এমপি তামিম সরকার পর্ব ১৮
কাফাতুন নেছা কবিতা
সুবহার কোমরের দিকে হাত বাড়াতেই, বাতাসে গতি ভেদ করে একটি উড়ন্ত চাপা’তি এসে ছেলেটির হাত কে’টে মাটিতে ফেলে দেয়।মাটিতে টলিয়ে পরে ছেলেটি।
রক্তে’র ছিটে ফোঁটা এসে সুবহার শাড়ি আর মুখে লাগে! সুবহা স্তব্ধ হয়ে যায়। আচমকা এমন ঘটনা ঘটাতে খানিকটা ভয় আর আতংক বাসা বাঁধে সুবহার মনে।
ভয়ে ভয়ে সামনে তাকায় সে,,,
এলোমেলো চুল, চোখে কালো চশমা, এক হাতে গোল্ডেন চাপা’তি, আরেক হাতে ব্রাউন মোটা সিগা’র টানতে টানতে সামনের দিকে এগিয়ে আসছে তামীম।
তার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে তার পঞ্চ পান্ডব,,নিঃশব্দ, কিন্তু চোখে তেজটা স্পষ্ট।
তামীমকে দেখা মাত্র এক মুহূর্তের মধ্যে ছেলেগুলো দৌড়ে পালাতে শুরু করে । আর সুবহা ভয়ে ঢোক গিলতে শুরু করে।
তামীম সুবহাকে ঠিক দেখলো কী দেখলো না, বুঝা গেলো না।কিন্তু আজকে যে আরশি নগর আবার র’ক্তের বন্যাতে ভেসে যাবে এটা ঠিকই বুঝা গেলো।
ছেলে গুলো পালাতেই তামীম তার দাত দিয়ে শক্ত করে চাপাতি ধরে আর জোরে বাইক চালানো শুরু করে। তামীম বাইক নিয়ে ছুটতেই চারপাশটা অটোমেটিক নীরব হয়ে গেলো। আর ছেলেগুলো নিজের প্রাণ বাঁচাতে এদিক ওদিক ছুটতে শুরু করলো। তামীম যাকেই সামনে পেয়েছে তারই চা*পাতি দিয়ে মাথা আলাদা করে দিয়েছে। কোনো ক্ষমা নেই এদের।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
সকলকে পরপারে পাঠানোর পর যে সুবহার কোমরে হাত দিতে চেয়েছিলো তাকে ধরে আনা হয় রঙ্গমঞ্চ খানায়। মাটির নিচে সুক্ষ্ম ভাবে তৈরি মানুষদের পরপারে পাঠানোর আঁটোসাটো ঘরটিই মূলত রঙ্গমঞ্চ খানা। ভয়ংকর থেকে ভয়ংকর অপরাধের কথা এই রঙ্গমঞ্চের প্রতিটি দেওয়ালে দেওয়ালে লেখা। না কালি দিয়ে নয়। মানুষের র’ক্ত দিয়ে। তামীম যে কতটা হিংস্র কতটা নির্দয় এটা রঙ্গমঞ্চের প্রতিটি দেওয়াল সাক্ষী।
তামীম চেয়ারে পায়ের উপরে পা তুলে বসে সিগা’র টানটে থাকে। আর সামনে ফ্লোরে বসা থাকা ছেলেটি থরথর করে কাঁপতে থাকে।
এক পর্যায়ে তামীম উঠে দাড়ায় আর ছেলেটির সামনে হাঁটু পেরে বসে।
” দুটো জিনিস তামীম সরকার পছন্দ করে না,এক তার আব্বাহানের অপমান, দুই তার পছন্দের জিনিসে অন্যের নজর।!”
তামীম উঠে দাড়িয়ে আড়মোড়া দেয় শরীরে।
” সাকিব?”
“এই লন ভাই!”
সাকিবকে ডাকা মাত্র সাকিব, তামীমের হাতে গোল্ডেন চাপা’তিটি তুলে দেয়।
তামীমকে চা*পাতি হাতে দেখেই ভয়ে আত্মা বের হয়ে ছেলেটির।
” যাহ! বেলা বিসকিট খা!”
