ডার্কসাইড পর্ব ৭

ডার্কসাইড পর্ব ৭
জাবিন ফোরকান

আসমানের দিকে তখনো ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে রয়েছে জোড়াকয়েক হতচকিত দৃষ্টি। কট্টর বাড়িওয়ালী পর্যন্ত বিষয়টি হজম করতে চল্লিশ সেকেন্ডমতন সময় নিলেন।তারপর নিজের চর্বিযুক্ত শরীরের কোমরে হাত দিয়ে মাপা দৃষ্টিতে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
– রসিকতা করা হচ্ছে আমার সঙ্গে?
নির্বাক আসমান।
– এই ছেলে তোমার মতলবটা কি?ধরা পড়ে এখন উল্টোপাল্টা কারণ দর্শানো হচ্ছে?
এবারেও নীরব আসমান।তাতে বাড়িওয়ালী যেন সুপ্ত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ন্যায় উদগিরিত হয়ে উঠলেন।
– স্বামী?বিয়ে হয়েছে আজকে?
– হ্যাঁ।

অবশেষে আসমানের হিমশীতল কন্ঠস্বর ধ্বনিত হলো।একমাত্র বাড়িওয়ালী বাদে উপস্থিত প্রতিবেশীগণ আসমানের অবয়ব লক্ষ্য করে প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাকলেন। সামনের ব্যক্তিকে তাদের রীতিমত বিনা কারণেই কেমন ভীতিকর মনে হচ্ছে।অদ্ভুত একটা প্রভাব আছে তার মাঝে,অশুভ এক প্রভাব।যার দরুণ কেউই চাইবেনা এর সঙ্গে ঝগড়ায় ভিড়তে। বাড়িওয়ালী নিজেও বোধ হয় এতক্ষণে ব্যাপারটি টের পেলো।তাই তার কণ্ঠস্বরের তেজ ক্রমশই ম্রিয়মাণ হয়ে এলো।
– আজকেই বিয়ে করেছ?কোথায়?
– কাজী অফিসে।
– কাবিননামা?
– বন্ধুর কাছে।
– বন্ধুর কাছে কেনো?
– কৈফিয়ত দেয়ার প্রয়োজনবোধ করছিনা।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

বাড়িওয়ালী থতমত খেয়ে গেল।এমন কাটা কাটা জবাব দেয়া কোনো মানুষের মুখোমুখি সে আজ পর্যন্ত হয়নি।সাঁড়াশি দিয়ে চে*পে ধরলেও এই ছেলে প্রয়োজনের অতিরিক্ত এক শব্দও উচ্চারণ করবেনা।প্রয়োজনের অতিরিক্ত আবার কি?এ তো প্রয়োজনীয় কথাটুকুও ঠিকমত বলেনা!
রোযার দিকে কৌতূহলী দৃষ্টিতে চাইলো সকলে।যেন এখন একমাত্র সেই তাদেরকে এমন এক অপ্রীতিকর পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করতে পারে।এতক্ষণ বাকরুদ্ধ হয়ে থাকা রোযা নিজের উপর সকলের দৃষ্টি অনুভব করে যেন ঘোর থেকে বের হলো। আসমানকে স্পর্শ করতে গিয়েও সে করলোনা, হাত সরিয়ে নিয়ে বাকিদের দিকে ফিরে জোরপূর্বক হাসি ফুটিয়ে জানালো,
– হে হে….আজকেই বিয়ে হয়েছে আমাদের, প্রেমের বিয়ে। অত অনুষ্ঠানের সুযোগ ছিলোনা তাই কোর্ট ম্যারেজ করেছি আপাতত।

– নাম কি এর?কি করে?
বাড়িওয়ালী যেন এরপরও নাছোড়বান্দা।তাতে তার উপর সমস্ত আগ্রহ হারিয়ে আসমান সম্পূর্ণ পিছন ঘুরে গেলো।রোযার দিকে চেয়ে বললো,
– আমার ভীষন ক্লান্ত লাগছে। ঘুমাবো।
– এই ছেলে তোমার সাহস কিভাবে হয়….
বলেই বাড়িওয়ালী আসমানের কাঁধে নিজের হাত বসাতে যাচ্ছিলেন,উদ্দেশ্য তাকে জোর করে নিজের দিকে ঘোরানো।কিন্তু অতর্কিতে রোযা তার বাহু মাঝ পথেই পাকড়াও করলো।নির্মল রোযার দৃষ্টিতে ক্ষণিকের জন্য জ্বলে উঠলো দুঃসাহসের অ*গ্নিশিখা।

