কাজলরেখা পর্ব ১৪

কাজলরেখা পর্ব ১৪
তানজিনা ইসলাম

-“ডিভোর্স দাও আঁধার ভাই! আমার ডিভোর্স চাই। এই মেনে নাওয়া, মানিয়ে নেওয়ার সম্পর্ক আমি আর বয়ে বেড়াতে পারছি না।”
চাঁদনী গুমোট স্বরে বললো। ওর কথা অস্বাভাবিক। অথচ বসে আছে স্বাভাবিক ভাবে। আঁধার আবার ওর হাত ধরতে গেলো, চাদনী দিলো না হাত ধরতে। একটু দূরে সরে বসলো। শক্ত গলায় বললো

-“দুরে বসে কথা বলো। কাছে আসবে না একদম। তোমার ছোঁয়া বিশ্রী ভাবে চুপে আমার গায়ে৷ মনে করিয়ে দেয় যে আমি একটা কালির ড্রাম, এই বাড়িতে একটা কুকুরের যা দাম আছে আমার সে দামটুকুও নেই। তুমি কুকুরের সাথে তুলনা করেছো আমাকে। বারবার আমাকে দয়া করে, আবার পরক্ষণেই নিজের জঘন্য রূপ দেখিয়ে কি পাও তুমি? খুব শান্তি লাগে তোমার, আমাকে নিচু করে কথা বলতে!”
আঁধার অসহায় শ্বাস ফেললো। চাদনী বুঝতে চাচ্ছে না। ও এসব মন থেকে বলেনি। সবসময় যেভাবে বিষয়টা নিয়ে আফসোস করে সেভাবে বলে ফেলেছিলো। চাদনী যে শুনে ফেলবে ও খেয়াল করেনি। আঁধার চাঁদনীর কথা মানলো না।
ওর কাছে গিয়ে, ওর হাঁটুর কাছে বসলো। অপ্রকৃতস্থভাবে চাঁদনীর গাল ধরে বললো

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

-“আই প্রমিজ!আর কখনো কিচ্ছু বলবো না আমি তোকে। তোর যেভাবে মন চায়, সেভাবে থাকবি।তোর পছন্দ না হলে আমি তোর আশেপাশেও আসবো না। প্লিজ, আমার কথাটা শোন। আমাকে ছেড়ে যাস না। এই শহরে আমার কেও নেই।তুই চলে গেলে আমি আবার একা হয়ে যাবো৷ আমার এই একাকিত্ব একটুও ভালো লাগে না।”
চাদনী হাত ছাড়াতে চায়লো আঁধারের। পারলো না। ও কখনোই আঁধারের সাথে জিততে পারে না। ছেলেটা যা মন চায় তাই করে ওর সাথে। সবকিছু চাঁদনীর উপর চাপিয়ে দেয়, নিজের মনমর্জি করে। আবার অপমান করে, নিজেই দূরে সরিয়ে দিয়ে, নিজেই কাছে আসে। ও কী খেলানা না-কি? ওর মন নাই! আঁধার কেন সবসময় নিজের জোরটা খাটাবে ওর উপর!

চাঁদনীর কান্না পেলো। ও অনেক্ক্ষণ ধরে স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করেছে। আঁধারের হাতের ছোঁয়াও ভালো লাগছে না ওর একটুও। একটা মানুষ কতোটা দুমুখো হতে পারে,এই নিজের বান্ধবীর সামনে ওঁকে নিয়ে বদনাম করার পর, এই ওঁকে শান্ত করার চেষ্টা করতেছে।চাঁদনী কেঁদে দিলো। কাঁদতে কাঁদতে বললো
-“ছাড়ো না প্লিজ।আমার ভালো লাগছে না।”
-” কেনো ভালো লাগছে না? আমি তোরে ধরতে পারি না? আচ্ছা, ছেড়ে দেবো।আগে বলে আমাকে ছেড়ে যাবি না। আমি কী করে থাকবো তোকে ছাড়া?”
চাদনী হিচকি তুলে বললো

