কালকুঠুরি পর্ব ১৮
sumona khatun mollika
সকাল সকাল ঘুম ভাঙতেই মাহা অনুভব করল,, শরীরটা ভিষণ ভারী লাগছে । চোখ দুটো টেনে আসছে। চারপাশে কেমন ঝাপসা দেখতে পাচ্ছে। খল্প কিছুক্ষণ পর তার খেয়াল হলো যে তার জ্বর এসেছে। চেষ্টা করার পর পড়ার টেবিলের ড্রয়ার থেকে জ্বরের ওষুধ খেয়ে হাতমুখ ধুয়ে নিচে চলে গেল।
ঢুলতে ঢুলতে অসুস্থ শরীর নিয়েই সে রান্নাঘরে চলে গেল। চাচি, মধু ওদের উঠতে উঠতে সকাল ৯ কি ১০ টা বাজবে। এতগুলো দিনে যখনি শরীর খারাপ লেগেছে প্রায়ি চাচিকে বলেছে কিন্তু কাজ হয়নি। অসুস্থ শরীর নিয়েই কাজ করতে হবে। কোনোমতে ভাতের চালটা ধুয়ে দিলেও তরকারিটা আর বসাতে পারলোনা। খুবই খারাপ লাগছে। মুহিব বলল,,
যা তোকে কাজ করতে হবেনা
মাহা মানা করতে করতে মফিদ উদ্দিন মাহাকে ডেকে পাঠালেন,, মাহা উপস্থিত হলে,,
– আচ্ছা শোন,, যতই হোক তোকে পালছি পুষছি আমি। একটা কথা ক রাফির লগেকি তরে বিয়া করতে কেও জোড় করছে?
– না চাচা।
– তোরে ৩ মিনিট সময দিলাম। এর মধ্যে তুই তোর সিদ্ধান্ত বদলানোর সুযোগ পাবি। যদি তুই চাস যে বিয়া করবিনা। তাইলে বিয়া হইতনা৷ ক,,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
মাহার চাচির কানে কথাটা যেতেই তিনি ভুত দেখার মতো চোখমুখ কচলে বললেন,,
– কি কও,, বিয়া প্রায় অদ্দেক হইয়া গেছে। ৪ দিন পর বিয়া।
মফিদ উদ্দিন হাত উচিয়ে তাকে থামতে বললেন৷ মাহাকে আবারো জবাবের ইশারা করতেই মাহা বিনা চিন্তায় জবাব দিল
– আমি শুধু রাফি কেন,, এখন কাওকেই বিয়ে করতে চাইনা চাচা।
মফিদ উদ্দিন রহস্য জনক করে হেসে বললেন,,,
– আমি জানতাম। । সেই জন্যই তরে জিগাইছি। যাহ,, তোর বিয়া ভঙ্গ। ওপরে যাইয়া আরাম কর। সুস্থ হইলে আবার কাম করিস।
চাচির মাথায় আকাশ ভেঙে পরল। হুড়োহুড়ি করে এসে জিজ্ঞেস করল,,
– তুমি এটা কি করলা,, আরে রাফির মতো ছুড়া আর পাবা কই,, অয় কোনোদিনও বাপ হইতনা।
পুরা পরিকল্পনায় মাল ঢেলে দিলা। চুপ করে আছো কেন?
– আরে ধের বাচলেতো বাচ্চা পয়দা করব নাকি!
