কাজলরেখা পর্ব ২৫
তানজিনা ইসলাম
চাদনী ত্রস্তহাতে চোখ মুছলো। হুড়মুড়িয়ে নামলো বিছানা থেকে। দ্রুত পায়ে বেরিয়ে গেলো কক্ষ ছেড়ে। আঁধার ওর পিছু পিছু ওঁকে ডাকতে ডাকতে আসে। চাদনী ওর ডাক কানেও তোলে না, বারান্দা পেরিয়ে নিজের কক্ষে আসে। কক্ষ তালাবদ্ধ দেখে থেমে যায়। তক্ষুনি আঁধারও এসে দাঁড়ায় ওর পাশে। চাদনীর ভ্রু কুঁচকে তাকালো ওর দিকে।
-“একি! আমার রুমে তালা কেনো?”
-“কারণ আজ থেকে তুই আমার রুমে থাকবি৷ আমার সাথে।”
চাদনী আকস্মিকতায় কিছু বলতে পারলো না। পরক্ষণে ঝাঁঝালো স্বরে বললো
-“তোমার সাথে থাকবো মানে! বললেই হলো।চাবি দাও।”
-“নো, চাবি দিব না। তোকে আমার সাথেই থাকতে হবে।স্বামী-স্ত্রী এভাবে আলাদা রুমে থাকে না।”
শ্লেষাত্মক হাসলো চাদনী। ব্যঙ্গ করে বললো
-“স্বামী-স্ত্রী! হাহ। হাসালে।সবকিছু তোমার মর্জিমতো হবেনা। নিজেই আমাকে আলাদা একটা রুম দিয়েছো, নিজেই বলেছো তোমার থেকে দুরে থাকতে। আবার এখন নিজেই আমাকে তোমার রুমে তোমার সাথে রাখতে চাচ্ছো? এক মুখে কতো কথা বলো। আবার সব কথা আমাকে শুনতে হবে?”
-“হ্যাঁ, হবেই। আমার সব কথা শুনবি তুই, অক্ষরে অক্ষরে পালন করবি। আমি তোকে আলাদা রুম দিয়েছিলাম, তোর প্রাইভেসির জন্য। কারণ তুই ওই বাড়িতে একা রুমে থাকতি, এখানে আসা মাত্রই অভ্যাস বদলানো কঠিন হয়ে যেতো তোর জন্য।আমি চেয়েছিলাম, এখানে যাতে তোর কোনো সমস্যা না হয়। বাট তুই আমার সমস্যা বাড়িয়ে দিচ্ছিস। আমার কাছে তোর কোনো প্রাইভেসি নেই! তুই প্রাইভেসি ডিজার্ভ করিস না। এখন থেকে যা করবি আমার সামনাসামনি করবি।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
চাদনী চোয়াল শক্ত করে বললো
-“তোমার মনে হচ্ছে না, তুমি বেশিই বাড়াবাড়ি করছো?সবকিছু চাপিয়ে দিচ্ছো তুমি আমার উপর। আমি তোমার সাথে থাকতে চাইছি না।”
-“বাড়াবাড়ির দেখেছিস কী এখনো! তোর চাওয়ার ধার ধারে কে চাদনী। আমি যেটা চাইবো সেটাই হবে, তুই আমার সাথে থাকবি। একই রুমে। নয়তো জোর করে রাখবো।”
চাদনী বসে পরলো মেঝেতে, কক্ষের সামনে। ওর জ্বর এখনো কমেনি। আঁধারের সাথে তর্ক করতে করতে ও ক্লান্ত হয়ে যায়।তবুও জিততে পারে না কখনো। কিন্তু এখন একটু রেস্ট খুব প্রয়োজন ওর। ছোট্ট শরীরটার উপর আর কতো জুলুম যাবে। আর কতো সহ্য করবে ও। চাদনী অসহায় স্বরে বললো
-“খুলে দাও না!রুমটা ছাড়া আমার ভালো লাগে না। কোথাও শান্তি লাগে না। এমনিতেই অশান্তির শেষ নেই। আমাকে একটু একা থাকতে দাও। প্লিজ। একট দয়া করো আমার উপর, আমি তোমার পুতুল না।”
আঁধার চাদনীর হাত ধরে টান দিতে দিতে বললো
-“উঠ, নিচে বসেছিস কেন? তুই যাই বল, যাই কর। তোকে আমার রুমেই থাকতে হবে। উঠ, চাঁদ। ঠান্ডা লাগবে। অনেক জ্বর তোর। ওষুধ খেতে হবে।”
চাদনী উঠে দাঁড়ালো না। আঁধার ওঁকে কোলে তুললো।চাদনী নামতে চায়লো, আঁধারের সাথে পারলো না। বসে যাওয়া গলায় চেঁচালো
-“নামাও আমাকে। নামাও বলছি।”
-“গলার অবস্থা শেষ, তারপরও চিল্লাপাল্লা মাস্ট তাই না। মারবো তোকে আমি!”