– আন্টি।আমি আপনার ভাড়াটিয়া,পালিত কুকুর বিড়াল নই। আমি টাকা দিয়ে আপনার ঘরে থাকি। দেরী করে হয়ত ভাড়া পরিশোধ করেছি কিন্তু কোনোদিন একটা টাকাও কমিয়ে দেইনি।
হতবিহ্বল বাড়িওয়ালীর হাতটি ঝটকা দিয়ে সরিয়ে দিলো রোযা।
– যেহেতু টাকা দিয়ে থাকি, ঘরটা আমারই।অন্তত কনট্র্যাক্ট তেমনি বলে।এবং আমার বাড়িতে আমি আমার স্বামীকে নিয়ে আসতেই পারি, তাতে তাকে এত জেরার মুখে পড়তে হবে কেনো?
এক অস্বস্তিকর নীরবতা নেমে এলো সম্পূর্ণ সিঁড়িঘরে।শুধুমাত্র বাইরের প্রকৃতিতে প্রবাহিত ঝোড়ো হাওয়ার শো শো শব্দ ভেসে আসছে। সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠলো রোযা।
– আপনি আমাকে এই মাসের মধ্যে বাড়ি ছেড়ে দিতে বলেছেন, দেবো। কিন্তু লোক জড়ো করে আমাকে অপদস্থ করার প্রচেষ্টা আমি এবার মেনে নিলেও দ্বিতীয়বার ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো।
– কি ব্যবস্থা….

বাড়িওয়ালী উচ্চারণ করার আগেই এবার বাকিরা হস্তক্ষেপ করলো।রোযার স্নেহময়ী আন্টি মহিলাকে ধরে বললেন,
– আচ্ছা আপা, বাদ দিননা।আজকালকার ছেলেমেয়ে, হয়ত পরিবারের অজান্তে বিয়ে করেছে।দুইজনই ক্লান্ত, তাদের যেতে দিন।আর এমনিতেও রোযা তো বেশিদিন থাকছে না এখানে।
তার কথায় একটু শান্ত হলেও গুইসাপের মতন ফোঁসফোঁস করতে থাকলো বাড়িওয়ালী।অপরদিকে আন্টি রোযাকে উদ্দেশ্য করে চোখটিপ দিয়ে জানালেন যে তিনি সামলে নেবেন, রোযা যেন আসমানকে নিয়ে ঘরে চলে যায়। হলোও তাই। আসমান সিঁড়ি বেয়ে উঠতে লাগলো, তবে শেষ মুহূর্তে সে বিড়বিড় করলো,

– কূটনী মহিলা!
– অ্যাই…কি বললে তুমি…!
বাড়িওয়ালী পুনরায় গর্জে উঠছিল কিন্তু তার আগেই আসমানকে পিছন থেকে ঠেলে হনহন করে উপরে উঠে গেলো রোযা। সিঁড়িঘরে প্রতিধ্বনিত হলো বাড়িওয়ালীর কন্ঠস্বর,
– কালকেই তুই আমার বাড়ি থেকে বের হবি রোযা! আর কোনো সময় দেয়া যাবেনা! মনুষ্যত্বের খাতিরে এই ঝড়ের রাতে ঘাড় ধরে রাস্তায় নামিয়ে দিচ্ছি না, মনে রাখিস!
একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলল শুধু রোযা।

আসমানকে নিয়ে ভেতরে ঢুকেই রোযা দরজা আটকে দিলো।অতঃপর ধপ করে বসে পড়লো টেবিলের পাশে রাখা একমাত্র চেয়ারটিতে।দুই হাত মাথায় ঠেকিয়ে চোখের পাতা বুজে ভাবনার জগতে পাড়ি জমালো সে।অপরদিকে আসমান ধীরে ধীরে নজর বুলাতে আরম্ভ করলো চারিদিকে। একটিমাত্র কক্ষ, তার সঙ্গে রয়েছে অ্যাটাচড বাথরুম এবং কিচেন। কিচেন বা রান্নাঘর বলতে শুধুমাত্র ছোট্ট একটি স্থান,তাতে একজন মানুষ আরামদায়কভাবে কাজ করতে পারে কিনা সন্দেহ।কক্ষে আসবাবের সংখ্যায় অত্যন্ত নগণ্য।একটিমাত্র চৌকি, প্লাস্টিকের টেবিল এবং চেয়ার, একটি কাপড়চোপড় রাখার আলমারি এবং ছোটখাট ব্যাগপত্র ব্যাতিত আর কিছু নেই বললেই চলে।তবে একটিমাত্র আসবাব আসমানের দৃষ্টি কাড়লো। কাডবোর্ড দিয়ে তৈরি মাঝারি আকৃতির একটি শেলফের মতন, যাতে ভর্তি রয়েছে বিভিন্ন ধরণের বই পুস্তক।স্থানটি যথেষ্ট পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, যত্ন নেয়া হয় বোঝাই যাচ্ছে।

