ডার্কসাইড পর্ব ২০
জাবিন ফোরকান
পরিণীতা রেমান চিত্রলেখা।
আসমানের জীবনের একমাত্র ভালোবাসা এবং স্ত্রী।
ক্লিনিং ক্রুর দুইজন সামনের ফ্লোর থেকে সবকিছু পরিষ্কার করছে। কাচের টুকরো এবং সস ধুয়েমুছে সরিয়ে নিচ্ছে।একদৃষ্টে সেদিকে চেয়ে আছে রোযা।হারিয়েছে নিজের আপন দুনিয়ায়।অপরদিকে চারুলতা কাজের তদারকি করছে।পিনকোড দিয়ে দরজা খোলা হয়েছে কয়েক মিনিট আগেই,এখনো কেউই ঢোকেনি।ক্লিনিং ক্রুর দিকে চেয়ে থাকতে থাকতে বুকের উপর হাত গুটিয়ে চারুলতা আনমনে বিড়বিড় করলো,
– সেদিন রাতে ভাইয়ার কাছ থেকে অনুমতি চাইছিলাম,তোমাকে সত্যিটা বলার জন্য।কিছুতেই রাজী হয়নি।তারপর আমাদের কথা কাটাকাটি থেকে এক পর্যায়ে আবেগের তাড়না প্রকাশ পেয়ে যায়।ওই মুহূর্তেই তুমি গিয়েছিলে।
নিস্তব্ধ রোযা।নিজেকে বিলীন করেছে অচৈতন্যের পৃথিবীতে।মাথা হেলিয়ে তার দিকে ফিরে হাসলো চারুলতা।অদ্ভুত এক বিষাদের হাসি।রোযার কন্ঠে প্রকাশ পেলো মৃদু আখ্যান।
– উনি এখন কোথায়?
দৃষ্টি সরিয়ে নিয়ে সিলিংয়ের দিকে চাইলো চারুলতা।তার গভীর দৃষ্টিতে টলটলে অনুভূতি স্পষ্ট হলো।
– পাড়ি জমিয়েছে বহু দূরে,এই পৃথিবী ছেড়ে…..
নিজের ভেতর শূন্যতা ব্যতীত আর কিছুই অনুভূত হলোনা রোযার।এক হাত চেপে বসলো,বুকের বাম পাশটায়। আঁকড়ে ধরলো নিজের অবাধ্যতাকে।দৃষ্টি নামিয়ে নিলো মেঝেতে।
– যখন সে অনুমতি দেয়নি তখন আমাকে এসব কেনো বললে চারুলতা?
– হুম,কেনো বললাম?আমি নিজেও ভাবছি।হয়ত চাইনি ভাইয়ার সম্পর্কে কোনো ভুল ধারণা নিয়ে বসে থাকো তুমি।তোমার মস্তিষ্কে উদ্ভট চিন্তাভাবনা আসা স্বাভাবিক ছিল।আমি চাইনি এমন একটা মানুষকে তুমি ভুল বোঝো যে নিজের জীবনকে নিয়ে মৃ*ত্যুখেলায় মেতেছে,শুধুমাত্র একটি মানুষের জন্য।
এটুকুই। চারুলতা হেঁটে এগিয়ে গেলো।ক্লিনিং ক্রুর লোকদের দেখিয়ে দিলো আর কোথায় কোথায় পরিষ্কার করতে হবে।যেন নিজেকে ব্যস্ত দেখানোর আপ্রাণ প্রচেষ্টা।রোযার অধিক প্রশ্ন চায়না?আনমনে উল্টো ঘুরে পেন্টহাউজের ভেতরে প্রবেশ করলো রোযা।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
অনুভূতিহীন রোবটের ন্যায় ভেতরে ঢুকেই দৃশ্যটি নজরে পড়ল।যাওয়ার পূর্বেই কাচের দেয়ালের পর্দা সরিয়ে দিয়েছিল।দেয়াল চুঁইয়ে প্রবেশ করেছে দিবাকরের আশীর্বাদ।নতুন দিনের দীপ্তিতে ছেয়েছে আবাসভূমি।সেই দীপ্তির ছোঁয়ায় সিক্ত হয়ে কাউচে গুটিশুটি দিয়ে শুয়ে আছে আসমান। লম্বাদেহী শরীর আটেনি,পা দুটো ভাঁজ করে নিয়েছে।হাত দুটো গুটিয়ে রেখেছে মাথার নিচে।পরিধানে গতকাল রাতে পরে বেরিয়ে যাওয়া হুডি।খোলেনি মাস্ক কিংবা পায়ের বুটজুতো।পোশাকে ছোপ ছোপ রঙের দাগ।ওই অবস্থাতেই শুয়ে আছে,বন্ধ চোখের পাপড়ি।যেন ঘুমপুরীর রাজপুত্র নিদ্রায় আচ্ছন্ন।
আনমনে এগোলো রোযা। হাঁটু মুড়ে বসে পড়লো কাউচের পাশে।একদৃষ্টে তাকিয়ে রইলো দৃশ্যপটে। নিদ্রাজগতে বিচরণরত এক শিশুসুলভ মুখশ্রীর অধিকারী পুরুষ।প্রভাতের স্নিগ্ধ আভায় উদ্ভাসিত তার সমস্ত অবয়ব। বুজে থাকা চোখের পাপড়িজুড়ে শিশিরভেজা ঘাসের কম্পন। ধীরলয়ে উঠানামা করছে বক্ষপিঞ্জর।রোযা বাইরে গিয়েছে তখনো কেউ ছিলোনা।হয়ত ফিরেছে কিছুক্ষণ আগেই,নিজের রুম পর্যন্ত যাওয়ার প্রয়োজনটুকু অনুভব করেনি।এখানেই বিলিয়েছে নিজেকে।এতটাই ক্লান্ত ছিল সে?নাকি হতাশাগ্রস্থ?যন্ত্রণার গাঢ়ত্ব কেড়ে নিয়েছে সকল মানবিক অনুভূতি।এত কিসের যন্ত্রণা তার?
