খেয়ালি আমি হেয়ালি তুমি পর্ব ২০

খেয়ালি আমি হেয়ালি তুমি পর্ব ২০
আনিকা আয়াত

“ অর্পণ ভার্সিটি-তে আসেনি?”
ক্লাস ফাঁকি দিয়ে চার বন্ধু-বান্ধব আড্ডা দিচ্ছিল ক্যান্টিনে। কথার তালে তালে তৃধা প্রশ্ন করে বসলো। আজ অর্পণ আসেনি তথাপি আশেপাশে তুষিবের টিকি-টাও দেখা যাচ্ছে না। মোট কথা, অর্পণ অনুপস্থিত মানে তার সঙ্গপাঙ্গ-রাও অনুপস্থিত।
শিহাব কোল থেকে গিটার উঁচিয়ে টেবিলে রেখে জবাব দেয়,
“ না! গ্রুপে ওর পায়ের ছবি দেখিস নি?”
পৃথা কিছু ভেবেই বলল,

“ হ্যাঁ ভোর রাতে টেক্সট দিয়েছিল। আড্ডা গ্রুপে! তাই না? ইশশ! বেচারা পায়ে খুব বাজে ভাবে ব্যথা পেয়েছে। ”
শিহাব হ্যাঁ সূচক মাথা নেড়ে কফিতে চুমুক দিলো। সমুদ্র কাল রাতে ফেসবুকে একটি সুন্দরী মেয়ে পটিয়েছে খুবই সুক্ষ্ম কৌশলে। বন্ধুদের আড্ডা থেকে একটু দূরত্ব বজায় রেখে, এতক্ষণ বসে বসে তার সঙ্গেই প্রেমের আলাপ করছিল। মাঝে সাঝে মুচকি মুচকি হাঁসি তো আছেই। ওরা সবই খেয়াল করলো। পৃথা ভেংচি কেটে বলল,
“ প্লে বয়! দেখিস এই মেয়েও টিকবে না। দুদিন যায় কিনা সন্দেহ। তোর যে পুতুপুতু স্বভাব! আজই পালাবে মেয়েটা। ”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“ শকুনের দোয়ায় গরু এবার ম/রবে না!”
পৃথা কটমট করে তাকায়। অতঃপর সমুদ্র মেয়েটাকে চারটে চুমু ইমোজি দিয়ে লিখল,
“ প্রচন্ড শীত বেইবি। একটা গরম কিস করা যাবে.? তোমার ঠোঁটের স্পর্শে শীত অদূরে পালাবে সুইটহার্ট!”
টেক্সট সেন্ট করেই ফের আবার ব্যস্ত হাতে লিখল,
“ শুনো! এই শীতে কি আমার কম্বল হবে? ”
মেয়েটি লজ্জা মুখো ইমোজি পাঠিয়ে বলল,
“ কি যে বলো আবোলতাবোল! আচ্ছা! কোথায় চুমু খেতে দিবে?”
“ তোমার ইচ্ছে বেইবি! আমার সবই তো তোমার! কিন্তু আমি তোমার একটা জিনিস হতে চাই!”
সমুদ্র রিপ্লাই দিয়ে অপেক্ষা করলো জবাবের। তার পাশের তিন বন্ধু উৎসুক দৃষ্টিতে ফোনের দিকে তাকিয়ে আছে। সমুদ্র কি চায়, তা জানতে খুব কৌতুহল। মেয়েটি ছোট্ট করে রিপ্লাই দিল,

“ কি চাও?”
“ তোমার বক্ষ বিভাজনের ওই কুচকুচে তিল!”
সমুদ্রের মেসেজ দেখে, সঙ্গে সঙ্গে তৃধা, শিহাব উচ্চস্বরে গা কাঁপিয়ে হাঁসলো। বলল,
“ মেয়েটা এবার জোতা মা/রবে তোকে। লু/চ্চা! ”
সমুদ্র রাগী চোখে ওদের শাসিয়ে অপেক্ষা করলো মেয়েটির রিপ্লাইয়ে। সেকেন্ড তিনেক পরেই চট করে সিন করলো। অতপর মেসেজ আসলো ,
“ কু/ত্তার বাচ্চা গু খা। ”

