এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ৩০

এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ৩০
Chadny islam

কলি আগে আগে চলে গেলো ফুচকার দোকানে ফুচকা খাবে বলে। আদিব ও কলির পেছন পেছন যাচ্ছে। কলি অনেক দ্রুত হাটছে। আদিব রিলাক্সে যাচ্ছে আস্তে আস্তে। কি বলবে আদিব রিমঝিম কে! তাকে ভালো লাগে নাকি ভালোবাসে!! কি বলবে সে নাকি কালকে কেনো আসনি এইটা বলবে। আদিব এর হঠাৎ করে কালকের কথা মনে আসাতে রেগে উঠে। কিছুটা রাগী রাগী মুখ নিয়ে এগোতে থাকে। ফুচকার দোকানের সামনে যেতেই দেখে রিমঝিম সত্যি এসেছে ফুচকা খাচ্ছে। তাহলে সত্যি আজ রিমঝিম এর জন্মদিন আদিব এর মুখ জুড়ে ভেসে আসে হাসির রেখা। আদিব আরেকটু এগিয়ে গেলো আর রিমঝিম কে উদ্দেশ্য করে বললো!

___জন্মদিন এর অনেক অনেক শুভেচ্ছা মিস রিমঝিম!
রিমঝিম যেনো বেশ অভাক হলো আদিব এর কথাই কার জন্মদিন আজ। কাকে জন্মদিন এর শুভেচ্ছা জানালো আদিব! রিমঝিম অভাক হয়ে বললো!!
___ভাইয়া কার জন্মদিন! আপনি কাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন!
আদিব অবাক হয়ে রইলো! আর বার বার কলির দিকে তাকালো তাহলে কি কলি মিথ্যা কথা বলেছে আজকে কি রিমঝিম এর জন্মদিন নয়। আদিব আমতা আমতা করে বললো!!
___ক.কলি যে বললো আজকে তোমার জন্মদিন!
কলি ফিক করে হেসে দিলো সে তো দুষ্টমি করে বলে ছিলো। কিন্তু আদিব তো সত্যি সত্যি ভেবে নিয়েছে। আদিব বেশ লজ্জা পেলো কলি বিষয় টা বুঝতে পেরে বললো!!

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

__সরি ভাইয়া আমি তো একটু মজা কর ছিলাম তোমার সাথে আর তুমি তো সিরিয়াসলি ভেবে নিয়েছো।
কলি রিমঝিম কে বললো!!
__আরে আমি ভাইয়া কে বলে ছিলাম দুষ্টমি করে তাই তোকে ওয়িশ করছে ভাইয়া।যাক হোক ভাইয়া কে তোর ট্রিট দেয়া উঠিত কিন্তু।
ঠিকি তো বলেছে কলি!জন্মদিন হোক বা না হোক ওয়িশ তো করছে। তাই আদিব কে রিমঝিম এক পেলিট ফুচকা এগিয়ে নিয়ে দিয়ে বললো!!
___ভাইয়া এই টা আপনার জন্য প্লিজ খান!! কিন্তু আজকে আমার জন্মদিন না পরের মাসে চার তারিখে অবশ্যই ওয়িশ করবেন আমাকে!
আদিব রেগে ফুসফাস করে বললো!!

____আমি ফুচকা খাই না! থ্যাংক্স!!
আদিব বেশ কিছু খন চুপ করে রইলো! ওরা খাচ্ছে বেশ তৃপ্তি নিয়ে।কি আছে এই ফুচকায় তার জানা নেই। তবে শুনে ছিলো ফুচকা নাকি মেয়ে দের ইমোশন!আদিব ভাবছে কালকে কেনো আসলো না!এই রিমঝিম আজকে কি আবার জিজ্ঞেস করবে কি না?? আদিব এর ভাবনা শেষ হতে না হতেই কলি আর রিমঝিম হাঁটা শুরু করলো কলেজের দিকে। আদিব অভাক নয়নে তাকিয়ে দেখছে। কি মনে করে যেনো আবার ডাকলো পেছন থেকে!!
___রিমঝিম!!
একবার ডাকে আদিব! সাথে সাথে ডাকটা পৌঁছে যায় রিমঝিম এর কানে পেছন ফিরে তাকিয়ে আদিব এর বেশ কাছে এসে জিজ্ঞেস করে!!

