টেরিবেল পর্ব ১৮
অনুপ্রভা মেহেরিন
সাত সকালে এডউইনকে ফোন করলেন নাওমি তিনি আসছেন ব্যস এইটুকুই জানালেন।কিন্তু কেন আসছেন?হঠাৎ এই সকালে এখানে আসার উদ্দেশ্য কী?এডউইন প্রচন্ড বিরক্ত হলো আন্দ্রিয়া এখনো ঘুমাচ্ছে মেয়েটার ঘুম ভাঙাতে একটুও ইচ্ছা হলো না এডউইনের।বাধ্য হয়ে নিজেই আগে ফ্রেশ হয়ে আন্দ্রিয়াকে ঘুম থেকে তুলল।ঘড়ির কাটা মাত্র সাতটা ছুঁয়েছে ঘন অরণ্যে এখনো পরিপূর্ণ আলো এসে পৌঁছায়নি আন্দ্রিয়া হাত মুখ ধুয়ে সোফায় পা গুটিয়ে বসল ততক্ষণে এডউইন কফি হাতে হাজির।
” এডউইন মামনি কেন আসবেন?”
” জানি না।”
” আমি উনার সামনে শুধু ওড়না পরে যাব নাকি?আমি ঢিলেঢালা একটা ফ্রক পরবো নামিয়ে রেখেছি।আপনি কিন্তু কিছু বলবেন না।”
” বলব না।”
আন্দ্রিয়া কফিতে চুমুক দিল।উঠে দাঁড়িয়ে কাঁচের দেয়ালে ঝুলে থাকা ভারি পর্দাগুলো সরিয়ে দিল।কি অপরূপ সৌন্দর্য অবলোকন হচ্ছে!অদূরে দেখা যাচ্ছে গুচ্ছ গুচ্ছ সাদা ফুল এই ফুলের নাম জানে না আন্দ্রিয়া গতকাল এডউইন বলল এগুলো নাকি জংলি ফুল।
আন্দ্রিয়ার পেছনে এসে দাঁড়াল এডউইন ছুঁয়ে দিল আন্দ্রিয়ার অনাবৃত দেহ ঠান্ডা হাত পিঠে লাগতেই মুহূর্তে শিউরে উঠল সে।এডউইন পেছন থেকে জড়িয়ে ধরল আন্দ্রিয়ার উদর।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
” মাফিনকে কোলে নিয়ে ঘুমাচ্ছিলে কেন?ওকে আর এই রুমে আনবে না।”
” কেন?ও আমাদের সাথে থাকলে কি সমস্যা?”
” ও আমার ভাগ নিচ্ছে কেন?আমি শুধু তোমার বুকে থাকব কোলে থাকব আর কেউ থাকবে না।”
আন্দ্রিয়া খিলখিলিয়ে হেসে উঠে।এডউইনের সম্মুখে ঘুরে টেনে দেয় তার লম্বা নাক।
” এডউইন মাফিনকে নিয়ে জেলস আপনি?”
