এর কলার নিশ্বাস উঠা নামা করছে বুক কাপছে। আদিল কিছু মিনিট পর ইরার থেকে নিজের ঠোঁট সরিয়ে গাড়ে মুখ ডুবাতেই। ইরা আদিল কে বেশ দূরে ঠেলে দেয়। আদিল ইরার সাথে জিদ দেখাতে চাইলে ইরা বলে!!
এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ২৭
___প্লিজ আমাকে আর কিছু দিন সময় দিন।
আদিল চোখ গরম করে নিজের মেজাজ হারিয়ে ফেললো আর রাগী কর্কশ গলায় বললো!!
____কোনে সময় দেয়া হবে না তেমাকে আর। আমার এখনি চাই তোমাকে এই মূহুর্তে। আই নিড ইউ জানবাচ্চা। আর দূরে সরিয়ে দিস না আমাকে। প্লিজ ট্রাই টু আনড্রাসট্র্যান্র! আই রেইলি নিড ইউ!