– মানে! তুমি কি অরে খু,,,,
– ব্যাঙের বুদ্ধি কুয়া পর্যন্তই। অরে বিয়া দিমুনা৷ পরশুদিনি বাড়িতে কড়কড়া ৩০ লাখ টাকা আইসবে। আর অয় কে জানে কোনে যাইবো! রেডি থাইকো থানায যাইতে হইব মাইয়া হারাইছে কেস করতে।
বলেই তিনি ওপরে উঠে গেলেন,, চাচির চেহারায় কেমন রহস্য ফুটে উঠলো,, তিনি খুশি হয়েও হতে পারলেন না। বিযে দিয়ে পার না করার আগে যদি মাহা মরে যায় তাহলে সব সম্পত্তির মালিক হবে দক্ষিণ গোরস্থান সংলগ্ন এতিমখানার৷
তিনি কপালে আঙুল চেপে বসে রইলেন।
মাহা জ্বরের ঘোরে সব ঝাপসা দেখতে পাচ্ছে। আগামী পরশুদিন ভার্সিটিতে কি একটা প্রোগ্রাম আছে। সম্ভবত ভাইস প্রিন্সিপাল এর জন্মদিন। সবাইকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছিল। মাহা যেহেতু খুবই অসুস্থ,, তাই চিন্তা করল সে যাবেনা। কাঁপা হাতে ফোনটা তুলে কল লাগালো ক্লাসের সিআর কে। কল রিসিভ করল এক ছেলে। মাহা জবাব করল,,
– ভাইয়া, আসসালামু আলাইকুম। আমি মাহাদিবা ফারনাজ মাহা। ভাইয়া আমি খুবই অসুস্থ। আমি সম্ভবত পরশুদিন উপস্থিত থাকতে পারবনা। আগে থেকে জানিয়ে দিচ্ছি।
– ঠিকাছে,
বলেই কল কাট করে দিল। মাহার কেমন মনে হলো আজকে সিআর এর কণ্ঠ কেমন অন্য রকম শোনালো,, সেই কল ধরেছিল তো?? মাহার সন্দেহ টা ঠিক। তাদের ক্লাস সিআর কল রিসিভ করেনি। কল ধরেছে সামির সিকান্দার। জ্বরের ঘোরে মাহা কণ্ঠ শনাক্ত করতে পারে নাই।
পরেরদিন বাড়িতে দুচারজন লোক আসে। চেনা মুখশ্রী। রাগিব দেওয়ান, শায়েখ, আর এক সুন্দরী মেয়ে সে রাগিব দেওয়ান এর স্ত্রী। বয়স ৩০ এর কাছাকাছি। তার নাম সোনালী সে সোজা মাহার চাচির সাথে কথা বলছে।
এতখনে হয়তো বুঝে গেছেন মাহার চাচা রাগিব দেওয়ান এর কাছে মাহাকে বিক্রি করে দেবে। আর যে একবার রাগিব দেওয়ান এর কাছে যায়,, সে আর জিবীত ফেরেনা।
রাগিব বলে গেল আগামীকাল শুক্রবার,, সকালবেলাতে মাহাকে যেন ক্লাবে দিয়ে আসা হয়। মাহার চাচা রাজি হয়ে গেলেন। রাগিবসহ বাকিরা চলে গেলে মুহিব জিজ্ঞেস করল,
– ওরা কেন এসেছিল?
– দেখা করতে।
যোগ্য জবাব না পেয়ে মুহিব ওপরে উঠে যেতে যেতে ইনকামিং কল রিসিভ করল। সামির ফোন করেছে। কল ধরতেই সামির কাশধরা গলায় বলল,,
– কি বাঙ্গি?? তোর বইন কি টপকাই গেছে?
– নাতো ভাই।
– সি আর এর কল আমি তুলছিলাম। তুই আবার কল দিয়া কইয়া দিস৷
– আচ্ছা ভাই। ভাই??
– কইয়ালা,,
– ওই রাগিব দেওয়ান এসেছিল বাড়িতে।
– কে?
– নির্বাচন সভাপতি রাগিব দেওয়ান। আর শায়েখ।
কিছুক্ষণ নিরব থেকে সামির আবার বলল,,,
– তুই কালকে বাড়ি থাকবি?
– না ভাই,, আমিতো একটু পরেই নাটোর যাবো ভাবছি ফিরতে কাল সন্ধ্যা হয়ে যাবে।
– ওয়া ভাই,, আচ্ছা,, সাবধানে যাস সোনা। ধিরে সুস্থে ফিরিস।
– আচ্ছা ভাই।
কল কাট হতেই সামির হাই স্পিডে বাড়ি ফিরে গেল। সোজা সাফিনের সামনে দাড়িয়ে,,
– শেষবার জিগাম,, তুমি আমারে বিয়া দিবা কিনা?