চাদনীকে আবারও নিজের কক্ষে নিয়ে গেলো আঁধার। বিছানায় আধশোয়া করে বসিয়ে কোমর পর্যন্ত ব্ল্যাঙ্কেট টেনে দিলো। একহাতে আলতো করে থুঁতনি চেপে ধরে বললো
-“ভালো মেয়ে হয়ে বসে থাক কেমন। আমি খাবার নিয়ে আসছি, কালকে থেকে কিছু খাসনি। নিজের দোষেই খাবারের বদলে মার খেয়েছিস। নিজের কথাটা একটু ভাব, একশো চার ডিগ্রি জ্বর এখনো গায়ে চেপে আছে। একটুও কমতেছে না। তারপরও নরম হচ্ছিস না তুই!”
চাদনী সব কথাকে ইগনোর করে বললো
-“আমার মোবাইল।না,ওটাও জ্বালিয়ে দিয়েছো?”
-“নাহ। জাস্ট একবার আছাড় মেরেছি। স্ক্র্যাচ পরেছে দুটো, স্ক্রিনে। তুই এমনিতেও পাবি না। খোঁজ নিয়ে লাভ নেই। যে ফোন বিপদের সময় কাজে আসে না। সেটা ইউস না করাই ভালো৷”
চাদনী কিছুক্ষণ নিশ্চুপ চেয়ে থাকলো ওর দিকে। ঢোক গিলে বললো
-“ভুল হয়ে গেছে। মানছি, ফোন সাইলেন্ট রাখা উচিত হয়নি।তার শাস্তি কী পাইনি আমি? আর কতো শাস্তি দিতে চাও। সব নিয়ম তো আমার জন্যই। আমার জন্যই সব সীমারেখা। তাই বলে ফোনটাই নিয়ে নিবা। একটু দাও। দেখি। কতক্ষণ একা একা বসে থাকবো।”
চাদনী ভেবেছিলো আঁধার দিবে না। ছেলেটার মন খুব শক্ত। কারো কথায় গলে না। কিন্তু এবারে বেরিয়ে যাওয়ার আগে চাদনীর ফোন ওর হাতে দিয়ে গেলো।
চাদনী প্রথমেই হোয়াটসঅ্যাপে ঢুকলো। রেহান ওঁকে ম্যাসেজ দিয়েছে সাবধানে পৌঁছেছে কিনা। মেসেজের রিপ্লাই না পেয়ে গ্রুপে কলও দিয়েছে। ছেলেটা কখনো ওর মেয়ে ফ্রেন্ডদের সরাসরি কল দেয় না। কিন্তু নাম্বারে ঢুকে, চাদনী কিছুক্ষণ থম মেরে বসে থাকলো৷ যা ভেবেছিলো, আধার সেটাই করেছে। ওর চারটা ফ্রেন্ডকে ব্লক মেরেছে। গ্রুপ থেকে লিভ নিয়েছে। চাদনী ওঁদের সবাইকে আনব্লক করে, রেহান কে রিপ্লাই করলো, ও সাবধানে পৌঁছে গেছে। গ্রুপে যাতে এড করে ওঁকে। আঁধার ওঁকে মেরে ফেলুক, তবুও ও নিজের বন্ধুদের ছাড়তে পারবে না।
একটু পর আঁধার ট্রে হাতে কক্ষে ঢুকলো। ও চাদনীর জন্য চিকেন স্যুপ নিয়ে এসেছে। চাদনীর ঠোঁট কেটে গেছে, শক্ত কিছু খেতে পারবে না। আঁধার নিজেও গতকাল রাতে কিছু খায়নি। চাদনীকে নিয়েই ছিলো সারাক্ষণ। আঁধার ওর সামনে বসলো। স্যুপ হাতে নিয়ে, চামচে তুলে বললো
-“হা কর।”
-“ঠোঁট জ্বলবে তো!”
