এমপি তামিম সরকার পর্ব ৮৭

এমপি তামিম সরকার পর্ব ৮৭
কাফাতুন নেছা কবিতা

বক্ষস্থলে কারো হাত অনুভব হতেই চোখ খুলে ফেলে তামিম! নিঃশ্বাসটা ও বেশ জোড়েই বের হচ্ছে! কপাল কুঁচকে চোখ ঘুরিয়ে চারপাশটা ভালো মত দেখতে থাকে তামিম! রাত প্রায় শেষের দিকে! তাহলে কী এতোক্ষণ সে কল্পনা করলো?
এ কী ভয়ংকর কল্পনা! আর একটু হলেই তো জান বেরিয়ে আসতো!কল্পনা ও এতো ভয়ংকর হয়? স্বাভাবিক ভাবে নিঃশ্বাস নিতে থাকে তামিম!
কিছু ক্ষণ পর তামিম অনুভব করে তার পিঠ ভিজে যাচ্ছে! সুবহা খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রেখেছে তামিমকে! আর অনবরত কেঁদেই চলছে!
তামিম চোখ বন্ধ করে ফেলে! আর বিরবির করে,

” শয়তান ছেমরি, কল্পনাতে এসে ও আমার ১২ টা বাজাই দিছে!”
তামিম সুবহার হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে! কিন্তু সুবহা ছাড়ে না! সে আরো শক্ত করে ধরে! চোয়াল শক্ত করে সুবহাকে ডাকে তামিম!
” সুবহা….!”
” আমি সকাল, তামিমের সকাল! ”
নিশ্চুপ হয়ে যায় তামিম! বুকের ভিতরের জ’লন্ত আগু’নটা এবার বুঝি নিভলো বলে! এতোক্ষণ ধরে নিজেকে খুব অসহায় লাগছিলো তার! কিন্তু এখন মনে হচ্ছে তার পায়ের তলার মাটিতা শক্ত!

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

” কিন্তু আমি তো ভালোবাসার যোগ্য না! তুই তো ডির্ভোস দিতে চাস আমাকে!”
” দরকার হলে আপনার খাবারে বি’ষ মিশিয়ে খাওয়াবো, রাতে বা’লিশ চা’পা দিয়ে মা’রবো তাও ডির্ভোস দিবো না!”
সুবহার কথা শুনে তামিম বোকা বনে যায়! সে কী তাকে ঠান্ডা মাথায় থ্রেট দিলো? না-কি ভালোবাসা প্রকাশ করলো! কিছুই বুঝতে পারলো না তামিম!
” তাহলে বাড়ি ছেড়ে চলে গেছিলে কেন?”
” আপনিই তো বলেছিলেন যেতে!”
” আমি বললেই যেতে হবে? কোন কথাটা শুনো তুমি আমার? ”
সুবহা চুপ হয়ে যায়! তামিমের অভিমান টা ঠিক কোথায় এটা বুঝতে পারে সে! তামিম রাগের মাথায় চলে যেতে বলেছে দেখেই কি তাকে চলে যেতে হবে?।।

” আমি আপনাকে ছেড়ে আর কোথাও যাবো না তামিম!”
” কিন্তু আমি তো মানুষ ভালো না!”
” আমার এই গু’ন্ডা, মাফি’য়া, গ্যাং’স্টার তামিম সরকারকেই চাই! ”
” বলদ বেডি, এসব গু’ন্ডা, মাফি’য়া,গ্যাং’স্টার তোর স্বামীর পকেটে থাকে!আমি তামিম সরকার! সকলের বাপ!”
“” আচ্ছা দিবো না!”
সুবহার কান্নার পরিমাণ কমে না! সে কাঁদতে কাঁদতেই তামিমের সাথে কথাগুলো বলতে থাকে! তামিম ও একটু ভরসা পায়, তার পরী তাকে ভালোবাসে!
তামিম হাত ধরে সুবহাকে সামনে আনে! চোখের পানি মুছে দেয়! কপালে আদুরে পরশ একে দেয়! সুবহা ও তামিমকে জড়িয়ে ধরে!

” শুধু কী জড়িয়ে ধরবা, চু’ম্মা কী তোমার ম’রা বাপ দিব?”
তামিমের ঝাড়ি শুনে সুবহা পা উঁচু করে তামিমের বাম গালে চু’মু দেয়!
” তামিম!”
” হুম!”
” আমি আপনাকে খুব ভালোবাসি! কিন্তু এতো জোড়ে থাপ্প’ড় মারলেন কেন? একটু ধীরে ও তো মা’রা যায়!”
” বউ শাস’নে না রাখলে মাথায় চ’ড়ে বসে! তাই মাঝে মাঝে আড়ংধোলাই দিতে হয়! আবার ত্যাড়া’মি করলে কানের নিচে পড়বে!”
সুবহা তামিমের পায়ে নিজের পা দিয়ে বা’রি দেয়!

” আহহহ! কিছু কইলেই মা’রে! একদম কা’নের নিচে লাগাবো!”
” শয়তান সরকার! ”
তামিম সুবহার মাথা ধরে তার বুকে লাগিয়ে রাখে! কোনো কথা বলে না! সুবহা চুপচাপ দাড়িয়ে থাকে তামিমকে ধরে!
এতো দিনে সুবহার কাছে পুরো বিষয়টি কাচের মতো স্বচ্ছ হলো! কেন তামিম এতো পোড়াবাড়িতে থাকে! হয়তো প্রধান দিন সুবহাকে এখানে ডেকে আনার কারণ ও এটাই ছিলো তার ভাইকে দেখানো! ভাবি হিসেবে সুবহা চলবে কি-না!