বলেই কটমটিয়ে ব্লক করে দিলো। সমুদ্র মেসেজটা পড়েই হতবাক হয়ে যায়। পৃথা ওর পিঠ চাপড়ে হু হু করে হাঁসছে। ছেলেটাকে নিয়ে তারা ইচ্ছে মতো মজা নিচ্ছে। শিহাবের গা জ্বালা কথা শুনে সমুদ্র তেঁতে উঠে। ব্যাগ খামচে ধরেই হনহনিয়ে বেরিয়ে গেলো,
“ বা/ল। সময় আমারও একদিন আসবে। ” বলেই অদৃশ্য হলো ছেলেটা।
তার হৃদয়ে খুব কষ্ট! মেয়েগুলো তাকে কখন-ই বুঝলো না। আজকাল এই পৃথিবীতে লয়ালিটির দাম নেই। সব মেয়েই লু/চুদের জন্য পা/গল। একদিন বুঝবে, সমুদ্র কতটা খাঁটি ছিল। সেদিন শা/লার মাইয়ারা বালিশে মুখ চেপে কাঁদবে।

সময় গড়ালো কিছুটা! তৃধা আরামে চা খাচ্ছে। এখনও হাঁসি পুরোপুরি থামেনি ওদের। কি মনে হতে, আনমনে হাত থেকে চায়ের কাপটা নামিয়ে ফোন বের করলো। সরাসরি অর্পণের নম্বরে কল করে বলল,
“ ওই বান্দর! কই তুই। ”
অর্পণ বাইকে বসে আকাশ পানে চেয়ে সি/গারেট ফুঁকছে । তৃধার প্রশ্নে লম্বা টান দিয়ে শেষ অংশটুকু ছুঁড়ে ফেললো মাটিতে। পা দিয়ে পিষিয়ে দিতে দিতে বলল,
“ তোর বাসর ঘরে শুয়ে আছি। এনি প্রবলেম?”
মুহূর্তেই চেঁচিয়ে উঠলো তৃধা। বেয়াদবের সাহস কত ফা/লতু কথা বলে। রাগান্বিত গলায় বলল,

“ অসভ্য! প্যাঁচিয়ে কথা বলবি না। ”
“ কিভাবে বলবো?”
“ ভার্সিটি আসিস নি কেনো?”
অর্পণ গা ছাড়া ভঙ্গিতে বলল,
“ তোদের ফষ্টিনষ্টি দেখতে আসবো? সহজ-সরল, অবলা স্যারের সঙ্গে জড়াজড়ি করবি আর আমি শা/লা সিঙ্গেল হতভাগা বসে বসে ওসব দেখবো! ছিহ! দেহ দাউদাউ করে, জ্বলবে আমার। পরে দেখা যাবে, ভয়ংকর জেলাস থেকে তোদের মুখে আ/গুন ধরিয়ে দিয়েছি! তাই দূরে থাকছি। রিক্স নিতে চাচ্ছি না। ”
তৃধা তেঁতে উঠল। চিবিয়ে চিবিয়ে মুখের উপর ফোন কেটে দিলো। টেবিলে ঠাস মে/রে বলল,
“ ওই কুত্তায় আমার মেজাজ খারাপ করে দিয়েছে। অসভ্য! অসভ্য! অসভ্য! কেনো যে, কল করতে গেলাম। ”
পৃথা মুখ ভেংচি কেটে বলল,
“ শা/লা অপদার্থ! জামিল আঙ্কেল পয়দা করছে এক পিস! একদম ঝাল মরিচ। শা/লা একাই সবার মাথা চিবিয়ে খায়। আন্টি সহ্য করে কেমনে! উফ! আমার ভাবতেই মাথা গরম হচ্ছে।”

অর্পণ বাইকে হেলান দিয়ে, পা দুলিয়ে দুলিয়ে পেছনে তাকাল। তুষিব কিছু ছেলেপুলে সঙ্গে নিয়ে প্রতিটি দোকান থেকে চাঁদা তুলছে। আজ রাতে এলাকায় অর্পণের থেকে গানবাজনা, বিরিয়ানি এবং ড্রিংকস-এর পার্টি হবে। যে যত খেতে পারে। পাড়ার সব কিশোর ছেলেরা একটু আগে অর্পণের সঙ্গে প্রত্যেকের কাছ থেকেই চাঁদা তুলছে। কেউ যে, না বললে সে উপায়ও নেই। একটু গাইগুই করলেই, রেগে অর্পণ আশেপাশে যা পাচ্ছে তাই নিয়েই তেড়ে যাচ্ছে,
“ তোর দোকান না থাকলে কামাই করবি কেমনে? এই জায়গা তোর বাপের? টাকা দিবি নইলে, দোকান ভাঙমু। আর কোনোদিন জানি দোকান তুলতে না পারিস, সেই ব্যবস্থাও হইবো। চুপচাপ টাকা দে। নইলে এক কু/প গলা নামায় দিমু। রাতে তোর ছেলেপুলে নিয়া মাঠের পাড়ে উপস্থিত হবি। খাওয়া দাওয়া করে চলে যাইস! ”