আঁধার দীর্ঘশ্বাস ফেললো। মুখ কালো করে বললো
-“জ্বললেও কী করবি! খেতে তো হবে। তুই না অনেক স্ট্রং। একটু কষ্ট কর!”
-“আমি স্ট্রং নই, আঁধার ভাই। তুমি আমাকে এভাবে না মারলেও পারতা। শুলে চড়ানোর মতো অপরাধ তো আমি করিনি।”
চাদনী ভাঙা গলায় বললো। আঁধারের বলার কিছুই থাকলো৷ চাদনী বহু কষ্টে প্রথম চামচ খেলো। মুহুর্তেই ঠোঁটে চিনচিনে ব্যাথা শুরু হয়। চাদনী জ্বিভ দিয়ে বারংবার ঠোঁট ভেজায়। মনে হচ্ছে, পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে। আঁধার তাকিয়ে থাকলো ওর দিকে। প্রথমবার অনুশোচনায় দগ্ধ হলো ওর হৃদয়। একটা মানুষ ওর জন্য সাচ্ছন্দ্যে খেতে পারছে না। অথচ মানুষটার পুরো জীবনের দায়িত্ব নিয়েছে ও।কেন চাদনীকে দুঃখ ছাড়া কেন কিছুই দিতে পারছে না ও? আঁধার অনেক্ষণ করে খাওয়ালো ওঁকে৷ এন্টিবায়োটিক পেটে পরতেই, ও সবকিছু ওয়াশরুমে গিয়ে ছেড়ে এলো। আঁধারের এত্তো কষ্ট লাগলো, চাদনী বমি করেছে সে জন্য না। ও এতো কষ্ট করে, এতো সময় নিয়ে খাওয়ালো। অথচ চাদনী পেটে কিছুই রাখতে পারলো। চাদনী কাহিল হয়ে শুয়ে পরলো। গলা পর্যন্ত ব্ল্যাঙ্কেট টানতেই আঁধার ওঁকে চেপে ধরে, ধরফরিয়ে বললো
-“চাঁদ, কী হয়েছে তোর? বমি কেন করছিস তুই?”
-“খুশিতে।” কোনোমতে উত্তর দিলো চাদনী।
আঁধার ওঁকে দু’হাতে ঝাপ্টে ধরে আওড়াতে থাকে
-“আই এম সো সরি চাঁদ। আমি অনেক অনেক সরি। আমি জানতাম না তুই এতো কষ্ট পাবি। আমার খুব খারাপ লাগছে, বিশ্বাস কর। ইশ! আমি কেন নিজের রাগটা একটু সামলাতে পারলাম। কেন তোকে মারলাম?”
চাদনী উত্তর দেয় না। ঘুমানোর চেষ্টা করে। ওর মাথা ঘুরছে, পেট মোচড়াচ্ছে। আরও কোথায় কোথায় যে কষ্ট হচ্ছে! জ্বর আসলে সব অসুস্থতা একসাথে চেপে ধরে ওঁকে। আঁধার অনেকটা সময় জড়িয়ে ধরে রাখলো চাদনীকে। ওর চাদনীর অসুস্থতা একটুও ভালো লাগছে না। যখন বুঝলো চাদণি ঘুমিয়ে গেছে, তখন উঠে বসলো। চাদনীর কপালে হাত দিয়ে দেখলো, ত্বক পুড়ে যাচ্ছে। আঁধার গালে হাত দিয়ে বসে থাকে চাদনীর পাশে।
চাদনীর ঘুম ভাঙলো দুপুরে। আঁধার আবারো লিকুইড জাতীয় খাবার খাওয়ালো ওঁকে। ওষুধ খাওয়াতে না খাওয়াতেই ও আবার গিয়ে বমি করে এলো।
আঁধার করুন মুখে বসে আছে বিছানার উপর। চাদনী বিছানার হেডবোর্ডের সাথে হেলান দিয়ে, তাকিয়ে আছে ওর দিকে। আঁধার অনেক কষ্টে আরেকটু খাইয়েছে ওঁকে। তবে ওষুধ খাওয়ায়নি। ওষুধ খেলেই চাদনী বমি করতেছে। আঁধার ভয়ে আছে, চাদনী আবার না বমি করে। ওর এতো অসুস্থতা আঁধারের একটুও ভালো লাগছে না। অনেকটা সময় নিরবতার পর খানিকবাদে আঁধার অস্হির স্বরে বললো
-“এরকম কেন করছিস তুই?”