-“আগে যেভাবে থাকতে সেভাবে থাকবে। আগেও তো কেও থাকতো না তোমার সাথে।”
-“তোরে সারাক্ষণ চোখের সামনে দেখতে দেখতে অভ্যাস হয়ে গেছে আমার। আমার বাড়িটা খালি করে দিস না চাঁদনী। প্লিজ! আমি আর কিচ্ছু বলবো না তোকে!”
চাঁদনীর চোখের জল দু’হাতে মুছলো আঁধার। গাল ছেড়ে হাত ধরলো। চাদনী ওর দিকে না তাকিয়েই বললো
-“শাবিহা আপু কে নিয়ে আসিও। আমাকে ডিভোর্স দেওয়ার পর তার সাথে সংসার করতে তো তোমার কোনো বাঁধা নেই। এতো চিন্তা কীসের?”
আঁধার অতিষ্ঠ হয়ে বললো

-“তোর লগে বিয়া বসছি না একবার, আবার বিয়ে করতে বলছিস? তাও আবার প্রাক্তনের সাথে!”
-“বিয়েটা তো না পারতে করেছো। আমি বলছি তো, তোমার উপর কোনো অভিযোগ রাখবো না। আমার কোনো দায়িত্ব নিতে হবে না তোমাকে। আমাকে ডিভোর্স দিলে তোমার নিজের স্বপ্নটা পূরণ করতে পারবা। একটা সুন্দর মেয়ে বিয়ে করলে, তোমার বন্ধুরা তোমার বউকে সুন্দর বলবে। আমার মতো কালির সাথে অন্যদের পরিচয় করাতে তোমাকে লজ্জায়ও পরতে হবে না।”

আঁধার পাংশুটে মুখে চেয়ে থাকলো ওর দিকে। চাদনী কোনোমতেই শান্ত হচ্ছে না। ও কাঁপছে। রাগে কাঁপছে না কষ্টে আঁধার বুঝতে পারছে না। আঁধার সোফার উপর বসে জড়িয়ে ধরলো ওঁকে। বুকের সাথে ঠেসে ধরে শান্ত করার চেষ্টা চালালো। চাদনী ছুটতে চাইলো ওর থেকে। শব্দ করে কেঁদে বললো
-“ছাড়ো! ধরবে না আমাকে।তোমার ছোয়া ঘেন্না লাগে আমার। নিজের উপর খুব রাগ হয়। আর কতো কষ্ট দেবে? মানুষ মনে হয় না আমাকে? এভাবে একটু একটু করে মারার চায়তে একেবারে মেরে ফেলা ভালো না?”
আঁধার আর নরম হয়ে বোঝালো না চাদনী কে। এ পর্যায়ে ওর চুল টেনে ধরে শক্ত কন্ঠে বললো
-“চুপ! অনেক শুনেছি তোর ফালতু কথা।ছেড়ে যাবি আমাকে? এতই সহজ? নিজের আফসোসের কথাটাও বলা যাবে না?”

-“আফসোস রাখতে নাই, সেটাই তো বলছি।আমি নামক আফসোস কে রাইখো না আধার ভাই।”
-“সেটা তুই বলবি আমাকে?আমি যেটা বলবো সেটাই হবে। আমার কথার বিরুদ্ধে যেতে পারবি না তুই।আমার কথাই মানতে হবে তোকে। কষ্ট হলেও মানতে হবে।”
চাদনী সেসব কথা শোনে না। আধারের সব কথায় অসহ্য লাগছে ওর কাছে। ও ছুটতে চায়ছে, দম বন্ধ হয়ে আসছে ওর,অথচ আঁধার ছাড়ছে না৷ শক্ত করে বুকের সাথে চেপে ধরে আছে। যেন ছেড়ে দিলেই পালিয়ে যাবে। আর সেটা হতে দেওয়া আঁধারের নিজের সৌন্দর্যের প্রতি কন্ফিডেন্স হারানোর মতোই অসম্ভব!

