তরঙ্গে তোমার ছোঁয়া পর্ব ২৭
ফারহানা নিঝুম
বক্ষে ভাঁজে টকটকে লাল গভীর ক্ষ’তটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।ক্রিম লাগানোর ট্রাই করছে ফারাহ! একটুখানি ক্রিম লাগাতেই ছটপট করে উঠছে পরক্ষণেই!জ্বলছে ভীষণ ভাবে!
ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় চোখ পড়তেই দৃষ্টি থমকে যায় তার। চোয়াল শক্ত করে কঠিন মুখাবয়বের লোকটা দাঁড়িয়ে আছে। ফাঁকা ঢোক গিলে ফারাহ।পিছন ঘুরে চট করে দরজাটা বন্ধ করে দিলো তাশফিন! বুকের ভেতর ধড়াস করে উঠল ফারাহর। চকিতে ফিরে তাকালো সে। শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে এগুচ্ছে তাশফিন।অদূরে ছুড়ে ফেলল সফেদ রঙা শার্ট টি।চোখ বড়বড় করে তাকাচ্ছে ফারাহ।চোখের সামনে স্পষ্ট চওড়া বুক দেখতে পাচ্ছে! পেটানো শরীর টা উন্মুক্ত তার সামনে। ঠোঁট কিঞ্চিৎ হাঁ হয়ে গেলো ফারাহর।কখন যে তাশফিন অতিব নিকটে চলে এসেছে টের পায়নি সে। ক্রিম টা নিজের হাতে টেনে নিলো জোরপূর্বক।
“ইউ নো হোয়্যাট সুখ আমি ভীষণ বাজে একটা মানুষ।আর এখন যা করতে চলেছি এটা তোমাকে স’হ্য করতে হবে।”
ফারাহ তাকিয়ে আছে এক দৃষ্টিতে, আঙ্গুলের ডগায় একটুখানি ক্রিম নিয়ে ওড়না টেনে ছুড়ে ফেলে অদূরে।বক্ষ ভাঁজে আঙ্গুল ছুঁইয়ে ক্রিম লাগিয়ে দিচ্ছে অনায়াসে।চোখ দুটো খিঁচিয়ে বুঁজে নিল ফারাহ। ক্রিম লাগানো শেষ হতেই দীর্ঘ সময় নিয়ে তাকিয়ে আছে তাশফিন।চোখ মেলে তাশফিন কে তাকিয়ে থাকতে দেখে ভিমড়ি খেলো সে। অকস্মাৎ টেবিলের উপর থেকে টিস্যু নিয়ে ক্রিম মুছতে মুছতে বলল।
“সুখ,ইফ আই বাইট দিস স্পট অ্যাগেইন, উইল ইট হার্ট ইউ?”
কথাটা কর্ণ গোচরে আসতেই পালাতে চাইলো ফারাহ, তবে তা সম্ভব হলো না।তার পূর্বেই পুরুষ্ট ওষ্ঠোদ্বয় ছুঁইয়ে যায় সেখানটায়। নিজেকে হারিয়ে ফেলল মূহুর্তের মাঝে, আকস্মিক আ’ক্রমণে বাকরুদ্ধ ফারাহ। ছটপট করে ছাড়া পেতে। তবে তা সম্ভব হয়ে উঠে না
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“ডোন্ট মুভ।”
“ছাড়ুন ব্যথা পাচ্ছি লেফটেন্যান্ট সাহেব?”