এডউইন কেমন করে যেন হাসল।আন্দ্রিয়ার কাছে কিঞ্চিৎ এগিয়ে যেতে কাচের দেয়ালে ঠেকে গেল আন্দ্রিয়ার পিঠ এডউইন আন্দ্রিয়ার গলায় ঠোঁট ছুঁইয়ে দিল মুহূর্তে ঘোরে পড়ল আন্দ্রিয়া এডউইননের আচমকা ছোঁয়াছুঁয়ি সে কখনো বারণ করতে পারে না এই ছেলেটা কি জাদু জানে?তার এসব কার্যকলাপ আন্দ্রিয়ার ভালো লাগে কেন?কেন বার বার আবেশে জড়িয়ে যায়।এডউইন আন্দ্রিয়ার কোমড় জড়িয়ে ধরল কানের কাছে মুখ নিয়ে অতি বিমর্ষ কণ্ঠে বলল,
” আন্দ্রিয়া মেরি,মাই কুইন মাফিনকে আমার অপ্রিয় হতে বাধ্য করো না।আমি আমার অপ্রিয়কে নিজ হাতে হত্যা করি।”
আন্দ্রিয়ার বুকটা ধক করে উঠল।তার প্রশ্নবিদ্ধ চাহনি এডউইন ধরতে পারল তবে মেয়েটা প্রশ্ন করার আগেই এডউইন ঠোঁটে ঠোঁট মেশাল তার এই কার্যক্রম আন্দ্রিয়া হয়তো বুঝতে পারেনি কিন্তু কুটিল এডউইন আন্দ্রিয়ার মুখ বন্ধ করতেই এ মুহূর্তে আন্দ্রিয়াকে নিজের সাথে ঘনিষ্ট করে নিয়েছে।এডউইন মুহূর্তে বেপরোয়া হয়ে উঠল টেনে সরিয়ে ফেলল আন্দ্রিয়ার গায়ের ওড়না আন্দ্রিয়াকে কোলে তুলতেই বেলের শব্দ কানে এলো।দ্রুত সতর্ক হলো দুজনে নাওমি চলে এসেছে।
নাওমির আগমনে এডউইন যতটা বিরক্ত নেহালেকে দেখে তার বিরক্ত চরম মাত্রায় বাড়ল ঘুমন্ত ফোলা মুখ নিয়ে এগিয়ে এলো আন্দ্রিয়া নাওমির সাথে কুশল বিনিময় করে বসল নাওমির পাশে অথচ এডউইন চুপচাপ আন্দ্রিয়াকে টেনে নাওমির পাশ থেকে সরিয়ে তার পাশে বসাল।এডউইনের এমনটা করা কি খুব দরকার ছিল?নাওমির পাশে একটু বসলে কি হতো?এডউইনের মনে যে কি চলে তা একমাত্র তার ঈশ্বর আর সেই জানে।
” আন্দ্রিয়া মুখটা এমন ম্লান লাগছে কেন?”
” সাত সকালে কারো কাঁচা ঘুম ভেঙে দিলে নিশ্চিয়ই তাকে প্রানবন্ত লাগবে না।”
এডউইনের কাছ থেকে জবাব আশা করলেন না নাওমি।ছেলের ত্যাড়া জবাবে নতুন বউয়ের সামনে তিনি বড্ড অপমানবোধ করছেন কিন্তু কি করার?যত দিন যাচ্ছে এডউইনের বেয়াদবি বেড়েই চলছে।
” আমি দরকারে এসেছি।আজ সারাদিন ব্যস্ত থাকব অবশ্য আজ না পুরো সাপ্তাহে ব্যস্ত থাকব তাই আজকেই চলে এলাম।”
” এসেছো ভালো করেছো সাথে এসব কর্মচারী আনার কি দরকার?”
এডউইন যে কথাটা নেহালকে উদ্দেশ্য করে বলেছে তা উপস্থিত সকলেই বুঝতে পারল।অপমানে রক্তিম হয়ে উঠল নেহালের মুখ।নেহাল বসা থেকে দাঁড়িয়ে চেচিয়ে এডউইনকে বলল,
” এডউইন মুখ সামলে কথা বলো।আমি তোমার মামা হই।”
” সো হোয়াট?তোমাকে এখন কর্মচারীর চেয়ে কম লাগে না।সমাজ সেবিকা নাওমির পেছন পেছন সারাক্ষণ হাঁটাই তো তোমার কাজ।ওহ হ্যাঁ আরেকটা কাজ আছে কানে বিষ সাপ্লাই করা।”
” নেহাল আন্দ্রিয়ার সামনে তুমি আমাকে অপমান করছো।”
” তো?এটাকে অপমান বলে?আন্দ্রিয়া ঘরের মানুষ তার সামনে এসব করাকে আদৌ অপমান বলে না।ওর তো জানা দরকার কে কেমন।”
” তাহলে আন্দ্রিয়ারো জানা উচিত এডউইন উইলসন কেমন তার অতীত…”
এডউইন আচমকা রেগে গেল তবে রেগে যাওয়ার মাঝেও তার ভীতু ভাবটা নাওমি বেশ ভালো করেই ধরতে পারল।আচ্ছা এডউইন যে বলল তার ব্যপারে আন্দ্রিয়া সব জানে তবে এডউইন ভয় পাচ্ছে কেন?
