তরঙ্গে তোমার ছোঁয়া পর্ব ৩৮
ফারহানা নিঝুম
নিকষ কালো আঁধারে ডাকা পড়েছে আকাশ টা। চাঁদ সুন্দরী বুঝি লুকিয়ে পড়েছে মেঘের আড়ালে। মাঝে মধ্যে মৃদু মন্দ হাওয়া বইছে, সাথে ভেসে আসছে ভেজা মাটির মিষ্টি সুগন্ধ।গাছের পাতা ভিজে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে, পথঘাট সিক্ত হয়ে চিকচিক করছে। দূরে কোথাও একলা পাখি ডানা ঝাপটাচ্ছে, গাছের পাতার ফাঁকে ফোঁটা ফোঁটা জল জমে মুক্তোর মতো ঝলমল করছে।চারপাশের নিস্তব্ধতা মাঝে মাঝে ভেঙে দেয় এক আধটু ব্যাঙের ডাক শোনা যাচ্ছে।
বধূ বেসে রুমের বড় বিছানায় চুপচাপ বসে আছে স্নেহা।লাল পাড় সোনালি জরি কাজ করা শাড়িতে, কিছু সময় আগেই শাড়িটা পরিয়ে দিয়েছে ফারাহ। চোখ নিচু করে বসে থাকা স্নেহাকে ঠিক যেন কোনও ছবি থেকে উঠে আসা রাজকুমারীর মতো লাগছে। আলতো করে কপালের মাঝখানে টিকলি পরানো আছে, তার উপর চুল গুলো ছেড়ে দেওয়া।
হাতে রেশমি চুড়ি সব মিলিয়ে এক অপার সৌন্দর্য।হঠাৎ খট শব্দ করে খুলে গেল দরজাটা। ধীরে ধীরে ভেতরে ঢুকলো আরিয়ান। কালো শেরওয়ানিতে, চোখেমুখে কিছুটা দ্বিধা আর অপার কৌতূহল নিয়ে সে এগিয়ে এলো। দরজাটা পেছন থেকে বন্ধ করেই থমকে দাঁড়ালো কয়েক সেকেন্ড।স্নেহার দিকে তাকিয়ে তার চোখে ভেসে উঠলো একরাশ আবেগ। সেই চেনা মুখ, কিন্তু আজ এতটা নতুন, এতটা কাছের আজ থেকে ওর বউ, সারাজীবনের সঙ্গী।
আরিয়ান ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে বিছানার পাশে বসে পড়লো। কাঁপা গলায় বললো,
“স্নেহা, তোমার কেমন লাগছে এখন?”
স্নেহা চোখ তুলে চাইলো এক ঝলক, তারপর আবার নিচু করে নিলো আঁখিদ্বয়।
দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগছে আরিয়ান। এগিয়ে যাবে কিনা ভেবে পাচ্ছে না।
“স্নেহা দেখো তুমি..
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“আপনি তো জানেন আমার সাথে ঠিক কি হয়েছে।তাশফিন ভাইয়া নিশ্চয়ই বলেছে। কিন্তু আপনি কেন বিয়েতে রাজি হয়েছেন?কেনো নিজের জীবন নষ্ট করতে চাইছেন আমি শুধু সেটুকুই জানতে চাইবো!”
আরিয়ান তাকিয়ে আছে নির্নিমেষ, কম্পিত স্নেহা কে দেখে নৈঃশব্দ্যে ক্ষীণ হাসলো সে। দ্বিধা কা’টিয়ে এগিয়ে এসে ঠিক বিছানায় বিপরীতে বসলো স্নেহার।
অনুমতি চেয়ে বলল,
“আমি কি তোমার হাতটা ধরতে পারি?”
