এলিজা পর্ব ৬২+৬৩

এলিজা পর্ব ৬২+৬৩
Dayna

মা হারানো বেদনায়,কষ্টে নির্বিঘ্নে কেটে যায় ৭ টি দিন। শ্রাবন চলে যায় থানাতে। অপূর্ব যায়নি।একা একা ভালো লাগছে না।বড্ড একাকিত্ব অনুভব হচ্ছে।বাড়িটা ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। মনোরা বাড়ির সমস্ত কাজ করছে।পাখি রান্না ঘরে। মনোরা সবকিছু কেটে ধুয়ে দিয়ে এসেছে। বায়েজিদ ও বাড়িতে নেই,বলে মা অসুস্থ গ্রামে চলে গেছে।মমতাজ বসে বসে পান চিবোচ্ছে। মমতাজ সিদ্ধান্ত নিলো বিদেশে আর যাবে না।জয়া নেই,সবার দেখভাল কে করবে।সবাই বাচ্চা বাচ্চা।তাই সিদ্ধান্ত নেয় বিদেশ ফিরবে না আর।

জাহাঙ্গীর ঘর থেকে কম বের হয়।জয়া চলে যাওয়ার পর জাহাঙ্গীর নিঃস্ব হয়ে গেছে। অপূর্ব ছাঁদে বসে আছে। এলিজা বাড়িতে নেই আজ তিনদিন ধরে। এনজিওর জন্য যেতেই হয়েছে। অপূর্ব ছাঁদে বসে একা একা বিড়বিড় করছে। তৎক্ষণাৎ উপস্থিত হয় তানভীর।গলায় কাশি দিয়ে তানভীর বললো, না বলেই চলে আসলাম। অপূর্ব ঘুরে তাকায়। তানভীর অপূর্বর পাশে বসে। অপূর্বর ভালো মন্ধ তানভীর জিজ্ঞেস করে। অপূর্ব মৃদু হেসে উত্তর দেয়। অপূর্বর হঠাৎ মনে পরে সূর্যর কথা। অপূর্ব ভ্রূ কুঁচকে বললো, সূর্যর কি খবর?

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

মা মা,রা গেলো তখন ও আসলো না। তানভীর সামনের দিকে দৃষ্টি স্থাপন করে বললো, অনেক দিন থেকেই ওর খবর নেই।জানি না, হঠাৎ হঠাৎ কোথায় যায়। অপূর্বর চিন্তা হঠাৎ বেড়ে যায়।মাকে হারানোর বেদনায় সবকিছু ভুলে গিয়েছিলাম।সেদিন সূর্যর মা ফোন দিয়ে সূর্য বাড়িতে ফিরেনি বলেছিল। তারপর আর খোঁজ নেওয়া হয়নি। অপূর্ব মনস্থির করলো এখনই একবার সূর্য দের বাড়ি যাবে। অপূর্ব সূর্যর বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। তানভীর নিজ বাসাতে চলে যায়। অপূর্ব সূর্যর বাড়ি উপস্থিত হয়।বাড়ির গেট খোলা।ভেতরে আসে,ঘরের দরজাও খোলা অপূর্বর খটকা লাগলো। এদিক সেদিক পরোক্ষ করে কোথাও কাউকে দেখতে না পেয়ে ছাঁদে চলে যায়। সূর্যর মা,আর বোন রোদ পোহাচ্ছে। অপূর্ব গলায় কাশি দিলো। সূর্যর মা তাকালো। অপূর্ব বললো, মাফ করবেন দরজা খোলা ছিলো, অনুমতি না নিয়েই চলে এসেছি। সূর্যর মা অপূর্ব কে দেখে দু কদম সামনে আসে।কাপা কন্ঠে বললো, সূর্য কোথায়? অপূর্ব অবাক হয়। অপূর্ব ভ্রু কুঁচকে বললো, সূর্য কবে থেকে বাড়ি ফিরেনি?

সূর্যর মা উল্টো দিকে ঘুরে বললো,আজ ৮ দিন ধরেই ওর খবর নেই। তোমাকে যেদিন ফোন দিয়েছে ,তার আগের দিন সূর্য কে শেষ বারের মত দেখেছি। জানি না ছেলেটার কি হয়েছে। অপূর্বর খটকা লাগলো অপূর্ব কিছু না বলে দ্রুত স্থান করে। অপূর্ব থানাতে আসে।যে দুজন কনস্টেবল কে সিভিল পোশাকে সূর্যর উপর নজরদারি রাখার জন্য রেখেছে তাদের কাছে আসে। অপূর্ব তাদের দুজন কে নিয়ে আড়ালে আসে। আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞেস করলো সূর্য কোথায়? ও আজ আটদিন ধরে নিখোঁজ।আর তোমরা আমাকে জানাও নি-কনস্টেবল দু’জন চুপ করে আছে‌‌। কিছু বলছে না। অপূর্ব দ্বিতীয় বার জিজ্ঞেস করলে একজন বললো, দুঃখিত স্যার।ওদিন আমরা সূর্য কে অনুসরণ করেও তাকে ধরতে পারিনি। অপূর্ব আ’হত চোখে প্রশ্ন করলো, কোনদিন? কোথায় গিয়েছিলো? কি দেখেছো?

