এলিজা পর্ব ৪৬+৪৭+৪৮

এলিজা পর্ব ৪৬+৪৭+৪৮
Dayna

পাখি কিছু বুঝতে পারলো না। শ্রাবন কৌতুহল নিয়ে জিজ্ঞেস করলো, কি হয়েছে এই রিয়াই বা কে? তোকে মিথ্যা কেন বললো।
অপূর্ব কোন উত্তর দিচ্ছে না। চিন্তায় ছাপ নিয়ে ঘাপটি মেরে বসে আছে ‌।
শ্রাবন আর কোন প্রশ্ন করলো না।
শ্রাবন বললো,তোর এখানে থাকার দরকার নেই।বাড়ি ফিরে যা।একটু বিশ্রাম নে। দেখবি ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে।
নিজেদের খেয়াল রাখিস। খাবার টা খেয়ে নিস।বলেই অপূর্ব চলে যায়।
অপূর্বর ভেতরে নতুন করে চিন্তা গ্রা,স করেছে।তখন নার্স মেয়েটা কে ছিলো‌।কেনোই বা ছদ্মবেশে আসলো‌।তবে কি এও এই মৃ,ত্যু খেলার সাথে জড়িত।

অপূর্ব এসব ভাবতে ভাবতে ডাঃ ইব্রাহিম এর খোঁজ করে‌। একজন নার্স কে জিজ্ঞেস করলো।নার্সটি উত্তরে বললো,উনি তো আজকে তারাতাড়ি বাড়ি ফিরেছেন।শুনেছি তার মেয়ে অসুস্থ।
অপূর্ব মনস্থির করলো ডঃ ইব্রাহিম এর বাড়িতে যাবে।
তার সাথে যে কথা বলতেই হবে।চীপস ডুপিয়ালির সাথে তার কিসের সম্পর্ক।
অপূর্ব পুলিশ গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পরে।
রাত ঠিক ১১ টা—
জয়া জাহাঙ্গীর এর কথা ভাবতে ভাবতে কিছুক্ষণ এর মধ্যে ই হাজির হয় জাহাঙ্গীর।
খুব আতংকিত জাহাঙ্গীর।
জয়া প্রশ্ন করলো। কোথায় ছিলে জাহাঙ্গীর কোন উত্তর দিলো না।
জয়াকে উপেক্ষা করে ভেতরে চলে আসে।
জয়া দ্বিতীয় বার জিজ্ঞেস করলো, কি হয়েছে আজকাল সকলকে এড়িয়ে যাও কেন? কিসের চিন্তা এত তোমার মধ্যে?

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

জাহাঙ্গীর কোন প্রশ্নের উত্তর দিলো না।
জয়া ঠিক আন্দাজ করতে পারলো কিছু হয়েছে। কিন্তু সে বলছে না।
জাহাঙ্গীর কাপড় চোপড় পাল্টে নেয়।হাত মুখ ধুয়ে
হাতে একটা সিগার নিয়ে চেয়ারে বসে পরে।
জয়া জাহাঙ্গীর কে অপলকে দেখছে,কত হাসিখুশি ছিল মানুষ টা। সারাদিন সবাইকে মাতিয়ে রাখতো। হঠাৎ মানুষ টা কতটা চুপ হয়ে গেলো‌। কি যেন কি ভাবছে।তবে সাধারণ কোন বিষয় নয়। জয়া খাটের এক কোনে বসে আছে।
জাহাঙ্গীর বারান্দার দিক মুখ ঘুরিয়ে বসে আছে। সিগারের ধোঁয়া বাতাশে এদিকেই আসছে।
জয়া শান্ত গলায় প্রশ্ন করলো ‌, আমি নিশ্চিত নই, তবে আমি আপনার ভাবনাকে কিছুটা অনুভব করতে পারি।হয়তো আপনি ফেলে আশা অতীতের কথা ভাবছেন।
যেটা করেছিলেন সেটা অন্যায়।
জয়া মাঝপথে কথা থামিয়ে ভারী একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,সেদিন সেটা না করলে হয়তো …….
বলতেই জাহাঙ্গীর উত্তেজিত হয়ে দাঁড়িয়ে যায়।
জয়া কথা থামিয়ে দেয়।