____কিছু বলবেন ভাইয়া।
আদিব রাগে কটমট করতে করতে বললো!!
____আমি তোমার কোনো জনমের ভাই!!?
রিমঝিম এর সহজ সরল উক্তি!!
___আপনি আমার কোনো জনমের ভাই নন! কলি আমার বেষ্ট টু আপনি যেহেতু কলির ভাই তাই মানে আমার ও ভাই।
“”হ্যা বোন। আমাকে জাতীর ভাই বানিয়ে দাও!!
“”মানে!??
আদিব বিরক্তি নিয়ে বললো!!

___পরের থেকে আর ভাইয়া ডাকবা না আমাকে। আমাদের এমনিতেই জায়গা সম্পত্তি বেশ কম। এখন যদি আবার বোন বানাই ভাগ দিতে হবে না বলো তুমি। আমরা দুই ভাই বেশ কিপটা বুঝছো। আমাদের ড্যাড সে তো বিশ্ব কিপটা!আমাদের জায়গা সম্পত্তির ভাগ দিতে হবে বলে আজকে আমাদের আর কোনো বোন নেই!! দুঃখ হয় আমার নিজের জন্য!
কলি আর রিমঝিম যেনো বেশ অভাক হলো!আদিব কে দেখে মনে হয় না এত বেশি কথা বলে। আজকেই প্রথম দেখলো এত বেশি কথা বলতে!তাও আবার কিনা সবাই কে পরিচয় করিয়ে দিলো কিপটা নাম দিয়ে। কলি রাগে কটমটিয়ে বললো!!

____ভাইয়া বড় আব্বু একটু ও কিপটা না।আমাকে কয়েক দিন আগেই একটা আইফোন কিনে দিছে। বড় আব্বু বলেছে তোমার জন্য একটা সরকারি হসপিটাল খুলে দিবে আর তুৃমি কিনা আব্বু কে কিপটা বলছো।
আদিব মুখ বাঁকিয়ে বলে!!
___আইছে আমার বাপের চামছা। তোর আইফোন আজকেই আমাকে দিয়ে দিবি।এই ফোনের জন্য তুই এত বেশি পাকনামি করিস।
“””একদম না বড় আব্বু বলেছে ফোন টা শুধুই আমার!
বলে কলি রিমঝিম কে টেনে নিয়ে গেলো কলেজের ভেতরে।

____গুপ্ত ঘরে _____
অল্প আলোয় স্পষ্ট মুখটা ভেসে আসলো মুখটা যা দেখে ইরা ভয়ে টুকরে উঠে মিনমিন করে বললো!!
____ভাইয়া আপনি এই খানে করছেন।
ইরার কথাই গুপ্ত ঘরে থাকা প্রত্যেক টা মানুষ চমকে উঠে। হাতে গুনা পাচ থেকে সাত জন মানুষ তাও তাদের কে দেখে মনে হচ্ছে ডক্টর! প্রিয়াশ অভাক হয়ে তাকিয়ে বললো!!
___এই মেয়ে তুমি এখানে আসলে কি ভাবে??
ইরা চমকে উঠে ভয়ে প্রিয়াশ এর কথা ঠিক কতটা ভয়ংকর শুনা যাচ্ছে তা হয়তো বলে বোঝানো যাবে না। ইরা প্রিয়াশ এর দিকে চিৎকার করে রাগী গলাই কাপতে কাপতে বললো!!!
____এ..এইটা পারুল না।কি করছেন ওর সাথে। ইরা দৌড়ে পারুল এর কাছে যেতে চাইলে প্রিয়াশ এক উচ্চ থমক দিয়ে থামিয়ে দিয়ে বলে!!