চিত্রলেখাকে হারানোর—
আপনমনে উত্তর পেলো রোযা নিজের হৃদয়ের নিকট।বুকের ভেতরটা কেমন যেন করে উঠলো।কি হলো রোযা বলতেও পারবেনা।নিজের কম্পিত হাত এগিয়ে দিলো,আঙুল ছুঁইয়ে দিলো আসমানের কপালে।ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এলোমেলো রং মিশ্রিত কেশগুচ্ছ গুছিয়ে তুললো।হালকা নড়চড় করে উঠলো আসমান,বন্ধ চোখের পাতা কেঁপে উঠলেও দৃষ্টি মেললোনা।ঘন ভ্রু জোড়া কুচকে গেলো শুধু।তৎক্ষণাৎ নিজের হাত সরিয়ে নিলো রোযা।উঠে গেলো।নিজের রুম থেকে একটি ধূসর চাদর এনে ঢেকে দিলো আসমানের বুক পর্যন্ত।আলতো টানে খুলে নিতে থাকলো পায়ের বুটজোড়া।
সিঁড়ির ধাপ পেরিয়ে নিচে নামতে নামতে দৃশ্যটির দিকে তাকালেন বিলাল।কিছুই উচ্চারণ করলেন না।নিঃশব্দে রোযার পিছনে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেন।পর্যবেক্ষণ করে গেলেন যত্নের সাথে করা মেয়েটির প্রতিটি কাজ। গোঁফের আড়ালে কিঞ্চিৎ হাসির রেখা প্রকাশ পেলো তার।জুতো খুলে আস্তে করে পিছনে ঘুরতেই রোযা তাকে দেখে চমকে উঠলো।আলতো কন্ঠে বললো,
– ব…বাবা?
– রাতে বেরিয়েছিল বাইরে,তাইনা?
দৃষ্টি নত করে নিঃশব্দে সায় জানালো সে।বিলাল একটি নিঃশ্বাস ফেলে বাইরের দিকে চাইলেন।
– ওর রুমের অবস্থা দেখে এসেছি একটু আগে।
নীরব রোযা।উত্তর করা উচিত কিনা বুঝতে পারলোনা।এক হাতে অপর বাহু ধীরে ধীরে ঘষতে থাকলো অস্বস্তিতে।
– কিছু মনে করোনা,আমার ছেলেটা একটু… আবেগী।
আমার ছেলে?— আদতেই কি তাই?কথাটি হওয়া উচিত আমার জামাই।আর আবেগী?নাকি আবেগহীন?কোনটা? রোযা ঠাওর করতে পারলোনা।দ্বিধাদ্বন্দ্বে পরিপূর্ণ মস্তিষ্কে বিড়বিড় করলো,
– আপনি বসুন বাবা,আমি আপনার কফি এনে দিচ্ছি।তারপর ব্রেকফাস্ট করবেন।
এটুকু বলেই সোজা কিচেনে চলে গেলো।হাতে তুলে নিলো শপিং করে আনা জিনিসগুলোর বেঁচে যাওয়া অংশ।কেবিনেট সবকিছু রেখে কফি মেশিনে পানি দিতে দিতে তার দৃষ্টি আপনাআপনি আপতিত হলো হলঘরে। অভাবনীয় দৃশ্যটি নজরে এলো তখনি।
কাউচে আসমানের মাথার কাছে বসেছেন বিলাল।হাত বাড়িয়ে খুলে দিলেন মাথা আবৃত করে থাকা হুডির টুপি।অতি আদর প্রকাশ পাচ্ছে তার প্রতিটি পিতৃসুলভ ছোঁয়ায়।
– গরম লাগছেনা?