আসমান চৌকিতে বসতেই পুরোনো কাঠ ক্যাচ ক্যাচ শব্দ করে উঠলো।তাতে নিজের ভাবনার দুনিয়া থেকে বাইরে পদার্পণ করলো রোযা।যেন এতক্ষণে এই কক্ষে সে নিজে বাদে অন্য কারো উপস্থিতি সে আবিষ্কার করেছে।সহসাই বাস্তবতা আঘা*ত করলো যেন তাকে।সে কি করছে? এক দানবকে নিয়ে এসেছে তার সঙ্গে রাত কাটাতে?কি আশ্চর্য!এমন সিদ্ধান্ত নিতে রোযার একবারও বুক কাপলোনা?ঠিক তার আবদ্ধ কক্ষে তারই চৌকির উপর নিঃশব্দে বসে আছে পিশাচটি। যদিও নড়চড় নেই, তবুও তার অশুভ কালোয় আবৃত শরীর এবং র*ক্তপিপাসু দৃষ্টি পরাবাস্তবের বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছে।এর সঙ্গে একটি কক্ষে একটি গোটা রাত কিভাবে অতিবাহিত করবে রোযা? মানুষের যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায় তখন সে কতকিছুই না করতে বাধ্য হয়! এই যেমন হরিণও ফাঁদে পড়ে বাঘের কাছেই সাহায্য চায়!
রোযার ধারণাকে সত্যি প্রমাণিত করতেই যেন হঠাৎ করেই বাইরের বজ্রপাতের সঙ্গে সঙ্গে বাতি নিভে গেলো।লোডশেডিং! হতাশা এবং ক্রোধে আঁধারের মাঝেই রোযা টেবিলে একটা চাপড় মারলো। তৎক্ষণাৎ জ্বলে উঠলো ফ্ল্যাশলাইটের আলো।আসমান নিজের পকেট থেকে ছোট্ট একটা টর্চলাইটের মতন দেখতে ডিভাইস বের করেছে।যে বস্তুটি ছোট হলেও যথেষ্ট শক্তিশালী আলোকরশ্মি নির্গত করে।

– আ….আমি মোমবাতি জ্বালিয়ে দিচ্ছি।
বলে উঠলো রোযা।বিগত কয়েকদিনের আধপো*ড়া মোমবাতি বের করে সে জ্বাললো।ঈষৎ হলদেটে আভায় কক্ষটি ধীরে ধীরে উদ্ভাসিত হয়ে উঠলো।টর্চ নিভিয়ে পকেটে ভরে পুনরায় চুপচাপ বসে রইলো আসমান।তাকিয়ে থাকলো খোলা জানালার ওপাশে দৃশ্যমান আকাশের আলোআধারির লুকোচুরি খেলার পানে। সে কোনোপ্রকার বাক্য বিনিময়ের আগ্রহ না দেখানোয় রোযা চেয়ারে বসে বললো,
– আপনি কালকে সকালেই ফিরে যেতে পারেন।আমিও, একটা ব্যবস্থা করে নেবো।
নির্বিকার আসমান, রোযার কথা শুনেছে কি শোনেনি তাও বোঝা দুষ্কর। রোযা তাই আরেকটু জোর কন্ঠে জানালো,
– আগামীকাল এই বাড়ি আমায় ছাড়তে হবে।

এবারেও নিঃশব্দ আসমান।ওই একই ভঙ্গিতে সে তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে। বাইরের বিদ্যুৎ ঝলকানি এবং কক্ষের মোমবাতির আলো উভয় তার অবয়বে প্রতিফলিত হচ্ছে।অদ্ভুত হলেও সত্য রোযা খানিকক্ষণ সম্মোহিতের মত সেই দৃশ্য উপভোগ করলো।পরক্ষণেই নিজের মাথা ঝাঁকি দিয়ে উঠে পড়ল,
– কোন দুঃখে যে আপনাকে আমার বাসায় এনেছি!এর থেকে বাইরে কোথাও থেকে গেলে ভালো হতো।
এবার আসমান ফিরলো রোযার দিকে, যেন রোযা এতক্ষণে তার মনোযোগ আকর্ষিত করতে সক্ষম হয়েছে।
– কে বি গ্রুপকে আপনি হয়ত চেনেন না, আমি চিনি।
চেয়ার থেকে উঠে পড়ছিল রোযা, এই বক্তব্য শুনে থমকে পড়লো।বাইরের শীতল বায়ুর প্রভাবে তাদের মধ্যকার মোমবাতির শিখা যেন কোমর দুলিয়ে নৃত্যে লিপ্ত হয়েছে।
– আপনি দেশের যে প্রান্তে গিয়েই গা ঢাকা দিন না কেনো, কে বি গ্রুপের এক্সপার্ট হিটটিম সহজেই আপনার অবস্থান চিহ্নিত করতে পারবে।