___আর এক পা সামনে এগোলে এখানে মেরে ফেলে দিবো। বাঁচতে চাইলে যাও এখান থেকে।
ইরা অভাক হয় প্রিয়াশ এর এমন থমকে।তাছাড়া ঘরের বাজে গন্ধে বমি আসার অবস্থা প্রায় সারা শরীর কাপছে।চোখ বেরে পানি ঝড়ছে।রুম টাও বেশ অন্ধকার। ইরা রেগে গেলো প্রিয়াশ এর উপর কেনো করছে এমন পারুল এর সাথে। ইরা তাও সামনের দিকে এগোনের চেষ্টা করতে লাগলো!! আর বললো!!
___ভাইয়া পারুল কে ছেড়ে দিন! ওকে মারবেন না প্লিজ!
ইরার কথা শুনে আশেপাশের প্রত্যেক টা মানুষ শব্দ করে হেসে ফেললো।এ কেমন অদ্ভুত হাসি ভয়ংকর লাগছে সবাই কে। এদের দেখে মনে হচ্ছে ডক্টর। এত গুলা ডক্টর এই অন্ধকার ঘরে কি করে। ইরা আবার ও একটু এগোতে চেষ্টা করলে।একটা ডক্টর ইরার দিকে বাজে নজরে তাকিয়ে প্রিয়াশ কে উদ্দেশ্য করে বললো!!

___আজকে রাত টা তো এই পাখি কে দিয়েই কাটানো যেতে। সি ইসট বেরি হটস…
সাথে সাথে আশেপাশের প্রত্যেক টা লোক সম্মতি জানিয়ে বললো ঠিক বলেছো। তবে প্রিয়াশ এর মুখটা ফেকাসে হয়ে গেলো! আদিল যদি কোনো ভাবে জানে তার বউ এর দিকে কেউ বাজে নজর দিছে। সব গুলো কেই জান্ত পুতে ফেলবে এই খানেই।প্রিয়াশ ইরা কে মানানোর জন্য বললো!!
___তোমাকে যেতে বলছি যাও ইরা। বের হও এখান থেকে নয়তো শেয়াল কুকুরের এর খাবার হয়ে রাস্তায় পরে থাকবে।
ইরা বাঁকা হেসে বললো!!

___আপনার সাহস দেখে আমি অভাক হচ্ছি।আপনার কি বুক কাপছে না। কি করছেন এই গুলা বেঁচে থাকতে চাইলে আপনারা এখান থেকে চলে যান।
ইরার ছোট খাটো থ্রেটে সবাই হিহিহি করে হেসে ফেললো।আরেক জন এগিয়ে গেলো ইরার দিকে ইরার চুলের মুঠি শক্ত করে টেনে দরে বললো!!

