এমপি তামিম সরকার পর্ব ৩৪
কাফাতুন নেছা কবিতা
তামিম সুবহার মাথার উড়না খুলতে থাকে! এক এক করে সব পিন খুলে সুবহার চুলের লাগানো সমস্ত ফেক ফুল খুলে ফেলে, কোনো কথা নেই দু-জনের মুখে। পিনপতন নীরবতা চলছে তামিম সুবহার মাঝে।
তামিম নিজের কাজে ব্যস্ত! আর সুবহার নিঃশ্বাস করছে উঠা-নামা!
তামিম সুবহার কাধের খুব কাছাকাছি নিজের মুখ আনে।তামিমের নিঃশ্বাস সুবহার কাধ বরাবর পড়ছে!
ভয়ে শুকনো ঢোক গিলে সুবহা! জড় বস্তুর মতো বসে থাকা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই তার! তামিম কী আজকে শুনবে সুবহার বারণ!
তামিম সুবহার কানের পাশ থেকে চুল সরিয়ে সুবহার কানের ঝুমকো খুলতে থাকে!
তামিম খুব যত্নসহকারে সুবহার সমস্ত গয়না খুলতে থাকে! এক এক করে খুলে সব সাইটে রাখতে থাকে তামিম!
তামিম সুবহার থেকে একটু পিছনে সরে বসে আলতো করে সুবহার গলার নেকলেস খুলতে থাকে! তামিমের হাত নিজের পিঠে অনুভব করতেই শরীর ঠান্ডা হয়ে আসে সুবহার!
নেকলেস খুলে এক ঝটকাতে সুবহাকে ঘুরিয়ে নিজের দিকে বসায় তামিম!
তারপর সুবহার হাতের চুড়ি, কোমরের বান, আর পায়েল ও খুলে ফেলে তামিম!
টিস্যু পেপার নিয়ে সুবহার ঠোঁট মুছতে থাকে তামিম!
” যেই সাজ আমার জন্য না! সেই সাজ তোর শরীরে বেমানান রাতপরী! ”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
তামিম সুবহার হাত ধরে ওয়াশরুমে নিয়ে যায়! তামিমের ওয়াশরুমে ঢুকতেই চোখ কপালে উঠে যায় সুবহার! সুবহাদের দুটো রুমের সমান তামিমের ওয়াশরুম। চারপাশে আধুনিকতার ছোয়া!!
তামিম সুবহাকে সোজা ড্রেস কাবাডের সামনে নিয়ে যায়!
” তুই অন্য কারো জন্য বউ সাজলি, আমার জন্য না! ইচ্ছে তো করছে তোর শরীরে আগু’ন জ্বালিয়ে দেই! ”
তামিমের কথা শুনে সুবহার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে!
তামিম নিজের হাত দিয়ে সুবহার চোখের পানি মুছে দেই!
” এখানে তোর সাইজ মতো সব ড্রেস আছে! আর ওইখানে তোর ব্যবহ্রত সব জিনিসপত্র! মহিলাদের জিনিস সম্পর্কে আমার তেমন একটা আইডিয়া নেই! কিছু পরিবর্তন করতে হলে বলিস এনে দিবো!”
সুবহা তখন ও তামিমের দিকে তাকিয়ে ছিলো এক দৃষ্টিতে!
” ২০ মিনিটের মধ্যে রেডি হয়ে আয়! না-হলে আমি রেডি করিয়ে দিচ্ছি! ”
”নাহ! আমি হচ্ছি! আপনি যান!”
” কী বললি?”
” বলেছি, আপনি যান!”
” আমি তোর জান? এইটা বললি?”
সুবহা খুব রাগে চোখ বন্ধ করে ফেলে। আর দাঁতে দাঁত পিষে বলে…..!
” আপনাকে বাইরে যেতে বলেছি!”
” চেতিস না ছেড়ি, যাইতাছি!”
তামিম সুন্দর মতো বাইরে চলে যায়! আর সুবহা কাবাডে এক পলকে সব ড্রেস গুলো পরক্ষন করে নেই! সবই ভিষণ দামি! কিন্তু বাসায় পড়ে থাকার জন্য এতো দামি জামাকাপড়ের দরকার নেই! সুবহা নাইট সুট নিয়ে সুন্দর মতো গোসল করে।
প্রায় ২৩ মিনিট লাগে সুবহার ফ্রেশ হতে! দরজায় এসে সুবহা কিছু ক্ষণ দাড়িয়ে থাকে! একটা ভয়, একটা দ্বিধা কাজ করছিলো তার মধ্যে!