– আপনি আমাকে ভয় দেখাচ্ছেন কেনো?
রোযার হৃদযন্ত্র স্পন্দিত হতে থাকলো দ্রুতলয়ে।আসমান চৌকি থেকে উঠতেই পুনরায় আহ*ত পশুর মতন আর্তনাদ করে উঠলো আসবাবটি। ধীরপায়ে জানালার কাছে গিয়ে দাঁড়ালো আসমান।
– ভয় দেখাচ্ছি না।সত্যি কথা বলছি।
– আপনি বলতে চাইছেন কে বি গ্রুপের হাত থেকে বেঁচে থাকা আমার পক্ষে অসম্ভব?
– হুম।

বিদ্ধ*স্ত পরাজিত সৈনিকের ন্যায় রোযার মাথাটি ঝুলে পড়লো।নয়নাশ্রু তার শুকিয়েছে বহু পূর্বেই।শুধুমাত্র একটি শীতল আবহ সে অনুভব করছে নিজের চারপাশে।অদৃশ্যমান এক শৃংখল ক্রমেই তাকে আবদ্ধ করে ফেলছে।এই শৃঙ্খলের হাত থেকে কি আদও মুক্তিলাভ সম্ভব? রোযার একার পক্ষে, কোনোদিনও নয়।ঢাকা শহরের বাইরে সে কোথাও আশ্রয় নিতে সমর্থ নয়, নিলেও কে বি গ্রুপের হাত থেকে নিস্তার নেই।সে যদি লুকিয়ে পালিয়ে বেড়াতে চায়, সেক্ষেত্রে তার দাদুর কি হবে?রোযার সন্ধান যখন পেয়েছে তখন তার দাদুর সন্ধান পেতেও দেরী হবেনা।কি করবে রোযা?ভাগ্যের সকল দুয়ার তার জন্য আগেই বন্ধ হয়েছে বলে সে বিশ্বাস করত,কিন্তু আরো অদৃশ্যমান ভীতিকর দুয়ার যে এতদিন তার অপেক্ষায় ছিল তা সে কয়েকমাস আগেও কখনো কল্পনা করতে সক্ষম হয়নি।
কোনো আশাই কি নেই?বিন্দুমাত্র আশার আলো?যেকোনো কিছু!যেকোনো কিছুকেই রোযা বর্তমানে আঁকড়ে ধরতে প্রস্তুত!

সহসাই রোযার দৃষ্টি আপতিত হলো আসমানের উপর। রহস্যঘেরা এক ব্যক্তিত্ব।যার পাশ*বিক কার্যকলাপ সম্পর্কে যে জ্ঞাত। যার দুই নয়নের সম্মোহনী দৃষ্টি ব্যাতিত আর কিছুই সে দর্শনে সক্ষম হয়নি। চেহারাটুকু সে সর্বদা ঢেকে রাখে ফেস মাস্কের আড়ালে।ঠিক যেন এই বাস্তব পৃথিবীর বুকে এক পরাবাস্তব অস্তিত্ব।
– আপনি আমাকে সাহায্য করবেন?আসমান?
পিছন ঘুরল আসমান।এক পলক রোযার দিকে চেয়ে তারপর মৃদু অথচ কঠোর কন্ঠে জানালো,
– আমি কাউকে সাহায্য করিনা।
– বিজনেস ডিল?কিংবা কনট্র্যাক্ট?

চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ালো রোযা।আসমান বুকের উপর দুহাত ভাঁজ করে দেয়ালে হেলান দিলো।তার সমুদ্রের গভীরতাসম্পন্ন দৃষ্টি রোযাকে আপাদমস্তক খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে শুরু করলো।তাতে নিজের শরীরে শিহরন অনুভব করলো রোযা, তারপরও তার অবয়ব স্থির থাকলো।
– নাবিল কায়সারকে খু*ন ক*রার ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন এর অর্থ আপনি কে বি গ্রুপের পরোয়া করেন না।কিংবা…
“ কিংবা কি?”— প্রশ্নটি আসমানের হৃদয়ে উত্থাপিত হলেও কন্ঠ থেকে নির্গত হলোনা। রোযা নিজেই তার জবাব দিলো প্রশ্ন ছাড়াই,

– কিংবা তাদের মোকাবেলা করার ক্ষমতাসম্পন্ন।
– ভালো বিশ্লেষণ।
রোযা একটা ঢোক গিললো।সে যা করছে তা সম্পর্কে নিজেও নিশ্চিত নয়।কিন্তু এছাড়া বর্তমানে তার কাছে কোনো পথ খোলা নেই।তার মস্তিষ্ক বলছে এটাই একমাত্র পথ নিজের জীবন রক্ষার এবং এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের।
– আমরা একটা কনট্র্যাক্ট করলে কেমন হয়?
আসমানের ঘন ভ্রুজোড়া উঁচু হলো, এই প্রথম তার অনুভূতিহীন দৃষ্টিতে কিঞ্চিৎ আগ্রহ টের পেলো রোযা।
– আপনি আমাকে কে বি গ্রুপের হাত থেকে রক্ষা করবেন।এবং বিনিময়ে আমি আপনাকে আপনার কাজে সাহায্য করবো।ঠিক যেমনটা করেছিলাম নাবিল কায়সারের ক্ষেত্রে!