“রিল্যাক্স, ইটস নাথিং ইউ’ল ফিল জাস্ট ফাইন ইন এ মোমেন্ট।”
ঘনিষ্ঠতা আরো বাড়ার পূর্বেই দরজায় কেউ কড়া নাড়লো। ছটপট করতে করতে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলো ফারাহ। তাশফিনের চোখের দিকে তাকাতেই আঁতকে উঠে। চোখের কার্নিশ লাল হয়ে আছে তার। এক মূহুর্ত না ভেবে ছুট্টে বেরিয়ে গেলো সে। দাঁতে দাঁত পিষে তাশফিন।
ম্লান বিকেল একধরনের বিষণ্ণ, নীরব সৌন্দর্য বহন করে। আকাশে সূর্যটা তখনো অস্ত যায়নি, কিন্তু তার আলো আর ঝলমলে নয় ফিকে, যেন কিছুটা ক্লান্ত। চারদিকের আলো হালকা হলুদ আর কমলার মিশেলে একধরনের কোমল আবরণ ফেলে দেয় সবকিছুর উপর। পাখিরা ফিরে যাচ্ছে ঘরে, গাছের পাতাগুলো হালকা বাতাসে দুলছে আর চারপাশে একরকম নিস্তব্ধতা নেমে আসছে একটা নরম, অনুভূতিপূর্ণ নীরবতা।
এই বিকেল যেন কিছু হারানো অনুভব করায় একটি অসমাপ্ত কিছুর, কিছু না বলা কথা, অথবা পুরনো দিনের স্মৃতি। কাঁচের জানালা দিয়ে তাকালে মনে হয় সময় থেমে আছে একটুক্ষণের জন্য, কেবল হৃদয়ের শব্দটাই শোনা যায় ধীরে ধীরে।
পানসুটে মুখ করে এদিক সেদিক ঘুরঘুর করছে ফারাহ। মূলত উঁকি দিচ্ছে স্টাডি রুমে।আসা্য পর থেকে স্টাডি রুমে ঘাপটি মে রে বসে আছে তাশফিন।বের হওয়ার নাম গন্ধ নেই। আইঢাঁই করে রান্না ঘরে গেল ফারাহ।
“আম্মু কি করছো?”
রুবেনা শেখ তাশফিনের জন্য কফি তৈরি করেছে। ছেলেটা অনেক আগে বলেছে কফি দিতে।
“এই তো তাশফিনের জন্য কফি বানালাম। দিয়ে আসি।”
ফারাহ ব্যস্ত কন্ঠে বলল।
“না না আমি দিয়ে আসছি, তুমি কেন কষ্ট করবে আম্মু?”
রুবেনা শেখ মানা করলেন না।কফি কাপ হাতে ধরিয়ে দিলেন ফারাহর।গা দুলিয়ে দুলিয়ে এক গাল হাসি টেনে হেঁটে যাচ্ছে ফারাহ।
“ঠকঠক।”
জোরপূর্বক স্টাডি রুমের দরজায় আওয়াজ করছে ফারাহ।এক গাদা ফাইলে মুখ গুঁজে বসে আছে।
“আসবো লেফটেন্যান্ট সাহেব?”
“না?”
কন্ঠস্বর ভারী,নাক কুঁচকে নিল ফারাহ।
“কেন আসবো না?কি কারণে আসবো না?”
আসব না বলতে বলতে ভেতরে প্রবেশ করে ফারাহ। কফি কাপ সেন্টার টেবিলের উপর রেখে বলল।
“আপনি এমন করছেন কেন হুঁ? কী করেছি আমি? আপনি তো দেখলেন তখন দরজায় কেউ..
ফাইল থেকে এবারে মুখ তুলে তাকায় তাশফিন। রাগে ফুঁসছে সে।
“গেট আউট।”
ফ্যালফ্যাল করে বোকা বোকা চাহনিতে তাকিয়ে আছে ফারাহ।
“আই সেইড গেট আউট।”
অকস্মাৎ চিৎকার শুনে ভয় পেয়ে দৌড়ে বেরিয়ে গেল ফারাহ।
আকাশে তখন আর রঙের খেলা নেই, নেই কোন আগুন রঙা সূর্য বা সোনালি আভা সবকিছু ধূসর, ম্লান, নিঃসাড়। পাখিরা ফিরে যায় বাসায়, তাদের ডানার শব্দটুকুও যেন নিস্তব্ধতার সুরে বাজে। শহরের কোলাহলও একটু একটু করে কমে আসে, রাস্তাগুলোর আলো জ্বলে উঠলেও, তাতে কোনো উচ্ছ্বাস নেই শুধু প্রয়োজন।
বাতাসে হালকা একটা ঠান্ডা ছুঁয়ে থাকে, কিন্তু সেটা প্রাণ জাগায় না, বরং মনের ভেতরে জমে থাকা বিষণ্নতাকে আরও ঘন করে তোলে। ম্লান সন্ধ্যা মানেই, দিনের শেষ আলোর করুণ প্রস্থান নতুন করে কিছু শুরু না হওয়ার এক বিরহময় প্রস্তুতি।
বইয়ের পাতা উল্টায় ফারাহ, কিন্তু চোখ পড়ে না। জানালার ধারে উঠে গিয়ে চুপচাপ চা খায়, ভাবনারা ওলট পালট হয়। চারপাশে আলো আছে, কিন্তু মনটা তখন নিভু নিভু একধরনের নিস্তব্ধ বিষণ্নতা, নাম না জানা অভিমান।
টিং টিং বেল বেজে উঠলো। দ্রুত পায়ে এগিয়ে গিয়ে সদর দরজা খুলে দিল ফারাহ। অস্ত্র হাতে দু’জন লোক ভেতরে এলো। আ’তং’কে কন্ঠনালি কাঁপছে ফারাহর।
“কারা আপনারা?এসব কি অ’স্ত্র?”