থমকালো স্নেহা, ক্ষীণ ভয় বাসা বাঁধে বুকের ভেতর। আরিয়ান আলগোছে হাতটা ছোঁয়। অদ্ভুত সুরে বলল,
“যা হয়েছে ভুলে যাও। অপরাধী তার শাস্তি পেয়েছে। তোমার তো কোনো অন্যায় ছিলো না। তাহলে তুমি কেন ভাবছো তোমার সাথে থাকলে আমার জীবন নষ্ট হবে?আর যদি বলো বিয়ে কেন করেছি তাহলে বলবো তাশফিনের জন্য।”
এবারে চোখ তুলে তাকালো স্নেহা, জানতে উৎসুক সে।
“তাশফিন আমার আর নিহালের বেস্ট ফ্রেন্ড। আমার কেউই নেই,নিহালের তো মামা আছে কিন্তু আমার? আমি একা মানুষ। এবং কি তাশফিন আমার পড়াশোনার খরচ পর্যন্ত বহন করেছে।সে না থাকলে আজকে আমি নামক আরিয়ান কে খুঁজে পাওয়া যেতো না।তাশফিন বলেছে বিয়ে করতে হবে, আমি কোনো প্রশ্ন করেনি, কারণ আমি জানি তাশফিন অবশ্যই আমার খারাপ চাইবে না।আর তুমি তো নিতান্তই একজন ভালো মেয়ে। তাহলে কেন না বলব বলো তো?”
অকস্মাৎ ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো স্নেহা।সে সৌহার্দ্য কে ভীষণ ভালোবেসে ফেলেছে, অথচ তার বলা কথা গুলো ধনুকের থেকে ছোড়া তীরের মতো এসে বুকে লেগেছে তার। বাহ্যিক সৌন্দর্য থেকে মানুষের মন সুন্দর হওয়া সবচেয়ে জরুরি।এটা আজকে বুঝতে পেরেছে স্নেহা।
“আমি সৌহার্দ্য কে ভীষণ ভালোবাসতাম। আমি কখনোই ভাবিনি ওর মন মানসিকতা এতটা খারাপ.. কিভাবে বলল আমি নাকি খারাপ মেয়ে তাই…
“হুস কাঁদতে হয় না।যে যাই বলুক তাতে কান দিতে নেই।আর সৌহার্দ্যের ব্যাপার টা ভুলে যাও প্লিজ। সে কখনোই হয়তোবা তোমাকে ভালোবাসেনি!স্নেহা তুমি নিষ্পাপ ছিলে, তোমার ভালোবাসা গুলো নিষ্পাপ ছিলো।যা ভুল মানুষের প্রতি তৈরি হয়েছে। কিন্তু এখন তুমি সেই মানুষটি কে চিনতে পেরেছো। এখন তোমাকে এগুতে হবে।”
কিয়ৎ সময় নিষ্পলক চেয়ে রইল স্নেহা, আরিয়ান কে অবাক করে দিয়ে আকুতি ভরা কন্ঠে বলল,
“আপনি কি কখনো আমাকে ভালোবাসতে পারবেন আরিয়ান?”
স্নেহার প্রশ্নে কিয়ৎ সময় নিশ্চুপ রইল আরিয়ান।দমকা হাওয়ায় ন্যায় এগিয়ে এসে কপালে গাঢ় চুম্বন এঁকে দিয়ে ফিসফিসিয়ে বললো,
“পারব। তুমি একটু ভালোবাসা দিও, আমি তার থেকে দ্বিগুণ ভালোবাসবো।”
এক বাক্যে নিজের মেয়ে কে অচেনা একটি ছেলের হাতে তুলে দিবেন মূর্খ নন তিনি।সায়র তার মেয়ের এত বড় ক্ষতি করেছে তা জানার পর নিজেকে সামলে উঠতে পারছিলেন না জয়নাল আহমেদ, কিন্তু তার পূর্বেই তাশফিন তার কাজ করে দেয়। এবং কী যখন তাশফিন একবার বলেছে স্নেহার সঙ্গে আরিয়ানের বিয়ের কথা বলতেই রাজী হয়েছেন তিনি।তাশফিন অবশ্যই কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নেবে না তা তিনি জানেন।
নূপুরের ছনছন শব্দ তুলে দৌড়ে এগিয়ে এলো ফারাহ। এলোমেলো চুল তার গলা শুকিয়ে এসেছে। হাঁপানি রোগীর মতো হাঁপাচ্ছে ।
“ওয়ে লেফটেন্যান্ট সাহেব আপনি এত দুষ্টু কেন?”