মৃদু কন্ঠে প্রশ্ন ছুঁড়তেই মিটমিট করে চাইলো আসমান।এক নজর ঘোলাটে নিদ্রাচ্ছন্ন দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো বিলালের মুখপানে।পরমুহুর্তে কনুইয়ে ভর দিয়ে নিজের শরীর টেনে নিলো,মাথা রাখলো পিতার কোলে।চোখ বুজলো পুনরায়।বিস্তৃত এক হাসির ধারা ছুঁয়ে গেলো বিলালের অধর।বলিষ্ঠ বাহুর হাত তার বয়ে চললো সন্তানের মাথার চুলে,যেন সেই স্পর্শে বিলীন করছেন সকল দুশ্চিন্তা,ধুয়েমুছে সাফ করছেন সকল কদর্যতা।তার কোলে শুয়ে নিশ্চিন্তে নিদ্রাজগতে পাড়ি জমিয়েছে আদুরে সন্তান। বিলাল ঝুঁকলেন, আলতো করে নিজের অধর স্পর্শ করলেন তার মাথায়।
– ঘুমাও আব্বু।ইউ শুড রেস্ট আ লট….
দৃশ্যটির দিকে চেয়ে রোযার গাল বেয়ে অবাধ্য এক ফোঁটা আবেগাশ্রু গড়িয়ে নামলো।অনুভূতির নিগূঢ়তা এতটাই অধিক যে তা আদুরে মিষ্টতায় আচ্ছাদিত করে সমস্ত হৃদয়কে।
– বিলাল বাংলাদেশে এসেছে?
প্রশ্নটি করে স্তম্ভিত হয়ে তাকিয়ে থাকলেন বাদশাহ। উল্টোদিকে বসা আকাশ এবং মাহিন বরফের মতন স্থির। মাহিন চুপ থাকলেও মুহূর্তের মাঝে আকাশ একটি কাগজ এগিয়ে দিলো বাদশাহর দিকে।সেটির দিকে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে রইলেন কে বি সাম্রাজ্যের অধিপতি।
যথারীতি দিবাকর অস্ত যাচ্ছে গগনের পশ্চিম প্রান্তে।পুত্র নাবিলের প্রিয় সময়টায় প্রায়ই এই কেবিনে এসে বসেন বাদশাহ।স্মৃতিচারণ করতে?উহুম।নিজের হৃদয়কে বারংবার মনে করিয়ে দিতে যে ঝড় আসন্ন।সেই ঝড় তটে আছড়ে পড়ার পূর্বেই ঝড়কে আয়ত্বে আনতে হবে।অন্যথায় রচিত হবে ধ্বংসের মহাকাব্য।আকাশের দেয়া কাগজটি টেবিলের উপর থেকে নিয়ে তার ভ্রুজোড়া কুচকে গেলো।মুহূর্তেই কন্ঠস্বর থেকে নির্গত হলো আর্তনাদধ্বনি।
– হোয়াট? হোয়াই? হোয়েন? হাউ?
এতসব প্রশ্নের উত্তরে কয়েক সেকেন্ড নিরবতা পালনের পর দীর্ঘশ্বাস ফেললো আকাশ।মাথা হেলিয়ে জানালো,
– ফ্ল্যামিঙ্গো গ্রুপ আমাদের টেন্ডার ক্যানসেল করেছে।নতুন টেন্ডারের অধিকারী রেমান গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ।শুধু ফ্ল্যামিঙ্গো নয়,আমাদের এই বছরের পাঁচটি টেন্ডারের মধ্যে চারটিই হাতছাড়া হয়েছে।শুধুমাত্র একটি অবশিষ্ট রয়েছে।সবকিছুর ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করলে আমাদের লোকসান গুণতে হবে ৫৯২ কোটি টাকা।এত বড় ক্ষতির মুখ কে বি গ্রুপ কোনোকালেই দেখেনি,ইতিহাসে এই প্রথম।বলা বাহুল্য নয় যে কে বা গ্রুপের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়তে চলেছে।
রিপোর্টের মতন বলা কথাগুলো বাদশাহ কায়সারের কানে আ*ঘা*ত হানলো বজ্রের ন্যায়।তার সমস্ত সম্পত্তির পরিমাণ হাজার কোটি টাকা।কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে এতবড় লোকসান তিনি সামাল দিতে পারবেন।এমন হলে অন্যান্য বিজনেস গ্রুপ এবং প্রোডাক্ট কনজিউমাররা কোম্পানির উপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলব।সেক্ষেত্রে লোকসান হাজার কোটি ছুঁয়ে দেবে অচিরেই।
এমন এক অশুভ মুহূর্তেই এসব হওয়ার দরকার ছিল?কোনদিক সামলাবেন তিনি?নিজের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য নাকি অজ্ঞাত অতীতের আগমন?