____এই সব মাগী কই থেকা আহে!!
লোক টার কথা শেষ করার সাথে সাথে ইরা চুলের মুঠি থেকে নিজের চুল ছাড়িয়ে সর জুড়ে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দেয় লোক টার গালে। থাপ্পড় টার এত শব্দ হয় যে এক সাথে সবাই নিশ্চুপ হয়ে যায়।ইরা আরেক টু এগিয়ে আরেক টা থাপ্পড় মারতে গেলে ডক্টর টা ইরার হাত দরে ইরার পেছনের দিকে ঘুরিয়ে দাতে দাঁত পিসে কিরমির করতে করতে বললো!!
____মা…গী তোর সাহস হইলো কেমনে আমার শরীরে হাত তুললি।
লোকটা প্রিয়াশ কে ইশারা করে বললো!!
____আজকে রাতের জন্য অন্য মেয়ে নই! আজকে এই মেয়ে কেই চাই আমাদের। এই মেয়ের কত তেজ আমি ও দেখবো।
লোকটা বাকি ডক্টর দের ইশারা করতেই একটা চেয়ার নিয়ে আসে। আর সাথে সাথে ইরা কে চেয়ারের সাথে বেঁধে ফেলে।এত গুলা পুরুষ এর সাথে ইরার মতোন সাধারণ একটা মেয়ে কখনো পেরে উঠবে না। তাকে স্পর্শ করছে বাজে ভাবে। ঘৃনা লাগছে নিজের প্রতি! ভিষণ ঘৃনা প্রিয়াশ কেনো আটকালো না এদের কে তাহলে কি প্রিয়াশ ও এদের মতোন ছি….
পারুল এর মরা বডি থেকে কি বের করছে এরা। লাশ টা থেকে বাজে গন্ধ আসছে। গা গলিয়ে বমি আসতে শুরু করলে ইরা গলগল করে বমি উগরে বের করে দিলো।ইরার এমন বাজে অবস্থা দেখে প্রিয়াশ পানি এনে ইরা কে মুখে চেপে পানি টা মুখে ডেলে দিলো। ইরা কে পানি টা খাওয়ানো শেষ করে পানির বোতল টাকে এমন এক আচার মারে আর দাঁতে দাঁত পিসে বলে!!!

____মরার পাখনা গজাইছে তাই এই খানে আসছিস। কে দিছে তোরে এত সাহস।
ইরার চোখ বেড়ে ঝড়ছে অজস্র পানি সে তো পারুল কে খুজতে এসে ছিলো। আর পেয়ে ও গিয়ে ছিলো তবে মৃত কিন্তু পারুল এর মরার পর ও শেষ রক্ষা হলো না। ইরা শক্ত গলাই কম্পিত শুরে বললো!!.
___বাঁচতে চাইলো পারুল কে ছেড়ে দে।
পাশ থেকে এক লোক স্বশব্দে হেসে হিহি বলে উঠল!!
__আমরা আর বাঁচতে চাই না তো! মরে যেতে চাই কে মারবে আমাদের কে তুই মারবি??
অন্য আরেকটা ডক্টর চেতে গিয়ে বললো!!
___ সালির বেডির সাথে এত কিসের আলাপ তোর। পার্টি করমো রাতে। ঘুমের ইনজেকশন মার সালিরে।
বলেই একজন ডক্টর একটা ইনজেকশন বের করে আনলো ইরার হাত বাধা থাকাই কোনো রকম বাঁধা প্রোয়গ করতে পারলো না ইরা। ডক্টর টা হাতের এক বাহু টেনে নিয়ে একটা ইনজেকশন লাগিয়ে দিলো।

“”””””” ইরা চিৎকার করে আদিল কে ডাকলো কিন্তু সে তো আশে পাশের কোথাও নেই।তাকে বাঁচাবে কে সে তো এখনি মরতে চাই না! অনেক গুলো দিন বাঁচতে চাই ওই খারাপ মানুষ টার সাথে ইরা চিৎকার করে উঠে আমরা এক সাথে চাই আমাকে বাঁচান! প্লিজ আমাকে নিয়ে যান এখান থেকে কোথায় আছেন আপনি।
বলতে বলতে ইরা চেয়ারেই ঘুমিয়ে যায় না চাইতেও। প্রিয়াশ এত খন খেয়াল না করলেও এখন খেয়াল করে দেখলো ইরার ফোন টা মাটিতে পরে গেছে হয়তো থাপ্পড় মারা সময় কোনো ভাবে মাটিতে পরে গেছে প্রিয়াশ ফোন টা হাতে তুলে সাথে সাথে বন্ধ করে দিলো। আর পাশের সব ডক্টররা মিলে পারুল এর বডি থেকে একটা একটা করে সব প্রয়োজনীয় জিনিস বের করে নিচ্ছে। যে গুলা ভালো দামে সেল করা হবে।