সদ্য শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে এসেছে তাশফিন। এলোমেলো তাশফিন কে দেখে বক্ষপৃষ্ঠে ধুকধুক শব্দ শুনতে পেলো ফারাহ। ইশ্ এখন না আসলেই তো হতো?
ভেজা চুল গুলো হাতে ঝেড়ে দিলো তাশফিন, টাওয়েল জড়িয়ে এগিয়ে গেল ড্রেসিং টেবিলের দিকে।তারা ফিরেছে সবে।কিয়ৎ সময় পূর্বেই আরিয়ান স্নেহা কে নিয়ে বাড়ির পথে রওনা দিয়েছে। ঘন্টা খানেক পরেই নূপুর ঝুমুর আর ফারাহ ওরাও যাবে সেখানে। যেহেতু ওঁদের বিয়ে হয়েছে তাদের সংসার গুছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে।
“উফ্ সুখ হুটহাট এভাবে দৌড়াও কেন?পড়ে টড়ে গেলে কি হবে?”
চমকালো ফারাহ। চকিতে শুধোয়,
“আপনি কি করে জানলেন আমি দৌড়ে এসেছি।”
“তোমার নূপুর তোমার আগমণ বার্তা আগেই আমাকে জানিয়ে দেয়।”
লজ্জায় লাল হয় মেয়ের চিবুক। হাঁসফাঁস ভঙ্গিতে বলল,
“থাকুন আপনি, যাচ্ছি আমি।”
কোমল হাতে শীতল হাতের স্পর্শ পেয়ে সর্বাঙ্গে শিরশিরানি অনুভব করে ফারাহ। তীব্র বুক ধুকপুকানি নিয়ে পিছন ফিরে তাকালো সে। কিন্তু তা ক্ষণিকের জন্য।চওড়া বক্ষে ধাক্কা খেলো। ঠোঁট ছুঁয়ে যায় তার বুকের বাঁ পাশে।
“মিসেস শেখ এমন করলে আমি কোথায় যায় বলুন তো? এমনিতেও তো আপনার কারণে কিছু করতে মন চায় না। সবসময় আপনি আপনি করে মনটা।”
নিমোষ্ট আঁকড়ে লজ্জায় মাথা নীচু করে ফারাহ, তীব্র কাঁপুনি নিয়ে রিনরিনে কন্ঠে বলল,
“আপনি ভীষণ ফাজিল চাচা কে কি করে মানিয়ে নিলেন সব জেনে গেছি আমি। আপনি সব গোপন করেন!”
তাশফিন এক চিলতে হেসে বলল,
“ইশ্ এবার কি হবে তাহলে!সব তো জেনে গেলেন। এবার আমার কি হবে বলুন তো?”
চিকন নাকের ডগা ফুলে উঠে ফারাহর।ফারাহ কিছু বলতে যাবে, কিন্তু কণ্ঠ আটকে যায়। লজ্জায় চোখের কোণে জল চিকচিক করে।তাশফিন আলতো করে টেনে নেয় তাকে নিজের বুকে।নরম ভালোবাসার ছোঁয়ায় ফারাহ হারিয়ে যেতে থাকে। ঠোঁটের কোণে কেঁপে ওঠে তার ঠোঁট,
আর তাশফিনের ঠোঁটের স্পর্শে গলে যায় সমস্ত সংশয়।