-“কী করতেছি আমি?” চাদনীর গলা জ্বলছে। কোনোমতে ভাঙা গলায় প্রশ্ন করলো ও।
আঁধার ওর দিকে তাকিয়ে মলিন হেঁসে বললো “প্রেগন্যান্ট মহিলাদের মতো বমি করতেছস। অথচ প্রেগন্যান্ট হওয়ার মতো কিছুই করিনি আমি। এখনো একটা চুমু পর্যন্ত খেতে পারলাম না তোকে।”
চাদনী মুখ ফেরালো। কথাটা লজ্জা পাওয়ার মতো। চাদনী লজ্জা পেলো না। আঁধারের সাথে এখন ওর বিদ্বেষ চলছে। তারউপর ইদানীং আঁধারের কথাগুলো শুনে হয় ওর বিরক্ত লাগে নয়তো রাগ হয়।
চাদনীর মুখটা মলিন। ঠোঁট শুকিয়ে আছে। প্রতি মুহুর্তে শরীরটা অনেক বেশি দূর্বল হয়ে যাচ্ছে।মন-দেহ দুটোর অবস্থা বেহাল, নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারছে না চাদনী। আধার উঠে গেলো ওর কাছে। ওর পাশে বসে বললো
-“আমার না,তোকে একটা চুমু খেতে ইচ্ছে করছে।”
চাদনী বিরক্তিকর দৃষ্টিতে চায়লো। আঁধার ইদানীং বেশি উল্টাপাল্টা কথা বলছে। ও কিছু বললো না। আঁধার আবার বললো
-“চাঁদ, আ’ম সিরিয়াস!মজা করছি না। চুমু খেতে দে, নয়তো জোর করবো!”
চাদনী অনেকটা দূরে সরে গিয়ে বসলো৷ পাংশুটে মুখে বললো
-“মাথা খারাপ হয়ে গেছে তোমার।”
আঁধার আবারো গিয়ে চাদনীকে টেনে আনলো নিজের কাছে।চেপে ধরে, জোর করে শক্ত করে চুমু খেলো ওর ঠোঁটে। ঘটনার আকস্মিকতায় চাদনী হতভম্ব হয়ে যায়। ও ভেবেছিলো আঁধার মজা করছে, যেভাবে সবসময় করে। চাদনী সরাতে চায়লো আঁধারকে, বুকের উপর ধাক্কা বসালো। ওর দুর্বল হাতে আঁধারকে নিজের উপর থেকে এক চুলও সরাতে পারলো না। আঁধার নিজেই ছাড়লো ওঁকে। চাদনী ছাড়া পেতেই মুখের উপর হাত চেপে ধরলো। আচমকা আঁধারের জোর করা নিতে পারলো না ও।
গা গোলাচ্ছে চাঁদনীর। আঁধার কিছু বলবে, তার আগেই ওর গায়ে বমি করে দিলো। আঁধার পাথর হয়ে বসে থাকে। চিৎকার করে কাঁদার ইচ্ছে পোষণ করে ও। চাদনী হাতের উল্টোপিঠ দিয়ে ঠোঁট মুছে,গুটিয়ে গেলো। দুর্বল গলায় বললো
-“মানা করেছিলাম।”
চাদনীর খারাপ লাগলো। মনে হলো আঁধার বোধহয় রাগারাগি করবে। তবে আঁধার কিছু বললো না। ওর হাত টেনে বললো
-“মুখ ধুবি আয়।”
চাদনী নামলো বিছানা ছেড়ে। আঁধার ওঁকে ধরে নিয়ে গেলো বেসিনের সামনে।
-“আর বমি করবি?”