___পার্টি অফিসে _____
নির্বাচন অফিসে বসে আছে আদিল আর আদিব। আশরাফ সিকদার ভাষণ দিচ্ছেন। বেশ কিছু খন রাজনৈতিক সমাবেশ থেকে ভাষন শেষ করে এসে বসলেন আদিল এর পাশে। সাথে সাথে একজন ওয়েটার এসে আশরাফ সিকদার কে পানি দিয়ে গেলেন। আশরাফ সিকদার পানির গ্লাস টা হাতে নিয়ে আদিল কে উদ্দেশ্য করে বললেন!!
___দেখলা তোমার বাবা একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কি সুন্দর ভাষন দিলো।
আদিল যেনো অভাক হলো এ কাকে দেখেছে। আদিল হিহি করে হেসে বললো!!
___নিজের প্রশংসা নিজে করা মানেই মূখ্যতা!তুমি মন্ত্রীর পরিচয় দিলে না ড্যাড মূখ্য তার পরিচয় দিলা।
আদিল এর এমন উওর শুনে আদিব হিহি করে হেসে দিলো। আশরাফ সিকদার চোখ গরম করে তাকালে আদিব এর হাসি মুখটা নিমিষেই ফেকাসে হয়ে গেলো! আশরাফ সিকদার গম্ভীর গলাই বললেন!!!
____বেহায়া ছেলে! বাবা হই তোমার সম্মান দিয়ে কথা বলো!!
আদিল আশরাফ সিকদার কে রাগানোর জন্য বললো!!!

___সম্মানিত পিতা মহাশয় আপনাকে আরও বেশি সম্মান দিয়ে বলছি! আপনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার যোগ্য নন। আসন টা ছেড়ে দিন এবং আমাকে দিয়ে দেন!!!
আশরাফ সিকদার বাঁকা হেসে বললেন!!
___মনে হচ্ছে তুমি আমার শশুর লাগো! চাইবা আর আমি তোমার মেয়ে কে পাওয়ার লোভে তোমার কাছে দিয়ে সব বেচে দিবো। আমি একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমি এত টাও লোভী নয়!!
___নানা ভাই যে কি দেখে তোমার কাছে তার মেয়ে কে বিয়ে দিয়ে ছিলো।কষ্ট হচ্ছে নানা ভাই এর জন্য।
___বেহায়া ছেলে বাবা হই তোমার। একদম আমার রাগিণী কে নিয়ে কোনো কথা বলবা না!
___তুমি শুধু বার বার আমার আমার করছো কেনো ড্যাড।তুমি কি ভুলে যাচ্ছো আমাদের মম আগে পরে তোমার রাগিনি।
আশরাফ সিকদার ঠোঁট বাঁকিয়ে বললেন!!

____এমন ভাবে বলছো যে মনে হচ্ছে! আমি বিয়ে করার আগেই তোমরা পৃথিবীতে আসছো।
আদিল গলা খাঁকারি দিয়ে বললো!!
____ড্যাড ছেলে হই তোমার মুখে লাগাম টানো!!
“””কেনো এখন লাগাম টানবো কেনো! তোমরা কিছু বললে কিছু হয় না আর আমি বললেই সব দুষ আমার! আমি একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমার কোনো লাগাম থাকবে না এটাই স্বাভাবিক “!
“””ড্যাড তোমার যে যুক্তি পুরাই ইলাম অপুর মতোন! কখন জানি সবাই তোমাকে বলে উঠবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আশরাফ সিকদার সবাই কে কপি করছে তখন তোমার কি হবে ড্যাড!!
আশরাফ সিকদার গম্ভীর গলাই বললেন!!