সুবহা আস্তে আস্তে দরজা খুলে বাইরে উঁকি দেই! উঁকি দিয়ে দেখতে পারে তামিম কোথাও নেই! সুবহা একটু হাফ ছেড়ে বাঁচে!
” আমি এখানেই আছি!”
হুট করে তামিমের আওয়াজ ভেসে আসতেই সুবহা চমকে উঠে! তারপর দেওয়ালের দিকে তাকিয়ে দেখে তামিম সুন্দর মতো দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে দাড়িয়ে আছে!
” বিয়ে না হতেই স্বামী পাগল হয়ে গেলি! লোকে বলবে আমি কা’লো জাদু করেছি তোকে!”
সুবহা তামিমের সাথে কথা না বাড়ানোই ঠিক মনে করে। সে চুপচাপ দরজা লাগিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে!
ভেজা চুল, মুখ ও হালকা পাতলা ভেজা, নাইট-সুট পরা সুবহাকে দেখে তামিমের এড্যামস এপেল উঠানামা করতে থাকে!
তামিম সুবহার হাত ধরে তাকে নিজের সাথে মিশিয়ে নেই। খুব শক্ত করে ধরে সুবহার কোমর!
” ভালোবাসি সুবহা, খুব ভালোবাসি তোকে!”
” কেন ভালোবাসে?”
” ভালোবাসি তাই ভালোবাসি!”
তামিম নিজের মুখ সুবহার মুখের সামনে আনতেই মুখ ফিরিয়ে নেই সুবহা! চোখ বন্ধ করে নিঃশ্বাস নেই তামিম!
” আমার প্রস্তুত না তামিম! ”
তামিম সুবহার হাত ধরে তাকে নিয়ে ডেসিং টেবিলের সামনে বসায়! তারপর সুবহার চুল গুলো মুছতে থাকে।
” আমার ভাই…. ”
” ঠিক আছে! পাশের রুমেই আছে!”
সুবহা সাথে সাথে উঠে দাড়ায়!
” আমি দেখতে যাবো!”
বলেই সুবহা যেতে থাকে বাইরে! কিন্তু দরজায় এসে দাড়িয়ে পড়ে সে। রুমে তো পাসওয়ার্ড দেওয়া! আর সুবহা তো পাসওয়ার্ড জানে না! তাহলে কীভাবে বের হবে!
তামিম পিছন থেকে এসে সুবহার কোমর জা’প্টে ধরে!
খুব শক্ত করেই জড়িয়ে ধরে!
” ও এখন ঘুমাচ্ছে! নার্সরা আছে সাথে! তুই না গেলেই ভালো হয়!”
তামিম খুব শক্ত করে ধরে সুবহাকে। সুবহাকে তামিমের হাত ছাড়াতে ব্যস্ত হয়ে যায়!
তামিম সুবহাকে ঘুরিয়ে নিজের দিকে ফিরিয়ে নেই! আর দরজার সাথে একটু চেপে ধরেই দাড়ায়!
” সুবহা! তুই কী নে’শা ?”
সুবহা চুপচাপ থাকে!
” তোকে দেখলেই আমি মাতা’ল হয়ে যায় কেন?”
তামিমের মাদ’কাময় কন্ঠ শুনে সুবহা বুঝে যায় আজকে আর শেষ রক্ষা হবে না তার!
তামিম নিজের মাথা নিচু করে সুবহার গা’লে চু’মু খায়! সুবহা সাথে সাথে তামিমকে সরিয়ে দূরে সরে আসতে থাকে! তামিম আবার সুবহার হাত ধরে এক ঝটকায় তাকে নিজের কাছে নিয়ে আসে!
” খিদে পেয়েছে! ”
” আমি প্রস্তুত না….!”
” বলদা বেডি খানা খাওয়ার কথা বলেছি! তোকে না!”
লজ্জায় মুখ নিচু করে ফেলে সুবহা!
তামিম সুবহার হাত ধরে তাকে খাটে বসায়! তারপর নিজের হাতে খাবার নিয়ে সুবহার সামনে ধরে!
” হা করো!”
” খিদে নেই! ”
” নাটক একটু কমাইয়া দেখ বইন! আমাদের সংসারে জন্য ভালো হবে! হা কর!”
সুবহা আর কোনো কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ খেয়ে ফেলে!
” বউয়ের উপরে জোড় করা কুকু’রের কাজ! আর আমি তামিম সরকার সিংহ! জোড় আমি করি না!”
” নাহ! আপনি জোড় করেন না! সবাই এমনি এমনি রাজি হয়!”
” কিছু বললি?”
” জ্বী না!”