রোযার মনে হচ্ছে যেন সে আ*গুন নিয়ে খেলছে।এই খেলা শুধুমাত্র ধ্বং*সের খেলা।সে জানে।তবুও নিজ দায়িত্বে সে আ*গুনে ঝাঁপ দিতে প্রস্তুত।নিজের জীবন নিয়ে জুয়াখেলা সে বহু আগেই খেলে ফেলেছে, এবার নাহয় আরো ভয়*ঙ্কর কিছু হোক!কি আসে যায় তার?তার হারানোর কিছু নেই, একমাত্র নিজের দাদু ছাড়া।তার যে প্রাণের এত মূল্য, যে প্রাণ রক্ষায় সে এত ব্যাকুল, তাও শুধুমাত্র ওই বৃদ্ধ মানুষটির অস্তিত্বের জন্য।যদি সে না থাকতো,তবে সড়কে পড়ে থাকা কৃষ্ণচূড়ার মতন বহুকাল আগেই সে দলিত মথিত হয়ে যেতো এই সভ্যতার মাঝে।
আসমান বেশ দীর্ঘ একটা মুহূর্ত তাকিয়ে রইলো।তারপর তার বজ্রকন্ঠ ব্যক্ত করলো,
– আমি কোনো বডিগার্ড নই।

এবারে তার বাক্য মোটেও নিরাশ করলোনা রোযাকে।এই বান্দাকে সে চিনতে আরম্ভ করেছে।ধীরে ধীরে তার মস্তিষ্ক প্রতিরোধ সৃষ্টি করছে তার অবাধ্যতার বিরুদ্ধে।
– আমি জানি আপনি বডিগার্ড নন। আমি আপনার সাহায্য চেয়েছি।যেহেতু আপনি সাহায্য করেন না, সেক্ষেত্রে বিনিময় দিতে চেয়েছি।এটি শুধুমাত্র একটা ডিল হিসাবে দেখলে কেমন হয়?
– ইউ আর আ রি*স্কি ডিল ম্যাম।

আসমানের কথাটি রোযার হৃদয়ে অদ্ভুত এক টানাপোড়েনের উদ্ভব ঘটালো।অজ্ঞাত এক অনুভূতি অনুভব করছে সে, কেন তা নিজেও জানেনা।বিশেষ করে আসমান তাকে ‘ ম্যাম ’— বলে সম্বোধন করবে সে আশা করেনি।শুধু আসমান কেনো?কোনোদিন কারো কাছেই সে এরকম কিছু শোনেনি।তাই এমন হচ্ছে কি? কে জানে!
রোযার দিকে এগোলো আসমান, সহসাই পিছিয়ে পড়লো রোযা।তার কোমর গোত্তা খেল টেবিলের সঙ্গে।পিছিয়ে যাওয়ার মতন জায়গা নেই।আসমান এসে দাঁড়ালো তার ঠিক সামনে, এতটা কাছে যে রোযা চাইলেই হাত বাড়িয়ে তাকে ছুঁয়ে দিতে পারে।হালকা ঝুঁকে রোযার দৃষ্টির সঙ্গে নিজের শীতল দৃষ্টি মেলালো আসমান।
– আমি রক্ষক নই ভক্ষক। আমাকে বিশ্বাসের কোনো কারণ দেখিনা।
নিজের দুই হাত মুঠো পাকিয়ে শক্ত করে ফেললো রোযা।অতঃপর সাহস সঞ্চয় করে মুখোমুখি হলো আসমানের শোষণীয় দৃষ্টির।

– এখন পর্যন্ত কিছু করেননি যখন, বিশ্বাস রাখছি আগামীতেও করবেন না।
– কে বলেছে করবো না?
বলেই আসমান অতর্কিতে নিজের ডান হাত বাড়িয়ে দিয়ে চে*পে ধরলো রোযার গ্রীবাদেশ। রোযা নিজেও বুঝলোনা তার উপর কি ভর করেছে!বিন্দুমাত্র ভীতি প্রদর্শন হলোনা তার চেহারায়।বরং তেজস্বী এক প্রভাব ফুটে উঠল অবয়বে।আসমান ক্রমশ চাপ বাড়াতে থাকলো, এতটাই যে রোযার নিঃশ্বাস পর্যন্ত আটকে এলো, উভয় চোখে জমলো জল।তবুও ধীরস্থির রোযা শুধুমাত্র বাম হাতে আসমানের হাতখানা আঁকড়ে ধরলো মাত্র, ছাড়ানোর প্রচেষ্টা করলোনা।ঠিক যখন রোযার দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হতে লাগলো তখনি আসমান হুট করে ছেড়ে দিলো তাকে।ছাড়া পেয়ে টেবিল আঁকড়ে ধরে কাশতে থাকলো রোযা।
আসমান উল্টো ঘুরে গেলো।হাত দুটো ব্যাগী জিন্সের পকেটে ভরে তাকিয়ে রইলো জানালার দিকে। রোযা নিজেকে স্থির করে মৃদু কন্ঠে শুধালো,