জাহাঙ্গীর অহংকারী স্বরে বলল, দেয়ালের ও কান আছে‌‌। এসব নিয়ে ভাবতে বারন করেছি না।
জয়া থম মেরে চুপ হয়ে যায়।
জয়া প্রতিদিন ঘুমানোর আগে অর্পা কে একনজর দেখে ঘুমায়।
জয়া ঘরের বাহিরে আসবে ঠিক তখনি দেখে দরজা বাহির‌ থেকে আটকানো । কিছুটা অবাক হয়ে যায় কে আটকালো।নাকি বাহির থেকে কোনভাবেই লক হয়ে গেছে। জয়া বাহিরে আশার চেষ্টা করলো না।রাত অনেক হয়েছে তাই ভেবে জয়া শুয়ে পরে। জাহাঙ্গীর হাতের সিগার টা ফেলে জয়ার পাশের এসে সুয়ে পরে।
“”অপূর্ব গাড়ি নিয়ে ডাঃ ইব্রাহিম এর বাড়িতে চলে আসে। অপূর্ব দরজায় কড়া নাড়তেই দরজা খুলে দেয় তার স্ত্রী। অপূর্ব বলল, ডক্তার কি বাড়িতে আছেন?
ডাক্তারের স্ত্রী সাধারণ ভাবে বললো,উনি তো আজ দুদিন ধরে ‌বাড়ি ফিরেনি । অপূর্ব আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞেস করলো, কোথায় সে?

সে-তো মেডিকেল। রোগী অনেক তাই আসতে পারেনি। আপনি পিজি হাসপাতাল যান তাহলে ই পাবেন।
অপূর্ব তার কথা শুনে থমকে যায়।ডাঃ ইব্রাহিম কেন এরকম করছে।
অপূর্বর মাথা ধরে যায়। ভেতরে জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে।
অর্পা বিছানার এপাশ ওপাশ করছে‌। প্রতিদিন মা ঘুমানোর আগে একবার আমায় দেখে যায়।আজ কেন আসলো না। চিন্তা হলেও উপেক্ষা করে‌।
অর্পার প্রচুর পানির পিপাসা লাগে।জগের দিকে তাকিয়ে দেখলো জগে পানি নেই।রাত অনেক হয়েছে কাউকে ডাকতেও ইচ্ছা করছে না।পানিও খেতে হবে। তৎক্ষণাৎ অর্পা পানির জগ হাতে নিয়ে নিচে নামে। বাড়িটাতে জন্ম,ছোট থেকে বড় হওয়া।তবে কেমন জানি আজ খুব অচেনা লাগছে‌।পূরো বাড়িটা নিস্তব্ধ। অর্পার ভিষন ভয় ও হচ্ছে। চারদিকে পরোখ করে ভয়কে উপেক্ষা করে রান্না ঘরে গিয়ে পানি নেয়।

পানি নিয়ে উপরে উঠবে ঠিক তখনি পেছন থেকে কারো হাটার আওয়াজ পায়।অর্পা ভয়ে চাপসে যায়।এত রাতে কে বাড়ির ভেতর হাটছে। অর্পা পেছনের দিকে এগোতো থাকে। পরিস্কার শুনতে পেলো,হাটার আওয়াজ টা বা দিক থেকে আসছে‌‌।অর্পা বার বার ঢেকুর গিলতে থাকে। অর্পা কান খাড়া করে শুনতে পেলো কোন মানুষের হাঁটার আওয়াজ নয়।কোন কাঠের পুতুল এর হাটার আওয়াজ। অর্পার পূরো শরীর কেঁপে উঠে।
অর্পা পেছনের দিক থেকেই উপরে যেতে থাকে। হঠাৎ দেখতে পায় পেছন থেকে একটা কাঠের পুতুল নেমে আসছে হাতে ছু,রি নিয়ে।অর্পা ভয়ে ছিটকে পড়ে যায়।পানির জগটা পরে যায়।অর্পা ভয়ে কথা বলতে পারছে না কাউকে ডাকতে পারছে না ‌‌। অর্পা।

বসা অবস্থায় পেছনে যেতে থাকে‌। কাঠের পুতুল টি অদ্ভুত ভাবে হেঁটে অর্পার দিকে আসছে।কাঠের পুতুল টির হাতে একটা ছু,রি।সেটা দেখে অর্পা আরো আতংকিত হয়ে যায়। বুকের ভেতর তোলপাড় শুরু হয়ে যায়।অর্পা বুঝতে পেরেছে। পুতুল টি কেউ রিমোর্ট দিয়ে কন্ট্রোল করছে। এদিক সেদিক দেখছে তবে কাউকে দেখছে না। অর্পা পেছনে এগোচ্ছে,কাপা কন্ঠে বলছে আমাকে মেরো না,
পুতুল টি ধীরে ধীরে অর্পার দিকে এগোতে থাকলে অর্পা মনস্থির করে। দরজা খুলে বাহিরে দৌড় দিবে।
অর্পা কাপারত অবস্থায় দরজা খুলে বাহিরে যেতেই কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে পরে যায়। অর্পা ভয়ার্ত দৃষ্টিতে পেছনে দেখলে দেখে অপূর্ব। অপূর্ব অর্পাকে বুকে জড়িয়ে ধরে।
অবাক ভঙ্গিতে বললো,তুই এত রাতে এখানে কি করছিস?ভয়ে কাপছিস কেন? কি হয়েছে বল।
অর্পা , জ্বল জ্বল চোখে বললো,ঐ পুতুল টা আমায় মে,রে ফেলবে।
অপূর্ব অবাক হয়।এত রাতে অর্পা একা বাকিরা কোথায়। অর্পা ভেতরে আসতে ভয় পেলেও অপূর্ব জোড় করে নিয়ে আসে।