কনস্টেবল বললো, বুড়িগঙ্গা নদীর তীর থেকে একটা কালো রঙের মাইক্রো তে সূর্য উঠেছিল। মাইক্রো টার ভিতরে অন্য কেউ ছিল কিন্তু দেখতে পারিনি।আমরা অনুসরণ করি , কিন্তু চোখের পলকে হারিয়ে যায় ‌। অপূর্ব চোখ বড় বড় করে ফেলে। অপূর্ব ভাবলো, তারমানে সবকিছুর পেছনে সূর্যর হাত আছে।আমি ওকে বিশ্বাস করে ঠিক করিনি। কিন্তু এর শেষ আমি দেখে নিবো। অপূর্ব তার আগে শেষ বারের মত সমস্ত বন্ধু বান্ধব এর কাছে যায়।কারো সাথে সূর্যর অনেকদিন যোগাযোগ নেই। কিন্তু হিমেল আজ ১মাস ধরে নিখোঁজ।সবার ব্যাপারে খোজ নিতে নিতে বেলা ফুরিয়ে সন্ধ্যা হয়ে যায়। অপূর্ব বাড়ি ফিরেনি।ফিরেই বা কি করবে বাড়িতে মা নেই।এলিজাও নেই। অপূর্ব থানার বাহিরে আসে কিছুক্ষণ পায়চারি করে। অপূর্বর ভেতরে সূর্যর চিন্তা গ্রা,স করেছে। অপূর্ব মনস্থির করলো আজ রাতেই একা রুশরাজ্যে যাবে।

এখন পর্যন্ত সন্দেহ করা, সবাইকে রুশরাজ্যে ই দেখেছি কি আছে ওখানে।জানতেই হবে। অপূর্ব তিলকনগর-এর উদ্দেশ্যে বের হয়।হাতে পিস্তল আর ছোট টর্চ নেয়‌। অপূর্ব গাড়ি না নিয়ে রিকশা নিয়ে বের হয়। তিলকনগর রাস্তার সামনে এসে নামে।রাত ধিরে ধিরে বাড়ছে। চারদিক নিশ্চুপ। শীতল হাওয়া বইছে। কোথাও থেকে কালো ধোঁয়া আসছে। গাছের পাতা গুলো নেতিয়ে পরছে। অপূর্ব এগোতে থাকে। আশেপাশে কোন মানুষ নেই। অপূর্ব ধিরে ধিরে এগোতে থাকে। অপূর্ব বার বার আশেপাশে দেখছে। কোথাও থেকে হুট করে কেউ এসে আঘাত না করে বসে। অপূর্ব হাঁটতে হাঁটতে চলে যায় দিগন্ত নদীর তীরে। কোথাও কোন জনব মানব নেই। অপূর্ব উল্টো ঘুরে রুশরাজ্যের দিকে হাটতে শুরু করে। আশেপাশে ভালো করে চোখ বুলায়।না, কোথাও তো কিছু নেই।তবে এখান থেকে সবাই কোথায় যায়। অপূর্ব ঘামছে।বা হাত দিয়ে ঘাম মুছে। চাঁদনী রাত। চারদিকে চাঁদনীর আলোয় আলোকিত। কিন্তু কোথা থেকে যেন কালো ধোঁয়া ধেয়ে আসছে। আশেপাশে মনে হচ্ছে,জন্তু জানো,য়ার ঘাপটি মেরে বসে আছে।

অপূর্ব হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূর চলে যায়। কোথাও কিছু নেই। দিগন্ত নদী- বা দিকে অনেক টা দূরে‌। অপূর্ব হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূর চলে যায়। অপূর্ব নিশানা দেখে বুঝলো।আমি সেই যায়গায় এসে পৌছেছি যেই,জায়গা পর্যন্ত আমরা ক্যাম্পিং এর সময় এসেছিলাম।এদিকে আর যাওয়া হয়নি কারন, এখানে থেকে ডান দিকে শরু আকারে ছোট খাল বেয়ে ডান দিক, অর্থাৎ দক্ষিনে চলে গেছে। ওপাশ যাওয়ার মত কোন মাধ্যম নেই।ওপাশে বড় বড় মৃত গাছ।সাথে লতাপাতার আচ্ছন্ন। অপূর্ব ভেবে পাচ্ছে না।এখান থেকে তো কিছুই পেলো না। অপূর্ব ফিরে আসবে তখনই ভাবলো,এই ছোট খাল টা কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে গিয়ে দেখা যাক। অপূর্ব দক্ষিন দিকে হাটা শুরু করে। হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূর চলে যায়। কোথাও কিছু নেই।গাছ, লতাপাতা সবকিছু মৃত।খুব ভয়ান,ক যায়গা। অপূর্ব মনস্থির করলো ফিরে যাবে এখানে কিছু নেই।