ঝুলে পড়লো বাদশাহর মাথা।একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকলেন ফ্লোরের দিকে।কেবিনের বিলাসিতা কিংবা এসির শিরশিরে শীতল বায়ুপ্রবাহও তাকে প্রশান্ত করতে ব্যার্থ হলো।আনমনে প্রশ্ন ছুঁড়লেন,
– এসব হলো কখন?
আকাশ মাহিনের দিকে তাকালো।যদিও ব্যবসায়িক কাজে মাহিন যুক্ত নয়,সে রিসোর্স টিমের হেড।সবধরনের তথ্য তার নিকট থাকা বাধ্যতামূলক।একটি নিঃশ্বাস ফেলে নিজের সাথে নিয়ে আসা তথ্যবহুল ফাইল এগিয়ে দিলো মাহিন।
– গত দুই বছর ধরে,একটু একটু করে সাজানো হয়েছে এই পরিকল্পনা।কে বি গ্রুপের অগোচরে প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপগুলোকে একত্রিত করে ভিন্ন সংগঠন তৈরি করা হয়েছে, অগোচরে।টেন্ডার প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর কায়সার পরিবারের সদস্যদের নানারকম স্ক্যান্ডাল,অতীতের ব্যর্থতা, সন্ত্রাসমূলক কর্মকান্ডসহ সবকিছু মিলিয়ে নেগেটিভ চিত্রধারা প্রদর্শন করা হয়েছে।এক কথায়, অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে পরিকল্পনা করে বর্তমানকে বাস্তবে রূপ দেয়া হয়েছে। আ গ্রেট মাস্টারপ্ল্যান!
– এই মাস্টারপ্ল্যানের মূল হোতা?
– উত্তরটা নিশ্চয়ই আপনার অজানা নয় স্যার।
টেবিলে আঙুল ঠুকতে থাকলেন বাদশাহ।তার অভ্যন্তরে একসাথে এত ধরনের অনুভূতি অনুভূত হচ্ছে যে সম্পূর্ণ অনুভূতিহীন হয়ে পড়েছেন যেন।একটি নামই তার মস্তিষ্ক চিৎকার করে জানান দিচ্ছে, পুরোনো শত্রু…. বিলাল রেমান!কে বি গ্রুপের সঙ্গে টক্কর দেয়ার মতন প্রবণতা এবং ক্ষমতা শুধুমাত্র রেমান গ্রুপেরই রয়েছে।
রেমান বনাম কায়সার। এই শত্রুতা বংশপরম্পরায় আবর্তিত হয়ে এসেছে। কে বি গ্রুপের দাপটে রীতিমত ধুলিস্যাৎ হয়ে গিয়েছিল রেমান গ্রুপ।তাতে দুই প্রজন্ম আগের কর্ণধার বাংলাদেশ থেকে তল্পিতল্পা গুটিয়ে পাড়ি জমিয়েছিল সুদূর ইতালিতে।আগুনে পুড়ে তৈরি হওয়া ছাই থেকে নতুনভাবে জন্ম নেয়া ফিনিক্স পাখির মতোই পুনরায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠে রেমান গ্রুপ, বহু বছর পর।যার কর্ণধার ততদিনে গিয়ে ঠেকেছে বিলাল রেমান পর্যন্ত।
বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত এবং দূরদর্শিতা প্রয়োগ করে পুনরায় নিজের বাবার ভিটা বাংলাদেশে গাছের শিকড়ের মতন ছড়িয়ে পড়তে থাকে রেমান গ্রুপ।অবশ্যই তা মোকাবেলার ব্যবস্থা কে বি গ্রুপ নিয়েছিল, জোর ব্যবস্থা।একেবারে গোড়া থেকে উপড়ে ফেলার।কিন্তু….. ভাগ্যের পরিকল্পনা ভিন্ন ছিল হয়ত।এই ধ্বংসের ময়দানে প্রস্ফুটিত এক নব্য পুষ্পকলির।অতঃপর……
কে বি গ্রুপের অমোঘ বিজয়। রেমান গ্রুপের পুনঃপতনের সম্ভাবনা।তবে এইডসের ভাইরাস হয়ে তা আঁকড়ে বসে আছে কে বি গ্রুপের শরীরে।এতদিন আন্দাজও করা সম্ভব হয়নি।অবশেষে ম*রণকা*মড় দিয়েছে রেমান!