চাদনী মাথা নেড়ে না বোঝায়। ওর গা কাপতেছে। শরীরের ব্যালেন্স রাখতে পারছে না।আঁধার ওঁকে ধরে রাখলো, নয়তে চাদনী নিজের শরীরের ভর নিজেই নিতে পারছে না। আঁধার পানি নিয়ে মুখ মোছালো ওর। আবারো ধরে ধরে বিছানায় নিয়ে গিয়ে বসালো ওঁকে।
আঁধারের আবার গোসল করতে হবে, চাদনী ওর পুরো টিশার্ট বমিতে ভাসিয়ে দিয়েছে।
আঁধার গোসল করে এসে দেখলো, চাদনী ঘুমিয়েছে। ও টাওয়াল দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে জানালার সামনে দাড়ায়। আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখে, গোল চাদ উঠেছে আকাশে সাথে অনেকগুলো ঝলমলে তাঁরা। এক, দুই, তিন চার… আঁধার তারা গোণে।গোণা অসমাপ্ত রেখে চাদনীর দিকে তাকায়।চাদনী ঘুমে কাঁদা। ও আবার এগিয়ে এসে চাদনীর পাশে বসলো। একদিনেই মেয়েটার চোখমুখ বসে গেছে। চোখের নিচে কালি দাগ পরে গেছে। আঁধার হাত বুলালো ওর চুলে। চাদনী চোখ মেলে তাকালো। আঁধার ঝুঁকলো ওর দিকে। নরম স্বরে জানতে চায়লো
-“ভালো লাগছে এখন?”
চাদনী উপর-নীচ মাথা নাড়ে। আঁধার এবার আধশোয়া হলো চাদনীর উপর। ওর মাথার উপর হাত রেখে বললো
-“চাঁদ!”
-“হু।”
-“আই ওয়ান্না লাভ ইউ।”
আঁধার চট করে চুমু খেলো চাদনীর থুঁতনিতে। ঠোঁটের কোণের কাটা অংশে জিভ ছুয়ে চাদনীর দিকে তাকালো। চাদনী ধাক্কা দিয়ে সরাতে চায় ওকে। আর্তনাদ করে বলে
-“কিন্তু আমি চাই না!”
-“তোর মনে হয় না আমাদের সম্পর্কটার প্রোগ্রেস দরকার। আর কতোদিন এভাবে চলবে? আমি মানছি তুই অনেক ছোট। তবুও..। আমি তোকে পেতে পারি না?”
-“না। পারো না। একটা কালির ড্রামের সাথে তুমি সারাজীবন থাকতে পারো না। আমাদের কোনো ভবিষ্যত নেই। আমরা ভবিষ্যতে একসাথে থাকবো কি-না তার কোনো গ্যারান্টি নেই। আমি নিজেকে হারিয়ে ফেলতে চাই না!”
-“তুই আবার আমার ইগো হার্ট করছিস চাদনী! তুই আমাকে ফিরিয়ে দিচ্ছিস। অবজ্ঞা করছিস। কিন্তু তুই ভুলে যাচ্ছিস, আঁধার যেটা চায় সেটা সে নিয়েই ছাড়ে। আমাকে ফেরানোর শক্তি তোর নেই!”
কাজলরেখা পর্ব ২৪
-“তুমি জোর জবরদস্তি করবা আমার সাথে! আমার অসুস্থতাও তোমার উপর প্রভাব ফেলবে না?”
আঁধার হাসলো। চাদনীকে বুকের সাথে শক্ত করে চেপে ধরে বিরবির করে আওড়ালো
-“না। আমি তোকে জোর করবো না। তুই অনেক কাঁদবি। আমি তোর কান্না আর দেখতে পারছি না। আমরা গ্রামে চলে যাবো চাঁদ। এ ইট-পাথরের শহরে আমি নিজেকে হারাই ফেলতেছি রে। অমানুষ হয়ে যাচ্ছি। আমার ভয় লাগে তোকে নিয়ে৷ তোকে নিয়ে আমি আর ভয়ে ভয়ে থাকতে পারবো না। আমি তোকে হারাতে চাই না!”