অপূর্ব চারদিক পরোখ করলে দেখে, কিছু নেই। সবকিছু ঠিকঠাক।
অর্পা আতং,কিত হয়ে
চারপাশ টা দেখছে কোথাও তো কিছু নেই।
এত কম সময় পুতুল টি গেলো কোথায়।আর ওটা কন্ট্রোল কে করছিলো?-
অপূর্ব এদিক সেদিক ভালো করে পরোখ করলো ।কোথাও কিছু নেই। শুধু জাগটা নিচে পরে আছে‌। অপূর্ব নিশ্চিত যে অর্পা দুঃস্বপ্ন দেখেছে। বর্ষা কে হারিয়ে ওর এই অবস্থা। হয়তো ওর ঘোর কেটে উঠতে পারেনি।
এসব ভাবতে ভাবতে অর্পাকে নিয়ে
নিজের ঘরে গিয়ে দেখে দরজা বাহির থেকে দেয়া। অপূর্ব চমকে ওঠে।এলিজার ঘর বাহির থেকে দেয়া কেন। অপূর্ব চট করে দরজাটা খুলতেই এলিজা অপূর্বর বুকে ঝাপটে পরে।
অপূর্ব আতংকিত হয়ে যায়।
কাপা কন্ঠে বললো,কি হয়েছে? দরজা বাহির থেকে কে দিয়েছে?
এলিজা অস্থির ভঙিতে বললো, একটা কাঠের পুতুল এসেছিল,আমাকে মারতে চেয়েছে।এই দেখুন হাত থেকে র’ক্ত বের হচ্ছে। অপূর্ব অবাক হয়ে যায়।এলিজার হাতে সত্যিই কাটা দাগ।তবে অর্পা সত্যিই বলেছে।

পাখিদের কিচিরমিচির আওয়াজ। সূর্যের ঝলক।
শীতল হাওয়া। আকাশে কিছুটা মেঘ আছে। সকালের সূর্যের আলো এলিজার চোখে পরতেই ঘুম ভেঙে যায়।
ঘুম ভাঙতেই দেখে অপূর্বর বুকের উপর ‌সুয়ে আছে। অপূর্বর বুক ছাড়া এলিজা-ঘুমোতে পারে না।চুল গুলো এলোমেলো। অপূর্ব তার পোশাক ও পাল্টায়নি‌। রাতে সেই অবস্থায় ঘুমিয়ে পরে।কেউ এলিজাকে আঘাত করতে চায়।সেই চিন্তায় অপূর্ব বিষন্ন হয়ে যায়।কে বা কারা এলিজার ক্ষতি করতে চায় ‌। সেসব ভাবতে ভাবতে অপূর্ব এলিজা দু’জনেই মনের অজান্তে ঘুমিয়ে পরে।
এলিজা ঘুম থেকে উঠতেই , অপূর্বর বোতামে চুল আটকে যায়।
এলিজা চুল ছুটাতে গেলে ব্যার্থ হয়। কিছুক্ষণ চুল গুলো ছুটাতে চাইলে, অপূর্ব ঘুম রত অবস্থায় বলে উঠলো, আমাকে ছেড়ে যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে যাচ্ছ।এত তারা কিসের ম্যাডাম।
এলিজা মৃদু হেসে বললো, তারমানে আপনি জেগে আছেন। এতক্ষণ ধরে আমি চুল গুলো ছুটানোর চেষ্টা করছি আর আপনি দেখেছিলেন।

অপূর্ব মৃদু হেসে বললো, ভালো ই লাগছিলো।
চুল গুলো অপূর্ব বোতাম থেকে বের করতে করতে বললো, ম্যাডাম আপনাকে নিয়ে আমার চিন্তা হচ্ছে।কাল যা হলো। শুনলাম এর আগেও একদিন এমন হয়েছে খুব চিন্তা হচ্ছে।
এলিজা চুল গুলো খোঁপা করতে করতে বললো, আমার কোন শত্রু নেই।আমি তো কারো ক্ষতি করেনি।তবে তারা, কারা যারা আমার ক্ষতি করতে চায়।
অপূর্ব বলল,হতে পারে আমার কোন শত্রু , অনেক আসামি আছে যারা পুলিশ দের উপর প্রতিশোধ নিতে চায়।তারাই হবে। এই নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না। তুমি ভয় পেও না।
এলিজা অপূর্বর দিকে আর চোঁখে তাকিয়ে ভেজা কন্ঠে বললো,আমি আমার মৃত্যুকে ভয় পাইনা। আপনার বুকে মাথা রেখে মরতেও রাজি।