– স্যার?
আকাশের ডাকে বাস্তবতায় ফিরলেন বাদশাহ।একটি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে চেপে ধরলেন কপাল।আর কিছু ভাবতে ইচ্ছুক নন তিনি।আকাশ এক মুহূর্ত নীরব থেকে অতঃপর জানালো,
– আরো একটি খবর রয়েছে।
– আর দুঃসংবাদ ভালো লাগছেনা।
– বলা জরুরী।
হাতের ইশারায় তাচ্ছিল্যভরে আকাশকে কথা জারি রাখতে বললেন বাদশাহ।
– ২১ শে সেপ্টেম্বর, হযরত ফাতিমা কালিম মাদ্রাসা এবং এতিমখানায় রেমান গ্রুপের তরফ থেকে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।হয়ত এটিই আমাদের একমাত্র সুযোগ!
নড়চড় হয়ে বসলেন বাদশাহ।আকাশ এই খবর কোথা থেকে জোগাড় করেছে তা জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজনবোধ করলেন না।ছেলেটি দারুণ করিৎকর্মা।যেখানে ধূ ধূ মরুচর ব্যতীত কিছুই তার নজরে পড়ছিল না সেখানে যেন হঠাৎ করেই জলের ধারার উৎপত্তি ঘটিয়েছে সে।উদগ্রীব হয়ে জানতে চাইলেন,
– মাদ্রাসা?কিন্তু ব্যাপারটা রিস্কি হয়ে যাবেনা?
– হবেনা।আপনি আমার উপর দায়িত্ব ছেড়ে দিন স্যার।বিলাল রেমান যদি ভুলক্রমেও সেখানে উপস্থিত থাকে তাহলে সেটি হবে তার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল সিদ্ধান্ত!
মাহিনের তীর্যক হাসি এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ কণ্ঠস্বরে হৃদয়ে সুখ অনুভূত হলো বাদশাহর।চেয়ারে হেলান দিয়ে দৃষ্টিপাত করলেন সূর্যাস্তে।এই বিলালের একটা ব্যবস্থা করার সঙ্গে সঙ্গে অলিখিত শত্রুরও পতন ঘটবে অচিরেই।
২১ শে সেপ্টেম্বর,পতনের দিন,পুনরায় সেই দিনে রচিত হবে এক মহাইতিহাস…….
– চিত্রলেখা…. নামটি শুনেছ?
মিষ্টি কণ্ঠটি কর্ণকুঠোরে যেন শীষ বাজিয়ে গেলো।ঝট করে ফিরে তাকালো নিহাদ। মারবেল ভবনের রুফটপে এসেছে সে।চেয়ে ছিল সুদূর গগনপানে।পিছনে রোযার অস্তিত্ব তার চেহারায় কিঞ্চিৎ হলেও বিস্ময়ের উৎপত্তি ঘটালো।তার থেকেও অধিক বিহ্বল করে তুললো নামটির উচ্চারণে।পকেটে দুহাত ভরে ফিরল নিহাদ, সরু দৃষ্টিতে জিজ্ঞেস করলো,
– তুমি… জানো?
– হুম?অর্থাৎ তুমিও এই সম্পর্কে অবগত নিহাদ।
দৃষ্টি সরিয়ে নিজের পায়ের জুতোর দিকে তাকালো ছেলেটি। বায়ুপ্রবাহ এলোমেলো করে দিলো চুলের গুচ্ছ।কানের লতিতে দুলতে থাকলো লম্বা চেইনের দুলটি।ধীরপায়ে এগোলো রোযা।তার প্রশান্ত অবয়বে অস্বস্তি হচ্ছে নিহাদের।মুখোমুখি হতে চলেছে সে এক অশুভ অতীতের।ভালোমতই বুঝতে পারলো।
– আমাকে জানানোর প্রয়োজনবোধ করেনি কেউ।
নিহাদকে পাশ কাটিয়ে এক প্রান্তে গিয়ে দাঁড়ালো রোযা।খোলা চুল তার বায়ুর সঙ্গে দোল খাচ্ছে, যেন সমুদ্রে উঠেছে দুর্বার ঢেউমালা।নিশ্চুপ থাকলো নিহাদ।সর্বকালের প্রফুল্লতা তার বিদায় নিয়েছে গতকালই।
– কতদিন ধরে চেনো আসমানকে?
– তোমার চাইতে অনেক বছর আগে থেকে।
তীর্যক রেখায় আবর্তিত হলো নিহাদের ঠোঁট।এগিয়ে গিয়ে জায়গা করে নিলো রোযার পাশে,বুকে হাত ভাঁজ করে রেখে দৃষ্টি নিক্ষেপ করল দূরের এক সুউচ্চ বিল্ডিংয়ে।ম্রিয়মাণ কন্ঠ ভেসে আসতে থাকলো,
– তাহলে নিশ্চয়ই সব জানো?