” তামিম! ”
” জ্বি পরী!”
” আপনি কেঁদেছেন? ”
” না!”
” মিথ্যে বলছেন, আপনার চোখ রসগোল্লার মতো লাল!”
” ছেলে মানুষ কাদে না সকাল!”
” কিন্তু তামিম সরকার যে কাদলো?”
সুবহার কথায় তামিম হেসে উঠে! মেয়েটা আসলেই ঘাড় ত্যাড়া ঠিক তার মতোই!
” বুড়ো বয়সে যে কত কাঁদতে হবে তোর জন্য আল্লাহ মাবুদ জানে!”
সুবহা তামিমের বুকে মুখ লুকায়! আসলেই তো সে তামিম সরকারকে কাঁদিয়েই চলেছে! সুবহা মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে সে আর তামিমকে কষ্ট দিবে না! আগলে রাখবে তার শয়তান সরকারকে!

” একটা বউয়ের জন্য শা’লা এতো কষ্ট করতে হয় জীবনে, জিন্দেগীতে আমি বিয়াই করুম না বা*ল! ”
বো’মা সাকিবের কথা শুনে চার পান্ডব একজন আরেক জনের মুখের দিকে তাকায়! আর চোখ দিয়ে ইশারা করে!
” কী সুন্দর মাইয়া রে সাকিবববব?”
” কই কই?”
” শা’লা জাও’ড়া’র ঘড়ে জা’ওড়া! হেতে না-কি কোনো দিন বিয়াই করবো না, আবার মাইয়ার কথা শুনলেই কু’ত্তা পাগল হয়ে যায়! ”
” ভালা হয়ে যায় মাহির! কথায় কথায় আমার ই:জ্জতে হাত দিবি না!”
” তোর আবার ইজ্জ’ত ও আছে?”
সাকিব আর মাহির একজন আরেক’জনের দিকে এমন ভাবে তাকায়, আজকে একজন আরেক জনের মাথা ফাটি’য়ে ছাড়বে!

” শা’লার ভাইরা ফাডা’ফাডি বন্ধ কর, ভাই শুনলে পা’ছার সাল তুলবো!”
কালা মানিকের কথায় সাকিব আর মাহির চুপ হয়ে যায়! কিন্তু ইশারার মাধ্যমে বুঝিয়ে দেয়,একা পেলে দেখে নিবে!
” সুবহা?”
” জ্বী?”
” চল জঙ্গলে যায়! ”
” কেন?”
” মঙ্গল করতে! ”
” কীহহহহ!”
” আমার আর তর সইতাছে! আয় জলদি!”
” আরে ভাই হাত ছাড়েন, ”
” চুপ কর বইন, জলদি আয়!”

তামিম সুবহা একজন আরেক জনের হাত ধরে টানতে থাকে! ঠিক বাঁশ ঝাড়ের মতো! আর অন্য দিকে সাকিবের চোখে আবার ও তাদের এই টানাটানির দৃশ্য পড়ে যায়!
” দেখছোস নি , ভাই ভাবিরে ধইরা রঙ্গমঞ্চ খানায় লইয়া যাইতাছে, সিউর দুই টুক:রা করবো ভাবিরে!”
” ঠিক কইছোস সাকিব চল জলদি!”
মানিক আর সাকিব জলদি সামনের দিকে পা বাড়ায়, কিন্তু তার আগেই মাহির আর রফিক তাদের ধরে ফেলে! আর টাকলা মফিস দু’জনের মাথায় চাটি মা’রে!
” মা’রোস ক্যালা শা’লার ভাই? ”
‘ বাঁশ ঝাড়ের কথা ভুইলা গেছোস?”
” নাহহহ!”
” তো চুপ চাপ থাক!”

সাকিব আর মানিক মফিসের কথার অর্থ বুঝতে পারে! গতবার সাকিবের জন্য তামিমের ১৯/২০ হতে হতে হয়নি! এবার যদি সেম মিস্টেক করে তাহলে আর ছাড়বে না তাদের! তাই তারা চুপচাপ দাড়িয়ে উঁকি মারতে থাকে!
” বাড়ি চলুন তামিম!”
” এতো ধৈর্য আমার নাই!”
” এখন কী ইতিহাসে নাম লেখাতে চাচ্ছেন?”
” কীসের ইতিহাস? ”
” জঙ্গলের ভিতরে কান্ট্রোলেস হয়ে বাস’র সারলো তামিম সরকার! ”
” শা’লার জিন্দেগী! ”

এমপি তামিম সরকার পর্ব ৮৬

খুব জোড়ে জোড়ে হাসতে থাকে সুবহা! আর তামিম মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থাকে তার দিকে! এই একটা মেয়ে তার গোটা দুনিয়া জুড়ে! যার জন্য সে সব করতে পারে!
তামিম সুবহার বাহু ধরে তাকে নিজের কাছে দাঁড় করায়! গালে হাত রাখে সুবহার!
” আমার শুধু তোমাকে চাই সকাল! তোমার নিঃশ্বাস, তোমার ধ্যান, তোমার কথা, তোমার চাহুনি, সব কিছু চাই আমার!”

এমপি তামিম সরকার পর্ব ৮৮

4 COMMENTS

  1. আপু এভাবেই চালিয়ে যাও। আর পরের পার্টটা তাড়াতাড়ি দেও প্লিজ।

  2. As soon as possible next par diba kintu apu …amar to tomar Sathe Kotha bolte Mon chaitese tomar golpo porei haste haste obostha kharap ar Tumi Jani koto hasao manuser Allah jane …

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here