ব্যস তুষিবকে চিৎকার করে ডাকতেই হাতে রড, গাছের মোটা ডাল তুলেই দলবল নিয়ে দৌঁড়ে যায় ওরা। দেকানী ভয়ে আর প্রতিত্তোর করতে পারো না। কারণ, অর্পণ যেমন বদমেজাজি, অভদ্র, তেমন-ই মুখে লাগাম নেই। দেখা যাবে লোকসমক্ষে বাপের বয়সী লোকের সঙ্গেও অসভ্যতা করে চুপ করিয়ে দিল। এমন বেলাজ কথা বলবে, যে মুখ লুকানোর জো থাকবে না। তার মধ্যে বাপ হচ্ছে এমপি। সেজন্যই কেউ ঝামেলা করেনা। অযথা, ঝামেলা করলেও যে, লাভ নেই। উল্টো জে/লে ভরে দিতেও পারে।

বেপরোয়া অর্পণ মুখ দিয়ে যা বলবে একবার, তাই করেই ছাড়বে। তাই, তাগড়া যুবক গুলো শান্ত ভাবে টাকা চাইছে, ওদের ওভাবেই বিদায় করা উচিৎ। ভুলেও রাগান্বিত করে দিলে, ফলাফল ভীষণ খারাপ। বর্তমানে এমপির ছন্নছাড়া ছেলে অর্পণের একটা ডাকে শত শত কিশোর ছেলে মুহূর্তেই তার সামনে হাজির হবে। এলাকা গরম করবে তৎক্ষনাৎ! আজও তাই। সবাই একত্রে টাকা তুলে অলরেডি বাজার করতে গেছে। অন্তত মাসে দুইবার সে ছেলেপুলে নিয়ে পার্টি করে। এলাকা জমজমাট রাখাই তার কাজ।
বাইকে বসে সম্পূর্ণ সি/গারেট শেষ করে, দূরে কাজে ব্যস্ত থাকা তুষিবকে উচ্চস্বরে ডাকলো,
“ এদিকে আয় শা/লা।”
তুষিব দৌঁড়ে এলো সঙ্গে সঙ্গে,
“ জ্বি ভাই। ”
“ কাজ কতদূর? বাজার শেষ?”
“ হ ভাই। বাজার শেষ। রান্দা চড়ামু। বক্স ভাড়া করতে গেছে রনি। আইজকা সেই মজা হইবো ভাই। কিযে ভাল্লাগতাসে।”

অর্পণ ছেলেটার কাঁধে চাপ্পড় দিয়ে বাহবা দিল,
“ বাহ! আমার ছোটো! দিন দিন ভালোই আপডেট হচ্ছিস। আমি না থাকলেও একাই সামলাতে পারবি সব?”
তুষিব চঞ্চল সুরে হেঁসে ফেলে। শিরদাঁড়া টানটান করে অর্পণের ভঙ্গি নকল করে বলল,
“ অবশ্য ভাই। একবার খালি কন কি করতে হইবো।”
অর্পণ আরেকটা সি-গারেট ধরিয়ে ঠোঁটের ভাঁজে চেপে ধরলো। জোরে টান দিয়ে বলল,
“ তোর ভাবীরে হারিকেন দিয়ে খুঁজে আমার সামনে নিয়ে আয়। খুব চুম্মাইতে ইচ্ছা করছে তুষিব! শা/লার কু/ত্তা ভাগ্য। তোর ভাবীই নাই। ওর কি কষ্ট হয়না? শীতকালে জামাই ছাড়া একা থাকতে? কি নিষ্ঠুর, পা/ষাণ মহিলা। আমার কিন্তু হেব্বি কষ্ট লাগে। একবার খালি বাঘে পাই। আর দূরে যাইতে দিমুনা।”
তুষিব খিকখিক করে হেঁসে ফেললো। আনমনে বলে উঠে,