হাতে ব’ন্দুক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে দু’জন। হুড়মুড়িয়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকে এলো।
“তাশফিন কোথায়?বের করে আনো তাকে?”
হাতে ব’ন্দুক দেখে রীতিমতো জ্ঞান শূন্য ফারাহ। কম্পিত সুরে বলল।
“কারা আপনারা? আমার স্বামী কে খুঁজছেন কেন?”
দু’টো মানুষ একে অপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করে, দ্বিতীয় লোকটা ভারী স্বরে বলল,
“আচ্ছা তাহলে তুমিই ওর স্ত্রী।যত যাই হোক আজকে তোমার স্বামী বাঁচবে না! কোথায় সে?”
কান্নায় হেঁচকি ওঠা শুরু হয়েছে ফারাহর।
“কী বলছেন এসব? আম্মু আপু, আব্বু কোথায় তোমরা? আম্মু?”
ফারাহর চিৎকার শুনে দৌড়ে বেরিয়ে এলেন বাড়ির সবাই। আহাজারি করছে ফারাহ।রুবেনা শেখ কে দেখা মাত্র ঝাপটে ধরে বলতে লাগলো।
“আম্মু আম্মু ওরা লেফটেন্যান্ট সাহেব কে ভারতে এসেছে। আম্মু ওদের কিছু করো? পুলিশ ডাকো।”
রুবেনা শেখ বাক্যরুদ্ধ,কি প্রতিক্রিয়া দেখাবেন বুঝতে পারছেন না।
“আব্বু আব্বু তাড়াতাড়ি লেফটেন্যান্ট সাহেব কে লুকিয়ে রাখো।আপনারা চলে যান না হলে আমি কিন্তু…
“কী হয়েছে এখানে?”
বিকেলের দিকে একটু চোখ লেগে এসেছিল তাশফিনের, বাইরের হুলস্থুল শুনে ঘুমটা ভেঙ্গে গেল অচিরেই। ফারাহর কান্না করার কারণ আদেও বোধগম্য নয় তাশফিনের নিকটে।তাশফিন কে বাইরে দেখে আঁতকে উঠে ফারাহ।
“আপনি কেন এলেন? ওদের দেখুন বন্দুক আপনাকে,,, ওরা আপনাকে মে রে ফেলবে। আপনি চলুন।”
ফারাহ পাগলের ন্যায় কাঁদতে লাগলো,হাত টেনে ধরে তাশফিনের।
বাচ্চা বউয়ের বাচ্চামো দেখে এক দফা চমকালো তাশফিন। আলতো করে কাঁধে হাত রাখল সে। আশ্বস্ত করে আওড়ালো,
“আমি কথা বলছি।”
ভয়ে আড়ষ্ট হচ্ছে ফারাহ। দাঁড়িয়ে থাকা লোক দুটো সহসা হেসে ফেলল।
“তাশফিন ব্রো।”
লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আরিয়ান, এবং নিহাল দুজনেই তাশফিনের বেস্ট ফ্রেন্ড।
ম্যানলি হাগ করলো একে অপরকে। ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে ফারাহ। সৌজন্য মূলক হাসলো তাশফিন।
“এসব কি? বন্দুক?মে রে ফেলা হোয়্যাট দ্যা হেল ইজ দিস ইয়ার?”
