এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ৪১

এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ৪১
Chadny islam

রাত দশটা পনেরো মিনিটে বিজয়ের ঘোষণা করা হয়েছে!আদিল সিকদার বিপুল পরিমাণ ভোট পেয়ে এমপি স্থানটা জয়লাভ করে পেয়ে নিয়েছে।এতখনে সিকদার মহলে উৎসবের আমেজ শুরু হয়ে গেছে।সুষ্ঠু নির্বাচন সবারি কাম্য!ঠিক তেমনি হয়েছে কোনো রকম ঝামেলা ছাড়া একদম পরিপূর্ণ নির্বাচন! আশরাফ সিকদার এবং আদিল সিকদার বিকেলে বাসায় চলে এসে ছিলো । নির্বাচন কেন্দ্রে ঈশান এবং আদিব ছিলো। তাছাড়া সব বডিগার্ড রা মিলে কড়া নজর বুলিয়ে ছিলো সারা দিন।আদিল সিকদার এর ভোটের ফলাফল ঘোষণা করার পর থেকেই যেনো ঘোটা শহর গ্রাম জুড়ে আনন্দের বণ্যা বয়ে যাচ্ছে! আদিল সিকদার এর জয় সবাই কে আনন্দিত করে তুলছে প্রতিনিয়ত। নির্বাচন এর ঘোষণা পাওয়ার পর পরি আদিল সহ বাড়ির প্রতিটি মানুষ এর ফোনে কল করে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। কারোরি আনন্দের শেষ নেই।আশরাফ সিকদার আদিল এর মাথায় হাত রেখে বললেন!!

____Congratulate মাই সান!!
আদিল আশরাফ সিকদার কে শক্ত করে জড়িয়ে দরলো!হয়তো অনেক দিন পর জড়িয়ে দরলো বাবা কে।প্রান উজ্জ্বল এক হাসি মেখে বললো!!
____ধন্যবাদ ড্যাড! তুমি ছাড়া কোনো কিছুই এত সুন্দর ভাবে হতো না।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

বাড়ির প্রতিটি লোক দাড়িয়ে আছে একে অপরের দিকে চোখ বুলাছছে! আদিস সিকদার এত খনে প্যাকেট প্যাকেট মিষ্টি নিয়ে হাজির হয়ে গেছেন সিকদার মহলে। কারোরি আনন্দের শেষ নেই।বাইরে প্রচুর পরিমানে চিল্লাচিল্লি দেখে আদিল আশরাফ সিকদার আদিস সিকদার সবাই বেরিয়ে এলেন। সবার মুখেই জয়ের ধ্বনি আদিব ঈশান এতখনে সিকদার মহলে চলে এসেছে।আদিল কে এক রাশ অবিন্ধন জানিয়ে হাতের ফুলের তুরা নিয়ে শুভেচ্ছা জানালো ঈশান আদিব! বাইরে বেশ কত গুলা বক্স নিয়ে এসেছে সেইগুলা দিয়ে আপাতত তারা সারা রাত হৈহৈ করে গান বাজাবে আর নাচবে।সেই সাথে সবাই মিলে বিরিয়ানি পিকনিক তো করবে সাথে আদিল কেও যেতে হবে তারা কোনো ভাবেই ছারবে না। কিন্তু আদিল ঘুর আপওি জানিয়ে বলে আজকে নয় অন্য আরেক দিন!

কিন্তু কে শুনে কার কথা আদিল কে তারা সাথে করে নিয়েই যাবে। সেই সাথে আশরাফ সিকদার কেও। এখন জনগণের মন রাখতে তো যেতেই হবে। আদিল গায়ের পরিহিত সাদা পাঞ্জাবি সেই সকাল থেকে পরে আছে।সারাদিন বেশ অনেক টাই টেনশনে কেটেছে আদিল এর। তাই সবাই থেকে পাচ মিনিট সময় নিয়ে নিজের রুমে চলে যায় আদিল।ইরা সবার সাথে ড্রয়িংরুমে বসে বসে আড্ডা দিচ্ছিলো।তাদের সাথে আইরা ও আছে। আজকাল আইরা বেশ ভালোেই মিশে ইরার সাথে। আদিল দূত উপরে নিজের রুমে দিকে চলে যায়।আদিল ভেবে ছিলো ইরা হয়তো তাকে দেখলে তার তার পেছন পেছন রুমে চলে আসবে। কিন্তু না ইরা সেই সবার সাথে আড্ডা দিতে ব্যাস্ত!আদিল সিঁড়ি দিয়ে উপরের দিকে উঠতে উঠতে বিষয় টা খেয়াল করলো! এবার যেনো সত্যি ধৈর্যের বাঁধ রা ভেঙে যাচ্ছে! তাই আদিল রাগে হকচকিয়ে উঠলো। দাঁতে দাঁত পিসে ডাকলো ইরা কে!!