অপূর্ব এলিজাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললো ،, আমি থাকতে আমার ম্যাডামের কিছু হবে না।
এলিজা অপূর্বর দিকে ফিরে বলল, আমাকে হাসপাতাল যেতে হবে। শ্রাবন গতকাল থেকে সেখানে।যদি পাখির অবস্থা আগের থেকে ভালো হয় তবে বাড়িতে নিয়ে আসবো।
অপূর্ব মৃদু হেসে বললো,পাখিকে ওর বাড়িতেই নিয়ে আসবে এখন থেকে এটাই ওর বাড়ি।
এলিজা গোসলে চলে যায়। অপূর্ব বিছানার এপাস ওপাস করছে। তারমধ্যে ভয় ঢুকে গেছে।কে তার এলিজাকে মার’তে চায়।এলিজার সামনে সাধারণ আচরণ করলেও ভেতরে ভেতরে চিন্তায় পুড়ে যাচ্ছে।
মনোরা সকালে অনেক কিছু রান্না করেছে। আজকে পাখিকে বাড়িতে আনা হবে।
অর্পা ঘুমোচ্ছে।জয়া আতং’কিত। গতকাল রাতে কে দরজা বাহির থেকে আটকেছে। বাড়ির মেয়েদের উপর একটা কাঠের পুতুল হামলা করেছে।কি হচ্ছে এসব চিন্তায় তার মাথা ফেটে যাচ্ছে।
এলিজা রান্না ঘরে অপূর্ব কে খাবার
দিচ্ছে।তখন জাহাঙ্গীর এসে অপূর্বর পাশে বসে।

এলিজা অপূর্ব কে খাবার দিয়ে জাহাঙ্গীর কে খাবার দিতে যাবে ঠিক তখন ই জাহাঙ্গীর কর্কট মেজাজে বলে উঠলো,আমাকে তোমার খাবার দিতে হবে না। তোমার হাতে খেতে চাইনা ।জয়াকে ডেকে নিয়ে এসো।
অপূর্ব অবাক হয়। সেদিন ই তো বাবা বললো এলিজাকে মেনে নিয়েছে। তবে আজ আবার এরকম করছে কেন।
অপূর্ব উপেক্ষা করে। জাহাঙ্গীর এর রুপ বদলাতে সময় লাগে না তা সে জানে।
তবুও জবাব না দিলেই নয়,
অপূর্ব বলল, বাড়ির বউয়ের সাথে এরকম আচরণ করাটা অন্যায়।এলিজা ওর সবকিছু ছেড়ে চলে আসছে শুধু মাত্র আমাকে ভালোবেসে। এলিজার দুনিয়াতে কেউ বেঁচে নেই। আমাদের উচিত ওর সেই শুন্যস্থান টা পূরন করার।
এলিজা অপূর্বর কথা শুনে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।
রান্নাঘর থেকে মনোরা উকি মেরে দেখে।যেই অপূর্ব কোনদিন বাবার মুখের কথা বলেনি সে আজ বউয়ের জন্য বাবার মুখের উপর কথা বলছে।

এলিজা কিছু না বলে রান্না ঘরে চলে যায়। জাহাঙ্গীর অপূর্বর কথায় ভ্রুক্ষেপ ই করলো না।
খাবার না খেয়ে উপরে চলে যায়।অপূর্ব রান্না ঘরে যায়।
এলিজা উল্টো দিকে ঘুরে পাখির জন্য কিছু খাবার তৈরি করছে‌।
অপূর্ব এলিজাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে।
অপূর্ব শান্ত স্বরে বলল, বাবার কথায় কিছু মনে করো না।উনি এমন ই। বাবার হয়ে আমি ক্ষমা চাইছি।
এলিজা মৃদু হেসে বললো, সংসারের সবার ধারালো কথা উপেক্ষা করা যায়।যদি আপনার মত স্বামী থাকে।
অপূর্ব মৃদু হেসে বললো,আমি সবসময়, সমস্ত পরিস্থিতিতে আপনার সাথে আছি ম্যাডাম।
তৈরি হও শ্রাবন পাখি আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
-পিজি হাসপাতাল-

-যাকে দেখলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায় সেই তো প্রিয় মানুষ।আমি আমার প্রিয় মানুষ টাকে হারিয়েও ফিরে পেয়েছি।কতটা যন্ত্রনা সহ্য করতে হয়েছে আমাকে।প্রতিটা মুহূর্তে ভাবতাম সে যদি ফিরে আসতো।সেই আমার পাখি ফিরে এসেছে। হারাতে চাই না আর।
এসব ভাবতে ভাবতে শ্রাবন হাসপাতাল থেকে বাহিরে বের হয়। এদিক ওদিক পরোখ করছে। কিছুদূরে দেখতে পায়। একজন ফুল বিক্রেতা ভ্যানে ফুল বিক্রি করছে। পাখির ফুল ভিষন পছন্দ। শ্রাবন পাখির জন্য ফুল কিনে নেয়।
একজন নার্স পাখির কাছে বসে আছে। কিছুক্ষণ পর ডাক্তার এসে চেকআপ করবে।উনি রিলিজ করলে পাখিকে বাড়ি নিয়ে যেতে পারবে।
পাখি মেডিকেলের পোষাক পরে,দু পাশে বেনুনি করে ক্লান্ত শরীরে বসে আছে।
নার্স এটা সেটা প্রশ্ন করছে।
তৎক্ষণাৎ হাজির হয় শ্রাবন
হাতে ফুল নিয়ে।
পিচ্চি বেয়ান তোমার জন্য গোলাপ ফুল এনেছি। তোমার পছন্দের।

