এমপি তামিম সরকার পর্ব ২৯
কাফাতুন নেছা কবিতা
” বিয়ে হয়ে গেছে তামিম! সুবহার হাত ছেড়ে দে!”
আকাশের কথা শুনে কিছু ক্ষণের জন্য নীরব হয়ে যায় তামিম! ওই যে কথায় আছে, ঘূর্ণিঝড় আসার আগে প্রকৃতি তার নীরবতা দিয়ে আগাম বার্তা প্রকাশ করে! আজকের প্রকৃতি ও যেনো সেই আগাম বার্তা প্রকাশ করলো!
ঝড় আসতে চলেছে! মহা প্রলয় হতে চলেছে! এই ঝড়ের তান্ডবে যে কী কী লান্ড ভন্ড হতে যাচ্ছে তার আগাম পূর্বাভাস আন্দাজ করা গেলে ও তেমন এর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ঠিক আন্দাজ করা গেলো না!
যেখানে ১৭ বছর বয়স থেকে তামিম, মৃ’ত্যুর খেলা খেলতে মেতে থাকতো, সেখানে তাকে ঠকিয়ে আরেকজনকে বিয়ে করার পরিনাম কী ভয়ংকর হতে পারে সেটা বলায় বাহুল্য!
” বিয়ে হয়ে গেছে!””
‘তামিম খুব শক্ত করে চোখ রাঙ্গিয়ে সুবহার বাহু চেপে ধরে! সুবহা তামিমকে কিছু একটস বলতে যায়!
” তামি……!”
” তুই কবুল বলছোস ওকে!”
তামিম খুব ভারি কন্ঠে সুবহাকে জিজ্ঞেস করে!
” তা….!”
সুবহা এক পা এক পা করে নিজের পিছনে যেতে থাকে, আর তামিম এক পা এক পা করে সামনের দিকে এগোতে থাকে!
তামিমকে এগোতে দেখে সুবহার নিঃশ্বাস আরো ভারি হয়ে যায়! আজকে যে তার জীবনের শেষ দিন এইটা সুবহা তামিমের হিংস্র লাল চোখ জোড়া দেখে বুঝতে পারে!
” বান্দী’র বাচ্চা তুই কেমন বিয়ে করলি! ”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
খুব জোড়ে হিংস্র সিংহের মতো গর্জে উঠে তামিম! উপস্থিত সকলে ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে যায়! শুকনো ঢোক আকাশ ও গিলে। কিন্তু আকাশ এটা ধারণা করেছিলো সুবহার বিয়ের কথা শুনে তামিম তার শখের নারীকে নিজের হা’তে পরপারে পাঠাবে, আর সারাজীবনের কষ্ট নিয়ে ভুগবে। যেটা দেখে আকাশের কলিজা ঠান্ডা হয়ে যাবে!
” তুই কেমনে আরেকজনকে বিয়া করলি সুবহহহহহহহহা! কেমনে করলি বিয়য়য়য়য়য়া !”
তামিম সুবহার হাত ধরে খুব জোড়ে মাটিতে ফেলে দেই!
” আমার স্ত্রীকে ছেড়ে দে তামিম!”
মানুষের বিপদ যখন ঘনিয়ে আসে, তখন পদে পদে ভুল হতে থাকে। আকাশের সাথে ও মনে হয় তাই হলো!
সে বার বার ইচ্ছে করে আমার স্ত্রী বলে বলে তামিমের ভিতরের ঘুমন্ত প’শুটাকে জাগিয়ে তুলছে।।
মাটিতে পরে সুবহা তামিমের দিকে ফিরে কিছু বলতে যাবে তার আগেই তামিম তার রিভ’লবার দিয়ে পরপর দুটো গু’লি চালায় সুবহার বুকে।
বিন্দু মাত্র হাত কাপে না তামিমের।
” তোরে বার বার বলছিলাম আমাকে ঠকাইছ না! সেই ঠকালি!!”
তামিম আঘাত প্রাপ্ত বাঘের মতো গর্জে উঠে! তার হুংকারে যেনো কেপে উঠে চারপাশ! তামিম সরকার যতবার ক্ষেপেছে! ততবার কারো না কারো জীবনের শেষ দিন হয়েছে!