এডউইন নেহালকে চেচিয়ে বলে,
” আন্দ্রিয়ার আর কিছু জানা নেই সে সব জানে।এখন শুধু আন্দ্রিয়ার বর্তমান ভবিষ্যৎ ভাবার সময় অন্যকিছু না।”
এত ক্ষণে মুখ খুললেন নাওমি তিনি এডউইনের উদ্দেশ্যে বলেন,
” এডউইন শান্ত হও।তোমাকে আমি তোমার মতো করে ছেড়ে দিয়েছি যা ইচ্ছে করো শুধু এইটুকুই বলব তোমরা সুখী হও।আমরা কেউ তোমাদের বাঁধা হয়ে থাকব না।”
এডউইনের মাঝে কোন ভাবাবেগ দেখা গেল না সে মাথা নিচু করে সাপের ন্যায় ফোঁস ফোঁস করছে।নেহাল চোয়াল শক্ত করে বলে,
” আমি যাচ্ছি আপা।গাড়িতে অপেক্ষা করব।”
নেহাল যেতে নিলে এডউইন কিচেনে দিকের যায় নাওমির জন্য কফি আনবে বলে।এডউইন চলে গেছে এই সুযোগে নাওমি আন্দ্রিয়াকে নিজের পাশে বসে প্রশ্ন করেন,
” আন্দ্রিয়া এডউইন সম্পর্কে তোমার অভিযোগ আছে?”
” না না।অভিযোগ থাকবে কেন?”
” বিয়ের এই কয়দিনে মানে..মানে এডউইনের আচরণ মানে…”
নাওমি কেমন যেন ঘেমে উঠছিলেম তিনি কথা শেষ করার আগেই আন্দ্রিয়া বলে,
” উনি একটু রাগি তবে ভীষণ কেয়ারিং।আপনি চিন্তা করবেন না এডউইন আমার দেখা শোনা করছে।”
” তোমার কথা শুনে বেশ চিন্তা মুক্ত হলাম।এখানে আসার কারণটা বলি, আমি তোমার জন্য কিছু উপহার এনেছি এই গহনা গুলো দেখো।”
আন্দ্রিয়া নাওমি যখন কথায় ব্যস্ত তখন এডউইন কিচেনে না গিয়ে এগিয়ে গেল দরজার নিকট।দরজায় বসে থাকা একটি মাঝারি আকারের জার্মান শেপার্ড কুকুরকে উদ্দেশ্য করে এডউইন শিষ বাজাল এবং ইশারায় দেখিয়ে দিল নেহালকে।প্রভুর আদেশ অতি সন্তপর্ণে বুঝতে পারল কুকুরটি এডউইন বাঁকা হেসে কিচেনে গেল।এডউইন যখন কফি মগ ট্রেতে তুলছিল তখনি কানে ভেসে আসে নেহালের চিৎকার মুহূর্তে এক ঝলক হাসল এডউইন।
আন্দ্রিয়া, নাওমি চিৎকার শুনে ছুটে গিয়ে দেখেন নেহালকে কুকুর কামড়ে ধরে রেখেছে।ভয়ে আন্দ্রিয়ার কাঁপতে শুরু করে তার চোখে ভেসে উঠে গতকালের কথা বুনো বিড়াল আর কুকুরের সেই হিংস্র দৃশ্য আন্দ্রিয়ার মাথা চাড়া দিয়েছে।এডউইন ছুটে এসে নেহালকে বাঁচাল। রক্তাক্ত পায়ে হাঁটার শক্তি মুহূর্তে ফুরিয়ে গেল নেহালের।