পাখি মৃদু হেসে বললো,
আমার গোলাপ পছন্দ সেটা আপনার মনে আছে?
শ্রাবন বেডের উপর বসে বলল, তোমার বলা প্রতিটি অক্ষর আমার মনে আছে।আর তোমার পছন্দ মনে থাকবে না।
শ্রাবন একটা ফুল পাখির চুলে গেথে দেয়।
পাখি ভ্রু কুঁচকে বললো, ফুল গাছে সুন্দর। আমার চুলে তো একদম ই না।
শ্রাবন মৃদু হেসে বললো,
সবার কাছে ফুল গাছে সুন্দর। কিন্তু আমার কাছে তোমার চুলে।
শ্রাবন ফুল গুলো পাখির কাছে দিয়ে অমৃদু হাঁসি দিয়ে বললো, আমার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর ফুল”আমার পাখি।

তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে হাজির হয় অপূর্ব,এলিজা।
শ্রাবন উঠে দাড়ায়।
এলিজা পাখির কাছে গিয়ে বসে। পাখির মাথায় হাত বুলিয়ে বললো, আমার পাখির কিছু হবে না।আমরা আছিতো তাই না।
পাখি কিছু বলছে না।চোখ জ্বল জ্বল করছে।
এলিজা ব্যাগ থেকে খাবারের বাটি বের করে।
স্যুপ বানিয়ে এনেছে।
পাখি কে খাওয়াতে খাওয়াতে কাপা কন্ঠে বললো, তুই এবার পুরোপুরি ঠিক হলে, আমরা একসাথে সিনেমা দেখবো।তোকে এই শহর ঘুরিয়ে দেখাবো।
অপূর্ব হাসপাতালে নিয়ে আসা জিনিস গুলো গুছিয়ে নিচ্ছে।
অপূর্ব মৃদু হেসে শ্রাবন কে উদ্দেশ্য করে বললো, তোর ভালোবাসার জোড় অনেক।পাখিকে সোয়া থেকে উঠিয়ে বসিয়ে দিলে।

এলিজা আওয়াজ করে হেসে দেয়। শ্রাবন মৃদু হেসে হাতটা মুখের উপর দেয়।
তৎক্ষণাৎ উপস্থিত হয়,ডাক্তার। তবে আগের ডাক্তার নন। নতুন একজন জোওয়ান ডাক্তার।
সাথে একজন নার্স।
পাখির সমস্ত রিপোর্ট দেখে,পাখির শরীরে স্পর্শ করে,পাল্স,চোখ,শ্বাসরোধ পর্যবেক্ষন করছে‌।
শ্রাবন তা দেখে অপূর্বর কানের কাছে ফিসফিস করে বলে উঠলো, এত দেখার কি আছে!দেখ, কিভাবে শরীরে হাত দিচ্ছে ‌।
অপূর্ব মুখে হাত দিয়ে মৃদু হেসে বললো, হিংসে হচ্ছে!
রোগী এখন অনেক টা সুস্থ।

আজকে ই চাইলে বাড়ি নিয়ে যেতে পারেন।
একজন আমার সাথে আসুন।বলেই চলে যান ডাক্তার। সাথে অপূর্ব ও শ্রাবন যায়।
ডাক্তারের চেম্বারে গেলে,
শ্রাবন কাপা কন্ঠে প্রশ্ন করে , পাখি ঠিক হয়ে যাবে তো!!!
ডাক্তার টেবিলের দিক দৃষ্টি স্থাপন করে বললো, দেখুন এই রোগ তো সেরে ওঠার নয়।তবে হয়তো হাসিখুশি থাকলে কিছুদিন বেশি ………
বলেই থেমে যায়।
শ্রাবন এর মুখে কালো ছায়া নেমে আসে‌। ভেতরে ভেতরে ভেঙে চুরে যাচ্ছে‌‌।