তামীম চা*পাতি হাতে নিয়ে ছেলেটির দিকে তাকায়, আর ঘাড় নাড়িয়ে ঝাপিয়ে পড়ে ছেলেটির উপরে। পুরো শরীর টু*করো টু*করো করার পর শান্ত হয় তামীম।
” এই মাহির! সি’গার দে!”
তামীম একহাতে চা*পাতি তার কাধে রাখে, আর অন্য হাত দিয়ে একেক পর এক ফু দিতে থাকে সিগা’রে ।
” যাকে দেখার পারমিশন কাউকে দেয়নি, তাকে এই কুত্তা*র বাচ্চা ছুইতে গেছিলো। কী সাহস! ভাবা যায়।! ”
অবশিষ্ট সিগা’রে ফু দিয়ে তামীম সেই টুকরো করা লা’শের খুলিতে স্বজোরে লা’থি মা’রে।
” ওর হিসাব শেষ! আরেজজনের টা বাকি! গাড়ি বের কর!”
সন্ধা ৬ টা | তামীমের চেম্বার…………..
তামীমের লোকেরা সুবহাকে তার চেম্বারে তখনই নিয়ে আসে। আর বাইরে থেকে লক করে দেয়। সুবহা অনেক বার দরজা ধাক্কা দেয়।কিন্তু কেউ খুলে না। তামীমের কড়া নির্দেশ সে না আসা অব্দি দরজা যেনো খোলা না হয়।
সুবহা রক্ত’মাখা শরীরে সোফায় বসে কাঁপছে। বাইরে তখন ও নীরবতা চলছে। হয়তো ঝড় আসার পূর্বাভাস এটা। হঠাৎ দরজা খোলার শব্দ ভেসে আসে সুবহার কানে। ভয়ে আরো জড়সড় হয় সে।
দরজা খুলে ভিতরে ঢোকে তামীম……
তার গায়ে ছিটকে লেগে থাকা র’ক্ত শুকিয়ে গেছে। চোখে আগুন। তামীমকে দেখা মাত্র সুবহার ভয় আরো বেড়ে গেলে। বসা থেকে দাড়িয়ে যায় সে। তামীম এক পা এক পা করে সামনে এগিয়ে আসতে থাকে আর সুবহা ভয়ে একটু পেছিয়ে যায়। কিন্তু পিছনে সোফা থাকায় পেছাতেই পরে যায় সে।
তামীম ধীরে ধীরে এগিয়ে আসে।
সুবহার পা থেকে মাথা অব্দি সুক্ষ ভাবে পরথ করে তামীম।
” শরী’র দেখানোর কী খুব শখ তোর?”
তামীম এক ঝটকা দিয়ে সুবহার হাত ধরে তাকে টেনে তোলে। আর খুব জোরে গলা টিপে ধ’রে।
” এই তুই জানিস না, তুই আমার? বল জানিস না?!”
সুবহা অনেক চেষ্টা করে নিজের গলা ছাড়ানোর কিন্তু তানীমের বলিষ্ঠ হাতের কাছে তার চুনো পুটির মতো হাতের শক্তি কিছুই না। টপ টপ করে পানি পরতে থাকে সুবহার চোখ দিয়ে।
” বলেছিলাম অবাধ্য হতে না।কিন্তু হলি। আজকে বুঝবি তুই তামীম কতটা ভয়ংকর হতে পারে। ভালোবাসি বলে ছাড় দিবো না!”
তারপর পকেট থেকে লাইটার বের করে তামীম। আর শাড়ির আঁচলের অংশে আগুন ধরিয়ে দেয়!
” নাহ!!!!
সুবহা খুব কান্না কাটি শুরু করে দেয় আগু’নের মাত্রা বাড়তেই থাকে। তামীম টেবিলে হেলান দিয়ে সুবহার এই কষ্টের দৃশ্যটি দেখতে থাকে।
” আমার অবাধ্য হলে তোকে পরপা’রে পাঠাতে ও আমার হাত কাঁপবে না! ”
” আ…আমি আর আপনার কথার অবাধ্য হবো না। প্লিজ বাঁচান আমাকে!”
