এমপি তামিম সরকার পর্ব ৭৬

এমপি তামিম সরকার পর্ব ৭৬
কাফাতুন নেছা কবিতা

ঝর্ণার পানিতে তামিমের শরীরে অবস্থিত সমস্ত র’ক্ত কনিকা গুলো ঝড়ে পানির সাথে পড়ে যেতে থাকে!! কিছু ক্ষণের জন্য তামিম চোখ বন্ধ করে ফেলে! আজকে তো সুবহার সাথে খারাপ কিছু ও হতে পারবো!! সুবহার এই TBH রোগের জন্য সে হয় তো নিজের রাগ কন্ট্রোল না করতে পেরে লোকগুলোর এমন অবস্থা করলো! কিন্তু যদি সে সুস্থ থাকতো? তাহলে তো শু’কনের বাচ্চারা গিলে খেতো সুবহাকে! তামিম নিজের বুকে হাত দিয়ে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে থাকে!! বারবার মনে হচ্ছে যদি সুবহার কোনো ক্ষতি হতো?? তাহলে তো সে তার প্রাণ প্রিয় ভাই তাসকিনের মতো সুবহাকে হারাতো!!
” ছোটোবেলা ভাই হারায়ছি! জেল খাটছি! নিজের মায়ের অসম্মান হতে দেখছি, কিছু করতে পারি নাই তখন, কিন্তু তোর কোনো ক্ষতি আমি হতে দিবো না সকাল! এবার আর আমার শখের বউয়ের দিকে কারো নজর পড়বে না!! চোখ তুলে ফেলবো!”

তামিম চলে যাওয়ার পর পঞ্চ পান্ডব তাদের কাজে লেগে পড়ে! বরাবরের মতো এ খু’নের ও কোনো চিহ্ন থাকবে না!! এটাই হলো মাস্টারমাইন্ড তামিমের গুন! তার খু’নের কোনো চিহ্ন থাকে না!!
কাজ শেষে পঞ্চ পান্ডব রঙ্গমঞ্চ খানায় তালা ঝুলিয়ে, দারোয়ানদের সাবধান করে সামনে যেতে থাকে! তিনজন পিছনে আর দু-জন সামনে যেতে থাকে! মফিস বার-বার যেতে যেতে থেমে যায়! এতে করে সাকিব একটু বিরক্ত হয়!!
বো’মা সাকিব..,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

” ওই টাকলা শোন?”
টাকলা মফিস…” সম্মান দিয়ে কথা বল সাকিব!”
বো’মা সাকিব,,” মাননীয় কেশ শূন্য মহাশয়, একটু শুনবেন? ”
টাকলা মফিস, ” বোম’মমমমমা”
বো’মা সাকিব,” মাল খেয়ে তাল হয়ে না হাইট্টা, সর বা’ল!”
সাকিবের অপমান শুনে মফিস তাকে মা’রতে যায়! কিন্তু মাহির পুরো বিষয়টি সামলে নেয়! তামিম এমনিতেই অনেক রেগে আছে! তারপর তারা যদি এখন বাওয়াল করে সব কয়টাকে বেঁধে ঝুলাবে তামিম!
সকলে পার্টি অফিসে চলে যায়! আর গিয়ে যে যার মতো সুন্দর করে পরিষ্কার হয়ে যায়! সুবহা যদি র’ক্তের দাগ দেখে তাহলে তাদের কারো সাথেই আর কথা বলবে না!!
তারা ফ্রেশ হয়ে এসে তামিমের কক্ষে যায়! তামিম চুপচাপ টেবিলে থাকা সুবহার ছবির দিকে তাকিয়ে থাকে!

” ভাই!”
তামিম ইশারা করে সবাইকে ভেতরে আসতে বলে! সবাই এসে সামনে দাড়ায়! তামিমের চোখ অসম্ভব লাল! পঞ্চ পান্ডব বুঝে যায় তামিমের এই লাল চোখের রহস্য!! তামিম তাকায় তাদের দিকে!