রেহানের বাড়ি ঢাকার উত্তরায়। সিটি কলেজ থেকে বেশ অনেকটা দূরে। প্রতিদিন ক্লাস এটেন্ড করতে গিয়ে ও ভীষণ টায়ার্ড হয়ে যায়। খুব ধকল যায় ওর উপর। বাড়ির গাড়িই নিয়ে যায় ও সবসময়। বিশাল এরিয়া জুড়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি। বাড়ির সামনে সরু রাস্তা,তার দু’পাশে ফুলের বাগান। ওর সৌখিন বাপের সখ্যতার শেষ নেই। তারউপর বাপের যে অঢেল টাকা পয়সা আছে তা বাড়ির বাইরে থেকে দেখলেই বোঝা যায়। ওর গাড়িটা যখন গেইট পেরিয়ে ঢুকলো, তখন বেশকিছু বডিগার্ড, ছেলেপিলে দাঁড়িয়ে ছিলো উদ্যানে।

ওঁদের বাড়ির সামনে সারাক্ষণই ছেলেপিলের আসর থাকবে।সবসময়ই থাকে এরা, কিন্তু আজ সংখ্যাটা একটু বেশি। আজ কী কোনো রাজনৈতিক সম্মেলন আছে? আজ অন্যদিনের তুলনায় মানুষজন এতো বেশি কেন?রেহান ভাবনায় পরলো! রেহানের মন আজ বিশেষ একটা ভালো নেই। ওর খুব মনে পরছে একজনের কথা। আজ বেশ কয়েকটা রাজনৈতিক মিছিল দেখেছে ও। সাদা পাঞ্জাবি পরা নেতাদের কে দেখলেই ওর একটা গম্ভীর ছেলের কথা খুব মনে পরে।
রেহান বেল বাজিয়ে অপেক্ষা করলো।মুহুর্তেই শাবিহা দরজা খুললো। রেহান হাসে ওর দিকে তাকিয়ে। শাবিহা সরে দাড়িয়ে জায়গা করে দিলো৷ রেহান ঘরে ঢুকলো। সার্ভেন্টরা সবাই আসবাব ঝাড়ছে। রেহান ভ্রু কুচকে তাকায়। শাবিহার দিকে তাকিয়ে শুধায়

-“আজ কী স্পেশাল কিছু আছে আপু? বাইরেও অনেক মানুষজন দেখলাম।কেও কী এসেছে?”
শাবিহা হাসিমুখে বললো
-“তোর জন্য একটা গিফট আছে৷”
-“কী গিফট?”
-“দাদুভাইয়ের রুমে চল!”
রেহান ভ্রু কুঁচকে তাকালো। প্রশ্ন না করে বললো
-“ব্যাগ রেখে আসি?”
-“উহু। আগে তোকে গিফট দেই!”
শাবিহা সামনে হাঁটে। রেহান ব্যাগ কাঁধে নিয়ে ওর পিছুপিছু যায়।রুমের সামনে থামতেই শাবিহা কক্ষে উঁকি দিয়ে বললো

-“ভাইয়া, দেখো কে এসেছে তোমার সাথে দেখা করতে!”
রেহান ভেতরে ঢুকলো। ওর দাদুভাই রায়হান এহসান অনেকগুলো বছর ধরে সয্যাশায়ী। বিছানা থেকে উঠতে পারেন না। তার হাত দু’টো আঁকড়ে ধরে, রাত বসে আছে তার পাশে। হাসিমুখে কথা বলছে। রেহান কে চোখে পরতেই প্রশস্ত হেঁসে ডাকলো ওঁকে। রেহান ঠোঁট কামড়ে চাইলো তার দিকে। পরক্ষনেই দৌড়ে গিয়ে ঝাপ্টে জড়িয়ে ধরলো তাকে। উৎফুল্ল কন্ঠে ডাকলো

-“ভাইয়া,তুমি!”
রাত ওর পিঠে হাত রেখে বললো
-“আমার বাচ্চা, কেমন আছিস তুই?”
রেহান উত্তর না দিয়ে একাধারে আওড়ালো
-“আই মিস ইউ ভাইয়া।আই মিস ইউ সো মাচ।”
-“আই মিস ইউ টু।”
রেহান সোজা হয়ে দাঁড়ালো। অবাক কন্ঠে বললো
-“আমি ভুল দেখছি না তো! তুমি এসেছো, তাও এ বাড়িতে? তুমি তো এখানে আসো না ভাইয়া!”
-“কেন আসতে পারি না তোদের বাড়িতে?”
-“বাড়ি তো শুধু আমাদের না, তোমারও।”