– হাঙ্গা করার এতো শখ জাগছে কেন! ঠিকাছে দেখবনি।
– দেখবনি না। আমি কালকেই বিয়ে করব। চলো ওঠো সোডিয়াম ক্লোরাইড এর বাড়ি যাবো। আমাকে চড়ের শোধ তুলা লইগবে।
– মগের মুল্লুক নয়,, সর এখান থেকে। কাজ করছি আমি,, সময় হলে বিয়া দিম। আর ওই চ্যাটাং চ্যাটাং মারানির সাথে বিয়া দিমনা।
– আমিতো অরেই বিয়া করুম। মাইরা হোক ধইরা হোক খুন কইরা হোক,, রোজ একটা চড় খাওয়ার জন্য হলেও আমি সোডিয়াম ক্লোরাইড রেই বিয়া করুম।
– যা খুশি মারাগা,, আমি কিছুতেই অর সাথে তোর বিয়া দিমুনা৷ তোর বিয়া হবে ইনায়ার সাথে। আমি যা বলব তাই। এটা আমার সিদ্ধান্ত।
– মালেরও দাম মেলা নইলে তোমার সিদ্ধান্তে আমি মাল ঢালতাম । আগে আগে দেখ হোতাহে কিয়া।
সামির ধুপধাপ আওয়াজ করে নিচে চলে যায়। সাফিন ঘাড় ঘুরিয়ে একবার দেখে বলে,, ওই মাগি তাইলে এরে জাদু কইরা ফেলায়ছে। আমিও দেখি তুই অরে বিয়া কেমনে করস। আমি কিছুতেই মত দিমনা৷ সিয়াম দড়জার বাইরে দাড়িয়ে ছিল ভেতরে ঢুকে বলল,,,
-ভাই,, সামির কি ঐ ছুড়িকে সত্যি সত্যি ভালোবাসে নাকি? ছুড়ি কিন্তু ভাই যবর জিনিস। মারাত্মক ট্যালেন্ট সাথেই তেজি ঘোড়া।
– আর সামির? কিছুইনা। ফাঁকা কলসি। জেদ ধরেছে। অর চোখে আমি ভালোবাসা দেখিনাই।
– ভাই,, অয়ত সানগ্লাস পইরা ছিল !
সিরিয়াস মোমেন্ট এ আজগুবি কথা বলার জন্য সাফিন বড্ড বিরক্ত হলো। সিয়াম আস্তে করে হেসে বেরিয়ে গেল।
সাফিন একটা দম ফেলে বলল,, আমার জেদে লাভ নেই। সামির যখন ওর পিছে লেগেছে বিয়েত করেই ছাড়বে মনে হয়। যা খুশি করুকগা।
পরেরদিন
সকালে মাহার ঘুম ভাঙে দুমদাম শব্দে। বাহির থেকে দড়জা মনে হয় ভেঙেই ফেলবে। হুড়মুড় করে দড়জা খুলতেই চাচা মফিদ উদ্দিন, পাশের বাড়ির রমিজ কাকা, পেছনে আরো কয়েকজন মানুষ। মাহার মুখ নিকাবযুক্ত সুতির হিজাবে ঢাকা। জ্বর তখনো কমেনি।
চাচি এগিয়ে গিয়ে ঠাস করে মাহার গালে একটা চড় বসিয়ে দিল। শারিরীক দুর্বলতার কারণে মাহা বিছানার ওপর পরে গেল।
মাহা কিছুই বুঝতে পারছেনা হচ্ছে টা কি। তার চিন্তার জট খুলে ঘরের বাথরুম থেকে আওয়াজ এলো। চাচি দড়জা খুলে দিতেই বেরিয়ে এলো মোটামুটি শ্যামলা, তালগাছ মতো লম্বা চওড়া দেহের আউলানো চুলের লুঙ্গি পরিহিত এক ছেলে,, সামির সিকান্দার।
তাকে দেখে চাচার মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। রমিজ কাকার কথা সত্যি হয়ে যায়। তিনি আসার আগে বলেছিলেন তোমাদের মেয়ে পর্দার আড়ালে নোংরামি করে বেরায়। চলো হাতেনাতে ধরব আজ।
মাহার একটু সময় লাগলো পুরো ঘটনা টা আয়ত্ত করতে। রমিজ কাকা এগিয়ে গিয়ে সামিরের কলার চেপে ধরে বলল,,
– তোমারেতো ভালো ভাবছিলাম ছিহ তুমি কিনা,,
সামির অবুজ শিশুর মতো বলল,,
” কি বলছেন কাকা আমার খুব জোড়ে চাপ এসেছিল তাই বাথরুম গেছিলাম। দিবারতো জ্বর ছিল, জ্বরের ঘোরে দড়জা বাইরে থেকে আটকায় দিছিলো।
একেএকে বাড়িতে পুরো পাড়ার লোক জমা হয়ে গেছে। বাতাসে রটিয়ে গেছে মেয়র সাফিন সিকান্দার এর ভাই সামির সিকান্দার , মফিদ উদ্দিন এর ভাইঝির সাথে কুকর্ম করতে গিয়ে ধরা পরেছে।