সুবহা খুব জোরে জোরে চিৎকার করতে করতে তামীমের কাছে তাকে বাঁচানোর জন্য আকুতি করতে থাকে। কিন্তু তামীম চুপচাপ দাড়িয়ে থাকে। এক পর্যায়ে সুবহা মাটিতে পরে যায়।
———রাত ৮টা———
পিট পিট করে চোখ খুলতে থাকে সুবহা। হাতের অনেকটা অংশ পু’ড়ে গেছে তার। চোখ খুলতেই পাশে বসে থাকা তামীমের দিকে চোখ যায় তার। ভয়ে চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পরে সুবহার।তামীম এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সুবহার দিকে। তারপর উঠে গিয়ে সুবহার পাশে বসে।
তামীম বসতেই সুবহা ভয়ে নড়েচড়ে উঠে একটু! তামীম সুন্দর মতো সুবহার ব্যান্ডেজ করা হাতটি ধরে।
” জ্বলা কমছে?”
সুবহা মাথা নেড়ে হ্যা বুঝায়।
” কিন্তু আমার তো কমে নাই!”
তামীম খুব রাগি দৃষ্টিতে তাকায় সুবহার দিকে। তারপর খুব জোরে জরিয়ে ধরে সুবহাকে। তামীম রাগে এতোটায় জোরে ধরে যে সুবহার নিঃশ্বাস নিতে ও কষ্ট হয়।নিজের সর্বচ্চ শক্তি দিয়ে তামীম সুবহাকে চে*পে ধরে।
” ক্যান শুনলি না তুই আমার কথা সুবহা? ক্যান?”
সদ্য ব্যান্ডেজ করা হাতে চাপ পরতে ব্যাথায় ডুকরে উঠে সুবহা। কিন্তু সেদিকে তামীমের কোনো ধ্যান নেই।
ঠিক তখনই সুবহার মা-বাবা হন্তদন্ত হয়ে ছুটে আসে।
তামিমের লোকেরাই ফোন করেছিল তাদের।
তারা হাসপাতালের কেবিনে ঢুকে মেয়েকে দেখে স্তব্ধ।
চোখে ভয়, শরীরে থরথর কাপতে থাকে।
শয়ন প্রধানমন্ত্রীর ছেলে তাদের মেয়ের পাশে বসা। তামীম সরকার। যার ভয়ে ৮-৮০ সকল বয়সের লোকরা মাথা উচু করতে পারে না, সেই তাদের মেয়ের পাশে।
সুবহার মা-বাবা আসতেই তামীম উঠে দাড়ায়,
” আসসালামু আলাইকুম শুশুর, শাশুড়ী! ”
তামীমের হঠাৎ এমন ডাকে সুবহার মা-বাবা তাদের একজন আরেকজনের মুখের দিকে তাকায়।
” সালামের উত্তর দিবেন?”
” ওয়ালকুম আসসালাম স্যার!”
” মেয়ের জামাইকে কেউ স্যার বলে? বাবা বলেন সুন্দর লাগে শুনতে।”
তামীমের কথা শুনে সুবহার মা-বাবা ভয়ে শুকনো ঢোক গিলে।
তামীম উঠে সুবহার মা-বাবার সামনে দাড়ায়।
” আগামী শুক্রবার বাদ জুম্মার পর আপনার মেয়ের সাথে আমার বিয়ে হবে,কিছুই করতে হবে না! এক কাপড়ে মেয়ে পাঠিয়ে দিবেন, রানি করে রাখবো। আশা করি না করবেন না। আমার আবার না শব্দটা পছন্দ না।”
এমপি তামিম সরকার পর্ব ১৭
তামীমের কথা শুনে তারা দু-জন কী বলবে কিছু বুঝতে পারে না।
তামীম উঠে সামনের দিকে পা বাড়িয়ে ও আবার পিছনে ঘুরে তাকায়!
” সুন্দর মতো মেয়েকে আমার হাতে তুলে দিয়েন, নাহলে ছিনিয়ে নিতে আমার দু’সেকেণ্ড ও লাগবে না!”