রাত হাসলো। রেহান উৎফুল্ল চিত্তে গিয়ে বসলো ওর কাছে। রায়হান এহসান হাসছেন ওঁদের দিকে তাকিয়ে। কতদিন পর যে তিনভাইবোন একসাথে হয়েছে, তার হিসেব নেই। এই দৃশ্য কতদিন ধরে দেখেন না তিনি! শাবিহা দাঁড়িয়ে ছিলো। রাত ওর দিকে তাকিয়ে বললো
-“দাঁড়িয়ে আছিস কেন? বোস!”
-“তোমার কপিক্যাট চলে এসেছে না ভাইয়া! আমার তো আর কথা বলার চান্সই নেই। সেই কথা বলে বলে তোমার কানের অবস্থা খারাপ করে দিবে।”

রেহান মিছি মিছি রাগ করলো। এই মেয়েটা সবসময় ওঁকে রাতের কপিক্যাট বলে। তার অবশ্য কারণও আছে, রেহান সবসময় খুব করে চেষ্টা করে রাতের বিহেভিয়ারগুলো কপি করতে। ওর পার্সোনালিটি, ওর কথা বলার স্টাইল, হাঁটার স্টাইল, বসার ধরণ, গোমড়ামুখেও মাঝে মাঝে মুচকি হাসা। এমনকি খাওয়ার ধরণ টা পর্যন্ত কপি করা থেকে বাদ দেয় না ও। অন্যরা তো আর জানে না, মানুষটা যে ওর কতটা পছন্দের! ওর খারাপ লাগে না, ওকে কপিক্যাট বললে৷ আরো ভালো লাগে। মনে পরে ওর একটা ভাই আছে। যে ওঁদের সাথে থাকে না। বছরে, মাসে একবার কথাও বলে না। খোঁজ নেয় না। কিন্তু রেহানের খুব মনে পরে তার কথা। তবুও সে রাগার চেষ্টা করে তার মতো। কিন্তু রেহান এখনো তার রেগে যাওয়ার ধরণটা কপি করতে পারেনি। রাতের একটা চিল্লানি, ধমকে ওঁদের বাড়ির সবাই সোজা হয়ে যায়। সেখানে ও চিল্লালে, ওর পিঠের উপরই ধুমধাম পরবে। তারউপর রাতের মতো ভাংচুর করতে চাওয়াটা তো বিলাসিতা!
রেহান রাতের দিকে তাকিয়ে বললো

-“কখন এসেছো ভাইয়া?”
-“মাত্রই! এসেই দাদুভাইকে দেখতে এসেছি!”
-“বললে না তো আসবে যে! আমি তো আর কলেজেই যেতাম!”
রাত ভাবুক স্বরে বললো
-“উমমম! তোকে সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছি!”
রেহান খুশিতে ওর বাহু জড়িয়ে ধরলো৷ শাবিহা এগিয়ে এসে বললো
-“হয়েছে ছাড়। ভাইয়া অনেক টায়ার্ড। আসো ঠান্ডা কিছু খাওয়ায় তোমাকে! জানো তুমি আসবে শুনে, আমি তোমার জন্য ডাবের পুডিং বানিয়েছে।”
রাত ওর গাল টেনে দিয়ে বললো
-“বাহ! আমার অকর্মা বোনটা রান্নাও শিখেছে তাহলে!”
-“একদম অকর্মা বলবা না। এখন সব রান্না টুকটাক শেখার চেষ্টা করছি আমি। ইউটিউব দেখে দেখে সব রেসিপি ট্রাই করছি!”