____পাঁচ সেকেন্ড এর ভেতরে রুমে আসো! কুইক!
সবার মাঝে হঠাৎ আদিল এর গম্ভীর ডাক শুনে বেশ বিরক্ত হয় ইরা। রাগে ফুসফুস করে ওঠে। কেনো তাকে এত গুলা মানুষ এর সামনে ডাকতে হবে।সে তো একটু বেজি আড্ডা দিচ্ছিলো সবার সাথে। এই টাও কি ওই মানুষ টার সহ্য হয় না। ইরা না গিয়ে বসে বসে ভাবতে লাগলো যাবে কিনা! তাই দেখে কলি ফিসফিস আওয়াজ তুলে বললে!!

____ভাবী অলরেডি চার সেকেন্ড হয়ে গেছে!আর এক সেকেন্ড লেট হলে ভাইয়া কিন্তু এসে তোমাকে সবার সামনে কোলে তুলে নিয়ে যাবে।
কলির কথা শুনে ইরা শুকনো ডোক গিলে উঠে দাড়ালো! দাড়িয়ে হাঁটা শুরু করলো নিজের রুমের দিকে। টিপটিপ পায়ে হাটতে হাঁটতে মনে পরলো তাকে বলা আদিল এর কিছু কথা! সেদিন তো বলে ছিলো নির্বাচনে জয়ী হলে সেদিন রাতে। মনে পরতেই ইরা বার বার আসতাগফিরুল্লাহ বলে নিলো।
ইরা রুমের ভেতরে প্রবেশ করে কাউকে দেখতে পেল না। তবে আদিল এর পরিহিত পাঞ্জাবি টা বিছানার উপর! তাই দেখে ইরা ভেবে নিলো হয়তো সাওয়ারে গেছে। পাঞ্জাবি টা কে হাতে তুলে নিলো পরিষ্কার করা ধুয়ে দিবে তবে আজ নয় কাল। বাইরে অনেক টাই ঠান্ডা!তাই ইরা গায়ে হালকা রংঙের একটা পাতলা চাদর জড়িয়ে নিলো। আদিল বেশ সময় নিয়ে সাওয়ার শেষ করে বেরিয়ে এলো। এর মাঝে ইরা কার্বাড থেকে আদিল এর জন্য বরাদ্দ কৃত সাদা আরেক টা পাঞ্জাবি বের করে বিছানার উপর রেখে দিলো।

আদিল ভেজা চুল মুছে এদিক সেদিক তাকাতাকি করতেই দেখলো ইরা বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে।বাইরে শয়ে শয়ে মানুষ কথা বলছে। বক্সে গান বাজাচ্ছে! ইরার কাছে বিষয় টা বেশ ভালো লাগলো ইরার।আদিল এর মুখে গম্ভীর জের ছিটে ফোঁটার রেশ নেই মাএ।খুবি হাসি খুশি আনন্দিত লাগছে আদিল কে ।আদিল ইরা কে কাছে ডেকে বললো!!
____আজকে রাতের জন্য নাটক সিনেমা বাদ দিয়ে প্রস্তুতি নেন শুধু মাএ আমার হওয়ার জন্য!একান্ত আমার ব্যাক্তিগত প্রেয়সী হওয়ার জন্য!
ইরা শুকনো ডোক গিলে ভয়ে ভয়ে বললো!