– উহুম।সব জানিনা।আমিও অন্ধকারে ছিলাম, বহুকাল ধরে।
– চিত্রলেখা, আসমান এবং চারুলতা… এই উপন্যাসের…
– শুরুটা জানি।শেষটা অজানা।তোমার মতন আমিও উদগ্রীব, ফুলটুশী!
প্রথমবার নিহাদের কন্ঠে “ফুলটুশী” শুনে হাসলো রোযা।নিজের একটি হাত বাড়িয়ে ধরলো সে,সঙ্গীর উদ্দেশ্যে।
– তাহলে চলো,উপন্যাসের অন্তিম পাতা পর্যন্ত যাত্রায় একসাথে সামিল হই।
– হাহা…উপন্যাসের রচয়িতা কে হবে?
রোযার হাতে নিজের হাতখানা গুঁজে প্রশ্ন ছুঁড়তেই রহস্যময় এক হাসির প্রবাহ লক্ষ্য করলো নিহাদ।অতঃপর….নিজেকে আবিষ্কার করলো ছাব্বিশ তলায়, চারুলতার ফ্ল্যাটে, সোফায় বসা অবস্থায়, অতীত বর্তমান মুখোমুখি।
– চারুলতা…..
রোযার সম্বোধনে কাচের দেয়ালের কাছে দীর্ঘক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে থাকা চারুলতা ফিরে তাকালো।একবার নিহাদ এবং পরক্ষণে রোযার উপর আপতিত হলো তার গভীর দৃষ্টি।একটি দীর্ঘশ্বাস ভেসে এলো।
– ভাইয়া জানতে পারলে…
– তোমার ভাইয়ার ভালোর জন্যই এই অতীত সামনে আসা জরুরী,চারু।এখানে তার পর কেউ নেই,সবাই আপন।
নিজেকে আপন হিসাবে পরিচয় দিতে অবশ্যই বাঁধছে রোযার।তবুও প্রত্যয়ী সে।দানবের আঁধার অতীতের সাক্ষী হতে চায় তার সমগ্র অস্তিত্ব।হয়ত কোনো লাভ নেই, তবুও…..মানুষটাকে বুঝে ওঠা তো সম্ভব হবে।কিংবা নাইবা হলো তা?জাগতিক যন্ত্রণার আস্ফালন অনুভব করলেও বা ক্ষতি কি জীবনের?আসমানের যে রূপ সে প্রত্যক্ষ করেছে,তারপর অতীত ইতিহাসের রহস্য উদঘাটন তার অনুভূতির জন্য অতীব প্রয়োজনীয়।
– প্লীজ চারুলতা….আমারও অধিকার আছে নিশ্চয়ই?একটু হলেও?
এই প্রথম নিহাদ এতটা আবেগ নিয়ে কথা বললো চারুলতার সঙ্গে।মেয়েটি তাতে টলে উঠলো।কপাল ঘষলো কয়েক সেকেন্ড।তারপর যেন সিদ্ধান্ত বদলালো।ধীরপায়ে এসে বসলো সোফায়।
দিবাকর অস্ত যাচ্ছে,নিজের সবটুকু আভা পৃথিবীর বুক থেকে শুষে নিয়ে।তখনি পর্দা উন্মোচন হতে শুরু করলো এক অমিত উপাখ্যানের। রোযা এবং নিহাদ উভয়ে বিভোর হলো,উপন্যাসের প্রতিটি পাতাজুড়ে, চরিত্রের পর চরিত্র,দৃশ্যপট, আবেগ, অনুভূতি, ভালোবাসা এবং অতঃপর ধ্বংসের রূপকথা।
রাত যত দীর্ঘায়িত হলো,ততই অন্তর হলো বিবর্ণ।বর্ণের বিলুপ্তি ঘটলো, বিদায় নিলো অনুভূতিরাও।কি নাম দেয়া যায় এহেন উপন্যাসের?
“ আসমান ”—হয়ত………
পাঁচ বছর অতীত:
– টুয়েন্টি টু…টুয়েন্টি থ্রি..টুয়েন্টি ফোর…
– পানিপথের যুদ্ধ কত সালে হয়েছিল?
– ১৮৬৬?
– রং আনসার।ফাইভ পুশ আপস এক্সট্রা।নেক্সট, ক্রিস্টোফার কলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কার করার পর সেখানকার আদিবাসীদের নাম কি দিয়েছিলেন?
– ছাতার মাথা!…রেড ইন্ডিয়ান্স?