সুবহাকে গু’লি করার সাথে সাথে তার মা-বাবা ছুটে আসতে থাকে তার দিকে, কিন্তু পারে না! তামিম তাদের সামনে ও গু’লি চালায়! আর বড় বড় চোখ করে তাকায় তাদের কিন্তু! কিন্তু সন্তানের বিপদে বাবা-মাকে পৃথিবীর কোনো শক্তিই আটকাতে পারে না!
সুবহার বাবা মা আবার ছুটে আসতে থাকে! কিন্তু তার আগেই তামিমের লোকেরা তাদের ঘেরাও করে। সুবহার বাবা থেমে গেলে ও সুবহার মায়ের আর্তনাদ থেমে থাকে না!
কাঁদতে কাঁদতে এক পর্যায়ে বেহুশ হয়ে যায় সুবহার মা! আর জীবন্ত মুর্তির মতো দাড়িয়ে থাকে সুবহার বাবা! যেখানে নিজের মেয়েকে বাঁচানোর জন্য তাকে অন্য কারো সাথে বিয়ে দিতে চেয়েছিলো, সেখানে নিজের চোখে মেয়ের র’ক্তাত্ব দে’হ মাটিতে পড়ে থাকতে দেখছে! এমন করুন দৃশ্য দেখার চাইতে ম’রে যাওয়া বোধ হয় ভালো ছিলো!!
” এই বেঈমান নারীর মৃ’ত্যু আজকে স্বচক্ষে দেখবো আমি!”
তামিমের প্রতিটি কথার আঘাত গু’লির আঘাতের চাইতে বেশি মনে হলো সুবহার কাছে! আজকে বোধ হয় তার জীবনের শেষ দিন হতে চলছে। সুবহা হাত উপরে উঠিয়ে তামিমকে ডাকতে যাওয়ার আগেই আবার মাটিতে লুটিয়ে পরে তার হাত!
উপস্থিত সকলে ভয় পেলে ও আকাশ চৌধুরী মুখে ভয়ের কোনো চিংহ পাওয়া গেলো না!! বরং তামিমের এমন অবস্থা দেখে তার মুখে এক তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠে!
” আমার বউকে ছেড়ে দে তামিম!”
আকাশের মুখে আমার বউ কথাটি শুনে তামিমের ঘাড়ের রগটা যেনো বেঁকে বসে! সে খুব হিংস্র ভাবে তাকায় আকাশের দিকে।
” তোর বউ..! ও হ্যা! ও তো এখন তোর বউ! আমার বউ না হয়ে ও তোর হয়ে ম’রতাছে! না! ভারি অন্যায়! তামিম সরকারের প্রেস্টিজে লাগলো!”
তামিম তার হাতে থাকা রিভ’লবারটি দিয়ে আকাশের পায়ে সু’ট করে দেই! তামিম যে সুবহাকে ছেড়ে তাকে ও গু’লি করবে এটা কল্পনা ও করতে পারেনি আকাশ! তামিমকে নিচু করতে যেয়ে ও পারলো না সে! বরং খাল কেটে কুমির কাছে ধরা দিলো!!।
তামিম নিজের পাঞ্জাবির হাতা উপরে উঠাতে উঠাতে আকাশের দিকে আসে!
” মাহিররররর!”
” এই লন ভাই!”
মাহির একটি শক্ত চ্যালা কাঠের লম্বা টুকরো তামিমের দিকে ক্যাচ দেই!!
তামিম সেই কাঠের লম্বা টুকরোটি নিয়ে আকাশকে বেধড়ক পি”টাতে থাকে! সুবহা নিজের বুকে হাতে দিয়ে তখন ও সবটা স্পষ্ট শুনতে পায়! মৃ’ত্যু যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকে। কিন্তু তাকে সাহায্য করার মতো কেউ নেই!
তামিম নিজের মতো করে আকাশকে আকাশে পাঠাতে ব্যস্ত! এক পর্যায়ে থেকে তামিম আকাশের পা ধরে তাকে টেনে ছিছড়ে নিয়ে আসে সুবহার দিকে!
” তালাক দে!”
আকাশ হাঁপাতে থাকে!
” কু’ত্তার বাচ্চা তালাক দে! তুই এখনই তালাক দিবি ওরে!”
কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলো না আকাশ! পায়ে গু’লি আর তামিমের হিংস্রর মতো ঝাপিয়ে পড়ার পর আকাশের প্রাণ যে উড়ে এতো ক্ষণে ও আকাশে পৌঁছে যায়নি এটায় তার ভাগ্য ছিলো হয়তো!