মার্ভেলাস প্রতিষ্ঠানের সাপ্তাহিক একটি কাজ পথ শিশু এবং রাস্তায় থাকা মানুষদের এক বেলা আহারের আয়োজন করা।এই কাজে তাদের সবার বেশ আগ্রহ। পথ শিশুরা যখন এক বেলা ভালো খাবার মুখে তুলে তৃপ্তির হাসি দেয় তখনি যেন সমস্ত সুখ হৃদয়ে দোলা দেয়।মঞ্জু রমিজ প্যাকেট পাহারায় ব্যস্ত তাদের সামনে দীর্ঘ লাইন সবাইকে এখান থেকে এক প্যাকেট করে খাবার দেওয়া হবে।ডেরিক মার্টিন এসে কাজ শুরু করল সবার হাতে প্যাকেট তুলে দিচ্ছে এর মাঝেই দশ কি এগারো বছরের সেই ভিক্ষুক টুনি এসে হাজির।ডেরিকের হাত থেকে প্যাকেট নিতেই তার চোখ যায় মঞ্জুর দিকে মঞ্জু অবশ্য টুনিকে দেখেই আড়াল হয়েছিল তবে লাভের লাভ কিছুই হলো না টুনি তাকে দেখে ঠিকি চিনে ফেলল।
” আরে স্যার ভালা আছেন?আমারে চিনছেন?আমি টুনি।”
মার্টিন ভ্রু কুঞ্চিত করে তাকাল মঞ্জুর পানে মঞ্জু এমন চোরা চোরা ভাব করছে কেন?
” কিগো স্যার চিনেন নাই আমারে?একদিন যে টেকা দিলেন আবার আসবেন কইলেন আসলেন না তো।”
মঞ্জু প্রত্যুত্তর করল না।মার্টিন সরু চোখে তাকাল মঞ্জুর পানে,
” মঞ্জু তুমি মেয়েটাকে চেনো?কথা বলছো না কেন ওর সাথে?”
” ইয়ে মানে জি স্যার একদিন টাকা দিয়ে সাহায্য করছিলাম।ফকির তো দেখলেই হইছে খালি টাকার বায়না।”
” কিন্তু মেয়েটা তো এখন টাকা চায়নি।”
মঞ্জু নিজের কথায় নিজেই বেকায়দায় পড়ল মার্টিন যে অত্যন্ত জটিল এবং তীক্ষ্ণ মানুষ তা এতদিনে মঞ্জু ঠিকি বুঝে ফেলেছে তাই সে প্রত্যুত্তর না করে টুনিকে টেনে নিয়ে গেল আড়ালে।মঞ্জুর হঠাৎ ঘাবড়ে যাওয়া ভাবটা ধরতে পেরে আড় চোখে তাকিয়ে রইল মার্টিন।
আন্দ্রিয়া মন খারাপ করে বসে আছে নেহালের সাথে এমনটা কেন হলো?এডউইনের প্রাণিগুলো যদি তাকেও একা পেয়ে আঘাত করে?অবশ্য গতকাল কুকুরটার কারণেই বেঁচে গিয়েছিল সে তবে আজ নেহালের অবস্থা দেখে মনটা কেমন করছে।এডউইন খেয়াল করেছে আন্দ্রিয়ার মন খারাপ মেয়েটার হঠাৎ কি হলো।এদিকে আন্দ্রিয়ার মন খারাপ অন্যদিকে এডউইন ভীষণ খুশি তার সজারু আজ নতুন বাচ্চা দিয়েছে।এডউইনের মাছের একুরিয়ামে হাত চুবিয়ে বসে আছে আন্দ্রিয়া।সে ছোট ছোট রঙিন মাছগুলোকে দেখছে হঠাৎ পায়ের সামনে এসে দাঁড়ায় দুটো সজারু।এই সজারুগুলোকে সে আগে দেখেনি এরা কোথা থেকে এলো?গায়ে কাটা দেখেই তো কেমন গা রি রি করছে।
মাফিন সজারু দুটোকে দেখেই মিয়াও মিয়াও শব্দ তুলল।নাট এসে লেজ গুটিয়ে বসল মাফিনের কাছে।
” এডউইন সজারু আপনার কাছে কি করছে?”