হঠাৎ অপূর্ব থমকে দাঁড়ায়।ভাবলো অনেক দূর তো এসেছি,আর একটু সামনে এগোনো যাক। অপূর্ব কিছুদূর সামনে এগোতেই দেখে খালের ভেতর ছোট একটা নৌকা। অপূর্ব অবাক হয়।চোখ গুলো ছানাবরা হয়ে যায়। ভেতরের কম্পন টা বেরে যায়। অপূর্ব সামনে এগোয়।টর্চের আলোতে দেখতে পায়।এটা কোন জে-সে নৌকা নয় বিদেশী ছোট নৌকা গুলো। এরকম নৌকা গুলো বিভিন্ন পার্কেও দেখা যায়। হুবহু এরকম নয়, তবে এরকম ই।খালের আয়োতন দৈর্ঘ্য বড় ,আয়োতনে খুবই ছোট। অপূর্ব ধিরে ধিরে নিচে নামে। মনস্থির করলো, এই নৌকা দিয়ে খালের ওপার যেতে হবে।ওপারে হয়তো কিছু আছে।যেই চিন্তা সেই কাজ। অপূর্ব নৌকায় উঠে।ওপার চলে যায়। তৎক্ষণাৎ মনে হলো,হয়তো কেউ ওপার গিয়েছে,তাই নৌকাটা ওপার ছিলো।এখন এপার দেখলে সন্দেহ করবে। অপূর্ব নৌকাটা ঠেলে ওপার পাঠায়।খাল নিরব নৌকা ভেসে অন্য দিকে যাবে না। অপূর্ব ওপার উঠে যায়। অপূর্ব অবাক হয়ে যায়।এটা কেমন জায়গা। এরকম জায়গা কাশ্মিনকালেও দেখেনি। অপূর্ব ঘামতে থাকে। অপূর্বর ভয় ও হচ্ছে।এমাজন জঙ্গল ও এত ভয়া,নক মনে হয়না।বড় বড় মৃত গাছ।তার সাথে বড় বড় মোটা লতা পেঁচিয়ে আছে।প্রচুর গাছে ঘন হয়ে আছে জঙ্গল টা। স্থান টা এতোটাই নির্জন যে, ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক ও শোনা যাচ্ছে না।

অপূর্ব এগোতে থাকে। কিছুদূর এগোতেই যা দেখে অপূর্ব সম্পূর্ণ ভাবে বিষিন্নত, হয়ে যায়। অপূর্বর শরীরের সমস্ত শক্তি নিমেষেই শেষ হয়ে যায়। বিভিন্ন বড় বড় মৃত গাছের আড়ালে,বড় একটা পরিত্যাক্ত বাড়ি। অপূর্ব ঢেক গিলতে থাকে।এই জঙ্গলে বাড়ি।তাও পরিত্যাক্ত। কয়েকশো পূরানো বাড়ি। অপূর্ব সামনে এগোবে না পিছনে বুঝতে পারছে না। অপূর্ব মনে মনে আল্লাহকে স্মরণ করতে থাকে। আয়াতুল কুরসি পাঠ করে। এরপর সামনে এগোয়। ধিরে ধিরে বাড়িটির দিকে এগোয়। অপূর্ব সাহস করে পরিত্যাক্ত বাড়িটির দরজার সামনে আসে। অনেক বড় দরজা। অপূর্ব উপরের দিকে টর্চ মারতেই দেখে,বড় করে লেখা ‘আমার পাপের সম্রাজ্য আপনাকে স্বাগতম। অপূর্ব থমকে যায়।

লেখার ধরন ঠিক সেরকম,যেরকম টা সৈকতের লা,শের সাথে চিঠি দিয়েছিল। অপূর্ব দরজা টা খুলতে চায় কিন্তু খোলার কোন উপায় নেই।কারন দরজা টা অনেক বড় আর মজবুত।এত পূরানো বাড়ির দরজাও এত মজবুত থাকে। অপূর্ব বাড়ি টার অন্য দিকে দেখছে।কোথাও থেকে ভেতরে প্রবেশের রাস্তা পায় কিনা। অপূর্ব দেখতে পায় ছোট একটা জানালা, কিন্তু কিভাবে খুলবে। অপূর্বর পিস্তলে সাইলেন্সার লাগানো।এটা দিয়ে শুট করলে শব্দ হবে না। অপূর্ব জানালায় শুট করে। জানালা টা খুলে যায়। অপূর্ব ভিতরে প্রবেশ করে। অপূর্ব বুঝতে পারলো একটা ঘরে মধ্যে প্রবেশ করেছে।ঘরটা অন্ধকার। অপূর্ব টর্চ জালায়।দেখতে পায় একটা দরজা। অপূর্ব দরজটা খুললে যা দেখতে পায়, অপূর্ব সম্পূর্ণ ভাবে বিষিন্নত হয়ে যায়। অপূর্বর চোখ গুলো বড় বড় হয়ে যায়।ঘরের ভেতরের অংশ দিনের মত আলোকিত। বিভিন্ন লাইটিং করা। অনেক দামী দামী বাতি।

