এমপি তামিম সরকার পর্ব ৩৩

এমপি তামিম সরকার পর্ব ৩৩
কাফাতুন নেছা কবিতা

তামিম খুব খুশি মনে উপড়ে উঠতে থাকে! অবশেষে আজকে সেই দিন এসেছে যখন তামিম সুবহাকে নিজের করে পাবে!
যেদিন থেকে তামিম সুবহাকে দেখেছিলো, সেদিন থেকেই তামিমের একটাই ইচ্ছে ছিলো, সুবহাকে নিজের বউ করে আনা! আজকে সুবহা সত্যি সত্যি তামিমের বউ!
সত্যি ভালোবাসায় হয়তো এতোটায় টান থাকে যে, প্রিয়তমাকে নিজের করে তবেই শান্ত হয়! তামিমের ভালোবাসায় হয়তো এতোটাই টান ছিলো যে সুবহাকে নিজের বউ করে এনেই ছাড়লো!!
তামিম দুই কদম সিড়িতে দিতেই পিছন থেকে মাহির তাকে ডাক বসায়!

” ভাই”
“শা*লার জিন্দেগী! ”
তামিম খুব কড়া মেজাজে তাকাই পিছনে। মাহিরের সাথে বাকি চার বদ’মাইশ ও নাদান বাচ্চার মতো দাড়িয়ে থাকে!!
” ম’রার আর সময় পাইলি না-রে তোরা?”
পাঁচ জন, একজন আরেকজনের মুখের দিকে তাকিয়ে মিটমিট করে হাসে!!
” ভাই আপনের লাইগ্গা একটা জিনিস আনছি!”
তামিম ভ্রু কুঁচকে তাকায় তার পঞ্চ পান্ডবের দিকে! মাহির খুব ধীরে ধীরে তামিমকে কাগজে মোড়ানো একটি প্যাকেট দেই! তারপর পাঁচ জনই একদম সদর দরজায় এসে দাড়ায়!
” তোরা এতো দূরে গেলি ক্যান?”
” ভাই, এমনি!”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

তামিম সন্দেহ নিয়ে প্যাকেট খুলে। সম্পূর্ণ প্যাকেট খোলার সাথে সাথে তামিম খুব রাগি ভাবে তাকায় সামনের দিকে! তারপর নিজের জুতো খুলে তাড়া করে তার লোকদের!
” পালারে….ভাই ক্ষেপছে!”
” হাতের কাছে পায় খালি তোদের! আমার সাথে মশকারি! ”
সাকিব, মাহির দৌড়ে গার্ডেনের পুলে দম আটকে পানির নিচে বসে পড়ে। আর অন্য দিকে রফিক, মানিক, মফিস গাছের উপরে উঠে যায়!
তামিম এক পায়ে জুতো পড়ে, আরেক পায়ের জুতো হাতে নিয়ে তার পঞ্চ পান্ডবদের খুঁজতে থাকে!! খুঁজতে খুঁজতে পুল সাইডে গিয়ে দেখে সাকিবের লুঙ্গি, আর মাহিরের ফোন সাইটে পড়ে আছে।
তামিম সুন্দর মতো একপাশে দাড়িয়ে পড়ে!
অল্প কিছু ক্ষণের মধ্যে তারা দু-জনই বাইরে বের হয়, আর নিঃশ্বাস নিতে থাকে!! বেশি ক্ষণ পানির নিচে থাকা খুবই মুশকিল! শুধু মুশকিল নয় অসম্ভব ও বটে!!

” আর একটু হইলে আজরাইলের লগে আমার দেখা হইতো!”
সাকিব হাঁপাতে হাঁপাতে মাহিরকে কথাগুলো বলতে থাকে!!
” হই আমার ও! ”
মাহির আর সাকিব দু-জনই খুব হাঁপাতে থাকে! রাতের বেলা পুলের পানি মোটামুটি একটু ঠান্ডা! তাই তাদের শরীরে কম্পন শুরু হয়ে যায়!
” আজরাইলের সাথে দেখা করার ব্যবস্থা করি তাইলে?”
তামিমের গলা শুনে সাকিব, মাহির ভয়ে ভয়ে পিছনে তাকায়!

” খাইছে রে…..!”
” জলদি পানি থেকে উঠ!”
সাকিব আর মাহির একজন আরেকজনের মুখের দিকে তাকায়!
” উঠতে কইছি!”
মাহির কোনো কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ উঠে আসে। আর সাকিব তখন ও পানিতেই বসে থাকে।
” তোরে কী স্পেশাল ইনভিটেশন দিতে হইবো?”
” আছলে ভাই! আমার তলদেশ ফাঁকা! ”
” হে?”
” আপনের ভয়ে আমি লুঙ্গি খুইলা নাইমা পড়ছি!”
তামিম নিজেই নিজের মাথায় বা’রি দেই!
” তোর লুঙ্গি যেখানে, সেখানে খুলে যায় কেন?”