– আপনার পরীক্ষায় পাশ করেছি কি?
জবাব দিলোনা আসমান। আলো আঁধারির মাঝে তার স্থির অবয়বের দিকে তাকিয়ে থাকলো রোযা।এক মিনিট, দুই মিনিট, তিন মিনিট….. তারপর হঠাৎ…
– আমার সঙ্গে কাজ করা হাতের মোয়া নয় ম্যাম।
তখনো টেবিলে এক হাতে ভর দিয়ে তাকিয়ে আছে রোযা।আসমান পিছন ঘুরে এক পা এক পা করে এগোতে থাকলো,

– প্রথমত, এর শুরু হলে শেষ আমি নির্ধারণ করবো।দ্বিতীয়ত, আমি যা বলব তাই করতে হবে, অহেতুক কোনো প্রশ্ন ছাড়া।তৃতীয়ত…. এই সফরে যা যা ঘটবে তা অনুভবের জন্য মানসিকভাবে নিজেকে তৈরী রাখতে হবে।
বরাবর রোযার সামনে থামলো আসমান, তার দৃষ্টি যেন রোযার হৃদয়ে তোলপাড় ঘটিয়ে দিচ্ছে।
– ওয়ান মিসটেক…. অ্যান্ড ইউ ডা*ই!
আসমানের কন্ঠে কিছু একটা ছিল যার দরুন রোযার সমস্ত শরীর বিনা কারণেই প্রকম্পিত হয়ে উঠলো।দৃষ্টি স্বাভাবিক রাখতে পারলো না সে।নামিয়ে নিলো। তারপর বোকার ন্যায় ভীষণ রকম অপ্রাসঙ্গিক একটি কথা বলে বসলো,
– আপনি বিছানায় শোন,আমি নিচে ঘুমাবো।
আসমানের দিকে তাকানোর সাহসটুকু পর্যন্ত সে আর করতে পারলোনা।বাস্তবতা তাকে নিঃস্ব করে দিয়েছে সম্পূর্ণ।এখন কি হচ্ছে,পরবর্তীতে কি হবে সেই বিষয় নিয়ে সে ভাবনায় রাজী নয়। এই দানবের সাথে চুক্তিতে যাওয়ার মূল্য তাকে কিভাবে পরিশোধ করতে হবে তা অজানা।তবে একটা বিষয় রোযা জানে, আজ রাতে তার একটুও ঘুম হবেনা!

নার্সের সাহায্যে কেবিনের সাথে লাগোয়া একমাত্র বারান্দায় এসে বসেছেন ইউনূস রহমান।সম্পূর্ণ আকাশ গুমোট মেঘের আচ্ছাদনে ঢেকে রয়েছে।যেকোনো সময় ঝড় শুরু হতে পারে।আর কত সময় হাতে আছে তার?আর কতদিন পৃথিবীর এই ঝোড়ো আবহাওয়াকে অবলোকন করতে পারবেন আপন চোখে?খুব বেশিদিন নয় নিশ্চয়ই।যত কমদিন হবে ততই শ্রেয়, তার আদরের নাতনীটা মুক্ত হবে বিষাদের যন্ত্রণা থেকে।

– দাদু?
মিষ্টি ডাকটি কানে যেতেই ইউনূস চোখ ঘুরিয়ে তাকালেন। রোযাকে দেখে মুহূর্তেই তার চেহারা উদ্ভাসিত হয়ে উঠল প্রফুল্লতায়।
– চড়ুই!
ছুটে এসে নিজের দাদুকে আলিঙ্গন করলো রোযা।যেন নিজের সবটুকু ভালোবাসা উগড়ে দিতে চায় মানুষটির জন্য।তার একমাত্র প্রশান্তির আশ্রয়স্থল মানুষটি।রোযার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে ভগ্ন কণ্ঠস্বরে ইউনূস রহমান জিজ্ঞেস করলেন,
– তুমি এত সকাল সকাল যে দাদু?ভেবেছিলাম দুপুরে আসবে।
মুখ তুলে চাইলো রোযা। অধরে হাসি ধরে রাখার চেষ্টা চালিয়ে জানালো,
– আসলে আজ কিছু কাজ আছে। বাড়ি বদলাবো।তার আগেই তোমাকে একবার দেখতে খুব ইচ্ছা হলো তাই চলে এসেছি।