– হুম।ইখতিয়ার মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খলজি কোন দেশ থেকে ভারত দখলে এসেছিলেন?
– আ…কাজাখস্তান?
– নোপ।
– ইন্দোনেশিয়া?… ইরাক? আফগানিস্তান?
– টেন পুশ আপস প্লাস।
– ড্যাম ইট!
নিহাদের হাত ভেঙে আসছে রীতিমত।শরীর ধরে গিয়েছে।আর সম্ভব নয়।একটুখানি বিশ্রামের আশায় ধড়ফড় করছে বুক।তবুও মুক্তি নেই।তার পিঠের উপর পা গুটিয়ে বসে আছে আসমান।হাতে বই,পাতা খুঁজে খুঁজে প্রশ্ন করছে।ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষা আসন্ন নিহাদের।কিন্তু তাই বলে এমন অভিনব কায়দায় তাকে ধরাশায়ী করতে হবে?কোন দুঃখে যে আজকে জিম বাদ দিয়ে দু ঘন্টা বেশি ঘুমিয়েছিলো!সব ইবলিশ শয়তানের কাজ!
– তোর উপরে ঠাডা পড়ুক ইবলিশ!
– কিছু বললে?
– হ্যাঁ বললাম।তুমি একটা কুমড়াপটাশ আসমান ভাই!এই বাচ্চার উপরে উঠে বসে আছো,হৃদয়ে বাঁধছে না?
– আই অ্যাম অনলি সিক্সটি ফাইভ কেজি।
– অনলি?
জবাব দিলোনা আসমান।পুনরায় ধারণ করেছে নীরবতা।এই বান্দার বুক ফা*টে তবু মুখ ফোটে না।নিহাদের সঙ্গে অবশ্য ভালোই কথা বলে,যা কখনোই অন্যদের ক্ষেত্রে দেখা যায়না।সেজন্য নিহাদ মনে মনে বেশ খুশি।
– দিন দিন দূর্বল হয়ে যাচ্ছ নিহাদ।
শাসনে ঠোঁট ফুলিয়ে পুশ আপ জারি রাখলো সে।মিনিট বিশেক পর মুক্তি মিললো।জিমের ফ্লোরে শুয়ে চিৎ হয়ে জিভ বের করে হাঁপাচ্ছে নিহাদ।দৃষ্টিতে ধোঁয়াশা দেখছে শুধু।আসমান তার বুকের উপর বইটা রেখে দিয়ে বিড়বিড় করলো,
– কমপ্লিট দিস চ্যাপ্টার বায় টুনাইট।
– হোয়াট! ইটস টু হান্ড্রেড পেইজ লং?
– আই ডোন্ট কেয়ার।দ্যাটস ইওর প্রবলেম।
ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে রইল নিহাদ।অপরদিকে আসমান যথারীতি নিজের পানির বোতলে চুমুক দিয়ে এগোলো বাইরে।নির্বিকার দৃষ্টিতে খুঁজতে লাগলো তোয়ালে।সাধারণত বাইরের চেয়ারেই পরে থাকে কয়েকটা।কিন্তু আজ চেয়ার ফাঁকা।
– এটা খুঁজছো?
মেয়েলী কণ্ঠস্বরে ভ্রু উঁচু করে ঘুরে দাঁড়ালো।জিমের অপর রুমের প্রবেশপথের পাশের দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এক রমণী।টাইট এক্সারসাইজ সুটে তার পুষ্ট অবয়ব খুব ভালোমত বোঝা সম্ভব। আওয়ারগ্লাস শেপ বডি,ঠিক যেমন নারীদেহ বাসনা করে অভ্যস্ত যেকোনো পুরুষ।হেলেদুলে এগিয়ে আসলো সে,অনেকটা ফ্যাশন শোর স্টেইজজুড়ে ক্যাটওয়াক করার ভঙ্গিতে। ডান হাতে ঝুলছে একটি সাদা তোয়ালে।
আসমানের কাছে এসে থমকালো।অনুভূতিহীন দৃষ্টিতে তার মুখায়বে চেয়ে থাকলো সে।রমণীর বিস্তৃত অধর উদ্ভাসিত চকচকে এক আভায়।সেই অধর কামড়ে ধরে হাত এগোলো।আসমান তোয়ালে নেয়ার জন্য হাত বাড়ালেও তা এড়িয়ে নিজেই চাপতে আরম্ভ করলো তার ঘাড়।ঘামের ফোটা মুছতে থাকলো,অতি যত্ন সহকারে।তার অপর হাত অবশ্য থমকে রইলোনা। অযাচিতভাবে ছুঁয়ে গেলো আসমানের বুক।ভাগ্যিস আজ এখনো পর্যন্ত টি শার্টটা খুলে ফেলেনি!মনে মনে ভাবলো আসমান।দাঁড়িয়ে থাকলো নির্বিকার পাথর হয়ে।
– যাক বাবা।এক সুন্দরী ললনা এত যত্ন করে শরীর মুছে দিচ্ছে,তাতেও কোনো অনুভূতি ফুটছেনা দৃষ্টিতে!কি ধাতুতে গড়া তুমি?