___মা.মানে??
আদিল ইরার বাহু কাছে টেনে শক্ত গলাই বললো!!
___আর কত নাটক করবা বউ??
“”””আর তো নাটক করবো না!!
“”তাহলে কি করবে???
“”ভালোবাসবো আপনাকে??
“”শুধুই ভালোবাসবে??
“হুম!!
আর নয় ছয় করবে না??
আদিল এর এমন হুট করে নয় ছয় বলার কথা শুনে ইরা লজ্জায় লাল হয়ে গেলো।মূহুর্তেই ফর্সা মুখ খানা লুকিয়ে ফেললো আদিল এর শক্ত পুরুষালী অনুমুক্ত বুকে। আদিল ইরার এমন কান্ডে ফিক করে হেসে দিয়ে কপাল তুলে একটা চুমু খেয়ে বললো!কার্বাডে আপনার জন্য শাড়ি রাখা আছে অবশ্যই পরবেন ম্যাম।
এর মাঝে ইরার ছোট বিড়াল ছানা এসে ইরার গা ঘেসাঘেসি শুরু করে দিয়েছে। মনে হচ্ছে তার ও একটু আদরের প্রয়োজন!অনেক টাই জেলাস ফিল করে এসেছে তার মালিক এর কাছে!তাই ইরা দুহাত বাড়িয়ে কোলে তুলে নেয় ছোট বিড়াল ছানা টিকে।অলরেডি দশ পনেরো মিনিট ওবার হয়ে গিয়েছে।তাই দেখে ঈশান আদিল এর নাম্বারে কল করে! ফোন টা বিছানার উপর রাখা ছিলো! তাই আদিল ইরা কে বললো ফোন টা এনে তাকে দিতে। ইরা ও সঙ্গে সঙ্গে বিছানায় থাকা ফোনটা হাত দিতেই গম্ভীর মুখে আদিল এর দিকে তাকিয়ে বললো!!

____এইটা কি করেছেন আপনি??
আদিল মানে টা বুঝতে পারে না তাই এগিয়ে যায় ইরার দিকে। ইরা ফোনটা আদিল এর দিকে গুরিয়ে বলে!!!
____বদমাইশ সালা!!!
অসভ্য লোক আপনার সম্মুধি হয়! আমার ভাইয়ার নাম কি কেমন নামে সেভ করে রেখেছেন আপনি। এবার যেনো আদিল এর কাছে সব টাই পরিষ্কার হয়ে গেছে।আদিল ইরা থেকে ফোন টা নিয়ে রিসিভ করে বললো!!
____আসছি অপেক্ষা কর!
বলেই আদিল মুখের উপর ফোন টা কেটে দিলো। পিকপিক আওয়াজে ফোনটা কেটে যাওয়াই ঈশান কপাল কুঁচকে আদিব এর তাকালো। আদিব ও সব টা বুজে না বুঝার নাটক করে ঈশান কে এড়িয়ে চলে গেলো সামনের দিকে। তাই দেখে ঈশান দাঁতে দাঁত খিসে উঠলো!!

____সালারা দুই টাই এক!
আদিল প্রোপার ভাবে রেডি হয়ে নিয়েছে! সাদা পাঞ্জাবি হাতে ঘাড়ি বুকে সানগ্লাস জুলিয়ে বড় আয়নার সামনে গিয়ে চুল গুলো কে হাত ব্লাশ করতে করতে ইরা কে বললো!!
____কেমন লাগছে আমাকে দেখতে ? পুরো ক্যাপসিকাম এর মতোন???
ইরা মুখ বাঁকিয়ে ছোট বিড়াল ছানা কে কোলে নিয়ে বেশ কিছু টা দূরে সরে গিয়ে বললো!!
____না! একদম পাকা টমেটোর মতোন লাগছে আপনাকে!!
বলেই ইরা এক দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে চলে গেলো।আদিল ইরার দিকে তাকিয়ে গম্ভীর আওয়াজ তুলে সুধরালো! যেমন প্রশ্ন তার তেমন উওর এমপির বউ বলে কথা! আই লাইক ইউ বেবি!!
আইরা আজকাল আর বেশি ভাবেনা আদিল কে নিয়ে। যেই খানে ভালোবাসা টাই নেই সেখানে ভাবনা টাও কাল্পনিক মাএ। জীবনে সব কিছু পেতে হবে এমন টা নয়। ভালোবাসার মানুষ যাকে নিয়ে ভালো থাকতে চাই তাকে নিয়েই ভালো থাকুক। আমি না হয় তার ভালোতেই ভালো থাকব।খুবি সীমিত ভালোবাসা ছিলো আমার।আপনার ভালোবাসা কেড়ে নেয়ার মতোন যোগ্যতা আমার বরাবরি ছিলো না।