অতগুলো পাবলিকের সামনেই চাচি মাহাকে অনেক মেরেছে। কেও আটকাচ্ছেনা। মাহার মুখের নিকাবটা খুলে যেতেই সকলের চক্ষু চড়কগাছ! কি অমায়িক সুন্দর দেখতে মাহা। কেও ওপর থেকে আন্দাজো করতে পারবেনা। হুট করে মাহা নিজের নিকাব তুলে নিল। রমিজ কাকা মাহার চাচিকে থামিয়ে মফিদ উদ্দিন কে বললেন,,
– এর একটা বিহিত হওয়া চাই। তোমরা একে অপরের সাথে রাত কাটাইছো,,, তোমাদের বিয়ে করতে হবে। মেয়রকে কেও খবর পাঠাও। মাহা প্রথমে চাচির দিকে তাকিয়ে আকুতি করে বলল,
– বিশ্বাস কর চাচি এটা মিথ্যা কথা, মুহিব ভাই আপনিতো বিশ্বাস করেন, আমি মিথ্যা কথা বলিনা। এরা মিথ্যা বলছে। কি হচ্ছে কেন হচ্ছে কিছুই জানতে পারছিনা।
মুহিব চেয়েও কিছু বললনা। মায়ের ইশারায় চুপ করে রইল।
চাচি ভরা জনতার মাঝেই মাহাকে প্রচুর বাজে বাজে কটুক্তি করতে লাগল। চাচা মফিদ উদ্দিন কিন্তু জানে। এসকল মিথ্যা কথা। বিগত রাতে,, সামির মফিদকে বলেছিল,,
সে মাহাকে বিয়ে করতে চায়। কিন্তু মফিদ কিছুতেই তাতে রাজি নয়। কারণ রাগিব দেওয়ান আর অন্য কারণ সাফিন নিজে কল করে এ ব্যাপারে নাকোজ করতে বলেছে।
মফিদ সামিরকে ফিরিয়ে দিয়েছে। সামির যাওয়ার সময় বলে গেছে,,
-আমি শালা ভুল করে ফেলাইছি,, প্রথম বলেই ছক্কা মারতে হইতো। ব্যাপার না। চ্যালেন্জ তর ইজ্জত বাঙ্গির জুসে ধুমু আমি থাম।
মফিদ জানতো সামির বসে থাকবেনা। তাছাড়া কেনোতো কারণ আছে। যে জন্য সামির সিকান্দার এর মাহাকে কালকের ভেতরেই বিয়ে করতে হবে।
সিকান্দার বাড়ির সকলে উপস্থিত হলো সাফিন চুপচাপ সব শুনল। সিয়াম সামিরকে জিজ্ঞেস করলে সে উমম ম-ম ম-ম বলে জবাবদেয়। রমিজ কাকা এগিয়ে গিয়ে বলেন,,
– সে আর কি জবাব দেবে,, দেখেন আপনাদের ছেলেই যদি এইসব করে বেরায় তাহলে আর ছুড়ারা কি করবে, এর একটা বিহিত করেন।
কাশেম সামিরের কানে কানে বলল,,
– আরেক ঝামেলা আসতেছে ভাই।
বলতে বলতেই মাহবুব উদ্দিন এসে বলল,,
– এসব মিথ্যা কথা। শুধু শুধু মেয়েটাকে অপদস্ত হেয় করছেন আপনারা।
মাহা — আপনি একটু বোঝান না,, এসকল কিছু সাজানো নাটক।
চাচি আবার মাহাকে চড় মারতেই যাবে মাহবুব উদ্দিন তার হাত ধরে ফেলল। তারপর বলল,,
– আপনি এভাবে ওকে মারছেন কেন,, আমি জানি মাহাদিবার কোনো দোষ নাই। থাকতে পারেনা।
তখনি মাহবুব রাদিফ বলে একজন কে ডেকে বলল,,
– এই যে,, একে আমি কালকে এই পাড়ায় ৪ টা বাড়ি পাহারা দিতে বলেছিলাম। কালকেতো ও এখানেই ছিল,,, তুমি বল রাদিফ,, তুমি কালকে সামির সিকান্দার কে কখন দেখেছ,,
ইশশ মারা খাইছে রেহ্। বলে কাশেম সামিরের দিকে তাকালে সামির বামগাল টেনে সামান্য হাসলো। রাদিফ বোমা বিস্ফোরণ এর মতো জবাব দিল,,
– জে,, সামির ভাই…. এর আগেও একদিন বারান্দা টপকে ডুকছিল। কাইলও ঢুকছে মাহা আপায় টাইনা তুলছে। ভয় পাইছিলাম তাই কাওরে কইনাই।
মাহা তার এহেন জবাবে তব্দা খেয়ে যায়। মাহবুব উদ্দিন বিষ্ময়কর দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে। রাদিফ কি সুন্দর করে মিথ্যা কথা বলছে। সে হাজার ভাগ শিওর।
রমিজ কাকা বুক ফুলিয়ে বললেন,,
-দেখছাও,, আমি মাইয়াডার ভালো চাই তাই কইতাছি । বিয়া দেন সব মিটমাট। নইলে এমন দুশ্চরিত্রা মাইযারে কেডায় বিয়া করব?