– বাড়ি বদলাবে!কেনো?
বিস্মিত হলেন ইউনূস। রোযা কিছুক্ষণ ইতস্তত করে বললো,
– তেমন কিছু না। আরো বড় এবং ভালো বাসা পেয়েছি তো, তাই।তুমি ওসবের চিন্তা করোনা দাদু।এই দেখো আমি তোমার জন্য কি কি এনেছি।
ব্যাগ থেকে একে একে কিছু আরামদায়ক পোশাক এবং নতুন উপন্যাসের বই বের করে দাদুকে দেখাতে লাগলো রোযা।সবটাই তিনি নিষ্পলক দৃষ্টিতে দেখলেন।তারপর হঠাৎ করেই রোযার হাতখানা খপ করে চেপে ধরলেন নিজের দুর্বল শক্তিতে।

– দাদু?
– আমার জন্য আর কত করবে চড়ুই?বাদ দেয়া যায়না?তোমার নিজের জীবনটা তো পরে আছে….
দাদুর চোখে জমা জল সহ্য করতে পারলোনা রোযা।উঠে দাঁড়িয়ে সাবধানে তাকে পুনর্বার আলিঙ্গন করে নিলো।বিড়বিড় করে বললো,
– তুমিই আমার জীবন দাদু। আমার কোনো কষ্ট হচ্ছেনা। আমি সুখে আছি, অনেক সুখে।তুমি হাসপাতালে তো,তাই দেখতে পাচ্ছোনা।
– দোহাই লাগে নিজের দাদুকে মিথ্যা বলোনা চড়ুই।
দাদুর চেহারা নিজের হাতের মাঝে নিলো রোযা।তারপর কুঞ্চিত কপালে চুম্বন করে হাসলো, এক মায়াবিনী হাসি।
– দাদু…. আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি, আমি সুখে থাকব, খুব সুখে থাকব, এবং আমার জীবনের সেই সুখের দেখা তুমিও পাবে যখন আমি তোমাকে আমার নতুন ঘরে নিয়ে যাবো।দেখে নিও তুমি, আমার কথা মিলিয়ে নিও।
ইউনূস রহমান কিছুই বলতে পারলেন না।নিজের অবশিষ্ট একমাত্র পরিবারের সদস্যের দিকে সজল নয়নে চেয়ে রইলেন শুধু।তার হৃদয় স্রষ্টার কাছে সর্বদা শুধুমাত্র একটি জিনিসই প্রার্থনা করে, তার চড়ুইয়ের জন্য এক সুখের জীবন। চড়ুইয়ের জীবনে যেন এমন কেউ আসে, যে তার সারাজীবনের দুঃখ কষ্ট ভুলিয়ে ভালোবাসায় মুড়িয়ে আগলে রাখবে তাকে সর্বদা।

দাদুর সঙ্গে দেখা করে রোযা যখন বাসায় পৌঁছলো তখন ভেতরের দৃশ্য দেখে সে হতভম্ব হয়ে রইলো।বিশাল একটা লাগেজ নিয়ে একজন লোককে কিছুক্ষণ আগেই সিঁড়ি বেয়ে নামতে দেখেছে।তাতে কি ছিল বুঝতে পারেনি।এখন বাসায় এসে দেখে তার সম্পূর্ণ আলমারি এবং বইয়ের শেল্ফ খালি পড়ে আছে!অপরদিকে বিছানায় বসে নিজের পরনের স্নিকার্সের ফিতা বাঁধছে আসমান।
গতকাল রাতে একফোঁটা ঘুম হয়নি রোযার।ফ্লোরে শোয়ার কারণে নয়।বরং কক্ষে ভিন্ন এক সত্তার উপস্থিতির কারণে।এপাশ ওপাশ করেছে সে, দুঃস্বপ্ন তাকে তাড়া করে বেরিয়েছে।এই বুঝি বিছানা থেকে উঠে কিছু করে বসে পিশাচটা!কিন্তু ভাগ্যবশত তেমন কিছুই হয়নি।খুব ভোরে উঠে আসমানের ঘুমন্ত অবয়ব দেখতে পেয়েছিল সে। তখনো মাস্ক পড়া!কৌতূহলবশত ইচ্ছা হয়েছিল সেটা খুলে দেখতে, তবু সাহসে কুলোয়নি। কে জানে ওই মাস্কের আড়ালে কতখানি বর্বরতা লুকিয়ে রেখেছে দানবটি!

