তাজমহল দ্বিতীয় খন্ড পর্ব ৫

তাজমহল দ্বিতীয় খন্ড পর্ব ৫
প্রিমা ফারনাজ চৌধুরী

মিষ্টিকুমড়া ডেকে শাইনার দুই বাহু শক্ত করে চেপে ধরল তাজদার। একবার এদিকে, একবার ওদিকে ঝাঁকিয়ে হেসে হেসে বলল,”তুমি একেবারে কদু হয়ে গেছ। শাইনা মমতাজ কদু! হা হা।”
তার চোখেমুখে দুষ্টু ঝিলিক। আর শাইনার মুখে অপ্রস্তুত হাসি লজ্জা আর রাগ মিলেমিশে গলে গেল মিষ্টিকুমড়ার মাংসের মতো।

তাজদার এবার উচ্চস্বরে হেসে উঠলো। নাকে নাকটা ঘষে দিতেই শাইনা ছটফটিয়ে উঠে ওড়নাটা নিতে যাবে তখুনি তাজদার ওড়নাটা কেড়ে নিয়ে হাসতে হাসতে চেয়ারে বসে পড়লো। চেয়ারে বসেও গা দুলিয়ে হাসছে সে। শাইনার ওড়নাটা তার হাতে শক্ত করে ধরা।
তাকে এভাবে হাসতে দেখে শাইনা ক্ষোভের দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে রইলো। তাজদার হাসি থামানোর চেষ্টা করতে করতে বলল,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“কদু হয়ে ঘুরছে ফিরছে। আবার আমার সামনে ওড়না পরে ঘুরতে হবে তাকে। হা হা।”
শাইনা এখনো চেয়ে আছে তার দিকে। তাকে দেখে মনে হচ্ছে কোনো অসহায় অবলা প্রাণী। তাজদার হাসি থামাতে থামাতে আবারও হো হো করে হেসে উঠলো শাইনার চেহারার অবস্থা দেখে।
তারপর উঠে এসে শাইনার সামনে যাবে তখুনি শাইনা সেখান থেকে সরে গেল। তাজদার তার হাত শক্ত করে ধরে তাকে আয়নার সামনে নিয়ে গেল। পেছন থেকে ওড়নাটা মাথার উপর তুলে দিল। তারপর নিজেও শাইনা বাম কাঁধের উপর থুঁতনি ঠেকিয়ে আয়নার দিকে তাকালো। বলল,
“তাজদার সিদ্দিকীর বধূ। শাইনা মমতাজ কদু। খেতে ভীষণ মধু।”
বলেই হেসে উঠলো আবারও। শাইনা নিজেও হাসি চেপে রাখতে পারছেনা। এত বজ্জাত লোক জীবনে দেখেনি সে। সে চলে যাচ্ছিল রাগ করে তখুনি তাজদার তাকে ধরে ফেললো। কাছে টেনে এনে গালে গালে গাল ঠেকিয়ে রেখে বলল,”আমি চলে গেলে তোমাকে জ্বালানোর আর কেউ থাকবে না। এখন একটু শান্তিতে জ্বালাই। ডোন্ট ডিস্টার্ব মি মমতাজ।”

শাইনা আয়নার দিকে চেয়ে আছে। প্রতিফলনে দেখছে তার গালের সঙ্গে একজোড়া খসখসে গাল লেগে আছে। একপাশে চেপে ধরায় গালের আরেকদিকটা অদ্ভুতভাবে ফোলা আর বাঁকা দেখাচ্ছে। তার ঠোঁট নড়ল হালকা বিড়বিড় শব্দে,
“আমাকে নিয়ে যাবেন না?”
তাজদারের হাত একটু শিথিল হয়ে এলো। ধীরেধীরে মুখ তুলল সে, তাকালো শাইনার চোখে।
শাইনাও তাকালো নিঃশব্দে।
একটু পর তাজদার তাকে পুরোপুরি ছেড়ে দিয়ে নিজের খসখসে দাঁড়িতে হাত বুলিয়ে বলল,
“তুমি যেতে চাও?”
শাইনা মাথা নাড়ল ধীরে।
“না।”

এর আগে সে হাজারবার বলেছে যাবে না। তখন তাজদার সিদ্দিকী তার কথা শোনেনি। আজও বলেছে। তবে আজকেরটা আংশিক মিথ্যা ছিল কিন্তু তাজদার সিদ্দিকী আজকে তার কথা শুনেছে। তাজদার তার গালের একপাশে একহাত রেখে আলতোকরে ছুঁয়ে ছুঁয়ে বলল,