এলিজা এনজিওর কাজে চলে গেছে।জয়া অর্পা সবাই পাখির কাছে‌। শরীরের কি অবস্থা,এখন কেমন আছে ‌, নানান কথায় মশগুল। মমতাজ একটু দূরে বসে আছে। পাখি অন্য কাউকে বিয়ে করে নিয়েছে শুনে পাখিকে কত অভি’শাপ দিলো‌। তার ছেলের কষ্ট হয় বলে‌।এখন সব সত্যি জানার পর,পাখি ফিরে এসেছে এটাও তার ভালো লাগছে না। চোখ ভ্রু কুঁচকে বার বার অন্য দৃষ্টিতে পাখি কে দেখছে।
অপূর্ব আজ থানাতে যায়নি। পৃথিবীতে মা বাবা মানে দুনিয়াতে বেঁচে থাকা অবস্থায় জান্নাত পাওয়া।
সফল হওয়ার জন্য মা বাবার দোয়া অতি প্রয়োজনীয়।

তাদের ঋণ কখনো সোধ করা যাবে না। বাবার অনেক আদরের ছেলে আমি।কখনো তাদের সাথে উচ্চ স্বরে কথা বলি না। কিন্তু আজ বাবাকে কিছু কথা বলায় বুকের ভেতর কেমন চাপ চাপ বেথা হচ্ছে।
বাবার কাছে একবার মাফ চাওয়া উচিত।এসব ভাবতে ভাবতে অপূর্ব জাহাঙ্গীর এর ঘরের উদ্দেশ্যে যায়।
জাহাঙ্গীর বারান্দায় বসে আছে ‌। চেয়ারে বসে দোল খাচ্ছে ‌। হাতে একটা সিগার।
অপূর্ব দরজার বাহিরে দাড়িয়ে আছে।যাবে কি যাবে না ভাবতে ভাবতে,ভেজা কন্ঠে বললো,বাবা আসবো!
জাহাঙ্গীর মেরুদন্ড সোজা করে বসে।আড় চোখে পেছনে একবার দেখে হাত ইশারায় বললো আসতে।
অপূর্ব পেছনে দাঁড়িয়ে আছে। জাহাঙ্গীর বলল, দাড়িয়ে কেন বোস।
অপূর্ব খাটের এক কোনেতে বসলো। জাহাঙ্গীর সিগার টা এক পাশে রেখে।
মৃদু হেসে বললো, সকালে ওভাবে কথা বলার পর অনুশোচনা হচ্ছে!
অপূর্ব কিছু বললো না।

জাহাঙ্গীর ভেজা কন্ঠে বললো, জানিস খোকা যখন তুই খুব ছোট তখন থেকে তোকে নিয়ে তোর মায়ের সাথে আমার ঝগড়া হতো।
আমি তোর মাকে তোর কাছে আসতেই ল
দিতাম না ‌। শুধু বলতাম ছেলেটা আমার ‌। আমি নিজ হাতে তোকে মানুষ করবো।তোকে তোর মায়ের মতই আমি লালন করতাম।খাওয়াতাম, খেলা করতাম, খুনসুটি করতাম। আর তোর মা বলতো, ছেলে পেয়ে সবাইকে ভুলে যাচ্ছ ‌
জাহাঙ্গীর কথা থামিয়ে হাতের উল্টো দিক দিয়ে চোখ মুছে।
অপূর্ব অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।কত কর্কট মেজাজের মানুষ সে কি না নিস্তেজ হয়ে আছে।
অপূর্বর খটকা লাগলো।কারন, কিছু বলতে চেয়েও জাহাঙ্গীর থেমে গেছে।
অপূর্ব ভাবনা উপেক্ষা করে কাপা কন্ঠে বললো, বাবা সকালে ওভাবে কথা বলার জন্য….
অপূর্ব থম মেরে থেমে যায়।

জাহাঙ্গীর অপূর্বর দিকে ঘুরে ,হাত দুটো বাড়িয়ে জ্বল জ্বল চোখে বললো আয় বুকে আয়।
অপূর্ব জ্বল জ্বল চোখে জাহাঙ্গীর কে জড়িয়ে ধরে।
জাহাঙ্গীর কাপা কন্ঠে বললো ,আমরা বাবারা কখনো সন্তানের উপর রাগ করে থাকি না।
জয়া অর্পা সবাই পাখির কাছে। মনোরা রান্না করছে।
অপূর্ব শ্রাবন কে খুঁজতে শ্রাবণের ঘরে যায়। সেখানে না পেয়ে ছাঁদে যায় সেখানেও নেই।
দ্রুত পায়ে হেঁটে নিচে আসলে দেখে শ্রাবন রান্না ঘরে। অপূর্ব অভাক হয়‌।
শ্রাবন রান্না করছে। গুনগুন করে গান গাইছে।মনোরা পাশ থেকে বললো, ছোটদাদা আপনি সরেন আমি বানাই দিতেছি।