আধো চোখে, আধো কাঁপুনিতে ফারাহ নিজেকে ছেড়ে দেয় তাশফিনের আদরে।ফারাহ যেন ধীরে ধীরে ঢলে পড়ে তাশফিনের বুকে, ভিতরের ঘূর্ণিপাকে সে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারে না।তাশফিন নিঃশব্দে তাকে আঁকড়ে ধরে,আলতোভাবে ঠেলে দেয় দেওয়ালের দিকে।
চোখে চোখ পড়তেই যেন সময় থমকে যায়।
তাশফিনের হাত ফারাহর মুখখানা ছুঁয়ে যায় নরমতায়।এরপর, সে মাথা নিচু করে তার ঠোঁটের কাছে ঠেকিয়ে দেয় নিজের আকুলতা।ঠোঁট ছুঁয়ে যায় ঠোঁট, এক গভীর আস্বাদন ভালোবাসা যেন জমে ওঠে অদৃশ্য অক্ষরে, নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে।ফারাহ আর তাশফিনের মাঝে সমস্ত দূরত্ব গলে যায়।তাদের শরীরের মাঝে জমে ওঠে এক নীরব, তীব্র ঘনিষ্ঠতা। অকস্মাৎ ছেড়ে দেয় তাশফিন, কিঞ্চিৎ ভড়কালো ফারাহ। দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়ালো সে।
“সুখ সুখ এবার যে রেডি হতে হবে। আমার শার্ট টা ইস্ত্রি করে দিন।”
নিজেকে ধাতস্থ করে ইস্ত্রি করতে গেল ফারাহ, পুরোটা সময় তাকিয়ে রইল তাশফিন। এলোমেলো তাশফিন কে সব কিছু এগিয়ে দিয়ে প্রাণ হাতে নিয়ে বেরিয়ে এলো সে।তাশফিন তার এক মাত্র পুরুষ,খুব আদরের যত্নের।
কিয়ৎক্ষণ পরেই আবারো শার্ট নিয়ে ফিরে এলো ফারাহ। তখনো উদোম গায়ে বিছানায় বসে আছে তাশফিন।
তাকে দেখে ফের কেঁপে উঠলো ফারাহর অন্তঃস্থল।
“আ আপনার শার্ট।”
আমতা আমতা করে বলে উঠে ফারাহ। অধর বাঁকিয়ে হাসলো তাশফিন , পরক্ষণেই বলে উঠে।
“কাছে এসো একটা জিনিস দেখাই।”
ফারাহ উৎকন্ঠা হয়ে এগিয়ে গেল। কিন্তু আচানক তাকে টেনে কোলে বসিয়ে নিল তাশফিন। সহসা কেঁপে উঠলো ফারাহ।
“ক…কি করছেন লেফটেন্যান্ট সাহেব?”
“প্লিজ জান ওয়ান্স মোর। আই কান্ট কন্ট্রোল মাইসেল্ফ।”
থমকে যায় ফারাহ , ওষ্ঠো জোড়া কাঁপছে নিদারুণ ভঙিতে। উদরে হালকা করে চাপ দিতেই নুইয়ে পড়ে ফারাহ। নিঃশ্বাস ভারী হয় তার , শুকনো ঠোঁট জোড়া আলতো করে ভিজিয়ে নিল সে।
তাশফিন কানের লতি ছুঁয়ে ফিসফিসিয়ে বললো।
“উইল ইউ বি আপসেট ইফ আই লুজ কন্ট্রোল আ লিটল অ্যান্ড গেট ওয়াইল্ড উইথ ইউ টুনাইট?”