____আমি নির্লিপ্ত এক অভিমানী মেয়ে যার চোখের ভাষা কেউ কখনো পরে নি! মনের ভেতরে থাকা আবেগ কেউ কখনো দেখেনি !
আশরাফ সিকদার এবং আদিল সিকদার একরকম পাঞ্জাবি পরে বেরিয়ে গেলেন বাসা থেকে।আদিল এর মতোন আশরাফ সিকদার কেও বেশ ফুরফুরে লাগছে। আশরাফ সিকদার জীবনে অনেক বার জয়ের মালা পরলেও আদিল এবার প্রথম পরেছে জয়ের মালা। ছেলের খুশিতে প্রতিটি বাবা রাই খুশি হয় আশরাফ সিকদার ও তার ব্যাতিক্রম নয়।বাইরে থাকা বড় চার চাকার গাড়ি BMW তে উঠে বসলেন আশরাফ সিকদার এবং আদিল ঈশান আদিব। যারা এত দিন কঠুর পরিশ্রমের মাধ্যমে বিজনেস ম্যান আদিল সিকদার থেকে এমপি আদিল সিকদার এর পাশে ছিলো এমপি বানিয়েছে।আদিল সবাই কে স্পেশাল ট্রেট তো দিবেই সেই সাথে যথেষ্ট ভালো চাকরির সুযোগ সুবিধা করে দিবে তার নিজের কোম্পানিতেই।শুধু যে দলের ছাও পাও রা আছে এমন নয় যত বডিগার্ড ছিলো পুলিশ প্রশাসন কমিশননার সবাই কে নিয়ে একসাথে যাচ্ছে। ছাএলীগ এর সবাই বড় বড় পিকাপ ট্রাকে বক্সে জয়ের গান বাজিয়ে নাচতে নাচতে আসছে পেছন পেছন।
আশরাফ সিকদার আদিল কে উদ্দেশ্য করে বললেন!!

____আমি যেহেতু তোমার দলে ছিলাম মি.আদিল সিকদার সেই সুবাদে তোমার ও উচিত আমাকে স্পেশাল ট্রেট দেয়ার। আমি কিন্তু ছোট খাটো উপহার নিবো না!!
আদিল আশরাফ সিকদার এর পেচানো কথাটা ঠিক বুঝতে পেরে গেলো। আদিল ও কি কম যায় নাকি। তাই আদিল বললো!!
____ছোট লোকের মতোন আবদার করা বন্ধ করো ড্যাড! তুমি ও কিন্তু একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভুলে যেও না।
আশরাফ সিকদার একটু অপমানিত বোধ করলেও শেষে যে তাকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলা হয়েছে সেই খুশিতে সব অপমানি বোধ পানি হয়ে গেছে। আশরাফ সিকদার গর্বের সঙ্গে বললেন!!
___ধন্যবাদ মাই সান! আমাকে সম্মান দেয়ার জন্য!
আশরাফ সিকদার এর কথা শুনে সবাই হিহি করে হেসে ফেললো! তাই দেখে আশরাফ সিকদার কপাল কুঁচকে সবার দিকে বড় বড় চোখ গুরিয়ে বললেন!!

___সমস্যা কি তোমাদের! বাদর এর মতোন হিহি করছো কেনো।
সবার খুশি খুশি মুখটা যেনো মূহুর্তেই বাংলা পাঁচের মতোন হয়ে গেলো। অপমানে সবাই একে অপরের দিকে তাকাতাকি করলো। তাই দেখে আশরাফ সিকদার শব্দ করে হেসে বললেন!!
____অপমানিত হওয়ার কিছু নেই।সত্যি কথা বললে গায়ে লাগবে এইটাই স্বাভাবিক!
আদিল গলা খাঁকারি দিয়ে বললো!!
____যেখানে সেখানে অপমান করার চেষ্টা করো না ড্যাড! আমি ও একজন এমপি! তুমিও নতুন করে ভুল যেও না!
আদিল এর কথাই সবাই জোক্স শোনার মতোন মজা নিয়ে বললো!!

____একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তো আরেক জন এমপি!
আদিব একটু ভাবে নিয়ে বললো!!
____তাহলে সামনের বার আমি না হয় প্রধানমন্ত্রী হয়ে যাবো।
ঈশান কে আদিব বললো!!
____ভাই প্রথম ভোট টা কিন্তু আপনিই দিবেন!
ইশান একটু মিনমিনিয়ে বললো!!!
____তোমার ড্যাড এবং ভাই কে না বলে আমাকে কেনো বললা প্রথম ভোট দেয়ার জন্য??
আরে ভাই আপনি বুঝবেন না। এরা তো এখন এমপি আর মন্ত্রী হয়ে গেছে।এরা কি আর চাইবে এদের থেকে আমি আরও বড় হয়।তাই প্রথম ভোট টা আপনিই আমাকে দিবেন!!
আশরাফ সিকদার কপাল কুঁচকে ফেললো!!

____ডক্টর বাদ দিয়ে রাজনীতিতে জড়ানোর চেষ্টা করো না মাই বয়! তোমার মম কিন্তু একটু ও মেনে নিবে না!
আদিব গা জারা দিয়ে বলে উঠলো!!
___ড্যাড! এক ঘেরালি কাজ প্রতিদিন করতে হয় ডক্টর দের। রাজনীতিতে অনেক কিছু শেখা যায়।আমার কিছু দিনে বেশ অনেক টাই এক্সপেরিয়েন্স হয়েছে।
আশরাফ সিকদার ছেলে কে মানানোর জন্য বলে উঠলেন!!
___রাজনীতিতে যেহেতু আমি আর তোমার ভাইয়া আছি সেক্ষেএে তুমি ও আমাদের সাথে থাকতে পারো! তবে পেশা হিসেবে রাজনীতিতে থাকার প্রয়োজন নেই তোমার!ডক্টর হিসাবেই তুমি ঠিক আছো।
তুমি হয়তো কিছুদিন চলাফেরা করে ভেবে নিয়েছো রাজনীতি খুবি স্ফট একটি বিষয়! কিন্তু এমন টা নয় রাজনীতিতে কোনো শান্তি নেই শুধু টেনশন আর টেনশন।রাজনীতিতে যতগুলা খারাপ কাজ করতে হয়! তুমি তার ১% ও করতে পারবা না!।তুমি একদম স্ফট হার্ট এর তৈরি মাই বয়।তাই তোমার কথা চিন্তা করেই আমি বলছি। তুমি ডক্টর হিসাবেই বেষ্ট তোমার জন্য আমি চেম্বার থেকে শুরু করে সব কিছুর ব্যবস্থা করে রেখেছি। শুরু তোমার জয়েন করার পালা। দ্যাটস ইট!!

আদিব কি বলবে জানে না! তবে কারোর বিরুদ্ধে গিয়ে সে নিশ্চয় রাজনীতিতে জড়াবে না।তাই আদিব কোনো উওর না করে গাড়ির ব্যাক সাইডে গা এলিয়ে দিয়ে সুয়ে পরলো।
বড় কম্পিউটার জুড়ে আদিল সম্পর্কে হাজার ডিটেইলস দেখছে বাপ ছেলে।ইকবাল খান সব ধরনের তথ্য জোগাড় করে ফেলেছেন ২৪ ঘন্টার ভেতরে! বড় স্কিনে দেখে রোশান চিমচিত হেসে উঠলো। হাতে থাকা ছোট পেন ডাইপটি ইকবাল খানের হাতে দিয়ে বললো!!

____ধন্যবাদ ড্যাড!!
ইকবাল খান খুব স্বাভাবিক গলায় বললেন!!
_____আমাকে দিচ্ছো কেনো বেডা! তোমার নাকি ইমপোর্টার্স কাজ আছে!
রোশান খুশিতে এক গাল হেসে নিলো! এবং ইকবাল খান এর উদ্দেশ্য বললো!!
___এই গল্পে আমি ভিলেন হতে চাই না ড্যাড! আমি ঝন্ন ছাড়া ইশান রোশান হয়ে থাকতে চাই না! আমার সব শেষে শুধুই পূর্ণতা চাই!
ইকবাল খান ছেলের মাথায় হাত রেখে বললেন!!
_____ছোট্ট জীবনে সব কিছু পেতে নেই বেটা।যেটা ভ্যাগে নেই তা কি আর জোর করে পাওয়া যায়।
রোশান দীর্ঘ শ্বাস টেনে বললো!!
____তাহলে কি এই জনমের জন্য আমি ইরা বতী কে হারিয়ে ফেললাম??
“হয়তো তাই! দুঃখ করো না পরের জন্মে ঠিক পেয়ে যাবে।
রোশান অল্প হেসে বললো!!
___এই জনমে যেহেতু পাওয়া হলো না! তাহলে নিশ্চয় পরের জনমেও পাওয়া হবে না! পর জন্ম বলে কিছু হয় না ড্যাড!
বাপ ছেলের কথার মাজে একদল বডিগার্ড এসে হাজির হলো। বডিগার্ড দের মধ্যে একজন বলে উঠলো!!