“হিসেবের অনেক গড়মিল হয়ে আছে মমতাজ। সবগুলো হিসেব মিলে যাক। তারপর যেও। এখন পর্যন্ত তোমার সিদ্ধান্ত ঠিক। আমার জীবনটা ভুলে ভরা। এই ভুলগুলোর হিসেব করতে গেলে তুমি আমাকেই আর খুঁজে পাবেনা। তাই আমার বিষয় বাদ। তুমি চেষ্টা করেছ নির্ভুল থাকতে। আই এপ্রিশিয়েট ইট। আমি আবার কখনো ভুল করলেও তুমি তোমার জায়গায় স্থির থেকো। আমি মানুষ ভালো না। তোমাকেও আমার ভুলের সাথে জড়িয়ে ফেলতে পারি।”
“আমাকে মাঝেমধ্যে এতটা বুঝে যান দেখে অবাক লাগে। থ্যাংক য়ূ। আসলে আমি সবসময় একটা ভুল ধারণার মধ্যে থাকি। আমার চারপাশের সবকিছু আমার বিপরীতে অবস্থান করে। ভালোই লাগছে। মন্দ না। আপনি সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছেন। আর কি চায় আমার? যেখানেই থাকুন না কেন। ভালো থাকবেন। আমার জীবনের সবচেয়ে বড়ো সান্ত্বনা এটি যে আমার জন্য কেউ অসুখে ভুগছেনা। গেলাম। কাজ আছে।”

ঠোঁটে একটা মেকি হাসি ঝুলিয়ে শাইনা সেখান থেকে চলে যাচ্ছিল। তাজদার তার যাওয়ার পথে চেয়ে রইলো। শাইনা দরজা পেরোতেই তাজদার ডেকে উঠলো,
“শাইনা দাঁড়াও। একটা কথা। শোনো। এই? মমতাজ?”
শাইনা দরজার কাছে এসে তার দিকে তাকালো। তাজদার বলল,
“আমি যাওয়ার আগে তোমার মুখে একবার হলেও শুনতে চাইবো তুমি একদিনের জন্য হলেও আমার কাছে থেকে শান্তি পেয়েছ। নইলে ওখানে গিয়ে আমি শান্তি পাব না।”
“আপনি ওখানে গিয়ে শান্তিতে থাকলে আমাকে ভুলে যাবেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অশান্তিই মঙ্গল।”
“এটা অন্যায় হচ্ছে আমার সাথে।”
“অন্যায় আমার সাথে হয়েছে যেদিন একজন হাসপাতালের বেডে শুয়ে সরি বলে পালাতে চেয়েছিল আমাকে অনুতাপের সাগরে ভাসিয়ে দিয়ে।”

শাওন বাইক পেয়ে ভীষণ খুশি। কাল সারাদিন একরত্তিও বাড়িতে থাকেনি। শুধু ঘুরেছে বাইকটা নিয়ে। অফিস থেকে ফিরে আনিস তাকে ইচ্ছেমতো বকলো ফোনে। শাওন বাড়ি ফিরে শাহিদা বেগমের উপর রাগারাগি করলো।
“বাইক কিনে দিয়ে এখন আমার উপর ছুরি ঘোরাচ্ছে সবাই মিলে।”
“ভাই কোনোদিন ভাইয়ের খারাপ চায়? তুই বাইক নিয়ে এমন মজনু হয়ে গেলে হবে? যদি এক্সিডেন্ট হয় তখন? তোর কি একটুও ভয় নেই শাওন?”
আনিস এসে বলল,”কি হয়েছে?”
“দেখ না। তুই বকেছিস বলে বাড়ি ফিরে আমার উপর রাগ দেখাচ্ছে।”
আনিস কাঠকাঠ গলায় বলে দিল,”আগামী সাতদিন তোর বাইক নিয়ে ঘোরাঘুরি বন্ধ।”
শাওন রাগ করে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। আনিস আশরাফকে গিয়ে বলল,
“আমি বলেছিলাম না ও বাইক পেলে সব ভুলে গিয়ে শুধু ওটা নিয়ে দৌড়াবে?”
আফসার সাহেব বলে উঠলেন,

“বাদ দে না। এখনো ছোট তাই….
উনার কথা শেষ হতে না হতেই শাহিদা বেগম এসে বলল,”ছোট? ও ছোট? আজ বিয়ে করালে কাল বাচ্চার বাপ হবে। ও নাকি ছোট। দেখো গিয়ে বাইকের পেছনে কাকে নিয়ে ঘুরছে।”
আনিস বলল,”তোমার মুখে আর কোনো কথা নাই আম্মা?”
শাহিদা বেগম বিড়বিড়িয়ে চলে যেতে যেতে বললেন,”এই ছেলের জন্য কোনো কথা বলে শান্তি নেই।”
আনিস বাইরে বেরিয়ে গেল। বাইকটা উঠোনে রাখা আছে। তাজদারকে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করলো।
“আয়।”