“ ভাবীর নাম ঠিকানা কইলে, আমি ভাবীরে আপনার সামনে আনতে পারি। আনুম?”
“ সত্যি আনতে পারবি?”
“ হ ভাই। কস/ম।”
সঙ্গে সঙ্গে অর্পণের মুখটা অসহায় হয়ে গেলো। বাইকে হেলান দিয়ে উদাস কণ্ঠে বলল,
“ কিন্তু আমি তো ওই শা/লীর ঠিকানা-ই জানিনা তুষিব! কেমন হইলো। ”
বলেই মুখ ভোঁতা করে ফের বলল,

“ আজ-ই পুরো দেশে হরতাল ডাক। তোর ভাবী-রে খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত এই হরতাল চলবে। তুই তন্নতন্ন করে খুঁজে, দ্রুত ওই শা/লীর মাথায় ব/ন্দু/ক ঠেকিয়ে আমার নিকট আন। শা/লীর সঙ্গে গত ২৪ বছরের হিসেব নিকেশ আছে। এই ভরা শীতে কিভাবে একা রেখে কষ্ট দিচ্ছে আমায়? রোমান্টিক আবহাওয়ায় কি একা রাত কাটানো যায়? কবুল বলার সঙ্গে সঙ্গে তোরে আমি টাস টাস চড় মা/রবো। আমার থেকে দূরে থাকার জন্য গুনে গুনে দশটা চড়।”
তুষিব হতভম্ব হয়ে গেলো। সে বিষম খেয়ে দৌঁড়ে চলে গেলো দূরে। মনে মনে ভাবলো, ভাই এমন করছে কেনো? হঠাৎ করে কি পা/গল হয়ে গেলো? সারাক্ষণ বউ বউ করছে। কি সাঙ্ঘাতিক।

স্নিগ্ধাকে রিকশায় উঠিয়ে দিয়ে সবে মাত্র হলের দিকে ফিরছিল চেতী। তৎক্ষনাৎ তার পিছু ডাকলো কেউ,
“ এ্যাই চৈতী..! শুনো!”
আকস্মিক ডাকে চট করে ফিরল। সমুদ্র কে উদাস মুখে দেখে কাপল কুঁচকাল,
“ জি ভাইয়া!”
“ কেমন আছো?”
চৈতী সমুদ্রের মতিগতি বুঝে ফেললো। সে হাঁটা শুরু করে দ্রুত গতিতে। অভদ্রতা না হওয়ার জন্য ছোট করে বলল,
“ আলহামদুলিল্লাহ ভালো। আপনি?”

সমুদ্র খুশিতে গদগদ। সে হেলেদুলে তার সঙ্গে তাল মিলাতে মিলাতে বলল,
“ একটু আগে খুব কষ্টে,বেদনায় ছিলাম। এখন তোমাকে দেখে দেহ-মন শান্ত হয়ে গেলো। তুমি সত্যি অনেক সুন্দরী! ”
চৈতী ফোঁস করে নিশ্বাস ফেললো! এই মুহুর্তে উত্তর দেওয়ার ইচ্ছে আপাতত নেই। সে ভালো করেই জানে, সমুদ্র গায়ে পড়ে ভাব জমাতে এসেছে। ও বন্ধুরা সবাই এক। সব গুলো ধান্দাবাজ।
“ দুপুরে খেয়েছ?”
“ না ভাইয়া! হলে ফিরে খাবো।”

“ এখনও না খেয়ে আছ? শুনো চৈতী! ফ্রি থাকলে চলো সামনেই একটা সুন্দর ফাস্টফুড আছে। সেখানে বসে টুকটাক গল্প করলাম সঙ্গে তোমার লাঞ্চ ও হয়ে গেলো। ”
অতন্ত্য খুশি খুশি ভঙ্গিতে বলল সমুদ্র। তৎক্ষনাৎ চৈতী নাকচ করলো,
“ না ভাইয়া ওসবের দরকার নেই। ”
“ আরেহ চলো তো! আমি ট্রিট দেবো।”
চৈতীর বিরক্ত লাগছে এবার। সমুদ্র বার কয়েক রিকোয়েস্ট করতে থাকলো। কিন্তু চৈতী ওসবে পাত্তা না দিয়ে হলের নিকট চলে আসে। পেছন ঘুরে রেগে চিবিয়ে চিবিয়ে, একবার ভাঙ্গা ক্যাসেট সমুদ্র কে কয়টা কড়া কথা শুনানোর আগেই ছেলেটা উচ্চস্বরে বলে উঠে,
“ ওই অর্পণ! তুই এখানে কি করিস?”
বলেই দৌঁড়ে চৈতীকে রেখেই গেইটের সামনে চলে গেলো। চৈতী আকস্মিক অর্পণ নাম শুনে হকচকিয়ে উঠে। হতবিহ্বল হয়ে সামনে তাকাতেই দেখল, নির্বিকার ভাবে ফোন স্ক্রোল করছে ছেলেটা। সমুদ্র নিকটে গিয়েই তার দেহে চড়-ঘু/ষি বসিয়ে দিলো,