___আশরাফ সিকদার এক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সে কাউকে কপি করে না! বুঝছো মাই ভয়!
আদিল ফোন টা হাতে নিয়ে আশরাফ সিকদার এবং আদিব এর থেকে বেশ কিছুটা দূরে সরে আসে। সেই সকালে বাসা থেকে বের হয়ে ছিলো তার পর থেকে তো বেশ ব্যাস্ত ছিলো তাই তার প্রেত্নী বউটার কোনো খোঁজ খবর নেয়া হয় নি। আদিল এর ফোনে সেব করা নাম টা জলজল করছে প্রত্নী বউ! আদিল ইরার নাম্বারে কল করলে সাথে সাথেই ফোন টা বন্ধ বলে!
আদিল আরেক টা কল করলো সেম তাও বন্ধ বলছে। আদিল ফোনটা পকেটে ডুকিয়ে নিলো। আর ভাবলো কিছুখন পর আবার চেষ্টা করা যাবে। হয়তো ফোনে চার্জ শেষ। নয়তো নেটওয়ার্ক পাচ্ছে না।বউ আমার মহা ব্যাস্ত মনে হয় ঘুম নিয়ে।
আদিল আশে পাশে ভালো ভাবে দেখে নিলো তারপর আদিব কে উদ্দেশ্য করে জিজ্ঞেস করলো!!

__প্রিয়াশ কোথাই আশে পাশে তো দেখছি না।
আদিব বলে!!
___প্রিয়াশ ভাই এর বন্ধুরা এসে ছিলো তাই তাদের সাথে চলে গেছে। আজকে আর আসবে না।
দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য মাইমুনা সিকদার ইরা কে ডাকতে উপরে আসলেন। মাইমুনা সিকদার কয়েক বার ডাকলেন ইরা কে কিন্তু কোনো আওয়াজ আসতে না দেখে তিনি ভাবলেন হয়তো ইরা ঘুমাচ্ছে। তাই তিনি আর রুমের ভেতরে প্রবেশ করলেন না। নিচে গিয়ে নিজের খাবার টা শেষ করে ইরার খাবার টা বেরে রেখে গেলেন টেবিলের উপরে।

________রাত সাত টা____
অহনা সিকদার অফিস এর কাজের অতিরিক্ত পেসার থাকাই মাথা ব্যাথা করছিলো। তাই হালকা মেডিসিন নিয়ে সুয়ে পরেছে। কলির কলেজে ফাস্ট সেমিস্টার এর পরীক্ষা সে জন্য সন্ধ্যার পর থেকে পরতে বসছে। মাইমুনা সিকদার বসে আছেন কফি খাচ্ছেন। বাড়ির কাজের কিছু মহিলা মিলে রাতের জন্য রান্না করছেন।মাইমুনা সিকদার কফি খেতে খেতে হঠাৎ করে মনে পরলো ইরার কথা। তিনি তৎক্ষনাৎ উঠে চলে গেলেন ইরার রুমের সামনে সেই আগের বারের মতোন রুম টা বন্ধ। তাই দেখে মাইমুনা সিকদার দরজার বাইরের থেকে বার বার ডাকলেন ইরা কে।! মাইমুনা সিকদার এর এমন ডাকে তৎক্ষনাৎ গুম ভাঙে অহনা সিকদার এর। তারাতাড়ি করে আসেন ইরার রুমের সামনে মাইমুনা সিকদার কে উদ্দেশ্য করে বলেন অহনা সিকদার !!

____কি হয়ছে????
মাইমুনা সিকদার কিছুটা ভয়ার্ত গলায় বললো!!
___ভাবী ইরা তো দরজা খুলছে না। আমি দুপুরেও ডেকে গিয়ে ছিলাম। তখন ভেবে ছিলাম হয়তো ঘুমিয়েছে মেয়েটা তাই চলে গিয়ে ছিলাম। এখন তো সাত টার ওপরে বেজে গেছে ইরা তো ওঠছে না দেখে ডাকতে আসছি।কিন্তু দরজা তো খুলছে না আর ভেতর থেকে কোনো শব্দ ও আসছে না।
সবার কে এমন চিল্লাতে দেখে কলি ও ছুটে আসে। অহনা সিকদার বার বার দরজায় করা নারছেন আর ইরা কে ভেতরে ভেবে বললেন!!

