কালকুঠুরি পর্ব ৯

কালকুঠুরি পর্ব ৯
sumona khatun mollika

ভার্সিটির মাঠে আজো চরম ভির। তবে আজ মাহবুব উদ্দিন এখানে নেই। আসার কথা না। তবে সামিরের ধান্দা ভঙ্গ করে মাহবুব সেখানে উপস্থিত হলো,, কাশেম বলল,,
– শালায় বড্ড শক্ত ভাই।
পেছন থেকে শায়লা নামের তাদের দলের এক মেয়ে বলল,,
– ভাই এটার বোনটাকে সরিয়ে দিআসি? চিরকুটে তো কাজ হয়নি।

সামির তার রঙচটা জিন্সের প্যান্টের পকেটে হাত ভরে বলল,,,
– এ কোনো সাধারণ মানুষ নয়রে শায়লা,,, এহলো দেশের জন্য মারা খেতে রাজি থাকা পাবলিক!!
– তাইলে, রাগিব ভাইয়ের কাম?
– সামির টোপ ফেলেছে,, মাছ গেলেনি এমনটা কখনোই সম্ভব না। ঘটনা একদম ঠিক দিকেই এগোচ্ছে। এতখনে মাল রাজশাহী পার হয়ে গেছে।
শায়লা মাথা নেড়ে বলল,,
– কিভাবে?

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

কাশেম বলল,,
– বুঝতে পারছিস না? বুঝিয়ে দিচ্ছি। ওইযে পড়ে আছে ওটাকে ভাই কাত করেছে,, ভার্সিটি গরম করার জন্য। পানি ঢালতেতো মাহবুব কে আসতেই হতো। আর ওর ছোট বোন,,, সে আর কোনোদিন বাড়ি ফিরবেনা। ভাই কিছু করেনি। তবে রাগিব ভাইযে কিছু করবেনা এটার তো মাইনাস ইনফিনিটি গ্যারেন্টি।
– এ খবর পেয়েছে?
– কে জানে? পেয়েই যাবে।

তখনো মাহবুব জানেনা তার বোন নিখোঁজ। সে তার ফোন বের করে মাহাকে কল লাগালো,,,
– মিস,, মাহাদিবা??
– জ্বি??
– ভার্সিটিতে আছেন?? সৃতি চত্বরে চলে আসুন,, ।
মাহা সেখানেই ছিল,, ভির ঠেলে সামনে এগোতেই মাহবুব হাত উঁচিয়ে ডাকর তাকে।

সামির বলল,,
-এ, কাইশসা,, এই বাঙ্গি কি আবিয়াইত্তা?
– হ ভাই পিওর,,, ।
– তাইলে তো মারা শিওর,,,
– কার ভাই?
– লুঙ্গি যার খুলে তার! ,,

কাশেম বাকা হেসে বলল,,
-চলেন ভাই,, রাগিব ভাই রেস্টুরেন্টে ডেকেছে,,
– আবার ডাকছে ? চ যাই,,

গড়বড়ে ঘটনায় সব একি জায়গায় উপস্হিত এদিকে,, রাগিব, সোমা, সামির আর কাশেম বসে, বাকিরা বাইরে আড্ডা মারছে। আর ঠিক উল্টো পাশে মাহা আর পুলিশ মাহবুব সাথে মেধা আর মুহিবও আছে।
মাহবুব মাহাকে এটাওটা নানান প্রশ্ন করচে তদন্ত সংক্রান্ত। মুহিব খুব ভালো করেই জানে সব সামির সিকান্দার এর কারসাজি। চুপচাপ কথা শুনছে সে।

সমির হঠাৎই রাগিব কে বলর,,,
– কি দেখছ ওভাবে?
– মরণ,,, একটা মারাত্মক জিনিস দেখছি,, তুই কাত হবি কিনা জানিনা তবে আমার কিন্তু চোখ সরছেনা। মুহিবের বোনের চেহারা দেখেছিস?

সামির একটু নড়েচড়ে পেচনে তাকালো,, মাহাকে দেখতেই বাকা হেসে বলল,,
– ইয়া মারহাবা,, লাইনে দাড়াইলো গান্জা বাবা,,
-চোখদুটো দেখেছিস!

সামির তার মুখের সামনে ঘাড় বেকিয়ে মষ্করার সুরে গান করে বলল,,
– হেহেহে,,, দেখেছি প্রথমবাআর
ওই চোখে মরন আমার
টিঙটি টিরিঙ টিঙটি টিরিঙ,,,

– কথায় যুক্তি আছে,,
– একসাথে কয়ডা লাগে? ওই বাঙ্গির বইন কোই?
– হাসপাতালে!
– জিন্দা?
-সম্ভবত না।

কাশেম এক ধ্যানে মেধার দিকে তাকিয়ে আছে,,
মনে মনে ভাবছে,,
– ইসসসস কেনযে গরিব হইলামনা। অন্তত কাইলাতো বানাইতে পারতা খোদা।

রাগিব খেযাল করার পর, বলছে এর আবার কি হয়েচে?
সামির বলল,
– একি ব্যারাম,,,, তফাত শুধু দৃষ্টিকোণের ।
-কেমন?