“ ভার্সিটি তে না এসে, মহিলা হস্টেলে কি করিস? সত্যি করে বল!”
অর্পণ শান্ত দৃষ্টিতে তাকাল। ততক্ষণে মেয়েটা ধীর পায়ে হেঁটে কাছাকাছি এসেছে। অর্পণ তা লক্ষ্য করে দাঁতে দাঁত চাপলো। সমুদ্রের কলার চেপে নিচু কণ্ঠে বলল,
“ তুই এখনও চুমকির পেছনে পড়ে আছিস? তোকে না আমি সাবধান করেছি। ”
সমুদ্র ভেংচি কেটে হাত ঝামটা মে/রে নিজের কলার ছাড়িয়ে নিলো। এরপর কলার ঠিকঠাক করে খেঁকিয়ে উঠে,
“ নিজের চরকায় তেল দে। শা/লা ধান্দাবাজ। বল তলে তলে কোন মেয়ের মধু খাচ্ছিস। ভার্সিটি মিস দিয়ে, এখানে কেনো?”

“ একদম বাজে কথা বলবি না। সব প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য নই।”
বলেই পিছু ঘুরলো। চৈতী তাদের ওভারটেক করে চলে যাচ্ছি ভেতরে। তৎক্ষনাৎ অর্পণ চেঁচিয়ে উঠে,
“ এক পাও নড়বি না। ওখানেই দাঁড়া চুমকি।”
তৎক্ষনাৎ চমকে উঠে চৈতী ওখানেই দাঁড়িয়ে পড়ল। থতমত খেয়ে পিছু ঘুরে আমতাআমতা করে বলল,
“ আমি কিছু করেছি?”

অর্পণ ধীর পায়ে এগিয়ে এলো। মেয়েটার একদম নিকটে দাঁড়িয়ে ভীতু মুখটা আগাগোড়া পরখ করল। তার চোখ-মুখ গম্ভীর, শক্ত। চৈতী ভয়ে ব্যাগ খামচে ধরছে। মাথা নত করে ফের বলল,
“ দেরিতে ফিরলে খাবার পাওয়া যাবে না। আপনার কিছু বলার থাকলে জলদি বলুন। ”
অর্পণ মেয়েটার ছটফটানি তে টুঁশব্দও করল না। শুধু দুহাত পকেটে গুঁজে থমথমে মুখে দেখতে লাগলো তাকে। ফর্সা গাল খানা মুহূর্তেই লাল বর্ণ ধারণ করেছে। সম্পূর্ণ মুখে ভয়, জড়তা, সংকোচ স্পষ্ট! সে নির্বিকার ভঙ্গিতে চৈতীকে অবলোকন করে চুপচাপ ঠাই দাঁড়াল। এরপর কি মনে হতে বলল,

খেয়ালি আমি হেয়ালি তুমি পর্ব ১৯

“ আজ থেকে ভুলেও সমুদ্রের আশেপাশে জেনো না দেখি। ম/রে গেলেও ওর সঙ্গে কথা বলবি না। সমুদ্র এখানে থাকলে, তুই থাকবি দশহাত দূরে। মনে থাকবে। এক কথায়, সমুদ্র তোর জন্য নিষিদ্ধ। শা/লা এক নম্বর প্লে বয়! ”
বলেই থামল সে। পেছন ফিরে সমুদ্রের শক্ত চোখ-মুখ দেখে গর্জে উঠে,
“ চুমকির বাচ্চা! আমার কথার হেরফের হলেই জানে মে/রে দেবো। ”

খেয়ালি আমি হেয়ালি তুমি পর্ব ২১