শ্রাবন অহংকারী স্বরে বলল,নো, আমার পাখির খাবার আমি ই বানাবো।
অপূর্ব রান্না ঘরের দরজার সাথে হেলান দিয়ে দেখছে আর মিটিমিটি হাসছে।
অপূর্ব গলায় কাশি দিয়ে বললো, আমি বাড়ির মহিলাদের হাতের রান্না খেতে খেতে বোর হয়ে গেছি।যদি কেউ একটু খাবার বানিয়ে দিতো।
শ্রাবন চোখ দুটো বড় করে আমতা আমতা করে বলল, আরে ভাই মজা নিসনা।বউমনি বাড়ি নেই তাই আমি তার ভূমিকা পালন করছি।
অপূর্ব মৃদু হেসে বললো,
বউমনির ভূমিকা পালন করার জন্য তো অনেকেই ছিলো। এত লজ্জা পাচ্ছিস কেন।
অপূর্ব উঁকি মেরে বললো,কি রান্না করছিস দেখি! ও সুপ।
তা কি কি দিয়েছিস সুপে! হলুদ মরিচ আর কি! ঐদিকে লঙ্কা আছে ওটাও দিস।
পেছন থেকে মনোরা হেসে উঠে।

অর্পা পাখিকে তাদের ছোটবেলার ছবি দেখাচ্ছে।পূরানো এ্যালবাম। ভালো দেখা যাচ্ছে না। অর্পা পাখির সাথে এটা সেটা বলছে তৎকালীন ঘরে উপস্থিত হয় শ্রাবন।হাতে সুপের বাটি নিয়ে। শ্রাবন পাখির পাশে গিয়ে বসে।পাখি কিছুটা দূরে সরে যায়।
শ্রাবন মৃদু হেসে বললো, কতদিন আর দূরে সরবে। শিঘ্রই একদম কাছে নিয়ে আসবো।
শ্রাবন পাখিকে সুপ টা খাওয়া তে চাইলে পাখি নাকচ করে ‌।
শ্রাবন মৃদু হেসে বললো,আমি নিজের হাতে বানিয়েছি। কেমন হয়েছে জানি না ‌।আগে কখনো রান্না করেনি। তাছাড়া তোমার দুলাভাই রান্নায় বা হাত দিয়েছে। খারাপ হতেও পারে।
পাখি আওয়াজ করে হেসে উঠে।
শ্রাবন অপলকে দেখলো।
শ্রাবন রান্না করেছে শুনে।পাখি সূপ টা খেয়ে নেয়।
শ্রাবন খেয়াল করলো পাখির চুল গুলো উষ্কখুস্ক। এলোমেলো হয়ে আছে।
ঘরের এদিক সেদিক পরোখ করে অর্পা কে বললো, চিরুনি কোথায়?
অর্পা হাতের ইশারায় দেখিয়ে দেয়।
শ্রাবন চিরুনি হাতে নিয়ে
বলে উঠলো, খুলে ফেলো।
পাখি চমকে ওঠে।
আরে চুল খুলতে বলেছি।

পাখি ইতস্তত বোধ করে বললো, বাড়িতে অনেকে আছে। দেখবে তারা।
শ্রাবণ শান্ত স্বরে বলল, আমার বউয়ের চুল আমি বাধবো।তাতে অন্যর কি।
চুল টা খুলো বলছি। শ্রাবন বাধ্য ছেলে যা বলবে তা না করা পর্যন্ত থামবে না।
শ্রাবন আনমনে চুল আঁচড়ে দিচ্ছে।
অর্পা এ্যালবাম হাতে হা করে তাকিয়ে আছে।
মমতাজ দরজার ওপাশ থেকে শ্রাবণের কার্যকলাপ পরোখ করছে। বিড়বিড় করে বললো,
এই মেয়েটা আমার ছেলের মাথা খেয়ে নিচ্ছে‌।বস করে নিয়েছে আমার ছেলেকে।এই বস আমাকে কাটাতে হবে।
শ্রাবন ভাবনারত অবস্থায় পাখি কে বললো, আচ্ছা বেনুনি কিভাবে করে? চুলকে কয় খন্ড করবো? অর্পা পাখি দুজনেই হেসে উঠে। পাখি চুল গুলো সামনে এনে।কিছুটা বেনুনি করতে করতে বললো, এভাবে বাধদে হয়।
শ্রাবন পূরো চুলটা বেঁধে দেয়।
শ্রাবন পাখিকে বলল, চলো ছাঁদে যাবো।
পাখি : কেন?

চলোই না। একসাথে তারা গুনবো।
এলিজা বাড়ি ফিরেছে।
পাখি অসুস্থ থাকায় তারাতাড়ি চলে এসেছে।
রাত হয়ে যায়। রাত প্রাই ৯ টা নাগাদ—–
ল্যান্থলাইনে ফোনের আওয়াজ।
অপূর্ব ফোন টা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে ডিসি সাহেব বললো, অপূর্ব থানাতে এসো দরকার আছে।
অপূর্ব সিভিল পোশাকে ই বেড়িয়ে পরে।
অপূর্ব থানাতে উপস্থিত হলে দেখে সমস্ত অফিসার রা একসাথে আলাপ আলোচনা করছে। অপূর্ব কিছুটা হতভম্ব হয়।ডিসি সাহেব বললো,আরে অপূর্ব এসো।
অপুর্ব আতংক কন্ঠে প্রশ্ন করলো, স্যার কিছু হয়েছে!
ডিসি সাহেব বললো, ঘাবরাচ্ছ কেন,কিছু হয়নি।
তোমার জন্য সু খবর আছে।