” ভাই গিট্টু তো মা’রই, হয় না!”
” কোন দিন জানি বো*মা বানাইতে যাইয়া, তোর লুঙ্গি আকাশে আর তুই মাটির নিচে যাস!”
তামিম সাকিবের লুঙ্গি পানিতে ঢিল মা’রে। সাকিব সুন্দর মতো লুঙ্গি পড়ে উপরে উঠে আসে।।
” বাকি তিন বদজাত কই!”
মাহির ইশারা করে গাছের দিকে দেখায়! তামিম উপড়ে তাকিয়ে দেখে। তিন জন গাছে ঝুলে আছে!
” তোরা নামবি? না-কি গাছ কাটতে হবে?”
বাকি তিন জন ও সুন্দর মতো গাছ থেকে আস্তে আস্তে নামতে থাকে।
” তুই এমনে পা ফাঁক করে দাড়িয়ে আছিস কেন মানিক? ”
” আসলে ভাই, তাড়াহুড়া কইরা গাছে উঠতে যাইয়া ছাল উঠঠা গেছে! ”

তামিম সহ উপস্থিত সকলে খুব জোড়ে জোড়ে হেসে উঠে। বেচারা মানিক পা ফাঁক করে তখন ও দাড়িয়ে থাকে!!
” ভাই ভাবি সাপ কিন্তু আপনের লাইগা অপেক্ষা করতাছে!”
তামিম সুবহার কথা শুনতেই আবার হারিয়ে যায় অচেনা আবেগে। আজকে তামিম যেনো আর নেই নিজের মাঝে।।
তামিম সুন্দরমতো বাড়ির ভেতরে চলে আসে৷ আর তার পঞ্চ পান্ডবরা বাইরেই থাকে!!
ভেতরে আসতেই তামিমকে তার মা হাতে স্বর্ণের বালা ধরিয়ে দেই!
” এইগুলা কীসের জন্য আম্মা?”
” নতুন বউকে বিয়ের দিন কিছু দিতে হয়!”
” আমার সম্পত্তি সব ওর নামে লিখে দেই?”
” ওটা দিস! এখন এগুলো দে! ”
তামিম বাধ্য ছেলের মতো বালা গুলো নিয়ে উপরে আসতে থাকে!

সারাদিনের ক্লান্তি আর ধকলে সুবহা বেশিক্ষণ বসে থাকতে পারে না! কখন যেনো ঘুমের দেশে তলিয়ে যায়!
অসুস্থ্য শরীর আর ক্লান্ত মন! দুটোর ব্যালেন্স করতে বেশ হিমশিম খায় সুবহা! আজকে যেনো পৃথিবীর সব থেকে একা মানুষটি সুবহা নিজেই! না বাবা আছে, না মা আছে, আর না ভাই আছে।
একটি সুন্দর সাজানো গুছানো পরিবার এক নিমিষেই শেষ! সুবহা ভেবে কুল পায় না কার নজর লাগলো তার উপরে!
অনেক বসে থাকতে থাকতে সুবহা বিছানাতেই শুয়ে পড়ে। আর গভীর ঘুমে তলিয়ে যায়!!
তামিম দরজার লক খুলে ভেতরে এসে দেখতে পায় খুব সুন্দর করে ছোট্ট বিড়াল ছানার মতো গুটিসুটি হয়ে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন তার রাতপরী!

তামিম দরজায় লক দিয়ে ধীরে ধীরে সুবহার কাছে আসে। সুবহার খুব কাছে এসে বসে।
” স্টার জলসার নায়কাদের মতো এতো মেকআপ নিয়ে কেডা ঘুমাই!”
তামিম বালা গুলো সাইটের টেবিলে রেখে সুবহার মুখ বরাবর হেলান দিয়ে বসে। তারপর পকেট থেকে ফোন বের করে ঘুমন্ত সুবহার ছবি তুলতে থাকে!
ছবি তোলার এক পর্যায়ে তামিম সুবহার গালে খুব গভীর ভাবে চু’মু খায়!
তামিম চু’মু দেওয়ার সাথে সাথে সুবহার ঘুম আলগা হয়ে আসে! সে পিটপিট করে চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে তামিম তার খুব নিকটে। এতো নিকটে যে তাদের মধ্যে খুব বেশি গ্যাপ নেই!!
সুবহা উঠতে ব্যস্ত হয়ে যায়! সে তাড়াতাড়ি করে তামিমের থেকে দূরে সরে যেতে থাকে!
” নড়িস না ছেড়ি, মুডে আছি!”

সুবহা তামিমের কোনো কথা না শুনেই দূরে সরে যেতে থাকে! সুবহা যত দূরে সরে বসে তামিম ততো কাছে সুবহার গা ঘেসে বসে! সুবহা একটু করে সরে বসে৷তামিম একটু করে গা ঘেসে বসে!
” তোর কী করোনা হয়ছে সুবহা?”
সুবহা মাথা নেড়ে না বুঝায়!
” এইডস হয়ছে?”
” নাহ!”
” ছোঁয়াছে কোনো রোগ?”
” কিছুই হয়নি আমার!”

এমপি তামিম সরকার পর্ব ৩২

” তাহলে এমন ফাল পাড়তাছোস কেন?”
সুবহা ভ্রু কুঁচকে তাকায় তামিমের দিকে!
” আমি প্রস্তুত না তামিম! i need some times!”
তামিম সুবহার মাথার উড়না খুলতে থাকে!

এমপি তামিম সরকার পর্ব ৩৪