” তামিম..বিয়ে….!
আকাশকে বাড়তি কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে তার পেট বরাবর জোড়ে লা’থত্তি দেই তামিম!
” চা’পাতি দে সাকিববববব!”
সাকিব তামিমের হাতে চাপা’তি দিতেই আকাশ খুব জোড়ে জোড়ে তিন তালা’ক দেই সুবহাকে!
” এই কাজী, তালাক হয়ছে…?”
কাজী ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে মাথা নাড়ে! অর্থাৎ হয়নি! সব কিছুর একটি নিয়ম আছে!
তামিম নিজেই নিজের মাথায় হাত দিয়ে খুব জোড়ে চিৎকার করে উঠে সুবহার নাম নিয়ে!
” তুই কেমনে ওরে কবুল বললি সুবহহহহহহাাাা!”
তামিমের চিৎকার ঠিকমতো কানে আসলো না সুবহার! চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে আসলো তার! সুবহা বার বার তামিমকে কিছু একটা বলতে চাচ্ছিলো! কিন্তু তামিম আজকে মে’তেছে মর’ণ নে’শায়! সুবহার মৃ’ত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করা করুন দৃশ্য তামিমের চোখে পড়ে না!
” সাকিব! ডির্ভোস পেপার নিয়ে আয়!”
তামিমের কথা মতো সাকিব হেলিকপ্টার নিয়ে উড়ে যায়!
আর তামিম খুব হিংস্র ভাবে তাকায় সুবহার দিকে! এক পর্যায়ে তামিম নিচে সুবহার পাশে মাটিতে বসে পড়ে!!
” আমি জীবনে কোনো মাই’য়ার দিকে তাকায় নাই! তোর দিকে তাকায় ছিলাম! মন ভরে তাকায় ছিলাম! তোকে কখনো খা’রাপ নজরে দেখি নাই! সব সময় বউ করে আনবো বলে নিজের অনুভূতি গুলারে দাবায় রাখছিলাম! আর তুইইইই!”
তামিম গু’লি বৃদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকা সুবহার গাল খুব শক্ত করে চেপে ধরে!
” ত….!”
” চুপপপপপ! তোর মতো বা’ন্দীর বাচ্চার মুখে আমার নাম শুনলে ব’মি আসে!”
সুবহা চোখ বন্ধ করে ফেলে তার! আর খুব জোড়ে জোড়ে নিঃশ্বাস নিতে থাকে। হয়তো একটু পরই তার দম ফুরিয়ে যাবে!
” এই চোখ খোল বান্দী’র বাচ্চা!! চোখ খোল!!তুই অন্য কারো হয়ে ম’রতে পারোস না! চোখ খোল!”
তামিম সুবহার দু-গালে জোড়ে জোড়ে থাপ’রাতে থাকে! গালে থাপ্প’ড় পড়ার সাথে সাথে সুবহা চোখ মেলে তাকায়, আর জোড়ে জোড়ে নিঃশ্বাস নিতে থাকে!!
” তুই অন্য কারো হয়ে মর’তে পারোস না সুবহা! এই অধিকার তোর নাই!”
কিছু ক্ষণের মধ্যে সাকিব পেপার নিয়ে হাজির হই!! আর তামিমের সামনে ধরে!
তামিম পেপার নিয়েই সুবহার সামনে ধরে!
” এই সাইন কর! সাইন কর বান্দী’র বাচ্চা! ”
তামিম জোড় করে সুবহার হাতে কলম ধরিয়ে দেই। শরীর অস্বার হয়ে যাওয়ার ফলে সুবহা কলমটি ধরতে পারে না!
” বাহ! নতুন সোয়া’মির জন্য এতো প্রিরি’ত তোর! কলম ফেলে দিলি!”
এমপি তামিম সরকার পর্ব ২৮
তামিম সুবহার হাত ধরে তাকে কোলে নিয়ে দু-হাত শক্ত করে ধরে সাইন করিয়ে নেই! তারপর আকাশকে দিয়ে ও সাইন করায়!!।।
তারপর সুবহাকে কাঁধে তুলে সামনে যেতে থাকে।
” সাকিব! আকাশকে আকাশে পাঠা!”