‎- এ কাইশসার কাইলানি যখন
সামনে দিয়া, রঙিল একটা জামা
পইড়া হাইট্টা যায়,, কাইশসা
ভাইসসা যায়,,,,

কাশেম বলর,,
– টাট্টি মারতেছেন ভাই?
– নানানা,, টাট্টি মারমু কেন!! সিরিয়াস!

কাশেম কিছুই বললনা। তারা উঠে সেখান থেকে বের হয়ে রেস্টুরেন্টের সামনে গিয়ে দাড়ালো। হঠাৎ ৫ -৬ মিনিটের মধ্যে ভেতরে, আগুন লেগেগেল।

অল্প সময়ের মধ্যে জনতা হুড়পাড় শুরু করে দিল। রাগিব ওসব দেখেও কিছু কানে না তোলার ভান করে চলে গেল। কাশেম দৌড়ে ভেতরে চলে গেল। । রনি বাইক চালু করতেই সামির কি একটা ভেবে দৌড়ে ভেতরে চলে গেল,,

একটু পর সামির সাথে করে মুহিব আর মাহাকে সাথে এনে বসিয়ে বলল,,
– শালার দুইজনের দুইজনি আবাল,, আগুনে জ্বলে মরার শখ নাকি!

মুহিব হন্তদন্ত হয়ে মাহাকে জিজ্ঞেস করল,,
– তুই ঠিকাছিস!!

সামির বলল,,
– আরে ও রুপ দিয়ে আগুন নিভিয়ে দিয়েছে। নিজের চিন্তা কর। ভালোই যে গেছিলাম নয়ত ভবিষ্যতের ম্যাজিস্ট্রেট আফুটা পুড়ে যেত!
মাহা সামিরকে ধন্যবাদ জানায়। কিন্তু কেমন বেকিয়ে,,, সামির মনে মনে বরে,,
– শুধু ট্যাকায় না,, মনেও বাঙ্গির নাতনি কৃতজ্ঞতার দিক থেকেো ফকিন্নির ঝি! না বাচালেই ভালো হতো।

এদিকে কাশেম মেধাকে খুজে নাপেয়ে বেহাল! মেধার ডাক শুনে দৌড়ে গিয়ে যখন দেখল মেধা ঠিকাছে,, তার জানে পানি পরল। মেধা তাকে দেখে মনে মনে বলল,,
– ইশশ,, যদি আজ একটু সুন্দর দেখতে হতাম,, কালো না হতাম,, তবে প্রেমে পরতে আমার দ্বিধা হতোনা।
কাশেম কে আবারো দুটো তিতা কথা শুনিয়ে মেধা চলে গেল।।।

বেশ বড় রকম ফাঁড়া কাটানোর পর বাড়িতে এসে
মুহিব মাহাকে আবারো বলল,,
– তোর বিয়েতে অমত থাকলে আমাকে বলতে পারিস।
মহা নিরুত্তর।

সামির বাহির থেকে গিযেই ধাম করে শুয়ে পড়েছে। ঘুমায়নি কিন্তু চোখদুটো এটে কিছু একটা ভেবে নিজেই নিজেই মুচকি মুচকি হাসছিল। নুসরাত হঠাৎ এসে চেক করছিল ঘুমিয়েছে কিনা,,
গায়ে আস্তে করে আঙুল ঠেকিয়ে দেখল না ঘুমিয়ে গেছে। তারপর পা টিপে টিপে,, সামিরের ড্রেসিং টেবিলের কাছে গিয়ে কি একটা খুজতে লাগল,,

তারপর কিচু না পেয়ে চরে যাবার সময় সামির বলল,,
– এই বাঙ্গির নাতনি,,, দেওরার ঘরে চুরি করতে আসছেন? কি নিয়ে যাচ্ছেন ,, তিন কুনাইচা জাইঙ্গা!
– তুমি জেগে আছো?
-হ্যা হ্যা… রাতেরো আধারে, তুমি আইসা চুপি সারে, হাত ছুয়াইয়া ভাইঙ্গা দিলা ঘুউম,,,
আহা কিযে করি, এখন আমি মরি মরি
মনের মাঝে ছড়াইলা পারফিউম,,,

কালকুঠুরি পর্ব ৮

– পারফিউম টাই দেখতে এসেছিলাম,, তুমি কোন ব্রেন্ডের পারফিউম লাগাও?
– আমি? আমি সব চোষা ব্র্যান্ড ইউস করি,, স্পেশালি চোষা লুঙ্গি। আপনার চাই?
-না থাক,
-চিন্তা কইরেন না,,, যেদিন বিয়া করুম, পুরা বাড়ি লুঙ্গি পড়ায়া নাচামু।
– তুমি করবে বিয়ে?
-আচ্ছা,,, ভালো একটা মেয়ে বিয়ে করতে পারলে আমি লুঙ্গি পড়ে নাচব যাও
– ওকে,, ডিল ফাইনাল!

কালকুঠুরি পর্ব ১০

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here