তাজদার কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে এল। আনিস বাইকে উঠে বসলো। তাজদার পেছনে বসতে যাবে তখুনি শাইনার গলা শোনা গেল।
“ভাইয়া!”
আনিস বারান্দায় তাকালো। শাইনা হাত নাড়ছে। আনিস তাকাতেই তাজদারকে দেখিয়ে দিল। তাজদার কপাল কুঁচকে তাকালো। শাইনা হাতের ইশারায় বলল, একবার যেতে।
আনিস বলল,”মনে হয় কিছু আনতে হবে। শুনে আয়।”
তাজদার হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজ চেক করলো। শাইনা লিখেছে,”এক্ষুণি আসুন। এক্ষুণি মানে এক্ষুণি।”
তাজদার আবারও ঘরে চলে গেল। মহারাণীর আদেশ। রওশনআরা তাকে দেখে বলল,”বাজারে যাচ্ছ?”
তাজদার সিঁড়ি বেয়ে উঠে যেতে যেতে বলল,”হুম।”
“কিছু কাঁচামরিচ লাগবে।”
“ওকে।”

তাসনুভা উঠোনে বেরিয়ে এল। বাড়িতে ইন্টারনেট নেই। অফিসে ফোন দিয়েও কাজ হচ্ছে না। কবে ঠিক হবে জানেনা। ওয়াইফাই না থাকলে তার মাথা কাজ করেনা।
এদিকে ফোনের এমবিগুলো কাজ করছেনা। বিরক্তিকর! আজ পেইজের পোস্টও স্ক্যাজুল করে রাখেনি সে। টাইম মেইনটেইন করে পোস্ট না করলে আবার পেইজের রিচ কমে যায়।
হঠাৎ আনিসকে দেখলো বাইকে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে ফোন টিপছে মাথা নুইয়ে। তাসনুভা তার দিকে ছুটে গেল। বলল,”আনিস ভাই একটু হটস্পট দেন।”
আনিস হকচকিয়ে তাকালো।
“কী?”
“হটস্পট। এদিকে চলে আসেন।”

আনিস সরে পড়তেই তাসনুভা বাইকে বসে বলল,”পাসওয়ার্ড বলেন।”
আনিস না করতে পারলো না। যদিও তার মুখের উপর না বলার স্বভাব আছে। আর এটা প্রফেশনাল বিহেভিয়ারের মধ্যে পড়ে। কিন্তু অনেক সময় এটা করা যায় না। যেমন আজ করা গেল না। অগত্যা তাকে তাসনুভাকে হটস্পট দিতেই হলো।
তাসনুভা নেট পেয়ে খুশি হয়ে বলল,”থ্যাংকস। আপনি প্লিজ বেশিদূরে যাবেন না। ডিসকানেক্ট হয়ে যাবে।”
আনিস কিছু বললো না। তাসনুভা তার পেজে পোস্ট করা শেষে বলল,”আপনার ফোনে কত এমবি আছে?”
“আছে দুই জিবির মতো।”

“অনেক আছে। তাহলে কিছু ভিডিও দেখি।”
আনিস কিছু একটা বিড়বিড়িয়ে বললো কিন্তু তাসনুভা তা শুনতে পেল না। সে মনের সুখে বাইকের উপর বসে ভিডিও দেখতে লাগলো। আনিস একটা কাজের কাজ করলো অবশ্য। কিছুক্ষণ পরপর নেট বন্ধ করে দিয়ে আবারও অন করলো। এতে তাসনুভার ভিডিও মাঝপথে আটকে গেল বারবার। শেষমেশ বিরক্ত হয়ে সে বলল,
“আপনার হটস্পট আপনার মতোই ফালতু আনিস ভাই। ডিজগাস্টিং!”
বলেই হনহন করে হেঁটে চলে গেল সে। আনিস মনে মনে হাসলো।

তাজদার ঘরের দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকতেই শাইনা একটা বাদামী রঙের শার্ট তার কাঁধে ঝুলিয়ে দিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে যেতে বলল,
“সাদা শার্টটা পাল্টানো হোক।”
তাজদার কপাল কুঁচকে ফেললো। কেন পাল্টাবে? ভাবতে ভাবতে সে বোতামে হাত দিল শাইনার যাওয়ার পথে চেয়ে। হঠাৎই আঙুল থেমে গেল। ঠোঁটের কোণায় হাসির রেখা খেল গেল। সে দরজার কাছে গিয়ে উঁকি দিয়ে বলল,
“হেইই মমতাজ!”
শাইনা থেমে গিয়ে ঘাড় ফিরিয়ে তাকালো।
“ইয়েস?”
তাজদার আঙুল দেখিয়ে বলল,”নখে ব্যাথা।”