_____স্যার সিকদার মহলের সব পুরুষি বেরিয়ে গেছে। এখনি মখ্যম সুযোগ আপনি চাইলে…..
রোশান স্থির দাড়িয়ে কথা গুলা শুনে সবাই কে বেরিয়ে যেতে বললো! রুম থেকে সাথে সাথে সবাই বেরিয়ে যায়। রোশান পেন ডাইপ সহ গাড়ির চাবি নিয়ে বেরিয়ে গেলো রুম থেকে!
রাত এগারো টা….!

রাতের খাবার খাওয়া শেষ করে সবাই যার যার রুমে চলে গিয়েছে সুয়ে পরার জন্য।ইরা ও রুমের ভেতরে চলে গেছে এবং পায়চারি করছে সাথে ছোট বিড়াল ছানা কে নিয়ে। ইরার কোলে ছোট বিড়াল টি কাচুমাচু হয়ে বসে আছে!বিড়াল ছানা টির তো কোনো নাম রাখা হয় নি! তাই ইরা মনে মনে ভাবছে কালকে দুইজন মিলে সুন্দর থেকে একটা নাম রাখবে। বিড়াল ছানা ঘুমিয়েছে বোধ করতেই ইরা বিছানার এক পাশে বিড়াল টিকে সুয়ে দিয়ে হাটলো কার্বাড এর দিকে! আদিল বলেছে একটা শাড়ি পড়তে বলেছে যেহেতু তার মানে পরতেই হবে। তাছাড়া ও আর কত দিন এই ভাবে নিজের স্বামী কে দূরে ঠেলে দিবে। তাই ইরা ঠিক করলো সব মান অভিমান কাটিয়ে একে অপরের কাছা কাছি আসবে! তাই আদিল এর দেয়া কালো রংঙের একটা শাড়ি বের করে নিলো পরবে বলে। সত্যি সত্যি ইরা এগিয়ে গিয়ে কাবাড হতে একটা শাড়ি বের করে পরতে শুরু করলো।
এত রাতে দরজায় কড়া নারতেই বাড়ির সারবেন্ট দরজা খোলে দিলো। তারা হয়তো ভেবে ছিলো এই বাড়ির সব পুরুষ মানুষ চলে এসেছে এতখনে।কিন্তু দরজা খোলার পর ধারনা পাল্টে গেলো। বাড়ির দারোয়ান এসে কড়া নারছে দেখে।সারবেন্ট বিরক্ত হয়ে বললো!!

____এত রাতে বাড়িতে কেনো???
দারোয়ান এর চোখে ঘুমের রেশ মাএ কাটেনি! চোখ মুচড়ে বললো!!
____একজন ভদ্রলোক এই চিঠি টা মেডাম কে দিতে বললেন!মেডাম এর নাকি পূর্ব পরিচিত! তুমি বরং রুমে গিয়ে দিয়ে আসো। আমি তো পুরুষ মানুষ যদি আমি যাই ম্যডাম এর রুমে আর স্যার যদি জানে তাহলে আমাকে হাটিয়ে বিদায় করে দিবে কাজ থেকে!

সারবেন্ট টি চিঠি টা হাতে নিয়ে দরজা বন্ধ করে এগিয়ে গেলো ইরার রুমের দিকে। রুম টা উপর তলায় হওয়ার প্রায় এক মিনিট সময় লেগে গেছে।ইরার রুমের সামনে কড়া নারতেই ইরা রুমের দরজা খোলে দেয়।ইরা কালো রংঙের শাড়ি পরে পরিপাটি করে সেজে নিয়েছে।ইরা এক মিনিট এর জন্য ভেবে নিয়ে ছিলো হয়তো আদিল এসেছে।দরজা খুলতে দেখে আদিল আসেনি বাড়ির একজন সারবেন্ট এসেছে। ইরার ছোট মন টা নিমিষেই ভেঙে চুরমার হয়ে গেলো ।এত রাতে ইরা কে সাজুগুজু করে থাকতে দেখে সারবেন্ট বেশ অবাক হয়।তবে কোনো প্রশ্ন করে না হয়তো বড়লোকি ব্যাপার সেপার।তাই ইরা কে চিঠি টা হাতে দিয়ে বললো!!
_____ম্যাডাম আপনার নাকি পূর্ব পরিচিত কেউ এই চিঠি টা পাঠিয়েছেন।
ইরা চিঠিটা হাতে নিয়ে বললো!!