পঞ্চ পান্ডবের চোখে ও পানি ছলছল করে! হঠাৎ করে বাঘ যদি বিড়াল হয়ে যায়, সহজে কেউ হজম করতে পারে না!!! তাদের বেলা ও তাই হলো! কিন্তু তামিমের আজকের রূপ দেখে সকলে এটা ঠিকই বুঝে এই বিড়াল রুপটা শুধু সুবহার সামনে! বাইরে সে এখনো ও বাঘই আছে!!

” তামিম সরকার কাদে না ভাই! কাঁদায়! ”
মাহিরের কথা শুনে তামিম দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে!
” পুরুষ মানুষ সহজে কাঁদে না! কিন্তু তামিম সরকার কেঁদেছে! তার বউয়ের জন্য কেঁদেছে! ”
তামিম উঠে তার চোশমা পড়ে বেরিয়ে পরে বাড়ির উদ্দেশ্যে! এতোকিছুর পর সুবহাকে বেশিক্ষণ একা থাকতে দেওয়া যাবে না!

—-প্রায় ২৫ মিনিট পর পার্টি অফিস থেকে সরকার বাড়িতে এসে পৌঁছে যায় তামিম এবং তার পঞ্চ পান্ডব!! বাড়ি ঢুকতেই তামিম দেখে তার বড় ফুপি এসেছে! এখন তো তার ছোটো ফুপির বাড়িতে থাকার কথা! বোনের মেয়ে মরলো! কিন্তু সে এখানে! এই দুই বোন যে দুটো নাগিন এটা তামিম ভালো মতোই জানে! কিন্তু তানভীর সরকার তাদের যথেষ্ট আদর করে! যেনো পরে কেউ না বলতে পারে রক্তের সম্পর্ক না থাকলে তাদের প্রতি অবহেলা করেছে তানভীর সরকার!! তাই তাদের নিজের বোনের মতোই আদর করে তানভীর সরকার!!
তামিম ভিতরে ঢুকতেই শান্তা বেগম একটু চুপ হয়ে যায়! আর তামিম ও তেমন কোনো পাত্তা না দিয়ে তার আব্বা জানকে সালাম দিয়ে উপরে উঠে যেতে থাকে!!
তামিম এসে সোজা উপরে রুমে চলে যায়! অন্ধকার রুমে এক পাশে বসে আছে সুবহা! তামিম লাইট অন করে সুবহার মুখ বরাবর দাড়ায়!!

” আমি পাগল নয় তামিম!”
সুবহার মুখে হঠাৎ এমন কথা শুনে একটু নড়েচড়ে উঠে তামিম! সুবহা তো জানে না তার রোগের কথা! তাহলে?
সুবহা তামিমের হাত জাপ্টে ধরে!!
” আমি তো পাগল নয় তামিম! আপনি কী আমাকে ছেড়ে দিবেন?”
তামিম সুবহার পাশে বসে তার চোখের পানি মুছতে মুছতে বলে..!
” তুই কী নিঃশ্বাস না নিয়ে বেঁচে থাকতে পারবি?”
” নাহ!”
” তাহলে? আমি তোকে ছাড়া কীভাবে বাঁচবো? ”
আর কোনো কথা মুখ দিয়ে বের হয় না সুবহার! শক্ত করে জাপ্টে ধরে তামিমকে! তামিম ও সুবহার মাথায় হাত বুলাতে থাকে!!

” আমি আপনাকে খুব ভালোবাসি তামিম!”
” আমার থেকে বেশি নয় সকাল! আমার ভালোবাসার পরিধি তুই কখনো পরিমাপ করতে পারবি না!”
তামিম সুবহার গালে আদুরে হাত রাখে!
” তুই জানিস, মেয়ে মানুষ চাইলে কি কি করতে পারে?”
সুবহা মাথা নেড়ে না বুঝায়!
” তোরা মেয়েরা হলি মায়ের জাত! দুনিয়াতে এমন কোনো বাঁধা নেই তোদের আটকাবে রাখবে! তোরা চাইলেই সব করতে পারিস! শুধু নিজের শক্তি বুঝতে দেরি হয় এই যা!”
সুবহা তামিমকে দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে! স্বামী তামিম সরকার মারাত্মক সুন্দর!!