” কেন তোমার পছন্দ না?”
” এসব পছন্দ হওয়ার মতো জিনিস!অবশ্য আমি অবাক হচ্ছি কেন যে ছেলে সাপ পুষে তার কাছে যে আর কি কি থাকতে পারে তা বলার অপেক্ষা থাকে না।”
এডউইন আন্দ্রিয়াকে কোলে তুললো চুপচাপ তাকে নিয়ে প্রবেশ করল কক্ষে পেছন পেছন মাফিন ছুটে এলেও এডউইন ঠাস করে দরজা লাগিয়ে দেয়।
” এডউইন রুমে আনলেন কেন?”
” তোমাকে দেখব।”
” দেখার কি আছে?”
অনেক কিছুই আছে।আন্দ্রিয়াকে শুইয়ে দিয়ে তার পিঠের অংশে জামা তুলে দেখল।কাটা স্থানের ঘা কিছুটা শুকিয়ে এসেছে আন্দ্রিয়ার পিঠে চুমু খেয়ে এডউইন নাক ডোবাল আন্দ্রিয়ার উদরে।
” মন খারাপ কেন কুইন?”
” আপনার মামাকে কুকুরটা কামড়ালো কেন?আমার তো ভয় হচ্ছে কবে জানি আমাকে… ”
” চুপ করো।নিশ্চয়ই মামা কিছু করেছিল তাই কামড়ে দিয়েছে।যেখানে তোমাকে ছোঁয়ার সাহস ওদের নেই সেখানে আঘাত করা তো দূরের কথা।ভুলে যেও না তুমি এই প্যালেসের কুইন।”
এডউইনের ধমকে আন্দ্রিয়া চুপসে যায় সে প্রত্যুত্তর করার সাহস পায় না।
” যাবে আমার সাথে?”
” কোথায়?”
” চলো গেলেই দেখতে পাবে।”
এডউইন আন্দ্রিয়াকে নিয়ে প্যালেসের বাইরে গেল।সবুজ ঘেরা জঙ্গলটায় তারা নিরিবিলি হাটতে শুরু করল আন্দ্রিয়ার অবশ্য বেশ ইচ্ছা ছিল এখানে হাটার তবে সেই সুযোগ হয়নি এডউইন তাকে অনুমতি দেয়নি।হাটতে হাটতে তারা পৌঁছে যায় সেদিনের সেই ঝর্ণার কাছে।গত রাতে বৃষ্টি হয়েছিল তাই ঝর্ণার পানি আগের তুলনায় বেড়ে গেছে।আকাশে ভর করেছে কালো মেঘ সেই সাথে আকাশ ডাকছে।আন্দ্রিয়া চুপচাপ একটি বড় পাথরে বসল এডউইন তার গায়ের জামা খুলে আচমকা ঝাপিয়ে পড়ল ঝিরিতে।পরিষ্কার স্বচ্ছ পানি তার মাঝে এডউইনের জলকেলি কি দারুন!আন্দ্রিয়া মুগ্ধ হয়ে দেখছে তার বিদেশি বরটা একটু বেশি এট্রাকটিভ।এই লোকটাকে কি এখানে মানায়?মোটেও না তাকে মানাবে বরফের দেশে আর না হয় বিজনেসম্যান বেশে অথচ উনি কি না সাপ সজারু নিয়ে পড়ে আছে!
” কুইন আই লাভ ইউ।”
এডউইন আচমকা চেচিয়ে বলল মুহূর্তে আন্দ্রিয়ার ভাবনার দুয়ার ভেঙে গেল।শালোমী এসেছে শুধু শালোমী নয় তার সাথে অনন্য পরীরাও ছুটছে কেউ বা ঝর্নায় গোসল করছে।শালোমী আন্দ্রিয়ার পাশে বসে বলে,
“কিং আপনাকে এতটা ভালোবাসে কেন?”