মাহবুব উদ্দিন গলা উচিয়ে বলল,
– আমি করব বিয়ে। আমি করব। কারণ আমি জানি ও দোষী নয়। আমি মাহাকে ভালোবাসি তাই আমি বিয়ে করব।
তার এহেন জবাবে পুরো সমাবেশ তব্দা খেয়ে গেল। সামির সিকান্দার এবার মুখ খুলে বলল,
-আমি বিয়েতে রাজি। আর মাহার সাথে একমাত্র আমারি বিয়ে হওযা উচিৎ। আর যদি আপনারা সিদ্ধান্ত বদলান ,আমি খারাপ তো? হিরো হিরোইন কে নিয়ে চলে যাক কিন্তু ভিলেনের বাচ্চাটাকে দিয়ে যাক।
মুহিব আকাশভাঙা কণ্ঠে বললো,,
– ভিলেনের বাচ্চা মানে,,,
রনি অপরাধী স্বরে বলল,,
– মানেটা পরিষ্কার,, আমরাও জানতাম সামির ভাই আগেও মাহার সাথে দেখা করত।
সামির চুপ করে রইল। সাফিন তার গালে ঠাস করে একটা চড় মেরে বলল,,,
-এসব সত্যি??
সামির মাথা দোলাল। ,, “হতেই পারে ওর পেটে আমার বাচ্চা আছে, তাছাড়া আমরা একে অপরকে অনেকদিন যাবত পছন্দ করি ”
সবকিছু উপেক্ষা করে সর্বশক্তি দিয়ে সামিরের গালে চড় বসিয়ে দিল। কলার চেপে ধরে ঝাকিয়ে বলর,,,
– মিথ্যে বলছেন কেন? বলুন আগেরবার আপনি শুধু খাতা নিয়ে চলে গেছিলেন,, বলুন আজ যে আপনি এসেছিলেন আমি কি জানতাম.?
চাচি এগিয়ে তার হাত ছাড়িয়ে আবার তাকে এক চড় বসিয়ে দিল। মাহবুব উদ্দিন সামিরের সামনে দাড়িয়ে চোখে চোখ রেখে বলল,,
-সত্যি কথা বলেদিন সামির সিকান্দার,,
– আমি যদি ওরে বিয়া করি তাতে তোর সমস্যা কোই?
– কারণ আমি ওকে ভালোবাসি, আপনি কেন ওকে বিয়ে করবেন?
– কারণটা খুব সোজা,,, আমি ওরে ঘেন্না করি। এন্ড দিস ইজ দা ডিফরেন্ট বিটুইন হিরো এন্ড ভিলেন।
– কিই??
– ঘৃণা বড্ড রেয়ার আইটেম রে ব্রো। ভালুপাসা তো চড়া দামে নিলামেও তোলা যায়
কালকুঠুরি পর্ব ১৭
ততখনে সালার সিকান্দার উপস্থিত হয়ে রায় দিলেন,,
– সামিরের সাথে মাহাদিবার বিয়ে হবে। আর পুরো ঘটনাটা তিনি ঘেটে দেখবেন।
মাহা একবার মফিদ উদ্দিন এর দিকে তাকালো,, তিনিও রাজি হয়ে গেলেন। জোড়ে একটা নিঃশ্বাস ফেলে মাহা মনে মনে ওপরওয়ালার কাছে ধৈর্য চাইতে লাগল