– আপনি এখানে কি করছেন রাফা ম্যাম?
পাল্টা প্রশ্নে রাফা একগাল হাসলো।অদ্ভুত সুন্দর এক হাসি।যে হাসিতে নিজের হৃদয় মুহূর্তেই হরণ হতে পারে যেকোনো পুরুষের।তথাপি নিটল আসমান।তোয়ালে ফেলে উভয় হাত আসমানের কাঁধে জড়ালো রাফা।হালকা শক্তিতে কাছে টেনে নিয়ে ফিসফিস কন্ঠে জানালো,
– ট্রেনিং নিতে এসেছিলাম।আমার জন্য তোমার এত চিন্তা দেখে ভালো লাগলো।
রাফাকে আসমান বাঁধা দেয়নি,তবুও তার বরফ দৃষ্টিতে ফুটে ওঠা বিতৃষ্ণারেখা দৃষ্টি এড়ালোনা রাফার। বাকা হাসিতে কুঞ্চিত হয়ে উঠল তার পত্রপল্লব ঠোঁট।একটি তর্জনী ছুঁয়ে দিলো আসমানের শ্বেতবর্ণে আবৃত মসৃণ চেহারায়।থামলো ঠিক ঠোঁটের রেখায়।
– ওয়ান্ট টু স্পেন্ড দিস ইভিনিং টুগেদার?
এই নিয়ে কতবার?সর্বদা হিসাবী আসমানও এই প্রশ্ন উচ্চারণের হিসাবটি ঠিক মিলিয়ে উঠতে পারলোনা।মুখ নত করে আলতোভাবে নিজেকে রাফার কবল থেকে মুক্ত করলো।দূরে সরে দাঁড়ালো কয়েক পা।তাতে কিঞ্চিৎ ক্ষেপে কোমরে দুহাত ঝুলিয়ে রাফা প্রতিবাদ জানালো,
– বড্ড বেরসিক তো তুমি!এক নারীর ইশারা বোঝোনা?
– আই কান্ট…. ম্যাম…
– হোয়াই?আর ইউ ইনএক্সপেরিয়েন্সড? ইটস ফাইন, আই উইল টিচ ইউ।
হুট করেই আসমানের টি শার্টের অংশ টেনে ধরলো রাফা,অতঃপর তার হাত প্রবাহিত হলো বস্ত্রের অভ্যন্তরে।শক্ত মাংসপেশিতে ছুঁয়ে গেলো।তীব্র এক বাসনা জাগ্রত হলো অন্তরে।তথাপি জগতের সবথেকে নির্বিকার জড়বস্তু যেন আসমান।তাতে তেঁতে রাফা বলে উঠলো,
– তোমার কি সামান্য অনুভূতিও হয়না?
– না।
সোজাসাপ্টা জবাবে রাফা ভড়কে গিয়ে প্রশ্ন করলো,
– কেনো?
– বিকজ আই অ্যাম এসেক্স্যুয়াল। সো আই কান্ট স্পেন্ড টাইম উইথ ইউ… ম্যাম।
রাফার হাত সরিয়ে উল্টো ঘুরলো আসমান। হেঁটে চলে যেতে থাকলো।রাফা স্পষ্ট দেখলো কিছুক্ষণ আগে তার ছুঁয়ে দেয়া অংশে ঝরঝর করে পানি ঢালছে ছেলেটি,যেন ধুয়েমুছে সাফ করছে অপবিত্রতা।সত্যিই কি এসেক্স্যুয়াল নাকি?নারী পুরুষ কারো প্রতিই অনুভূতি হয়না?
ডার্কসাইড পর্ব ১৯
সে যাই হোক… বান্দা চমৎকার!জগতে রাফার দেখা ওয়ান পিস!সাধে কি মানুষ কি*লিং মেশিন বলে ডাকে?একগাল হাসি নিয়ে চেয়ে থাকলো সে আসমানের চলে যাওয়া পথের দিকে।পথ আর কোথায়ই বা থমকাবে?ঘুরেফিরে ঠিকই এই রাফার নিকটেই থামবে।নিজেকে নিবেদন করবে, সৌন্দর্যের অনন্য দেবীর উদ্দেশ্যে,যার মাধুর্যতার দিওয়ানা শত শত পুরুষ।