” জানি না।”
“আন্দ্রিয়া মেরি ভালোবাসায় কেমন সুখ?”
” টক মিষ্টি ঝাল।সব কিছুর সংমিশ্রণে দুর্দান্ত।আচ্ছা শালোমী তুমি ভালোবাসো না কাউকে?পরীরা কার প্রেমে পড়ে?জ্বিনের?”
” ধ্যাত!”
শালোমী কি রাগ করল?আচমকা গায়েব হয়ে গেল সে।সত্যিই তো পরীরা কার প্রেমে পড়ে?এসব উত্তর মিলিয়ে কুল পেল না আন্দ্রিয়া।
আন্দ্রিয়া ধীরে ধীরে ঝিরেতে নেমে দাড়াল এডউইন তাকে দু’একবার ধমক দিলেও সে শুনল না বুক সমান পানিতে নেমে দাঁড়িয়ে রইল।
এডউইন দ্রুত এসে আন্দ্রিয়াকে কোলে নিল।নিজেকে ভাসিয়ে রাখতে আন্দ্রিয়া এডউইনের পেটে বসল এবং কোমড়ে পা জড়িয়ে দিল।এডউইন তাকে নিয়ে গেল গভীর জলে দুজনে ভাসছে কি সুখে! ঝর্ণা ঝিরির মাঝে জলকেলিতে মত্ত দুটি দেহ।
” এডউইন এখানে কেউ আছে?”
” আছে, আমি আর তুমি।”
” ধ্যাত তা জিজ্ঞেস করেছি?বলেছি আপনি আমি ছাড়া কে আছে?”
” কেউ নেই থাকার কথাও না।”
আন্দ্রিয়া পেছনে হাত ঠেকিয়ে ফ্রকের চেন খুলল সাথে সাথে উন্মুক্ত হলো তার পিঠ।এডউইনের ভাবনার বাইরে আন্দ্রিয়া তার লাজ লজ্জা ঠেলে ফ্রকটা টেনে খুলে ফেলল এডউইন বেশ অবাক হলো সেই সাথে ধমক সুরে বলে,
” এই তুমি কি পাগল!”
” আপনি খুললেন আর আমি..”
” বোকা মেয়ে।”
আন্দ্রিয়া এডউইনের কথায় মুখ বাঁকাল তার যেন এসবে কিচ্ছু যায় আসেনা।আন্দ্রিয়ার পরণে শুধু অন্তর্বাস এডউইন বিচলিত হয়ে পড়ল আন্দ্রিয়াকে বারবার ধমক দিয়েও কোন কাজ হচ্ছে না মেয়েটা এডউইনকে জড়িয়ে একাবার সাতার কাটছে আবার জলে ভাসার চেষ্টা করছে।বাধ্য হয়ে এডউইন নিজেই আন্দ্রিয়ার ফ্রকটা পরিয়ে দিল,
” স্থান কাল বিবেচনা করে আমাকে সিডিউস করতে আসবে এসব জায়গায় না।”
” আপনাকে সিডিউস করতে কে এসেছে?হুহ”
টেরিবেল পর্ব ১৭
আন্দ্রিয়া গাল ফুলালো সঙ্গে সঙ্গে এডউইন তার গাল চেপে ঠোঁটে ঠোঁট মেশায়।পাখিদের কলরব ঝর্নার শব্দ তার সাথে উত্তাল দুটি দেহ।আন্দ্রিয়া নিজেকে সামলাতে এডউইনের ঘাড়ে খামছে ধরতে এডউইন নড়ে চড়ে উঠে।সাথে সাথে আন্দ্রিয়ার ঠোঁট ছাড়তে মেয়েটা হাঁপাতে হাঁপাতে এডউইনের বুকে লুটিয়ে যায়।অপরদিকে এডউইন রাগান্বিত হয়ে বলে,
” প্যালেসে চলো তুমি,তোমার এই নখের জ্বালায় রোমান্স করা যাচ্ছে না।”