বাহির থেকে বাড়িটি পরিত্যাক্ত মনে হলেও ভেতরে একদম সাধারণ বাড়ির মতই। সাধারণ বললে ভুল হবে রাজবাড়ীর মত।অপূর্ব ধিরে ধিরে ভেতরে প্রবেশ করে। অদ্ভুত আর ভয়ানক। আশেপাশে দেয়ালে কিছু ভয়া,নক শব্দ লেখা। হাতের লেখা,ও লেখার ধরন খুব পরিচিত মনে হচ্ছে। অপূর্ব সামনে এগোয়।পরপর কয়েকটি ঘর।দরজা-বিহীন ঘর,হয়তো ঘর গুলোতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নেই। অপূর্ব পিস্তল টা সামনে তাক করে,ঘরটার ভিতর উকি দেয়। অপূর্ব ভয়ে চাপসে যাচ্ছে। ঘরটার ভিতর,কিছু মেডিক্যালি জিনিস পত্র। অপূর্ব ঘর টি থেকে বের হয়।এদিক সেদিক পরোক্ষ করছে।কোথাও কেউ নেই।সামনে সরু একটা গলির মত।তার সামনে একটা ঘর।ডান দিকে উপর দিকে সিড়ি। অপূর্ব সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে থাকে। বুকের ভেতর ধুবধুবানি পরিস্কার শোনা যাচ্ছে। অপূর্ব মনে মনে কিছু দোয়া পাঠ করছে। অপুর্ব প্রথম সিড়ি পার হয়। দ্বিতীয় সিড়ির পর একটা ঘর। ঘরটার সামনে বড় করে লেখা S.Room তার সামনে ব্রাকেট দিয়ে লেখা Death । মানে কোন মৃত মানুষের ঘর।

দরজা বন্ধ। অপূর্ব ভালো ভাবে পরোখ করে দেখলো,, দরজার পাশে ছোট একটা গ্লাসের জানালা। খুবই ছোট। অপূর্ব ভেতরে উঁকি মারে। ভেতর টা ভালো ভাবে পর্যবেক্ষণ করতেই দেখতে পায়,, অপূর্ব যা দেখতে পেলো, অপূর্বর চোখ গুলো বড় বড় হয়ে গেলো।বার বার ঢেক গিলতে শুরু করে। কাঁপুনি উঠে যাওয়ার উপক্রম। অপূর্ব দেখতে পায়, একটা ছেলের মৃত দেহ।সাদা কাপড় দিয়ে ঢাকা।তবে মুখমণ্ডল বের করা।লা,শটির নিচে কিছু ক্যামিকেল এর বোতল,যেই ক্যামিকাল এর সাহায্যে মৃত দেহটি অক্ষয় আছে। অপূর্ব ভালো করে দেখার চেষ্টা করলে দেখতে,পায় লা,শটির পাশে, উল্টো দিকে ঘুরে একটা মেয়ে বসে আছে। চুলগুলো কোকরানো।

মেয়েটির মুখ দেখা যাচ্ছে না।সেই মেয়েটা এমন ভাব ভঙ্গিমা করছে যেন,তার পাশে সুয়ে থাকা লা,শটি জীবিত। উল্টো দিকে ঘুরে মেয়েটা মৃত লা,শটির সাথে কথা বলছে। খাবার ও খাওয়াচ্ছে। অপূর্ব পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছে খাবার গুলো অনবরত পরে যাচ্ছে। অপূর্ব ধপাস করে দেয়াল টপকে পরে।হাতের উল্টো দিক দিয়ে ঘাম মুছে।দ্রুত গতিতে নিঃশ্বাস নিতে থাকে। এটা কাদের আস্তানা।এত ভ,য়ানক। অপূর্ব নিচে নামে। আশেপাশে কাউকে দেখতে পাচ্ছে না।সামনে সরু গলিটার সামনে একটা ঘর। অপূর্ব ধিরে ধিরে ঘরটির সামনে এগোলো ঘরটির উপরে লেখা ইংলিশে – H. Room তার সামনে ক্রোস চিন্হ মানে প্রবেশ নিষেধ।

অপূর্ব ঘামছে। চারদিক এত নিস্তব্ধ।শরির শিউরে উঠছে। অপূর্ব ঘরটির ভেতরে প্রবেশ করবে কিন্তু দরজাটি মজবুত।খালি হাতে খোলা সম্ভব নয়। অপূর্ব লক বরাবর সুট করে।দরজাটি খুলে যায়।ঘরটি অন্ধকার। ঘরটির ভেতর থেকে শিকল এর শব্দ আসছে।অপূর্ব টর্চ জালায়। অপূর্ব দেখতে পায় এক কোনে একজন রক্তা,ক্ত লোক ভয়ে চাপসে বসে আছে।চুল দাড়িতে একাকার। অপূর্ব লোকটির কাছে গেলে দেখতে পায়,ইনি সেই লোক যিনি,সেদিন আমাকে কয়েন দিয়েছিল।লোকটির অবস্থা করুন। অপূর্ব আতংক স্বরে বলল,কে -কে আপনি! আপনি এখানে কিভাবে আসলেন! আপনার এরকম অবস্থা কেন! আপনার নাম কি!