____কি ছেলে মানুষি হচ্ছে ইরা। রুমের দরজা খোলো।
অহনা সিকদার আরও কঠিন হয়ে শক্ত গলাই ডাকলো ইরা কে! কি অদ্ভুত কোনো শব্দ নেই তাহলে কি ইরা ভেতরে নেই। অহনা সিকদার তৎক্ষনাৎ কল করলো আদিল এর নাম্বারে! একবার রিং হওয়ার সাথে সাথে কল রিসিভ করলো আদিল!!
___হ্যা মম বলো!!
অহনা সিকদার নিজেকে বেশ শান্ত করে বললেন!!
____কোথাই আছো এখন??
“”বাড়িতে আসছি মম। আর মাএ বিশ লাগবে। কিছু হয়েছে মম। কিছু বলবা।
অহনা সিকদার ছেলে কে টেনশন না দিয়ে বরং বুঝিয়ে বললো!!
____না তাড়াতাড়ি বাসায় আসো।

বলেই অহনা সিকদার কল টা কেটে দিলেন তিনি আর ইরার দরজার সামনে দাড়ালেন না।সোজা গিয়ে বসলেন ড্রয়িংরুমে সাথে গেলো মাইমুনা সিকদার আর কলি। সবার চোখ মুখ গোলাটে চিন্তার ছাপ। এত কিছু হয়েছে তবুও আদিল কে কোনো কিছু জানানো হয় নি।সে বিষয় টা কেমন ভাবে নিবে আদিল। অহনা সিকদার হাঁটা হাটি শুরু করলেন অপেক্ষা করতে লাগলেন ছেলের জন্য।আমেরিকা থেকে পাগলামি করে চলে এসে ছিলো যে ছেলে। তাকে যদি বলা হয় তোমার বউ রুমের দরজা খুলছে না সেই দুপুর থেকে। তখন কি হবে। একজন মা হওয়ার পর ও বেশ ভয় কাজ করছে তার মাঝে। ইরার জন্য যে ভালোবাসা দেখেছে আদিল এর চোখে। এক মিনিটে সব কিছু এলোমেলো করে দেয়ার ক্ষমতা রাখে।অহনা সিকদার এর ভাবনার মাঝেই দরজায় কড়া নাড়লো কেউ। কলি ছুটে গিয়ে দরজা খোলে দিলো। আদিব কলির মাথাই টোকা মেরে বললো!!

____তোর ফোন টা আমাকে দিয়ে দে। নয়তো…
কলি উওর করলো না চলে আসলো দরজা টা খোলে দিয়ে সবাই এক এক করে ভেতরে প্রবেশ করলো! আদিল উপরে নিজের রুমের দিকে চলে গেলো! কেনো সারা দিন তাকে ইগনোর করলো তার প্রেন্তী বউ টা!তার ছোট বউ টা কি জানে না তার বাজে স্বামী টা তাকে ঠিক কতটা ভালোবাসে কতটা মিস করে। অহনা সিকদার এর ফর্সা উজ্জ্বল মুখটা নেতিয়ে আছে। চিন্তার ছাপ দেখে আশরাফ সিকদার অহনা সিকদার এর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন!!
____কি হয়েছে রাগিণী তোমাকে এত বেশি আপসেট লাগছে কেনো।
অহনা সিকদার গম্ভীর গলাই বললেন!!
___ইরা তো দুপুর থেকে রুমের দরজা খোলছে না। কি হয়েচে বুঝতে পারছি না।