আরিয়ান এক পলক ফারাহ কে দেখে বলল।
“স্যরি ভাবি আপনাকে ভয় দেখানোর জন্য। বাট আমরা কোনো গুন্ডা নই।”
অধর কিঞ্চিৎ ফাঁক হয়ে গেল ফারাহর।ভাষা হারিয়েছে সে।রুবেনা শেখ কাছাকাছি এসে ফারাহর উদ্দেশ্যে বললেন।
“ওরা বন্ধু হয় পাগলী।”
স্থান ত্যাগ করলেন রুবেনা শেখ। এগিয়ে এলো নূপুর।
“এমন ভাবে কান্না জুড়ে দিলে আমরা কিছু বলতেও পারলাম না।ওরা ভাইয়ের বেস্ট ফ্রেন্ড। একই সঙ্গে পড়াশোনা,বড় হয়ে উঠা। তুমিও না ফারাহ!সব কিছুতে কেঁদে দাও।”
কন্ঠ রিতিমত রুদ্ধ করা হয়েছে। বেকুব বনে গেল ফারাহ।এক পলক পিছন ফিরে তাকালো তাশফিন, চোখাচোখি হয় দু’জনের। লজ্জায় রাগে ফুঁসছে ফারাহ।এক মূহুর্ত অপেক্ষা করলো না সে, দ্রুত পায়ে ভেতরের ঘরে চলে গেল।
রাতের প্রথম প্রহর,আকাশ ধীরে ধীরে আরও ঘন অন্ধকারে ঢাকা পড়ে, তারা টিমটিম করে জ্বলে ওঠেছে।চারপাশের শব্দগুলো কমে আসে মানুষজন ঘরে ফিরে যায়, দোকানপাট বন্ধ হতে শুরু করেছে।
বাতাসে হালকা ঠান্ডা ভাব এসে যায়, দিনের তুলনায় অনেক বেশি শীতল ও শান্ত লাগে।এই সময়টা অনেকটাই রহস্যময় ও শান্ত, যেন দিনের কোলাহল থেমে গিয়ে পৃথিবী ধীরে ধীরে নিস্তব্ধতায় ঢুকে পড়ছে।হালকা ঠান্ডা বাতাস গায়ে এসে লাগে, গাছের পাতাগুলো ধীরে দুলে উঠে, যেন তারা রাতের সঙ্গে কথা বলছে। দূরে কোথাও কোনও পাখি বা রাতজাগা পোকার ডাক শোনা যায়—সব মিলে একটা গভীর, স্নিগ্ধ, নরম আবরণে মুড়ে দেয় রাতকে।
খাবার টেবিলে খাবার সার্ভ করছে নূপুর আর ফারাহ।মাহির চেয়ারে বসে পা দুলাচ্ছে। সাইফুল সবে এসেছে বাইরে থেকে, ফ্রেশ হতে নিজ কামরায় চলে গেছে। প্লেট গুলো সুন্দর করে সাজিয়ে দিয়েছে ফারাহ। আপাতত তার কাজ শেষ। নূপুর তটস্থ ভঙ্গিতে বলে উঠে।
“ফারাহ ভাইয়া কে আর তার বন্ধুদের বলো খেতে আসতে।”
ফারাহ ইতস্তত বোধ করছে, আইঢাঁই করে বলল।
“আপু তুমি যাও না।”
থমকে গেল নূপুর, কিছু একটা ভেবে বলল।
“না না তুমি যাও। তাড়াতাড়ি যাও।”
দীর্ঘ শ্বাস ফেলে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে গেল স্টাডি রুমের দিকে। এখন যে কি হবে?
“তোরা শুধু শুধু ফারাহ কে ভয় দেখিয়েছিস আরিয়ান এবং নিহাল দুজনেই।”
আরিয়ান চোরা চোখে তাকায়।
“ভাই আমরা কি করে জানবো বল হঠাৎ করে ভাবি এভাবে চলে আসবে?”
নিহাল টিপুনি কে’টে বলল।
“উঁহু বিয়ে করলি অথচ একবারও বললি না?”
তাশফিন সপাটে ঘুষি মেরে দেয় নিহালের কাঁধে।
“টু মাচ নিহাল। তোদের জানানো হয়েছিল,বাট তোরা একটা মিশনে ছিলি কক্সবাজার ভুলে যাচ্ছিস!”