লোকটি কাপছে। অপূর্ব দ্বিতীয় বার জিজ্ঞেস করলো, বলুন না,কিছুতো বলুন।কিছু বলার চেষ্টা করুন,লোকটি কাঁপতে কাঁপতে বললো,হা-হা-হাশেম আমি। অপূর্ব চটকে বসে পরে। অপূর্বর সমস্ত পৃথিবী ঘুরছে।কি বলছে, উনি।এই কি সেই হাশেম যিনি ৫ বছর ধরে নিখোঁজ। অপূর্বর শরীর থেকে অঝরে ঘাম ঝরতে থাকে। কে করেছে এমন! এই পরিত্যাক্ত বাড়িটাকে মৃত্যু ঘর কারা বানিয়ে রেখেছে।
হঠাৎ অপূর্ব দুজন লোকের গলার আওয়াজ পায়। অপূর্ব দরজার বাহিরে উঁকি মারে,দেখতে পায় চীপস ডুপিয়ালি আর হিমেল। অপূর্ব মেঝেতে বসে পড়ে।নিজের চোখকে বিশ্বাস করাতে পারছে না।

রাত বেরে চলেছে। রাত প্রাই ১২ টা নাগাদ। অপূর্ব মেঝেতে লুটিয়ে বসে আছে। অপূর্ব কারো উপস্থিতি অনুভব করছে।কেউ আসছে এই ঘরের দিকে। অপূর্ব টর্চ টা বন্ধ করে দরজার পাশে দাঁড়ায়।ঘরটি বেশ বড় আর অন্ধকার। একজন হাশেমের ঘরের দরজার কাছে এসে দাড়ায়।লোকটি একা একা বললো এই ঘরটি কে খুলেছে! এদের টাকা দিয়ে কাজে রেখেছে কিসের জন্য।বলেই লোকটি দরজা টি বাহির থেকে বন্ধ করে দেয়। অপূর্ব বুঝতে পেরেছে লোকটি মাতা,ল।

হাশেম কাঁপছে বোঝা যাচ্ছে।শিকল এর শব্দ আসছে‌। অপূর্ব হাশেমের অবস্থা দেখে কাঁদছে।কতটা নিষ্ঠুর।কতটা হায়,না ওরা।কতটা পাষান হলে এরকম করতে পারে। আমার ঘৃনা হচ্ছে। আমার বন্ধুদের উপর ওরা এতটা নিষ্ঠুর। অপূর্ব এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ বুকের মধ্যে বেথা শুরু হয়। অপূর্ব বুকের উপর হাত রেখে প্রার্থনা করতে থাকে।যাতে বুকের বেথা টা কমে যায়।এখানে পানি নেই কিছু না। অপূর্ব টর্চটা জ্বালায়।উঠে গিয়ে হাশেমের কাছে বসে।হাশেম কিছু বলতে পারছে না।বলার জন্য চেষ্টা করছে। অপূর্ব পাশে বসে আছে।বুকের বা পাশে হাত দিয়ে। হঠাৎ হাশেম অতিকষ্টে ডান দিকে দেখিয়ে দেয়। অপূর্ব ডান দিকে টর্চের আলো দিলে দেখতে পায়,মাটির কলস।হয়তো ওটাতে পানি আছে । অপূর্ব ভেবেছিল এখানে পানি নেই। অপূর্ব কলস থেকে পানি ঠেলে খেয়ে নেয়। অপূর্ব হাশেম এর কাছে এসে বসলো।জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিচ্ছে অপূর্ব। পিস্তল টা মেঝেতে রেখে দেয়। কিছুক্ষণ নিশ্চুপ থাকে। হাশেমের বয়স খুব একটা নয়। আমাদের মতই। কিন্তু তার যা অবস্থা ওরা করে রেখেছে। দাড়ি চুল গুলো অনেক বড় বড়।

মনে মনে ভাবতেই অপূর্ব বলল,হাশেম ভাই,ওদিন যে কয়েনটা দিয়েছিলেন,সেই নকশার জায়গাটা কি এটাই?
হাশেমে কিছু বলছে না। কথা বলার মত শক্তি হাশেমের নেই। অপূর্ব হাশেমের কাদে হাত দিয়ে কাপা কন্ঠে বললো, হাশেম ভাই, কথা না বলতে পারলেও ,হ্যাঁ বা না সূচক মাথা নাড়েন।কয়েন টা এই জায়গার ই ছিল, হাশেম না সুচক মাথা নাড়ে। অপূর্ব ছিটকে ১ হাত দূরে সরে যায়।কি বলছে হাশেম এসব। তারমানে এট সেই জায়গা নয়।তবে এটা কাদের আস্তানা। অপূর্বর চিন্তা আরো দ্বিগুন বেড়ে গেল। অপূর্ব ঘামছে। তারমানে আমি এখন পর্যন্ত সঠিক রাস্তায় আসেনি।তবে এটা কাদের আস্তানা। এখানে হিমেল চীপস ডুপিয়ালি ই বা- কি করছে।

অপূর্ব অন্ধকার ঘরে বন্দি হয়ে আছে। এখান থেকে তো বের হতে হবে। কিন্তু ভেতরে হায়,না গুলো আছে। অপূর্ব অপেক্ষা করছে কখন তারা বাহিরে যাবে। অপূর্বর অপেক্ষার প্রহর কাটছে না।এক প্রহর দুই প্রহর কেটে যাচ্ছে অনেক প্রহর।রাত যেন আজ শেষ হচ্ছে না।কেউ বাহিরে বের হচ্ছে না। অপূর্ব মনস্থির করলো দরজা পিস্তল দিয়ে খুলবে। এরপর বের হবে।কি আছে এই যায়গায় দেখতে হবে। অপূর্ব দরজার লক বরাবর সুট করে। দরজা খুলে যায়। আশেপাশে কেউ নেই অপূর্ব পিস্তল সামনে তাক করে বের হয়। অপূর্ব উপরে উঠতে থাকে।তখন চীপস , হিমেল উপরে গিয়েছিল। অপূর্ব ধিরে ধিরে উপরে উঠে।প্রতিটা ঘর বন্ধ।ঘর গুলোর কোন জানালা নেই।দুই তলা অতিক্রম করে তিনতলায় উঠে। চারদিক নিস্তব্দ।গলির মত পথ।দুইপাশে হাসপাতালের মত ঘর, অপূর্ব উকি মেরে দেখছে, প্রতিটা ঘরের সামনে থাই- গ্লাসের দরজা ভিতরে সব দেখা যাচ্ছে।