শাইনা কপাল কুঁচকে তাকিয়ে আছে। নখে ব্যাথা। তো সে কি করবে? পরক্ষনেই তাজদারের কুবুদ্ধি কথা ভেবে সে বোকাবনে গেল। এই লোকটা এত চালাক!
তাজদার হাত বাড়িয়ে ডাকলো,”কাম কাম।”
শাইনা বলল,”ভাইয়া দাঁড়িয়ে আছে নিচে। তাড়াতাড়ি যান।”
“তুমি সাহায্য না করলে তোমার ভাইয়াকে দাঁড় করিয়ে রাখতে হবে।”
শাইনা আর না পেরে ঘরে ঢুকলো। বোতাম ছাড়িয়ে দিতে লাগলো বুকের দিকে না তাকিয়ে। সেলাইয়ের দাগগুলো সে একদম সহ্য করতে পারেনা। তাজদার বলল,

“এই শার্টটা পরবো না।”
“কোনটা পরবেন?”
বোতাম খোলা শেষ হতেই তাজদার শার্টটা খুলে ফেলতে ফেলতে কাবার্ডের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। আরও একটা অফ হোয়াইট শার্ট শাইনাকে দেখিয়ে বলল,”এটা?”
শাইনা জোর গলায় বলল,”নাহহ!”
“তাহলে এটা।”

এবার একদম ধবধবে সাদা একটা শার্ট। তবে কলার আর হাতার দিকে কিছু কালো বর্ডার আছে।
শাইনা স্বাভাবিকভাবে বলল,”পরতে পারেন। আমার কোনো সমস্যা নেই।”
বলেই ঘর থেকে বেরিয়ে গেল সে কিন্তু বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দিল। তাজদার তার চালাকি বুঝতে পেরে দরজা ধাক্কা দিয়ে ডাকলো,
“এই মমতাজ চুন্নি! দরজা খোলো। এমন মাইর দেব। দরজা খোলো। আরেহ কি সেয়ানা মহিলা।”
শাইনা বলল,”টা টা।”
“দরজা খোলো। মমতাজ! আনিস দাঁড়িয়ে আছে। বলবে বউয়ের সাথে প্রেম করছে। ওকে ফাইন। আমি হোয়াটসঅ্যাপে বলে দিচ্ছি, তোর বোন আমার কোলে উঠে বসে আছে।”

শাইনা সাথে সাথে দরজা খুলে তার বাহু বরাবর কিল বসিয়ে দিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছিল তাজদার তাকে ধরে ফেললো একহাতে প্যাঁচিয়ে। হাতটা চলে গেল শাইনার তলপেটে। সাথে সাথে সে উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলল,
“ফাইনালিই! কিন্তু এটা এখন কদু কম ফুটবল বেশি মনে হচ্ছে।”
শাইনা চোখ খিঁচিয়ে বন্ধ করে রেখে বলল,”ধুরাবাবাহ এসব কি?”
“এইসব কি বলবো?”
শাইনা চিৎকার করে উঠলো,”না–হ।”
তাজদার হাসতে তার কানে চুমু খেয়ে ছেড়ে দিল।তারপর শাইনার গাল জোরে টেনে দিয়ে বেরিয়ে গেল বাদামী রঙের শার্টটা গায়ে জড়াতে জড়াতে।
শাইনা, গাল আর কানে হাত রাখলো। একফোঁটা শান্তি দেয় না তাকে।
তাজদার এসে আনিসের বাইকের পেছনে বসলো।

“শার্ট পাল্টালি কেন?”
“তোর বোন আমার জন্য সাদা শার্টকে নিষিদ্ধ করে দিয়েছে।”
আনিস শব্দ করে হাসলো। তাজদার বলল,
“আমাকে কাঁচা মরিচ কিনতে হবে। মনে করিয়ে দিস।”
“কতগুলো?”
“এককেজি বোধহয়।”
আনিস হেসে ফেললো।

তাজমহল দ্বিতীয় খন্ড পর্ব ৪

“বড়আম্মু এককেজি কাঁচা মরিচ কি করবে?”
“তাহলে তুই যতটুকু কিনিস ততটুকু।”
আনিস হাসতে হাসতে বলল,”তোর মাথা গেছে।”
তাজদার বিড়বিড় করে বলল,”তোর বোন খেয়েছে।”

তাজমহল দ্বিতীয় খন্ড পর্ব ৬

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here