আরিয়ান দুঃখ প্রকাশ করে।
“থাক ভাই নিহাল কষ্ট পাস না। একদিন তোরও বিয়ে হবে।”
মলিন হাসলো নিহাল। দরজায় ঠক ঠক আওয়াজ সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করলো। আটপৌরে শাড়ি পরে দাঁড়িয়ে আছে ফারাহ। চোখে মুখে ভয় স্পষ্ট। স্ফীত স্বরে বলল।
“খাবার খেতে ডাকছে আপনাদের।”
আরিয়ান আর নিহাল দুজনেই বুঝতে পারছে ফারাহ ভয় পেয়েছে। আরিয়ান দুষ্টুমি করে বলল।
“ভাবি বাইরে কেন ভেতরে আসুন।”
নিহাল একই টুনে বলে।
“হ্যা হ্যা ভেতরে আসুন। আমাদের সাথে পরিচিত হন।”
তাশফিন ভুল করেও এক পলকের জন্য পিছন ফিরে তাকালো না। ফারাহ ভয়টা কাটিয়ে উঠতে পারছে না, ফলস্বরূপ পালিয়ে যাওয়ার মতো চলে গেল। একে অপরের দিকে মুখ চাওয়াচাওয়ি করে নিহাল আর আরিয়ান দু’জনেই।তাশফিন বাঁকা হাসলো,তবে ভীষণ টা খারাপ দিকে এগুচ্ছে।তাকে ম্যানেজ করতে হবে।
রাতে খাওয়া দাওয়া হয়েছে, ফারাহ খেতে আসেনি। একটা মানুষ তার ইমোশন নিয়ে কথাটা বাজে বিহেভিয়ার দেখেছিয়েছে তা মোটেও ভালো লাগেনি ফারাহর।সে তো ভয় পাচ্ছিল তার স্বামীর কিছু যেন না হয়, অথচ স্বামী নামক আ’সামীর কিভাবে তাকে হেনস্তা করেছে! আঁখি বেয়ে গড়িয়ে পড়লো অশ্রু কণা। কান্না পাচ্ছে ফারাহর।
ফোনের টুং শব্দ কানে প্রবেশ করতেই ফোন রিসিভ করে ফারাহ। ওপাশ থেকে প্রাণচঞ্চল এক কিশোরী বলে উঠে।
“ফারু রেএএ আমরা কাল আসছি।”
স্নেহার কথার অর্থ বুঝতে পারেনি ফারাহ।
“কোথায় আসছিস? মানে কি বলছিস বুঝতে পারছি না।”
“বান্ধবী জানেমান ফারু আমরা কাল তোর শ্বশুর বাড়ি আসছি। আমি আর নবীন ভাইয়া।”
চমকে উঠে ফারাহ, বিস্ময়কর কন্ঠে শুধোয়।
“সত্যি?”
“আরে বাবা হ্যা। কিন্তু এমন ভাব করছিস যেন তুই জানিস না?”
ফারাহ সত্যি জানে না।
“আমাকে তো কেউ বলেনি।”
কিছুটা অবাক হল স্নেহা। তাদের যাওয়ার কথা রুবেনা শেখ এবং তাশফিন দুজনেই জানেন। তাহলে ফারাহ কে কেন বললো না? ফারাহ ভাবতে পারছে না। তবে আনন্দ হচ্ছে কাছের মানুষ গুলো কে এত দিন পর দেখতে পাবে বলে।
গলা খাঁকারি ভেতরে এলো তাশফিন,তাশফিন কে দেখে পিটপিট করে তাকাচ্ছে ফারাহ।
“তোমার কি মনে হয় না সুখ আমার উচিত তোমাকে ঝাপটে ধরে চুমু খাওয়া? এরপর শাড়ি খুলে নেওয়া, তারপর ফা..
“থামুন।”
তরঙ্গে তোমার ছোঁয়া পর্ব ২৬
দু’হাতে কান চেপে ধরে ফারাহ,ধীর পায়ে এগিয়ে এলো তাশফিন, হিসহিসিয়ে বলল।
“হোয়েন আই ফাইন্যালি টেইক ইউ ইন মাই আর্মস, মাই লিপস উইল লিভ মার্কস অফ লংগিং অন এভরি ইঞ্চ অফ ইউ।”
‘ছিহ।”
“ছিহ বলে লাভ নেই।আই’ম সিরিয়াস আই’ল বাইট ইউ রো, আই মিন ইট!