কিন্তু কেউ নেই। চিকিৎসার জন্য যা কিছু দরকার সেসব কিছুই এখানে আছে। এখানে হয়তো জেনারেটর ব্যবহার করা হয়।অপূর্ব অবাক হয়।বার বার ঢেক গিলতে থাকে। অপূর্ব আশপাশ ভালো করে দেখতে থাকে। কিন্তু কোথাও কোন সুত্র পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু এখানে কোন কিছু তো হচ্ছে। কিন্তু কি। তৎক্ষণাৎ অপূর্বর পেছন কেউ এসে হঠাৎ করে অপূর্বর মাথায় আঘাত করে। অপূর্ব পেছন দিকে ঘুরে দেখতে পারেনি। পিস্তল টা হাত থেকে পরে যায়।উপর হয়ে অপূর্ব পরে যায়। তৎক্ষণাৎ জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। রাত বেড়ে চলেছে। কিন্তু এই রাত কোন এক অভিশপ্ত রাত।রাত শেষ ই হচ্ছে না।ঠিক ১ ঘন্টা পরে অপূর্বর জ্ঞান ফিরে।

অপূর্ব টিপ টিপ করে চোখ মেলছে। চোখের সামনে সবকিছু ঝাপসা দেখছে।চোখ পরিষ্কার করার চেষ্টা করলো। তখনি অপূর্ব বুঝতে পারলো তার হাত পা বাঁধা। অপূর্ব কে চেয়ারের উপর বসিয়ে বেঁধে রেখেছে। অপূর্ব নিজেকে বাধা থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করলো কিন্তু ব্যার্থ হলো। অপূর্বর মাথার উপর ছোট একটা বাল্ব জ্বলছে।বাল্ব এর আলো শুধু অপূর্ব বরাবর পরছে। চারদিক ঘুটঘুটে অন্ধকার। অপূর্ব বারবার হাতের দড়ি খোলার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। তৎক্ষণাৎ কারো হাঁটার আওয়াজ পায়।কেউ আসছে। অপূর্ব কান খাড়া করে শুনতে পেলো। একাধিক লোকের পায়ের চপর চপর আওয়াজ আসছে। হঠাৎ অপূর্ব কে আটকে রাখার ঘরের বাইরে থেকে দু’জন অচেনা মানুষের কন্ঠস্বর ভেসে আসছে। তাদের মধ্যে একজন বলছে, একে নিয়ে কি করা যায়! শেষ করে দেই!

তার সাথে অন্যজন বলছে, না তবে এ খুব সাহসী।হুট করে কিছু করা যাবে না।আগে স্যার কে আসতে দে।স্যার যা করবেন তাই হবে।এই বলে অচেনা লোক দুটো স্থান ত্যাগ করে। অপূর্ব বুঝতে পেরেছে।এদের উপরেও কেউ আছে।ওরা তার চালা।ওদের স্যারের অনুমতি ছাড়া এরা কেউ কিছু করবে না। কিন্তু ওদের স্যার টা কে।সেটা যে আমাকে জানতে হবে। অপূর্ব বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর, শুনতে পেলো কেউ আসছে।এবারো ঠিক একাধিক পায়ের আওয়াজ ‌। তাদের মধ্যে একজন বলে উঠল,স্যার,ছেলেটাকে আমরা বেধে রেখেছি। অপূর্ব ভাবলো হয়তো ওদের স্যার চলে এসেছে। দরজা খুলে দিচ্ছে। অপূর্ব আগ্রহ নিয়ে দেখছে। কিন্তু ঘরটা অন্ধকার দেখবো কিভাবে। দরজা খুলে ভেতরে এসে, একজন একটা বাল্ব জ্বালায়।পূরো ঘরটা আলোকিত হয়ে ওঠে।