রাত উঠে দাঁড়িয়ে এক হাতে জড়িয়ে ধরলো ওঁকে। বললো
-“চল তাহলে, আজ তোর রেসিপি ট্রাই করি!”
রেহান মুখ কালো করে বললো
-“আমার জন্য বানাওনি আপু?আমিও তো বাইরে থেকে এসেছি। অনেক গরম বাইরে। কই তুমি আমার জন্য তো বানাও না!”
-“তুই তো সারাক্ষণই আমার চোখের সামনে থাকিস। ভাইয়াকে তো চোখের দেখাও দেখতে পাই না একটু। তুই আর ভাইয়া সেম হলি!”
রেহান ঠোঁট উল্টালো। রাত ওর হাত টান দিয়ে দাঁড় করিয়ে বললো
-“মন খারাপ করে না। তোর জন্যও বানিয়েছে। আর না বানালে আমার থেকে ভাগ করে দেবো, ঠিক আছে!”
রেহান প্রফুল্ল চিত্তে মাথা ঝাকায়।

শাবিহা রাতের জন্য শুধু ডাবের পুডিং বানায়নি। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত খাটাখাটনি করে, অনেক ডিশ বানিয়েছে। চকলেট মিল্ক শেক, হোয়াইট সস পাস্তা, স্টেক, গলদা চিংড়ি, দু তিন রকমের ফলের জুস, দেশি বিদেশি মিলিয়ে অনেকগুলো রান্নায় সে করেছে। রাত সবগুলো টেস্ট করেছে। অতো আহামরি না হলেও মোটামুটি হয়েছে, যেহেতু এটা শাবিহার প্রথম রান্না। তবুও রাত বোনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। এমনভাবে কমপ্লিমেন্ট দিচ্ছে, যেন এর চেয়ে সুস্বাদু রান্না সে এর আগে কখখনো খায়নি। রাত আর রেহান খাচ্ছিলো টেবিলে বসে। শাবিহা এটা ওটা বেড়ে দিচ্ছে ওঁদের কে। রাত বসতে বললেও, বসছে না ও ওঁদের সাথে। খাওয়া-দাওয়ার পাঠ চুকিয়ে ওরা তিনজন এসে ড্রইং এ বসলো৷ শাবিহা আর রেহান একের পর এক কাহিনি বলেই যাচ্ছে ওঁকে। ওঁদের কথাই শেষ হচ্ছে না। রাত বাইরে যেমনই হোক, ওঁদের দুজনের সাথে খুব ফ্রি। সে মনোযোগ দিয়ে শুনছে ওদের কথা। কথায় কথায় রাত শাবিহার উদ্দেশ্যে জিজ্ঞেস করলো

-“তোর না একটা বয়ফ্রেন্ড ছিলো শাবু? সে কোথায়?”
শাবিহার মুখের হাসি মিলিয়ে যায়। মুখ কালো করে বললো ও
-“আর বয়ফ্রেন্ড! কবেই মারা দিয়ে চলে গেছে! বোনের খোজ নাও তুমি?”
রেহান একটু হা হুতাশ করলো বোনের কষ্টে।শাবিহা এমনিতে এসব কথা বলে না ওঁকে। তবে বড় ভাইয়ের বদৌলতে এসব শুনতে পাচ্ছে ও। এসব প্রেমকাহিনী শুনতে বেশ লাগে ওর, তা যতই বোনের হোক না কেন।
রাত ঠোঁট টিপে হাসি আটকে বললো

কাজলরেখা পর্ব ১৩

-” বলেছিলাম না তোকে! বড় ভাইয়ের কথা না শুনলে এই হয়। কতোবার বলেছিলাম ভেবেচিন্তে পা বাড়া। না, তোমার তো একদম ট্রু লাভ! বিশ্বাস কর, এ দুনিয়ায় ভালোবাসা বলতে কিচ্ছু নাই। সব অভিনয়, স্ক্যাম। একসময় সবাই ছেড়ে চলে যায়। একা বানিয়ে দিয়ে যায় আমাদের কে। মাঝরাস্তা পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে হাতটা ছেড়ে দেয়। আমরা উদভ্রান্তের মতো রাস্তা খুঁজতে থাকি। যে রাস্তাটা একটা মানুষের সাথে পাড়ি দিয়েছি, সে রাস্তা দিয়ে একা ফিরতে আমাদের খুব কষ্ট হয়। মাঝে মাঝে ফিরতে পারি। মাঝে মাঝে একা ফেরা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। এজন্যই সাবধান করেছিলাম তোকে। শুনিস নাই আমার কথা, এখন কষ্ট পা!”

কাজলরেখা পর্ব ১৫

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here