অপূর্ব চোখ বড় করে বললো। কিসের সু খবর?
তোমার প্রোমোশন হয়েছে।
তুমি এত বছর সৎ ভাবে দায়িত্ব পালন করেছো।নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাধারণ জনগণের পাশে থেকেছো। তাই আগামীকাল আমরা সবাই মিলে পার্টির আয়োজন করেছি।সেখানে তুমি তোমার পরিবার সহ উপস্থিত থাকবে।
অপূর্ব খুশীতে আপ্লুত হয়।
একে একে সবাই এসে অপূর্ব কে অভিনন্দন জানায়।
সব শেষে আসলো রুমা। রুমার স্বভাব একটু অন্য রকম। অপূর্বকে দেখলেই তার সাথে কোন না কোন বাহানায় কথা বলবেই।

রুমা হাত বাড়িয়ে দেয় বললো, অভিনন্দন স্যার, অপূর্ব ইতস্তত বোধ করেও হাত বাড়িয়ে ধন্যবাদ জানায়।
অপূর্ব খেয়াল করলো রুমা হাতটা ধরেই রেখেছে।
অপূর্ব হেসে বললো, হাতটা ছাড়ুন এবার যেতে হবে তো।
রুমা চট করে হাত টা ছেড়ে দেয়।
অপূর্ব বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
হঠাৎ দেখলো হিমেল কোথাও যাচ্ছে। অপূর্ব অবাক হয়। হিমেল এর খবর নেই অনেক দিন থেকে।বলা হয়েছে টুরে গেছে। কিন্তু ওতো ঢাকাতেই আছে।
তৎক্ষণাৎ অপূর্ব খেয়াল করলে দেখে ,একটা মটরসাইকেলে করে হিমেল তিলকনগর এর উদ্দেশ্য যাচ্ছে। অপূর্বর খটকা লাগলো।এত রাতে কোথায় যাচ্ছে।
অপূর্বর সন্দেহ হওয়াতে অনুসরণ শুরু করে।
অপূর্ব, হিমেল দু’জনের দূরুত্ব অনেক।
মোটরসাইকেল রেখে হিমেল এবং ,সাথে থাকা অচেনা লোকটি হাঁটতে শুরু করে।
অপূর্ব ও পেছন নেয়।

চারপাশ নিস্তব্ধ। শেয়াল ডাকার আওয়াজ ‌। শীতল হাওয়া বইছে। কোথাও থেকে কালো ধোঁয়া আসছে।
অপূর্ব ঘামছে। বুক ধরফর করছে।কোথায় যাচ্ছে এরা।
অপূর্ব খেয়াল করলো ঝোপঝাড়ে কেউ আছে।
ঝোপঝাড় তার হাতের বা দিকে খুব কাছে। হিমেল অনেক দূরে।
ঝোপঝারের দিকে এগোবে না সামনে তা বুঝে ওঠার আগেই ঝোপঝাড় থেকে একটা রক্তা,ক্ত লোক অপূর্বর দিকে দৌড়ে আসে।

লোকটার অবস্থা নৃশং,স। অপূর্ব ভয়ে চাপসে যায়। নিজের চোখের সামনে এরকম একটা মানুষ,দেখে মনে হয় কোন মৃ,ত মানুষ কবর থেকে উঠে এসেছে।
অপূর্ব লোকটিকে আঝাপটা দিয়ে ধরে‌‌।
কি হয়েছে, এরকম অবস্থা কারা করেছে,কোথা থেকে এসেছেন?
অপূর্ব এসব জিজ্ঞেস করলে,লোকটি কোন জবাব দিতে পারলো না।কথা বলার মত অবস্থায় নেই। কিন্তু তার হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে সে কিছু বলতে চায়।

এলিজা পর্ব ৪৩+৪৪+৪৫

লোকটি কাপারত অবস্থায় তার প্যান্টের পকেট থেকে কিছু একটা বের করে অপূর্বর হাতে দেয়।
অপূর্ব হাতে নিয়ে দেখতে চাইলে দেখলো একটি স্বর্নের কয়েন তবে কোন টাকার কয়েন নয়।
লোকটি কাঁপতে কাঁপতে বললো, নকশা।
আর কিছু বলে ওঠার আগেই অপূর্বর মাথায় কেউ পেছন থেকে আঘাত করে। তৎক্ষণাৎ অপূর্ব মাটিতে লুটিয়ে পরে।
পরদিন জ্ঞান ফিরতে দেখে অপূর্ব হসপিটাল। সাথে গোলাকার সবাই। বা দিকে ডাঃ ইব্রাহিম……

এলিজা পর্ব ৪৯+৫০