অপূর্ব চোখ গুলো বড় বড় করে দেখলেই যা দেখতে পায়, অপূর্ব সম্পূর্ণ ভাবে হতভম্ব হয়ে যায়।ভ্রু কুঁচকে দেয়, আতংক স্বরে বলল,তুই? অপূর্বর সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সূর্য আতংক স্বরে বলল,তুই এখানে? সূর্যর চালারা হতভম্ব হয়ে যায়।এরা দুজন,দুজন কে চিনে। এখন এ যদি বলে দেয়,আমরা একে আঘাত করেছি। সূর্য তৎক্ষণাৎ একজন চালার কলার টা ধরে মেজাজ দেখিয়ে বললো, একে মেরেছিস? একে আঘাত করেছিস? বেধে রেখেছিস কেন? দ্রুত খুলে দে।চালা দুজন কাপা হাতে অপূর্বর হাত পা কে খুলে দেয়। অপূর্ব আড় চোখে সূর্য কে দেখছে।কি বলবে বুঝতে পারছে না। সুর্য হঠাৎ করেই অস্থির হয়ে যায়।চালা দুটোকে বললো,তোরা দুজন বাহিরে অপেক্ষা কর।চালা দুজন বাহিরে চলে যায়। অপূর্ব থম মেরে চেয়ারে বসে আছে। সূর্য অপূর্বর সামনে একটা চেয়ার টেনে বসে। অপূর্ব র’ক্ত মাখা চোখে সূর্যর দিকে তাকিয়ে আছে। সূর্য অস্থির। চোখে মুখে বিষন্নতা। অপূর্ব কাপা কন্ঠে বললো,কি করছিস এখানে?আমাকে বোকা বানিয়েছিস! সবকিছুর পেছনে তোর হাত। সূর্য ঠোঁট কুঁচকে হাসি দেয়। অপূর্ব ঘৃনা জড়িত কন্ঠে বললো তোকে বন্ধু বলতে ঘৃনা হচ্ছে আমার।ছিহ:

সূর্য খিল খিল করে হেসে উঠে। কিছু বলছে না। অপূর্ব চুপ হয়ে আছে। অপূর্ব রাগান্বিত হয়ে আবার বলে উঠলো, জবাব দে,এই নোংরা খেলা খেলছিস কেন? সূর্য‌ বলল,তুই খুব বুদ্ধিমান। সেই ঘুরে ফিরে, খুঁজতে খুঁজতে এখানে চলেই আসলি। কিন্তু তুই যা ভাবছিস তা কিছুই নয়।
অপূর্ব ঠোঁট কুঁচকে হেসে বললো, এখনো মিথ্যা বলবি! কি লাব মিথ্যা বলে! মিথ্যার পর্দা তো উঠতেই হবে।তাই না!
সূর্য হেসে বললো , তুই পরিত্যাক্ত বাড়ির আনাচে কানাচে ঘুরে দেখেছিস । কিছু পেয়েছিস? অপূর্ব মুখ ঘুরিয়ে নেয়। অপূর্ব সূর্যের দিকে দৃষ্টি স্থাপন করে বললো,হাশেম কে কেন ৫ বছর ধরে আটকে রেখেছিস?
সূর্য ঠোঁট কুঁচকে বললো, পথের কাটা ছিল।অনেক বার-বেরেছিলো।৫ বছর আগে। একদিন আমি আর চীপস দুজনে রঞ্জনার কবরের কাছে ছিলাম।

তখন দেখা হয় হাশেমের সাথে। হাশেমের সাথে কথা হয়। জিজ্ঞেস করছিল, এখানে কি করছি, আমরা সত্যিটা বলি।হাশেম চলে যায়। কিন্তু বুদ্ধিমান হাশেম আমাদের পিছু নেয়।
সেখান থেকে আমি আর চীপস দুজনে , আমাদের আস্তানায় চলে আসি। সেদিন আমি আর চীপস দুজনে মিলে, মুন্না হত্যা,র পরিকল্পনা করি।কারন,মুন্না আমার ব্যাপারে সবকিছু জেনে গিয়েছিলো‌।মুন্না কিছুদিন পর পর,মোটা অংকের টাকা চাইতো দিতাম। কিন্তু হঠাৎ ওর মাথায় ভুত চাপে। একসাথে ১ কোটি টাকা চেয়েছিল।আমি বলেছিলাম কিছুদিন অপেক্ষা কর। কিন্তু ও অধৈর্য হয়ে গিয়েছিল। তাই আমি আর চীপস দুজনে মিলে ওকে হত্যা করার পরিকল্পনা করি।আর এসব কিছু হাশেম আমাদের অনুসরণ করে, আমাদের আস্তানায় পৌঁছে শুনে নেয়। আমার লোকেরা হাশেম কে দেখতে পায়। হাশেমের পিছনে ধাওয়া করতে থাকে।হাশেম পালিয়ে যায়।হাশেম নিজ বাড়িতে না গিয়ে ঢাকা তে চলে যায়।আমি বিষয়টা রেখাকে বলি।রেখা হাশেম কে চিনতে পারে।রেখাকে হাশেম একসময় পছন্দ করতো।

এরপর নিরাকে বিয়ে করে।বিয়ের কিছুদিন পরই হাশেমের সাথে এমনটি হয়।হাশেম যখন পালিয়ে ঢাকা যায় তখন আমরা ভিষন চিন্তায় পড়ে যাই। যদি গোপন তথ্য ফাঁস করে দেয় ‌।তখন রেখা বললো, আমি সামলে নেবো।রেখা হাশেমের সাথে যোগাযোগ করে, এবং রেখা হাশেমের সাথে এমন আচরন করে, হাশেম রেখাকে ভরসা করে।রেখা হাশেম কে বলে, তুমি আর আমি দু’জনে মিলে পুলিশের কাছে যাবো। ওদের গোপন তথ্য ফাঁস করে দিবো। হাশেম রাজি হয়।রেখা হাশেম কে নিজ বাসাতে থাকতে দেয়।সেই রাতে, রেখা হাশেম কে আমার কথা মত, হাশেমের শরীরে এক প্রকার কেমিক্যাল ইনজেক্ট করে। হাশেম নিস্তেজ হয়ে যায়।