” তামিম!”
” হুমম!”
” আলাবু!”
” আলাবু মোর শয়তান ছেমরি! ”
সুবহাকে শয়তান বলায় সে কিছুটা ক্ষেপে যায়!
” শয়তানের বউ তো শয়তানই হবে!”
” স্বামীকে শয়তান বলোস? জাহান্নামী! ”
” প্রতি শুক্রবারে নামাজ পড়া পীর বাবা রে! শুক্কুর আলি জানি কোথাকার! ”
” সুবহা, আমি কিন্তু রেগে যাচ্ছি! ”
সুবহা উঠে দূরে সরে বসে!
” শুক্কুর আলি!”
” সুবহহহহহা!”
” শুক্কুর আলি! ”

তামিম উঠে সুবহাকে ধরতে যায়! আর সুবহা কোনো রকম ছুটে পালায়! সুবহা তাড়াতাড়ি করে বাইরে চলে আসে! সাথে তামিম ও! নিচে তখন শুধু তানভীর সরকার আর তামিমের পঞ্চ পান্ডব!
সুবহা দৌড়ে তানভীর সরকারের কাছে চলে যায়!
” বাবা বাঁচান! ”
” আম্মাজান আপনি এতো হাঁপাচ্ছেন কেন?”
” ষাঁড় তাড়া করেছে!”
তামিম ও সাথে সাথে নিচে চলে আসে!তানভীর সরকার বুঝতে পারে আসলে ষাঁড়টি কে?
” আপনার ষাঁড়টা দেখতে একটু বেশিই হ্যান্ডসাম!”
তামিম তানভীর সরকারের কথা শুনে বুঝতে পারে সুবহা তাকে ষাঁড় বলেছে!!
” আব্বা, আপনার সামনে আমাকে ষাঁড় বলেছে! আপনার একমাত্র ছেলেকে!”
তানভীর সরকার উঠে দাড়ায়!

” স্বামী_স্ত্রীর বিষয়ে কথা বলা ব্যাড মেনারস! excuse me !”
তানভির সরকার উপরে চলে যেতে থাকে! আর তামিম সুবহার দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকায়! সুবহা দৌড়ে কিচেনে চলে যায়! তামিম ও!
পুরো রান্না ঘরের জিনিস পত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে তারা দু-জন! দেখে মনে হয় তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ হয়েছে!!
দৌড়ানোর এক সময় সুবহা দাড়িয়ে পড়ে! তামিম ও সুবহাকে ধরতে গিয়ে দাড়িয়ে পড়ে! দু’জনেই দাড়িয়ে পড়ে সামনে তাকিয়ে!
আয়েশা সরকার রাগি মূর্তি ধারণ করে তাদের দু-জনের দিকে তাকিয়ে থাকে!
—– ৫ মিনিট পর…

এমপি তামিম সরকার পর্ব ৭৫

” সব তোর জন্য হলো! এতো বড় রান্না ঘর পরিষ্কার করতে হচ্ছে! ”
” আপনি একাই করছেন? কী দরকার ছিলো ষাঁড়ের মতো তাড়া করার?”
” আমার আম্মাজান জীবনে পানির গ্লাস ও উঠিয়ে খাইতে দেয়নি আমাকে! আর আজকে ঝাড়ু দেওয়াচ্ছে! ”
সুবহা রাগি চোখে তাকায় তামিমের দিকে! তারপর জোরে জোরে আয়েশা সরকারকে ডাকতে থাকে!
” মমমমমমাা তামিম সরকার কাজে ফাঁকি দিচ্ছে! ”
” তুই রাতে রুমে আয় তোকে দেখাচ্ছি আমি! ”
” আর কী দেখাবেন? আপনার সবই তো দেখা শেষ! ”
” ছিঃ অশ্লী”ল মাইয়া!”

এমপি তামিম সরকার পর্ব ৭৭

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here