লজ্জায় শিউরে উঠে ফারাহ। কম্পিত চিত্তে হাত ছুঁয়ে দেয় তাশফিনের বাহুতে।
“ছাড়ুন।”
“প্লিজ জান ,জাস্ট ওয়ান্স।”
ফারাহ কিছু বলার সুযোগ পেলো না তার পূর্বেই তাশফিনের অবাধ্য হাতের বিচরণ ঘটে তার সর্বাঙ্গে। নিঃশ্বাস নিতে পারে না ফারাহ। তাশফিনের ওষ্ঠো জোড়া ছুঁয়ে যায় তার কন্ঠনালি। ঠোঁট কিঞ্চিৎ ফাঁক করে নিঃশ্বাস টানতে লাগলো ফারাহ। আচানক তাশফিনের ভেজা চুল গুলো মুঠোয় চেপে ধরে সে।
“থামুন প্লিজ।”
“নো ওয়ে।”
ছোটখাটো একতলা একটা বাড়ি।বাহির থেকে সাধারণ, কিন্তু ভিতরে যেন একটুকরো শান্তির ঠিকানা।ঘরদোর পরিপাটি, প্রতিটা কোণে মায়ার ছোঁয়া।স্নেহার চোখে ঝিলিক দেয় বিস্ময় আর ভালোবাসা।
“এটা আমার ছোট্ট জগৎ।”
হেসে বলে আরিয়ান।
পরক্ষণেই বলল,
“এখন থেকে আমাদের।”
স্নেহা ধীরে ধীরে ঘুরে ঘুরে দেখে ঘরটা।আলমারির উপরে রাখা পুরনো বই, কোণার টেবিলের গাছে জড়ানো নরম আলো,আর রান্নাঘরের তাকজোড়া মাটির হাণ্ডি সব কিছুতেই এক ধরনের আন্তরিক ছাপ।
আরিয়ান পেছনে পেছনে হাঁটে, যেন প্রতিটা জায়গা তার গল্পের পাতা।
‘এই টবগুলো আমি নিজে সাজিয়েছি।”
বলে সে একটু গর্ব নিয়ে।
স্নেহা মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থাকে, তার মনটাও ধীরে ধীরে ভরে যায় একটা নতুন স্বপ্নে।
“আপনি খুব গোছানো।”
মৃদু স্বরে বলল স্নেহা,হাসলো আরিয়ান।ঘরের প্রতিটা কোণ দেখানো শেষ হলে আরিয়ান মুচকি হেসে স্নেহার দিকে তাকাল।
“এবার আমার প্রিয় জায়গাটা দেখাই।”
বলে ইশারায় এগিয়ে গেল শোয়ার ঘরের দিকে।স্নেহা নিঃশব্দে তার পিছু নিলো।নতুন জীবন, নতুন ঘর আর এই মানুষটা তার সমস্ত বিশ্বাসের জায়গা।শোয়ার ঘরে পা রাখতেই হঠাৎ করেই আরিয়ান তার হাত ধরে কাছে টেনে নিলো।স্নেহা হতচকিত, কিন্তু আরিয়ানের চোখে ছিল অদ্ভুত রকমের কোমলতা।একটুখানি থেমে, গভীর মায়ায় সে ঝুঁকে এসে স্নেহার কপালে এঁকে দিলো এক নিঃশব্দ চুম্বন।তা যেন কোনো শব্দ ছাড়াই বলে গেলো
“তুমি আমার ঠিক যেমন করে ভাবতাম, আমার একজন হবে,খুব আপন।তেমন করেই পেয়েছি তোমায়।”
স্নেহা চোখ বন্ধ করে সেই পরশে নিজেকে হারিয়ে ফেলল। ভালোবাসা বুঝি এটাই?
বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে আছে নিহাল। প্রচন্ড মাথা ব্যথা করছে তার। এই দুদিন ধরেই তার ঘুম হচ্ছে না ঠিক মতো।
ফোনের টুং শব্দ হতেই বিরক্তির চাহনি ফেলল নিহাল। এক পলক ফোনের দিকে তাকিয়ে আবার শুয়ে রইলো। পরপর আবারো ফোন বেজে উঠেছে। আবারো বিরক্ত হলো নিহাল। রাগে ফোন তুলে রাগান্বিত স্বরে বলে উঠে।
“কি সমস্যা বারবার কল করছো কেন?”
অপর প্রান্তে মেয়েলি কন্ঠস্বর ভেসে এলো।
তরঙ্গে তোমার ছোঁয়া পর্ব ৩৭
“আপনাকে আমি মিস করছি।”
“মিস” শব্দটি কর্ণ গোচরে প্রবেশ করতেই তেতে উঠল নিহাল।
“কেন মিস করছো হুঁ? আমি কি তোমার কেউ যে আমাকে মিস করছো?”
অপর প্রান্তের মেয়েটা বোধহয় খানিকটা লজ্জা পেলো। ঠাস করে ফোন রেখে দিলো সে।
আবারো বিরক্ত হলো নিহাল। এই মেয়েটাকে কি করবে সে? মেয়েটা একটুও বুঝে না, এতটা অবুঝ মানুষ তো কখনো দেখেনি সে!