_____আচ্ছা! আপনি যান।কথা শেষ করে ইরা রুমের দরজা বন্ধ করে ভাবতে লাগলো। তার পূর্ব পরিচিত কে এত রাতে চিঠি পাঠাবে! ইরা চিঠি টা এক টানে খোলে ফেললো! চিঠিতে ছোট ছোট করে লেখা!
“তোমার জন্য স্পেশাল গিফট!দিস ইস ফর ইউ!
ব্যাস চিঠিতে এত টুকুই লেখা! ইরা চিঠি উল্টো করে দেখলো! অপর পাতায় কিছু লেখা আছে কিনা। কি আর্শ্চয্য কিছুই নেই। শুধু মাএ ছোট একটি পেন ডাইপ ছাড়া।ইরা পেন ডাইপ হাতে নিয়ে দেখলো এদিক সেদিক! তার কাছে তো কোনো ফোন বা কম্পিউটার নেই তাহলে কি ভাবে পেন ডাইপ ওন করবে। ইরা আদিল এর কম্পিউটার টারের কাছে চলে গেলো। যদি কোনো ভাবে আদিল এর কম্পিউটারে পেন ডাইপ ওন করা যায়।কম্পিউটার পাওয়ার সাথে সাথে সে তো মহা খুশি। খুশি টা যেনো দীর্ঘ খনের জন্য নয় মূহুর্তেই মুখটা ফেকাসে হয়ে উঠলো!সে তো আদিলের কম্পিউটার এর পাসওয়ার্ড জানে না তাহলে কিভাবে কি করবে??

চট করেই ইরার ছোট মাথায় একটা আইডিয়া আসলো।ইরা চট করে রুম থেকে বেরিয়ে এগিয়ে গেলো কলির রুমের দিকে। কলি ছাড়া তাকে তো এই মূহুর্তে কেউ হেল্প করতে পারবে না।কড়া নারলো কলির রুমের সামনে। দুই একবার কড়া নারতেই কলি দরজা খোলে দিলো। হয়তো কেবলি ঘুমের জন্য পিপারেশন নিচ্ছিলো কলি। কলি হঠাৎ ইরা কে শাড়ি পরে দেখে অবাক এর শীর্ষে উঠে গেলো।নিজের হাতে একটা চিমটি দিয়ে দেখলো স্বপ্ন দেখছে নাকি। নাতো স্বপ্ন নয় তাহলে বাস্তব এত রাতে শাড়ি পরে তার কাছে আসার কারন কি?? কলি কিছু জিজ্ঞেস করবে তার আগেই ইরা বলে উঠলো!!

____তোমার কম্পিউটার টা আমাকে একটু দিবে?? আই প্রমিজ এক ঘন্টা পর এসে দিয়ে দিবো।
কলি কারন টা জিজ্ঞেস করলো না বরং বললো!!
____এক মিনিট!
বলেই কলি চলে গেলো কম্পিউটার টাকে আনতে! কম্পিউটার এর পাসওয়ার্ড খুলে ইরার হাতে দিয়ে বললো!!
_____আনলক করে দিয়েছি ভাবী! রাতে আর ফেরত দিতে হবে না!আমি সকালে গিয়ে নিয়ে নিবো তোমার থেকে!

এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ৪০

ইরা সম্মতি জানিয়ে কম্পিউটার নিয়ে নিজের রুমে চলে এলো। মনের মাঝে অনেক কিছু গুরপাক খাচ্ছে!কিছু অজানা ভয় জেগে বসেছে।বুক টা কেমন যেনো ধপাস ধপাস করছে। ইরা কম্পিউটারে পেন ডাইব ডুকিয়ে অন করতেই ভেসে আসলো কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ছবি ভিডিও যা দেখে ইরা অনেক টাই বিস্মিত হয়ে দপাস করে বসে পরলো ফ্লোরে।

এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ৪২

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here