এরপর আমরা মিলে আমাদের আস্তানায় ওকে নিয়ে আসি। হাশেম তখন ছিল সদ্য বিবাহিত। আর আমি ভালোবাসা কে সম্মান করতাম।চীপস চেয়েছিলো হাশেম কে মেরে দিতে কিন্তু আমি মারতে দেইনি।সেই থেকে হাশেম বন্ধি। এরপর ভয় ঢুকে হাশেমের পরিবার কে নিয়ে।তারা যদি কিডন্যাপিং কেস ফাইল করে, তবে পুলিশ তদন্ত করবে।তাই রেখা পরিকল্পনা করে নিরাকে হাশেম সেজে চিঠি পাঠায়।আর এটা সবাই বিশ্বাস ও করে। কিন্তু একটা ভুলের জন্য আবার সব এলোমেলো হয়ে যায়। সবকিছু ঠিকঠাক ই ছিল। কিন্তু সবকিছু তোর চোখের সামনে বারবার পরছিলো।তুই যখন,এলিজাদের বাড়ি যাস। তার দুদিন পর আমিও উপস্থিত হই।

তারপর দিন রাতে, তুই চীপস কে দেখে-ছিলিস হিমেল এর সাথে।তুই ও পিছুনিস। আর চীপস বেখেয়ালির জন্য ওর আইডি কার্ড ফেলে রেখে আসে।তুই ওটা নিয়ে নিস।তখন আমাদের চিন্তা আরো বেড়ে গেলো।কি করবো ভেবে না পেয়ে, আমি অন্তিম বাজার থেকে ফোন করে রেখাকে বলি আর ,রেখা সব সামলায়। তবে সত্যটা সামনে এনে। তারপর দিন রেখা উপস্থিত হয় আলি বাড়ি।আর হাশেমের বিষয় টা বলে‌।এসব তুই জানিস।রেখার উদ্যেশ্য ছিল চীপস এর আইডি কার্ড।

অপূর্ব জিজ্ঞেস করলো, নিরা কে কারা মেরেছে। সূর্য বললো, তা আমরা জানি না।
দোতলায়,S room d,eath এটার মানে কি? আর ঐখানে মেয়েটাই বা কে আর মৃত লাশ,টি কার?
সূর্য বললো, দূর্জয় দের বন্ধুর মধ্যে মৃত ব্যক্তি একজন।আর তার সাথে ওর স্ত্রী চন্দ্রিকা। ওকে মেরে ফেলার পর লা,শটি এখানে রাখা হয়। ভালোবাসার মানুষ হারানো অতি কষ্টের,তাই আমি চন্দ্রিকার সাথে দেখা করি, চন্দ্রিকা ভেবেছিলো,ওর স্বামী নিখোঁজ।আমি বললাম,সে আমাদের কাছে।চন্দ্রিকা ওর স্বামিকে দেখার জন্য অস্থির হয়ে যায়।আমি চন্দ্রিকাকে নিয়ে আসি। চন্দ্রিকা ওর লা,শ দেখে অজ্ঞান হয়ে যায়।চীপস ওর চিকিৎসা করে,পরে জানতে পারি,তার ব্রেনে অতিরিক্ত চাপে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে।তখন থেকেই ওর স্বামিকে ও জীবিত মনে করে।আর আমরা লা,শটি অক্ষয় রাখার জন্য বিভিন্ন কেমিক্যাল ব্যবহার করি।মৃত ব্যক্তির নাম সাগর’। মেয়েটি উপরে আছে চাইলে দেখতে পারিস।

আর এটা পরিত্যাক্ত বাড়ি নয়,এটা হাসপাতাল ছিলো। এটাকেই আস্তানা বানিয়ে রেখেছি।
অপূর্ব আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞেস করলো, উপরে হাসপাতাল এর মত ঘর গুলো তো পরিত্যাক্ত মনে হচ্ছে না।
সূর্য বললো,পরিত্যাক্ত ছিল আমরা নতুন করে নেই।
অপূর্ব ভ্রু কুঁচকে বললো চীপস ডুপিয়ালি কে কিভাবে পেয়েছিস?
সূর্য বললো,চীপস একজন ডক্টর তার উপর অভিজ্ঞ একজন খু,নি।
অপূর্বর ঘৃনা হচ্ছে ওর বন্ধুদের উপর একটা খু,নের জন্য হাজার টা খু,ন করতে হচ্ছে।একটা মিথ্যা ঢাকার জন্য, হাজার টা মিথ্যা বলতে হচ্ছে।

এলিজা পর্ব ৬০+৬১

অপূর্ব সূর্যর দিকে পরোখ করছে,কত সান্ত ভাবে কথা গুলো বললো।কোন অনুশোচনা নেই। সূর্য একটা সিগারেট ধরিয়ে টানতে শুরু করে। রাত বাড়ছে। অপূর্বর শরীর দূর্বল হচ্ছে।মাথায় আঘাত টা লেগেছে। কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো, ২৭ বছরের ছেলেদের হত্যা,র পেছনে কে আছে??

এলিজা পর্ব ৬৪+৬৫