– আমার জিনিসপত্র কোথায়?
জবাব দিলোনা আসমান।বরং এক পা শেষ করে অপর পা ধরলো,ফিতা বাধার উদ্দেশ্যে। রোযা ভিতরে ঢুকে চারিদিকে তাকিয়ে পুনরায় জিজ্ঞেস করলো,
– কি হচ্ছে এখানে?আমার অনুমতি ছাড়া আমার জিনিস উধাও হলো কিভাবে?
– যেভাবে আমার অনুমতি ছাড়া আপনি সাতসকালে বেরিয়ে গেলেন, সেভাবে।
নিজের টি শার্ট ঝেড়ে উঠে দাঁড়ালো আসমান। রোযা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলো।এতক্ষণে যেন সে উপলব্ধি করেছে আসমানের আচরণের কারণ। একা একা এভাবে বেরিয়ে সে কে বি গ্রুপের সামনে নিজেকে এক প্রকার অরক্ষিত করে তুলেছিল।কিন্তু আসমানের সেই কারণে ক্ষেপার কথা নয়, সে ক্ষেপেছে তাকে না বলে যাওয়ার কারণে?
আসমান টেবিলের দিকে ইশারা করলো হঠাৎ। রোযা তাকাতেই দেখলো একটা প্লেটে ঢাকা কিছু খাবার রাখা।ব্রেড, ডিমপোচ, মিষ্টি আর কিছু ফলমূল।

– কে দিয়েছে এসব?
– তিন তলার আন্টি।
– কেনো?
আসমান কাধ ঝাঁকালো।
– প্রথম রাতের পর যেন আপনাকে রান্নাঘরে গিয়ে কষ্ট করতে নাহয় সেকারণে।
রোযা একটু ব্রেড মুখে দিচ্ছিল কিন্তু আসমানের কথায় তা তার গলায় আটকে গেলো।এই ছেলে বলে কি?এর মধ্যে অনুভূতি নেই ভালো কথা কিন্তু সামান্যতম লজ্জাবোধও কি নেই? রোযাকে অবশ্য লজ্জা পাওয়ার সময়টুকুও দিলোনা আসমান।
– তাড়াতাড়ি খেয়ে নিচে আসুন। ক্যাব অপেক্ষা করছে।
– ক্যাব কিসের জন্য?
বোকার মতন প্রশ্নটি করলেও রোযার বুঝতে কিছুই বাকি রইলোনা।আসমান নিশ্চয়ই তাকে কোথাও নিয়ে যেতে চায়।এক বাড়ির ঠিকানা ফাঁস হয়ে গিয়েছে শত্রুপক্ষের কাছে।আসমান তার প্রশ্নের জবাবও দেয়নি।সে উদ্যত বাইরে বেরোতে।

– কিন্তু আমার আসবাবপত্র?
থমকে পড়লো আসমান।একবার চোখ ঘুরিয়ে চাইলো সম্পূর্ণ কক্ষে।তারপর তার দৃষ্টিতে কেমন এক বিতৃষ্ণা ফুটে উঠল।
– এসবের প্রয়োজন নেই কোনো।আমরা চলে গেলে লোক এসে এসব নিয়ে যাবে ভাঙারি হিসাবে বিক্রি করতে।
রোযা স্থির নয়নে তাকিয়ে থাকলো।এই পিশাচ কি তাকে অপমান করলো?তার জিনিসপত্র ভাঙারি বলে চালিয়ে দিলো?তার কি ক্রোধান্বিত হওয়া উচিত?
– আমি নিচে যাচ্ছি।
– আপনি খেয়েছেন?
এই প্রশ্নের জবাব পেলোনা রোযা।আসমান ইতোমধ্যে ঘরের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছে।একটিমাত্র নিঃশ্বাস ফেলল সে শুধু।

ডার্কসাইড পর্ব ৬

এই তল্লাটে যে ক্যাব নামক বস্তুটি ঢুকতে পারে তা এর আগে কোনোদিন ভাবতে পারেনি রোযা।সেই আন্টির থেকে বিদায় নিয়ে এসেছে রোযা। বাড়িওয়ালীর মুখোমুখিও হওয়ার রুচি জাগেনি। প্রায় ঘন্টা দেড়েকের পথ গাড়ির ভেতর কাটলো অস্বস্তিকর নীরবতার মাধ্যমে।সারারাত না ঘুমানোর কারণে জানালায় মাথা ঠেকিয়ে ঘুমিয়েই পড়েছিল রোযা। গাড়ি ব্রেক কষে থেমে যেতেই তার ঘুমের অবসান ঘটলো।জানালা দিয়ে বাইরে চোখ পড়তেই নিজের জায়গায় জমে গেলো সে।একটি সুউচ্চ ভবনের সামনে দাঁড়িয়েছে ক্যাব।
ভবনের নাম— মারবেল।
চোখ কচলে আবার তাকালো রোযা, ঘুমের ঘোরে ভুল দেখছে না তো?

ডার্কসাইড পর্ব ৮

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here