অহনা সিকদার এর পর পর কথা গুলো তৎক্ষনাৎ আদিল এর কানে গিয়ে পৌঁছালো! আদিল অহনা সিকদার কে কোনো প্রশ্ন না করে রুমের সামনে গিয়ে ডাকতে শুরু করলো। এক বার দুই বার তিন বার নয় আর ও বেশ কয়েক বার ডাকলো ইরা কে। কিন্তু ইরা সত্যি কোনো ডাক শুনছে না আদিল রেগে যাচ্ছে ভিষণ রেগে যাচ্ছে। হাতে থাকা কালো সুট টা এক ঝটকাই নিচে ফেলে দিয়ে চিৎকার করে ডাকলো অহনা সিকদার কে!এত খনে আদিল এর ডাকের আগেই চলে এসেছে পরিবারের সবাই।আদিল রাগে কাঁপছে ঠকঠক করে। এই মূহুর্তে ওই মেয়ে কে কাছে পেলে মাথায় উপর তোলে এক আচার মারতে এইটা কোনো দরনের মজা৷ আশরাফ সিকদার বিষয় টা মুটেও ভালোর লক্ষণ হিসাবে দেখলেন না। ইরা কে খুব বেশি ভালো করে না চিনলে ও জানে ইরা এমন মজা করার মতোন মেয়ে নায়।তাই আশরাফ সিকদার আদিব কে বললেন!!

___রুমের দরজা ভেঙে ফেলো বয়।
আদিব আর এক মিনিট ও দেরি করলো না সাথে সাথে দরজায় ধাক্কা দিতে লাগলো।কিন্তু আদিব একা পেরে উঠলো না সাথে আদিস সিকদার ও ধাক্কা দিতে লাগলেন!! বেশ কিছু মিনিট পর দরজা ভেঙে ভেতরের দিকে পরে গেলো । আদিল সবার প্রথমে রুমের ভেতরে প্রবেশ করলো। ইরা কে ডাকলো। তাও উওর করলো না ইরা। সবাই এদিক সেদিক খুঁজতে শুরু করলো ইরা কে।কলির চোখ পরতেই ছোট দরজার দিকে দেখে দরজা টা খোলা সবাই কে ডেকে বলে!!

___ওই দরজা টা খোলা কেনো??
আদিল এগিয়ে যায়। সত্যি দরজাটা খোলা হয়তো ইরা চলে যাওয়া সময় ভুলে গেছে দরজা টা লাগাতে।আদিল শরীরের ভার ছেরে দিয়ে বিছানায় বসে পরলো আর ভাবলো তাহলে কি ইরা পালিয়ে গেলো তাকে ছেরে।কিন্তু কেনো আমি কি কোনো রকম বাজে আচরণ করি। কেনো করো এমন আমরা তো বসে ও কথা বলতে পারলাম সব কিছু ঠিক করতে পারতাম। আমাকে না বলে চলে যাওয়ার কি মানে হতে পারে বেইমানি করলা কেনো আমার সাথে। আমাকে নিষ্ঠুর ভাবে ঠকিয়ে দিয়ে কোথাই হারিয়ে গেলে। স্বাথপর পৃথিবীতে আমি তো তোমাকে নিঃস্বার্থ ভাবে ভালোবেসে ছিলাম। তোমাকে ছারবো না আমি। আদিল সিকদার এর অশান্ত মন কে শান্ত করার জন্য তার পেত্নী বউ টাকেই চাই।

এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ২৯

সোনালী তালুকদার কোথা থেকে যেনো এসে আহাজারি করে কান্না করছেন। কি হয়েছে তার। কান্নার শব্দ পেয়ে সবাই ছুটে আসেন নিচে। অহনা সিকদার সোনালি তালুকদার কে তুলে সোফায় বসালেন। এক গ্লাস পানি খাইয়ে জিজ্ঞেস করলেন!!
____কি হয়েছে কান্না করছো কেনো।
সোনালি তালুকদার এর কান্না যেনো থামছেই না তার হাত পা কাঁপছে ভয়ে নেতিয়ে আছে কান্নারত গলায় বললেন!!
___আই…আইরা কে পাচ্ছি না সকাল থেকে!! আমি কোথায় খুঁজি নি আমার মেয়ে টা কে আমি কোথাও পাচ্ছি না।আমার মেয়ে টা তো সব কিছু ছেড়ে চলে যাবে বলে ছিলো। কোথায় চলে গেলো!!!!

এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ৩১

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here