তামিম নিজের হাত দিয়ে সুবহার মুখ মুছিয়া দেই!
” তোর মা মর’ছে আজকে দু-দিন, ভাই অসুস্থ্য, বাপ তো থেকেই নাই, তোকে আর কী জোড় করবো! তুই তো এমনিতেই হাফ ম’রা!”
এ যেনো এক নতুন তামিমকে দেখছে সুবহা! এক ভিন্ন তামিম! আজকে আর হিংস্র তামিমের ছায়া সুবহা দেখতে পারলো না!
” ঘুমিয়ে পড়!”
” আর আপনি? ”
” আমি বাইরে যাচ্ছি! তোর সাথে এক বিছানায় ঘু’মালে সকালে উঠে দেখতো আমার স’র্বনাশ হয়ে গেছে! ”
তামিম উঠে সুন্দর মতো বাইরে চলে যায়!আর সুবহা রুমে বসে থাকে!
” আজকে ভাইয়ের বা’সর! আহা কী লজ্জা! ”
” বা’সর আমার, আর তুই লজ্জা পাইতাছোস কেন?”
তামিমের কন্ঠ কানে আসতেই তার পঞ্চ পান্ডব পিছনে ফিরে তাকায়!
” ভাই! আপনি রুমের জায়গায় গার্ডেনে কী করেন?”
” মশা’র লগে পিরিত করতে আসছি!”
তামিম এসে সোজা সকলের মাঝে মাটিতে বসে পরে!
” এই মাহির! বাপ্পারাজের একটা ছেকা খাওয়া গান লাগা তো!”
পঞ্চ পান্ডব বুঝে যায়, তামিমের মুড এখন রাগের শেষ সীমানায়!
” ভাই! একটা কথা কমু?”
” বল রফিক!”
” আপনে এসময় রুমে না থাইক্কা, আমাগো লগে!”।
” বউ পাত্তা দেই না!”
পঞ্চ পান্ডব যে যার মুখে তাকায়! তামিম সরকারকে তার বউ পাত্তা দেই না! এটা ও ভাবা যায়!
” ভাই, আমি কই কী আপনে ভাবিসাপ রে কা’লা জাদু করেন! আপনার পিছনে সারাদিন ঘুরবো!”
” বাবা কালা মানিক এই দিকে আয়!”
তামিমের এমন মিষ্টি ডাক শুনে কালা মানিক আবেগে আপ্লূত হয়ে নাচতে নাচতে তামিমের কাছে এসে বসে।
তামিম নিজের হাতে হালকা থু থু দিয়ে ঠাস করে কালা মানিকের মাথায় মা’রে!
” বেছ হয়ছে ভাই! আরেকটা দেন হা’লারে!”
তামিম রাগি চোখে তাকায় সাকিবের দিকে। তামিম তাকাতেই সাকিব অন্য দিকে তাকানোর ভান ধরে!
” এসব কুফরি কালাম, মুসলিমের জন্য হা’রাম! আর আমি খাটি মুসলিম! ঈমানদার মানুষ! এগলা আজাইরা বুদ্ধি দিলে, তোরে বঙ্গোপসাগরে চু’বামু!”
” হো ভাই! আপনি এতোই ঈমানদার কথায় কথায় গ’লা কা’টেন!”
তামিম নিজের জু’তো খুলে উঠে, আর সাকিব খুব জোড়ে দৌড় লাগায়! বাকি চার জন ও দৌড় লাগায় সাকিবকে ধরতে!
এক পর্যায়ে সাকিব ই’টের সাথে উষ্ঠা খেয়ে পড়ে যায়!
” ভাই! ওরে ওর বো’মের সাথে বাইধা উড়ায় দেন!”
” মীরজাফর মাহির!”
” চুপ শা”লা! ভাইয়ের লগে মশকারি! ”
” ভাই! ভাবিসাপের কছম! মা’রবেন না!”
তামিম নিজের জুতো আবার পড়ে ফেলে!
তারপর মাটিতেই বসে পরে! তামিমের সাথে বাকিরা ও বসে পরে!
” Adaat is more dangerous than mohabbat! ”
” মানে ভাই?”
এমপি তামিম সরকার পর্ব ৩৩
” জেএসসি পাস করলে তো বুঝতি!”
” ওহে আমার এইচএসসি ফেল মাহির মিয়া! তুই ক ভাই কী কইছে!”
” ভাই কয়ছে ডেনজারেস কিছু হইবো!”
তামিম বড় করে নিঃশ্বাস ফেলে উপরে তাকায়!
” এই পাঁচ পাগল কী আমার কপালেই দেওয়া দরকার ছিলো খোদা?”
